এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • ট্রেনযাত্রার পাঁচালি - চিত্রকূট থেকে উদুপী - ৩

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৭৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • টোটাল কমিক সিচুয়েশন
     
    রাত সাড়ে এগারো‌টার ট্রেন অবশেষে এলো ভোর চারটেয়! মাঝে মাঝে নেটে লেটেষ্ট টাইম দেখে, তিনবার এ্যালার্ম বদলে, সারারাত ধরে প্ল‍্যাটফর্মে এক অতিউদ‍্যমী চা ওয়ালার অনর্গল উচ্চকন্ঠে “চায়া, চায়া” হাঁক শুনে সারাটা রাত দুচোখের পাতা এক করতে পারিনি। বিছানায় গড়াগড়ি খেয়ে‌ই কাটলো। ট্রেন ঝাঁসী পৌছালো বেলা এগারোটায়। সকাল থেকেই ট্রেনের কামরায় হকারদের হাঁকাহাঁকি, যাত্রীদের কথাবার্তায় ঘুম বিশেষ হয়নি, একটু তন্দ্রা মতো এসেছিল। স্টেশনের রিটায়ারিং রুমে ফ্রেশ হয়ে গেলাম রানী লক্ষীবাঈ মহল দেখতে।
     
    ঝাঁসী থেকে পরবর্তী ট্রেন ছাড়লো বিকেল পাঁচটায়। খুব ক্লান্ত ছিলাম তাই রাত আটটায় ডিনার সেরে আমার জন্য নির্ধারিত আপার বার্থে উঠে শুয়ে পড়লাম। যাত্রীরা বেশ ভব‍্যসভ‍্য। অনেকেই একক যাত্রী, তাই হৈচৈ, কথাবার্তা বিশেষ নেই। ভাবলাম আজ রাতে অন্তত ট্রেনে একটু ঘুমোনো যাবে। একটু বাদেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম।
     
    ভোপালে বেশ কিছু যাত্রী উঠলো। পাশের খোপেই একটা দলে অনেক পুরুষ, নারী ও শিশুকন্ঠের কলবলানি শোনা গেল। ঘড়ি দেখলাম। রাত সাড়ে নটা। মানে দেড়ঘন্টাও ঘুমোইনি। তারপর থেকে আলো জ্বেলে রেখে ওই দলের অনেকের অবিরাম সম্মিলিত কলকন্ঠ শোনা যেতে লাগলো। সহযাত্রীদের প্রতি তাদের সহমর্মিতার নিতান্তই অভাব। তারা তিনটি পরিবারের আটজন একত্রে গোয়া বেড়াতে যাচ্ছে (পরে সকালে জেনেছিলাম)। ফলে অবসর বিনোদনের স্ফূর্তির প্রকাশ ট্রেন থেকেই শুরু হয়ে গেছে। সেই প্রকাশের প্রকোপে অন‍্য যাত্রীদের ঘুম হলো কি হলোনা তা ভাবার দায় তাদের নেই। তার মধ‍্যে এক পুরুষকন্ঠ আবার জোরদার, গমগমে। গভীর রাতে‌ও তিনি কথা বলছেন ফুল ভলিউমে। 
     
    আমার খোপের সবাই আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়েছে। সাইড বার্থের নীচে শুয়ে আছেন এক বিদেশিনী মা। ওপরে বছর বাইশের কন‍্যা। সবাই চুপচাপ। কারুর নাসিকাধ্বনি‌ও শোনা যাচ্ছেনা। তাই আবার ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু ওই যাত্রীদলের উচ্চগ্ৰামে কথাবার্তায় আবার ঘুম ভেঙে যায়। হয়তো বাকিদের‌ অবস্থাও তথৈবচ।
     
    তন্দ্রাচ্ছন্ন বিভ্রমে একবার মনে হয়েছে, গভীর রাতে, অন্ধকার কামরায় সবাই যখন নিদ্রা‌মগ্ন, তখন সত‍্যি‍‍ই কেউ এত রাত অবধি উচ্চকিত স্বরে কথাবার্তা বলছে নাকি আমিই আধো ঘুমে ছেঁড়া স্বপ্ন দেখছি? একসময় এইরকম কিছু আওয়াজ এবং কথাবার্তা শোনা গেল:
     
    “এ্যাঁ, এ্যাঁ, এ্যাঁ” এক শিশুর চিল চিৎকার কান্না।
     
    “ও, ও, ও, মেরে গলু, মেরে প‍্যায়রে, মেরে লাল, কিঁউ রো রহে হো” - একটি নারীকন্ঠে চিরন্তন জিজ্ঞাসা।
     
    “এ্যাঁ, এ্যাঁ, এ্যাঁ” - গলুর কারণ দর্শানোর কোনো প্রশ্নই আসে না। তার চুপ হবার‌ও কোন লক্ষন দেখা যায় না।
     
    “আরে চুপ হো যা, চুপ হো যা” সেই ভারী পুরুষকন্ঠে ফোটে দাপটের দার্ঢ‍্য।
     
    তবে তার কোনো প্রভাব গলুর ওপর পড়ে না। বিপুল বিক্রমে তার কান্না অব‍্যাহত থাকে‌।
     
    “আরে, এ খালি পিলি রো কিঁউ রাহা হ‍্যায়?” সেই পুরুষকন্ঠের দাপটে টান পড়ে এবার অসহায়তা প্রকাশ পায়। (পরে জেনেছি তিনি ছিঁচকাঁদুনে গলুর পিতা)
     
    “আচ্ছা, রুকো, আভি ডগিকো বুলাতে হ‍্যায়” অন‍্য পুরুষকন্ঠে এবার গলুকে ভয় দেখিয়ে কান্না থামানোর পরিকল্পনা শোনা গেল। 
     
    “ভৌউ উ উ উ ভৌ ভৌ” মানব কন্ঠে এমন নিঁখুত সারমেয় ধ্বনি শুনে হয়তো আসল কুকুর‌ও থমকে যাবে। কিন্তু গলু এতো সহজে থমকানোর বা থামবার পাত্র‌ নয়‌‌। মানবডগির গর্জনে ভয় তো সে পেলোই না, উল্টে ভয় দেখিয়ে চুপ করানোর এহেন ফন্দি‌তে সে রেগে গিয়ে দ্বিগুণ জোরে কেঁদে উঠলো। 
     
    “শায়দ ভুখ লাগা হোগা” এক মোলায়েম নারীকন্ঠে শোনা গেল সুচিন্তিত মতামত।
     
    “ইতনা জলদি ভুখ ক‍্যায়সে লাগে গা? থোড়ি দের পহেলেই তো হালুয়া খিলায়া?” গলু, গলু বলে আদর করে ডাকা সেই মহিলা কন্ঠের জবাব। বোধহয় গলুর মা।
     
    কথায় বলে শিশুর ব‍্যাপার স‍্যাপার mother knows the best. কিন্তু গলু এমন‌ই শক্ত ঠাঁই যে মা, বাবা, মাসি, কাকা (না জানে ঔর কৌন কৌন) সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জল ঢেলে নিশুত রাতে, নিস্তব্ধ কামরায়, শায়িকা শ্রেণীতে ধাতব ট্রেনের আওয়াজ ছাপিয়ে অব‍্যাহত র‌ইল তার সরু গলায় পরিত্রাহী কান্না।
     
    “তো এক কাম করো, থোড়া দুধ পিলা দো, শায়দ শো যায়েগি” এবারে অন‍্য এক নারী কন্ঠে আসে আর এক পরামর্শ। কতজন যে ওদের দলে আছে তা তন্দ্রা‌র ঘোরে বুঝতেও পারছি না ঠিক। পরে জেনেছি আটজন।
     
    “আভি দুধ কাঁহা সে লায়ু ম‍্যায়? ফিডিং বটল তো কব কা বন্ধ করা দিয়া” - হালছাড়া গলায় বলে গলুর মা।
     
    ‘বাজার’-এ টুকুন পার্শ্বচারণা 
     
    ঘুমের দফা তিনশো দো হয়ে গেছে। গলুর মায়ের বলা প্রথম বাক‍্যটার টোন শুনে‌ আচম্বিতে ১৯৮২ সালের ‘বাজার’ সিনেমায় ফারুক শেখের একটা সংলাপ মনে পড়ে যায়। প্রায় এমন‌ই টোন ছিল। কেবল সেখানে দুধের বদলে ছিল ধানী চুড়ি‌য়া। তাই একটু পার্শ্বচারণা করতে মন চাইছে। পাঠক অধৈর্য্য বোধ করলে স্কিপ করুন। ইচ্ছে হলে সঙ্গে থাকুন।
     
    ঐ সিনেমায় খৈয়াম সাহেবের সুরে কিছু অনবদ‍্য গান আছে। আজ অবধি অসংখ্য‌বার শুনেছি। যেমন করোগে ইয়াদ তো, দিখা‌ই দিয়ে ইঁয়ু, দেখ লো আজ হামকো জী ভরকে ইত্যাদি। শেষোক্ত গানটিতে অন্তরাত্মা‌র আর্তনাদ খৈয়াম পত্নী জগজিৎ কৌরের গায়কী‌তে অদ্ভুত ফুটেছিল। সিনেমায় শবনম (সুপ্রিয়া পাঠক) এর ওপর শারজুর (ফারুক শেখ) অনুরাগ হয়েছে। তবে পরিচয় শবনমের বাড়িতে গিয়ে দেখা করার পর্যায়ে যায় নি। তাই শারজু এক ফন্দী আঁটে। দু হাতে কিছু কাঁচের চুড়ি নিয়ে ফেরি‌ওয়ালার ডাক দিতে দিতে শবনমদের দরজায় এসে হাঁকে শারজু:
     
    - চুড়ি‌য়া লে লো চুড়ি‌য়া - রঙ্গ বিরঙ্গী চুড়ি‌য়া - গোরে গোরে হাতো কী সাগাই - আশিক কো মন কো ভাই … (bhayee … be liked)
     
    হাঁক শুনে ষোড়শী শবনম দৌড়ে এসে দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে বাইরে হাত বাড়িয়ে বলে - এ চুড়ি ওয়ালে, চুড়ি‌য়া দেখা‌ও না।
     
    শবনমের বাড়ানো হাতে হাত বুলোতে বুলোতে শারজু স্বগতোক্তি করে - ইয়ে খুব সুরৎ হাতো মে চুড়ি‌য়া তো কয়ামৎ হ‍্যায়!
     
    শবনম শারজু‌র উচ্চ কণ্ঠে ফেরি‌ওয়ালার ডাক শুনে চিনতে পারে নি। অস্বস্তি‌তে হাত টেনে বলে ওঠে - ইয়ে কেয়া কর রহে হ‍্যায় আপ!
     
    - চুড়ি‌য়া প‍্যাহনা রাহা হুঁ বেবী। ম‍্যানেজারি কণ্ঠে বলে শারজু ঘন সবুজ এক গোছা চুড়ি পরায় ওর ডান হাতে।
     
    দরজার ভেতরে হাত টেনে চুড়ি পরা কবজি দেখে শবনম খুশিতে বলে, চুড়িওয়ালে, ঔর চুড়ি‌য়া দিখাও না, মুঝে ধানী (হালকা সবুজ) চুড়ি‌য়া চাহিয়ে।
     
    কপট রাগ দেখি‌য়ে শারজু এবার জোরে জোরে বলে - ধানী চুড়ি‌য়া চাহিয়ে? অব ধানী চুড়ি‌য়া কাঁহা সে লায়ু ম‍্যায়? হপ্তা ভর কা কামাই গয়া না ইসমে!
     
    এবার শারজুর স্বর চিনতে পারে শবনম। সটাক করে দরজা খুলে দাঁড়ায়। শারজু‌কে দেখে বিষ্ময়াবিষ্ট লজ্জায় ছুটে পালায় ভেতরে। শারজু‌ও হাসি মুখে তাকিয়ে থাকে। কতদিন আগে দেখা সিনেমা‌, কিন্তু সেই মুহূর্তটা এতো সুন্দর - স্মৃতি‌তে রয়ে গেছে অমলিন। তো গলুর মায়ের - “আভি দুধ কাঁহা সে লায়ু ম‍্যায়?” বলার ধরণে বাজার- এ শারজুর কণ্ঠে - অব ধানী চুড়ি‌য়া কাঁহা সে লায়ু ম‍্যায়? ধরণটি যেন হুবহু ফুটে ওঠে। 
     
    ফিরে আসি ট্রেনে
     
    গলুর মায়ের হাল ছাড়া জবাবে - সেই মহিলার উর্বর মস্তিস্কপ্রসূত শলা শোনা যায় - “আরে অপনি হী থোড়া দে দো। ”
     
    “তুম ভী না, কুছ ভী বোলতে রহতে হো” গলুর মায়ের অস্বস্তিসূচক মন্তব‍্য শোনা যায়, “ও ভি তো কব কা ছোড়য়ায়া দিয়া”।
     
    “আরে এ্যায়সে হি উপ্পরসে মুহ মে থামা দো না, চুপ হো যায়েগি” সেই মহিলাও নিজের পরামর্শে অটল।
     
    “ও কিঁউ রো রহী হ‍্যায়” কচি কন্ঠে এবার শোনা যায় দলের আর এক কন‍্যাশিশুর কৌতুহল।
     
    “আরে! আভি তুঝে ক‍্যা পরেশানি হোনে লাগা ভাই? চুপচাপ সো যা” উচ্চগ্ৰামে অন‍্য পুরুষ‌কণ্ঠে দাবড়ানি শোনা যায়। কিন্তু শিশুর কৌতুহল অদম‍্য। তাও সে নাঁকি সুরে পোঁ ধরে, “বাতাইয়ে না পাপা, গলু কিঁউ রো রহী হ‍্যায়”। “রহী” শুনে বুঝলুম গলু‌ তাহলে এক কন‍্যে। সকালে বুঝেছি বছর আড়াইয়ের গলু, অতি আদরে পালিতা একটি রাম বিচ্ছু কন্যাশিশু। একা রামে রক্ষে নেই সূগ্ৰীব দোসর। দলের এতোজন প্রাপ্তবয়স্ককে সমবেতভাবে গলুর কান্না থামানোর প্রচেষ্টায় হাত ধুয়ে পড়তে দেখে হয়তো শিশুমনে জিজ্ঞাসার উদ্রেক হয়েছে, গলুর সাংঘাতিক কিছু একটা হয়েছে বোধহয়।
     
    “দুংজ্ঞা এক কানপট্টি কে নীচে কস্‌কে তব তেরে কো আয়েগী সমঝমে। বোল রাহা হু না - শো যা চুপচাপ”। সে চুপচাপ শুয়ে পড়লো কিনা বোঝা গেল না, কিন্তু তার পিতার তীব্র হুঙ্কারে, হাওয়া খারাপ বুঝে তৎক্ষনাৎ বন্ধ হয়ে গেল তার নাঁকি সুরে জিজ্ঞাসা। হয়তো আশপাশের‌ অনেকের‌‌ও সেই হুঙ্কারে ঘুম‌ চৌপাট হয়ে গেল, কেননা খুনখুন করে মিহি সুরে সবে শুরু হ‌ওয়া আমার পাশের বার্থে‌র এক সহযাত্রীর নাসিকাধ্বনীও পত্রপাঠ বন্ধ হয়ে গেল। ওই হুঙ্কারটা মনে হলো সেই পুরুষসিংহের যিনি কুকুরের ডাক ছেড়ে গলুর কান্না থামানোর ব‍্যর্থ প্রয়াস করেছিলেন। গলুর কাছে ল‍্যাজে গোবরে হয়ে সে‌ই ঝালটা নিজের কন‍্যা‌র ওপরে ঝেড়ে দিলেন মনে হয়।
     
    “মোবাইল দে দু উসকি হাত মে? শায়দ চুপ হো যায়েগি” আর এক পুরুষ কন্ঠে বর্তমান সময়ের প‍্যানাসিয়া বা সর্বরোগহর দাওয়াইয়ের পরামর্শ আসে। তা তো বটেই! আজকাল স্মার্টফোন তো কত কাজেই ব‍্যবহার হয়। রিমোট না পাওয়া গেলে মোবাইল দিয়ে এসি চালু করা যায়। বোধহয় ছিঁচকাঁদুনে শিশুর কান্না থামানোর এ্যাপ‌ও থাকতে পারে। 
     
    “নেহী, নেহী, আভি উসকি হাত মে কুছ মত দে। শুন, এক কাম কর, তেরা মোবাইলমে বচ্চে কা রোনেকা যো কলার টিউন হ‍্যায় না, উসকো চালা দে, দেখ ফির হোতা হ‍্যায় কেয়া” অসহায় পিতার কণ্ঠে অবাধ্য কন‍্যার কান্না থামানোর অনন‍্য নিদান শোনা যায়। গলুর মায়ের বলার ধরণে বিরাশির বাজারে ফারুক মনে হয়েছিল। গলুর বাবার বাক্যে তিয়াত্তরের “ঝিল কে উস পার” এ মুমতাজের ইলেক্ট্রেফাইং নাচের সাথে লতাজীর গান - “দো ঘুঁট মুঝে ভী পিলা দে শরাবী - দেখ ফির হোতা হ্যায় কেয়া” - মনে পড়ে গেল।  
     
    “ওঁয়াএ্যা, ওঁয়াএ্যা, ওঁয়াএ্যা” করে শুরু হয় মোবাইল শিশুর ইলেকট্রনিক কান্না। 
     
    কিমাশ্চর্যম! মিনিট খানেক মোবাইলের সাথে পাল্লা দিয়ে বাস্তব শিশুর কান্না থেমে যায়। বোধহয় গলুর কান্নার কোটা এমনিতেই শেষ হয়ে এসেছিল। অথবা রক্তমাংসের গলু কোনোভাবে উপলব্ধি করেছি‌ল ইলেকট্রনিক শিশুর সাথে কান্নায় পাল্লা দেওয়া ওর কম্মো নয়। কারন যাই হোক, একটু পরে বোধহয় ক্লান্ত হয়েই চুপ করে গেল গলু। শেষবেষ সে বোধহয় ঘুমিয়েও পড়লো, কেননা কিছু পরে তার গর্বিত পিতার গমগমে গলায় শোনা গেল সাফল্যের আত্মঘোষনা, “কিঁউ, বোলা থা না?”
     
    ঘুম চটকে গেলেও এসব রঙ্গ শুনে আপন মনে হাসি। মনে পড়ে যায় চাণক্য সেনের “সে নহি, সে নহি” উপন্যাসে দেববাণীর মায়ের থার্ড ক্লাসে আসার মনোবঞ্ছার কারণ যা এ লেখার প্রথম পর্বের থেকে একটু পুনরাবৃত্তি করতে ইচ্ছে করছে - “থার্ড ক্লাসে যাওয়ার মস্ত সুবিধে কী জানিস? কত সব বিচিত্র মানুষ দেখতে পাওয়া যায়। পকেটমার, সাধুসন্ত, বরযাত্রী, নতুন বৌ থেকে থুড়থুড়ে বুড়ো-বুড়ী। তাদের শরীরের বিচিত্র সুবাস। বিড়ির গন্ধ। চিনেবাদামের খোলসের ছড়াছড়ি, বহু মানুষের কথা, হাসি, শিশুর কান্না। মালপত্র নিয়ে ঝগড়া। হাসতে হাসতে মা বলেন, বলতো তুই, এমন জীবন্ত নাটক ফেলে ফার্ষ্ট ক্লাসে কেন যাবো?”
     
     
    (চলবে)
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৭৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • . | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০২:০০540682
  • এই সবেই তো ভ্রমণের আসল মজা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন