এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • তোমার বাস কোথা যে।.. - ৪৪

    Nirmalya Nag লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১২০ বার পঠিত
  • [ এই কাহিনীর সব চরিত্র কাল্পনিক। জীবিত বা মৃত কোনো ব্যক্তির সাথে কোনও মিল যদি কেউ খুঁজে পান তা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত এবং কাকতালীয়। ]

    ।। চুয়াল্লিশ ।।
    (ফ্ল্যাশব্যাক শেষ হয়, আমরা আবার বর্তমানে ফিরে আসি) 

    বিনীতা অন্যমনস্ক ছিল, খেয়াল করেনি কখন বাইরে একটা গাড়ি এসে থেমেছে, কলিং বেল বেজে ওঠায় তার চটকা ভাঙল। ‘দ্য জাহির’ বইটা হাতেই ছিল, সেটা টেবিলে রেখে সোফা থেকে তাড়াতাড়ি উঠে দরজা খুলে দিল সে, ইন্দ্রনীল ঢুকে এল ঘরে।
    “কী হয়েছে?” উদ্বিগ্ন স্বরে জিজ্ঞাসা করল সে।
    “বসুন,” বলল বিনীতা।
    বসল ইন্দ্রনীল, জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল বিনীতার দিকে।
    “ভোর বেলা কোনও একটা সময়ে ও বেরিয়ে গেছে, গাড়ি নিয়ে যায়নি, অফিস ব্যাগও ঘরেই রয়েছে।”
    “একটা চিঠির কথা বলছিলে…”
    “হ্যাঁ, আনছি,” শোয়ার ঘরের দিকে গেল বিনীতা, ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারের মধ্যে চিঠিটা রাখা আছে। 
    বাইরের ঘরে বসে বসে ডাক্তার ভাবছিল এই বাড়িতে তার এখন আসাটা অন্যান্যবারের মত একেবারেই নয়। তার পেশেন্টের কথাতেই এখানে আসা শুরু করেছিল সে, দু-এক বার আসব বলেও আসেনি, বা আসতে পারেনি। কোথায় গেলেন ভদ্রলোক?

    চিঠি নিয়ে ফিরে এল বিনীতা, হাত বাড়িয়ে সেটা এগিয়ে দিল ইন্দ্রনীলকে, তারপর নিজে বসল অন্য সোফায়। ডাক্তার দেখল সাদা কাগজে লেখা চিঠিতে কোনও তারিখ নেই, হাতের লেখা খুব একটা পরিচ্ছন্ন নয়, তবে লেখার মধ্যে কাটাকুটি নেই তেমন, পড়া শুরু করল সে।   

    “বিনীতা, 

    যে সময় শেষ হয়ে আসছে তাকে জোর করে টেনে বাড়ানোর কোনও অর্থ নেই। শেষের ক'টা দিন একটু একা থাকতে চাই। নিজের সংগে কিছু বোঝাপড়া আছে। তাই চললাম।
    মার্ক টোয়েন বলেছিলেন, 'জীবনের প্রতি ভয় থেকেই মৃত্যুভয় আসে। যে পরিপূর্ণ ভাবে বেঁচেছে সে সব সময়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকে।' আমিও পরিপূর্ণভাবে বেঁচেছি। তবে তোমার বা রঙিনের প্রতি সুবিচার করিনি। আমি আমার কাজকে যতটা ভালবেসেছি, তোমাদের ততটা নয়। ছোট থেকে হস্টেলে কাটানোর ফলেই বোধ হয় পারিবারিক বাঁধনটা আমার আলগা হয়ে গেছে। সেই পাপ ক্ষালন করার চেষ্টা করেছি গত কয়েক মাসে, যদিও জানি তা যথেষ্ট নয়। বোঝাপড়াটা এই জন্যই দরকার।

    আমি মারা গেলে যাতে তোমরা খবর পাও সে ব্যবস্থা করব। তার আগে খুঁজো না আমায়, একদমই নয়। যেসব কাগজপত্র আমার অবর্তমানে দরকার হবে সেগুলো আমার অফিসের আলমারিতে 'প্রাইভেট' লেখা একটা সবুজ ফাইলে আছে। কবিতা জানে আলমারির চাবি কোথায় থাকে। স্যারকে জানিও আমি চলে গেছি, অরুণিমাকে জানিয়ে দিয়েছি। তোমাদের কেউ বিরক্ত করবে না।

    ওই সবুজ ফাইলে দশ হাজার টাকা ক্যাশ রাখা আছে। টাকাটা কবিতাকে দিয়ে ব’ল অফিস লাইব্রেরি ফান্ডে জমা দিতে, বই ভালবাসি বলে ওরা দিয়েছিল আমায়। আমার মোবাইলে অ্যামাজন অ্যাকাউন্টে দেখবে ১০,০০০ টাকা জমা পড়েছে, প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিও। 

    ডাক্তারের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু ক’র, আমার শুভেচ্ছা রইল। ডাক্তার যেদিন ফোন নিতে এল সেদিন তোমাদের কথা আমি শুনতে পেয়েছিলাম বারান্দা থেকে। ও আমায় খুব ভাল বুঝেছিল, তোমাদেরও নিশ্চয় ভাল রাখবে। 

    রঙিনকে ব’ল আমার কাজ শেষ হয়ে গেছে, তাই চলে গেছি।

    ভাল থেকো।
    অরুণাভ।

    পি এসঃ ঘরের বইগুলো কী করবে ওটা তোমাদের দুজনের ওপর ছেড়ে দিলাম।”

     
    চিঠি নামিয়ে রাখে ইন্দ্রনীল, একটা বই দিয়ে চাপা দেয়। এত কথা এক সঙ্গে উনি বলতে পারেন! কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থাকে সে। তাকিয়ে দেখে বিনীতা অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে আছে। জিজ্ঞাসা করে, “স্যার কে?”
    বিনীতা অন্য দিকে তাকিয়েই উত্তর দেয়, “জিএম খুরানা স্যার।”
    “ওনাকে জানিয়েছ?” বিনীতা মাথা নাড়ে, জানায়নি। “তাহলে জানাও।... পুলিশেও খবর দেওয়া দরকার।”
    এইবার বিনীতা ফিরে তাকায়, দৃঢ় স্বরে বলে, “না।” ইন্দ্র অবাক হয়ে তাকায়। “ও খুঁজতে না করেছে। একা থাকতে চেয়েছে। আমি ওকে বিরক্ত করব না।”
    ইন্দ্রনীল বলে, “কিন্তু তাতে সিচুয়েশন কমপ্লিকেটেড হবে, পরে তোমার প্রবলেম হতে পারে।”
    বিনীতা আবার অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে, উত্তর দেয় না। ডাক্তারও কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। তারপর বলে, “কিন্তু উনি গেলেন কোথায়? আর গেলেনই বা কী করে?”
    এর জবাব বিনীতার কাছেও নেই, শুধু বলল, “আমার ঘুমটা আসলে…;” কথা শেষ করল না সে।

    ইন্দ্র একটু ভেবে জিজ্ঞাসা করে, “উনি কি ওষুধপত্র নিয়ে গেছেন?”
    “না,” বলল বিনীতা।
    “মোবাইল?” 
    মোবাইলটা টেবিলের ওপরেই ছিল, সেটার দিকে ইসারা করে বিনীতা বলল, “এখানেই আছে।”
    আবার কিছুক্ষণ নীরব থাকার পরে ইন্দ্রনীল বলল, “কাল উনি কেমন ছিলেন?”
    “কাল মেয়ের সাথে সারা দিন খেলা করেছে, প্রচুর ছবি আর ভিডিও তুলেছে মোবাইলে।”
    “উনি ছবি তুলতে ভালবাসেন জানতাম না।”
    “বাসে না… কেবল কালই তুলেছে… শুধু মেয়ের ভিডিও… আর তারপর ফোনটা ফেলে গেল কী করে? নিতে ভুলে গেল…” বিনীতার গলা শুনে মনে হচ্ছে প্রশ্নগুলো সে নিজেকেই করছে।

    মোবাইলটা হাতে নিয়ে ভিডিওগুলো দেখতে লাগল ইন্দ্রনীল। অরুণাভ আর রঙিনের গলা শোনা গেল কিছুক্ষণ ধরে। হঠাৎ ওই স্বর বিসপাতিয়াকেও রান্নাঘর থেকে টেনে আনল বাইরে, তারপর ব্যাপার বুঝে ফিরে গেল। ডাক্তারবাবুর জন্য চা করবে কি না জিজ্ঞাসা করতে গিয়েও করল না সে। এই অবস্থায় চা খাওয়ার মুড থাকে না কারও। 
    ইন্দ্রনীলকে তো জানিয়েছে, গায়ত্রী আর রঞ্জিতকে আগেই বলা উচিত ছিল কি না ভাবছিল বিনীতা।

    এমন সময়ে ডাক্তার বলল, “ম্যাডাম… তুমি ভাবছ রঙিনের ছবি মিস্টার দাস নিজের জন্য তুলেছেন?” মুখ তুলে তাকাল বিনীতা, তবে কোনও কথা বলল না। উত্তর নিজেই দিল ইন্দ্র। “এইসব ছবি, ভিডিও রঙিনের জন্যই তোলা, যাতে ও পরে দেখতে পারে, বাবাকে মনে রাখতে পারে। এগুলো যত্ন করে রেখ ম্যাডাম।”

    কথাগুলো শুনল বিনীতা, উত্তর দিল না। মেয়ের সাথে খেলা, পড়া, খাওয়া সব কিছুর ভিডিও করেছে তার বাবা, কেবল মায়ের গানের করেনি।

    ইন্দ্রনীল বলল, “জি এম কে জানাতে হবে তো?”
    বিনীতা বলল, “হ্যাঁ… কবিতাকে ফোন করি…”
    “মিস্টার দাসের সেক্রেটারি? যিনি পিকনিকে ছিলেন?” মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ জানাল বিনীতা। “কী বলবে আগে ঠিক করে নাও… গোটা অফিসে কথাটা ছড়াবে…”
    “তাহলে…”
    “স্ট্রেট জি এমকে ফোন করা যায় কি?... এসব কথা অবশ্য সামনাসামনি বলতে পারলে ভাল।”

    সোজা খুরানাকে ফোন করতে অস্বস্তি হচ্ছে বিনীতার, স্যারের নম্বর যদিও অরুণাভর ফোন থেকেই পাওয়া যাবে, তবে উনি এখানে আছেন কি না সেটাও জানা নেই। এত সকালে তো অফিসেও কাউকে পাওয়া যাবে না। বিনীতাকেও স্কুলে যেতে হবে,পরীক্ষা চলছে।  ঠিক হল বেলা ১১টা নাগাদ ইন্দ্রনীল ফোন করবে জিএমের অফিসে, নিজের পরিচয় দেবে অরুণাভর ডাক্তার হিসেবে। একটা সময় চেয়ে নেবে দেখা করার জন্য - হয় বিনীতা একাই যাবে, নয় ইন্দ্রনীল নিজেও সঙ্গে থাকবে। ইতিমধ্যে স্কুলে গিয়ে বিনীতা গায়ত্রীকে সব জানাবে। 

    দুজনের মধ্যে আলোচনায় কথা মূলতঃ ডাক্তারই বলল, আর তাতে বারবারই ফিরে এল একটাই কথা - অরুণাভ কেন আর কোথায় গেল? কী ভাবেই বা গেল?  
    “টার্মিনাল পেশেন্টরা অনেকেই ডিপ্রেশনে ভোগে, কেউ কেউ বাড়ি ছেড়ে চলেও যায়, আশেপাশেই তাদের পাওয়া যায়। তবে মিস্টার দাসের ক্ষেত্রে এটা কোনও কারণ হবে বলে মনে হয় না, উনি মেন্টালি অনেক স্ট্রং,” বলল ইন্দ্রনীল।
    বিনীতা উত্তর দিল না।
    ইন্দ্র বলল, “হেঁটে বেশি দূর উনি যেতে পারবেন না। ওনাকে নিতে গাড়ি এসেছিল কি না সেটা বাইরের সিকিউরিটির লোকেরা বলতে পারবে। তবে ওদের কিছু জিজ্ঞেস করা ঠিক হবে না।”
    “একদমই না,” বলল বিনীতা।   
    “আমি তাহলে এখন আসি… ফোনে কী হল জানাবো,” বলল ইন্দ্র, উঠে দাঁড়াল সোফা ছেড়ে। 
    “মেসেজ করে দেবেন, আমি হয়তো পরীক্ষার হলে থাকব। আমিই পরে ফোন করে নেব,” বিনীতা উঠল না, বসেই থাকল।

    ইন্দ্রনীর দরজার দিকে এগোয়, দরজা খোলে, তারপর কিছু একটা ভেবে ঘুরে দাঁড়ায়।
    “ওনার ফিউচার উনি জানতেন। আমাদের সম্পর্কে যে ওনার আপত্তি ছিল না সেটা তো চিঠি থেকেই পরিষ্কার। তাহলে উনি গেলেন কেন?”
    “লিখেছে তো নিজের সাথে বোঝাপড়া করতে। আর…;” চুপ করে যায় বিনীতা, ইন্দ্রনীল অপেক্ষা করে।
    কয়েক মূহুর্ত পরে বিনীতা বলে, “আমারও তো কিছু শান্তি পাওনা হয়।”
    ইন্দ্রনীল বুঝতে পারে বিনীতা কী বলতে চাইছে - তার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার কথা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিনীতা তাকে হ্যাঁ বলেনি, তবে এই সম্পর্কে তার যে আগ্রহ আছে তাও অস্পষ্ট রাখেনি। কিন্ত তার রোগী যে বৌ-মেয়ের প্রতি সুবিচার করেনি সেটা তো সে নিজেই স্বীকার করেছে। তবে এই নিয়ে বলার সময় এটা নয়। 
    “চুপ করো ম্যাডাম। প্লিজ…।”
    বিনীতা নিঃশ্বাস ফেলে।
    “আমি আসি, কী হয় জানাচ্ছি,” ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় পা রাখে ইন্দ্র।
    “এক মিনিট,” উঠে দরজার কাছে আসে বিনীতা, ইন্দ্রনীল দাঁড়িয়ে যায়।
    কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে বিনীতা বলে, “থ্যাংক ইউ।”
    দুটি শব্দের প্রতিটি অক্ষরে কৃতজ্ঞতার ছোঁয়া; ইন্দ্রনীলের ইচ্ছা হল বিনীতার হাত দুটো ধরে, তাকে কাছে টেনে নেয়। তবে শেষ পর্যন্ত কিছুই করে না সে। “আসি” বলে বেরিয়ে গিয়ে গাড়িতে ওঠে।

    বিনীতা দরজা বন্ধ করে, এসে ফের সোফায় বসে। ভাবতে থাকে রঙিনকে কেমন করে খবরটা দেবে। এমন সময়ে অরুণাভর ফোনটা ভাইব্রেট করে - অরুণিমা।

    ফোনটা ধরে বিনীতা, “হ্যালো”, গলাটা কেঁপে যায় তার।
    উত্তেজিত গলা শোনা যায় অরুণিমার, “বৌদি তুমি… মানে দাদা…” 
    “চলে গেছে… কখন গেছে জানি না… সকালে উঠে দেখি নেই…” ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল বিনীতা।
    “শান্ত হও বৌদি, বুঝতে পারছি তোমার ভেতর কী হচ্ছে…”
    “না, আমি ঠিক আছি,” নিজেকে সামলে নেয় বিনীতা। 
    “দাদা আমায় মেল করেছে একটু আগে…”
    “একটু আগে? মেল না মেসেজ?”
    “মেল। প্রি-সিডিউল্ড টাইমে মেল পাঠানো যায়। হোয়াটস্যাপ মেসেজ হলে আগে চোখে পড়বে, তাই মনে হয় মেল করেছে।”
    “আমার জন্য একটা চিঠি লিখে রেখে গেছে।” 
    “চিঠি?” জিজ্ঞাসা করল অরুণিমা।
    “হ্যাঁ…। জি এম স্যারকে জানাতে বলেছে, আর ওকে খুঁজতে বারণ করেছে।”
    “খুঁজতে বারণ করার কথাটা আমাকেও লিখেছে… জিএমকে জানাবে তো?
    “হ্যাঁ… পুলিশকে জানাতে চাই না।”
    “জানিও না বৌদি, দাদা নিজের ইচ্ছেয় চলে গেছে ইউদাউট ব্লেমিং এনিবডি। অন্তত আমার মেলে এমন কিছু নেই।”
    “চিঠিতেও নেই, শুধু বলেছে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে যাচ্ছে,” বলল বিনীতা।
    “বলেছে হি উড এনসিওর দ্যাট ইউ গেট দ্য নিউজ হোয়েন এনিথিং হ্যাপেনস টু হিম।” 
    “আমাকেও লিখেছে,” বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলল বিনীতা।
    “সো পুলিসকে ইনফর্ম করার দরকার নেই।… রঙিনের কি খবর?”
    “স্কুলে পাঠিয়েছি, বলেছি বাবা অফিসে গেছে… বাড়ি এলে আসল কথা বলে দেব।”
    “দিও… এবার আমায় রাখতে হবে বৌদি, কোনও খবর পেলে দিও।… আর হ্যাঁ, একটা কথা মনে রেখ, তোমার এগেনস্টে আমার কোনও কমপ্লেন নেই।”
    “থ্যাংক ইউ,” প্রায় ফিসফিস করে বলল বিনীতা। একই শব্দ দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে দ্বিতীয় বার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল সে।

    ফোন রাখার একটু পরে বিসপাতিয়া এসে দাঁড়ায়।
    “ভাবি, স্কুল যাবেন না?”
    ঘড়ির দিকে তাকায় বিনীতা, “হ্যাঁ, যাব।… স্কুল থেকে ফিরে রঙিন যদি কিছু জিজ্ঞেস করে ব’লো বাবা অফিস গেছে।” 
    বিসপাতিয়া মাথা কাত করে জানায় তাই হবে, তারপর চলে যায় ডাইনিং রুমের দিকে।
    বিনীতাও উঠে শোয়ার ঘরের দিকে যাচ্ছিল, খেয়াল হল চিঠিটা রয়ে গেছে টেবিলের ওপর বই-এর মধ্যে। ফিরে এসে সেটা আবার তুলে নেয়।

    বেড রুমের দিকে যাচ্ছিল বিনীতা, দেখে ডাইনিং টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে আছে বিসপাতিয়া। 
    “ভাবি, এখন কী করবেন?” 
    বিনীতা উত্তর দিল, “অপেক্ষা,” তারপর চলে গেল অন্য ঘরের দিকে। (ক্রমশঃ)
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১২০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন