এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  সমাজ  শনিবারবেলা

  • ইহুদি রসিকতা ১১: মামে

    হীরেন সিংহরায়
    ধারাবাহিক | সমাজ | ২১ আগস্ট ২০২১ | ২৮০৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • মামে

    ছেলে মেয়ের বেশির ভাগ বন্ধু বান্ধব ইহুদি। উত্তর পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পষ্টেড থেকে হেনডন, স্ট্যানমোর ফিঞ্চলি পর্যন্ত বিস্তৃত ইহুদি জনপদে তাদের বাস। আমাদের বাড়িতে সেই সব বালক বালিকার নিত্য আনা গোনা। অচিরে পরিচিত হয়েছি নানান ইহুদি উৎসব, প্রথা প্রচলনের সঙ্গে। গড়পড়তা ইহুদি পরিবারে পাঁচটি সন্তান। ঐন্দ্রিলার বন্ধু ভিকি মানসেল থাকতো আমাদের বাড়ির খুব কাছে। ভিকিরা সাত ভাই বোন (সম্প্রতি তার বাবা মারটিন কোভিদে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন) । তার মা ক্যাথি কি করে যে সংসার সামলাতেন জানি না। একদিন ক্যাথি বললেন এবার তিনি হেনরিয়েটা বারনেট স্কুলের পরিচালনা সমিতিতে অংশ নিতে যাচ্ছেন, গভর্নর হয়ে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনি কি তারও সময় পাবেন? ক্যাথি হেসে বলেছিলেন, সময় কেউ কাউকে দেয় না, করে নিতে হয়। আরেক দিন গল্প করেছিলেন - যখন হাজার কাজের চাপ পড়ে যায়, খানিকক্ষণের জন্য একটা বই নিয়ে বাগানের বেঞ্চে বসেন। নিজেকে বলেন ‘ জানি, অনেক কাজ বাকি আছে। সে সব করব এক সময়ে। তবে আপাতত, এইখানে, এই বাগানের বেঞ্চে বসে এই বই পড়ব! ‘

    মারগারেট মিচেলের গন উইথ দি উইন্ড উপন্যাসের (ছবিটি নয়) শেষ বাক্যটি মনে করুন - স্কারলেট ও’ হারার মুখে- – আমি এ ব্যাপারে কালকে ভাববো। আগামী কাল আরেকটা দিন (আই উইল থিংক অ্যাবাউট ইট টুমরো। টুমরো ইজ অ্যানাদার ডে) ।

    লেনি ফেডার ছিলেন আমার বিগত ব্যাংকের কোষাধ্যক্ষ।

    লেনির পরিবার পোলিশ ইহুদি। ষ্টেটেলের মানুষ। নামেন পরিচয়তে। ফেডার এসেছে জার্মান শব্দ ফেদার বা পালক থেকে। তাঁরা গত শতাব্দীর গোড়ায় আমেরিকার জাহাজ ধরেছিলেন। ইউরোপে ইহুদি নিধন শুরু হবার অনেক আগে।

    উনিশ শতকের মাঝামাঝি ব্যাভেরিয়ার রিম্পার শহর থেকে আমেরিকা এসে হেনরি, মায়ার আর ইমানুয়েল তিন ইহুদি ভাই তুলোর ব্যবসা শুরু করেন আমেরিকার দক্ষিণে, আলাবামা শহরে। তারপর গেলেন নিউ ইয়র্কে। তাঁদের প্রতিষ্ঠিত ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের নাম লেমান ব্রাদারস (আমেরিকানরা লিমান বলেন) । নিউ ইয়রকের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক লেনির কর্ম জীবন শুরু এই ব্যাঙ্কে। ২০০৮ সালে সেটি বন্ধ হয়ে যাবার আগেই লেনি গেছেন সিঙ্গাপুর। বেয়ার ষ্টেরনস (অধুনা লুপ্ত) নামক আমেরিকান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের এশিয়ান বাণিজ্য দেখতেন। পরে যোগ দিলেন আমাদের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কে , সিঙ্গাপুরে। আমাদের দু জনের পদ মর্যাদায় কয়েক ক্রোশের ফারাক থাকলেও সুযোগ হয়েছে গল্প গুজবের। কোন অজানা কারণে তিনি আমাকে তাঁর শীর্ষ দলের অন্তর্ভুক্ত করেন। যখন কাজ কর্মের রেশ কম, ব্যাঙ্কের মূল্যবান সময় নষ্ট করে গুলতানি করেছি প্রচুর।

    চাকরি জীবন শেষে এখন লস এঞ্জেলেসে বাস করেন। সম্পত্তির ব্যবসা আর স্টার্ট আপ নিয়ে আছেন, ব্যাঙ্কিং থেকে দূরে (ইন্টারনেটে লেনিকে পাবেন) । আমার ছেলে ইন্দ্রনীল ক্যালিফোর্নিয়া প্রবাসে আছে জেনে লেনি তাকে আপন গৃহে আপ্যায়ন করেছিলেন। সেই বিস্তৃত উচ্চ প্রাসাদে প্রবেশ অধিকার পেয়ে আমার ছেলে চমৎকৃত হয়। আমি যে হাই সার্কেলে মুভ করেছি সেটি সে বিশ্বাস করতে শুরু করে। ইন্দ্রনীলের কাছে জানলাম সে প্রাসাদটি ডিজনি প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন সি ই ও মাইকেল আইসনার বানিয়েছিলেন। তিনিও ইহুদি।

    প্রায় সত্তর বছর বয়েসে লেনির মা মারা যান। লেনি গল্প করছিলেন। আমরা একটা কনফেরেন্সে ছিলাম ইন্দোনেশিয়াতে।
    ‘ইহুদি পরিবারে মায়ের একটা কঠোর ভূমিকা থাকে। বয়েস যাই হোক না কেন, পুত্র কন্যা কখনো তার ছায়া কাটিয়ে উঠতে পারে না! এই কারণেই ইহুদি মায়েদের নিয়ে গল্পের শেষ নেই ‘। আপন মায়ের দিদিমার গল্প করলেন। আমার এই পর্বের কিছু গল্প লেনির কাছে শোনা।

    লেনির মতে প্রথমেই মনে রাখতে হবে একটি আপ্ত বাক্য :

    ঈশ্বর দুনিয়ার সর্বত্র হাজির থাকতে পারেন না। তাই তিনি ইহুদি মাতা সৃষ্টি করেছেন।

    প্রসঙ্গত, আমেরিকার বর্তমান সহ রাষ্ট্রপতি কমলা হ্যারিসের স্বামী ডগলাস এমহফের পূর্ব পুরুষ অস্ট্রিয়ান ইহুদি। এমহফের প্রথম পক্ষের ছেলে কোল এবং মেয়ে এমা কমলা হ্যারিসকে “ মমলা” নামে ডাকে – মামে এবং কমলা মিলিয়ে!

    ১৮ শতকে ইউরোপের উত্তর পূর্ব কোণায় একটি বৃহৎ ইহুদি বাসভূমি বা বৃহত্তম ঘেটো গড়ে ওঠে (পেল অফ সেটলমেনট – গ্রামে গঞ্জে পর্বে দ্রষ্টব্য) । জীবন সেখানে অত্যন্ত কঠিন। ইহুদিদের গতায়াত একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে বাঁধা। তাঁদের পেশা সীমিত। কোন কোন কাজ তাঁরা করতে পারবেন না তার ফিরিস্তি এক গজ। মনে করুন থাকেন একটি গ্রামে । তাঁদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড সেই গ্রামের ভেতরেই। এই জীবনে ইহুদি মাতার ভূমিকা ছিল বরণীয়।

    সেই গ্রামের ইহুদি পাড়ায় পুরুষরা মিদ্রাসে (বিদ্যালয় / মাদ্রাসার সমার্থক: একই সেমিতিক সূত্র) ধর্মগ্রন্থ পাঠে ব্যস্ত, ছেলেরা পাঠশালায় হিব্রু পাঠে। তাহলে সংসার চালায় কে? সেই ইহুদি মাতা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ খোঁজেন। কোথাও সেলাই করে, কারও ঘর মুছে, ফল মুল কিছু কুড়িয়ে যোগাড় করে গ্রামের বাজারে বেচে সন্ধ্যে বেলায় স্বামী সন্তানের মুখে অন্ন তুলে দেন। সংসারের সকল কাজ করেন একা হাতে। তিনি রান্না করেন, বাসন মাজেন, ছেলে মানুষ করেন। কি করে যে তিনি এইসব কর্মের সময় পান তা কারো অনুমানের বাইরে। তাঁর একমাত্র ধ্যান ধারণা সংসারকে নিয়ে - স্বামীর ধর্ম চর্চা, ছেলে মেয়ের বিদ্যা চর্চা যেন অব্যাহত থাকে। সাবাথের দিনে সবার বিশ্রাম পুত্র কন্যা দাস দাসী গোরু ছাগল অবধি কিন্তু ইহুদি মাতার ছুটি নেই ( অবশ্যই দশ আদেশের নিয়ম মেনে – সাবাথ পর্ব দ্রষ্টব্য) ।

    পেল বা স্টেটেলে ইহুদি মাতা ক্বচিৎ হিব্রু শিখেছেন। সেটা ধর্ম চর্চা, মিদ্রাশ আর সিনাগগের ভাষা। মায়ের মুখে ছেলে মেয়ে শিখেছে ইদিশ। মামে লশেন (মায়ের ভাষা) আর ইদিশ কথা দুটো সমার্থক। আমার মায়ের মুখে আমি যে ভাষাটি শিখেছি সেটি বাংলা, আমার মাতৃ ভাষা। বিহারের শিশুর মাতৃভাষা হিন্দি। হাজার বছরের বেশি মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের ইহুদি বালক বালিকার মাতৃ ভাষা ছিল ইদিশ, তারা রাশিয়া পোল্যান্ড লিথুয়ানিয়া ইউক্রেন যে দেশেরই বাসিন্দা হোক না কেন।

    মিদ্রাসে বা সিনাগগে ধর্ম চর্চার কাজে মায়ের ভূমিকা প্রায় শূন্য। সিনাগগে স্ত্রী ও পুরুষ আলাদা বসেন। ইজরায়েলের সর্বত্র দেখেছি একই প্রথা। মাউনট অফ জাওনে ডেভিডের সমাধিতেও নারী পুরুষের স্বতন্ত্র প্রবেশ পথ।

    লেনি বলেন ইউরোপ থেকে আমেরিকায় আগত প্রথম ইহুদি জনগণ নিজেদের মধ্যে ইদিশ বলেছেন। ছেলে মেয়েরা ইংরেজি শিখেছে, ইদিশ নয়। তাই ইহুদি পিতা মাতা ছেলে মেয়ের কাছে কোন কথা গোপন করতে হলে ইদিশ বলতেন।

    সিটি ব্যাঙ্কে আমার এক নরওয়েজিয়ান ইহুদি খদ্দের ছিল, বিওরন। তার মা সাংহাইয়ে বড়ো হয়েছেন। কর্মসূত্রে বিওরনের সঙ্গে আলাপ হয় নরওয়ের রোগাল্যান্ডে – সে একবারে পশ্চিম প্রান্তে আটলান্টিকের উপকূলে। সেখানে আছে সেই পালপিট রক। ফিওরডের জল থেকে খাড়া পাহাড় উঠে গেছে হাজার ফিট। তার সামনে একটা স্টেজের বা গিরজের পালপিটের মতো অংশ অনেকটা এগিয়ে আছে সেই ফিওরডের ওপরে – আজকাল যাকে স্কাই ওয়াক বলে। সেখানে দাঁড়াতে পারেন। মনে হবে মহাশূন্যে ঝুলছেন।

    বিওরন পরে তেল আভিভে বাসা বাঁধে, নয়ের দশকে। তার কাছে এই গল্পটা শুনি। প্রতিপাদ্য বিষয় হল ইহুদিয়ানা প্রমাণ হয় কিসে?

    তেল আভিভ থেকে হাইফার বাস। এক ইহুদি মাতা বছর দশেকের ছেলের সঙ্গে কথা বলে চলেছেন ইদিশে। সে বুঝছে নিশ্চয় তবে জবাব দিচ্ছে খুবই স্বছন্দ হিব্রুতে। আমাদের মতো দেশত্যাগীরা তাতে অভ্যস্ত -ছেলে মেয়ের সঙ্গে বাংলা বললে ইংরেজিতে জবাব পাই। মা তাকে বার বার বলছেন হিব্রু নয়, ইদিশে জবাব দাও। পাশে বসা এক বয়স্ক ভদ্রলোক খানিকক্ষণ শুনে মহিলাকে হিব্রুতে বললেন ‘আপনার ছেলে তো দিব্যি হিব্রু বলে। ওকে বলতে দিন না ‘। ইহুদি মাতা ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন, “ আমার ছেলে যে ইহুদি সেটা যেন সে ভুলে না যায়’।

    বিওরন নিজে ইদিশ মোটে পছন্দ করে না। জার্মানের মতো একটি অসেমিতিক ভাষার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে বলে। কিন্তু এটা মানতে সে বাধ্য হয় যে এক হাজার বছরের ইউরোপীয় ইতিহাসে ইহুদিকে এক সূত্রে বেঁধে রেখেছিল এই ভাষা, আর এই সূত্রটির ধারক ইহুদি মাতা। তাই বাসের সেই দৃঢ় সকল্প ইহুদি মাতার কাছে ইদিশ হল ইহুদি হওয়ার একমাত্র পরিচয়! ইজরায়েল বা হিব্রু নয়!

    এটা তিরিশ বছর আগের গল্প। আমি বার বার লিখেছি ইজরায়েলে ইদিশ আজ প্রায় লুপ্ত। বেঁচে আছে ব্রুকলিনে!

    মুখের ভাষা আজ বদলে গেছে কিন্তু ইহুদি মাতা বদলান নি।

    লেনি ফেডারের মাতৃ বন্দনা শুনে আমার দেখা গোলডারস গ্রিনের ক্যাথি মানসেল, হেনডনের রেচেল মাইঞ্জ বা ফিঞ্চলির জুডিথ মিকেলসনের মতো ইহুদি মায়েদের কথা মনে পড়েছে। সকাল থেকে মায়েরা সতত সঞ্চরমান। একবার ছুটলেন এই ছোটটাকে কিনডার গারটেনে রাখতে, ফিরে এসে দুটোকে স্কুলে নিয়ে গেলেন, কোনো মেয়েকে নাচের আখড়ায়, আরেক ছেলেকে নিকটবর্তী ট্রেন স্টেশনে। বিকেল বেলায় আবার বিপরীত মুখী যাত্রা। ঐন্দ্রিলাকে তার হ্যাম্পষ্টেড গার্ডেন সাবারবের স্কুল থেকে শুক্কুরবারের বিকেলে আনতে গিয়ে বিশাল যানজটে পড়েছি। মায়েরা কেবল যে মেয়েদের বাড়ি ফেরানোর জন্য ব্যস্ত তা নয়। দু ঘণ্টার মধ্যে সাবাথ শুরু হবে তার ভাবনা মাথায় নিয়ে রাস্তার ফাঁক ফোঁকর খুঁজে গাড়ি চালাচ্ছেন।

    গোলডারস গ্রিনের পথে ঘাটে তিন চারটি ছোট ছেলে মেয়ে একত্র রাস্তা পার হচ্ছে এমন দৃশ্য সতত দেখা যায়। তাদের মধ্যে বড়টি, সাত আট বছর হবে কিনা সন্দেহ, সবার দেখ ভাল করে। মায়ের সময় কোথায়?

    সিনাগগ মিদ্রাশে মায়ের ভূমিকা অত্যন্ত নীরব। কিন্তু ইহুদি মাতা থাকেন সকলের মাঝে, সকলের পাশে। ছায়ার মতন আছি, চোখে দেখো না দেখ!

    আমাদের সকলের মায়ের মতো।

    চার দেয়ালে ঘেরা বাড়ির ভেতরে যে পৃথিবী সেটি সম্পূর্ণ তাঁরই শাসনে, তাড়নায়, স্নেহে, ভালবাসায় সুরক্ষিত। শাবেসের (সাবাথ) সন্ধ্যায় আপন গৃহে তাঁর ভূমিকা গরীয়সী রমণীর। সেদিন নিজে সুন্দর পোশাক পরে ও সকলকে সুসজ্জিত করে দীপ জ্বালাবেন, চোখ বন্ধ করে তার শিখার আঁচ মাথায় দেবেন মনে মনে বলবেন প্রভু আমার পরিবারকে রক্ষা করো, আমাদের স্বাস্থ্য, শান্তি ও সম্মান যেন অটুট থাকে।

    এই শিখার আঁচ মাথায় নেবার প্রথা আমাদের আছে। আমরা সে আঁচ বিতরণ করি আশে পাশে যাকে পাই তার মাথায়, বিশেষ করে ছোটদের। সাবাথের সন্ধ্যেয় সেই আঁচ বন্টিত হতে দেখি নি।

    ইন্দ্রনীলের স্কুলের বন্ধু গাই বিরনবাউম থাকতো ওয়েস্ট হ্যাম্পষ্টেডে। তাদের পরিবারের সঙ্গে আমাদের অসম্ভব নৈকট্য গড়ে ওঠে। অনেক সাবাথের সন্ধ্যা কাটিয়েছি তাদের সঙ্গে। বাংলায় আমরা যাকে ভুরি ভোজ বলি সেটা শুক্রবার ইহুদি সাবাথের সান্ধ্য ভোজনের তুলনায় জলখাবার মাত্তর! গাইয়ের মা বিরশেবাকে বলতাম শনিবারের দিনটায় কাজ কর্ম কেন যে মোজেস বারণ করে গেছেন এবারে বুঝলাম। আগের দিনের সেই বৃহৎ ভোজন উৎসবের পরে শনিবার শরীরকে ব্যস্ত না করাই ভালো!

    **********

    বিচে মিসেস গোল্ডবেরগ ছোট্ট মেয়ে এলিকে নিয়ে হাঁটছেন জলের খুব কাছে। এমন সময় একটা প্রকাণ্ড ঢেউ এসে এলিকে টেনে নিয়ে গেলো সমুদ্রে। মিসেস গোল্ডবেরগ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন। আকাশের দিকে চেয়ে বলছেন : ঈশ্বর আমার একটিই মেয়ে । আমার চোখের মণি । তাকে ফিরিয়ে দাও প্রভু। আমি প্রতি শনিবারে সিনাগগ যাব।

    আরেকটা ঢেউ এসে আছড়ে পড়ল বালিতে। এলি ভিজে কিন্তু অক্ষত দেহে ফিরে এসেছে সমুদ্রের গহ্বর থেকে।

    মিসেস গোল্ডবেরগ আকাশের দিকে চেয়ে বললেন : এলির মাথায় একটা হ্যাট ছিল যে?
    **********

    মিসেস ফাইগেনবাউম ও মিসেস ফিঙ্কেলস্টাইন সেলুনে পাশা পাশি বসে।

    ফাইগেনবাউম বাড়ির সবার কি খবর? আপনার মেয়ে কেমন আছে? বিয়ের পর থেকে তাকে আর দেখি নি।

    ফিঙ্কেলস্টাইন সে খুব সুখে আছে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে অত্যন্ত ভাল একটি ছেলের সঙ্গে। তাকে কখনো
    রান্না অবধি করতে হয় না, জানেন? জামাই ওকালতি করে। সব সময় বাইরে দারুণ সব
    রেস্তরাঁয় মেয়েকে খাওয়াতে নিয়ে যায়। বাড়ির কাজ করার জন্য লোক রেখেছে, এই চড়া
    বাজারে! এমনকি ন্যানি আছে। আমার নাতির দেখা শোনা করে সে। মেয়েকে আমার কোন
    কাজই করতে দেয় না।

    তা, আপনার ছেলের কি খবর? তাকেও তো বিয়ের পরে আর দেখি নি।

    ফাইগেনবাউম আর বলবেন না। এমন মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হল। বউ রান্না বান্নার দিক দিয়ে যায় না।
    ছেলের আর উপায় কি? অগত্যা সে রোজ বাইরে খাওয়াতে নিয়ে যায়।
    বাড়ির কোন কাজ বউ করে না। ছেলেকে ঘরের কাজের লোক রাখতে হয়েছে। বউ আপন সাজ গোজ নিয়েই ব্যস্ত। এমনকি ন্যানি রাখতে হয়েছে এই মাগ্যি গণ্ডার দিনে, আমার নাতিকে দেখা শোনা করার জন্যে।
    **********

    হিব্রু প্রবচন
    ছেলের বিয়ে হলে মায়ের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
    **********

    ইহুদি মাতা

    - বেলা দশটা বাজার আগেই তিন বার ফোন করেন ছেলেকে - দিন কেমন কেটেছে জানতে চান।

    - ছুটিতে একটি অতিরিক্ত ব্যাগ নিয়ে যান হোটেলের শ্যাম্পু সাবান ফেস টাওয়েল বাথ অয়েল বাথ রোব প্যাক করার জন্য।
    -
    - রেস্তোরাঁর উদ্বৃত্ত খাবার সর্বদা প্যাক করে আনেন।

    - পাস ওভারের পরের দিন তিনি আগামী বছরের উৎসবের জন্য বাজার করতে যান। সস্তায় পাওয়া যায়।

    - ডাক্তার দেখাতে গেলে ছেলে ও মেয়ের ছবি নিয়ে যেতে ভোলেন না। সেটি সকল অবিবাহিত ডাক্তারকে দেখাতে হবে।

    - দেখা হলেই পঁচিশ পেরুনো ছেলে মেয়েকে বলেন – একটা নাতি নাতনির মুখ দেখতে চাওয়াটা কি অপরাধ?
    **********

    মিসেস কামিনস্কি : মিসেস গোল্ডবেরগ আমার ছেলেটা ডাক্তার হয়েছে। খুব ভাল ডাক্তার। আপনি একবার গিয়ে দেখান।

    মিসেস সাওয়ারতাইগ : কেন? আমার তো কিছু হয় নি!

    মিসেস কামিনস্কি : আহা, গিয়ে একবার দেখান তো! ও কোন না কোন একটা রোগ ঠিক ধরে ফেলবে।
    **********

    প্রশ্ন : ইহুদি মাতা ও সন্ত্রাসবাদীর মধ্যে তফাত কি?
    উত্তর : সন্ত্রাসবাদীর সঙ্গে আলাপ আলোচনা বা সন্ধি করা যায়।
    **********

    বাঙালি মা : খেয়ে নাও, বাবা এই সামান্য ডাল ভাত মাছ পাতে ফেলে রেখো না।

    ইতালিয়ান মা : খেয়ে নাও, নইলে আমি তোমাকে কেটে ফেলব।

    রুমানিয়ান মা : খেয়ে নাও, নইলে আমি তোমাকে কেটে ফেলব (আমার মেয়ে তার মায়ের কাছে নিয়মিত শুনেছে)

    ইহুদি মা বলেন : খেয়ে নাও, নইলে আমি গলায় দড়ি দেব।
    **********

    সুপার মার্কেটে দুই ইহুদি মাতা। একজনের সঙ্গে দুটি ছোট ছেলে।

    মিসেস ব্লুমেনথাল মিসেস ফাইনস্টাইন , কি সুন্দর ছেলে দুটি। কার কত বয়েস?
    মিসেস ফাইনস্টাইন ডাক্তারের বয়েস চার। উকিলের দুই।
    **********

    ইহুদি প্রবচন
    ইহুদি মাতা ক্ষমা করেন এবং ভুলে যান। কোনটা ক্ষমা করেছেন সেটা তিনি কখনো ভুলে জান না।
    **********

    গ্রুনের জন্মদিনে তার মা দুটি শার্ট উপহার দিয়েছেন।

    গ্রুন মা, দেখো তোমার দেয়া লাল শার্টটা পরেছি।
    মা অন্যটা পছন্দ হয় নি বুঝি?
    **********

    মিসেস ওয়াইনস্টাইন খুব চিন্তায় আছেন আঠারো বছরের ছেলেকে নিয়ে। রাত করে বাড়ি ফেরে। কিছুই জানায় না কোথায় কখন থাকে, কার সঙ্গে ঘোরাঘুরি করে।ছেলে বাড়ি নেই দেখে একদিন তন্ন তন্ন করে ঘরের তল্লাসি নিলেন। ছেলের ড্রয়ার থেকে বেরুল একটা লিপস্টিক। সেটি দেখে তিনি আশ্বস্ত হলেন।

    ছেলে অন্তত একটি ইহুদি মেয়ের সঙ্গে মেলা মেশা করছে।

    লিপস্টিকের গায়ে বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা আছে –

    হেলেনা রুবিনস্টাইন!
    **********

    দুই ইহুদি মাতা চা পানে রত।

    মিসেস সিলবারবেরগ : আরেকটা কেক নিন না!
    মিসেস ফাইনমান : কি যে বলেন, আমি পাঁচটা খেয়েছি ইতিমধ্যে!
    মিসেস সিলবারবেরগ : না, ছটা। তাতে কি? কে গুনছে? নিন না আরেকটা!
    **********

    ছেলে মেয়েরা কি ইহুদি মাতার সঙ্গে সফলভাবে তর্ক করতে পারে না? অবশ্য পারে। তার তিনটে থিওরি চালু আছে।

    সেগুলো উল্লেখ করে লাভ নেই। কোনোটাই কাজ করে না।
    **********

    মিসেস ব্লুমেনথাল ও মিসেস আউয়ারস্টাইন সমুদ্র তীরের ভিলার বারান্দায় বসে গল্প করছেন এক যুবক পাশ দিয়ে হেঁটে আসছে।
    মিসেস ব্লুমেনথাল : ছেলেটার চেহারা দেখেছেন? বড়ো বাঁকা নাক আর কেমন চাউনি!
    মিসেস আউয়ারস্টাইন : ওটা আমার ছেলে (ঠাণ্ডা সুরে)
    মিসেস ব্লুমেনথাল : তাই বলুন! আহা, আপনার ছেলেকেই এটা মানায়।
    **********

    মিসেস সিলবারস্টাইন : আমার ছেলে স্যাম অত্যন্ত মেধাবী। মনস্তত্ব, মনোবিদ্যা সবেতেই প্রথম শ্রেণির ডিগ্রী আছে তার।
    মিসেস গোল্ডস্টাইন : সে ভীষণ গর্বের কথা। কাজ কি করে?
    মিসেস সিলবারস্টাইন : স্যাম কোন চাকরি পাচ্ছে না। কিন্তু সে জানে কেন পাচ্ছে না। মনোবিদ তো।
    **********

    জিনিয়াস - যে কোন এক ইহুদি মাতার এক নিতান্ত গড়পড়তা ছেলে।
    **********

    মনোবিদরা তাঁদের ব্যবসায়ের জন্য ইহুদি মাতাদের কাছে অসম্ভব ঋণী। সেই মায়েদের তাড়নার ফলেই বহু মানুষ থেরাপির আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
    **********

    ঈশ্বরের কাছে ইহুদি মাতার প্রার্থনা

    - এতো করেছি ছেলের জন্য! একটা নোবেল প্রাইজ চাওয়া কি খুব বেশি হবে?

    পু: জনসংখ্যার অনুপাতে সর্বাধিক নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন ইহুদিরা (এতাবৎ ঘোষিত পুরস্কারের ২০%)। সেটা এমনি এমনি হয় নি। ছেলেদের এবং ঈশ্বরের পেছনে মায়েরা সমানভাবে লেগে থাকেন বলেই তা সম্ভব হয়েছে।


    অনলাইন কিনতে এখানে ক্লিক করুন

    **********

    তহবিল তছরুপের দায়ে ডেভিড আর দলিল জাল করে মাইকেল জেলে গেছে। তাদের মায়েরা ছেলেদের গল্প করছেন।

    এলি : আমার ছেলে ডেভিড আছে অত্যন্ত সুরক্ষিত জেলে। পুলিশ তার নজরদারি করে চব্বিশ ঘণ্টা। সে কারো সঙ্গে কথা বলে না অবধি। একেবারে একা থাকে নিজের মতন। জানেন তো ছোট বেলা থেকেই সে অন্য সবার চেয়ে আলাদা।
    জুডিথ : আমার ছেলে মাইকেল যে জেলে আছে সেখানে সে রোজ ব্যায়াম করতে পারে, হাতের কাজ শেখে। লাইব্রেরি যায়। আমাকে চিঠি লেখে সপ্তাহে একবার।
    এলি : আপনাকে প্রতি সপ্তাহে চিঠি লেখে! আহা, কি ভালো ছেলে আপনার!
    **********

    ছেলে মেয়ের প্রতি ইহুদি মাতার বাণী (বিভিন্ন অবকাশে) :

    তোমরা দু ভাই যদি মারামারি করে মরতে চাও, বাড়ির বাইরে গিয়ে মরো। আমি সবে ঘরটা পরিষ্কার করেছি।
    **********

    এই বদমায়েশি করার সময় কি বুদ্ধি ফেঁদেছিলে? উত্তর দাও। তোমাকে জিজ্ঞেস করছি! মুখে মুখে জবাব দেবে না।
    **********

    গরম জামা পরে নাও। আমি জানি তোমার কখন ঠাণ্ডা লাগে।
    **********

    তোমার বাবার মতো কথা বলা শুরু করো না।
    **********

    কাজটা কেন করবে? করবে আমি বলেছি বলে।
    **********

    তোমার ঘাড়ে কি রকম ময়লা জমেছে তা নিজের চোখে দেখেছো কখনো?
    **********

    তোমার কান্না যদি এক্ষুনি না থামাও, আরো দু ঘা কষিয়ে দেব।
    **********

    খাবারের মেনু পড়বে হিব্রুর মতন, ডান দিক থেকে বাঁ দিকে। দামটা দেখবে আগে।
    **********

    তিন ইহুদি মাতা ছেলেদের গল্প করছেন।

    আবিগেল : আমার ছেলে বেনি অক্সফোরডের গ্র্যাজুয়েট। তারপর ডাক্তারি শিখে এখন বছরে দু লাখ পাউনড আয় করে।
    সারা : সলোমন কেম্ব্রিজ থেকে আইন পাস করেছে। তার দারুণ পশার। বছরে পাঁচ লাখ পাউনড তার আয়।
    রুথ : আইসাক স্কুলের গণ্ডি পার হয় নি। ইউনিভারসিটির কথা বাদ দিন। তবে খেলা মেরামতের কাজ করে আইসাক বছরে অন্তত দশ লক্ষ পাউনড আয় করে।
    আবিগেল ও সারা : খেলা মেরামত? সেটা কি কাজ?
    রুথ : বলবেন না। সে বড় কঠিন কাজ। তাই তো সে এতো টাকা রোজগার করে। আইসাকের কাজ হল খেলার ফলাফল মেরামত করা। এই যেমন কোনো ফুটবল, ক্রিকেট বা রাগবি খেলার কি ফল হবে সেটা সে খেলার আগেই সে ঠিকঠাক করে দেয়। প্রয়োজন হলে খেলা চলা কালীন।
    **********

    কলোন, জার্মানি
    গত শতকে


    ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ ইনসটাগ্রামের আগের যুগে তরুণ তরুণীদের চক্ষু মিলনের স্থান ছিল পুজো প্যান্ডেল, পাড়ার পার্ক, গঙ্গার ধার। কলোনের জোড়া গিরজের পাশের প্রকাণ্ড বাঁধানো চত্বরটির (এখন সেখানে চলে স্কেট বোর্ডের ভাগ দৌড়) বিশাল খ্যাতি ছিল ছেলে মেয়েদের আলাপ পরিচয়, দেখা সাক্ষাতের কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে। একটি সতর্ক বাণী সেখানে সর্বদা চালু ছিল : ভুলেও কোন ইহুদি মেয়েকে ছেড় ছাড় করো না। ক্যাথলিক হোক প্রটেস্টান্ট হোক, খ্রিস্টান মেয়েদের উৎপাত করলে তারা বড়ো জোর চেঁচাবে “ জেসুস মারিয়া“! কেউ শুনবে না। যিশু বা মেরি কেউ তাদের রক্ষায় আসবেন না। কিন্তু ইহুদি মেয়ে চিৎকার করে যেই বলবে, “মামে “ তৎক্ষণাৎ কোনো জাদু মন্ত্র বলে ইহুদি মাতা রণ মূর্তিতে এসে হাজির হবেন!

    মামে সে বচকে রহনা!
    **********

    প্রশ্ন : কোন রোগটি ইহুদি মাতা পুত্র কন্যার মধ্যে দ্রুত সংক্রমিত করেন?

    উত্তর : অপরাধ বোধ।
    **********

    রিফকা প্র্যামে শিশুকে নিয়ে হাঁটছেন। মিসেস সিলবারস্টাইনের সঙ্গে দেখা।

    সিলবারস্টাইন : আহা কি সুন্দর ছেলেটি!

    রিফকা : এ আর কি? ছেলেটার ছবি গুলো যদি দেখতেন!
    **********

    দশ জন ইহুদি মাতা একত্র রেস্তরাঁয় বসেছেন সাপ্তাহিক কফির আড্ডায় ।

    ওয়েটার সামনে এসে দাঁড়াল : ভদ্র মহোদয়াগন, আজ আপনাদের একটি সেবাও কি আমি সঠিক ভাবে করতে পেরেছি?
    **********

    কি ভাবে তাঁদের নতুন ফ্ল্যাটে আসতে হবে ছেলেকে তার নির্দেশ দিচ্ছেন মিসেস গোল্ডবেরগ।

    মিসেস গোল্ডবেরগ : বাড়ির নম্বর ১৭/১। দেখবে সদর দরজার ডান দিকে সব গেরস্থর নাম লেখা আছে। তুমি কনুই দিয়ে ১৪ নম্বর টিপবে। খোলার আওয়াজ পেলেই পিঠ দিয়ে দরজা ঠেলে ঢুকবে। লিফটে গিয়ে ১৪ নম্বরে টিপবে কনুই দিয়ে। লিফট থেকে বেরিয়ে ডাইনে ১৪/২ দরজার সামনে যাবে। সে দরোজায় যে বেল দেখবে তার ওপরে কনুই দিয়ে চাপ দিলেই আমি দরজা খুলব।
    রুবিন : কনুই দিয়ে কেন সর্বত্র টিপতে হবে?
    মিসেস গোল্ডবেরগ : সে কি কথা? তুমি কি খালি হাতে মায়ের কাছে আসবে নাকি? তোমার হাতে মায়ের জন্যে উপহারের প্যাকেট
    থাকবে না?
    **********

    বেশ কয়েকদিন বাদে সলি (সলোমন) ফোন করছে মাকে।

    সলি : মা, কেমন আছো?
    মা : ভালো না। খুব দুর্বল হয়ে পড়েছি
    সলি : কেন? কি হয়েছে?
    মা : সতেরো দিন কিছু মুখে দিই নি।
    সলি : কেন সতেরো দিন কিছু খাও নি?
    মা : সব সময় মাথায় যে একই চিন্তা। তুমি যখন ফোন করবে তখন যদি মুখ ভর্তি থাকে? কথা বলব কি করে?
    **********


    দূরভাষে বার্তালাপ।

    রেচেল : মা!
    জুডিথ : কেমন আছো?
    রেচেল : জানি না কোনখান থেকে শুরু করব। ছেলে মেয়ে দুজনের ফ্লু। শয্যাশায়ী। কাল রাত থেকে ফ্রিজ অচল।আমাদের সিনাগগ সমবায় গ্রুপের দু জনকে লাঞ্চে আসতে বলেছি। তারা এই এলো বলে।
    জুডিথ : কোন চিন্তা করো না। আমি একটা বাস ধরে চলে আসছি। আমি তোমার ছেলে মেয়েকে দেখব। ফ্রিজ সারানোর লোককে আমি খবর দিচ্ছি। তুমি এখন ঐ সমবায় না কি বললে তাদের দু জনের জন্য রান্না চাপাও। আর একটা কথা। আমাদের যা রান্না আছে তা থেকে আমি ময়শের জন্য রাতের খাবারও নিয়ে যাব।
    রেচেল : ময়শে কে?
    জুডিথ: ও কি কথা? ময়শে, তোমার স্বামী!
    রেচেল : আমার বরের নাম তো নাথান। তোমার নম্বর কি ৫৭৮-৩০২১ নয়?
    জুডিথ : না, আমার নম্বর ৫৭৮-৩০২০

    দূরভাষে দীর্ঘ নিঃশব্দতা।

    রেচেল : মানে, তুমি আসবে না?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ২১ আগস্ট ২০২১ | ২৮০৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • নাসের আলী | 2409:4061:51a:94ba:71f9:f2d0:e2f1:***:*** | ২১ আগস্ট ২০২১ ১২:১১496955
  • শ্রদ্ধেয় হীরেন সিংহ রায় এঁর লেখা পড়ে গর্ববোধ করছি l দূর-দেশের ভাষা ,সাহিত্য সংস্কৃতি, ইতিহাস বর্তমান আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মকে সমৃদ্ধ করবে l 


    কথা বলার সুযোগ চাই 8509320019

  • শান্তা সান‍্যাল ( ভাদুড়ী) | 2409:4060:29f:5887::1305:***:*** | ২১ আগস্ট ২০২১ ১৯:০৮496972
  • মাকে নিয়ে লেখা এই পর্বটা দারুন। মামে আর মায়েরা তো হুবহু এক‌ই দেখছি। জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ একা হাতে সব সামলানো, অতন্দ্র প্রহরীর মত সন্তানকে আগলে রাখা , সন্তান গরবে গরবীনি হ‌ওয়া, দোষ ঢাকা, সন্তানের সাফল্যের তিলকে তাল করা সব দিক থেকেই মিল। অনবদ‍্য পরিবেশনার জন্য খুবই মনোগ্ৰাহী হয়ে উঠেছে লেখাটা।অপেক্ষায় র‌ইলাম, ইহুদীদের সঙ্গে আরও কি কি মিল আছে, দেখি !!

  • বিবেক পাল | 2409:4061:712:48c0::166f:***:*** | ২৪ আগস্ট ২০২১ ১২:১৬497045
  • মামে মানে মাকে নিয়ে লেখা। সাবলীল ভাবে শব্দের ব্যঞ্জনায় ফুটে উঠেছে মায়ের নিখুঁত চিত্রপট। মা যে সত্যিকারের দশভূজা, ইহুদি মায়ের প্রতিদিনের  কাজকর্মের বর্ননার মধ্যদিয়ে ব্যক্ত করেছেন ।দুই মায়ের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে ইহুদি মায়ের সহনশীলতা, অনড় ব্যক্তিত্ব  প্রভৃতি গুনাবলীকে লেখনীর গুনে ফুটিিয়ে তুুুুলেছেন।"চার দেয়ালে ঘেরা বাড়ির ভেতরে যে পৃথিবী সেটি সম্পূর্ণ তাঁরই শাসনে, তাড়নায়, স্নেহে, ভালবাসায় সুরক্ষিত "। উপরের এই কটি  শব্দের  ভিতর দিয়ে ইহুদি মাতৃজাতির যেন ছবি এঁকে দিয়েছেন। দূরদেশের সাহিত্য  সংস্কৃতি  সম্বন্ধে  ধারণা  তৈরি  হল।নিজেকে সমৃদ্ধ  করতে পারলাম।
  • Ramit Chatterjee | ২৪ আগস্ট ২০২১ ১৮:৩৮497063
  • খুবই সুন্দর লাগলো এবারের পর্বটা। যেমনটা অনেকে লিখেছেন সত্যিই বাঙালি মায়েদের সাথে ভীষন মিল। আমার কেমন যেন মনে হয় সারা পৃথিবী জুড়েই মায়েরা এরকমই হয়, এভাবেই সন্তানকে আগলে রাখে আর সমস্ত কষ্ট স্বীকার করেও সন্তানের ও স্বামীর ভালো চায়।
  • Mrinmoy Dey | ২৪ আগস্ট ২০২১ ২৩:৪৬497069
  • এক একটি পর্ব এক নতুন করে অভিজ্ঞতা সামনে তুলে ধরছে। আরও জানার অপেক্ষায় রইলাম।
  • Kausik Ghosh | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:১০498445
  • তেরো থেকে এক নম্বরে গেছিলাম, আপনাকে জানিয়েছিলাম সকালে, হয়তো মনে আছে আপনার, হীরেনবাবু। সাদা সাদা লুচি, এপাশের প্লেটে আলুর দম, ওপাশে সাদা রসগোল্লা, বলছিলাম তো তখন। সবকিছুর হাতছানি উপেক্ষা করে আপনার লেখনীর পেছন পেছন ঘুরে বেড়ালাম সারাদিন ইহুদি পাড়ায়।
    এইমাত্র রেচেল আর জুডিথের কথোপকথন শেষ করলাম। রসিকতার মধ্যে সেরা পাঁচটার একটা হবে এটা।
    না, না, টেনশন নেবেন না, তিন থেকে এগারোয় আসতে সারাদিন কেটে গেলো বলে। খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো করেছি। বলছিলাম না তখন যে শালাবাবুর গৃহপ্রবেশ ? দুপুরের পোলাওটা অসাধারণ হয়েছিলো। 
    আর না, এবার বারো নম্বরটা ধরি ? এমন লিখেছেন, মানে এমনভাবে লিখেছেন, আপনার এই ইহুদি কান্ড ছেড়ে উঠতে পারছি না। 
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন