কাস্ট
~
আমাদের অবাক করে বাবা কাল
চৈত্রবাজার থেকে
পাঁচটা স্টিলের থালা নিয়ে এসেছে।
শিলনোড়া এসেছিল গত বছর,
তার আগের বছর মাদুর
তারও আগের বছর—
কথা নেই বার্তা নেই,মোড়া।
মোড়া দেখে তো দিদি হেসে অস্থির :
মুড়াতে বইয়া কি আমরা
আর্ট ফিল্মের গরিব সাজুম?
মা যথারীতি সপ্রতিভ : এই পয়সা দিয়ে
এম্পোরিয়ামের ময়ূর আনা যায়।
আরও কত মস্করা করা হয়;
কিন্তু প্রত্যেক বছর ১৪ই এপ্রিল বাবাকে
এই ধরনের বাতিল মালপত্র-সহই ঘরে ঢুকতে হবে।
সহাস্যে ঘরে ঢুকতে হবে, যেন একটা সস্তা ব্রহ্মাণ্ড
কেউ খবরের কাগজে পেঁচিয়ে দিয়েছে।
তারপর তাদের জায়গা হবে আলমারিতে, স্টোরে।
একমাত্র অতিথিরা দেখতে পাবেন
মা মেঝেতে বসে শিলনোড়ায় মশলা কুটছে,
বাবা মোড়ায় জবুথবু, আমরা মাদুরে শুয়ে।
অতিথিরা অতীতের সাক্ষী নন,
তাই অতীতকে তারা দু-চোখ ভরে দেখতে এসেছেন।
শেকড় শব্দটি দিয়ে
ব্যাকুল তৎসম বাক্য রচনা করতে এসেছেন।
তারা এসেছেন বেহালার ছড় হতে
উৎসারিত স্মৃতি-কণ্ডূয়নে।
বাবার বন্ধু সব। মুখার্জি, বসু, ধর, পাল, রায়, চৌধুরী।
আর সহ্য হয় না আমার, দরজার দিকে ছুটে যাই—
এটা কি যাদুঘর না জতুগৃহ?
সত্তর বছরের বাবা দীর্ঘ লড়াইয়ের পর
অস্ত্র সংবরণ করে বলে, জতুগৃহ।
সেদিন থেকে আমরা
এক উল্লাসপ্রিয় জতুগৃহে বসবাস করি।