নামাবলী
ক্লাস এইটে আমাদের স্কুলের ইংরেজি পাঠ্যবইতে একটি কবিতা ছিল। শীর্ষক ছিল - আবু বেন আদেম (তাঁর বংশবৃদ্ধি হোক –মে হিজ ট্রাইব ইনক্রিজ)। আবুর স্বপ্নে এক দেবদূত দেখা দিয়েছেন। তাঁর হাতে একটি সোনালি বই। তাতে তিনি লিখছেন ঈশ্বরকে যারা ভালবাসে তাদের নাম। আবু জানতে চাইলেন সেখানে তাঁর নাম আছে কিনা। দেবদূত দেখে শুনে বললেন নেই। আবু বললেন তাহলে লিখুন আমি সকল মানুষকে ভালবাসি। পরের দিন স্বপ্নে আবার দেখা দিলেন দেবদূত। তাঁর তালিকায় আবু বেন আদেমের নাম সবার ওপরে।
এ কবিতা পাঠের সময় জানতাম না বেন আদেম কথাটার অর্থ কি। এটি কি একটি পদবী যেমন আমাদের দত্ত মুখুজ্জে বোস?
জানতে অনেক দিন লাগলো।
পৃথিবীর ইতিহাসে নামের সঙ্গে পদবী লেখার প্রথা খুব বেশিদিনের নয়। আমাদের সবার আপাত পরিচিতি একটা নাম দিয়ে। পরে তার সঙ্গে কোন গ্রাম গঞ্জ বা পেশার নাম জুড়ে দেয়া হল: প্রভু যিশুর নামের সঙ্গে যেমন নাজারেথ। তাঁর আর কোন পদবী বাইবেলে নির্দেশিত নেই। হিব্রু বাইবেলের আমল থেকে ইহুদিদের ছিল একটিই নাম। আরন (পর্বত), সারা (রাজকন্যা), আব্রাহাম (বহু সন্তানের জনক)। অনেক পরে শুরু হল পিতৃ পরিচয় দিয়ে নাম রাখা, কিন্তু বংশানুক্রমিক নয়। আমাদের কবিতার আবুর বাবার নাম আদেম অর্থাৎ আবু আদেমের ছেলে। আবুর ছেলে দাভিদের নাম হবে দাভিদ বেন আবু! ঠিক আজকের আইসল্যান্ডের ধারায়। যেমন মাগনুস সিগুরডসনের ছেলে য়োহানের পুরো নাম হবে য়োহান মাগনুসন। তার ছেলে হারালডের নাম হবে হারালড য়োহানসন মেয়ে আনিকার নাম আনিকা য়োহানসদত্তির (দুহিতা!)। প্রত্যেক পুরুষে পদবী বদলে যাবে। রেইকইয়াভিকের টেলিফোন ডিরেক্টরিতে পদবী দিয়ে চেনা লোককে খুঁজতে যাওয়া সম্পূর্ণ বাতুলতা। খুঁজুন তাঁর পয়লা নাম দিয়ে।
ইউরোপের হাজার বছরের ইহুদি ইতিহাসে সেটাই ছিল প্রথা। মোশের ছেলে আব্রাহাম বেন মোশে। তাঁর ছেলে ইতজাক (আইসাক) বেন আব্রাহাম। স্পেনে যারা গিয়েছিলেন, সেই সেফারদিম ইহুদিরা ইসলামিক কায়দায় বেন কে বিন করে নিলেন। হিব্রু বেন আরবিতে বিন। যেমন আজকের মুহাম্মদ বিন সলমান (সৌদি আরবের এম বি এস)। মাতৃতান্ত্রিক নামেরও প্রচলন ছিল (ইহুদিত্ব নির্ধারিত হয় মাকে দিয়ে)- সরোর পুত্র সরোকিন। গোলমাল বাধল প্রথমে জারমানিক ইউরোপে। সেখানে নাগরিকদের নাম হয় তার কাজ দিয়ে। যেমন যে মিল বা কল চালায় সে হল ম্যুলার (মিলার)। যে হাতুড়ি পেটায় সে হল শ্মিড (ইংরেজিতে স্মিথ)। অথবা গ্রামের বা শহরের নাম দিয়ে যেমন হানাউ থেকে হানাউয়ার।
১৭৮৭ সালে অস্ট্রো হাঙ্গেরিয়ান হাবসবুরগ সম্রাট বললেন তোমাদের নাম দেখে বংশধারা বোঝবার কোন উপায় নেই। পুরুষে পুরুষে পদবী বদলে যায়। কে যে কার নাতি জানা যায় না। তোমাদের টিকিটি ধরতে পারছি না। ঠিক মতো কর দিচ্ছ কি না তাও বোঝার উপায় নেই। আমার রাজত্বে আর সবার মতো তোমাদের একটা স্থায়ী পদবী নিতে হবে। সেটা আমাদের কেতাবে লেখা থাকবে। পালাবার পথ নাই।
এর তুল্য একটা জিনিস আমাদের দেশেও চালু ছিল মুঘল আমলে। এই যেমন সরকার তালুকদার মজুমদার ইত্যাদি। যাদের আমরা বলি খেতাবি নাম। কথাটা এসেছে আরবি শব্দ কিতাব বা বই থেকে। এ নাম গুলি সরকারের কেতাবে লেখা থাকতো। তার থেকে খেতাব।
দিন তারিখ অবধি নির্ধারিত হয়ে গেল।
সরকারী আমলা সব দেশে সমান। তা সে মালদা হোক আর মারবুরগ হোক। নামকরণের এই মৌকা পেয়ে তাদের নতুন উপায়ের পথ খুলে গেলো। কিন্তু বুদ্ধিটা খুললে তো? চাকরিতে দাখিলা করার সময় আমলাদের কল্পনা শক্তির পরিমাণ জানতে চাওয়া হয় না।
ধরুন এক প্রৌঢ় ইহুদি এলেন যার পিতৃ দত্ত নাম নাথান বেন দাভিদ । সরকারি দফতরে এসে কাঁচুমাচু মুখে আমলাকে বললেন " সার, আমারে একটা পদবী দ্যান। আমার তো পদবী নাই"।
এই সক্কাল বেলা হাজারটা কাজ পড়ে আছে, যার কোনোটাই করবার তাঁর বিন্দুমাত্র বাসনা নেই। এমন সময় এই দাড়িওলা জোব্বা ধারি ব্যাটাছেলে বলে তাকে একটা নাম দিতে হবে। কি আপদ। আমলা জানলার বাইরে তাকিয়ে দেখলেন গাছে নতুন পাতা এসেছে। পাতা মানে ব্লাট। "ঠিক আছে লিখে দিচ্ছি আপনার পদবী হলো ব্লাট। কাল এসে একতলার দু নম্বর ঘরে সরকারী ফি দিয়ে প্রমাণ পত্রটি নিয়ে যাবেন "। আজ আমেরিকায় ডজন ডজন মানুষ পাবেন যাদের পদবী ব্লাট, গ্রুন ব্লাট (সবুজ পাতা), রোট ব্লাট (লাল পাতা)। বললে পেত্যয় হবে না, বহু ইহুদি পদবী এইভাবে সম্পূর্ণ খাম খেয়ালে বা বেখেয়ালে তৈরি হয়েছে। প্রাপকরা সারা জীবন এবং বংশে বংশে সেই বংশ দণ্ডটি বহন করে চলেছেন। ইহুদি নাম চেনার (বিশেষ করে জার্মান / অস্ট্রিয়ান / অস্ট্রো হাঙ্গেরিয়ান) একটা সহজ নিয়ম আছে। নামের যদি জার্মান ভাষায় কোনো মানে হয়, তার ধারণকারী ইহুদি! উদাহরণ অজস্র : আইনস্টাইন (একটি পাথর), ফাইনগোল্ড (খাঁটি সোনা), ব্লুমেনথাল (ফুলের উপত্যকা), গোল্ডবেরগ (সোনার পাহাড়), গোল্ডম্যান (সোনার মানুষ), গ্রুনবেরগ (সবুজ পাহাড়), আবেনড (সন্ধ্যা), আপেলবাউম (আপেলের গাছ), ব্লুমবেরগ (ফুলের পাহাড়), এলেনবোগেন (কনুই), রুবিন (পান্না)। তালিকা অন্তহীন। ব্যতিক্রম আছে, যেমন, রোজেনজোয়াইগ (গোলাপের ডাল)। তবে সেটা খুব কম। বিখ্যাত লেখক ষ্টেফান জোয়াইগ অবশ্য অস্ট্রিয়ান ইহুদি।
আমলাদের উদ্ভাবনী শক্তি সীমিত কিন্তু অর্থের দাবী বা বাড়তি আয়ের বাসনা বল্গাহীন। গরিব ইহুদি আবদার করছে তার নাম চাই। জলপানির জন্য সরকারি আমলার যে একটা পাওনা আছে সেটা তার বিবেচনায় নেই। ঘুষের কথা হচ্ছে না। এটা তাঁদের পাওনা! সম্রাট কাজের বহর বাড়িয়ে দিয়েছেন। চাকরিতে যোগ দেবার সময় এ কাজটার কথা তো জানানো হয় নি। ওভার টাইম পাওয়ার আশা নেই। এদিকে সম্রাটের আদেশ - নাম দিতে হবে। যথার্থ পারিতোষিক না পেলে তাঁরা অতি বিশ্রী কদাকার নাম দিয়ে দিতেন। কয়েকটা উদাহরণ – গাইয়ার (শকুন ), ক্লাইনমান (বেঁটে লোক), এসেলকফ (গাধার মাথা)।
স্বামী বাড়ি ফিরতে বউ জিগ্যেস করলে তাহলে আজ থেকে আমরা কি হলাম। গাধার মাথা শুনে বউ কান্না জুড়ে দিলো। স্বামী বললে ঘুষের টাকা দিতে পারিনি তাই এই বেইজ্জতি করল। আর কিছুর মাথা যে লিখে দেয় নি তাতেই খুশি থাকো বউ।
অর্থবান ইহুদি অবশ্য নানা রকমের নাম পেয়েছেন। যেমন, মেনডেলসন (হিব্রু নাম মেনাখেম, তা থেকে মেনডেল, তাঁর ছেলে)। ইহুদিদের আদি পুরোহিত কোহেন (পুরুত সম্প্রদায়ের নাম কোহানিম)। ইহুদি পুরুত কুলের যে পরিচয় বাইবেলে ছিল সেই নাম গুলি পদবীতে পরিবর্তিত হল। সবচেয়ে চেনা নাম কোহেন যেটি কান, কোন বা কুন বানানেও দেখা যায়। রাশিয়ান ভাষায় হ বা এইচ নেই বলে সেখানে কোহেন হলেন কাগান বা কাগেন (লুফতহানসা বিমানের রাশিয়ান নাম লুফতগানসা!)। পোল্যান্ডে তার রূপ একটু আলাদা। কাপলান। সেটাও এক ধরনের পুরোহিতের নাম, যেমন ইংরেজিতে চ্যাপলেন। আজকের ইজরায়েলে সবচেয়ে প্রচলিত নাম কোহেন। কিছু কড়াকড়ি তাদের মেনে চলতে হয়। নিকট আত্মীয়ের শবযাত্রা ছাড়া কোহেনদের সমাধিক্ষেত্রে যাওয়া এবং বিবাহ বিচ্ছিন্না কোন মহিলার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া তাদের মানা।
বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ইহুদি সহকর্মী পেয়েছি। নয়ের দশকে সিটি ব্যাঙ্ক নিউ ইয়র্কে কর্পোরেট ব্যাঙ্কের প্রধান জার্মান গুন্থার গ্রাইনারের ওপরওলা ছিলেন ইহুদি ল্যারি ক্লাইন। এটি প্রচুর কৌতুকের উদ্রেক করে! কি দিন যে এসেছে - জার্মানদের ওপর ইহুদি ছড়ি ঘোরাচ্ছে! আমার দফতরে পোলিশ সুইডিশ হাঙ্গেরিয়ান ইত্যাদি দেশের একাধিক ইহুদি কাজ করেছে। পুরুত গুষ্টির মাত্র একজনকে পাই - ইউরোপীয় ঋণ বেচার কাজ এক সময়ে যাকে দিয়েছিলাম তার নাম জোশুয়া (জশ) কোহেন। খাঁটি পুরুত বলে তাকে খেপিয়েছি, শনিবারে মোবাইলে ফোন করব বলে ভয় দেখিয়েছি! জশ নিতান্ত বিনীত ভাবে আমাকে বলেছিল সে রিফরম জুডাইজমে বিশ্বাসী (১৯ শতকে জার্মানিতে আব্রাহাম গাইগার ইহুদি ধর্মকে এক সংস্কারি রূপ দেন)। শনিবারে গাড়ি চালায়। আমার ফোন ধরতে তার কোন অসুবিধে হবে না! জশের বউ মেলিসা কুয়ালালামপুরের এক ইউরেশিয়ান পরিবারের মেয়ে - সে ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করে।
আর এক পূজারি গোষ্ঠীর নাম আপনাদের সকলের চেনা। নুরেমবেরগ শহরের চল্লিশ কিলো মিটার উত্তরে পাবেন বুটেনহাইম। দেড়শ বছর আগে সেখান থেকে এক দরিদ্র ইহুদি পরিবারের পিতৃহীন সন্তান ধার দেনা করে এলেন আমেরিকায়। ক্যালিফোর্নিয়ায় তখন স্বর্ণ সন্ধানীদের ভিড় (গোল্ড রাশ)। তিনি সোনা খুঁজলেন না। যারা সোনা খোঁজেন তাঁদের জন্যে যে পেনটুলুন বানালেন সেটিকে আমরা সবাই লেভি জিনস বলে চিনি এবং সগর্বে পরিধান করি! আমেরিকান জিহ্বায় সেটি হয়েছে লিভাই! বুটেনহাইমে লেভি মিউজিয়াম আছে। লেভির অপভ্রংশ লেভিন, লেভিট, লেভ।
প্রসঙ্গত ব্যাভেরিয়া থেকে এসে যেসব ইহুদি পরিবার অর্থ জগতে বিশাল খ্যাতি অর্জন করেছেন তাঁরা কেউ পদবী পরিবর্তন করেন নি। এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মারকুস গোল্ডম্যান (ট্রাপস্টাড, ব্যাভেরিয়া) এবং সামুয়েল সাখস। মেয়ে লুইসার সঙ্গে সামুয়েল সাখসের বিয়ে দিয়ে মারকুস আপন প্রতিষ্ঠানের নাম দিলেন গোল্ডম্যান সাখস! আরেক স্মরণীয় নাম রিমপার শহরের হেনরি লেমান (লেমান ব্রাদারস)।
ফরাসি বিপ্লবের পরে দেশটি সম্পূর্ণ ভাবে ধর্ম নিরপেক্ষ ঘোষিত হল। ইউরোপের ইতিহাসে প্রথম। নাপোলেওঁ ইহুদিদের ধর্মাচরণের সমস্ত বাধা বন্ধন দূর করলেন। ইতিমধ্যে নাপলেওঁ অস্ট্রিয়ান সম্রাটের নাম সংস্কার পর্ব লক্ষ করছিলেন। ১৮০৪ সালে তিনিও একই রকম আদেশ দিলেন। তিনি বললেন ধম্ম কম্ম করো যেমন খুশি। কিন্তু একটা সঠিক নাম নিয়ে করো! ইহুদিদের বংশানুক্রমিক পদবী নিতে হবে। বেশীর ভাগ ফরাসি ইহুদি সেকালে আলসেস প্রদেশে থাকতেন। সেটা জার্মানির লাগোয়া। ফলে সেখানে জার্মান কায়দায় নামকরন শুরু হল। তাদের মধ্যে বোধহয় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম ড্রাইফুস (তিন পা) এঁর গল্পে আসা যাবে যথা সময়ে।
পরবর্তী কালে, বিশেষ করে ইংল্যান্ড বা আমেরিকায় পৌঁছে সেই সব নামের কিছু সংশোধন করেন ইহুদিরা। যেমন ধরুন আমেরিকান ফেডারেল রিজারভের এককালীন কর্তা অ্যালান গ্রিনস্পান: বাবা রোমানিয়ান মা হাঙ্গেরিয়ান ইহুদি। জার্মান গ্রুন বা সবুজকে গ্রিন লিখেছেন। তবে আমেরিকায় আশকেনাজি ইহুদিদের নাম বদলাতে দেখা যায় না তেমন। তাই ব্লুমবেরগ, ফাইনসটাইন ব্লুমেনথালের ছড়াছড়ি।
চিত্র ও সঙ্গীত জগতে পদবী বদলানোর তালিকা বিশাল। ইসুর দানিয়েলোভিচ, ডানিয়েল কামিন্সকি, রবার্ট জিমারমান ও বারনারড শোয়ারতস কে আমরা চিনি যথাক্রমে কার্ক ডগলাস, ড্যানি কে, বব ডাইলান এবং টোনি কারটিস নামে!
ইংল্যান্ডে অনেক মানুষ পুরানো নাম সম্পূর্ণ বর্জন করে স্মিথ বা ব্যারেট হয়ে সুখ ও সম্মান উপভোগ করেন। গোলডারস গ্রিনে আমাদের ইহুদি ডাক্তারের নাম ছিল মাইকেল হ্যারিস। তাঁরা নিজেদের পুরো ইংরেজ মনে করতে ভালবাসেন।
এক জার্মান ইহুদি তার লন্ডনের বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলো "ভালো আছো?"
দীর্ঘশ্বাস ফেলে লন্ডনবাসী ইহুদি বললেন "স্বাধীনতা দিয়ে ভারতবর্ষকে হারানোর পরে কোন ইংরেজ কি ভালো থাকতে পারে?"
আমার ফ্রাঙ্কফুর্টের বাড়িওয়ালা ছিলেন ইহুদি। নাথান। নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা। মাঝে সাঝে সম্পত্তি তদারক করতে আসতেন। এলে দেখা হতো। আমাদের কুশল সংবাদ নিতেন। কিছু গল্পগাছা হতো, ইংরেজিতে। পৃথিবীর সম্পূর্ণ নিরর্থক ব্যাপার গুলো জানবার যে দুর্নিবার বাসনা আমার মধ্যে সতত প্রকট সেটা তিনি লক্ষ করতেন। ওঁর কাছেই আমার ইহুদি নামের অনেক ইতিহাস শোনা।
একদিন উনি একটি নতুন নামাবলি ছাড়লেন: 'রোটশিল্ড', নামটা কিন্তু কোনো সরকারী আমলার দেওয়া নয়। এটি দিয়েছেন পুরানো ফ্রাঙ্কফুর্টের কিছু অর্বাচীন ডাক হরকরা। মাইয়ার আমশেল পরিবার থাকতেন ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের (তাদের নামে রাস্তা আছে) ইহুদি পাড়ায়, প্রাচীন ক্যাথিড্রালটির গায়েই। বাড়ির সামনের গেটে ছিল লাল রঙের একটি বোর্ড, জার্মানে রোট শিল্ড। তাতে গৃহকর্তার ইহুদি নাম লেখা- মাইয়ার আমশেল। সেকালে ফ্রাঙ্কফুর্টের রাস্তায় কর্পোরেশনের বিজলি বাতি ছিল না। অন্ধকারে পথচারীদের পদস্খলন প্রতিরোধের বাসনায় সম্পন্ন গৃহস্থরা আপন খরচায় লন্ঠন জ্বালাতেন দরজায়। মাইয়ার আমশেলের দুয়োরে তেমনি একটি বাতি জ্বলত ওই লাল রঙের বোর্ডের পাশে।
বাড়ির নম্বর তখনও হয় নি। একদা আমাদের গ্রামের চিঠিতে ঠিকানা লেখা হত - বাবু ভবতোষ মণ্ডল, তেঁতুল গাছের উলটো দিকে, গ্রাম পদুমা, থানা দুবরাজপুর! তেমনি ফ্রাঙ্কফুর্টের ডাক হরকরা সেই ধনী গৃহের হদিশ দিতে গেলে বলতো, - "ওই যে বাড়িটা, লাল রঙের বোর্ডওলা (ৎসুম রোটেনশিল্ড)”। তাই থেকে এদের পদবী হয়ে গেলো (একটু কেটে ছেঁটে) রোটশিল্ড। অ্যাংলো স্যাক্সন গোষ্ঠী তাকে রথসচাইল্ড বানিয়েছে। গপ্পো শেষে নাথান আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বললেন আপনি তো খুব ট্রিভিয়া ভালোবাসেন, এবার এটাও আপনার স্টকে জুড়ে দিন। তবে ভাববেন না গুল দিচ্ছি। মিলিয়ে নেবেন। আর এই নামের জন্যে মজার ঘটনাও ঘটে!
একদিন ব্যারন রোটশিল্ড অফিসে বসে কাজ করছেন অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে। দরজায় কেউ একজন এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর দিকে না তাকিয়েই ব্যারন বললেন ‘একটা চেয়ার টেনে বসুন‘। তিনি বসলেন। রোটশিল্ড কাগজ থেকে কিছুতেই মাথা তুলছেন না। অভ্যাগত নিজেকে অপমানিত বোধ করে একটু গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন,
“আমি ব্যারন হারতসবেরগ- গোল্ডবেরগ”
রোটশিল্ড মাথা না তুলেই বললেন “তাহলে দুটো চেয়ার নিয়ে বসুন”।
ইজরায়েলের নামাবলি অন্য রকম। সিলবারস্টাইন, ব্লুমবেরগ বা ফাইনস্টাইন জার্মান শব্দ – সে গুলি বর্জিত হবার কারণ সহজেই অনুমেয় (১৯৫৮ সাল অবদি ইজরায়েলিদের জার্মানি যাওয়া বারন ছিল)। এই সঙ্গে বাতিল হয়েছে অজস্র পোলিশ লিথুয়ানিয়ান বা যে কোনো ইউরোপীয় পদবী যা ইহুদিদের ইতিহাস বহন করেছে। ইজরায়েলের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডাভিড গ্রুন, জন্ম পোল্যান্ডের প্লনসকে। সেটি বদলে লিখলেন ডেভিড বেন গুরিওন (যার নামে তেল আভিভ বিমান বন্দর)। ইউক্রেনের গোলডা মাইয়ারসন হলেন গোলডা মেইর। পোলিশ বংশোদ্ভূত বিনইয়ামিন মিলাইকওস্কি হলেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, পোল্যান্ডের সিমন পেরেস্কি হলেন শিমন পেরেশ। হাজার বছরের মাতৃভাষা ইদিশ যা ইউরোপের ইহুদি জন সাধারণকে একটি সূত্রে বেঁধে রেখেছিল সেটি ইজরায়েলে প্রায় শোনা যায় না। যদিও একবার তেল আভিভের সমুদ্র তটে একজন ইদিশ ভাষী বয়স্ক মানুষের দেখা পেয়েছি। সামাজিক বাক্যালাপ চালানো গেছে।
ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী, পরে রাষ্ট্রপতি, শিমন পেরেশ বলেছিলেন ইজরায়েল অতীতকে মনে রাখতে অনিচ্ছুক। আমাদের কল্পনা হোক ভবিষ্যতের।
পিতৃতান্ত্রিক নাম রাখাটা ইউরোপের বহু দেশেই চালু আছে। ভিচ শব্দ যোগ করে কোন এক সময়ের গৃহকর্তার নামের সঙ্গে পদবী বেঁধে দেয়া হয়েছে প্রায় সব স্লাভিক দেশে। সুইডেন নরওয়ে ডেনমার্কেও পিতৃতান্ত্রিক নাম রাখা হয় তবে সেটা ওই একবার। আমুনডসেনের ছেলের পদবীও আমুনডসেন। সেটা বদলায় না। যেমন সিন্ধিদের মাধভানি নাম এসেছে কোন কালের এক মাধভের নাম থেকে। তবে তফাত এই যে ইউরোপীয় ইহুদিদের পদবী বিভিন্ন দেশের সরকারি আমলা নির্ধারিত করেছেন। অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে জনগন নিজের ইচ্ছায় একটি নাম স্থির করেছেন। তারপরে সেটিকে বহন করেছেন পুরুষানুক্রমে।
এই নামের আমি নামের তুমি দিয়ে কি সকল ইহুদি চেনা যায়?
লেমবেরগ ( আজকের ইউক্রেন ) থেকে কিয়েভের ট্রেন। এক ইহুদি জ্ঞানী আড্ডা জমিয়েছেন। সকলকে বোঝাচ্ছেন নাম দিয়ে আপনারা সব সময় চিনতে পারেন না বটে তবে মনে রাখবেন পৃথিবীর সব গুণী ব্যক্তিই ইহুদি।
এত সহজে মানতে রাজি নন সমবেত জনতা । সেখানে কেরেস্তান ইহুদি দুইই আছে। চারিদিক থেকে প্রশ্নবাণ - নানান নামের ঝড় বয়ে গেল ।
- "আইনস্টাইন"?
- "ইহুদি"
- "স্পিনোজা"?
- "ইহুদি"
- "কলম্বাস"?
- "ধর্মান্তরিত ইহুদি"
পেছনের সিটে বসে এক নিষ্ঠাবতী ক্রিস্টিয়ান মহিলা প্রভুর নাম নিতে নিতে জপের মালা ঘোরাচ্ছিলেন । সারা দুনিয়ার সকল মহান মানুষকে ইহুদি বলে চিহ্নিত করার এই দুর্বার প্রয়াস দেখে আর স্থির থাকতে পারলেন না । উচ্চৈঃস্বরে পরিত্রাতার উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন “প্রভু যিশু”!
তখন উত্তর হল,
- "ইহুদি"!!
Eta best hoche . Vishon interesting. Osadharon.
মুচমুচে স্বাদু লেখা, জমিয়ে দিয়েছেন।
"আর এই সঙ্গে হাজার বছরের মাতৃভাষা ইদিশ যা ইউরোপের ইহুদি জনসাধারণকে একটি সূত্রে বেঁধে রেখেছিল সেটি ইজরায়েলে শোনা যায় না"।
এটা দারুণ। মানে ওরা আমাদের মত ভাষাদিবস পালন করেনা!!
রঞ্জন রায় সমীপেষু অনেক ধন্যবাদ। ইহুদিরা হিব্রু ভাষা নিয়ে ইউরোপ পৌঁছুলো প্রায় দু হাজার বছর আগে। স্থানীয় ভাষা শিখলো কাজ চালানোর জন্যে নিজেদের মধ্যে তৈরী করে নিলো ইদিশ ( আজকের ওয়েম্বলিতে যেমন নিজেদের মধ্যে লোকে গুজরাতি বলে , সাউথহলে গুরমুখী ) । তার প্রয়োজন ফুরুল ১৯৪৮ সালে। ইজরায়েল হিব্রু ভাষার পুনর্জন্ম দিলো। ইদিশ আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হল । অসেমিতিক জার্মান ভাষার সঙ্গদোষে ( কথাটা ইজরায়েলে খুব শুনেছি ). ইজরায়েলের ভাষা দিবস তাই হিব্রু নিয়ে। ব্রুকলিনে সবচেয়ে বেশি ইদিশ শোনা যায়. .
শ্রী রমিত চট্টোপাধ্যায় - অনেক ধন্যবাদ ।আশা করি আপনার আগ্রহ ধরে রাখতে পারব। সবে যাত্রা শুরু হল। ভালো থাকুন
শুধু এইটা না, প্রত্যেকটা পর্ব ই পড়েছি, খুব ই ভাল লাগল।
আচ্ছা লাস্ট রসিকতা টায় আগে মেরি মাতা ছিল না ? আপনি কি বদলে দিলেন, না ভুল পড়লাম ?
আমিও একটু আগে মেরী মাতা পড়েছিলাম। তবে মেরী মাতা তো অবশ্যই ইহুদী। ঃ-)
ঠিক ধরেছেন। কোনো কারণে আমার লেখার ভুল শুধরে শেষ সংস্করণটা পরে ছাপা হয়েছে। প্রভু যিশুই অনুমোদিত প্রকাশন ! আরো দু একটা ছোট পরিবর্তন আছে।
মেরি মাতা অবশ্যই ইহুদি ! তবে মহিলা রোজারির মালা ফিরিয়ে নাম জপ করছিলেন তো , তাই প্রভুর নামটা দেওয়া আমার সমীচীন মনে হল।
খুব ভালো লাগছে এই লেখাগুলো। কী সুন্দর সব নাম! আপেলগাছ, ফুলের উপত্যকা, সবুজ পাহাড়। এমনি একটি নাম নেওয়া গেলে খুব ভালো হতো। আমার সবথেকে পছন্দ হচ্ছে রুবিন।
"এই করিতকর্মা বুদ্ধিমান ছেলেটা অন্যের হাতে গিয়ে না পড়ে" এই ভেবে সাখস এর সঙ্গে নিজের মেয়ের বিয়েই দিয়ে দিলেন ভদ্রলোক! সবদিক রক্ষা হল। ঃ-)
( জাতক পড়ছিলাম, সেখানে প্রায় এইরকম একটা গল্প আছে, চুল্লসেঠঠি র গল্প। )
সবার সম্মতি পেলে শুধু ওই নামের তালিকা দিয়ে একটা পর্ব করা যায় ।কয়েকটা নমুনা - ক্যারতসেনশাইন ( মোমের আলো ), কাউফমান ( ব্যবসায়ী ),বিরন বাউম ( নাসপাতির গাছ ) ব্যারনস্টাইন ( অম্বর পাথর ), ব্লুমেনফেলড ( ফুলের ময়দান ), এরলিখ ( সৎ ) লয়েনথাল( সিংহ উপত্যকা )) ফেলসেনবাউম ( পাথুরে গাছ )!
মেক্সিকো সিটির বর্তমান মেয়র ক্লাউদিয়া শাইনবায়ুম ( চকচকে গাছ মতান্তরে অলিক বৃক্ষ)।
বর্তমান মার্কিন কংগ্রেসে আছেন ব্রায়ান সাতশ ( ঐশ্বর্য ), জ্যাকি রোসেন ( অনেক গোলাপ ), ব্র্যাড শ্নাইডার (দরজি ) এবং আরও অনেকে ।
রোজেনবার্গ কি তাহলে গোলাপের পাহাড়? রোজেনফেল্ড গোলাপের মাঠ? কী ভালো!
সমারফেল্ড কি গ্রীষ্মের মাঠ? অপূর্ব সব পদবী!
Nussbaum, Tannenbaum, Rosenstein, Spielberg এগুলোও আছে। লেখা দুর্দান্ত হচ্ছে।
অনেক ধন্যবাদ সকলকে ! স্পিলবের্গের ( খেলার পাহাড় ) সঙ্গে মার্ক জুকারবের্গ ( চিনির পাহাড় )যোগ করুন !
নুসবায়ুম ( আখরোট গাছ ) টানেনবায়ুম ( ক্রিসমাস ট্রি ), সমারফেল্ড ( গ্রীষ্মের মাঠ ) রোজেনবার্গ ( গোলাপের বা গোলাপি পাহাড় ) -কিছু সরকারি আমলা কাব্য মনস্ক ছিলেন!
একদম খাপে খাপ। চিনির পাহাড় জুকেরবার্গ, এমন এক জিনিস বানালেন সবাই পিঁপড়ে হয়ে পড়ে রইল চিনিতে। ঃ-)
ভীষণ ভালো লাগছে লেখা গুলি।
অপূর্ব অপূর্ব।খুব ভালো লাগছে I আবার পরের লেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম I
দুর্দান্ত সিরিজ হচ্ছে একখানি।
সবার সম্মতি পেলে?
আরে আছে ধরে নিয়ে করুন আলাদা একটি পর্ব।
আর আমিও ক্লাস এইটে ইংরেজি পাঠ্যবইতে (1963) পড়েছি: Abu ben Adem, may his tribe increase!
এই সিরিজটা অ্যাক্কেবারে অন্যরকম। দারুন লাগছে। আমার নিজেরও সেমেটিক রিলিজিওন নিয়ে খুব আগ্রহ, নিউ ইয়র্কে অনেক প্র্যাকটিসিং বা নন প্র্যাকটিসিং ইহুদি কোলিগদের সঙ্গে অনেক আড্ডা মেরেছি। মার্টি রোজেনবার্গ, সে ৮০ এর দিকে ইন্ডিয়া এসে গাঁজা আর সম্বরের প্রেমে পড়ে গেল। এখনো বছরে তার কাছে আম্মা (মার্টির ভারতীয় বন্ধুর মা) আসে, সে এসেই মাংস খাবার জন্যে মার্টিকে তুলোধোনা করে, আর মার্টি তার জন্যে নতুন বাসন কিনতে দৌড়ায়। আরেক ভদ্রলোক ছিলেন এস এন পিতে ইনি ডিবিএ, এক মুখ দাড়ি, সাইডবার্ণ, মাথায় সফেদ স্কাল ক্যাপ। ইনি কোশার খাবারের ফান্ডা বুঝিয়েছিলেন। সেইসব দিনগুলো যেন ফিরে ফিরে মনে পড়ছে।
বাবু ধীরেন সিংহ রায়
এমন নেশা ধরিয়ে দিলেন
মন যে আরও অনেক চায়।
ইহুদি পর্ব শেষের পর ,
আগে থেকেই বলে রাখি
আরও নানান বিষয়ে এমন
লেখা পড়ার আশায় থাকি।
আবার ও মজে গেলাম। " তাহলে দুটো চেয়ার নিয়ে বসুন" –এমন রসিক পরিবেশনার তুলনা হয় না!
কাব্যিক নামকরণে খুব লোভ হচ্ছিল।পরক্ষণেই মোহ ভাঙলো "গাইয়ার", "এসেলকফ" জাতীয় নামকরণ দেখে।
একদম শেষে একেবারে বাজিমাত।
অনবদ্য লেখনী। অসাধারণ রচনা শৈলী। সত্যি ই খুব উপভোগ করলাম। আবার অপেক্ষায় রইলাম।
লেখক হিরেনবাবু খুব ভালো কাজ করেছেন | একটি প্রশ্ন আছে | Israel Shamir , Lenni Brenner , Ariel Toaff এই নামের পদবি গুলির উৎপত্তি একটু দয়া করে বলে দেবেন | অনেক ধন্যবাদ | শুভেচ্ছা রইলো |
শামির আরামাইক শব্দ। অর্থ কাঁটা। মতান্তরে চকমকি পাথর . ব্রেনার শব্দের একাধিক অর্থ হতে পারে - যে ব্রান্ডি বানায় ( ব্রান্ডি শব্দটাই এসেছে জার্মান ব্রান্টওয়াইন বা পোড়ানো ওয়াইন থেকে ), অস্ট্রিয়া / জার্মানির সীমান্তবর্তী ব্রেনার থেকে ( ব্রেনারপাস ) অথবা চোখের জ্যোতি মাপার যন্ত্র। আমি প্রথম অর্থের পক্ষপাতী। ব্রান্ডি বানানো। টোয়াফ ইতালিয়ান ইহুদি পদবি। সেফারদিক। ইতালিয়ান ইহুদিদের নাম অনেকক্ষেত্রে গ্রাম শহর ভিত্তিক হয় যেমন আনকোনা বা পাদুভানো। এখানে জার্মান শব্দ তথ্য কাজে লাগে না। আরিয়েল একান্ত হিব্রু নাম সিংহ পুরুষ তবে জন্মেছেন ইতালিতে। বাবা ছিলেন রোমের রাবি।
আপনি যখন লেনি বেনারের সঙ্গে পরিচিত, পারলে ট্রান্সফার এগ্রিমেন্ট বইটা পড়ুন - এডুইন ব্ল্যাক ( প্যাক্ট বিটুইন থার্ড রাইখ এন্ড প্যালেস্টাইন ).
শেষ লাইনে ভুল বানান লিখেছি! লেনি ব্রেনার হবে। ব্রেনেন একটি জার্মান ক্রিয়াপদ যার অর্থ পোড়ানো। যে পোড়ায় সে হল ব্রেনার! মনে করুন ইজ প্যারিস বার্নিং ছবির শেষ দৃশ্য - জার্মান সেনাপতি খোলটিজ প্যারিসে আগুন লাগাবেন না আর টেবিলে রাখা টেলিফোনে হিটলারের কণ্ঠে বার বার শোনা যায় - ব্রেন্ট পারিস ?
বেশ ভাল লাগলো। আলাপী কায়দাতে আপনার লেখা পাঠককে ধরে রাখবে। অনেক কিছু জানলাম। তবে অস্ট্রো হাংগেরী সাম্রাজ্য ও প্রুশিয়া থেকে এই ইহুদী বদমাইশ গুলো যে বিপুল পরিমাণ পুঁজি পাচার করে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও সম্ভবত আমেরিকার নিয়ে গিয়েছিল আশা করি সে ব্যাপারেও লিখবেন। আপনি অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে বিষয়টি আরো ভাল বোঝেন।
আচ্ছা, আপনার মতে তাহলে ইহুদি মাত্রই বদমাইশ! এত তীব্র ঘৃণার কারণ টা ঠিক কি ? আর তারা নিজেদের কষ্টার্জিত টাকাপয়সা বা উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া ধনসম্পদ লিগ্যাল পদ্ধতিতে অন্য দেশে নিয়ে গেলে সেটিকে পাচার বলা হবে কেন?
প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের অন্যতম কারণ এই পুঁজি পাচার।