এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • প্রেম-অপ্রেম 

    Indrani Chakraborty লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৩ মে ২০২৫ | ৪৪০ বার পঠিত
  • - "সিভিয়ার ডিপ্রেশন”, ডাক্তার মাথা নাড়লেন।

    - “অনেক ধৈর্য ধরে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। ব্রেনের মধ্যে সেরোটোনিন বলে একটা কেমিক্যাল থাকে তার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। মনে হয় খুব সাংঘাতিক কোনও শক পেয়েছে পেশেন্ট। আমি কয়েকটা ওষুধ লিখে দিচ্ছি ওগুলো খেতে হবে দু’বেলা”। ডাক্তার বললেন অদিতিকে দেখে ও তার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলে।

    অদিতির বাবা মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন খুব চিন্তিত মুখে।

    অদিতি ও অরিন্দমের বিয়ে হয় তিন বছর প্রেম পর্বের পরে। বিয়ের পরে দুজনেই খুব সুখী ছিল। দিন কাটছিল যেন স্বপ্নের মতো। অদিতি একটা কলেজে পড়ায়, অরিন্দম আছে কর্পোরেটে। ছুটি পেলেই দুজনে ঘুরতে বেরিয়ে পড়ত - পাহাড়ে, জঙ্গলে, বা সমুদ্রের ধারে। তিনটে বছর কোথা দিয়ে যেন ফুরিয়ে গেল।

    অদিতির কলেজের বন্ধু বিশাখা মাঝে মাঝে বাড়ি আসত ওদের। গল্পে, গানে, আড্ডায় তিনজনে মজে থাকত।
    - “তোরা মেড ফর ইচ আদার। তোদের দেখে খুব হিংসে হয়”, বিশাখা বলত।
    - “তুইও একটা বর জোটা না। তোরও হবে এমন গভীর সম্পর্ক”, বলত অদিতি।
    গড়িয়ে গড়িয়ে দিনগুলো বেশ কেটে যাচ্ছিল। বিয়ের পরে তিন বছর কেটে গেল। হঠাৎ একদিন অরিন্দম বলে অদিতিকে, “তোমার ভালবাসার চাপে আমি হাঁফিয়ে উঠছি। তুমি বাঁধনটা দিয়েছ, কিন্তু ফ্রিডম দাওনি আমাকে। আমারও তো একটা আলাদা জগত থাকতে পারে। আমি একটু নিজের মত বাঁচতে চাই। আমাকে সেই স্পেসটা দাও”।

    অদিতি অবাক হয় না অরিন্দমের কথা শুনে। মনে মনে আবৃত্তি করে –
    “লাভ পজেসেস নট, নর উড ইট বি পজেসড।
    ফর লাভ ইস সাফিসিয়েন্ট আনটু লাভ”।

    মনে পড়ে যায় বিয়ের আগে অরিন্দমের দেওয়া কহ্লিল জিব্রানের কবিতা।

    এরপর থেকে অরিন্দমের বাড়ি ফেরা দেরি হতে থাকল। অদিতি ডিনার নিয়ে বসে থেকে থেকে ঘুমিয়ে পড়ে কতদিন। সকালে অরিন্দমকে জিজ্ঞেস করলে বলে, বাইরে খেয়ে এসেছে সে। অদিতির জন্মদিনের কথাও ভুলে গেল অরিন্দম। সেদিন বাড়ি ফিরল রাত এগারোটায়। অদিতি দুঃখ পেলেও মেনে নেয় সবকিছু। এই উদাসীনতায় আঘাত পেলেও অদিতি কিছু বলে না অরিন্দমকে। সব আঘাত সহ্য করে যায়। মনে মনে ভাবে,

    “আই উড নট এক্সচেঞ্জ দ্য সরোস অফ মাই হার্ট
    ফর দ্য জয়েস অফ দ্য মাল্টিচুড,
    অ্যান্ড আই উড নট হ্যাভ দ্য টিয়ার্স দ্যাট স্যাডনেস মেকস
    টু ফ্লো ফ্রম মাই এভরি পার্ট টার্ন ইনটু লাফটার”।

    ছ’মাস পরে একদিন।
    - “আমার আর তোমার সঙ্গে থাকতে ভাল লাগছে না। এবারে আমাকে মুক্তি দাও“, অরিন্দম বলে।
    - “হঠাৎ এ কথা? আমি কি তোমাকে কোনও আঘাত দিয়েছি?” অদিতি বলে।
    - “না, তা নয়। আমি বিশাখাকে বিয়ে করব”।
    - “বিশাখা? কেন?”
    - “আমার আর বিশাখার কেমিস্ট্রিটা অনেক বেশি জোরালো। ও আমাকে অনেক বেশি বোঝে তোমার থেকে। তোমাকে আমার আর ভাল লাগছে না”।

    অদিতি বাকরুদ্ধ হয়ে যায় শুনে। ভাবতেও পারে না কবে থেকে বিশাখার সঙ্গে অরিন্দমের ঘনিষ্টতা তৈরি হল। অদিতি কোনওদিন অরিন্দমকে সন্দেহ করেনি। ওর বিশ্বাস ছিল, ওদের ভালবাসা খুব খাঁটি। শত আঘাতেও ভাঙ্গবে না। কখনো ভাবেনি এরকম ছন্দ পতন হবে কোনওদিন। এরপর থেকে অদিতি ক্রমশ চুপচাপ হয়ে যেতে থাকল। কারও সঙ্গে বিশেষ কথা বলত না। সারাদিন শুয়ে শুয়ে চোখের জল ফেলত আড়ালে। কলেজে যাওয়াও অনিয়মিত হয়ে উঠল। অরিন্দম বিরক্ত হতে থাকল অদিতির ওপর। তারপর একদিন অদিতিকে ওর বাবার বাড়িতে রেখে এল।

    অদিতির সাইকিয়াট্রিক ট্রিটমেন্ট শুরু হল ওর বাবার বাড়িতে থেকে। প্রথম ছ’মাস খুব ক্রিটিক্যাল অবস্থা গেল অদিতির। রাতে ঘুম হয় না। একা একা খালি চোখের জল ফেলে। সারাক্ষণ বিষণ্ণতা ঘিরে থাকে। কিছু ভাল লাগে না। অরিন্দম মাঝে দু’একবার এসে দেখেও গেল অদিতিকে। অরিন্দমকে দেখেও আর অদিতির উৎসাহ জাগে না মনে। বড় একা লাগে পৃথিবীতে। চারপাশে সবাই থেকেও মনে হয় যেন সব ফাঁকা। বেঁচে থাকার আনন্দটাই যেন হারিয়ে গেছে ওর জীবন থেকে। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ওষুধ খেতে খেতে আস্তে আস্তে অদিতি সেরে ওঠে। বন্ধুরা বাড়িতে এসে খোঁজ নিয়ে যায়। কলেজে প্রায় আটমাস যায় নি অদিতি। বন্ধুদের পরামর্শে অদিতি আবার কলেজে জয়েন করে। ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে পড়াতে মনটা ভাল হয়ে ওঠে। অনেকগুলো ছটফটে ছেলেমেয়ে ওর ক্লাসে। তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালই লাগে অদিতির। এভাবে আরও চার মাস কেটে যায়।

    এরপর একদিন অরিন্দম আসে ডিভোর্সের পেপার সই করাতে। অদিতি বিনা বাক্য ব্যয়ে সই করে দেয়। দিন কাটতে থাকে নিজের ছন্দে। কলেজ, পড়ানো, বাড়ি, বন্ধু বান্ধব নিয়ে অদিতি আস্তে আস্তে আগের মত স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। জীবনের একটা বেদনাময় অধ্যায় যে সে পার হয়ে এসেছে সেটা ভুলে যায় ক্রমশ। এভাবে কেটে যায় আরও দুটো বছর।

    ক্রিসমাস ভ্যাকেশনে কলেজের বন্ধুরা ঠিক করে কোথাও বেড়াতে যাবে সবাই মিলে। কেউ বলে দার্জিলিংয়ের কথা, কেউ বলে পুরী, আবার কেউ বলে নেতারহাট। শেষে ঠিক হয় নেতারহাট যাওয়া হবে চারবন্ধু মিলে। সরকারী ফরেস্ট বাংলোটায় দুটো ঘর বুক করে ফেলে ওরা।

    ট্রেনে রাঁচি গিয়ে, ওখান থেকে গাড়ি নিয়ে ওরা নেতারহাট পৌছায়। সেখানে অপূর্ব সৌন্দর্য প্রকৃতির। চারদিকে বড় বড় গাছ, মাঝে একটা ছোট ঝোরা। ঝকঝকে রোদ, আর বিচিত্র সব পাখি।
    অদিতি আর মিলি থাকে একটা ঘরে আর অনিতা আর রিমা থাকে আর একটা ঘরে। রাতে ঘরে ফিরে সবাই আড্ডা দিতে দিতে ডিনার খায়। জঙ্গলে রাত সাড়ে নটায় মনে হয় অনেক রাত। চারদিক নিঝুম আর বাইরে গভীর অন্ধকার। দশটার মধ্যে সবাই ঘুমোতে চলে যায়।

    হঠাৎ মিলির ঘুম ভেঙ্গে যায় মাঝরাতে কান্নার আওয়াজে। অদিতি কাঁদছে।
    - “কী হল তোর? কাঁদছিস কেন”?
    - “এই ঘরটায় আমরা হনিমুনের সময় এসেছিলাম। অরিন্দম আমার একটা ছবি এঁকে সাজিয়ে রেখেছিলো ফুলদানিটার পাশে। দুপুরে জঙ্গলের বুনো ফুল নিয়ে এসে আমি ঐ ফুলদানিতে সাজিয়ে রেখেছিলাম। পুরনো কথা আবার মনে পড়ে গেল। কোথায় যেন সব হারিয়ে গেল। অরিন্দম কি আমাকে সত্যিই ভালবাসেনি কোনওদিন? সবটাই ওর অভিনয় ছিল”? অদিতি বলে।
    - “পুরনো কথা ভুলে যা। যা হারাবার তা হারিয়ে যায়। জোর করে ভালবাসা ধরে রাখা যায় না। এখন একটু ঘুমো। আর কাঁদিস না। “
    - “তুই ঘুমো। আমি ঘুমিয়ে পড়ব”।

    অদিতি সারারাত ঘুমোতে পারে না। থেকে থেকে কান্না ঠেলে ওঠে। পুরনো সময়ের সুখের স্মৃতি মনে ভিড় করে আসে। শুয়ে শুয়ে ভাবে, অরিন্দম যে গানটা জঙ্গলের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে গেয়েছিল - “চিরসখা হে, ছেড়ো না মোরে...”। ভাবে, সব কেমন বদলে গেল। কেন এমন হল? নানারকম ভাবনা ভিড় করে আসে মনে। রাত ভোর হয়ে যায় নানা চিন্তা করতে করতে। কিন্তু দুঃখবোধটা যেন আরও চেপে বসে মনের মধ্যে অদিতির। তার থেকে বের হতে পারে না কিছুতেই। মনের মধ্যে সব কিছু ওলট পালট হতে থাকে। হঠাৎ মনে হতে থাকে মনের ভেতরে কেউ যেন কথা বলছে ওর সঙ্গে। নানারকম শব্দ ভেসে আসতে থাকে কানে। খুব অস্থির লাগে অদিতির। মনে হয় ছুটে চলে যেতে দূরে কোথাও।

    সকালে উঠে মিলি দেখে অদিতি সম্পূর্ণ বিধস্ত। সারা রাত ঘুমোয় নি। অদিতি হঠাৎ খুব এলোমেলো কথা বলতে থাকে। মিলি ভয় পেয়ে যায়। বাকি বন্ধুদের ডাকে। ওরা চেষ্টা করে অদিতিকে শান্ত করতে। কিন্তু পেরে ওঠে না। অদিতির বন্ধুরা তাড়াতাড়ি কলকাতা ফিরে আসে।

    অদিতির বাবা ডাক্তারকে ফোন করে সব জানান। ডাক্তার বলেন অদিতিকে এক্ষুনি অ্যাসাইলামে ভর্তি করতে হবে। অ্যাসাইলামে ভর্তির পরে অদিতির ট্রিটমেন্ট শুরু হয়ে যায়। কিছু ট্র্যাঙ্কুলাইজার দিয়ে ডাক্তার ওকে ঘুম পাড়িয়ে দেন। তিনদিন সারা রাত অদিতি ঘুমোয় নি। ১৮ ঘণ্টা ঘুমিয়ে অদিতি জেগে ওঠে। ডাক্তার ওর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন কী ভাবে ওর এরকম অবস্থা হল। ডাক্তার অদিতির বাবাকে বলেন, “অদিতিকে সারিয়ে তুলতে গেলে অরিন্দমের সাহায্য লাগবে। ও যদি রোজ এসে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে যায় অদিতির সঙ্গে তাহলে মনে হয় অদিতি আবার সুস্থ হয়ে উঠবে। ওর অতীত ওকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। ও ওর ফেলে আসা জীবনের কথা ভুলতে পারছে না”।

    অরিন্দমকে অদিতির বাবা বলেন সব কথা। অরিন্দম অদিতিকে ডিভোর্সের পরে বিশাখাকে বিয়ে করে। বিশাখা অদিতির এক সময়ের ভাল বন্ধু ছিল। তাই বিশাখা আপত্তি করে না এই প্রস্তাবে যে, অরিন্দম রোজ দুঘণ্টা করে অদিতির সঙ্গে কাটিয়ে আসবে।

