গতপর্ব থেকেই শুনছি সুপশাস্ত্র ও তার রচনাকার তৃতীয় মঙ্গরসের কথা। কে এই তৃতীয় মঙ্গরস? আজ যা কর্ণাটক রাজ্য তারই একেবারে দক্ষিণ-পশ্চিমে ছোট্টো একটুকরো এ অঞ্চল। অপরূপ। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পূর্বঢালে তার অবস্থান। অরণ্যাবৃত। মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে কাবেরী নদী। এ অঞ্চলের আদি নাম ‘কোদি মালেনাড়’, যার অর্থ সুউচ্চ পর্বত পরিবেষ্টিত অরণ্যভূমি১। প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনে ভরপুর এ অঞ্চলের নাম কোড়াগু। ব্রিটিশরা বলত কুর্গ। দশম থেকে ত্রয়োদশ শতক পর্যন্ত প্রথমে চোল সম্রাটদের ও পরে হোয়সালা রাজাদের অধীনে এ অঞ্চলের শাসক ছিলেন চেঙ্গালব বংশের জমিদারেরা। এঁরা ছিলেন জৈন। ত্রয়োদশ শতকে বীরশৈব হয়ে যান২। এরপরে চেঙ্গলবদের খবর আর বিশেষ মেলে না।
কিন্তু ফের তাঁদের উত্থান হয় পঞ্চদশ শতকে। পঞ্চদশক থেকে সপ্তদশ শতক পর্যন্ত বর্তমান কোড়াগু জেলা এবং মহিশূর জেলার পিরিয়পট্টন তালুক নিয়ে গঠিত হয় তাঁদের করদ রাজ্য বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অধীনে, যে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের জৌলুস ঝলসে উঠেছিল কৃষ্ণদেব রায়ের রাজত্বকালে ১৫০৯ থেকে ১৫২৯ পর্যন্ত।
যত দূর জানা যায়, এই করদ রাজ্যের এক মন্ত্রী ছিলেন মাধব। বর্তমান মহীশূর জেলার হুনসুর তালুকে ছিল তাঁর বিশাল জমিদারি। সেসময় সে অঞ্চলের নাম ছিল ধতুপুর বা কাল্লাহাল্লি। সেই মাধবের পুত্র ছিলেন বিজয়েন্দ্র, এবং তস্যপুত্র মঙ্গরস। সম্ভবত তিনি ছিলেন পঞ্চদশ শতকের শেষ, ষোড়শ শতকের মানুষ৩। কাজেই হয়তো কৃষ্ণদেব রায়ের সমসাময়িক এবং বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সেরা সময়ের সাক্ষী।
বিজয়েন্দ্র (ভিন্নমতে বিজয়পাল কিংবা বিজয়রাজ) এবং দেবী লে-র (ভিন্ন মতে কুসুমাজম্মন্নি-র) পুত্র মঙ্গরস ছিলেন এক দক্ষ সেনাপতি। ছিলেন কবি। এবং তিনি ছিলেন জৈন। সেসময়ে বিদ্রোহী বেদার আদিবাসী গোষ্ঠীকে দমন করে বেট্টদপুর নামের একটা শহর পত্তন করেছিলেন মঙ্গরস। তাঁর অঞ্চলে খনন করেছিলেন অনেক পুকুর এবং তৈরি করেছিলেন একাধিক জৈন মন্দির। এইসবের পাশাপাশি কন্নড় সাহিত্যে কবি হিসেবে বিশেষ সুখ্যাতি লাভ করেছিলেন মঙ্গরস। তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে—জয়নড়পকাব্য, প্রভঞ্জনচরিত, শ্রীপালচরিত, নেমিজিনেশসঙ্গতি এবং সম্মুক্তকৌমুদী। এই শেষোক্ত কাব্যটি রচিত হয় ১৫০৯ সাধারণাব্দে, যা থেকে সুনিশ্চিত হওয়া যায় মঙ্গরসের সময়কালের বিষয়ে৪।
এহেন মঙ্গরসের পরমাশ্চর্য সৃষ্টি সূপশাস্ত্র। পরমাশ্চর্য এই কারণেই যে, এটি আদ্যোপান্ত খাঁটি কুকবুক, এবং তাঁর অন্যতম কাব্যগ্রন্থ, ছ-পঙ্ক্তির ছন্দে রচিত! কাব্যে মহাকাব্যে চর্ব্যচোষ্যলেহ্যপেয়-র বিবরণ আমরা ভূরি ভূরি পাই, কিন্তু নিখুত ছন্দে রচিত এমন কুকবুক-কাব্য ভারতে নিশ্চিতভাবেই আর নেই, সারা দুনিয়াতেই কী আছে? আমার অন্তত জানা নেই।
কিন্তু এ সবই তো জানলাম অন্য নানা কেতাব থেকে, মূল বইটি হাতে পাই কীভাবে? খোঁজ করতে করতে মিলে গেল তার ইংরেজি তরজমার হদিশ—ভারতের বৃহত্তম এনজিও Indian National Trust for Art and Cultural Heritage (INTACH)-এর উদ্যোগে তা প্রকাশিত হয় ২০১২ সালে। আর তারপরেই ধাক্কাটা খেলাম। সে বই সম্পূর্ণ আউট অফ প্রিন্ট। মুদ্রিত একটি কপিও আর বাজারে মেলে না, কবে মিলবে কেউ জানে না। ফোন করলাম ইনট্যাক-এর কর্মকর্তাদের, তাঁরাও জানেন না। আর সেই সূত্রেই হল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
ভদ্রমহিলার নাম জ্যোৎস্না কামাট। ইন্টারনেট ঘাঁটতে ঘাঁটতে পেয়ে গেলাম তাঁর একটা সাইট। ইতিহাসে পিএইচডি। অন্যান্য নানা পুরস্কারের মধ্যে কর্ণাটক সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত। মধ্যযুগীয় কর্ণাটকে সামাজিক জীবন তাঁর গবেষণার বিষয়। এবং তাঁর সাইটে রয়েছে খাদ্যের ইতিহাস নিয়ে একগুচ্ছ লেখা, যার মধ্যে আমার চোখ আটকে গেল ৭৭ টি মূলসূত্র উদ্ধৃত একটি লেখায়—বিজয়নগরকালে খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাস। হুমড়ি খেয়ে পড়ি—অজস্র মণিমুক্তোয় ভরা। যেমন ষোড়শ শতকের শতায়ু কন্নড় কবি, সুরকার, গীতিকার, দার্শনিক কনকদাসের (১৫০৯ – ১৬০৯) মোহনতরঙ্গিণী গ্রন্থে ব্রাহ্মণভোজনের এই দুরন্ত বর্ণনা—স্নান ও পূজা সমাপণ করিয়া ব্রাহ্মণগণ তাঁহাদের বহির্বস্ত্র খুলিয়া ফেলিলেন। তদ্পরে তাঁহারা ভোজনশালার দ্বার দিয়া সকলে একইসঙ্গে প্রবেশ করিবার জন্য ঠেলাঠেলি জুড়িয়া দিলেন। অতঃপর তাঁহারা দুই সারিতে উপবিষ্ট হইলেন। তাঁহাদের সামনে কদলীপত্র ও পত্র-নির্মিত পাত্র রাখা হইল, দ্বিতীয়টি ব্যবহৃত হইল ঘি ও তরল রাখিবার উদ্দেশ্যে। ইহার পরে বিবিধ খাদ্য পরিবেশিত হইল। প্রার্থনা সারিয়া ব্রাহ্মণগণ ডাল, ভাত ও ঘি একত্রে মণ্ড পাকাইয়া হস্ত দিয়া নিক্ষেপ করিতে লাগিলেন এবং মুখে ধরিয়া ফেলিতে লাগিলেন!
ডাল-ভাত তো হল, কিন্তু আমি খুঁজছি খিচুড়ি, এ লেখা থেকে তার বেশ কড়া সুবাস ভেসে এসেছিল। মরীচিকা। খিচুড়ি, খিচড়ি ইত্যাকার কিচ্ছুর কোনো উল্লেখ তাতে নেই। কিন্তু একাধিকবার উল্লিখিত ‘কবি মঙ্গরস’! আর এই সাইটেই পেয়ে গেলাম ফোননম্বর। এবং কপাল ঠুকে দিলাম লাগিয়ে ফোন।
গলা শুনেই মালুম হল ভদ্রমহিলা বৃদ্ধা—‘হ্যাঁ, আমিই বলছি। কী চাই?’
সংক্ষেপে খুলে বললাম আমার সমস্যা—‘সূপশাস্ত্র আমার চাই। এমন এক গ্রন্থে একবার অন্তত চোখ বুলাতে না পারলে আমার গবেষণাটাই কানা হয়ে থাকবে যে!’
‘বালাই ষাট, তা কেন? মঙ্গরসের সূপশাস্ত্র তো আমার বাড়িতেই আছে। কী জানা দরকার আপনার?’
আমার বুকের মধ্যে ফের ঘোড়দৌড়, ‘আজ্ঞে খিচুড়ি?’
‘চুড়ি? কী চুড়ি?’
‘আজ্ঞে খিচুড়ি, চাল-ডাল দিয়ে সাধারণত তৈয়ার হয়!’
‘চাল-ডাল মিশিয়ে? অ তাই বলুন—হুগ্গি হুগ্গি। কন্নড়ে তাকে হুগ্গি বলে বুঝলেন?’
‘তা সুপশাস্ত্রে কি এই হুগ্গির কথা বলা আছে?’
‘আচ্ছা, আপনি কোথা থেকে কথা বলছেন?’
‘কলকাতা থেকে।’
‘তাই নাকি? আপনি বাঙালি নাকি?’ বৃদ্ধা উত্তেজিত।
মনে মনে ভাবি, এই মরেচে, ইনি আবার বঙ্গবিদ্বেষী নাকি, ‘হ্যাঁ, বাঙালি তো।’
‘আমি তো কলকাতায় ছিলাম। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি আগে। আমার বয়স কত জানেন?’
‘না, কত?’
‘বিরাশি, বুঝলেন বিরাশি। আমি তো শান্তিনিকেতনে গিয়েছি। আমার জীবনটাই কেমন বদলে গিয়েছে। বাংলা শিখেছিলাম, বুঝলেন টেগোর পড়ে। ওঃ টেগোর। গ্রেট ম্যান!’
মনে মনে ভাবছি, সর্বনাশ, এবার আমায় রবিঠাকুর নিয়ে প্রশ্নবাণের মুখোমুখি হতে হবে নাকি। হল না।
‘কী চাই যেন বলছিলেন?’
আবার গুছিয়ে বললাম।
‘শুনুন ভাই, আমি কম্পিউটার করতে পারি না। আমার কাছে কন্নড় ভাষাতে সূপশাস্ত্র আছে। আমি খুঁজে বার করে রাখি। আপনি আমায় দিন পনেরো পরে ফোন করুন। আমি যা আছে সব ইংরেজিতে তরজমা করে বলে দেব, আপনি লিখে নেবেন।’
করেছিলাম। ডক্টর জ্যোৎস্না কামাট পাক্কা ৪৭ মিনিট ধরে আমাকে ফোনে অনুবাদ করে দিয়েছিলেন প্রাসঙ্গিক অংশ। এর কিছুদিন পরে আমি ইনট্যাকের সৌজন্যেই সূপশাস্ত্রের ইংরেজি তরজমার একটা কপি একজনের ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে জোগাড় করতে পেরেছিলাম। ফলত পেয়ে গেলাম এই আশ্চর্য কেতাবটির দুটি পাঠ। ডক্টর কামাটের দেওয়া নোট্স এবং ইনট্যাকের ইংরেজি তরজমা মিলিয়ে দেখে বলতেই হচ্ছে দ্বিতীয়টি রীতিমতো দায়সারা গোছের কাজ। এবং দুটিতে গরমিল বিস্তর। আমি এখানে এ কেতাবের বিষয়ে যা লিখছি তা মূলত ডক্টর কামাটের মূল কন্নড় টেক্স্ট থেকে করা তাৎক্ষণিক তরজমার উপর নির্ভর করেই, প্রকাশিত ইংরেজি তরজমাটির সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে। মূলপাঠটি অবশ্য ঠিক মূলপাঠ নয়—কারণ তালপাতার পুথিতে লেখা সূপশাস্ত্র নামের যে কাব্যগ্রন্থ পাওয়া গিয়েছিল, তাতে ছিল ৩৫৮ টি কবিতা। বামিনী ষট্ পদী (ইনট্যাকের তরজমা অনুযায়ী