এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো  ইদের কড়চা

  • গুনিন

    প্রতিভা সরকার
    গপ্পো | ০৩ মে ২০২২ | ৪৫৮৫ বার পঠিত | রেটিং ৪.৬ (৭ জন)
  • তন্ময় ভট্টাচার্য | প্রতিভা সরকার | হেমন্ত দাস | শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় | মৃণাল শতপথী | কল্পর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় | দেবাশিস মল্লিক | মণিশংকর বিশ্বাস | সুকান্ত ঘোষ | সাদিক হোসেন | ডাঃ সেখ নূর মহাম্মদ | মোহাম্মদ সাদেকুজ্জামান শরীফ | সোমনাথ রায় | রুমা মোদক | জয় গোস্বামী | দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় | সুপর্ণা দেব | সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় | স্বাতী রায় | অনিন্দিতা গোস্বামী | ফারুক আব্দুল্লাহ | খান শামিমা হক | নীলু ইসলাম | সারিকা খাতুন | দময়ন্তী | সাদাত হোসাইন | গোলাম রাশিদ | মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায় | শারদা মণ্ডল | অমর মিত্র | হামিরউদ্দিন মিদ্যা | ইমানুল হক | নীলাঞ্জন দরিপা | চিরশ্রী দেবনাথ | সায়ন কর ভৌমিক | কৌশিক বাজারী | ঐন্দ্রিল ভৌমিক | চৈতালী চট্টোপাধ্যায় | যাজ্ঞসেনী গুপ্ত কৃষ্ণা | মোজাফ্‌ফর হোসেন | অনুরাধা কুন্ডা | মাজুল হাসান | জগন্নাথদেব মন্ডল | যশোধরা রায়চৌধুরী | কুন্তলা বন্দ্যোপাধ্যায় | শ্রীদর্শিনী চক্রবর্তী | দীপেন ভট্টাচার্য | মৌ সেন | পায়েল দেব | তনুজ | রুখসানা কাজল | পার্থসারথি গিরি | ইদের কড়চা
    ছবিঃ ঈপ্সিতা পাল ভৌমিক


    এ তল্লাটে কে না জানে, আজুদের বাড়ির পাশের ঢিবির উত্তর পশ্চিম কোণে চালা পড়ো পড়ো ভিটেয় ঘাপটি মেরে বাস-করা আকালু আসলে এক ভয়ানক গুনিন। যতো গরু ছাগল মরা বাচ্চা বিয়োয়, যতো মেয়েছেলের অসময়ে গর্ভজল খসে, সবের পেছনে ঐ আকালু শালা। ওর নজর পড়লে ফলন্ত লাউ কুমড়ো অব্দি বিলাই কুত্তার শুকনো নাদির মতো খটখটে হয়ে যায়। আবার ভ্যান চালানো ছেড়ে দিয়ে কেউ যদি বিপুল বিষয়আশয়ের মালিক বনে যায় রাতারাতি, ঠিক জানবে তার পেছনে রয়েছে আকালুর দেওয়া মাদুলি আর কবচের কেরামতি।

    আগেকার দিন হলে বহু আগে ওর লাশ পড়ে যেত। এদ্দিনে গোরের উপর ধুন্দুলের লতা বা আকন্দ চারা হাওয়ায় দোল খেত। নেহাত এ পাড়া প্রায় পুরুষশূন্য বহুদিন, তোলবার মতো লাঠি থাকলেও লেঠেলরা সব খাটতে চলে যায় তামিলনাড়ু বা কেরালা। ফলে আকালুর বাবরি চুল রক্তে মাখামাখি হবার বদলে নারিকেল তেলের সার পেয়ে কানের পাশ দিয়ে নিশ্চিন্তে লতিয়ে নামে।

    বছরে একবার যখন উৎসবের সময় পকেট ভর্তি টাকাপয়সা, শরীর আর পেট ভর্তি খিদে নিয়ে পুরুষেরা গ্রামে ফেরে, আকালু তখন ফুড়ুত। শোনা যায় কার কার বিবি বেটি তাকে নাকি দেখেছে ভোর ভোর স্টেশনের দিকে হেঁটে যেতে। ডান হাতে পুঁটুলি ঝুলছে, বাঁ হাতে লাঠি, জিনমারা পাথার পেরিয়ে হনহন ছুটছে তার লম্বা কালো মুশকো এক জোড়া ঠ্যাং।

    আকালুর বুড়ি থুত্থুরি মা-কে হেঁকে বেটার কথা জিজ্ঞাসা করলেও, সে ফোঁকলা মুখে থুথু ছেটাতে ছেটাতে কী যে বলে, কেউ বুঝতেই পারে না। ছিটকে বেরনো লালার ভয়ে মানুষ দাঁড়িয়েও থাকে পাঁচ হাত দূরত্বে। ফলে এই সময়টায় সে বর্ধমানের ধানকলে কাজ করতে যায়, আকালু নিজমুখে একথা বললেও, বেশির ভাগ মানুষই ভাবে ও সব মিথ্যে, সে গেছে গুনিনদের গ্রাম কাউড়িতে, গুনিনবিদ্যা শেখার পর যেখান থেকে আর ঘরে ফেরার কোনো উপায় থাকে না।

    উপায় থাকে না মানে সদ্য হওয়া গুনিনকে সেখান থেকে ফিরতে দেওয়া হয় না, কারণ তেমন অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে সে তখন সুন্দর যা কিছু দেখে, সামলাতে না পেরে তার ওপরেই নজর ফেলে। সে ঘুমের মধ্যে দেয়ালা করা কারও শিশুসন্তানই হোক, কিম্বা সদ্য যুবতীর নরম আলোর মতো হাসিমাখা ঠোঁট। আর গুনিনের নজর লাগা মানে কী, তা তো সবাই জানে, হয়তো পরদিনই শিশুটির ঠাঁই হবে গ্রামপ্রান্তের নির্জন পাকুড় গাছের শেকড় চাড়ানো মাটির নিচে। আর যুবতীটি প্রেমিক পরিত্যক্ত হয়ে হাসতেই ভুলে যাবে। খোলা চুলে সুবর্ণরেখার পাথুরে জলে পা ডুবিয়ে বসে ভর দুপুরে সে হয়তো ইনিয়েবিনিয়ে গাইতেই থাকবে সেই গান যা সে শেষবারের মতো শুনেছিল প্রেমিকের সঙ্গে দূরের গ্রামের চড়কের মেলায় গিয়ে। চোখ বসা, চুল খোলা, তখন তাকে দেখলে মনে হবে আগেকার সেই হাসিখুশি মেয়ের প্রেতিনী যেন!
    এই ভাবে জগৎসংসার যাতে রসাতলে না যায়, নব্য গুনিনের ওস্তাদ তাকে অন্য গুনিনের বেটির সঙ্গে নিকা করিয়ে কাউড়িতেই বসবাস করানোর চেষ্টা করে, সে যাতে নিজের অধীত মারাত্মক বিদ্যা আনতাবড়ি প্রয়োগ না করে, শুধুমাত্র নিজের রুজি ও স্বার্থ রক্ষায় তা ব্যবহার করতে শেখে। জগতের মঙ্গলের জন্য তা কাজে লাগায়।
    তবে তাই করে কী কিছু কিছু আটকানো যায় ! নব্য গুনিন রাতের অন্ধকারে কাউড়ির লাগোয়া বিলের জলে ভরা বুক নিশ্বাস নিয়ে ডুব দেয়, ভোর রাতে উঠে আসে নিজের গাঁ সংলগ্ন ঘাটে।

    এই অব্দি শুনে আজমিরা চোখ বড় বড় করে মা-কে শুধোয়,”গুনিন সব খায়া লিতে পারে গে মা ? সব খাতি পারে? কাউড়ি ঘুরি আসা গুনিন সব খায় ?”
    খাওয়া কথাটার ওপর আতঙ্কে বার বার জোর দিয়ে ফেলে মেয়েটা, ফলে কথাটা শোনায় যেন ‘ঘাওয়া!’
    হালিমা বিবি এমনিতেই পিঠে পুড়ে যাচ্ছে বলে বিব্রত হয়ে ছিল, তার ওপর কানের পাশে এই ঘাওয়া ঘাওয়া শুনতে শুনতে সে মেজাজ হারায়।
    “চুপ আজু্‌, ঘ্যানঘ্যান করিসনি তো। এমনিই পিঠা উঠতিছে নি, তাপ্পরে আবার গুনিনের নাম কত্তিছিস। বোকা হাবলি ! সময়ে বিয়া সাদি না হলি বেটিগালা আরো ক্ষেপির মতোন হয়্যা যায়।”

    হালিমার বিরক্তির অনেক কারণ আছে। এই যে তেলে ভাসা পিঠা, এইটা খেতে ভালবাসে তার ছোট ছেলে শেখ কাজু। নামেই সে শ্যাখের বেটা শ্যাখ। আসলে কিন্তু একটা প্যাংলাপানা পনের বছরের নিরীহ খোকা, ক্লাস এইটের পড়া অসমাপ্ত রেখে সংসারের প্রবল চাপে সোনার দোকানে কাজ নিয়ে যে দিল্লিবাসী হয়েছে এক বছর হলো। পনের দিনের ছুটি খাবার পর আজ রাত্রি বেলায় কাজু দিল্লির ট্রেন ধরবে, তাই মায়ের কান্না-ভেজা প্রাণ ভাঁড়ে জমানো টাকার গায়ে পোড়া মাটির গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে বাজার থেকে সুজি আটা গুড় তেল নিয়ে আসে। তাতে সুগন্ধের জন্য লম্বা করে কুচোনো আদা পড়ে, স্বাদের জন্য এক খাবলা নুন। কড়াই বসানোর আগে হালিমা ভালো করে দেখে নেয় দরজা জানালা সব বন্ধ আছে কিনা। শালা গুনিনের নাকে যদি এক ছিটা গন্ধও যায়, তবে একটা পিঠাও সুস্থ ভাজা হবে না। তেলে দেওয়া মাত্র গোলা ছেতরে সব জিনিস নষ্ট হবে।

    হচ্ছেও তাই। হাতা থেকে পড়তে না পড়তে ফুটন্ত তেলের বুড়বুড়িতে গোলাটা ছোট ছোট টুকরোয় ভেঙে যাচ্ছে, নাচতে নাচতে ছড়িয়ে যাচ্ছে মধ্যখান থেকে একেবারে কিনারার দিকে। আজুর একবার মনে হল মা-কে বলে “আট্টু আটা মিশয়্যা দাও”, কিন্তু তার আগেই চিন্তিত মুখে মা তার ভাইকে বলে,” ঠিক দ্যাখছিস তো আকালু শালা ঘরে নাই? নাই যদি থাকতি তাইলে পিঠা উঠতিছে না ক্যানে! নাকে গন্ধ গেলি গুনিন সব খায়্যা লিবে।”

    শেখ কাজু লুঙ্গির গিঁট বাঁধতে বাঁধতে আবার বাইরে যায়। দাওয়ার মাটিতে বুড়ো আঙুলের ওপর ভর দিয়ে উঁচু হয়ে ঢিপির পিছনে তাকায়, আকালুদের কালো ছাগলটা ঘুরে ঘুরে ঘাস খাচ্ছিল সেখানে। নিস্তব্ধ দুপুর, বেল গাছের গোলাপি মরা পাতা ভুঁই ছেয়ে আছে । সেই দিকে তাকিয়ে শেখত্বের অহংকার ত্যাগ করে তার চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করে,”হামার যেতি জি করেনি মা। মালিক খুবই খাটায়। দিনে একবার প্যাট ভরি খাতি দেয়। অন্য সময় ভোক লাগলি নিজের পইসা খসাতি হয়। তা পইসা থাকলি না খসাব। ভোকে হামার মাথা খারাপ হয়ি যায়।”

    কিন্তু এসব কিছুই সে বলে না, কারণ তার দিদি একুশ বছরের আজমিরা খাতুন নিকার পক্ষে যথেষ্ট ধাড়ি হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও গড়গড়িয়ে কোরাণের আয়াত আউড়াতে পারে না দেখে এখনও তার জন্য কোনো সুপাত্র জোটাতে পারা যায়নি। যে তাকে দেখতে আসে সেইই বলে, "মোসলমানের বেটি হয়ি আয়াত কইতি পারেনি ! তার উপরি ওই কালঠি কুষ্টি চ্যাহারা। উঠেন ভায়্যেরা, আর সমায় বরবাদ কত্তি হবেনি।”

    ফলে একমাথা চুল আর ডাগর চক্ষু নিয়ে কালো আজমিরা তার আব্বার ঘরে শালখুঁটি হয়ে দাঁড়িয়ে আজ কতোকাল ! ঘরের, নাকি বাপ মায়ের বুকের ওপর গুরুভার সেই খুঁটি, কে জানে ! কাজু শেখ শুধু তার দিদির নিকার জন্য চাঁদনি চকের স্টেট ব্যাংকে নিজের মুখে রক্ত ওঠা পয়সা একটি একটি করে জমাতেই থাকে।

    ভাইয়ের দেরি দেখে আজু এখন ঘরের দরজা বিড়াল যাবার মতো ফাঁক করে দাওয়ায় এসে যায়,”ভাই, কিছু দেখতি পালি? পিঠা ত্যালে দিবার আগেই সব দিখে গেসনু। আকালুদার ছ্যায়্যাঁও দিখিনি।”

    সূর্য যখন মধ্যগগনে তখন আকালু কেন, কারও ছায়াই যে দেখা যাবে না, এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু বিকেলের দিকে পিঠেভাজার কালো কড়াই ছাই দিয়ে ঘসে ঘসে মেজে পুকুরে চোবানো তাল গাছের গুঁড়ির ওপর আজমিরা সবে সটান উঠে দাঁড়িয়েছে, গামার গাছের আড়ালে কার ছায়া যেন সট করে সরে গেল। ওঠার দমকে আজুর মোটা খেজুর ছড়ি বিনুনি বুকের মধ্যখানে চাবুকের মতো এসে পড়ে। কে রে কে হোথা, তার সরু গলার হাঁকে পোষা বিল্লি মুমতাজ ল্যাজ সিধে করে মিউ মিউ ডাকে, পায়ের পাতার ওপর গড়াগড়ি খায়, কিন্তু গামার গাছের আড়াল থেকে ছায়ার মানুষ কেউ বেরিয়ে আসে না মোটেই। এমনটা আগেও হয়েছে তার সঙ্গে। কে যেন আড়াল থেকে তাকে দেখে। পিছু পিছু যায়।
    আজও অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তারপর ডান হাতে কড়াইয়ের আংটা ঝুলিয়ে,বাঁ হাত মুমতাজের নরম পেটের নিচে রেখে তাকে বুকের বাঁ দিকে ঠেসে ঘরের পথ ধরে আজু। ভাবতে থাকে, ছ্যায়্যাঁ-টার মাথায় বাবরি চুল দেখা গেল নাকি ! হায় আল্লা!

    মানুষের মধ্যে আজকাল ধর্মের বাতিক খুব বেড়েছে যেন! দোল তো আগে হিন্দু মুসলমান সবাই এক সঙ্গে খেলত, দুই উৎসবের তিথি এক সময়ে পড়লে শবেবরাতের মোমের আলোয় ঝলমল করে উঠত পথে ছড়িয়ে থাকা দোলের লাল রঙ, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মায় আসশেওড়া ঝোপ। এবাড়ি ওবাড়ি যাওয়া আসা করত বাতাসা, কাটা ফল, সন্দেশ, সুজির হালুয়া, চালের রুটি।

    এবারের দোলে রাধামাধবের ফুল দিয়ে সাজানো সিংহাসন ভক্তের কাঁধে চেপে আগের মতোই আবির ছড়াতে ছড়াতে এ মন্দির থেকে ও মন্দিরে যাতায়াত করল, কিন্তু সঙ্গের খোল করতাল বাজানো লোকজন মুখ চিনে চিনে মুঠো ভর্তি বাতাসা বিলোচ্ছে দেখে এ-পাড়ার বাচ্চারা কেমন ব্যোমকে গিয়ে ও-পাড়াদের পথ ছেড়ে নয়ানজুলিতে নেমে গেল।

    আবার শবেবরাতের আগের দিন মসজিদের জমায়েতে ইমাম সাহেব সুরমা পরা চোখ নাচিয়ে নাচিয়ে সবাইকে সাবধান করলেন,”গুণাহের পথে যাওয়া নাই ভাইসব। তুমরা সব আল্লাহের বান্দা। ইসলামে শিরক হয় এমন কাজ করিওনি কেউ।”

    ফলে বন্ধ হয়ে গেল বড় বাঁশের মাথায় ডালা ঝুলিয়ে সবাই মিলে দরজায় দরজায় ছড়া কেটে ঘোরা,”দিলিদিলি মহাম্মদ আখেরাতের মহাম্মদ/ যে দিবে জোড়া পিঠা/ তার হবে জোড়া বিটা/ যে দিবে ছিঁড়া পিঠি/ তার হবে কানা বিটি।”
    এইভাবেই না কতো চতুরতার সঙ্গে গেরস্তের থেকে পিঠে সংগ্রহ করত বাচ্চাবুড়োরা ! কানা বিটি হবার ভয়ে তাদের ডালা ভরে উঠত নিখুঁত পুরুষ্টু স্বাদু পিঠেয়।

    এ বছরের শবেবরাতের নিঝুম রাতে ট্রেনযাত্রী ভাইয়ের জন্য বেছে বেছে জোড়া পিঠা কৌটোয় ভরতে ভরতে আজুর চোখ ছাপিয়ে ওঠে লোনা জলে। ভাই চলে যাবে বলে, নাকি নিজের লাগাতার অপমানে, কে জানে !
    কেন যে আয়াতগুলি তার মনে থাকে না ! অথচ সেই কবে স্কুলে শেখা নামতা, আমাদের ছোট নদী বা কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি ,সবই তো তার চাইলেই মনে পড়ে যায়! বাচ্চারা যেমন টিউশনে যায়, তেমনি মা টাকা খরচ করে তাকে রমুচাচার পড়ালিখা জানা বিবির কাছে সপ্তাহে চারদিন আয়াত মুখস্ত করা, ঠিকভাবে তা পাঠ করতে শেখার জন্য পাঠায়। সেও প্রাণপণ চেষ্টা করে। কিন্তু পাত্রপক্ষের সামনে কিছুতেই কিছু মনে আসে না। হাতের তালু ঘেমে ওঠে,গলার ভেতর শুকিয়ে কাঠ। বুকের মধ্যে যেন ঢেঁকির পাড় পড়ে।

    প্রত্যেক বারই পাত্রপক্ষ মুখ বেঁকিয়ে চলে যাবার পর হালিমা গলা ছেড়ে শাপমন্যি করতে থাকে আকালু গুনিনকে। নাম নেয় না বটে, কিন্তু গালাগালির সে কী তোড়! “মুখে তোর কুঠ হবি রে আজরাইলের ব্যাটা আজরাইল। হাত পা খসি খসি পড়ি যাবিনে। হামার বিটিটার নিকা খারাপ কত্তিছিস তুই। মনে রাখিস, আল্লা সবই দেখতিছে। তোর চোখ উপড়ি নিবিনে, তোর চুল ছিঁড়ি দিবিনে, জভাই করা মুরগাটার মতো ছটফট কত্তি কত্তি তুই ধুলায় গড়াগড়ি যাবিনে। ”

    অতো দূর থেকে আকালুদ্দিন বা আকালুর কানে যায় কিনা এইসব গালাগালি, বোঝা যায় না। লোকে বলে কাউড়ি গ্রামে গুণিনের পাঠ নিতে গেলে প্রথমেই কানে গলন্ত মোম ঢেলে কান বন্ধ করে দিতে হয়। তারপর ঘোড়াকে সিধে চলন শেখানোর জন্য যে ঠুলি পরানো হয়,ভবিষ্যত গুণিনকেও ঝাড়া তিন মাস সেই ঠুলি পরা অভ্যাস করতে হয়। যেন শ্রবণ, দৃষ্টি সব একমুখী থাকে। জগতের ভয়ংকর অনিষ্ট এবং মঙ্গলসাধন, দুইই হাসিল করবার গুপ্ত এবং গূঢ় পাঠের প্রথম ধাপ নাকি এটাই!

    এসব সত্যি কিনা কে বলবে! কাউড়ি গ্রামে গিয়ে ফিরেছে এমন লোক তো জানাশোনা কেউ দেখেনি। সন্দেহ করে সবাই আকালু কাউড়ি-ফেরত, কিন্তু সেটা সত্যি কিনা কে জানে ! তাই হালিমার শাপমন্যির মাঝেই আকালু ভাবলেশহীন মুখে ছাগলের জন্য ঘাস নিড়োয় বা বৃষ্টিতে ভেজা খড়ের চালার ওপর নীল পলিথিন বিছিয়ে দেয়। যেন তার কান এখনও মোমে বোঝাই। আর চিৎকার করে করে ক্লান্ত হয়ে হালিমা দাওয়ায় বসে নিশব্দে কাঁদে, পরনের ময়লা শাড়ির আঁচলে সশব্দে নাক ঝাড়ে। অই একরত্তি কচি বেটাটা তার, পরিবার, গ্রাম, স্কুল, বন্ধু ,সব ছেড়ে একবেলা খেয়ে কতো দূরে পড়ে আছে, সে কি এমনি এমনি ! খেজুর কাঁটা যেমন বিঁধলে আর বেরোতে চায় না, তার শান্ত বিটি আজমিরা ঠিক তেমনি যেন এ সংসারের গলায় বিঁধে রয়েছে। পার করতে কতো টাকা লাগবে কে জানে !

    কাজু পিঠের ব্যাগে তেলে ভাসা পিঠের কৌটো ভরে বেরিয়ে যাবার পর, আজমিরা খেয়াল করে তার নয়নের মণি মুমতাজকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। তক্তপোশের তলা, ডাঁই করে রাখা ভাঙা কাঠকুটোর পেছন, এমনকি বেলগাছের ঝরাপাতা মাড়িয়ে অন্ধকারেও তাকে খুঁজে এল আজমিরা, কিন্তু সে বিল্লি উধাও। হালিমা বললে,”কান্দিসনি, কান্দিসনি আজু, ও ঠিক ফিরি আসবিনি।”

    কিন্তু ভাইয়ের পিছন পিছন সাদা বিড়ালটি স্টেশনমুখো হাঁটা দিল কিনা এটাই আজুর বিশাল ভয়। ঘরের ছেলে ঘর ছেড়ে চলে যাবার সময় সবাই কেঁদে কেঁদে অন্ধ হয়ে যায়, বেড়াল যাচ্ছে কিনা পেছন পেছন কে দেখতে গেছে। নিজেকে বিরাট অপরাধী মনে হতে আজমিরা বলে, ”মা, হামি পুখুরের দিকটা দিখি আসি।”
    রাতবিরেতে ডাগর মেয়ে একা পুকুরের দিকে যাবে, হালিমার অস্বস্তি হয়। কিন্তু উজ্জ্বলার গ্যাস ওভেন থাকলেও, সিলিন্ডারের দাম মেটাবার সাধ্য না থাকায় তারা আবার ঝরাপাতা কাঠকুটো দিয়ে রান্না শুরু করেছে। ভাতের হাঁড়িতে সবে উথল এসেছে, এইসময় সেও যদি বেরিয়ে যায়, তাহলে ফ্যান পড়ে উনুন নিবে যাবে। তাকে আবার ধরাতে ম্যালা খাটনি। তাই সে মেয়েকে বলে,”দূরে যাবিনি কিন্তু। আ চুক চুক ডাক দিলি ও আপনিই চলি আসবিনে।”

    পুকুর পুকুর বলে বটে, কিন্তু সে আসলে এপার ওপার ঝাপসা এক বিশাল দিঘি। আশেপাশের তিন চারটে গ্রামের নাওয়া খাওয়া ধোয়া সব এর জলে। একটা অংশ খাঁড়ির মতো এদিক পানে কিছুটা ঢুকে এসেছে, সেখানে তালের গুঁড়িতে বসে লোকে কুলিকুচি করে, গামছা দিয়ে পিঠ ঘসে, বাসনও মাজে। মুমতাজকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে, এখন সেখানেই বসে কাঁদছিল আজমিরা। ও লিচ্চয় ভাইয়ের পায়ে পায়েই গেছে। জিনপাথারের মাঠে নেকড়ের মতো যে কুকুরগুলো সারা রাত হুটোপাটি করে, তারা কি ওকে ছেড়ে দেবে ?

    মনের সব ভক্তি জড়ো করে সিজদা করে আজু, হামার বিলাইটা যেন বাঁচিবর্তি ঘরে ফিরি আসে আল্লা। হঠাত সে টের পায়, জিন পাথারের দিক থেকে সোঁ সোঁ করে একটা উথালপাথাল হাওয়া এদিক পানেই আসছে। জোর হাওয়া, কিন্তু বালি ওড়ে না, পাতা ছিটকায় না। শুধু একটানা সোঁ সোঁ শব্দ, আর সঙ্গে যেন আতরের মৃদু সুবাস ! সে হাওয়ার চলার পথে যতো গাছ, সবই নুয়ে নুয়ে পড়ে নিজের শেকড়ের দিকে। কিন্তু কী নিঃশব্দ আর গভীর সেই আলোড়ন ! হুটোপাটি নাই, উথালপাথালও না, একরকম ছন্দোবদ্ধ ভাবে গাছগুলো নিজেদের শেকড়ের দিকে একসঙ্গে নুয়ে পড়ছে,আবার মাথা সোজা করে দাঁড়াচ্ছে। আর ক্রমশ গভীর হচ্ছে সেই মন কেমন করা আতরের গন্ধ !

    নির্জন পৈঠায় বসে গায়ে কাঁটা দেয় আজমিরার। মনে পড়ে আজ শবেবরাতের রাত, এই রাতে যাবত প্রাণিকুল, এমনকি বৃক্ষরাজিও সিজদা দেয়, মৌলবি মশাই কইতেন। এতো অভিভূত হয়ে পড়ে আজু, যেন তার শরীরে এক ফোঁটা শক্তি অবশিষ্ট নেই। যেন সে এমন এক অব্যাখ্যাত সুন্দরের সমীপে, যেখান থেকে সর্বগ্রাসী ভয় পেলেও নিজেকে বিচ্যুত করবার ক্ষমতারহিত সে !

    কতোক্ষণে কাটত তার এই সম্মোহন কে জানে, হঠাত পেছন থেকে কে যেন বলে,
    “আজমিরা, এই লে তোর বিলাই। হামার ঘরের ছান্দায় বসিছিল।”
    বেড়ালের মতোই লাফিয়ে ওঠে আজু, এই ফ্যাঁসফেসে গলার আওয়াজ তার খুব চেনা। আকালু গুণিন ! অন্ধকারেও দেখা যায় কোলে তার সাদা ধপধপে বেড়াল ছানা মুমতাজ।

    আজুর মন হাহাকার করে ওঠে হারিয়ে যাওয়া নরম তুলতুলে শরীরটাকে নিজের বুকে টেনে নিতে, কিন্তু তার পায়ের সঙ্গে বাঁধা যেন দু-মণ পাথরের ভার। মা এসে যেন কানের কাছে ভজভজায়, “আকালু শালার ছ্যায়্যাঁ থিকে সব সমায় সাত হাত তফাত থাকতি লাগে।”
    কিন্তু এখন আজুর জীবন মরণ বসে আছে আকালুর হাতের খাঁজে, চওড়া মুঠোয়। পায়ের কাছে নামিয়ে দিলে যে মুমতাজ আবার ছুটে পালাবে না তা কে বলতে পারে!

    অগত্যা আজু সাহস সঞ্চয় করে এক পা এক পা করে এগোয়, দূর থেকেই ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে হাত বাড়ায়। আকালু একটু এগোলে তর্জনী তুলে শাসায়, “এক পা আগ্যাইলি চিল্লাব কিন্তু গুনি নের ব্যাটা গুনি ন। কাউড়ি থিকতে ফিরি তুমার খুব সাহস বাইড়া গেলছে, না? পিঠা লষ্ট করি দাও, আয়াত ভুলাই দাও, শশা গাছটাও সিদিন শুকয়্যা গেল। সব কিছু খাতি না পাল্লে তুমার ভোক মিটতি চায় না, না ?”
    যতো ভয় পায় আজু, ততো বেশি কটু কথা অনর্গল বলে চলে আকালুকে।

    কিন্তু গুনিন হেলে না, দোলে না, মাথা উঁচু করে আজুর মুখের দিকে তাকায় না অব্দি। রাতের বাতাসে তার বাবরি আবছা ওড়ে, যেন নত মুখখানাকে আড়াল করে ওড়া ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ। যেন তার চোখ নাই, মুখ নাই, যেন সে আন্ধারে মেশা এক টুকরা আন্ধার কেবল।
    অনেকক্ষণ পর কাতরকন্ঠে সে শুধু বলে উঠতে পারে, “আজমিরা তুইও ! কাউড়ি গিছিলাম আমি ? আর তুই তা জেনি ফেলিছিস ?
    “সভাই জানে,” ঝাঁঝিয়ে ওঠে আজু, “এখন তুমি তুমার ঘরকে যাও দিনি, হামাকেও যেতি দাও। দেরি দেখলি মা চলি আসবি।”

    মুমতাজকে আজুর হাতে তুলে দিয়ে যেন নিচু গলায় হাহাকার করতে থাকে আকালুদ্দিন,”আল্লার জগতে যতো অনাছিস্টি, সবার দায় আসি পড়ে এই আকালুর ঘাড়ের উপরি। গণেশ কামলার বৌটা বেটির জনম দিয়্যা কথা শুনতি শুনতি গলায় দড়ি দিলে, আর তুই কইবি আকালু গুনি ন খায়্যছে, নাকি ?”

    “তা নোইলে তো কী,” বিনুনিটাকে পিঠের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে সরোষে বলে আজমিরা। আরও হাঁ হয়ে যায় আকালু। ভেবলে গিয়ে তোতলাতে তোতলাতে বলে,”পোক মারা ত্যাল বেশি দিয়ি তোর আব্বা জমিটারে শেষ কোইর‍্যা দিলে, আর দোষ হইলে আকালু গুনিনের, না ?”
    আজু কিছু বলে ওঠার আগেই সে আবার বলে, “বালু পাচারের টাকায় মণি মিঁয়া ঘর দিলে, পঞ্চায়েতের মাথা হইলে, তোরা কইলি, আকালু গুনিনের তাবিজের লেইগ্যা। ঠিক নয়,আজু ?”

    এইখানে তার গলা বড় কোমল শোনায়,যেন আজমিরার হ্যাঁ কি না-এর ওপর আকালুর জীবন মরণ নির্ভর করে আছে। যেন সে সাহস সঞ্চয় করে উঠতে পারে না আজমিরা কী বলবে তাই শোনার, তাই কিছু বলার আগেই আবার বলে, “পিছু ফিরি দ্যাখ, শবেবরাতের রাইত কেমন আগুনে সাইজ্যাছে। আগে থাকতিই খবর ছিল হামার কাছে আজ ঘরে ঘরের ঝ্যামেলাতে ম্যালাই ঘর পুড়বে, মানুষ মরবে। তোর বিলাই ফিরত দিতি আসি তাও দিখি গেনু আর ‘গুনি ন শালাই করাইছে সব’ এইটা শুনার আগে য্যায়া দেখি না কইটা জান বাচাইতি পারি।”

    আকালুর আঙুল যেদিকে সেদিকে তাকিয়ে আজমিরা দেখে, অনেক দূরে দিঘির উত্তর পশ্চিম কোণ থেকে ভেসে আসছে ক্ষীণ কোলাহল, যেন অনেক মানুষ চিৎকার করছে, গাইগরু ডাকছে, কুকুরের দল চেঁচাচ্ছে পরিত্রাহি। এতোক্ষণ সুগন্ধ বেয়ে আসা আকাশপথে যেন হঠাত পোড়া কটু বাস ছুটছে। পূর্ণিমার চাঁদ ঢেকে গেছে স্লেট রঙের মেঘে। সিজদা দিচ্ছিল যে গাছেরা তারা এখন উত্তাল হয়ে মাথা ঝাঁকাচ্ছে। শুকনো পাতা আর ধুলোয় ঢেকে যাচ্ছে চারধার। সবটাই মনের ভুল কিনা বোঝার জন্য নাকের পাটা ফুলিয়ে শ্বাস নেয় আজমিরা। তারপর ভয়ার্ত চোখ ফিরিয়ে গুনিনকে কিছু বলতে গিয়ে দেখে, চরাচরে কেউ কোত্থাও নেই। যেখানে আকালু দাঁড়িয়েছিল, তার পেছনেই একটা সবেদা গাছ প্রবল হাওয়ায় লুটোপুটি খাচ্ছে।

    আমূল কেঁপে ওঠে আজমিরা। গোটাটাই কি তাহলে তার মনের ভুল ! কিন্তু এই তো বুকের পাশে মমতাজের ছোঁয়া। তার পেটের ভেতরের আহ্লাদের গরগরানি টের পাচ্ছে সে। ঐ তো ওপাশে মোটা সাদা ধোঁয়ার থাম্বা মানুষ আর পশুর চিৎকারকে নিজের সঙ্গে পেঁচিয়ে নিয়ে অজগরের মতো ধীরে উঠে যাচ্ছে আকাশপানে।

    জলের দিকে চোখ যায় তার। বিরাট মাছের মতো কী এক জন্তু না মানুষ উথালপাথাল করে সাঁতার কেটে ছুটছে যেদিকে আগুনের রঙ দেখা যায় সেদিক পানে। ছেঁড়া ছেঁড়া আলোয় দেখা যায় তেকোণা এক চলন্ত নকশা ফুটে উঠেছে অন্ধকার কালো জলের বুকে। জলের ভেতর থেকে সেই ফ্যাঁসফেসে গলা আবার ভেসে আসে, “গুনিন চিন্যা লেওয়া কি সোজা? তারা হামারঘের ভিতরেই মিশ্যা আছে। তুই অন্তত হামাকে দোষ দিস না, আজমিরা।”

    “গুনিন ফিরি আসো” চেঁচিয়ে বলতে গিয়েও সামলে নেয় আজমিরা। কাউড়ির কথা বেবাকই মিথ্যা এও কী হয় ! তবু মমতাজকে জড়িয়ে নিয়ে ফেরার পথে সে বার বারই পেছন ফেরে, আঘাটায় হোঁচট খায়, ততোক্ষণে আন্দোলন থেমে যাওয়া স্থির জলের ওপর আতিপাঁতি করে কী যেন খোঁজে। গুনিন যে কথাগুলি আজ তাকে কইল, সেগুলোর ঠিকঠাক মানে তার বোকা মাথায় ঢোকে না। সে ভেবে সারা হয়, কিন্তু তল পায় না।

    বাধ্য হয়ে এক পা এক পা করে ঘরে ফিরতে থাকা আজমিরা ফিরে ফিরে দেখে তার পেছনের আকাশ ক্রমেই রঙ বদলাচ্ছে আগুনের উত্তাপে আর বধ্যভূমির কোলাহলে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    তন্ময় ভট্টাচার্য | প্রতিভা সরকার | হেমন্ত দাস | শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় | মৃণাল শতপথী | কল্পর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় | দেবাশিস মল্লিক | মণিশংকর বিশ্বাস | সুকান্ত ঘোষ | সাদিক হোসেন | ডাঃ সেখ নূর মহাম্মদ | মোহাম্মদ সাদেকুজ্জামান শরীফ | সোমনাথ রায় | রুমা মোদক | জয় গোস্বামী | দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় | সুপর্ণা দেব | সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় | স্বাতী রায় | অনিন্দিতা গোস্বামী | ফারুক আব্দুল্লাহ | খান শামিমা হক | নীলু ইসলাম | সারিকা খাতুন | দময়ন্তী | সাদাত হোসাইন | গোলাম রাশিদ | মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায় | শারদা মণ্ডল | অমর মিত্র | হামিরউদ্দিন মিদ্যা | ইমানুল হক | নীলাঞ্জন দরিপা | চিরশ্রী দেবনাথ | সায়ন কর ভৌমিক | কৌশিক বাজারী | ঐন্দ্রিল ভৌমিক | চৈতালী চট্টোপাধ্যায় | যাজ্ঞসেনী গুপ্ত কৃষ্ণা | মোজাফ্‌ফর হোসেন | অনুরাধা কুন্ডা | মাজুল হাসান | জগন্নাথদেব মন্ডল | যশোধরা রায়চৌধুরী | কুন্তলা বন্দ্যোপাধ্যায় | শ্রীদর্শিনী চক্রবর্তী | দীপেন ভট্টাচার্য | মৌ সেন | পায়েল দেব | তনুজ | রুখসানা কাজল | পার্থসারথি গিরি | ইদের কড়চা
  • গপ্পো | ০৩ মে ২০২২ | ৪৫৮৫ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ঘন্টাঘর - একক
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • শক্তি | 2405:201:8005:90c7:10ce:62e3:ccc:***:*** | ০৩ মে ২০২২ ১২:১৫507154
  • বড় মমতায় জীবন  এঁকেছেন প্রতিভা,কুসংস্কারাচ্ছন্ন গরীব মায়ের ছেতরে যাওয়া পিঠের মতো মা আর তার ছেলেমেয়ের ভাগ‍্য আবার আকালুর বিড়ম্বিত জীবন নিপুণ চিত্রনে সুস্পস্ট।ভারি মনটানা লেখা।
  • অর্দ্ধেন্দু | 103.15.***.*** | ০৩ মে ২০২২ ১৪:৩৩507164
  • এক খণ্ড চিরচেনা কিন্তু অচেনা ভুবনকে অবিকল তুলে আনলেন প্রতিভা। আপনি সার্থকনামা। 
  • অর্দ্ধেন্দু | 103.15.***.*** | ০৩ মে ২০২২ ১৪:৩৩507165
  • এক খণ্ড চিরচেনা কিন্তু অচেনা ভুবনকে অবিকল তুলে আনলেন প্রতিভা। আপনি সার্থকনামা। 
  • সুপর্ণা দেব | 110.227.***.*** | ০৩ মে ২০২২ ১৯:১৮507176
  • অপূর্ব
  • | ০৩ মে ২০২২ ১৯:৪১507178
  • প্রতিটি চরিত্রই অসহায়।  আজমিরা, তার মা একই সাথে নির্মম ও অসহায়।  অপূর্ব নৈপুণ্যে তৈরী চরিত্রগুলি। পড়ার পরে অতল অসহায়তা চারিয়ে যায় পাঠকের মনে। 
     
  • শারদা মণ্ডল | 202.142.***.*** | ০৩ মে ২০২২ ২০:৩০507183
  • অসাধারণ। আপনি নিজেও গুণিন। আমাকে বশ করেছেন। 
  • শিবানী ভট্টাচার্য | 2409:4060:2e89:ed3e::690a:***:*** | ০৩ মে ২০২২ ২০:৩১507184
  • অসহায় এক জগতের সাদাকালো ছবি। মুগ্ধ হলাম।
  • ঈশিতা ভাদুড়ী | 103.252.***.*** | ০৩ মে ২০২২ ২০:৪২507187
  • দারুণ লাগলো 
  • মানস রায় | 103.205.***.*** | ০৪ মে ২০২২ ০১:৩৭507201
  • প্রতিভা সরকারের লেখা পাঠ করা মানে গল্পের সঙ্গে সঙ্গে চরিত্র গুলোর সামাজিক অবস্থানের চিত্রকল্প দেখতে পাওয়া । সেই সঙ্গে সামাজিক রীতি, লোকাচার সবের সঙ্গেই পরিচিত হওয়া । গুনিন তাঁর তেমনি মেদহীন আরেক সৃষ্টি । মুগ্ধ হলাম । 
  • দীপেন ভট্টাচার্য | 204.69.***.*** | ০৪ মে ২০২২ ০৬:৫৪507209
  • কীভাবে এরকম লেখেন ভাবি... "কিন্তু গুনিন হেলে না, দোলে না, মাথা উঁচু করে আজুর মুখের দিকে তাকায় না অব্দি। রাতের বাতাসে তার বাবরি আবছা ওড়ে, যেন নত মুখখানাকে আড়াল করে ওড়া ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ। যেন তার চোখ নাই, মুখ নাই, যেন সে আন্ধারে মেশা এক টুকরা আন্ধার কেবল..."
    কত কিছু যে জানতে হয়, বোধ করতে হয়, তাকে রূপ দিতে হয়। সেই রূপের মাত্রা গুণে শেষ করার নয় ... "পনের দিনের ছুটি খাবার পর আজ রাত্রি বেলায় কাজু দিল্লির ট্রেন ধরবে, তাই মায়ের কান্না-ভেজা প্রাণ ভাঁড়ে জমানো টাকার গায়ে পোড়া মাটির গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে বাজার থেকে সুজি আটা গুড় তেল নিয়ে আসে। তাতে সুগন্ধের জন্য লম্বা করে কুচোনো আদা পড়ে, স্বাদের জন্য এক খাবলা নুন। কড়াই বসানোর আগে হালিমা ভালো করে দেখে নেয় দরজা জানালা সব বন্ধ আছে কিনা। শালা গুনিনের নাকে যদি এক ছিটা গন্ধও যায়, তবে একটা পিঠাও সুস্থ ভাজা হবে না। তেলে দেওয়া মাত্র গোলা ছেতরে সব জিনিস নষ্ট হবে।..."
    পিঠাকেও সুস্থ ভাজা করা যায়!!!
    অনেকে চরিত্রদের অসহায় বলেছেন, কিন্তু আমার জন্য তা নয়, প্রতিটি চরিত্র তার সত্তা নিয়েই অবতীর্ণ হচ্ছে সম্পুর্ণ সচেতনভাবে তাদের জীবনরেখায়। যতটুকু সম্ভব। যেমন আমরা পাঠকেরা চেষ্টা করি ...
    এরকম লেখা সহজে লেখা যায় না।
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ০৪ মে ২০২২ ০৯:৪১507210
  • প্রতিভাদি, আপনার কথকতা নিয়ে কোন কথা হবে না। কিন্তু কয়েকবার পরেও কোথাও একটা অস্বস্তি থেকে যাচ্ছিল। এখন মনে হচ্ছে, তল পাচ্ছি তার। শেষ অনুচ্ছেদ তার আগের আগের আগে বসে এবার যেটা শেষ অনুচ্ছেদ হল সেটা আজমিরার মনের ভিতর অনুভবের ঘোর দিয়ে শেষ হলে বোধহয় আমার আরেকটু ভালো লাগত। 
  • অমর মিত্র | 103.242.***.*** | ০৪ মে ২০২২ ১৪:৫৩507219
  • অসাধারণ  লাগল।  এই গল্প এখন হারিয়ে গেছে। কে লেখে?  গল্পের বুনন অসামান্য।   প্রতিভার গল্পের অনুরাগী  আমি।
  • মণিশংকর | 120.18.***.*** | ০৪ মে ২০২২ ১৫:১৪507222
  • অপূর্ব গল্প প্রতিভাদি! অপূর্ব!  
  • শাশ্বতী | 117.205.***.*** | ০৪ মে ২০২২ ১৬:১১507223
  • আহা! গুনিন য্যান ফিইরা আসে।
  • জয়ন্ত সেনগুপ্ত | 2401:4900:3143:24b4:0:13:62b6:***:*** | ০৪ মে ২০২২ ১৭:১৩507226
  • আজকের বাস্তব চিত্রের প্রেক্ষিতে অসহায় চরিত্রগুলো আপনার লেখনির মধ্য দিয়ে জীবন্ত হয়ে উঠেছে! মুগ্ধ হয়ে পড়লাম
  • এনার | 203.163.***.*** | ০৪ মে ২০২২ ১৮:০৮507229
  • প্রতিভার গল্পের একটা প্রভাব আছে যেটা নেশার মতো বিদ্যমান বাস্তবকে কেমন যেন ঘোলাটে করে দেয়। চেতনার চৌকাঠে দাঁড়িয়ে থাকে কেবল আজু,কাজু আর হালিমাদের জীবন।নাকে এসে  লাগে তেল-পিঠের ঘ্রাণ,  কানে আসে পুকুরের ওপাড়ে পুড়তে  থাকা বাড়ীগুলোর থেকে বয়ে আসা কান্নার। ধ্বনি আর চোখের সামনে ভেসে যায় সন্তরণশীল আকালুর আবছা শরীরের রেখা।  এটাই প্রতিভা--  বোঝা যায় কিন্তু ছোঁয়া  যায় না।
  • প্রজ্ঞাপারমিতা | 223.223.***.*** | ০৪ মে ২০২২ ১৮:২০507230
  • কী অসহায়তা
  • অমিতাভ প্রহরাজ | 2409:4060:2d83:13cd::949:***:*** | ০৪ মে ২০২২ ২১:৪১507237
  • কী আশ্চর্য গল্প.. আর চরিত্র চিত্রায়ণ যে কোন স্তরে যেতে পারে... "খাওয়া কথাটার ওপর আতঙ্কে বার বার জোর দিয়ে ফেলে মেয়েটা, ফলে কথাটা শোনায় যেন ‘ঘাওয়া!’" এই নির্লিপ্ত অবিকল সটান বুকে ধাক্কা দেয়... বুকে এসে বাজে পিঠে ভেঙে যাওয়ার মত নিরীহ ঘটনা.. অথবা শবেবরাতের রাতে গাছের ঝুঁকে পড়া... হারানো মুমতাজ পাওয়া আজুর রাগ, আকলুর জন্য ওর শসাগাছ মরে গেছে বলে... আর শেষে ওই গুনিনের সঙ্গা যা আকাশ সীমানায় দহনে আবদ্ধ, সমস্ত মানুষের থেকে জাত
     
    আমি এক আখড়ায় একজন গুনিনের সাথে আলাপ হয়েছিল, কয়েক ছিলিম গাঁজার পর বললো, "আপনার কোন শত্রু থাকলে বলবেন, সরিয়ে দেব", জিজ্ঞেস করলুম "কী ভাবে? মন্ত্র তন্ত্র? "... বললো "ধুর,আমার তিনটে বাঘা খরিশ আছে, কালাচও আছে, জানালা দিয়ে ঢুকিয়ে দেব... যাই সাপ তাই অভিশাপ, বুঝলেন বাবামশাই"  (ওরা কথার খেলা খেলে খুব)
  • সিএস | 49.37.***.*** | ০৪ মে ২০২২ ২২:২৭507241
  • গল্পটা কয়েকবার পড়লাম, আমার নীতিকথামূলক লাগল। সাধারণতঃ গরীব মানুষকে নিয়ে লেখা বাংলা ভাষার বিবিধ গল্পকে আমার সেরকমই লাগে, যদিও সেইসব লেখা প্রশংসিত, বাস্তব, চরিত্র ইত্যাদির জন্য।

    নীতিকথা বলছি কারণ গুণিন শেষে আজুকে শুনিয়ে গেল যে গুণিন মানুষের মধ্যেই থাকে। আর আজু গুণিনের শেষের ঐসব কথা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না, এরকমই লেখা হয়েছে। এটা অবিশ্বাস্য লাগে যে এদেশের গরীব মানুষে জানে না যে মানুষই মানুষের ক্ষতি করে, তারাই দায়ী। কিন্তু তাও তাদের দৈনন্দিন জীবন চালিয়ে যেতে হয়, মেনে নিতে হয়, ঘা খেতে হয়, মরে যেতে হয়। শেষ অংশটি আমার কাছে তাই প্রক্ষিপ্ত, গরীব মানুষের রিয়ালিটি সেরকম নয় বলেই মনে করি। কিন্তু সেই বাস্তবকে সহ্য করে কেন তাদের গুণিনকেই দরকার হয়ে পড়ে সে অন্য বাস্তব। সেই বাস্তবের মধ্যে না গিয়ে গল্পটি আজুর "বোকা মাথা" দিয়ে শেষ হয় !

    মনে করি এরকমভাবে শেষ না করলে শিক্ষিত পাঠকদের কাছে গল্পটির মুল্য থাকত না। গরীব মানুষের "কুসংস্কার" আর বাস্তবের তল না পাওয়া, গল্পটির শেষে তাদের জন্য এইটুকু পড়ে থাকে। আমাদের জন্য পড়ে থাকে এই জ্ঞানটুকু যা আমাদের 'জানা' যে মানুষই মানুষের ক্ষতি করে, 'আমরা' সেসব ভালো বুঝি !

    গরীব মানুষদের কথা লিখতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের 'খাটো' করে দেওয়া হলো, গল্পটিকে আমি সেভাবেই পড়ি। তাদের ধ্বস্ত জীবন নিয়ে গল্প লেখার এটা বড়রকমের ট্র‌্যাপ।
  • কাকলি দেবনাথ | 43.239.***.*** | ০৪ মে ২০২২ ২৩:৫৮507246
  • এত ভালো গল্প অনেকদিন  পড়িনি। কী করে যে এমন লেখা আসে তোমার! প্রণাম নিও দি। সুস্থ থেকো।
  • Upal Mukhopadhyay | 116.193.***.*** | ০৫ মে ২০২২ ০০:৪৮507247
  • প্রতিভাদি কিসে বিশ্বাসী আর নন এ নিয়ে ভাবছিলাম। তারপর দেখলাম জ্ঞান তত্ত্বের গোড়ায় ধুনো দিয়ে রিয়েলিজমের চর্চা বা অন্টোলজির গাঢ় নির্জ্ঞান কোনটাই তাঁর অভিপ্সা নয়। তিনি এক সহজিয়া কথক যিনি পুকুর ঘাটে বসা মেয়েটির বিনুনির দোলায় অপয়া ডুম সেয়ার গুনিনের দুখসাগর সন্ধানী। আসল গুনিনটি আছে সবার মনের গহনে। সে মাঝে মাঝে দেখা দেয় আর জ্ঞান- নির্জ্ঞানের মধ্যে দোলে ও দোলায়। এই দোলা দেওয়ার ক্র্যাফটা রপ্ত করা এক লুপ্তপ্রায় শিল্প। আর তাকে ভয় দেখায় এমন আগুন আর পোড়া মাসের লিঞ্চিস্থানের পয়দা হয়নি। 
  • অশিক্ষিত পাঠক | 203.163.***.*** | ০৫ মে ২০২২ ০৯:০১507250
  • সিএসকে জানাই, মন্তব্যটি হয়েছে একেবারে পাকামাথা শিক্ষিত মানুষের মতোই। মুশকিল হইল এইটাই যে আমরা থাকি একেবারে 'অশিক্ষিত' পাঠকের মধ্যে, বেশির ভাগকেই পড়ে শোনাতে হয়,অল্প লোক পড়তে পারে। পাশের বাড়ির সিঁদুর ডগমগ নতুন বৌটি এল, সেবছর গাছে মুকুল এল না। শাশুড়ি দেগে দিল অপয়া বৌ। 
     
    আর গুণিন!  তাদের কথা বলব কী ভায়া, প্রত্যেকেই পারলে একটি একটি হয়ে যাই। দাঁত নখ বার করে ঝাঁপাই। আর অন্যের দিকে আঙুল তুলি। 
    মনস্তাত্ত্বিক যে প্যাঁচের কথা আপুনি লিখেছ যে আসল কথাটি গোপনে নাই, সব জেনেও তবু 'গরিব'  সহ্য করে, আসল গরিব অত সবজান্তা নয় বাবু। তাদের চোখে ঠুলি পরায় রাজনীতি স্বার্থসিদ্ধ করার আশায়।  ক্ষতে মলম দেয় পক্ক পশ্চাদ্দেশ-যুক্ত বাবুদের এইসব থিয়োরি। কি না গরিব সব জানে, জেনেও সহ্য করে। সহ্য করতে তাকে বাধ্য করা হয়, আর গরিব যাতে সত্যটি না জেনে ফেলে তার জন্য দেওয়া হয় এইসব থিয়োরি। শিক্ষা নাই, স্বাস্থ্য নাই, কোনোদিকে কোনো মঙ্গল নাই গরিব গুণিন বিশ্বাস রাখবে না কী করবে! 
     
    আর সে যে কত বড় বিশ্বাস এই ঠাঁই এসে দেখে যাও। ট্র‍্যাপ পাতে আজন্ম কুসংস্কার, রাজনৈতিক মাতব্বরি আর শিক্ষিত পিঠ চাপরানো। কোদালকে সে কোদাল বলবে না, অসহায়তাকে বলবে শক্তি, আর চাইবে কেউ যেন আয়না তুলে না ধরে সামনে।
     
    গল্পটি আপনার মতে কিছু 'অশিক্ষিত শ্রোতা'দের পড়ে শোনালাম। হান্ড্রেড পার্সেন্ট বলল, দাদা কায়দা মারিস না। গুণিন কী তা তুই জানিস না। কোনো মানুষের সাধ্য নাই সেসব অনিষ্ট করে। শেষটা আবার পড়তে তারা চুপ করে গেল। ভাবল অনেকক্ষণ। তারপর বলল দেখি নাই তো এমন। তবে ভগবানের রাজ্যে কত কীই তো হয়। হতিও পারে আমাদের মধ্যেই গুণিন আছে। সে ভালও করতে পারে বা খারাপ। 
     
    মোটামুটি এই আমার ক্ষেত্রসমীক্ষা। গল্পটি পড়ে খুব ভাল লেগেছিল বলে কয়েকজনকে নিয়ে বসেছিলাম। গল্পটা ভাবায়। নিজেদের নিয়েই ভাবতে বাধ্য করে। এইখানেই এর সার্থকতা। 
     
    আজমিরা যে বোকা, ক্ষ্যাপা, দুখী, এ তো তার মায়ের জবান থেকে জানি আমরা। তাই তার লেগে বেশি ভালবাসা। এইটা গোটা গরিব জাতির মাথায় কলঙ্কের টিকা করে পরায় যে শিক্ষিত পাঠক, তাকে বলি লহ প্রণাম।
  • observer | 2405:8100:8000:5ca1::3f:***:*** | ০৫ মে ২০২২ ১০:৩৩507252
  • ভক্তেরা নেমে পড়েছে। একটাও বেসুরো কমেন রেয়াত করা নেই। সবাই তোরা জয়ধ্বনি কর রে।
    তা বাবুপাঠক কোন এলাকায় কাদের পইড়্যে শুনাইলেন কন দেকি।  এলাকার নাম বাড়ি দোকান খেতের হদিশ পেলি আমুও একবার গিয়ে পুছতাছ করতম আর কি।
  • অশিক্ষিত পাঠক | 115.96.***.*** | ০৫ মে ২০২২ ১০:৫৪507253
  • কথাটা তা নয়। এই সিএস বাবুকে দেখি গুরুতে কারও লেখাই পছন্দ হয় না। সবেতেই নাক সেঁটকান। ঐটাই অভ্যাস।
    তা আপনি কি দাদা কেন্দ্রীয় না রাজ্যস্তরের অব্জার্ভার? 
    শান্তিনিকেতন ছাড়িয়ে রূপপুরে চলে আসেন। মোড়ের মাথায় চায়ের দোকানে চা খেতে খেতে আড্ডা হবে। আমরা গরীবগুর্বো অশিক্ষিত সম্প্রদায় রোজ বসি।
  • Mousumi Banerjee | ০৫ মে ২০২২ ১৬:২৫507259
  • খুব ভালো লাগল
  • ইমানুল হক | 110.224.***.*** | ০৬ মে ২০২২ ১১:৩৫507286
  • প্রতিমা সরকার লিখতে জানেন। প্রতিভাময়ী লেখিকা / লেখক।
    কিন্তু মুসলিম সমাজ মানেই জিন আর যৌনতা--এই ছাপ তা থেকে মু্ক্ত হলে ভালো লাগতো। যৌনতা নেই গুণিন প্রসঙ্গ আছে। ছোটোবেলায় হিন্দু মুসলমান সবাইকে ভূতপ্রেত জিনে বিশ্বাস করতে দেখেছি, কিন্তু গুণিন সব পারে, এই বোধ দেখিনি।
     
    সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ অসাধারণ লিখেছিলেন, অলীক মানুষ, ওই যে জিন তত্ত্ব আনলেন, আর কেউ বের হতে পারলেন না। আবুল বাশার, আফসার, সোহরাব--সবাই। প্রতিভাদিকে অনুরোধ করবো মুসলিম সমাজের অন্যদিক নিয়েও লিখতে। চলুন না আমার গ্রামে। দেখুন।  
  • ইমানুল হক | 110.224.***.*** | ০৬ মে ২০২২ ১১:৩৬507288
  • প্রতিভা। ভুল টাইপো
  • সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় | 2402:3a80:1cd1:ec6e:278:5634:1232:***:*** | ০৬ মে ২০২২ ১৪:০৩507291
  • অনবদ্য  ! 
  • সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় | 2402:3a80:1cd1:ec6e:278:5634:1232:***:*** | ০৬ মে ২০২২ ১৪:০৩507292
  • অনবদ্য  ! 
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন