দড়ির শেষে জটের প্রান্ত এমনই ঘিচপিচে
টুক করে তাও সময় বুঝে বড়ঘড়ির নিচে
তখন তো ঠিক সকালও নয়, অথচ সেই ভোরে
ট্রেনের আওয়াজ মাঠ পেরিয়ে নক করে যায় দোরে
আমরা টানি ফেনায় ভরা ব্রাশের আঁচড় গালে
পাদানিতে ওঠার আগে যেই ফিরে তাকালে
এমনি করে সিনেমা হয়, কুয়াশা তার চায়ে
ধোঁয়ার মধ্যে ঠিক মিশে যায়, হাঁপ ধরে যায় পায়ে
এলিই যখন দুদ্দুড়িয়ে দেখলি না, তুই কী যে
দাঁড়িয়ে ছিল কোমর ধরে, বড় ঘড়ির নিচে
বেলার দিকে ব্রিজের ওপর বাসের এমন হুড়ো
বইছে শহর সহস্রধায় ঠুকছে ঘোড়ার খুরও
ট্রেন তো তখন অন্য জেলার প্লাটফর্ম ছাড়ছে না
জানলা থেকে দেখাচ্ছে মাঠ, ঘরের মত চেনা
আঁকতে শেখার বইয়ের থেকে স্টিকার ছিঁড়েছিঁড়ে
গাছের পাশে বাড়ি, নদী বইছে পাহাড় ঘিরে
কয়লাখনি পেরিয়ে যায়, ব্রিজ নেমে যায় জলে
আস্তে আস্তে বরফ পড়ে পাহাড়ি অঞ্চলে
পাহাড় যাচ্ছে গলে আর সমুদ্র যায় বিচে
টুকরো সময় আটকেছিল বড় ঘড়ির নিচে
উপর পানে তাকাচ্ছি আর মিলিয়ে নিচ্ছি কাঁটা
দেখছি আমার কাকের ডালে কেমন পেখম-আঁটা
আমরা জানি বিকেল এলে ঘুরিয়ে দেব নাচ
ডান পা রেখে ব্রেকের ওপর, আস্তে করে ক্লাচ
চাপ দিলে ঠিক হুড়মুড়িয়ে মেল আর প্যাসেঞ্জার
আওয়াজ তুলে চুপ, থেমে যায়- রাত হয়ে যায়, আর-
আর আসে না কেউ তো নেমে, সব ধুয়ে যায় আঁকা
খেলনাবাটি, রাবার ডিউস, ছাদের ঘরে পাখা
ভীষণ জোরে ডাক দিয়ে যাই, ট্রেন এসেছে লেটে
নিরুত্তর সে তালার মতন কোলাপ্সিবল গেটে
বাস এসে যায় উল্টোদিকের, কন্ডাক্টর জানে?
এসব শব্দ কাল সকালে পৌঁছবে কোনখানে-
লাইন ধরে এগোয় গাড়ি, ব্রিজ বেয়ে যায় বিছে
অনন্তকাল আবার দাঁড়ায় বড়ঘড়ির নিচে।