বর্ধক ষট্ পদী) ছন্দে রচিত। ১৯৫৯ সালে সুপণ্ডিত এস এন কৃষ্ণ জোয়িস তাকে গদ্যে রূপান্তরিত করে একটি দীর্ঘ—৫০ পাতারও বেশি ভূমিকা দিয়ে—সম্পাদনা করেন। প্রকাশ করে মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ কন্নড় স্টাডিজ। ড. কামাট আমাকে বললেন, এত অসাধারণ এই ভূমিকা যে এটি পড়লে কন্নড় ভাষায় রচিত পাকপ্রণালীর যাবতীয় পুস্তক সম্বন্ধে একটা ধারণা হয়ে যায়। ইনট্যাকের তরজমা ওই জোয়িসের বইটি থেকে করা হলেও এক বিস্ময়কর সম্পাদকীয় সিদ্ধান্তে সেই ভূমিকাটিকে হাওয়া করে দিয়েছে।
কী আছে এই বইয়ে? প্রথমেই বলা দরকার মঙ্গরস ছিলেন জৈন, কাজেই এটি নিরামিষ কুকবুক। মূলত চারটি অধ্যায়— পিষ্টক পাকাধ্যায়—পিঠে ও মেঠাইপাক। পানকধ্যায়—পানীয়ের বিবরণ: দুধ ও দুগ্ধজাত, তেল, ফলের রস এবং জল। কলমান্নাদি পাকাধ্যায়—বিবিধ অন্ন পাকের পদ্ধতি। এবং শাকপাক—তরিতরকারি রান্না। এবং এই অধ্যায়টি আবার তিনটি উপবিভাগে বিভক্ত— কুড়িপ্রকার বেগুন, শাকপাতা এবং কদলীপঞ্চক—কলা গোত্রের যাবতীয় সবজি ও ফল। (ইনট্যাকের তরজমায় প্রথম দুটি অধ্যায়ের মূল নাম দেওয়া থাকলেও শেষের দুটির দেওয়া নেই!)।
আমাদের পাখির চোখ অবিশ্যি ওই তৃতীয় অধ্যায়—কলমান্নাদি অধ্যায়। এতে রয়েছে কুড়ি কিসিমের অন্নপাকের বিবরণ, যার মধ্যে শেষ দুটি গমের রান্না।
এই কুড়ি কিসিমের মধ্যে হুগ্গি তিনপ্রকার। একটি সাধারণ। কিন্তু বাকি দুটি অসামান্য দক্ষিণ ভারতীয় স্বাদে ভরপুর। তিনটিই সম্পূর্ণ নিরামিষ এবং একেবারে তেলহীন। শুরু করি একটি সুবাসিত দক্ষিণি খিচুড়ি দিয়েই—
বিদল হুগ্গি
১। বিবিধ রকমের ডাল নিন। যতটা ডাল তার দ্বিগুণ জলে ডালগুলো আধসিদ্ধ করুন
২। সমপরিমাণ ধোয়া চাল যোগ করুন, এবং অনুপাত মতো যোগ করুন নিম্নোক্ত জিনিসগুলি:
ক। হলুদগুঁড়ো
খ। নুন
গ। পেঁয়াজ
ঘ। মেথি
৩। সব সিদ্ধ হয়ে গেলে ওপর থেকে নারকোল কোরা ছড়িয়ে দিয়ে একটা পাথরের ঢাকনা চাপা দিয়ে দিন, যাতে বাষ্পটা ভেতরেই থাকে।
৪। কিছুক্ষণ পরে ঢাকনা সরিয়ে দিন, ঠান্ডা করুন, নারকোল কোরা তুলে ফেলে দিন, পরিবেশন করুন।
৫। সুবাসিত, উপাদেয়, পুষ্টিকর খাদ্য।
শাবাশ। প্রথম মোলাকাতেই বুঝলাম মঙ্গরস রান্নাটা নিজে হাতেই করতেন। তাই জানেন, খিচুড়িতে চাল-ডাল একসঙ্গে দিলেই চাল গলে যাবে ডাল যাকে বলে চেয়ে চেয়ে থাকবে! দ্বিতীয়ত দেখে অসম্ভব ভালোলাগল যে মঙ্গরস মহাশয় নিক্তি মেপে মশলার মাপ বলে দেননি। এটা আমার খুব পছন্দের, এই স্বাধীনতাটা। যেমন নারকোল কোরা কতটা ছড়াবে কোথাও বলা নেই, আমি ২৫০ গ্রাম চাল ও ডালের হুগ্গিতে পাক্কা দু- দুটো মাঝারি মাপের নারকোল কুরিয়ে বেশ পুরু একটা আস্তরণ করেছিলাম। তেলের তো কোনো ব্যাপার নেই, কিন্তু সাবধানে সে আস্তরণ তুলে নেওয়ার পরে সারা খিচুড়ি থেকে যে নারকোল ম-ম সুবাস বার হল তা অনির্বচনীয়।
কিন্তু তার থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ একটি বিষয় প্রায় আমার শিক্ষিকার মতোই আমার নজরে আনলেন ড. কামাট— ‘আপনি লক্ষ করুন, মঙ্গরস, তাঁর বাবা ও মা কিন্তু জৈন ছিলেন। জৈনরা পেঁয়াজ-রসুন পরিহার করে চলতেন, মধ্যযুগে তো বটেই। আজও বহু ধর্মপ্রাণ জৈন সেসব থাকলে তাকে নিরামিষ নয় আমিষ খানা হিসেবে গণ্য করেন। অথচ মঙ্গরসের শুধু এই রেসিপিতেই নয়, আরও অনেক রেসিপিতে পেঁয়াজের রীতিমতো উল্লেখ আছে। এটা কৌতূহলোদ্দীপক, তাই না?’ অবশ্যই, রসনাবিলাসে যতই জড়াচ্ছি, ততই দেখছি পুথিপত্রে যাই নিদান থাক না কেন দৈনন্দিন জীবনচর্যায় মৌলবাদী হুংকার বেশ আধুনিক ব্যাপার, খামখা এর জন্য কথায় কথায় মধ্যযুগের মুখে কালি মাখানোর কী কারণ বুঝি না।
(ক্রমশ…)
কোনোরকম কর্পোরেট ফান্ডিং ছাড়া সম্পূর্ণরূপে জনতার শ্রম ও অর্থে পরিচালিত এই নন-প্রফিট এবং স্বাধীন উদ্যোগটিকে বাঁচিয়ে রাখতে
গুরুচণ্ডা৯-র গ্রাহক হোন
বাঃ !
তবে বর্তমানের কর্ণাটকে, খিচুড়ি খুবই জনপ্রিয় খাবার। প্রচলিত নাম বিসি বেলে বাত, আক্ষরিক অর্থে গরম ডাল ভাত। বাঙালী খিচুরির থেকে আলাদা বলতে প্রচুর গাজর ও বীনস থাকে, এবং অবশ্যই কারি পাতা। সর্ষে ফোড়োন দিয়ে পোয়াঁজ, আদা, রসুন। যেহেতু নিতান্তই একটি ঘরোয়া খাবার ,তাই প্রচুর ভার্শান আছে , লেখাই বাহুল্য।
আরেকটা তফাৎ যে বেশীর ভাগ স্থানীয় খাবার দোকানেও মেনুতে এটি থাকে। এমনি কি ready to eat প্যাকেটজাত খাবার হিসেবেও সর্বত্র পাওয়া যায়। বাঙালী খিচিড়ি ঠিক সেই স্টেজে এখনো পৌঁছাতে পারে নি।
বিসি বেলে ভাত দক্ষিণ কর্ণাটক, হুগ্গি উত্তর কর্ণাটকের স্পেশালিটি। বিসি বেলে ভাত অনেক মশলা দিয়ে তৈরি হয়(তামিল সম্বর রাইসের মত, সুদীপ্তও লিখেছেন ), হুগ্গি সে তুলনায় অনেক শাদাশিধে।
(এক কন্নড় সহকর্মীর ইনপুট। মতামতের জন্যে কোম্পানী দায়ী নহে )
অসাধারণ রিসার্চ। এতো জায়গা ঘুরে এতো পুরোনো বইপত্তর খুঁজে খুঁজে আপনি যা তথ্য জোগাড় করছেন, জাস্ট হাটস অফ। গুরুর পাতায় আমার দেখা ওয়ান অফ দা বেস্ট ডকু সিরিজ। প্রতিটা পর্ব পড়তে পড়তে মনে হচ্ছে সেইসব জায়গা আর টাইম পিরিয়ডে লাইভ ঘুরে বেড়াচ্ছি।
এটা বই হয়ে বেরোলে আগাম লাইন দিলাম।