আগের দিন দেখেছিলাম গুজরাটের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বসেই সর-জ়মিন-এ-হিন্দের দোর্দণ্ড প্রতাপ জাহাঙ্গির বাদশা এক ফরমানে খিচড়ির সহস্রাধিক বছরের ইতিহাসে একটি চিরস্মরণীয় দিন করে দিয়েছিলেন ১৬১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর তারিখটিকে। বাজরার খিচুড়ি ওরফে লাদরা খেয়ে, আমাদের বাঁকুড়ার ভাষায় যাকে বলে ‘বক-বকখুশি’ হয়ে তাকে মুঘল বাদশার শাহি দস্তরখওয়ানের মেনুতে ঢুকিয়ে নেওয়ার হুকুম করেছিলেন। যেমনটা খিচুড়ির এই দীর্ঘ ইতিহাসে আর কোনো রাজা-বাদশা-নবাব-জমিদার কখনও করেছেন বলে কোনো প্রামাণ্য নথি নেই। কিন্তু ওই সপ্রশংস হুকুমটি পড়ে প্রথমে আমার মনে ব্যাপারটা বেশ রহস্যজনক মনে হয়েছিল একটা কারণে—এ কেমন হল? এই প্রথম মুঘল বাদশাহি দস্তরখওয়ানে জায়গা পেল খিচুড়ি? কিন্তু সে তো অসম্ভব। কারণ তার অনেক আগেই যে মহামতি আবু’ল ফতহ্ জালালউদ্দিন মহম্মদ আকবরের হেঁশেলের খিচুড়ির কথা সাফ লিখে গিয়েছেন স্বয়ং বাদশার বন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী আবু’ল ফজ়ল ইব্ন মুবারক। তাঁর মহাসৃষ্টি আকবরনামা-র অন্তর্গত তিনখণ্ডের আইন-ই-আকবরি-র প্রথম খণ্ডে ‘বাদশাহি হেঁশেল’১ নামের সংকীর্ণ অধ্যায়ে স্পষ্ট বলা আছে হেঁশেলের প্রতি খাসনজর দিলেও খাবার নিয়ে কোনোরকমের বাড়াবাড়ি একেবারে পছন্দ করতেন না মহামতি আকবর। দিনে একবার খেতেন। অতি স্বল্পাহারী ছিলেন। এবং পেট-আইঢাই করে গেলা তো দূর-অস্ত্, ‘সর্বদা উঠে পড়তেন পেট পুরোপুরি ভরে ওঠার আগেই’। এ অন্য প্রশ্ন যে, মুঘল সাম্রাজ্যের শান-ও-শওকতের সঙ্গে খাপ খাইয়ে প্রতিদিন তাঁর দস্তরখওয়াঁ সাজিয়ে দেওয়া হত একশোটি পদে। কিন্তু আকবর বাদশার ‘জিহ্বা দিয়ে কদাচ উচ্চারিত হত না—আজ পাতে কী পড়বে?’২
মহামতি আকবর বাদশাকে আকবরনামা উপহার দিচ্ছেন আবু’ল ফজ়ল (ছবি সৌজন্য উইকিপিডিয়া)
‘আইন’ থেকে আমরা জানতে পারি তিন কিসিমের রান্না করা খানা লাগত আকবর বাদশার দস্তরখওয়ানে—‘প্রথম, যাতে কোনো মাংস থাকে না, যাকে আজকাল সুফিয়ানা বলা হচ্ছে। দ্বিতীয়, যাতে মাংস ও চাল ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তৃতীয়, মশলা দেওয়া মাংস।’৩ দিনে দিনে তাঁর সবথেকে পছন্দের হয়ে উঠেছিল মাংসহীন ‘সুফিয়ানা’ খাবার। এবং ক্রমে ক্রমে বেড়ে উঠেছিল তাঁর উপোস-করা দিনের সংখ্যা। মাংস ব্যাপারটাকে পাত্তাই দিতেন না আকবর বাদশা। এ হেন বাদশার দস্তরখওয়ানে পরিবেশিত খাদ্যের বিপুল তালিকার মধ্যে মাত্র যে তিরিশ কিসিমের খানার কথা আইনে উল্লেখ করার যোগ্য মনে করেছেন আবু’ল ফজ়ল তার তিন নম্বরে রয়েছে খিচড়ি! কাজেই মহামতি আকবরের সবথেকে পছন্দের সুফিয়ানা খানার মধ্যেও যে খিচুড়ির বিশেষ কদর ছিল তা অনুমান করা মোটেই অসংগত নয়। অস্যার্থ, জাহাঙ্গির মোটেই নন, মুঘল শাহি পাকোয়ানে খিচুড়ির বোলবোলাও মহামতি আকবর বাদশার আমলে শুরু।
ভালো কথা, সক্কলের জানা কিস্সা পুনরাবৃত্তি আর করছি না, কেবল মনে করিয়ে দিই, এমন মহান বাদশাকেও তাঁর আহাম্মকিপনা মাঝে সাঝে যে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হয়, অর্থাৎ কিনা কেউই ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নন, এই চিরসত্যকে এ মহাভারতের সম্মিলিত প্রজ্ঞা যুগ যুগ ধরে কিস্সার হাঁড়িতে পাক করে পরিবেশনের সময় বীরবলকে দিয়ে যে খানাটি বাছিয়ে নিয়েছে তা কোফতা-কালিয়া, পোলাও-বিরিয়ানি নয়—অকিঞ্চনের খিচুড়ি! ইতিহাস আর দাস্তান কেমন চালে-ডালে একাকার! এখানেই তো এ বিচিত্র ভূখণ্ডের ইতিহাসচর্চার একাধারে চ্যালেঞ্জ ও শিহরণ!
কেমন ছিল সেই বাদশা-পসন্দ্ খিচড়ি? মহারহস্য। এখানে আমার নিজের একটা দুঃখের কথা বলতেই হবে, মহামতি আকবরের খানাদানার প্রতি উদাসীনতাতেই সম্ভবত এই ‘বাদশাহি হেঁশেল’ অধ্যায়টি একেবারে যেন কর্তব্যের খাতিরেই লেখা সেরেছেন তাঁর বন্ধুবর। যতটুকু না বললেই নয়, ঠিক ততটুকু। কাজেই আকবরের হেঁশেলের খিচুড়ির কোনো প্রামাণ্য পাকপ্রণালী আমাদের হাতে নেই। যা আছে তা স্রেফ এই— শুধু এইটুকুই জানা যায় সেই খানার বিষয়ে যার আসলে কোনও নাম নেই স্রেফ ‘খিচড়ি’ ছাড়া, কিন্তু আমরা গালভরা নাম দিতেই পারি—
খিচড়ি আকবরি
‘চাল, মুগডাল, ঘি—প্রতিটি ৫ শের করে, ১/৩ শের নুন। এ থেকে সাতটি পাতের খানা হয়।’৪
আর এই ঢুকে গেলাম আমরা আকবরি খিচড়ির মহারহস্যে। প্রথম রহস্য। এত বড়ো হেঁশেল, দেশ-বিদেশ থেকে আসা বাওর্চির দল নিশিদিন হাতা-খুন্তি নিয়ে ছুটোছুটি করছে সেখানে, কারণ আকবর বাদশা দিনে একবার মূল খানা খান, তিনি খাবার খোয়াহিশ প্রকাশের একঘণ্টার মধ্যে দস্তরখওয়ান লাগাতে হবে—হুকুম প্রধানমন্ত্রী আবু’ল ফজ়লের। মুশকিল হল, কেউ জানে না দিনের বা রাতের কোন্ প্রহরে তিনি সে রসনা-বাসনা জানাবেন! কাজেই সর্বদাই সবাই প্রস্তুত। আর এ হেন হেঁশেলে তৈয়ার বাদশার এক অতিপ্রিয় খানায় কিনা, লক্ষ করুন, কোনো মশলা নেই! একটাও না! মায় গোলমরিচ পর্যন্ত নয়! রহস্য নয়?
দ্বিতীয় রহস্য—চাল, ডাল আর ঘিয়ের অনুপাত সমান?! কলকেত্তাই বাঙালির তো শুনেই পেট ছেড়ে দেওয়ার কথা। আমি যে মল্লভূমীয়া আমি—পাথুরে লালমাটির অমৃতজল পান করে পত্থর হজম, লোহা হজম, আমারও শুনে কেমন ভয়-ভয় করছে।
রহস্য তিন—আকবরি শের মানে ৫৬৬৫ গ্রাম, সেই হিসেবে সাতজনের খাওয়ার জন্য ২ কেজি ৮৩০ গ্রাম করে চাল আর ডাল? মানে এক-একজন খাবেন ৪০০ গ্রাম চাল আর ৪০০ গ্রাম ডাল? নিজের হাতে রান্না করি কিনা, রেসিপিটা আজও ঠিক হজম হয়নি! মানে, পাঁচ শের করে চাল-ডাল-ঘি রান্না হওয়াটা তো আর আকবরি হেঁশেলে পাড়া মাথায় করার মতো কিছু নয়, যাকে বলে কোই তোপ নেহি দাগা! যেখানে একজন মানুষের দস্তরখওয়ানে প্রতিদিন ১০০টি পদ সাজিয়ে দেওয়া হয়, সেখানে সবই হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল, পদের রকমফের এক কথা, আর এক একটা পদ মাথাপিছু এই পরিমাণ রান্না করা তো আর-এক গপ্পো। আমার কেমন মহাভারতের তীর্থযাত্রা পর্বে গয়ারাজের সেই যজ্ঞ করার পর ব্রাহ্মণভোজনের রান্নার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে—ভাতের হাজার হাজার পাহাড়, ঘিয়ের হ্রদের পর হ্রদ, দইয়ের শত শত নদী, তরকারির হাজার হাজার ধারা! এই পরিমাণ খানাটা সাতজনের জন্য, একথা লিখেই এই মহারহস্য তৈরি করেছেন আবু’ল সাহাব। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও মনে পড়েছে যে, জাদুঘরে মুঘল যোদ্ধাদের যে বল্লম আর তলোয়ার দেখেছি, আজকের পেটরোগা বাঙালির পক্ষে তা চালানো তো দূরের কথা, তুলতে বললেই অক্কা!
তবে তার থেকেও অনেক বড়ো একটা রহস্য আছে—কেমন স্বাদ ছিল এ খিচড়ির? এ রহস্য সমাধান দুরূহ। দুরূহ এই কারণেই যে মহামতি আকবর বাদশার রাজত্বকাল ছিল ১৫৫৬ থেকে ১৬০৫, অর্থাৎ এই ২০২০ থেকে চারশো-সাড়ে চারশো বছর আগে। সেসময় বাদশাহি হেঁশেলে চাল আসত এগারো ধরনের— মুশকিন ধানের চাল, সাদ ধানের চাল, সুখদাস, দুনপ্রসাদ, সামজিরা, শকরচিনি, দেওজ়িরা, জিনজিন, দাকাহ্, জ়িরহি এবং সাথি চাল।৬ কেমনতরো ছিল এইসব চাল? খানিকটা আন্দাজ দিয়েছেন বিশিষ্ট কৃষিবিজ্ঞানী যশোবন্ত লক্ষ্মণ নেনে। তিনি জানাচ্ছেন, মুশকিন, নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ‘সুগন্ধী’ চাল, ‘সম্ভবত সে গন্ধ ছিল কস্তুরী গন্ধের মতো’, কারণ ফারসিতে ‘মুশ্ক’ হল কস্তুরী মৃগনাভির সুগন্ধ। আর নেনে জানাচ্ছেন, সাদ, সামজিরা এবং শকর চিনি আজও পশ্চিমবঙ্গে চাষ হয়।৭ দুর্দান্ত ক্লু। মাথায় রেখে এগোনো যাক।
এখন কথা হল, এইসব কিসিমের চালই কি বাদশাহের পাতে পড়ত? বলা খুব মুশকিল। হারেমের বাসিন্দা থেকে উজির-নাজির মিলিয়ে শত শত লোকের রান্না হত বাদশাহি হেঁশেলে। যদি ধরি সবথেকে দামি চালগুলিই রাখা থাকত শাহি দস্তরখওয়ানের জন্য আলাদা করে, তাহলে, কোন্ কোন্ চাল পড়ত তাঁর পাতে? অধ্যাপক নেনের হিসেব বলছে, ধান ঝাড়াই করে ধানের ৬৩ শতাংশ চাল পাওয়া যেত ধরে নিয়ে, মুশকিনের মূল্য ছিল মন পিছু ১৮০ দাম৮, সাদ ১৬০ দাম এবং সুখদাস ১০০ দাম।৯ অন্যগুলির মূল্য অনেকটা কম। ৪০ দাম মানে এক টাকা। তাহলে বাদশার খানা পাকানোয় কি এই তিনপ্রকার চালই ব্যবহৃত হত?
প্রশ্ন উঠতেই পারে, এগারোর কমের চালই বাদশাহি পাতে পড়ত না এমন সন্দেহের কারণ কী? সন্দেহ ফজ়ল সাহাবের একটি উক্তির জন্য। আইনের ‘বাদশাহি হেঁশেল’ অধ্যায়ের প্রথমের দিকেই আবু’ল ফজ়ল জানাচ্ছেন, ‘প্রতি তিনমাস অন্তর দিওয়ান-ই-বয়ুতাত, মানে ভাঁড়ার সরকার, এবং মীর বকাওয়ল হিসেব-টিসেব করে হেঁশেলে যা-যা দরকার বলে তাঁরা মনে করতেন তা জোগাড় করে নিতেন, যেমন বাহরায়িচ১০ থেকে সুখদাস চাল, দেওজ়িরা চাল গোয়ালিয়র থেকে, জিনজিন চাল রাজোরি আর নিমলা থেকে, …।’ রহস্য এইখানেই যে, আমার খুঁতখুঁতে ইতিহাস-ছাত্র-মন প্রশ্ন করছে— গোড়ায় যেখানে তিনি সংক্ষেপে বাদশাহি হেঁশেলের শান-ও-শওকত বর্ণনা করছেন—সোজা বাংলায় সে হেঁশেল যে কী সাংঘাতিক এক কাণ্ডকারখানা ছিল তা নিয়ে একটু বারফট্টাই-ই১১ করছেন— সেইখানে তিনি সবথেকে দামি চালগুলির নাম না দিয়ে অনেক কমদামি দুটি চালের নাম দিচ্ছেন কেন? যেমন, দেওজ়িরার মূল্য ছিল ৯০ দাম প্রতি মন, জিনজিন মাত্র ৮০ দাম (আবুল ফজ়লের দেওয়া ধানের দামের ওপর ভিত্তি করে নেনের হিসেব)! সঠিক উত্তর কখনওই মিলবে না। কিন্তু আমার ধারণা, দিলেন এই কারণেই যে তিনি জানতেন কোন্ কোন্ ধরনের চাল বাদশার খাসপসন্দ্! এবং সেই কারণেই আকবরি খিচড়ির স্বাদ-গন্ধ আন্দাজ করা ভারী কঠিন—যদি সে খিচড়ি পাকানো না হয়ে থাকে সুখদাস, জিনজিন বাদেও জ়িরাচাল দিয়ে।
নেনে জানাচ্ছেন, অওধ, মানে লখনও, অঞ্চলে ছিল সুখদাস চালের ধানের চাষ। ‘এটি সাদা দানার, হালকা, সুগন্ধী চাল যার তুলনা মেলা ভার… ঊনবিংশ শতকে ভালো চাল আর সিন্ধের লব্জে সুগদাসি চাল সমার্থক ছিল।’ কিন্তু এসব চাল পাই কোথায়? শুরু করলাম সুখদাসের খোঁজ। কলকাতার কোনো চালের আড়ত বাদ রাখিনি। নাম পর্যন্ত শোনেননি কেউ। তারপর গুগ্ল। খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে গুগ্ল-এই মিলল হদিশ! এখন সুখদাস চাষ হয় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কিছু জমিতে, ‘হেরিটেজ রাইস’ বাঁচিয়ে রাখায় ব্রতী কিছু সংস্থা আর মানুষের উদ্যোগে, যেমন চেন্নাইয়ের ‘স্পিরিট অফ দ্য আর্থ’।১২ এই এনজিও-র কর্মী জয়ন্তী সোমসুন্দরম আমাকে জানালেন, বর্তমান তামিলনাড়ু রাজ্যের কাবেরী নদী সিঞ্চিত তিরুভাড়ুর জেলার মঞ্জক্কুড়ি গ্রামাঞ্চলে সামান্য কিছু জমিতে এখন আবাদ হয় ‘হেরিটেজ সুখদাস রাইস’!
কিন্তু কীভাবে মিলল এই হারিয়ে যাওয়া ধানের বীজ? সে কিস্সা শোনালেন এনজিও-টির কর্ণধার শীলা বালাজি— “বিশ্বাস করবেন না, আমিও আবু’ল ফজ়লেই সুখদাসের কথা প্রথম পড়ি। পড়ে খুঁজতে শুরু করি, কোথায় থাকতে পারে? ইন্টারনেটে খুঁজতে খুঁজতে দেখলাম উত্তর চেন্নাইয়ের কাছে আম্বুর, ভেল্লুর এইসব অঞ্চলে, আরকোট অঞ্চলে, ওরা সুখদাস দিয়ে তৈয়ার করত বিরিয়ানি! ষাট-সত্তর বছর আগে। ভেল্লুর, আম্বুর এইসব জায়গায় প্রচুর মুসলমান মানুষের বসবাস। সেখানে তৈরি হত এই বিখ্যাত বিরিয়ানি। এবার, আমি ওই অঞ্চলের একজনকে চিনতাম, তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম এমন কোনো চাষিকে চেনেন কি না যে সুখদাস চাষ করে। একজন বলল, আমরা চাষ করি, স্রেফ নিজেরা খাব বলে। তিনি আমাকে দিলেন তিনকিলো ধানের বীজ। বিগত চারবছরে আমি দু-তিন-চার একরে সুখদাস চাষের মতো বীজ তৈরি করে ফেলতে পেরেছি। মিস্টার হাজরা, সে চাল রান্না করলে সারা ঘর গন্ধে ম ম করে!”
মনে মনে বললাম, বোঝো! আকবরি খিচড়ি-রহস্যের সমাধানে নেমে মিলে গেল আরকোটের ‘সুখদাস বিরিয়ানি’-র হদিশ। রেঁধে দেখতে হচ্ছে মশাই! বিরিয়ানির কথা বলছি না, সে কিস্সা পাকোয়ানের মাল-মশলা আমি জমা করেছি গত বছর কুড়ি ধরে। তা এখন যাকে বলে ‘দম’-এ চড়েছে। দস্তরখওয়ানে লাগতে সময় লাগবে। এখন ‘আকবরি খিচড়ি’। মুশকিল হল রেঁধে দেখতে গিয়ে দেখি, সাংঘাতিক এক চাল-রহস্যে জড়িয়ে পড়েছি। এই সেদিন, ২০০৫ সালে, যেসব চাল আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গেই মিলে যাবে বলে নেনেসাহেব অম্লানবদনে জানিয়ে দিচ্ছেন, ২০২০-তে এসে দেখি সব এক্কেবারে ‘সোনার কেল্লা’ ছবির সেই ডক্টর হাজরা রহস্য—ভ্যানিশ! এমনই ভ্যানিশ খিচুড়ির মহাবৈচিত্রে যা অপূরণীয় ক্ষতি। কী ভ্যানিশ, কোথা থেকে ভ্যানিশ? খুঁজতে বার হব। পরের বিষ্যুদবারের বারবেলায়!
(ক্রমশ… পরের কিস্তি পড়ুন ১৫ অক্টোবর)
চলুক চলুক। এ তো ডিটেকটিভ গল্প মশায়।
মধুর তোমার শেষ যে না পাই ..। স্বাদের এক্কেবারে পরাকা।
অসামান্য ঐতিহাসিক দলিল। বাংলায় এ কাজ যুগান্তকারী। পুরোটা বই হয়ে বেরুলে নিঃসেন্দহে সংগ্রহযোগ্য কাজ হবে।
খাইসে! কী এলাহী ব্যাপার!
আশ্চর্য স্বাদ। এরকম লেখা আগে পড়ি নি কখনও।
দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর, -এ'রাজ্যের এই দুই জেলায় চিনিশক্কর নামে এক সুগন্ধি চাল পাওয়া যায়। সে ধানের চাষও এই দুই জেলায় হয়। অন্তত, আমি ২০০৬ য়েও দেখেছি ।
এই 'নিমলা' কি 'দেশেবিদেশে'র নিমলার বাগান ?