
হিটলার এবং নাৎসি আমলেঝটিকা বাহিনীর তিন হাজার সদস্য নিয়ে হিটলার রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের যে প্রয়াস করেন সেটিকে আমরা মিউনিক অভ্যুথান নামে জানি। দিনটা ৯ই নভেম্বর, ১৯২৩। আডলফ হিটলারের বয়েস চৌত্রিশ, নাৎসি পার্টির সাড়ে চার। ষোল জন প্রাণ হারালেন (তরুণতম সদস্য ক্লাউস ফন পেপের বয়েস ১৯) ।
হিটলার গ্রেপ্তার। নাৎসি পার্টি নিষিদ্ধ হল চার বছরের জন্য।
প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে আয়রন ক্রস বিভূষিত অস্ট্রিয়ান কর্পোরাল হিটলারের পাঁচ বছরের সাজা হল। নয় মাস হাজত বাসের পরেই সসম্মানে মুক্তি। নাৎসি পার্টির নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলো। হিটলার সেই যে তার হাল ধরলেন পরবর্তী বিশ বছর সেটি ছাড়েন নি।
কারাবাসের সময় হিটলার যে আত্মজীবনী লেখেন তার নাম মাইন কাম্ফ- আইনে আবরেখনুং (আমার সংগ্রাম – একটি হিসেব) । সময় ও সুযোগ পেলে তিনি কি করতে চান তার নিখুঁত নিশানা দিলেন প্রায় ছশো পাতার এই কেতাবে। এটি যদি কেউ সময়মত অধ্যয়ন করতেন, হিটলারের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্বন্ধে কারো সংশয় থাকত না। চেম্বারলেন দালাদিয়ে রুজেভেলটের গোয়েন্দা দফতর সে প্রয়াস করেন নি। জার্মান জানারও প্রয়োজন ছিল না। ১৯৩৩ সাল নাগাদ মাইন কাম্ফের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ ইংরেজিতে পাওয়া যেতো।
ইহুদি বিদ্বেষ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ইউরোপীয় অভ্যাস। বিভিন্ন দেশের সরকারি সমর্থনে ইহুদি নির্যাতন এবং নিধন চলে এসেছে হাজার বছর ধরে। ধিকি ধিকি করে জ্বলতে থাকা তুষের আগুনে হিটলার একটু বাতাস দিলেন। আত্মজীবনীতে তিনি বললেন এক হাজার বছর ধরে এরা ইউরোপে একটি স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে এখানে ওখানে বিচরণ করছে। তাদের নিজস্ব কোন সংস্কৃতি শিল্প সভ্যতা কিছুই নেই। এরা বাস করে সর্বত্র আর ভব্য ইউরোপীয় সভ্যতার শাঁস টুকু শুষে খায়। তাদের নিজের কোন দেশ নেই। মনে প্রাণে ভালো বাসে না বা আপন মনে করে না কোন দেশকে। না ঘর কা না ঘাট কা। এ দেশে তারা উত্তমরূপে জার্মান ভাষা শিখে ‘ জার্মান’ সাজার চেষ্টা চালিয়েছে। শিক্ষা দীক্ষার সুযোগ নিয়েছে পুরো দস্তুর, যদিও তাদের রক্তে বিন্দুমাত্র জার্মান সংস্কৃতি নেই। সেটা তাদের মুখোশ মাত্র। এই যাযাবর জাতির কোন স্থান নেই জার্মানিতে। এক শতাংশ ইহুদি অধিবাসীর কারণে জার্মান জনতা বিপন্ন।
তিনি ইদিশ ভাষাকেও অবশ্য একহাত নিয়েছেন: “এরা জার্মান ভাষাকে দুমড়ে মুচড়ে, বিকৃত করে আপন সুবিধার্থে একটি কথ্য ভাষা চালু করেছে “(আমার সংগ্রাম, জাতি ও জনতা)
জুলাই ও নভেম্বর ১৯৩২ পর পর দু বার নির্বাচন হয়। কোন দল সরকার গঠন করতে পারে না। জানুয়ারি ১৯৩৩ আবার নির্বাচন। কোন দল সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে নি (নাৎসিরা পায় ৩৩% ভোট) । ভোট ক্লান্ত জনগণকে রেহাই দেবার জন্য ছিয়াশি বছরের বৃদ্ধ প্রেসিডেন্ট হিনডেনবুরগ হিটলারকে কোন রকমে একটা জোড়া তালি দিয়ে সরকার গঠনের অনুমতি দিলেন। ক্ষমতা দখল করেই মার্চে আবার নির্বাচন ডাকলেন হিটলার। ক্রুপ থুসেন সহ যাবতীয় শিল্পপতিরা তাদের কোষাগার খুলে দিলেন – প্লেনে চড়ে এই প্রথম কোন রাজনৈতিক নেতা নির্বাচনী প্রচার করলেন। বিপুল অর্থ ব্যয় করেও সংখ্যা গরিষ্ঠ হল না নাৎসি পার্টি -তারা পেলো ৪৩% ভোট। জার্মান জাতীয় দলের সঙ্গে একত্রে হিটলার আবার সরকার গঠন করলেন। দু মাসের মধ্যে পার্লামেন্টের দরোজা বন্ধ হল। সে দরোজা আবার খুলবে দেড় দশক বাদে।
জার্মানির জনসংখ্যা ছ কোটি। ইহুদির সংখ্যা পাঁচ লক্ষ। তারা পুরো জার্মান নাগরিক। জার্মান নোবেল বিজয়ীর এক চতুর্থাংশ ইহুদি। ব্যবসা বাণিজ্যে তাঁরা অত্যন্ত সফল। শিল্প সংস্কৃতিতে দেশের উচ্চাসনের দাবিদার। অনেক সংবাদ পত্রের মালিকানা তাঁদের হাতে। বারনারড ভাইস বার্লিন পুলিশের দ্বিতীয় উচ্চতম অফিসার।
মার্চ মাসে অবাঞ্ছিত রাজনৈতিক মানুষদের বিনা বিচারে আটকে রাখার জন্য প্রথম কনসেনট্রেশান ক্যাম্প দাখাউএর উদ্বোধন (সেখানে হত্যা লীলা শুরু হবে কয়েক বছর বাদে) । মে মাসে হুমবোলড বিশ্ব বিদ্যালয়ের সামনে ইহুদি লেখকদের বই পোড়ানো হল। আইনস্টাইন অবধি বাদ যান নি। সমস্ত সরকারি কাজ থেকে ইহুদি নিষ্কাশন। স্কুলের নতুন সিলেবাসে লেখা হল ইহুদিরা অধম মনুষ্য জাতি। বারনারড ভাইসের গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি হবার আগেই তিনি ইংল্যান্ডে পালালেন।
১৯৩৩ সালে হিটলার ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে জার্মান ও আন্তর্জাতিক ইহুদি সমাজ এক বয়কট শুরু করে। ব্যবসা বাণিজ্যের মোটা ভাগ তাদের হাতে। নবীন নাৎসি রাষ্ট্রের পক্ষে সেটি ছিল শঙ্কাজনক। আপোষ স্বরূপ ১৯৩৩ সালের আগস্ট মাসে জার্মান ইহুদিদের সঙ্গে একটি গোপন বোঝাপড়ায় স্বাক্ষর করলেন হিটলার। এর নাম স্থানান্তর চুক্তি (ট্রান্সফার এগ্রিমেন্ট) । তার উদ্দেশ্য ছিল ইহুদিদের প্যালেস্টাইনে যেতে উৎসাহিত করা। নাৎসি পার্টি ১০ কোটি ডলার অর্থ দিয়ে পাঁচ বছরে ষাট হাজার ইহুদিকে প্যালেস্টাইন পাঠায়। শর্ত ছিল সেই টাকা দিয়ে প্যালেস্টাইন গামী ইহুদিরা জার্মান মাল পত্র কিনবেন। বিতর্কের মুখোমুখি হয়েও বলা যায় আজকের ইজরায়েলের ভিত সেখানেই গাঁথা হল। একদিকে ইহুদিদের ওপর হাটে বাজারে মারধর হচ্ছে আর অন্যদিকে কিছু ধনী ইহুদি নাৎসিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক আলোচনা করছেন। সেটি জার্মান ইহুদি সমাজের মধ্যে গভীর বিবাদের সূচনা করে। এই বিষয়টির চর্চা ইহুদি সমাজে আজো একটি বিতর্কিত বিষয়। ১৯৩৯ সালে যুদ্ধ শুরু হলে স্থানান্তর চুক্তি বাজে কাগজের বাকসোয় নিক্ষিপ্ত হয়।
১৯৩৪ সালে সমস্ত ইহুদি দোকানে হলুদ রঙের ডেভিডের তারা (মাগেন দাভিদ / স্টার অফ ডেভিড) মেরে দেয়া হল। বাসে ট্রেনে আলাদা বসার জায়গা। অনেক শহরের পৌর সভা নির্দেশ দিলেন ইহুদিরা খেলার মাঠ লাইব্রেরি সহ কোন পৌর প্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকার পাবেন না।
অন্যত্র?
আমেরিকার দক্ষিণ অঞ্চলে সাদা কালোর মাঝে আইন করে যে দেয়াল গড়া হয়েছিল সত্তর বছর আগে সেটি রীতিমত পোক্ত। লিঞ্চিং কোন ফৌজদারি অপরাধ নয়। সাদা কালো ছেলে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার মানা বিবাহ দূর অস্ত। এই সেই দেশ যার সংবিধান শুরু হয়েছে এক অমর উক্তি দিয়ে – ঈশ্বর সকল মানুষকে সমান ভাবে তৈরি করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণ বৈষম্যের জনক উনবিংশ শতাব্দীতে অক্সফোর্ড ফেরতা সিসিল রোডস তিনি যে বিধানটি দিয়ে গিয়েছিলেন ১৯৪৮ সালে আফ্রিকানার প্রভাবিত জাতীয় দল সেটাকে আইনি রূপ দেয় মাত্র। ইংরেজ শাসিত ভারতে, আফ্রিকায় মানুষের অধিকার নিত্য পদদলিত হচ্ছে। ফরাসি আধিপত্যে আফ্রিকায় কালো মানুষ নির্যাতিত। স্পেনে ফ্রাংকো, পর্তুগালে সালাজার, ইতালিতে মুসোলিনি চরম দক্ষিণ পন্থী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইতালি দখল করেছে আবিসিনিয়া। জাপান দখল করেছে মাঞ্চুরিয়া। নাঞ্জিঙ্গে পাঁচ লক্ষ মানুষের নিধন, যাকে ইতিহাস আজ রেপ অফ নানকিং নামে অভিহিত করে। লিগ অফ নেশনস তার প্রতিবাদ করলে জাপান সেই সভা পরিত্যাগ করে। ইউক্রেনের স্বাধীনতা সংগ্রাম দমিয়ে রাখার প্রয়াসে সোভিয়েত ইউনিয়ন যে দুর্ভিক্ষের আয়োজন করেছিল তাতে অন্তত পাঁচ লক্ষ মানুষ মারা যান (হলদমোর নামে কুখ্যাত)। মানুষের প্রতি মানুষের অত্যাচারের তালিকা অতি দীর্ঘ।
হিটলারের মাইন কামফ প্রকাশের দু বছর আগে হেনরি ফোরডের তীব্র ইহুদি বিদ্বেষী রচনাবলী ‘আন্তর্জাতিক ইহুদি ‘ প্রকাশিত হয়। তাতে ফোরড বলেন, ‘ ইহুদিরা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে, বাস করে নানা দেশে কিন্তু মেশে না কারো সঙ্গে। তারা লোভী, প্রতারক আবার তাদের হাতেই অর্থ ব্যবস্থা, ব্যাঙ্কিং ‘। সেটি পড়ে হিটলার মুগ্ধ হন। বইটির স্থান হয় তাঁর বিছানার পাশের টেবিলে। নাৎসিরা হেনরি ফোরডকে দেয় রাষ্ট্রীয় সম্মান জার্মান ঈগল, যা কোন অ-জার্মানকে কখনো দেওয়া হয় নি।
জার্মানিতে ইহুদিদের ওপরে কোথায় কি অন্যায় হচ্ছে তা নিয়ে সভ্য ইউরোপ ও আমেরিকার সামগ্রিক বিবেক আর বিচলিত হয় নি।
১৯৩৫ সালে নুরেমবেরগের জাতি আইন পাশ হল। প্রত্যেক জার্মানকে প্রমাণ করতে হবে তার শিরায় কতটা ইহুদি রক্ত মিশে আছে। প্রপিতামহী অবধি ইহুদি রক্ত থাকলে ক্ষতি নেই, পিতামহী ইহুদি হলেই বিপদ। জার্মান নাগরিকত্ব বাতিল। সৈন্য বাহিনীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ (পয়লা বিশ্ব যুদ্ধে কাইজারের নামে ১২০০০ ইহুদি প্রাণ দিয়েছিলেন) ।
১৯৩৬ সালে বার্লিন অলিম্পিক। ইতিহাসের প্রথম এক লাখি স্টেডিয়াম। সেটি এখনো দাঁড়িয়ে – ২০০৬ সালের ফুটবল বিশ্ব কাপের ফাইনাল খেলা হয়। মশাল বয়ে গ্রিস থেকে অলিম্পিকের আগুন আনার যে প্রথা নাৎসিরা চালু করলেন সেটি আজো কায়েম আছে। পথে ঘাটে ইহুদি নিগ্রহ হঠাৎ কমে গেলো, কিন্তু তা শুধু বার্লিনে। সমাগত প্রেস, প্রতিযোগীরা লক্ষ্য করেন নি ইহুদিদের দোকানে হলুদ তারা ঝোলানো, বাসে ট্রেনে তাঁদের আসন আলাদা? আমেরিকার দক্ষিণ থেকে আগত প্রবাদ প্রতিম আমেরিকান অ্যাথলিট জেসি ওয়েন্স হয়তো এই বৈষম্য দেখে অবাক হন নি। একশ মিটার, দুশ মিটার দৌড়ে, লঙ জাম্পে এবং ৪X১০০ মিটার রিলে রেসে জিতে চারটে স্বর্ণ পদক পান। অলিম্পিকের ইতিহাসে তখন অবধি অনন্য। হ্যারজগেনআউরাখ নামক একটি ছোট গ্রামের এক জুতো নির্মাতা তাঁর তৈরি জুতো নিজের হাতে পরান ওয়েন্সকে। খেলোয়াড়দের স্পন্সর করার এই পুরোধার নাম আডলফ দাসলার – আডলফের ডাক নাম আদি আর দাসলার পদবির দাস মিলিয়ে জুতো কোম্পানির নাম হল আদিদাস।
অনেকে হয়ত মনে রাখেন না ৪ x ১০০ মিটার রিলেতে (তাঁর চতুর্থ মেডেল) জেসি ওয়েন্সের দৌড়ুনোর কথা ছিল না। নির্ধারিত অ্যাথলিট ছিলেন ড্রেপার, উইকফ, গ্লিকমান এবং ষ্টোলার। শেষের দু জন ইহুদি। নাৎসি পার্টির নির্দেশে আমেরিকান অলিম্পিক শেফ দ্য মিশন ইহুদি অ্যাথলিটদের বাদ দিয়ে ওয়েন্স এবং আরেক আফ্রিকান আমেরিকান রালফ মেটকাফকে সেই রিলে রেসে অন্তর্ভুক্ত করেন। ওয়েন্স শেষ মুহূর্তের এই পরিবর্তনে প্রতিবাদ জানান। সেটি বিফল হয়। এই বিজয়ে ওয়েন্সের কৃতিত্ব খাটো হয় নি। কিন্তু আমেরিকান তথা বাইরের দুনিয়ার মানুষের মেরুদণ্ডহীনতা প্রমাণিত হয়।
অলিম্পিকের ইতিহাসে অনন্য ঘটনা - অ্যাথলেটিকসে চারটি স্বর্ণ পদক জিতে দেশে ফিরলে জেসি ওয়েন্স প্রেসিডেন্ট রুজেভেলটের হোয়াইট হাউস থেকে কোন আমন্ত্রণ পান নি। নিউ ইয়র্কের ওয়ালডরফ অ্যাস্টোরিয়া হোটেলে তাঁর সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে ওয়েন্সকে হোটেলের পেছনের মালবাহী লিফটে আসতে হয়, সদর দরোজা দিয়ে নয়।
বার্লিন অলিম্পিকের মার্চ পাসটে ফ্রান্স সহ বহু দেশ নাৎসি স্যালুট দেয় হিটলারকে। ইংল্যান্ড বনাম জার্মানি ফুটবল ম্যাচে ইংরেজ খেলোয়াড়রা জার্মান জাতীয় সঙ্গীতের সময় হিটলার স্যালুট দিয়েছেন।
১৯৩৮ সালে ইহুদি ডাক্তারদের নির্দেশ দেয়া হল তাঁরা কোন আর্য জার্মানের চিকিৎসা করতে পারবেন না। উকিলরাও নিতে পারবেন না কোন আর্য জার্মানের কেস। ইহুদিদের স্কুল, কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। ১৯৩৮ সালে নভেম্বরের ৯ তারিখের রাতটি ক্রিস্টাল নাখট (ভাঙ্গা কাঁচের রাত) নামে স্মরণীয় হয়ে আছে। চারশ সিনাগগ পোড়ানো হলো। নুরেমবেরগে এক সময় যে ব্যাংকে কিছুদিন কাজ করেছি তার পেছনেই ছিল সে অঞ্চলের বৃহত্তম সিনাগগ -সেটি এখন কার পার্ক। ইহুদিদের বাধ্য করা হয় সেই ধংসস্তূপ হাতে করে পরিষ্কার করতে এবং জার্মান ইহুদিদের ওপর এক বিলিয়ন মার্ক জরিমানা ধার্য করা হল সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করার অপরাধে।
এক নতুন আইনের বলে নবজাত শিশুদের নামাঙ্কন নির্দেশিত হল- মেয়ে হলে নাম রাখতে হবে সারা ছেলে হলে ইজরায়েল (এই আইনটির অন্যতম প্রণেতা হান্স গ্লোবকে, যিনি যুদ্ধের পরে কনরাড আদেনআউয়ারের মুখ্য সচিব হন)।
প্যালেস্টাইন নয়, যাবতীয় সম্পত্তি বাড়ি দোকান ঘটি বাটি ফেলে রেখে যারা পারলেন সেই সব ইহুদি গেলেন আমেরিকা, ব্রিটেন। অন্তত দু লক্ষ। শিয়রে কাল সংক্রান্তি জেনেও অনেকে রয়ে গেলেন। রোটশিল্ডের মা যান নি। তিনি গ্যাস চেম্বারে পরমগতি প্রাপ্ত হন।
অল কোয়ায়েট অন দি ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট (পশ্চিম রণাঙ্গন নিশ্চুপ) লেখার জন্য নাৎসিদের দ্বারা নিন্দিত এরিখ মারিয়া রেমারক জার্মানি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। দেশের কথা ভেবে মন কেমন করে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কেন, আমি কি ইহুদি নাকি? জার্মানিকে তারাই বেশি ভালবাসে। “
জার্মানিতে সম্পত্তি অথবা বিদেশে বন্ধু আত্মীয় পরিজন যাদের ছিল না, তাদের যাত্রা শুরু হল কনসেনট্রেশান ক্যাম্পের দিকে। গ্যাস চুল্লী জ্বলে উঠল লেলিহান। বিশে জানুয়ারি ১৯৪২ বার্লিনের ভানজে কনফারেন্সে তৃতীয় রাইখের বিশিষ্ট মানুষেরা ইহুদি সমস্যার শেষ সমাধান (এন্ড লোয়েসুং) নির্দিষ্ট করলেন - সামগ্রিক নিধন।
জার্মান অধিকৃত ইউরোপে তখন এক কোটি ইহুদির বাস।
বাকিটা ইতিহাস।
তবু বিহঙ্গ বন্ধ করে নি পাখা! ইহুদি সে দুর্দিনেও ভোলেনি স্বভাবসিদ্ধ রঙ্গ ব্যঙ্গ। তাতে নেই ঈশ্বরের প্রতি কোন অভিযোগ।
আছে অদৃষ্টের প্রতি পরিহাস।

Amit | 103.6.***.*** | ০২ অক্টোবর ২০২১ ১১:০৮498976
jsl | 2405:201:8005:9947:2519:e7cc:7e9f:***:*** | ০২ অক্টোবর ২০২১ ১৯:৩৪498982
শঙ্খ | 2402:3a80:a6f:4635:af66:b049:1923:***:*** | ০২ অক্টোবর ২০২১ ২০:১০498985
Amit | 203.***.*** | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ০৩:০১498994
Tim | 2603:6010:a920:3c00:20fb:6797:a569:***:*** | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ০৮:০৭498996
সুকি | 49.207.***.*** | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ০৮:০৯498997
aranya | 2601:84:4600:5410:7da9:c5ae:8f5:***:*** | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ০৮:১৪498998
aranya | 2601:84:4600:5410:7da9:c5ae:8f5:***:*** | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ০৮:১৪498999
:|: | 174.255.***.*** | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ১০:৫৮499004
হীরেন সিংহরায় | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৩৮499011জারমানী এসেছি নিজের কাজে। শনিবারের জার্মান কাগজে (২.১০) এটা চোখে পড়ল। ১৯৩৬ বার্লিন অলিম্পিকের ৮৫ বছর বাদে বারলিনেরইউনিয়ন বার্লিন বনাম তেল আভিভের মাকাবি ফুটবল দলের খেলা সেই অলিম্পিক স্টেডিয়ামে। ইউনিয়ন বারলিনের এক অংশ হিটলার স্যালুট দিছছে ইজরায়েলী সমর্থকদের
হীরেন সিংহরায় | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ১৬:১১499012
ছবি | 2405:201:8005:9078:cc9d:1886:2845:***:*** | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ১৬:৪৭499013
syandi | 45.25.***.*** | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ১৭:১৪499014
হীরেন সিংহরায় | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৩৭499015
হীরেন সিংহরায় | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ১৮:৪৬499016
হীরেন সিংহরায় | ০৩ অক্টোবর ২০২১ ১৮:৫৩499017
syandi | 45.25.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৩৬499887
b | 14.139.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৫৪499888
আসবে নিশ্চয় | 2405:201:8005:9947:b1a5:5751:8df2:***:*** | ২০ অক্টোবর ২০২১ ১৮:২২499892
হীরেন সিংহরায় | ২১ অক্টোবর ২০২১ ০২:৫০499916