    অদিতি বাড়ি ফিরে আসে। অরিন্দম রোজ দুঘণ্টা করে একান্তে অদিতির সঙ্গে সময় কাটায়। অদিতি কে দেখে অরিন্দমের মায়া হয়। অরিন্দম বুঝে উঠতে পারে না কেন অদিতি এত আঘাত পেল ডিভোর্সের ফলে।
    অরিন্দম ভাবে, “কত মানুষেরই তো বিয়ে ভেঙ্গে যায়। সবাই আবার নতুন জীবন শুরু করে। অদিতি এরকম ভেঙ্গে পড়ল কেন? ওর ভালবাসা কি এতই গভীর যে অরিন্দমের সঙ্গে দূরত্বটা ও সহ্য করতে পারল না? মানুষের মন ভারী অদ্ভুত। তাকে বোঝা বড় কঠিন”।

    অরিন্দমের সাহচর্যে অদিতি আবার সেরে উঠতে থাকে একটু একটু করে। এভাবে ৬ মাস কেটে যায়। ওদিকে বিশাখা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অরিন্দমকে বলে, “আর কতদিন চলবে এরকম? এবার ওখানে যাওয়া বন্ধ কর। আমার আর ব্যাপারটা ভাল লাগছে না”।

    অরিন্দম দোটানায় ভোগে। তারপর সেদিন বৈশাখী পূর্ণিমা। অরিন্দম একটা বেলফুলের মালা নিয়ে এসে অদিতির মাথায় জড়িয়ে দেয়। বলে, “চলো আমরা ছাদে মাদুর পেতে গল্প করি”।
    ওরা ছাদে চলে আসে দুজনে। কিছুক্ষন বসার পরে অরিন্দমকে অদিতি বলে সেই গানটা আবার গাইতে,
    “চিরসখা হে, ছেড়ো না মোরে ...”।
    অরিন্দম বলে, “চলো আমরা ছাদের প্রান্তে চাঁদের দিকে তাকিয়ে দাঁড়াই। তারপর তোমাকে গানটা গেয়ে শোনাবো”। অরিন্দম গান ধরে। অদিতি মুগ্ধ হয়ে শুনতে থাকে চোখ বুজে। হঠাৎ অরিন্দম অদিতিকে ঠেলা মারে ছাদ থেকে।

    অরিন্দম নীচে এসে সবাইকে বলে, “অদিতি ঝাঁপ দিয়েছে ছাদ থেকে”।
    সবাই ওর কথা বিশ্বাস করে। ডিপ্রেশনের পেশেন্ট এরকমটা তো করতেই পারে। কেউ অবিশ্বাস করে না।

    অরিন্দম ও বিশাখা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। দিন গড়িয়ে গড়িয়ে চলতে থাকে। কিন্তু দিন দশেক পর থেকে অরিন্দম আর রাতে ঘুমোতে পারে না। একটু চোখ বুজে এলেই অদিতিকে স্বপ্ন দেখে। দেখে অদিতি বলছে,
    “আমাকে মারলে কেন? আমাকে কি একটুও ভালবাসনি কোনদিন”?
    অরিন্দমকে দিনে- রাতে একটা আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াতে থাকে। একমাস বিনিদ্র কাটে অরিন্দমের। তারপর একদিন অরিন্দম বলে বিশাখাকে, “আমার মনের মধ্যে কে যেন সবসময় কথা বলছে। আমার কানের কাছে সবসময় কত শব্দ হচ্ছে। আমি ঘুমোতে পারছি না”।

    অস্থিরতা বাড়তে থাকে অরিন্দমের। বিশাখা অরিন্দমকে নিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে, সাইকিয়াট্রিস্ট। ডাক্তার সব শুনে বলেন, “সিভিয়ার ডিপ্রেশন। দীর্ঘদিন ট্রিটমেন্ট করতে হবে। কোনও ফোবিয়া ওঁকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। আমাকে জানতে হবে কারণটা”।

    ডাক্তার অনেক চেষ্টা করেও কারণটা জানতে পারেন না অরিন্দমের থেকে। প্রশ্ন করলে অরিন্দম শূন্য দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে। দিনে দিনে অরিন্দমের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। শেষে ওকে অ্যাসাইলামে ভর্তি করে দিতে হয়। বছরের পর বছর কেটে যায়। কোনও উন্নতি হয় না অরিন্দমের। অরিন্দমের বর্তমান ঠিকানা ওই অ্যাসাইলাম। অরিন্দম মাঝে মাঝেই আপনমনে আবৃত্তি করে –

    “লাভ ওয়ান অ্যানাদার বাট মেক
    নট আ বন্ড অফ লাভ।
    লেট ইট র‍্যাদার বি আ মুভিং সি
    বিটুইন দ্য শোরস অফ ইয়োর সোল”।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • :|: | 2607:fb90:bdd4:51bf:2412:3e01:5f90:***:*** | ০৪ মে ২০২৫ ০৩:৪৫731058
  • এক অনভিজ্ঞ পাঠকের প্রশ্ন -- সাইক্রিয়াটিস্টরা কি কোনও জনকল্যাণমূলক কাজে এই ধরনের ভেঙে পড়া মানুষকে ইনভল্ভ হবার নিদান দেন না? শুনেছি অন্যের জন্য বা নিঃস্বার্থ সেবা মানসিক ভাবে মানুষকে সুস্থ রাখে। সাদা বুদ্ধিতে তো মনে হয় একটা তীব্র রিজেকশনের শকে মন ভেঙে গেছে। এখন যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের সেবা করলেই যে অ্যাপ্রিশিয়েশন পাবে তাতে মন নিজেই নিজের কাছে মূল্যবান অনুভব করবে। বৃহত্তর গ্রহণযোগ্যতা সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনারই কথা। 
    তার বদলে যার থেকে শক পাওয়ার জন্য ডিপ্রেশন হয়েছে তার সঙ্গে আরও সময় কাটানো তো দূরের কথা দেখা করাই উচিৎ না। 
    গল্পটা ভালো। লজিকটা কেন জানি মানতে অসুবিধা হচ্ছে।
  • সুমনা কাঞ্জিলাল | 223.185.***.*** | ০৪ মে ২০২৫ ১৫:৩৬731073
  • জঘন্য গল্প। অবাস্তব। গাঁজাখুরি। খেরোর খাতার লেখা এই জন্যই পড়তে নেই।
  • kk | 172.58.***.*** | ০৪ মে ২০২৫ ১৮:৪৯731078
  • ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় যদ্দূর জানি কোনো 'ওয়ান সাইজ ফিটস অল' রাস্তা নেই। মানুষের মানসিক গঠন এতই আলাদা আলাদা হয় যে কার কোন রাস্তা কাজে লাগে বলা যায়না। ওষুধে অনেকের কাজ হয়, অনেকের হয়না। অনেকের শরীর আদৌ ওষুধ সহ্যই করে উঠতে পারেনা। জনকল্যাণমূলক কাজ অনেকের ক্ষেত্রে ভালো কাজ দেয়। ক্রিয়েটিভ কাজ, নিজেকে আইসোলেটেড না রাখা, এগুলো তো ডাক্তার বা থেরাপিস্টরা করতে বলেন। তবে তার আগে অনেক সময় ইমোশনের প্রসেসিং, ট্রমা রিলিজ, এগুলোর একটা ফেজ থাকে। অদিতির ডাক্তার সেই রকম কিছু দিয়ে থাকবেন, যেটা হয়তো লেখক এই গল্পে উল্লেখ করেননি। পাঠককে কিছু অনুমান করে নিতে হবে হয়তো?
    তবে এই গল্পের কিছু জিনিষে আমারও একটু খটকা লাগলো। এক নম্বর, যার সাথে ব্রেক-আপের ফলে এত সিভিয়ার ডিপ্রেশন তারই সাথে সময় কাটাতে বলা, এরকম আমি কখনো কোথাও শুনিনি (নিজের ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন আছে বলে ডিপ্রেশন নিয়ে শুনেছি ও পড়েছি কম না। ইভন থেরাপিতেও আছি)। দু নম্বর, অদিতিরা চার বন্ধু মিলে নেতারহাট যাবার প্ল্যান করলো। কিন্তু সে তো নিজে জানতো ওখানেই হানিমুনে গেছিলো, কাজেই ঐ জায়গার সাথে প্রচুর স্মৃতি জড়িয়ে থাকবে। ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় থাকা কোনো মানুষের এটা জানার কথা যে অ্যাসোশিয়েটেড মেমারীজ একটা বড় ট্রিগার। তাহলে অদিতি ওখানে বেড়াতে যেতে রাজী হলো কেন?
  • BK | 2409:40e0:100f:f633:8000::***:*** | ০৮ মে ২০২৫ ২১:২৮731180
  • লেখককে অনুরোধ রকম কাঁচা গল্প না লিখে বিচারক সিনেমাটা দেখুন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন