এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হেদুয়ার ধারে ( তৃতীয় খন্ড ) - ৩৮

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৭ জুলাই ২০২৫ | ১২৪ বার পঠিত
  • ( ৩৮ )

    অশোক পালের ঘরে খাটটা শেষ পর্যন্ত পেতে দিয়ে গেল দোকানের দুজন লোক এসে। তার ওপর তোশক, চাদর, বালিশ ফেলল পালগিন্নী। বেশ খুশি খুশি লাগছে তাকে। আজ আর মেঝেতে শুতে হবে না।
    একটু পরে বাইরে থেকে আওয়াজ এল, ' এটা অশোক পালের বাড়ি ? '
    পালবাবু বললেন, ' হ দাঁড়ান, যাইত্যাসি ... '
    বাইরে বেরিয়ে দেখলেন একজন রোগা চেহারার বছর পঁয়ত্রিশের শার্ট প্যান্ট পরা লোক দাঁড়িয়ে আছে। সঙ্গে একটা এগারো বারো বছরের ছেলে। দোহারা চেহারা। নিরীহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। দুজনেরই পায়ে ছেঁড়া চটি।
    অশোক পাল বললেন, ' হ বলেন ... কি সমস্যা ... বসেন বসেন ... এহানে বসেন ... '
    দুটো বেতের মোড়া রয়েছে বাইরের একফালি রোয়াকে। ওরা দুজন মোড়া দুটোয় বসল। পালবাবু বসলেন একদিকের হাতল ভাঙা একটা কাঠের পুরনো চেয়ারে। এটা আসলে বাড়িওয়ালার পরিত্যক্ত চেয়ার। এখানে ফেলে রেখেছে।
    আগন্তুক ভদ্রলোক বললেন, ' আমার নাম অধীর নন্দী। নারকেলডাঙা থেকে আসছি। একজন বলল যে আপনি চিকিৎসা করেন ... ঠিকানা খুঁজে খুঁজে এলাম ... '
    --- ' হ বুঝসি। এইডা আপনার ছেলে ? '
    --- ' অর কিসু সমস্যা ? '
    --- হ্যাঁ হ্যাঁ। মৃগী রোগ আছে। দিনে অন্তত একবার পড়ে। খুব সমস্যা। কি করব বুঝতে পারছি না। আপনি যদি কিছু করতে পারেন ... '
    --- ' কতদিন হইসে এ সমস্যা ? '
    --- ' দু বছরের মতো হবে। একজন ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। ওষুধ খেয়েছিল কিছুদিন। কিচ্ছু হয়নি বুঝলেন ... বলল এ দু একদিনের ব্যাপার না। অনেক বছর ওষুধ খেতে হবে ... '
    --- ' হ ভুল কিসু বলে নাই। এ রোগ দু একদিনে সারে না .... '
    --- ' হ্যাঁ তা জানি, কিন্তু মুশ্কিল হচ্ছে ... '
    কথাটা শেষ হবার আগেই পালবাবু বললেন, ' তা তো বটেই... তা তো বটেই, খরচের ব্যাপারটা তো আছেই ... মিথ্যা কথা বইল্যা লাভ নাই। দুশ্চিন্তার ব্যাপার ... '
    --- ' হ্যাঁ ওই আর কি ... কি আর বলব ...'
    অধীর নন্দী বলল।
    --- ' যাক, আমি অবশ্যই চিষ্টা করুম, সেইটা আপনেরে কথা দিতে পারি। চিষ্টায় কোন ত্রুটি হইব না ... '
    --- ' সেটাই যথেষ্ট, সেটাই যথেষ্ট। তাই বা কে বলে। মনে অনেকটা জোর পেলাম ... '
    --- ' না তা না .... আসলে এই রোগের তো কোন চিকিৎসা হয় না। অনেকদিন ধরে ওষুধ খেতে খেতে হয়ত একসময়ে ভাল হইতে পারে। মিথ্যা কথা বইল্যা তো লাভ নাই। যাক, আমি একমাসের ওষুধ দিত্যাসি। একমাস পরে আমারে জানাইবেন .... ঠিক আসে ? '
    অধীরবাবু উজ্জীবিত কন্ঠে বললেন, ' হ্যাঁ ... ঠিক আছে ... ঠিক আছে। কত ... মানে ... বুঝতেই তো পারছেন ... একটা ছোট দোকান চালাই ... '
    --- ' না না .... ওসব ভাববেন না। এখন কুড়ি টাকা দিয়ে যান, একমাস পরে তো আসছেন ... তখন ছেলে কেমন থাকে দেখে ওসব ভাবা যাবে। সেটাও এমন কিছু হবে না ... '
    পালবাবু এবার চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে ছেলেটাকে বললেন, ' খোকা তুমি এই চেয়ারটায় এসে বস ... '
    ছেলেটি চেয়ারে গিয়ে বসল। অশোক পাল তার মাথার ব্রহ্মতালুতে ডানহাত রাখলেন। রেখে দাঁড়িয়ে রইলেন। মিনিট তিনের মধ্যে ছেলেটির চোখ বুজে এল আবেশে। মনে হচ্ছে সে ঘুমের মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছে। ঠিক আট মিনিট পরে পালমশাই ছেলেটার মাথা থেকে হাত সরিয়ে নিলেন। তার হতচকিত বাবাকে বললেন, ' আপনি পাঁচ মিনিট বসেন। ঘুম ভাঙলে নিয়া যায়েন। আমি একটু বাজারে যাব। টাকাটা দেন। এক মাস পরে আসবেন ... '
    --- ' হ্যাঁ ... এই যে ... '
    অধীর নন্দী কুড়ি টাকা পকেট থেকে বার করে পালবাবুর হাতে দিল।
    পালবাবুর কিন্তু এখনই বাজারে যাওয়া হল না।
    বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালেন বেশ সম্ভ্রান্ত চেহারার সাদা পাঞ্জাবী এবং পাজামা পরা এক গৌরবর্ণ প্রৌঢ়। মাথার চুল বেশির ভাগই সাদা। কয়েক সেকেন্ড পালবাবু এবং ঘুমন্ত অধীরপুত্রের দিকে তাকিয়ে থেকে তিনি একটু ইতস্তত করে বললেন, ' আচ্ছা ... এটা কি মিস্টার অশোককৃষ্ণ পালের বাড়ি ? '

    কাবেরীকে নিয়ে তার জানাশোনা এক সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে পৌঁছল গৌতম। কাবেরী অবশ্য উৎসাহে ভরভুর কারণ সে জানে যে তারা একজন উকিলের কাছে যাচ্ছে তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েনের একটা স্থায়ী মীমাংসা করতে। শমিক দিনকে দিন তার মনের মধ্যে আরও চেপে বসছে। গৌতম তার মনোবিদ বন্ধু সন্দীপ চক্রবর্তীকে কাবেরীর ব্যাপারটার মোটামুটি সারাৎসার জানিয়ে রেখেছে। বাকিটা নাড়াচাড়া করা ডাক্তার হিসেবে তার দায়িত্ব।

    সন্দীপের চেম্বার ল্যান্সডাউন রোডে। সেখানে পৌঁছনোর পর বিশেষ অপেক্ষা করতে হল না। একজন বেরোবার পরেই তারা ঢুকল। সময় তো দেওয়াই ছিল।
    সন্দীপের উল্টোদিকের চেয়ারে ওরা দুজন বসল।
    সন্দীপ কাবেরীর দিকে হাসিমুখে তাকিয়ে রইল যেন কতদিনের পরিচিত।
    ঠিক কি প্রতিক্রিয়া মানানসই হবে কাবেরী ভাবতে ভাবতে সন্দীপ হঠাৎ বলল, ' কিছু মনে করবেন না, গৌতমটা আজকাল খুব বদমাশ হয়ে গেছে কিন্তু ... '
    কাবেরী অবাক চোখে তাকিয়ে রইল সন্দীপ চক্রবর্তীর দিকে। গৌতমও তাকিয়ে আছে কাবেরীর চোখে চোখ রেখে। কাবেরীর কেমন একটা অস্বস্তি হতে লাগল। ভাবল, এ আবার কেমন উকিল। কি জানি কি প্যাঁচ কষছে।
    কাবেরী না বলে পারল না, ' কেন বলুন তো ? '
    --- ' এই ... বিয়ের নেমন্তন্নটা ফাঁকি দিল। ভেরি ব্যাড ... '
    গৌতম হাসতে হাসতে বলল, ' বৌয়ের সামনে খুব বদনাম করছিস, না ? তুই তখন ইন্ডিয়ায় ছিলি ? ফালতু কথা বললেই হল ? '

    --- ' ছিলাম না ? ও তা হবে ... যাক, তোরা আছিস কেমন ? '
    এভাবে শুরু হয়ে গৌতম আর সন্দীপের কথাবার্তার ডালপালা ছড়াতে লাগল অনেকক্ষণ ধরে। নানা স্মৃতি এবং বিভিন্ন পরিচিত মানুষের ঘটনার নানা সূত্র ধরে তাদের বাক্যালাপ চলতে লাগল।
    কাবেরীর শরীর বিরক্তিতে চিড়বিড় করতে লাগল। ভাবল এ আবার কেমন উকিল ... কাজের কথা নেই, আজেবাজে কথা বলে চলেছে খালি এক নাগাড়ে।
    সে আর থাকতে না পেরে একসময়ে বলে উঠল, ' আর থাকাথাকি... ভীষণ প্রবলেম, ভীষণ প্রবলেম ... আমাদের কেসটা একটু সেটল করে দিন না ... দরকার হলে ওকেও এখানে নিয়ে আসতে পারি ... '
    --- ' কাকে ? '
    --- ' ওই তো ... যার সঙ্গে আমি ইনভলভড হয়ে পড়েছি ... ডিভোর্সটা না পেলে কিছু করতে পারছি না ... '
    কাবেরীর এরকম দ্রুতবেগে এবং সরাসরি মূল ব্যাপারে ঢোকার প্রবণতাটা সন্দীপ খুব সূক্ষ্মভাবে লক্ষ করল। সে বুঝতে পারল স্থান কাল পাত্র ভুলে এরকম উদগ্রীব এবং রাখঢাকহীন ভঙ্গীতে ইচ্ছার প্রকাশ একজন মহিলার পক্ষে অন্য ধরণের মনোগঠনের ইঙ্গিত দেয়।
    সন্দীপ তার টেবিলের ওপর একটা পেপারওয়েট উল্টো করে ঘোলাটে ঘোরাতে বলল, ' আমি আপনাদের ব্যাপারটা মোটামুটি শুনেছি গৌতমের কাছে। আপনার উদ্দেশ্য সফল হলে আপনি সুখী হবেন কিনা, সেটা আমি জিজ্ঞেস করব না। আমি শুধু একটা প্র্যাকটিকাল অ্যান্ড প্র্যাগমেটিক কথা জিজ্ঞেস করতে চাই ... '
    --- ' কি ? '
    এতে আপনার কি লাভ হবে ? বৈজ্ঞানিক সত্য হল, যে মানুষ যা কিছু করে সব নিজের স্বার্থের জন্য করে ... এমনকি সন্তানস্নেহও তাই, আমি অবশ্য অত ইন্ট্রিকেসির মধ্যে ঢুকতে চাই না ... আমার কথা হচ্ছে, আপনার কোন ইন্ট্রেস্ট ফুলফিলড হবে, মানে কি লাভ হবে ... আপনি যদি আর একজনের কাছে শিফট করেন ? '
    সন্দীপ কাবেরীর চোখের ওপর দৃষ্টি ফেলে ডান হাত দিয়ে পেপারওয়েট ঘোরাতে লাগল।
    কাবেরী এরকম অদ্ভুত কথা কোনদিন শোনেনি। উকিলরা বোধহয় এরকমই হয়। ওকালতি প্যাঁচ। বোধহয় খেলিয়ে খেলিয়ে তুলতে চাইছে। এই যে গৌতম বলল ওর চেনা জানা।
    কাবেরী বলল, ' ঠিক বুঝলাম না ... এতে লাভ লোকসানের কি আছে ! আমাদের দুজনের দুজনকে ভাল লাগে, ব্যস... আবার কি ? এটা কি কোন অন্যায় নাকি ? আমার তো তা মনে হয় না ...'
    --- ' আপনার কি মনে হয়, আপনার হাসব্যান্ডের ভাল লাগা, মন্দ লাগা, লাভ ক্ষতির ব্যাপারে আপনার কোন অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি মানে দায়বদ্ধতা নেই ? '
    কাবেরী চুপ করে রইল। এসব আবার চিন্তার কোন বিষয়বস্তু হতে পারে সেটাই তার মাথায় আসেনি কখনও। গৌতমের হাবভাব দেখে তার যে এ ধরণের কোন মানসিক দৌর্বল্য আছে সেটাও একেবারেই মনে হয় না কাবেরীর।
    সে বলল, ' অত কিছু বলতে পারব না। ভেবে দেখিনি। আমার তো মনে হয় না আমি কারও ক্ষতি করছি বলে। আমার তো মনে হয় মিউচুয়াল সেপারেশান হয়ে গেলে দু পক্ষই ভাল থাকবে ... '
    পেপারওয়েট ঘোরানো থামিয়ে সন্দীপ বলল, ' আপনি এ ব্যাপারে শিওর ? '
    --- ' তাই তো মনে হয়। তাছাড়া ... '
    --- ' তাছাড়া কি ? '
    --- ' জোর করে মনের ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখার কোন জাস্টিফিকেশান নেই। আর যে যা করে করুক আমি ওসব মানতে রাজি নই ... '
    --- ' হমম্ .... আপনি তা'লে কী মানতে রাজি সেটা একটু বলবেন ? আপনি কি বার্নার্ড শ -এর সঙ্গে একমত ? '
    --- ' সেটা আবার কী ? ' 
    --- ' ম্যারেজ ইজ নাথিং বাট এ লিগ্যাল প্রস্টিচিউশান ... '
    --- ' ও বাবা ... অত সব ভারি ভারি কথা আমি বুঝি না ... রাসেল টাসেল শ ট  অত সব আমার জানা নেই। যে  ব্যাপারটার জন্য আপনার কাছে এসেছি আপনি যদি কাইন্ডলি সেটার প্রসেসিং স্টার্ট করেন খুব ভাল হয় ... '
    সন্দীপ বুঝতে পারল কাবেরী আস্তে আস্তে ধৈর্য্য হারাচ্ছে। সে তো আর জানে না যে সন্দীপ চক্রবর্তী মোটেই কোন উকিল নয়, একজন দক্ষ সাইকিয়াট্রিস্ট।
    সে মুখে প্রসন্নতা বজায় রেখে বলল, ' এগ্জ্যাক্টলি ... এগ্জ্যাক্টলি ... সেটাই করতে চাইছি। কিন্তু কাজটা শুরু করতে গেলে এইসব ফান্ডামেন্টাল এনকোয়্যারিগুলো ইনডিসপেন্সিবল, বুঝলেন। তবে আপনাকে আর বেশি কিছু জিজ্ঞাসা করব না। শুধু একটা লাস্ট কোয়েশ্চেন ... '
    --- ' কি ? '
    --- ' ঠিক একটা কোয়েশ্চেন না, দুটো কোয়েশ্চেন। মানে, একই কোয়েশ্চেনের দুটো মুখ আর কি ? '
    লাস্ট কোয়েশ্চেন শুনে কাবেরীর মাথা একটু ঠান্ডা হয়েছে।
    সে হেসে ফেলে বলল, ' বলে ফেলুন ... বলে ফেলুন স্যার। প্রশ্নের উত্তর তো দিতেই হবে। গরজ তো আমারই ... বলুন বলুন ... '
    --- ' হাঃ হাঃ হাঃ ... না, ব্যাপারটা ওভাবে নেবেন না প্লিজ। আচ্ছা, একটা কথা বলুন তো, এক নম্বর... যদি কিছুদিন পর শমিকবাবুকে আপনার ভাল না লাগে তখন কি করবেন ? আর দু নম্বর ... শমিকবাবু বা আপনার কোন ম্যারিটাল পার্টনার যদি অন্য কোন মহিলার দিকে ঝুঁকে পড়ে তখন আপনি ব্যাপারটা কিভাবে নেবেন ? '
    কথাগুলো শুনে কাবেরীর বিন্দুমাত্র ভাবান্তর হল না।
    সে ছেলেমানুষের মতো হাত উল্টে ঠোঁট উল্টে বলল, ' কি জানি বাবা ... আরে দূর ... অত সব ভেবে দেখিনি ... ভেবে টেবে নিয়ে আপনাকে জানাব ... ওসব যখন হবে তখন দেখা যাবে ... '
    --- ' ও আচ্ছা আচ্ছা ... নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই ... জানাবেন জানাবেন ... তাড়াহুড়োর কিছু নেই। আসলে প্রসিডিংয়ের জন্য এগুলো এসেনশিয়াল, জানেন ... '
    --- ' আচ্ছা, এবার তা'লে ... '
    --- ' এ তো একদিনে হবে না, নানারকম লিগ্যাল প্রোটোকলস আছে। এক মাসের মতো টাইম লাগবে ... '
    --- অ্যাঁ, বলেন কি ... এ..ক মাস ! ওকে কি বলব তা'লে ? '
    --- ' তা তো লাগবেই... অনেকগুলো স্টেপ আছে যে। আর উনি যদি আপনাকে সত্যিই চান মাত্র এক মাস অপেক্ষা করাটা কোন ব্যাপার না ... এটা স্বীকার করবেন নিশ্চয়ই... কত প্রেমিক তার প্রেমিকার জন্য যুগ যুগ অপেক্ষা করে থাকছে ... '
    কাবেরী নীচু গলায় বলল, ' কি আর বলব ... দেখুন ... '
    ডাক্তারবাবু এবার বললেন, ' ঠিক আছে, আপনি এখন একটু বাইরে গিয়ে রেস্ট নিন। আমি আপনার হাসব্যান্ডের সঙ্গে একটু কথা বলে নিই ... এতক্ষণ তো শুধু আপনার সঙ্গেই কথা বললাম। লিগ্যাল প্রসিডিংয়ের ব্যাপার ... ওই যে বললাম, ভেরি কমপ্লিকেটেড প্রসেস ... দুজনের সঙ্গেই কথা বলতে হবে।
    --- ' আচ্ছা ঠিক আছে ... '

    কাবেরী ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে গিয়ে বসল।
    ডাক্তার সন্দীপ চক্রবর্তী গৌতমকে বললেন, ' ইভেসিভ সিনড্রোম আছে মোস্ট প্রোব্যাবলি। নিজের থেকে নিজে পালাতে চায়। কোন টেন্ডেন্সিরই কংক্রিট রিজনিং নেই নিজের কাছে।
    মাইল্ড অকেশানাল হ্যালুসিনেশান পাসসিস্ট করছে মনে হয়। সেলফ লজিক্যাল পারসেপশান ডিসঅর্ডার ইজ এগ্জিস্টিং। নিজের কাছে নিজের অ্যাকশানই ক্লিয়ার নয়। যাই হোক, ওকে নিয়ে আবার একমাস পরে আসবি। তার মধ্যে এই ওষুধগুলো কিন্তু রেগুলারলি খাওয়াতে হবে, যেভাবেই হোক। হোপফুলি, একমাসের মধ্যে ইমপ্রুভ করবে। দেখা যাক, ডোন্ট ওয়ারি। হ্যাঁ, একটু দেখে নে প্রেসক্রিপশানটা, কখন কোনটা খাওয়াতে হবে ... '

    আজ দুপুরবেলা থেকে বিভূতিবাবুর জ্বর এল।
    তাকে কুঁকড়ে মুকড়ে শুয়ে থাকতে দেখে রমা এসে বলল, ' কি গো ভাত খাবে না ? বেলা তো অনেক হল ... যাও চান করে এস ...'
    বিভূতিবাবু জড়ানো গলায় বললেন, ' নাঃ ... মনে হচ্ছে জ্বর এসেছে ... '
    --- ' ওমা, তাই নাকি ! দেখি দেখি ... তাই তো, গা তো বেশ গরম দেখছি। দাঁড়াও কম্বল বার করছি ... ওবেলা নীতিন বিশ্বেসকে একবার দেখিয়ে আসতে হবে। খোকাকে বলব'খন .... দিচ্ছি চাপা দিচ্ছি ... এই যে ... '

    ( চলবে )

    ******
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • :|: | 2607:fb90:bd05:d436:7dca:16f8:b7ef:***:*** | ০৮ জুলাই ২০২৫ ০৪:৪৭732337
  • আচ্ছা আপনার চরিত্ররা সকলেই একই কথা পরপর রিপিট করে কেন? যেমন
    পালবাবু বললেন, ' তা তো বটেই... তা তো বটেই,  খরচের ব্যাপারটা তো আছেই  ... মিথ্যা কথা বইল্যা লাভ নাই  । দুশ্চিন্তার  ব্যাপার ... '
    ----- ' হ্যাঁ ওই  আর কি ... কি আর বলব ...'  
    অধীর নন্দী বলল । 
    ----- ' যাক , আমি অবশ্যই  চিষ্টা করুম , সেইটা আপনেরে কথা দিতে পারি । চিষ্টায় কোন ত্রুটি হইব না ... '
    ----- ' সেটাই  যথেষ্ট , সেটাই  যথেষ্ট।  তাই বা কে বলে । মনে অনেকটা জোর পেলাম ... ' 
    অথবা 
    সন্দীপ ডাক্তার: ---- ' ও আচ্ছা আচ্ছা ... নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই ...  জানাবেন জানাবেন ... তাড়াহুড়োর কিছু নেই  । আসলে প্রসিডিংয়ের জন্য এগুলো এসেনশিয়াল , জানেন ... '
     
    আগের সব কিস্তিতেই লক্ষ্য করেছি। কিন্তু মনে হলো এই ম্যানারিজমটা একটি/দুটি চরিত্রের হলে ঠিক আছে। নারী পুরুষ ছোটো বড়ো সকলেই অমন রিপিট মোডে কথা বললে টানটান ভাবটা নষ্ট হচ্ছে বলে কি আপনার মনে হয়না? 
  • Anjan Banerjee | ০৮ জুলাই ২০২৫ ১৪:১৭732347
  • Important point . আচ্ছা খতিয়ে দেখছি ব্যাপারটা । 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক প্রতিক্রিয়া দিন