ধম্মকম্ম নিয়ে আমাদের বিশেষ মাথাব্যথা নেই, বইমেলা হোক বা পুজো, ইদ হোক বা পয়লা বৈশাখ, বাঙালির মোচ্ছব হলেই হল। ইফতারই আমাদের পেটপুজোর উৎসব, সরস্বতীপুজোর খিচুড়িই আমাদের প্রেমের অনুপ্রেরণা, আর দুগ্গাপুজোর চারদিনই আমাদের গণ ফ্যাশান-প্যারেড। আমাদের চাউমিন বাঙালি চাউমিন, চিনেরা যা খেলে 'এটা কী?' বলে চোখ কপালে তুলবে। আমাদের বিরিয়ানি বাঙালি বিরিয়ানি, কারণ লক্ষ্নৌ এর নবাব কলকাতায় বসে তাতে মিশিয়েছিলেন আমেরিকার আলু, পাঠান-মোগল তাদের আদি পোলাউএর যে চেহারা দেখলে ভির্মি খাবে। কলকাতায় অবশ্য রেডরোডে ইদের জমায়েতে নেতানেত্রীরা বিচ্ছিরি হিন্দিতে ভাষণ দেন, যেমন দোলের দিন টিভিতে বসে আমাদের শিল্পীদের 'রঙ দে চুনারিয়া'র বাইরে আর কোনো বাংলা গান মনে পড়েনা। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসেনা। টিভিকে কাঁচকলা দেখিয়ে পাড়ায়-পাড়ায় এখনও বসন্তোৎসব হয়, নজরুলের শ্যামাসঙ্গীত আর ইদের গান, গজল আর রাগপ্রধান, সবই এখনও সুপারহিট। পয়লা বৈশাখ, সাম্প্রদায়িকতাকে কাঁচকলা দেখিয়ে সীমান্তের এপারে-ওপারে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়। আমরাও মেতে যাই মোচ্ছবে। ধম্মকম্ম নিয়ে আমাদের বিশেষ মাথাব্যথা নেই, বইমেলা হোক বা পুজো, ইদ হোক বা পয়লা বৈশাখ, বাঙালির মোচ্ছব হলেই হল।