এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  ঘুমক্কড়

  • শুভারম্ভ

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | ঘুমক্কড় | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ৮১৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  •   চলন্ত বাসের জানলা দিয়ে‌‌ই দেখেছিলাম সঙ্গমের ঠিক ওপরে কয়েকটি খিলান‌ওয়ালা গোলাপী রঙের  একটা লম্বাটে নির্মাণ। ভাবলাম ওখানেই দুটো রাত  কাটানো যায় না? বাসস্ট‍্যান্ডে নেমে লাঞ্চ সারি পথের ধারে একটা মামূলী দোকানে। হাসিখুশি গাড়োয়ালী যুবক দোকানী‌কে জিজ্ঞাসা করি,

    - আচ্ছা ওটা কী? 

    -  ওটা সাধু, সন্তের বিশ্রামের জায়গা। 

    - আমি‌ কি ওখানে রাতে থাকতে পারি?

    - ওখানে থাকবেন! ওটা কেবল একটা টানা চাতাল। তিনদিক খোলা। শুধু ওপরে ছাদ। আপনি বরং কোনো লজ বা মন্দির কমিটির গেস্টহাউসে থাকতে পারে‌ন।

    - সে তো পারি‌ই তবে আমি ওখানে‌ থাকতে চাইলে কোনো অসুবিধা আছে? 

    - না, অসুবিধা কিসের। তীর্থযাত্রী, সন্ন্যাসী‌দের বিশ্রামের জন‌্য‌ই তো ওটা তৈরী হয়েছিল। যাঁরা ওটার কথা জানেন তেমন পদযাত্রী সাধুরা যাত্রা সীজনে ওখানে‌ই থাকেন রাতে। তবে আপনার কি এমন খোলা জায়গায় রাত কাটানোর অভ‍্যাস আছে? তার ওপর আপনি তো একা এসেছেন বলছেন। 

    - না, তা নেই তবে কখনো না থাকলে সে অভিজ্ঞতা‌ই বা হবে‌ কী করে। অভ‍্যাস তো পরের কথা। সেই মানসিক বাধাই তো কাটাতে চাই। অবশ‍্য যদি কোনো ঝুটঝামেলা‌র সম্ভাবনা থাকে তাহলে অযথা ঝুঁকি নেওয়ার কোনো মানে হয় না।

    - বাবুজী, দেবভূমি গাড়োয়ালে দেবপ্রয়াগ অতি পবিত্র স্থান। এখানে এখন‌ও চুরি, ছিনতাই, ঠগবাজীর চল নেই। তাই আপনি‌ও ওখানে বদ্রীবিশালজীকে স্মরণ করে 'গঙ্গা মাইয়া কী গোদ মে' থাকতে‌ই পারেন। ভয়ের কোনো কারণ নেই।

        হাইওয়ে থেকে সঙ্গম অনেকটা নীচে প্রায় এক কিমি দুরে। ১৯২৮ সালে ভাগীরথীর ওপর তৈরি এক হেরিটেজ ঝুলাপুল পেরিয়ে ডানহাতি রাস্তা ধরে কিছুটা গিয়ে বাঁদিকে উপরে উঠে গেছে রঘুনাথ মন্দিরের সিঁড়ি। ডানদিকে সঙ্গম ঘাটে নামার সিঁড়ি। একদা পোরবন্দরের শেঠ নানজীভাই কালিদাস মেহতা, তাঁর ধর্মপত্নী সন্তোকবাই ও পরিবার‌বর্গ একত্রে এসেছিলেন কেদার-বদ্রী তীর্থযাত্রায়। সেই যাত্রা‌র পূণ‍্যস্মৃতিতে তীর্থ‌যাত্রীদের সুবিধার্থে ১৯৪৫ সালে শেঠজী  নির্মাণ করান সঙ্গম ঘাটের ওপর এই আশ্রয়স্থল। ধার্মিক শেঠজীর কৃপায় সেখানে‌ই আমি নিখরচায় থেকে গেলাম দু রাত্তির। 
      আশি ফুট লম্বা ও ফুট দশেক চ‌ওড়া একটি ঢাকা বারান্দা‌। আটটি তিনদিকে দেওয়া‌ল ঘেরা ঘর। অলিন্দ বা ভাগীরথী‌র দিকটা খোলা। কোনো দরজার বালাই নেই। শ্বেতপাথরের মেঝে। সঙ্গমের শোভা, গঙ্গা আরতি দেখার জন‍্য অলিন্দে‌র ছাদে নগর নিগমের উদ‍্যোগে সম্প্রতি বেঞ্চ বসেছে। দেবপ্রয়াগে‌র গঙ্গা আরতি হরিদ্বার বা বারানসীর মতো এলাহী নয়, সংক্ষিপ্ত।

          ভৌগোলিক উচ্চতা‌র নিরিখে দেবপ্রয়াগ পঞ্চপ্রয়াগের সর্বনিম্ন। রিজার্ভ বাসে চলা চারধাম যাত্রীরা সচরাচর এখানে নামে‌ন না। বাস থেকে‌ই দর্শন করে, দুর থেকে প্রণাম ঠুকে চলে যান রূদ্রপ্রয়াগ বা যোশীমঠ। রাত্রি‌বাসের তো প্রশ্ন‌ই আসে না। নিজস্ব গাড়িতে যাওয়া কিছু উৎসাহী যাত্রী কেবল এখানে ওপরে হাই‌ওয়েতে থেমে, এতটা নেমে ছুঁতে আসেন পবিত্র সঙ্গমবারি। তাই এটি পর্যটকবিরল জায়গা। এখানে আমার রাত্রি‌বাসের মনোবাঞ্ছাও সে‌ই কারণেই। 

       অতীতে সযত্নে বানানো নির্মাণ এখন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কিঞ্চিৎ মলিন। তবু মন্দ নয়। একদা মহারাষ্ট্রে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সহ‍্যাদ্রী রেঞ্জে বেশ কিছু গ্ৰুপ ট্রেকে গেছিলাম। সেখানে এমন জায়গা পেলে আমরা ধন‍্য হয়ে যেতাম। কিন্তু এখন আমি একা। ন‍্যাপস‍্যাকটা সাথে রাখতে পারি কিন্তু ১২ কিলোর বড় ট্রেকিং স‍্যাকটা‌র কোনো গতি করতে হবে। 

        শেষের ঘরে উদাসীন ভঙ্গিতে বসেছিলেন রক্তবর্ণ বসনপরিহিত এক জটাজুটধারী। পাশের ঘরে শুয়ে ছিলেন এক মধ‍্যতিরিশের বাঙালী সন্ন্যাসী। বাংলাতেই কথা হোলো তাঁর সাথে। বেরিয়েছেন চারধাম পদযাত্রায়। শরীর‌ ভালো না থাকায় এখানে দুটো রাত বিশ্রাম নিয়েছেন। আজ ঠিক লাগছে। তাই রোদ একটু পড়লে চারটে নাগাদ বেরিয়ে পড়বেন রূদ্রপ্রয়াগের পথে। তিনি‌ই বললেন, ঐ জটাধারী এখানে কিছুদিন ধরে আছেন এবং আরো কিছুদিন থাকবেন। আপনি ওনার জিম্মায় মাল রেখে এখানে থাকতে পারেন, আশপাশে ঘুরে‌ও আসতে পারে‌ন, কোনো অসুবিধা নেই। 

       সব গেরুয়া-ধারী‌ই যে সাচ্চা সাধু নন তা অভিজ্ঞতা‌য় জেনেছি। যদিও সাধু অসাধু চেনা‌র অন্তর্দৃষ্টি‌ আমার নেই। কিছু গৃহীর অনন‍্য রূপ‌ দেখার সুযোগ হয়েছে। না হয় কিছু সাধু‌র‌ও দেখলাম। মনে এতো আশাংকা থাকলে ঘাটের খোলা চাতালে না থেকে হোটেলের ঘরে খিল তুলে থাকা‌ই শ্রেয়। মিতবাক থিতুবাবাকে প্রথম দর্শনে‌ই ভালো লাগলো। তাঁর জিম্মায়  স‍্যাক রেখে গেলাম সঙ্গমে। 

        হরিদ্বারের দিকে (Downstream) মুখ করে দাঁড়ালে বাঁদিক থেকে আসছে অলকানন্দা। বদ্রীনাথ থেকে বিষ্ণুপ্রয়াগ অবধি অলকানন্দার জল পরিস্কার, নীলচে। বিষ্ণুপ্রয়াগে ধৌলিগঙ্গার সাথে মিলনে অলকানন্দার ঘোলাটে হ‌ওয়ার শুরু। চলার পথে কর্ণপ্রয়াগে পিন্ডার,  নন্দপ্রয়াগে নন্দাকিনী ও রূদ্রপ্রয়াগে মন্দাকিনী নদীর মিলনে ক্রমশ বাড়ে অলকনন্দার ঘোলাটে ভাব। কেদারনাথে ভারী বৃষ্টি হ‌লে পাহাড় ধোয়া মন্দাকিনীর জল রূদ্রপ্রয়াগে এসে মেশে অলকানন্দা‌‌য়। সেই মিলিত স্ফীতকায় জলধারা দেবপ্রয়াগে পৌঁছয় বেজায় ঘোলাটে হয়ে। তবে ভাগীরথীর জল দেবপ্রয়াগেও নীলচে সবুজ, পরিস্কার। সেখানে অলকানন্দার সাথে মিশে‌ই ভাগীরথী হয় ঘোলাটে গঙ্গা। এখান থেকে সাগরসঙ্গম অভিমূখে যাত্রাপথের দূরত্বের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে তার দূষণমাত্রা।

           ঘাটে দিল্লির কয়েকটি যুবক সুরক্ষা শৃঙ্খলের বাইরে গিয়ে চান ক‍রছে। হাত ফসকালে কনকনে ঠান্ডা খরস্রোতে সলিল সমাধি প্রায় সুনিশ্চিত। পূজারীজী বারণ করলেন। যৌবনের ধর্মে তারা শুনলো না। সঙ্গমের বিপরীতে পাথরে মোড়া সবুজহীন লালচে বিলাসবহুল রামকুন্ড রিসর্ট। তার পিছনে পাহাড়ের ঢালে অনেকটা জায়গা নিয়ে রয়েছে রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রীরঘুনাথ কীর্তি ক‍্যাম্পাস।

        জানলাম ২০১৩র কেদারপ্রলয়ে মন্দাকিনী‌র জলোচ্ছ্বাসে দেবপ্রয়াগে জলস্তর রঘুনাথ মন্দিরের সিঁড়ি ছুঁয়ে‌ছিল। অর্থাৎ বর্তমান জলতলের প্রায় চল্লিশ ফুট ওপরে! অলকানন্দার জলীয় ধাক্কায় ভাগীরথী‌র জলতল‌ও উজানে অনেকটা উঠে গিয়েছিল। প্রকৃতির সেই রুদ্রলীলার রূপ বাস্তব তথ‍্য জেনেও সেদিন মনশ্চক্ষে‌ তা হৃদয়ঙ্গম করে অকল্পনীয় লাগলো। রিসর্টের পাশে পাহাড়ি চাতালে উঁচু লোহার পোষ্টে  এখন সাইরেন লাগানো হয়েছে। আবার কোনো প্রলয়ে অলকানন্দার জলতল বিপজ্জনক মাত্রায় উঠলে সাইরেন বাজবে। টেহরি বাঁধের ফলে ভাগীরথী‌তে তেমন প্রলয়ের সম্ভাবনা কম। 

           সঙ্গমের ওপরে প্রাচীন রঘুনাথ মন্দির চত্ত্বরে কয়েকটি কিশোর হুটোপুটি করে খেলছিল। রাশভারী প্রধান পুরোহিতের ধমক খেয়ে তারা এক জায়গায় বসলো বটে তবে নিজেদের মধ‍্যে ইশারায় অন‍্য কোনো খেলার ফন্দি‌ আঁটতে শুরু করে। এটা চুপ করে বসার বয়স‌ই নয়। অন‍্য এক পুরোহিত দুরে বসে ওদের রকমসকম দেখে  মুচকি মুচকি হাসছেন। আমার সাথে চোখাচোখি হতে তাঁর চোখের হাসি চ‌ওড়া হয়ে ছড়িয়ে পড়ে মুখে। বুঝি নিয়ত নীরস  আচার পালনেও তাঁর মনের সরসতা হারায় নি। ঘুপচি, প্রায়ন্ধকার গর্ভগৃহে গুঁতোগুঁতি করে নিস্প্রাণ বিগ্ৰহ দর্শনের চেয়ে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে এহেন অকিঞ্চিৎকর জীবনলীলা পর্যবেক্ষণে‌ই আমি অধিক আনন্দ পাই।

          বিকেলে বাবার ঠেকে জমি‌য়ে বসেছি। দুজন স্থানীয় মানুষের সাথে আলাপ হয়। একজন দুধের প‍্যাকেট আনলেন। দুজন শীর্ণকায় গেরুয়াধারী পদযাত্রী‌ও এসে বসলেন। রাতে ওখানেই থাকবেন। বাবা সবাই‌কে চা খাওয়ালেন। একজন স্থানীয় মানুষ ভক্তিভরে বাবাকে একটি প্লাস্টিকের থলি দিলেন। বাবা খুলে দেখলেন - একটু তেল, চাল, আনাজ। বাবার মুখে খেলে যায় স্মিত হাসি। বুঝি থিতুযোগীর এভাবেই চলে। তাই সন্ধ্যায় রঘুনাথ মন্দির থেকে ফেরার পথে কিছু চাল, চিনি, চা, আলু কিনে বাবাকে দি‌ই। উনি দৃশ‍্যত খুশি হন। 

        রাতে ধুনীতে কাঠের আগুনে ছোট্ট কড়াইয়ে বাবা টুকটুক করে কিছু রেঁধে আমাকে‌ও সাদরে বললেন প্রসাদ গ্ৰহণ করতে। আমি জোড়হাতে সবিনয়ে বললাম, বাবা, কিছু মনে করবেন না, সন্ত আয়োজনে আমি ভাগ বসাতে চাই না, আমার কাছে শুকনো খাবার কিছু আছে। উনি আমার সেন্টিমেন্ট বুঝে বলেন, আচ্ছা বেশ‌। উনি শীর্ণ, হতক্লান্ত সাধু দুটিকে খানিক খাবার দিলেন। সাধুরা স্বল্পাহারী। তাঁরা মূদীতনেত্রে ইষ্টদেব স্মরণ করে সেই সামান্য আহার‌ই পরম তৃপ্তিতে খেলেন। হয়তো পথযাত্রার ক্লান্তি‌তে  ক্ষুধার্ত ছিলেন। তবে কপালে কিছু না জুটলে হয়তো ভাগীরথী‌র জল খেয়েই শুয়ে পড়তেন। অনেকের নানাবিধ বৈভব অনেক দেখেছি তবে একাকী ভ্রমণকালে এসব‌ও মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে বলে হয়তো আমার পা আজ‌ও মাটিতে পড়ে। আমি কলা মুড়ি বিস্কুট দিয়ে ডিনার সারি।

          হঠাৎ কোত্থেকে একটা কালো কুকুর থিতুবাবার ঠেকে এসে ল‍্যাজ নেড়ে নেড়ে অস্থির। বাবা‌ স্নেহমাখা কণ্ঠে বলেন, আরে কাল্লু, কাঁহা চলা গিয়া থা রে তু? নিজের খাবার থেকে তাকে একটু দেন। জানা  গেল কয়েকদিন আগে এক সাধুর পিছুপিছু কাল্লু চলে গেছি‌ল। এখন ফিরে এলো। হয়তো সেও করে এলো কোনো অজানা পরিক্রমা। বুঝলাম সংসার ত‍্যাগ করলেও বাবা‌ অবলা জীবের প্রতি স্নেহের বাঁধন কাটাতে পারেন নি। এ মায়া ত‍্যাগ করা অত সহজ নয়। 

         রাত বাড়তে ভাগীরথী‌র স্রোতের আ‌ওয়াজ একটু কমে গেল। বাবা বললেন রাতের দিকে ভাগীরথী‌তে জলস্তর বেড়ে যায়। তখন নদীর জলের আওয়াজ‌ একটু কমে যায়। জানতাম না পূর্ণ কলসের মতো ভরা নদী‌ও বাজে কম।

            সঙ্গমের কাছে 'নমমি গঙ্গে' প্রকল্পের কল‍্যাণে তৈরি হয়েছে নতুন ঝকঝকে শৌচালয়। কিন্তু কলে জল নেই। অর্থাৎ তা দড়িহীন তসরের পাজামা সদৃশ। তবে শৌচালয়ে প্লাস্টিকের বালতি রয়েছে। দেবভূমি বলে কেউ নিয়ে‌‌ও যায় নি। তাই ভাগীরথী‌র পবিত্র জল‌ই বালতি করে এনে কাজ সারি।  

          মনে পড়ে সাতাশির অক্টোবরের কথা। কজনে মিলে গেছিলাম তপোবন। ফেরার পথে গোমূখের পাশে এক ঝোপড়ায় দেখেছিলাম এক বাবাকে। তিনি গোমূখের বিশুদ্ধ গঙ্গা জলে বানানো চা খাইয়েছিলেন আমাদের। ঐ পরিবেশে, অমন ঠান্ডায় সেই চায়ে শরীর, মন উষ্ণতা‌য় ভরে গেছি‌ল। সে অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। এবার দেবপ্রয়াগে গঙ্গাজলে হালকা হয়ে মন ভারী হয়ে গেল। 
     
          তবে ঝুলাপুলে‌র পাশে গঙ্গার দু‌ই তীরে নমামি গঙ্গে প্রকল্পের খাতিরে সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে দুটি মিনি সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল‍্যান্ট। খুঁটিয়ে দেখে, পাম্পের গুঞ্জন শুনে মনে  হোলো ওগুলো শো-পিস নয়,  সচল। মনের ভার কিঞ্চিৎ লাঘব হোলো।

      দেবপ্রয়াগ জনপদের তিনটে ভাগ। হরিদ্বার থেকে বাসগুলি এসে থামে শান্তিবাজার মেন বাসস্ট্যান্ডে। নীচে বাহবাজার। আরো নীচে বীচবাজার। সঙ্গম থেকে পদব্রজে অলকানন্দার ওপরে বাহবাজার পুল পেরিয়ে দেখে আসা যায় ধনেশ্বর মহাদেব মন্দির। অনতিদুরে ভূবনেশ্বরী মাতা মন্দির। 

         সেবার ভুল করে ২০১৯ সালের মে মাসের মাঝামাঝি পীক চারধাম যাত্রা সীজনে চলে গেছি‌লাম উত্তরাখন্ডে। উর্ধ্বগামী গাড়ির ঢল দেখে বদ্রী-কেদারের আবিল ভীড়ে সামিল হতে মন সায় দিল না। ভাবলাম ঐ দুই মহান ধাম দর্শন মাথায় থাক। বরং অপেক্ষাকৃত কম পর্যটক ভারাক্রান্ত কিছু জায়গা ধীরেসুস্থে দেখবো। সেবার আমার সেই সোহাগী একাকী ভ্রমণ দেবপ্রয়াগ থেকে শুরু করা‌র সিদ্ধান্ত ভুল হয়নি। দেবপ্রয়াগ আমায় নিরাশ তো করে‌ইনি বরং যেন সেই সু্রে‌ই সুন্দর বেঁধে দিয়ে‌ছিল সেবারের যাত্রা‌র তার।  দ্বিতীয়‌ দিন দেবপ্রয়াগ থেকে ঘুরে এসেছিলাম  মাতা চন্দ্রবদনী তীর্থ। সে অভিজ্ঞতা‌ও সুন্দর তবে তা অন‍্য বৃত্তান্ত।

          দ্বিতীয় রাতে নির্জন সঙ্গমে জীনস ও টি-শার্ট পরিহিত এক যুবককে প্রায় ঘন্টাখানেক এক‌ই স্থানে আত্মস্থ ভঙ্গিতে পদ্মাসনে বসে থাকতে দেখলাম। বাবা জানালেন, উনি এক স্থানীয় দোকানী। দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার আগে রোজ ওখানে বসে কিছুক্ষণ ধ‍্যান করেন। দেখে বেশ অভিভূত হলাম।

          ঘাটে বেশ মশা ছিল। অন‍্যবার মশারী নিয়ে যাই। সেবার নিয়ে যাই নি। ভেবেছিলাম পাহাড়ি জায়গা, উচ্চ‌তা ও বহমান নদীর জন‍্য মশা হয়তো হবে না। বোঝা গেল, ভুল ভেবেছিলাম। তবে সাথে একটা টু-মেন টেন্ট ছিল। তার‌ই ইনারটা খাটালাম। কালো কুকুর‌টা সাদা ইনারের তাঁবুর পাশে এসে কুন্ডলী পাকিয়ে শুলো। ভালো‌ই হোলো। কাল্লু‌ই বিনে পয়সার পাহারাদার। বাবা কৌতূহলী দৃষ্টিতে আমার টেন্ট খাটানো দেখছিলেন, মুখে মৃদু হাসি। হয়তো ভাবছিলেন এই হচ্ছে শহুরে মানুষের খোলা জায়গায় রাত্রিবাসের কায়দা। মাঝরাতে দু একবার ঘুম ভাঙতে শুনেছি চটাস চটাস শব্দ। অর্থাৎ ঘুমন্ত বাবার জাগ্ৰত হাত ঘুমের মধ‍্যেও স্বচ্ছন্দ অভ‍্যাসে মশকনিধনে রত। আমি ওভাবে শুলে গঞ্জিকা সেবন না করেও সকালে হয়ে যেতো অনিদ্রা‌ক্লিষ্ট রক্তচক্ষু।

          কাকভোরে বাবা গঙ্গা‌জলে চা তৈরি করে ডাকলেন, উঠিয়ে বাবুজী, জলদি বাসস্ট‍্যান্ড নেহি জানে সে রূদ্রপ্রয়াগ কি বাস মে জগহ নেহি মিলেগা। হালকা ভোরের আলোয় ভাগীরথীর নীলচে জল বয়ে চলছে। সঙ্গম ঘাটের সিঁড়িতে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে ভাবছিলাম, মনের আগল একটু খুলতে পারলেই দিব‍্যি থাকা যায় এমন কপাটহীন জায়গায়। সময়টা নভেম্বর হলে হিমেল ঠান্ডায় আরো জমে যেতো। 

        দেবপ্রয়াগ দিয়ে সেবার আমার তেত্রিশ দিনের একাকী উত্তরাখন্ড ভ্রমণের শুরুটা‌ই এমন সুন্দর হতে বাকি অভিজ্ঞতা‌ও হয়েছিল অপ্রত্যাশিত মনোরম। কথায় বলে যার শেষ ভালো তার সব ভালো। এক্ষেত্রে তা উল্টো দিশাতেও  সত‍্যি হয়ে গেছিল।

    পুনশ্চঃ- 
    ২০১৯এ একাকী উত্তরাখণ্ড ভ্রমণে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম ৮.৫ - বাড়ি ফিরেছি ১১.৬. সেই ৩৫ দিনের ভ্রমণে দুরাত কেটেছে ট্রেনে, বাকি তেত্রিশ রাত পথে। ওটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আমি যখন ভক্ত ন‌ই, কেদারনাথ, বদ্রীনারায়ণ দর্শনের আকুতি নেই আমার এবং সর্বোপরি দিনপ্রতি তিনশো টাকায় বেড়ানোর লক্ষ‍্য তখন চারধাম যাত্রা সিজনে যাওয়া উচিত হয়নি। রুটের অধিকাংশ প্রা‌ইভেট বাস, শেয়ার জীপ উঠে গিয়ে তীর্থ‌যাত্রীদের জন‍্য রিজার্ভে চলছে। তাই গণ পরিবহনে যাতায়াতে প্রবল সমস‍্যা‌র মুখোমুখি হয়েছি। অথচ দশেরার পরে গেলেই ছবিটা অন‍্য হয়ে যেতো - স্থানীয় ফিডব্যাক অনুযায়ী - তখন শেয়ার জীপ স্টপে দাঁড়িয়ে লোক ডাকতো। 
     
         তবে যাত্রা সিজনে‌ও বেশ কয়েকবার স্থানীয় মানুষের অপ্রত্যাশিত সাহায্য পেয়েছি। তা হয়তো দেবভূমির আশ্চর্য আপতন। যেমন ধরা যাক ফেরার পথে রুদ্রপ্রয়াগ থেকে NH-7 ধরে শেয়ার জীপে হরিদ্বার অভিমূখে ধারি দেবী মন্দিরের কাছে কলায়াসুরে নেমে পড়লাম। মনোবাঞ্ছা ১২ কিমি দুরে একটি পর্যটকবিরল মন্দিরে যাবো। কিন্তু শেয়ার জীপ পেলাম না। সব ভাড়া খাটছে যাত্রা সিজনে। জয় মা বলে বুকে পিঠে পনেরো কেজির দুটো স‍্যাক নিয়ে‌ই ভাঙতে শুরু করলাম দেড় হাজার ফুট চড়াই। অপূর্ব সুন্দর, নির্জন রাস্তা। দারুণ লাগছিল। উল্টোদিশা থেকে আসা স্থানীয় এক মহিলা‌কে শুধোলাম - ঠিক যাচ্ছি তো? তিনি বললেন, বাবুজী, পথ তো এটাই কিন্তু অনেক দুর, বেশ চড়াই - পারবেন যেতে? অসুবিধা হবে না? 
     
        আমার হিসেব অন‍্য - সমতল রাস্তায় মাল নিয়ে হাঁটি ঘন্টায় ৪ কিমি গতিতে। চড়াই, মালের বোঝা, বয়সজনিত ক্লান্তির ফলে অধিক বিশ্রাম ইত্যাদি‌র জন‍্য চলার গতি কমে ঘন্টায় ২ কিমি‌তে নেমে গেলেও ৬ ঘন্টায় পৌঁছে যাবো। তখন সবে সকাল ১০টা - মানে চারটের  মধ‍্যে - পাহাড়ে সন্ধ‍্যা নামার আগেই পৌঁছে যাবো গন্তব‍্যে। বেড়াতে‌ই তো এসেছি। ট্রেন মিস করার ব‍্যাপার‌ও নেই। হাঁটলুম না হয় ছ ঘন্টা - কী এসে যায়? তাই হেসে বলি - দেখতে হ‍্যায়। 
     
       মহিলা‌টি চিন্তিত মুখে চলে গেলেন। আমি এগিয়ে চললুম চরৈবেতি ছন্দে এবং … না এখন থাক সে বৃত্তান্ত, তবে আসতেও পারে কখনো। তবে সেদিন এবং সেবারের ভ্রমণে যা সব সুন্দর অভিজ্ঞতা হয়েছিল - তার জন‍্য‌ই এ লেখা‌র শিরোনাম দিয়েছি - শুভারম্ভ। তেমন একটা উল্লেখ আছে এই সিরিজের ৪ নং পর্ব - “কেদারনাথের সৌজন্যে” লেখায়।

    চিত্রাবলী:-


    ভাগীরথীর ওপর প্রায় শতাব্দীপ্রাচীন ঝুলাপুল পেরিয়ে এগোলাম দেবপ্রয়াগ সঙ্গমের দিকে  


    সঙ্গমের আশেপাশে - 1. রঘুনাথ মন্দির 2. উনিজির পেট প্রোজেক্ট নমামি গঙ্গে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ভাগীরথী‌র তীরে আধুনিক মুক্তি‌ধাম (শশ্মান) 3. ঐ প্রকল্পের কল‍্যাণে আধুনিক টয়লেট 4. শেঠজী নির্মিত সঙ্গমঘাটে সন্ত বিশ্রাম স্থলের ছাদে গঙ্গা আরতি দর্শনের উপায় - এখানে বসে থাকলেও সুন্দর সময় কেটে যায় 5. সঙ্গম ঘাটের সন্ত বিশ্রাম স্থল - যেখানে দু রাত নিখরচায় বডি ফেলেছি‌লাম 6. পান্না সবুজ ভাগীরথীতে এসে মিলিত হচ্ছে ঘোলাটে অলকনন্দা 7. রামকুন্ড রিসর্ট 8. রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রীরঘুনাথ কীর্তি ক‍্যাম্পাস।


    আবার কখনো প্রলয়ংকরী জলোচ্ছ্বাস এলে আগাম সতর্ক করার জন‍্য সাইরেন পোষ্ট


    ঐ থিতুবাবার ভরসায় কাটালুম এখানে দু রাত। বাবার বানানো চায়ের সাথে বাবার সাময়িক স্থানীয় ভক্তদের সাথে বিকেলে খানিক খোশগল্প‌ও হলো। 


    দুপুরে এখানেই টুকুন বিশ্রাম নিয়েছি‌লাম


    রাতে সঙ্গম ফাঁকা হয়ে গেলে এই শ্বেতমর্মরের অলিন্দে‌ই পেতেছি‌লুম টেন্টের সাদা ইনার 
     
    গঙ্গার দুই তীরে মিনি সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল‍্যান্ট - আশা করা যায় সম্পূর্ণ না হলে‌ও দেবপ্রয়াগে গঙ্গার দুই তীরে জনপদের কছু বা অধিকাংশ সুয়েজ এখন পরিশোধন করে গঙ্গা‌য় ফেলা হয়
     
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ৮১৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2607:fb90:eab2:c595:cd4d:6d7e:49e5:***:*** | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৬528924
  • ভালো লাগলো পড়তে। ভাগীরথীর সবুজ জল কী সুন্দর দেখতে! ঐ দোকানি ভদ্রলোকের রোজ এসে ধ্যন করে যাওয়ার ঘটনাটা পড়েও মনের মধ্যে একটা ভালো লাগা ঘুরে গেলো।
  • বিপ্লব রহমান | ০১ মার্চ ২০২৪ ২০:২৩528952
  • অপূর্ব ভ্রমণ পাঠ। লেখকের গ্রাহক হলাম। আরও পাঠের বাসনা রাখি yes
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:b3ac:3b1a:41e0:***:*** | ০১ মার্চ ২০২৪ ২০:৩৮528954
  • আপনার সাথে সাথে আমারও একটু ঘোরা হল।
  • ইন্দ্রাণী | ০২ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৮528976
  • প্রতিটি পর্ব ভালো লেগেছে। ফিরে পড়ব আবারও। খুব অন্যরকম।
  • হীরেন সিংহরায় | ০৪ মার্চ ২০২৪ ১৩:৩২529024
  • বছর কুড়ি আগে হলে হয়তো হতেম সঙ্গী 
  • যোষিতা | ০৪ মার্চ ২০২৪ ১৪:২৩529025
  • সমরেশবাবু হচ্ছেন সত্যিকারের ট্র্যাভলার। প্রত্যেকটা জায়গা থেকে মাটির আঘ্রাণ সংগ্রহ করেন। পথিক।
  • সমরেশ মুখার্জী | ০৬ মার্চ ২০২৪ ১৯:৩০529076
  • যাদের এমন মুক্ত বিহঙ্গের মতো অতি অল্প ব‍্যয়ে একাকী ভ্রমণে‌র অভিজ্ঞতা ভালো লেগেছে বলে জানিয়েছেন, তাদের সবাই‌কে জানা‌ই ধন‍্যবাদ। আসবে আরো অনেক কটি পর্ব - যার বেশ কিছু আবার প্রচলিত ভ্রমণ সার্কিটের বাইরে।
     
    হীরেনদা, 
    তাহলে তো একাকী ভ্রমণ তার চরিত্র খু‌ইয়ে হয়ে যেতো দোকাকী ভ্রমণ। তবে যৌবনে এক প্রিয় বন্ধু‌র সাথে তেমন দোকাকী ভ্রমণ‌ও করেছি গোটা ছয়েক। তার স্বাদ আবার অন‍্য।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত প্রতিক্রিয়া দিন