এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  ঘুমক্কড়

  • অতিমারীতে অন‍্য ভ্রমণ - ২

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | ঘুমক্কড় | ১১ আগস্ট ২০২৪ | ২০৮ বার পঠিত
  • দুটি সেতু ও এক হীন ঈশ্বর

     নৈহাটি ব‍্যান্ডেল রেল সংযোগের জন‍্য গঙ্গার ওপরে দুটি সেতু নজর কাড়লো। প্রথমটি একটি হেরিটেজ আইটেম - জুবিলী ব্রীজ। ইংলন্ডেশ্বরী কুইন ভিক্টোরিয়া‌র ৬৩ বছরের রাজত্ব‌কালে পঞ্চাশ বছর বা গোল্ডেন জুবিলী ইয়ার পূর্তি উপলক্ষে মাত্র পাঁচ বছরের মধ‍্যে নির্মিত হয়ে জুবিলী সেতুর উদ্বোধন হয়েছিল ১৮৮৭ সালে। সুদীর্ঘ ১২৯ বছর সুষ্ঠুভাবে তার দায়িত্ব পালন করে এই ক‍্যান্টিলিভার ট্রাস ব্রীজটি অবসর নেয় ২০১৬ সালে। 


     
    রিলে রেসের ব‍্যাটন নেওয়ার মতো সেদিন থেকে‌ই রেল সংযোগের দায়িত্ব গ্ৰহণ করে নবনির্মিত সম্প্রীতি সেতু। অবশ‍্য কারিগরি জটিলতা, লাল ফিতের গেরো, আঠারো মাসে বছরের ওয়ার্ক কালচার ইত‍্যাদি কারণে নির্মাণ প্রযুক্তি‌র প্রভূত উন্নতি সত্ত্বেও একবিংশ শতাব্দীতে এটি তৈরী করতে সময় লেগেছে প্রায় তেরো বছর। ২২ মিটার দুরে পুরোনো জুবিলী সেতুটি নাকি ভেঙে ফেলা হবে। তাহলে হারিয়ে যাবে আরো একটি হেরিটেজ আইটেম।


      
    বর্তমান সম্প্রীতি সেতুর আকার এবং বৈশিষ্ট্য বেশ সমীহ‌ উদ্রেককারী। এর নির্মাণ শৈলী‌ও অভিনব - কন্টিনিউয়াস ট্রাস। এই সেতুর ফাউন্ডেশন গ‍্যামন ইন্ডিয়া করলেও জেনে ভালো লাগলো এর নজরকাড়া সুপারস্ট্রাকচারটি বানিয়েছে কলকাতার এক মাড়োয়াড়ী কোম্পানি তাঁতিয়া কন্সট্রাকশন লিমিটেড। এই কোম্পানির সিএমডি ঈশ্বরী প্রসাদ তাঁতিয়া যাদবপুরে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়ে পিতৃবিয়োগ হতে তৃতীয় বর্ষে‌ই কলেজ ছেড়ে কোম্পানির হাল ধরেন। কিন্তু আমি এতো ভেতরের কথা জানলাম কী করে? তাহলে আর একটু পাশকথার অবতারণা করতে হয়। 

      ৯০ সালের জানুয়ারিতে বিয়ের পর আড়াই মাসের মাথায় ঠিকাদারী ব‍্যবসায় থাপ্পড় খেয়ে আমি হলাম কুপোকাত। তখন যাদবপুরের কাগজ হাতে নেতাজী সুভাষ রোডে কোল ইন্ডিয়ার অফিসের উল্টো‌দিকে এনার অফিসেই প্রথম গেছিলাম চাকরির খোঁজে। তখন উনি দুর্গাপুর স্টীল প্ল‍্যান্টের পাইলিং প্রকল্পের জন‍্য একজন অভিজ্ঞ লোক খুঁজছিলেন। ব্রিটিশ সংস্থা সিমেন্টেশন ইন্টারন‍্যাশানাল একটি স্পেশালিস্ট পাইলিং কোম্পানি‌। তার ভারতীয় শাখা সেমিন্ডিয়াতে  ৮২ সালে ভাইজ‍্যাগ স্ট্রীল প্ল‍্যান্টে পাইলিং প্রকল্পে যোগ দিয়ে আমার কর্মজীবনে‌র শুরু। তিন বছর হলেও একদা যাদবপুরে পড়েছিলেন বলেই আর এক জলে পড়া যাদবপুরিয়াকে সাহায্য করতে নয়, আমার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলেই ঝানু ঈশ্বরীপ্রসাদ বুঝেছিলেন আমায় দিয়ে কাজ হবে। তাই পত্রপাঠ নিয়োগপত্র দিয়ে দিলেন। আমায় চাকরি‌র খোঁজে আর কোথাও যেতে হলো না। 

      তবে নামে ঈশ্বর থাকলেও মানুষ‌টি ছিলেন নীচু মনের। আমার দুরবস্থার পুরো ফায়দা নিয়েছিলেন। Loser shouldn't be chooser নীতি মেনে তখন নিরুপায় হয়ে‌ও প্রবল উৎসাহে কাজ করেছি। মালিক এবং বেতন পছন্দ না হলেও জীবিকার সাথে বেইমানি করিনি। কখনো তা করা উচিত নয় এই বিশ্বাস‌ আগাগোড়া পালন করেছি পেশাগত জীবনে। তবে ডুবজল থেকে জমি‌তে পা ঠেকতে‌ই সে ঈশ্বরের প্রসাদ আমি প্রত‍্যাখান করেছি। আমি কারুর উপকার ভুলিনা। ভোলা উচিত‌ও নয়। তাই ওনার‌ উপকার‌ও ভুলিনি। তবে মনে অনুক্ত ক্ষেদ ছিল। তাই ওনার উপকার কড়ায় গণ্ডায় সুদে আসলের অতিরিক্ত মিটিয়ে, দায়িত্ব বুঝি‌য়ে একদিনের নোটিশে সে চাকরি ছেড়ে পরদিন‌ই চলে গেছি জামশেদপুর, অন‍্য চাকরি নিয়ে। তাতে আমার বিন্দুমাত্র আত্মগ্লানি হয়নি।
      তাঁতিয়া কোম্পানির ছিল সেতু, বিশেষতঃ রেল সেতু নির্মাণে দক্ষতা এবং পরিচিতি। আমি দুর্গাপুরে প্ল‍্যান্টের ভেতরে কাজ করার সময় মেন গেটের সামনে বিধান সরণি বাইপাসের ওপর টামলা নালার ওপর সেতু নির্মাণের বরাত‌ও পেয়েছি‌ল তাঁতিয়া কোম্পানি। অবশ‍্য সে কাজ দেখতো অন‍্য এক ইঞ্জিনিয়ার। 

    চন্দননগর স্ট্র্যান্ড 

      তৃতীয় দিন সন্ধ্যায় গেলাম একদা ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগরে গঙ্গার ধারে স্ট্র্যান্ডে । ফরাসী‌দের সাথে ইংরেজদের বহুদিনের জাতশত্রুতা। শুনলাম তা সত্ত্বেও সংস্কৃতি‌মনস্ক ফরাসী‌ অধিকৃত  চন্দননগর স্ট্র্যান্ডে  বিকেলবেলা সুবেশা সঙ্গিনী নিয়ে বোটে করে ওপারে‌র ফোর্ট উইলিয়াম থেকে এপারে হাওয়া খেতে আসতেন উচ্চ পর্যায়ে‌র ইংরেজ রাজকর্মচারীরা। 

     সুজনবাবু আমার সাথে আলাপ করানোর জন‍্য এনেছিলেন ওনাদের পত্রিকা‌গোষ্ঠীর আর এক জ্ঞানীজন - রজতবাবুকে। একদা পশ্চিম‌বঙ্গ সিভিল সার্ভিসের অফিসার, বিবিধ বিষয়ে পড়াশোনা করা মানুষ‌টি সুলেখক‌ও বটে। তাঁর একটি লেখা‌ 'ভ্রমণ আড্ডা' পত্রিকায় পড়ে আমি সুজনবাবুকে ওনার সবিশেষ প্রশংসা করেছিলাম। অবশ‍্য রজতবাবুর  হাতে সামান্য একটা সূত্র ধরিয়ে লেখাটি লিখিয়ে নেওয়ার কৃতিত্ব সুজনবাবুর। তিনি বোঝে‌ন কার কলম দিয়ে কী বেরোতে পারে। ছাগল দিয়ে যে লাঙল চালানো যায় না, সে বোধ ওনার আছে।

      গঙ্গার পারে সেদিন সান্ধ্য আড্ডায় আমি রজতবাবুকে সেই লেখাটির জন‍্য আন্তরিক অভিনন্দন জানালাম। সৎ প্রশংসা‌ সৃষ্টির প্রেরণা। উনি দৃশ‍্যত খুশি হলেন। বললেন, জানেন, ওটা লিখতে আমায় প্রায় বছরখানেক ধরে নানা তথ‍্য যোগাড় করতে হয়েছে। রজতবাবু‌ আড্ডাবাজ‌ মানুষ। তবে তাঁর আড্ডা‌র মেজাজ সত‍্যজিতের 'আগন্তুক' সিনেমায় উৎপল দত্তের সেই অসামান্য সংলাপ মনে করিয়ে দেয় - "আড্ডা বাঙালির মনোপলি নয়। প্রাচীন গ্ৰীসের এথেন্সে‌ও হতো আড্ডা, তবে বিজ্ঞান, দর্শন, আধ‍্যাত্মবাদ, সাহিত্য, চিত্রকলা, রাষ্টনীতি সংক্রান্ত উচ্চমানের সেসব আড্ডা ছিল জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্র, মগজের পুষ্টি। এখনকার বাঙালি‌দের আড্ডার মতো পরনিন্দা পরচর্চা নয়, মুখে মারিতং জগৎ নয় …"।  
     
    দিগড়ার মাঠ

     চতুর্থ দিন সকালে অমলবাবুর সাথে প্রাতঃভ্রমণে গেলাম সারদাপল্লীর অদূরে দিগড়া পল্লী দেশবন্ধু বিদ‍্যাপীঠ সংলগ্ন মাঠে। রোজ সকালে বাড়ি থেকে এখান অবধি গাড়িতে এসে অমলবাবু ঐ বড় মাঠে আধঘণ্টা হেঁটে কয়েক পাক মারেন। হাঁটুর জন‍্য হাঁটার আদর্শ জায়গা। দূষণহীন সবুজ চারপাশ। পাশে দিগড়া মল্লিকহাটি দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে দুদিন আগে হয়েছে শীতলা পুজো।
     
     অমলবাবু প্রতিবারের মতো এবারেও দুপুরে খিচুড়ি ভোগের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় দিন আমায় নিয়ে আঁটপুর ভ্রমণে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে তিনটে‌য় ফিরে দুজনের‌ই আর পুজো প্রাঙ্গণে গিয়ে ভোগ খাওয়া‌র মতো শরীর মনের অবস্থা ছিল না। সেদিন সকালে গিয়ে দেখলাম পুজোর বাসি আসর। ডেকরেটরের লোক এসে প‍্যান্ডেলের কাপড় খুলছে। ভাঙা হাটের বিষন্নতা। মাঠে কিছু কিশোর, তরুণ শরীর চর্চায় রত। দেখে ভালো লাগলো। তাদের ট্রেনিং দেন এক নিবেদিত‌প্রাণ স্থানীয় মানুষ - ওদের কাছে দীপুস‍্যার।


    দিগড়া দেশবন্ধু বিদ‍্যপীঠ সংলগ্ন মাঠে সকালে শরীর‌চর্চা‌য় রত কয়েকটি তরুণ

    সুদামবাবু

       সেদিন প্রাতঃভ্রমণে হাঁটিহাঁটি করে দিগড়া যাওয়ার পথে অমলবাবু ক্ষণিকের জন‍্য আলাপ করালেন সুদামবাবু‌র সাথে। ওনার বাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে ছিলেন। উৎসাহের আতিশয্যে অমলবাবু বলে ফেললেন, ইনি একজন ভূ-পর্যটক, দীর্ঘদিন ধরে একাকী বেড়াতে পছন্দ করেন। আমি লজ্জায় একসা হয়ে বলি, নেপাল আর ভুটান ছাড়া কখনো দেশের বাইরে পা না রাখা আমার জন‍্য ভূ-টা অযথ বিশেষণ হয়ে গেল, শুধু পর্যটক‌‌ই ঠিক আছে। দক্ষিণেশ্বর হাই স্কুলের প্রাক্তন ইংরেজি শিক্ষক সুদামবাবু আমার রম‍্য স্বীকারোক্তি শুনে বেশ হাসেন। 

    একসময় সক্রিয় বাম রাজনীতি‌ করেছেন। হয়েছিলেন জোনাল কমিটির সদস‍্য। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও জিতেছেন দুবার। তবে শরীর সাথ না দেওয়ায় অনেকদিন আগে স্বেচ্ছায় ছেড়েছে‌ন পদ ও দল। তবে এখন‌ও থাকেন মানুষের পাশে। বিপদে আপদে গিয়ে দুটো আশা ভরসার কথা বলেন। ভ‍্যানে করে ময়লা নিতে আসা পৌরসভার কর্মী‌টির কথাতে তার রেশ পেলাম। সে বললে, ভদ্রেশ্বর স্টেশনে নেমে সারদাপল্লী‌র সুদামবাবু‌র বাড়ি যাবো বললে যে কোনো টোটো নিয়ে আসবে। সুদামবাবু বললেন দিগড়া ঘুরে, জলখাবার খেয়ে, ফ্রী হয়ে আসুন দশটার পর, আপত্তি না থাকলে আপনার সাথে একটু গল্প করা যাবে। ততক্ষণে আমি‌ও হাতের কাজ সেরে নি‌ই।


      প্রয়াত স্ত্রীর নামে (অরুণালয়) বাড়ি‌র সামনে দাঁড়িয়ে সুদামবাবু

    আপত্তির কিছু নেই। আমি তো বেরিয়ে‌ছি অলসভ্রমণে। তখন কিছু অচেনা মানুষের সাথে আলাপ হলে তো ভালো‌ই লাগে। সুদামবাবুকে আমার‌ও বেশ লাগলো। প্রাতরাশের পর অমলবাবুর বন্ধু‌পুত্রীর লেডিস সাইকেল চালিয়ে গেলাম সুদামবাবু‌র বাড়ি, ওনার সাথে আলাপচারিতা করতে। গতকাল ল‍্যাব থেকে আনা ইসিজি রিপোর্ট নিয়ে ওনার পরিচিত ডাক্তারের সাথে শলা করতে অমলবাবু গেলেন চন্দন‌নগর। ইদানিং অমলবাবুর হৃদযন্ত্রের তাল মাঝেমধ‍্যে একটু বেসুরো বাজছে। একা থাকেন, জীবনকে আরো কিছু বছর উপভোগ করতে চান, এখন‌ই টাটা করার ইচ্ছা নেই। তাই একটু প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন। 

      অমলবাবুর মতো উনি‌ও বিপত্নীক। তাঁর স্ত্রী‌ অনেকদিন ভুগে মারা গেছেন গত বছর। এখন ৭৬ বছর বয়সে সুদামবাবু চার কাঠা জমি‌র ওপর বাগান‌ওয়ালা বাড়িতে একা থাকেন। একজন মহিলা সকালে এসে দুবেলা‌র রান্না  করে দিয়ে যান। কাজের মাসি আছেন। দুটি মিষ্টি‌ দেখতে সাদা কমলায় মেশানো বেড়াল বাগানে মক ফাইট করছিল। বেশ লাগে তাদের রকমসকম দেখতে। সুদামবাবু‌‌ও স্নেহময় দৃষ্টিতে দেখছি‌লেন তাঁর পোষ‍্য‌দুটিকে। তাঁর একটি‌ই কন‍্যা। বিবাহিতা। থাকে দমদমে। জামাইটি‌ ভালো। শাশুড়ির অসুখের সময় খুব পাশে থেকেছে। এখন‌ও আসে নিয়মিত। কখনো সুদামবাবু‌ও যান মেয়ের কাছে। কদিন থেকে আসেন। শিশু নাতি‌টির সারল‍্যমাখা শৈশবের সান্নিধ্যে কিছু‌দিন আনন্দে কাটিয়ে আসেন। যাঁরা  বৃদ্ধাশ্রমে না থেকে নিজগৃহে থাকতে চান, এভাবেই কাটে সেইসব একাকী প্রবীণ মানুষের জীবন।   

      মাঝে মধ‍্যে প্রাক্তন ছাত্ররা আসে তাঁর কাছে। আমি গিয়ে দেখি অত‍্যন্ত মার্জিত একটি তরুণ বসে আছে। ওনার প্রাক্তন ছাত্রের ভাই, ওনার কাছে বাড়িতে প্রাইভেটে পড়তো একসময়। এখন সে ইংরেজি‌তে এম এ পড়ছে। একটা পত্রিকা বার করে ওরা কজনে। তার‌ একটা নতুন সংখ‍্যা স‍্যারকে দিতে এসেছে। 

      ছেলেটি চলে যেতে সুদামবাবু‌র সাথে কিছু আলাপচারিতা হোলো। এখনো তিনি নিয়মিত পড়াশোনা করেন। ওনার বড় সহায় রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতা। বিভিন্ন অবস্থা‌য় তা শুনে, পড়ে মনে শান্তি, সাহস, উৎসাহ পান। বললেন, আপনার সাথে কথা বলে বেশ লাগলো। বললাম, আমার‌ও। 

      চলে আসার আগে বললাম, আপনার একটা ছবি নেবো? উনি অমায়িক হেসে বললেন, নিন না, কিন্তু কেন? বলি, এই আলাপের স্মৃতি‌টা ধরে রাখতে, তাছাড়া আপনার মধ‍্যে একটা অদ্ভুত প্রশান্তি অনুভব করলাম। আপনার সাথে আমার এক প্রিয় লেখকের কিছুটা মিল আছে। সরল হেসে সুদামবাবু বলেন, ওমা তাই নাকি? কে আপনার সেই প্রিয় লেখক? জানাই, বুদ্ধদেব গুহ। ছবি তুলে দেখাতে খুশি হয়ে বলেন, আপনার ছবি তোলার হাত তো বেশ ভালো ! মোবাইলে‌ও খাসা উঠেছে। 


    বুদ্ধদেব গুহ


    সুদামবাবু

      বলি, হাত টাত কিছু নয়। আজকাল মোবাইল‌ বেশ উন্নত হয়ে গেছে। একটু ধরে তুললে, ভালো‌ই ছবি আসে। সুদামবাবু বলেন, আপনার মোবাইল‌টি‌ও মনে হয় ভালো।  বলি, তেমন কিছু নয় - গরীবের আপেল - MI ফোন। সুদামবাবু বলেন, গরীবের আপেল মানে? বলি, পেয়ারা দামে অনেক সস্তা হলেও উপকারী‌তায় আপেলের সাথে পাল্লা দিতে পারে। তেমনি MI ফোন। শুরুতে Apple ফোন কে কপি করে সস্তায় বাজার ধরেছে।

    সুদামবাবু হেসে বলেন,  আপনি বেশ মজা করে কথা বলেন তো? গরীবের আপেল ! খাসা বলেছেন, প্রথমে ঠিক বুঝতে পারি‌নি। আমার স্মার্টফোনের তেমন দরকার হয় না, তবু মেয়ে কিনে দিয়েছে, হোয়াটস‌এ্যাপে চ‍্যাট, ভিডিও‌কল করতে শিখিয়ে দিয়েছে, তাই ওদের ও নাতিটার সাথে মাঝেমধ্যে ভিডিওতে কথা হয়, দেখা যায়। টেকনোলজি‌র এই সব সুবিধা‌গুলো বেশ মজার। 

    বলি, কিছু মনে করবেন না, আপনার, বাঁ চোখে কী কোনো অসুবিধা আছে? সুদামবাবু বলেন, চার দশক আগে একদিন লাইনের ধার দিয়ে ভদ্রেশ্বর স্টেশনে উঠতে গিয়ে পাথরে পা স্লিপ করে চলতি ট্রেনে ধাক্কা খেয়ে পড়ি। স্টেশনে ঢুকছিল বলে ট্রেনের গতি কম ছিল বলে বেঁচে গেছি। তখন বয়স সাতাশ। হয়তো তখন কপালে মৃত্যু ছিল না। কিন্তু বাঁ চোখে বেশ আঘাত পেয়েছি‌লাম। চন্দননগর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম প্রায় তিন হপ্তা। ভিয়েনা থেকে পাশ করে আসা এক বাঙালি চক্ষু বিশেষজ্ঞ তখন ঐ হাসপাতালে‌র সাথে যুক্ত ছিলেন। তাঁর হাতের গুণে কোটর থেকে একটু বেরিয়ে আসা চোখটা যথাস্থানে বসলো, দৃষ্টি‌ও নষ্ট হয়নি। বলতে পারেন মিরাকল। তবে মেরামত করা প্রত‍্যঙ্গ তো আর আগের মতো হয় না, তাই বাঁ চোখটা খুঁতো হয়ে গেল।

    জঙ্গলে‌র জগন্নাথ

      সমাজতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন জগন্নাথ ঘোষ। প্রাক যৌবন থেকে বেশ কয়েক বছর কেটেছে দিল্লিতে, তাঁর দেবতূল‍্য, উচ্চশিক্ষিত কাকার ছত্রছায়ায়। তিনি‌ ছিলেন এক নিরহংকারী পণ্ডিত মানুষ। জগন্নাথ‌বাবুর জীবনের ধ্রুবতারা। পরে কলকাতা‌য় এসে ডানকান ব্রাদার্সের সদর দপ্তরে চাকরি করেও জগন্নাথ‌বাবু ছুটি পেলেই ছুটে গেছেন পূরুলিয়া, বাঁকুড়া, সাঁওতাল পরগনার অনামা, প্রত‍্যন্ত জায়গার বনে জঙ্গলে। বহুদিন ধরে ঘুরে বেড়িয়েছেন প্রকৃতির সান্নিধ্যে। অকুণ্ঠায় মিশেছেন প্রান্তিক, আদিবাসী মানুষের সাথে। পর্যবেক্ষণ করেছেন তাদের নানা আচার অনুষ্ঠান সমাজতাত্বিক পর্যবেক্ষকের মতো। থেকেছে‌ন তাদের ডেরায়। নিয়েছেন ফিল্ড নোটস। লিখেছেন নানা জায়গায়। তাঁর লেখা বনদপ্তরের কর্মী, অফিসার‌দের‌ও কাজে এসেছে, বনবাসী আদিবাসী অধিবাসীদের জীবনাচরণ, মনোভাব বুঝতে।

      আমার প্রাকযৌবনে তাঁর মাটির গন্ধমাখা ভাষায় অনবদ‍্য শৈলী‌তে লেখা অচেনা গ্ৰাম গঞ্জের ওপর ভ্রমণবৃত্তান্তগুলি ‘যুগান্তর’ দৈনিক পত্রিকায় মাঝে মাঝে রবিবাসরীয়তে প্রকাশিত হতো 'বাইরে দুরে' ফিচার‌ হিসেবে। দারুণ লাগতো পড়তে। তাই সবিশেষ মুগ্ধতা ছিল সেই অদেখা, অচেনা লেখকের প্রতি যাঁর কলম দিয়ে এমন লেখা বেরোয়। ২০২০ সালের বার্ষিক 'ভ্রমণ আড্ডা' পত্রিকায় পড়লুম একটি ষোলো পাতার লেখা - "সারাণ্ডার শেষ শার্দূল" - লেখক জগন্নাথ ঘোষ। লেখাটা পড়ে মুগ্ধ‌তায় আবিষ্ট হয়ে ভাবলুম ইনি‌ই কি সেই লেখক? লেখ‍্য শৈলী‌ তো সেই রকম‌ই লাগছে, তবে আরো যেন পরিপুষ্ট, স্বাদু হয়েছে লেখ‍্যভঙ্গি‌মা। 

      ভদ্রেশ্বরে‌র সুজনবাবু সেই বার্ষিকী পত্রিকার চারজন সম্পাদক‌মণ্ডলী‌র অন‍্যতম একজন। ঐ পত্রিকায় আমার এযাবৎ চারটি লেখা বেরিয়েছে। সুজনবাবুর সাথে হোয়া আলাপের সূত্রপাত সেই সূত্রে‌ই। তাঁর বাড়িতে একুশের তেইশে মার্চ সকালে পৌঁছে লুচি, আলুর তরকারি, মৃত্যুঞ্জয় সুইটসের উপাদেয় সন্দেশ সহযোগে প্রাতরাশ সেরে  শুধোলাম তাকে জগন্নাথ‌বাবুর কথা। বললেন, আপনি নিজেই কথা বলে দেখুন। লাগিয়ে দিলেন ফোন। বুঝলাম তিনি‌ই আমার যৌবনকালের মুগ্ধতা‌র সেই জগন্নাথ ঘোষ।

      কী সুন্দর আপতন ! বললুম, আপনার সাথে কী একটু সামনাসামনি আলাপচারিতা হতে পারে? সানন্দে আমন্ত্রণ জানালেন তিনি। চার দশক বাদে সুজনবাবুর সুবাদে একুশের চৌঠা এপ্রিল, রবিবার বিকেলে গেলুম সাঁত্রাগাছির কাছে তাঁর ভাড়া বাড়িতে। 

      তখন তিনি সদ‍্য সত্তর উত্তীর্ণ। মৃদুভাষী মানুষ‌টি বলেন, শহুরে মানুষের সান্নিধ্যে তিনি বিশেষ সাচ্ছন্দ‍্য বোধ করেন না। তাই তাঁর শহুরে বন্ধু অঙ্গুলিমেয়। জঙ্গলে ঘোরার সঙ্গী‌ও তাই। দিনের প্রথমার্ধ এখনও কাটে নিয়মিত লেখালেখি করে।  আড্ডা শুরু হয়েছিল রাস্তা ঘেঁষা বসার ঘরে বসে। একটু বাদেই ভোটের প্রচারে বাইরে লাগানো মাইকে 'কী খেলা হবে তো?' বলে চিৎকৃত জিজ্ঞাসা দিয়ে শুরু হোলো উচ্চনিনাদে শব্দসন্ত্রাস। বসার ঘরের বাইরের সব জানলা বন্ধ করেও মৃদু‌ভাষী মানুষ‌টির কথা ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছি‌লাম না। তাই বসার ঘরের দরজা বন্ধ করে আমরা গিয়ে বসলাম শোবার ঘরে। এবার একটু শান্তি। নানা আশ কথা পাশ কথায় উঠে এলো তাঁর জীবনের নানা ঘটনা। 

      তবে আমি শহুরে হলেও সেদিন আমার সাথে গল্পের স্রোতে ভেসে জগন্নাথ‌বাবুর সময়ের হিসেব ছিল না। তাই বিকেল সাড়ে পাঁচটায় আড্ডা শুরু হয়ে কখন যে ঘড়ির কাঁটা দশটার ঘর ছুঁয়েছে আমরা দুজনে‌র কেউ‌ই খেয়াল করিনি। সেদিন অবশ‍্য অন‍্য একটা কারণে তিনি বেশ অভিভূত হয়ে গেছিলেন। সেও এক বিচিত্র সংযোগ !

     বারোই মার্চ তিনি তাঁর পরিবারের সাথে গাড়িতে গেছিলেন পুরুলিয়া‌য় গর্গাবুরু পাহাড়ের কোলে পাপরাকোচা বাঁধে। সেখানে একটি বছর ছয়েকের শিশু তাঁর কাছে দুটি টাকা চেয়েছিল, মুড়ি কিনে খাবে। ছেলেটি‌র মুখে শৈশব সারল‍্যের সাথে মাখা গভীর অসহায়তা ওনাকে বেশ নাড়া দিয়েছিল। ছেলেটিকে দশটি টাকা দিয়ে আলাপ করে উনি জানতে পারেন বছরখানেক আগে তার বাবা সাপের কামড়ে মারা যায়। কয়েকটি ভাইবোন নিয়ে ওদের মা আর বছর আঠারো‌র বড় ভাই কোনো মতে জীবনধারণের জন‍্য লড়ে যাচ্ছে। তাই ও স্কুলে যায় না। সেটা ওর পরিবারের কাছে এখন বিলাসিতা। 

      জগন্নাথ‌বাবু ওখানেই দাঁড়িয়ে ভেবেছি‌লেন ছেলেটিকে স্কুলে পড়াতে হবে। কলকাতা‌য় ফিরে উনি কিছু ব‍্যবস্থা করে ওনার পরিচিত এক পুরুলিয়ার স্থানীয় জনকে বলেছিলেন ছেলেটি‌র খোঁজ করতে। কিন্তু গত হপ্তা দুয়েক ধরে চেষ্টা করেও ছেলেটি‌র কোনো পাত্তা পাওয়া যায়নি। 
     
    আমি উনিশ সালের জানুয়ারিতে কয়েকজনের সাথে তিন দিনের জন‍্য গেছি‌লাম পাপরাকোচা। ওখানে পারডি গ্ৰামের একটি বয়স্ক মানুষকে আমরা নিয়েছিলাম গাইড হিসেবে জঙ্গলে‌র রাস্তায় ট্রেক করে অযোধ‍্যা পাহাড়ে যাওয়ার জন‍্য। তার ছেলের মোবাইল নম্বর ছিল। তার সাথে কথা বলে জগন্নাথ‌বাবুর দেখা ছেলেটি‌র দাদার খোঁজ পাওয়া গেল। জগন্নাথ‌বাবুর সাথে কথা বলিয়ে দিলাম। 
     
    উনি অভিভূত হয়ে বললেন, আপনি যেন ঈশ্বর‌প্রেরিত দেবদূতের মতো হাজির হলেন আজ। গত কদিন ধরে খোঁজ করে যাচ্ছি অথচ কয়েক মিনিটের মধ‍্যে কেমন যোগাযোগ হয়ে গেল দেখুন তো !

      স্বাদু সিঙ্গারা, গরম রসগোল্লা, উপাদেয় কফি, দ্বিতীয়‌বার চা খাইয়ে আলাপী বৌদিও খুব খুশি। বলেই ফেললেন, জানেন তো, কদিন ধরে রাতে ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে না ওনার, কেবল ভেবে যাচ্ছেন, ইস, ছেলেটার জন‍্য কিছু করতে পারলাম না। এই যে আপনি যোগাযোগ করিয়ে দিলেন, আজ রাতে শান্তি‌তে ঘুমোবেন। তা‌ই হয়তো বৌদি ঘড়ি দেখে গ‍্যাসে রান্না চাপিয়ে‌ও স্বামীকে আকারে ইংগিতে বোঝাতে চাননি, রাত হয়েছে। হয়তো ভেবেছেন, প্রথম আলাপে এ্যাতো গল্প করার মানুষ তো উনি নন, তা মনে যখন শান্তি হয়েছে করুক গল্প প্রাণ খুলে সদ‍্যপরিচিত কারুর সাথে।
     
    চতুর্দিকে নানা পোশাকী মানুষের ভীড়ে এমন মাটি ঘেঁষা মানুষের সাথে খানিক গল্প করার সুযোগ পাওয়া‌ - আমার‌ও বিশেষ প্রাপ্তি।

      জগন্নাথ‌বাবু কম্পিউটারে বাংলায় লিখতে পারে‌ন না। এখনো কাগজে কলমে লেখেন। সুন্দর হাতের লেখা কিছু দেখেছি, কিন্তু এমন নমুনা দেখিনি। বলি অদ্ভুত পরিস্কার তো আপনার লেখা ! 
     
    উনি বলেন, না, না, মোটেও নয়। প্রথমবার যখন লিখি, টানা লিখে যাই, কিছু কাটাকাটি হয়, সে লেখা দেখে কম্পোজ করা মুশকিল। লেখা ফাইনাল হলে পত্রিকার জন‍্য ধরে ধরে প্রেস কপি করি। আপনি অমন একটা নমুনা দেখছেন বলে মনে হচ্ছে ভালো, আসলে আমার হাতের লেখা বেশ খারাপ। 
     
    বলি,  যার হাতের লেখা খারাপ, সেই মানুষ‌ই ধরে লিখলে কী জিনিস দাঁড়ায়, তার একটা নমুনা রাখতে চাই। ছবি নেবো? সরল হেসে উনি বলেন, নিন না। এটা অনেকদিন আগে কোথাও প্রকাশিত হয়ে গেছে। তার প্রেস কপি। কম্পোজ করে ফেরৎ দিয়ে গেছে।
     



     পুনশ্চঃ - ক্রমশ . . . 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ১১ আগস্ট ২০২৪ | ২০৮ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    কবিতা  - S Azad
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন