এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বৈঠকি আড্ডায়  ৪

    হীরেন সিংহরায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০১ মার্চ ২০২৪ | ৯৬৬ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (৪ জন)
  • ভাষা উপভাষা- এক

    সর্বদা হাসি খুশি মিরেই সুলিয়েরের মুখে আজ  মেঘের ছায়া।

     কি ঘটনা , কি রটনা? কে মেরেছে,  কে ধরেছে ?

    ‘আপাতত বোসো। এই ওঙ্কেল মাক্সে ক্রিস্টিনার বানানো বেজায় বিচ্ছিরি কফি খাও। তারপরে ইচ্ছে হলে বোলো কি ঘটেছে‘।

    কফির পরে জানা গেলো মারধর নয়, মিরেইকে একজন গাল দিয়েছে।  সে আবার ফরাসি, তার আপন দ্যাশের লোক !

    পটভূমিকার ব্যাখ্যান  প্রয়োজন। 

    ফ্রাঙ্কফুর্ট তসাইলের পাশে একটি সুলভ ভাষা প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়ে তখন সোম ও বুধবার  কাজের  পরে স্প্যানিশ শেখার ক্লাস করি।  মিরেই সহ কুল্লে দশজন। আমার স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অফিসের  ঠিক পেছনেই , ফ্রাঙ্কফুর্টের ফ্রেসগাসে নামক পথচারী এলাকা । বিকেলে মিরেই সেথা  হাজির হলে দু পা হেঁটে বিদ্যালয়ে যাই ।  পাঠকের  মনে একটা প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উদিত হতে পারে – বরানগর পাইকপাড়ার বাঙালি জার্মানিতে এক ফরাসিনির সঙ্গে স্প্যানিশ ভাষার গুরুকুলে যাচ্ছে কেন ? জার্মান শেখাটাই কি বেশি জরুরি নয় ?

    এর তাত্ত্বিক উত্তর সহজ –ইন্দো ইউরোপিয়ান ভাষা পরিবারে জানা অজানা অনেকেই  সদস্যপদ দাবি করে থাকেন।  সংস্কৃতের পাখায় চড়ে জার্মানের সঙ্গে আলাপ পরিচয় হলে ডাচ এবং তাবৎ নরডিকের চারটে (ফিনিশ বাদে) ভাষার সঙ্গে মুখ চেনা হয় ( জার্মানে ফুল Blume, নরওয়েজিয়ান সুইডিশ ডেনিশ আইসল্যান্ডিক, ডাচ ও ফ্লেমিশ ভাষায় যথাক্রমে Blomst, Blomma, Blomst, Blóm, Bloem ,  আফ্রিকানসে Blom )  অনেক জানালা খুলে যায় । কিন্তু আমরা ইন্দো ইউরোপিয়ান পরিবারের যে সদস্যের কাছ থেকে এই জানালা শব্দটি পেয়েছি, সেই পর্তুগিজ সহ সকল রোমানস  ভাষা আমাদের কাছে খানিকটা দুর্বোধ্য থেকে যায় । রোমানস  ভাষাগুলির বড়ো কর্তা  ফরাসি , কিন্তু সে ভাষা  শিখতে আমার নীতিগত আপত্তি আছে ! তারা আশি অবধি গুণতে পারে না , বলে চার কুড়ি! আমাদের গ্রামের খামারে  আড়ি দিয়ে ধান মাপানোর সময়ে দেখেছি কুড়ি  ( এক বিশ ) দিয়ে সব কিছুর হিসেব হয় , চার বিশে আশি । রিডারস ডাইজেস্ট  তাদের পর্তুগিজ পত্রিকার দুটো আলাদা সংস্করণ ছাপে,  ইউরোপীয় পর্তুগিজ এবং ব্রেজিলিয়ান পর্তুগিজ,  যাদের শব্দ ভাণ্ডার এবং উচ্চারণ বেশ আলাদা । কথিত ভাষাভাষীর সংখ্যা গুনতিতে  বাংলা পর্তুগিজের দু ধাপ ওপরে, পৃথিবীর ছ নম্বরে। ইতালির বাইরে সে ভাষার ব্যাপক চল একমাত্র আর্জেন্টিনাতে-   উনবিংশ শতাব্দীতে ভাগ্য সন্ধানে বহু দরিদ্র ইতালিয়ান সে দেশে আসেন, এখনও লাখ দশেক লোকের প্রথম ভাষা ইতালিয়ান  ( লিওনেল মেসির পুরো গুষ্ঠি, ডিয়েগো মারাদোনার মা  ইতালিয়ান) । ইংরেজি ও ম্যান্ডারিনের পরেই  স্প্যানিশ সর্বাধিক কথিত ,  অন্তত কুড়িটি দেশের সরকারি ভাষা , শুধু দক্ষিণ আমেরিকার পুরনো জমিদারি নয়, ফিলিপাইনেও স্প্যানিশ বলে কাজ চালানো যায়,  সে দেশটার নামই তো  স্পেনের  রাজা ফিলিপের নামে।

    মিরেই এর বাড়ি এলসাস জেলার  কোলমারে । ১৮৭০ সালে জার্মানির বিরুদ্ধে  যুদ্ধে পরাস্ত ফ্রান্স আলসেস  ও লোরেন ( জার্মানে এলসাস লোত্রিঙ্গেন ) এই দুটি অঞ্চলের অধিকার হারায় । দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে ফ্রান্সের অংশ, দ্বিতীয় যুদ্ধে জার্মান , ১৯৪৫ থেকে ফরাসি । কেবলমাত্র সীমানা টেনে দিলেই ভাষা বদলে যায় না , যদিও ফরাসি এখানে রাষ্ট্রভাষা কিন্তু আলেমানিশ নামের একটি আঞ্চলিক জুবান চালু আছে যেটা আমার পক্ষেও বোধগম্য। এ নিয়ে আমার গল্প পরের পর্বে।

    মিরেই কাজ করে একটি ফরাসি সংস্থার জার্মান শাখায় , জার্মান এবং ফরাসি দুটোই তার আসে, অন্তত এই ধারণটা সে পোষণ করেছে সেদিন সকাল অবধি।  

    কি হয়েছে আজ সকালবেলা ?

    খোদ প্যারিস থেকে একজন এসেছেন ফ্রাঙ্কফুর্ট অফিসের হাল ধরার জন্য । তিনি সকলের সঙ্গে প্রথমে জেনারেল মিটিং করেছেন, তারপর মিরেইএর মতন কয়েকজনকে বেছে নিয়ে তাদের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান । নিজের দেশের মানুষের সঙ্গে দু চার কথা হবে ভেবে খুশি হয়ে সে গেছিল কিন্তু পাঁচ মিনিটের মধ্যেই নতুন বড়ো সাহেব তাকে কাঁদিয়ে দিয়েছেন।  

    সে কি ?

    হ্যাঁ! মিরেইএর ফরাসি শুনে এমন ভাব করলেন যেন সে ভাষা তিনি বুঝতে পারছেন না । সাহেব প্যারিসে বাইরে কখনো কাজ করেন নি , লোরেনের আঞ্চলিক ফরাসি অ্যাকসেন্ট তাঁর কাছে দুর্বোধ্য ! উলটে  জার্মানে প্রশ্ন করেছেন এটা কোন ভাষা?

    ঘোর অপমানিত হয়ে সেদিনই  সে পদত্যাগের চিঠি দেবে স্থির করে ফেলেছিল । অফিসের অন্য একজন বয়স্ক ফরাসি অফিসার তাকে নিরস্ত করেন।  সেকেন্ড হ্যান্ড হলেও প্যারিসিয়ানদের দুর্বিনীত আচরণের সঙ্গে সেই আমার প্রথম পরিচয়, পরে আমাদের ফরাসি বাসভূমে প্রতিবেশী মসিও দুকোপিনি আলাপ করতে এসে রোদিকাকে বলেছিলেন, ‘আমরা ফরাসি , প্যারিসিয়ান নই ! ‘

    দ্য গল বলেছিলেন যে দেশে ২৪৭ রকমের ( মতান্তরে ৭৯১) চিজ বানানো হয় ও তার নাগরিক বৃন্দ আপন চিজের   গুণবত্তা নিয়ে একে অপরের সঙ্গে তর্ক,  লড়াই ঝগড়ায় লিপ্ত হয়  সেখানে কোন সুষ্ঠু প্রশাসন ব্যবস্থা কার্যকরী হতে পারে না । বিভিন্ন আঞ্চলিক ফরাসি উচ্চারণের সংখ্যা হয়তো তার চেয়েও বেশি ।

    ফিলিপ নামের একজন এলেন আমাদের ফ্রান্সের বাগানের ভাঙা বেড়া ( ক্লচুর ) মেরামত করতে ।  কাজের পরে তিনি  চলে গেলে রোদিকা বললে ফিলিপের ফরাসি কি রকম যেন শুনতে । আমি বললাম রোমানিয়ার অজ পাড়া গাঁয়ে কোন উদো মাষ্টারের  কাছে তো ফ্রেঞ্চ শিখেছ।  খোদ ফরাসির ভাষা নিয়ে আর চুলচেরা বিচার করো না।

    ক’দিন বাদে প্রতিবেশী  মসিও দুকোপিনি এসেছেন , আমার সুবিধের জন্য  ইংরেজিতে বাক্যালাপ চলছে । রোদিকার  ফিলিপ আখ্যান  শুনে তিনি  বললেন , আপনি বুঝেছেন এই ঢের , ফিলিপ তো বেলজিয়ান।  ওদের ধারণা তারা ফরাসি বলে!

    সিটিব্যাঙ্কে কাজের সময়ে এককালের প্রখ্যাত ফরাসি ব্যাঙ্ক বি এফ সি ই র ( Banque Francaise du Commerce de Exteriur) লন্ডন শাখার প্রধান রজে ফরতিয়ের সঙ্গে দারুণ আলাপ ছিল, একসঙ্গে উইম্বলডনে টেনিস দেখেছি । একদিন জানলাম তিনি সঠিক ফরাসি নন,  তাঁর বাড়ি ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বীপ মারতিনিকে । এককালের কলোনি ,  চার লক্ষ মানুষের সেই দ্বীপ আজ ফ্রান্সের অংশ, সেখানে ইউরো চলে, যেতে গেলে শেঙ্গেন ভিসা প্রয়োজন ( যেটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য বিশটি দেশে চালু )   বেকারি ভাতা মেলে ইউরোতে । রজে বলেছিলেন প্যারিস গেলে মনে হয় এটা কোন দেশ? এরা এক ধরনের ফরাসি বলে দেখি ! মারতিনিক সহ আরও চারটি  পুরনো কলোনি আজ পূর্ণ মর্যাদায় ফ্রান্সের অংশ, সেখানে ফরাসি পতাকা ওড়ে – গুয়াদালুপ,  লা রেউনিওঁ , গিয়ানা এবং মাইয়ত,  প্যারিস থেকে অনেক দূরে -তাদের অ্যাকসেন্ট প্যারিস লিওঁ মার্সেইতে পরিহাসের বস্তু।  

    প্যারিস অরলি হাওয়াই আড্ডা  থেকে বারো ঘণ্টায় ছ হাজার মাইল উড়ে আফ্রিকার পূবে  ভারত মহাসাগরের দ্বীপ লা রেউনিওঁতে নেমে জানলাম আমি তখনও ফ্রান্সেই  আছি, মুদ্রার নাম ইউরো  , রাষ্ট্রপতির নাম ম্যাকরোঁ– তার ভাষায় সোহাইলির ছাপ আছে, কিন্তু সেটিও ফরাসি ভাষা!  তারাও আশি অবধি গুণতে পারে না, বলে চার কুড়ি !  

    প্রসঙ্গত , প্যারিস অরলি থেকে রেউনিওঁর বিমান যাত্রাকে পৃথিবীর দীর্ঘতম ডোমেস্টিক ফ্লাইট বলে গণ্য করা হয় , বারো ঘণ্টা উড়েও একই দেশে রয়ে গেলেন।

    মিরেইএর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বহুদিন । তার সঙ্গে আমার বাক্যালাপ হতো জার্মানে ।  ফ্রান্সে আর ফেরে নি । ফ্রাঙ্কফুর্টের উত্তরে বেরগেন শহরে একটি জার্মান যুবককে বিয়ে করে সে দেশের বাসিন্দা হয়।

    ডায়ালেকট শব্দের বাংলা পরিভাষা কি ? উপভাষা বা কথ্য ভাষা ? লবজ?

    কোন কেন্দ্রীয় তত্ত্বাবধানের অভাবে কথ্য ভাষার চেহারা বদলাতে থাকে দূরত্ব অনুযায়ী , তার লিখিত রূপ যাই হোক না কেন।   নদে শান্তিপুর থেকে শ্রীহট্ট বা  চট্টগ্রাম অনেক দূর। বিবর্তন অনিবার্য। আমার মা বলতেন কোশ অন্তর ভাষা, এক ক্রোশ  বা দু মাইল পেরুলেই বদলাতে থাকে।  যে কালে মানুষজন হেঁটে বাংলা থেকে পুরী গেছেন , সেই দীর্ঘ যাত্রায় ক্রমশ  বিবর্তিত লবজ কানে শুনতে শুনতে পুরী পৌঁছুনর আগেই তাঁরা ওড়িয়া ভাষাটি শিখে যেতেন । অক্ষর পরিচয়ের প্রশ্ন অবশ্য ওঠে না ।

    আফ্রিকায় একমাত্র ইথিওপিয়ার নিজস্ব আলফাবেট ও সংখ্যা আছে । বাকি মহাদেশে মুখের ভাষার কোন নিজস্ব লিখিত হরফ  নেই ।  

    ভিদিয়াধর সুরজপ্রসাদ  নাইপাল তাঁর অ্যান এরিয়া অফ ডার্কনেস বইতে কাশ্মীরের ডাল লেকের শিকারা চালকদের মুখে ইংরেজি উচ্চারণ শুনে চমৎকৃত হয়েছেন ( ফ্লাইট টু ফ্যান্সি পরিচ্ছেদে )।  তিনি বলেছেন কেতাবি বিদ্যে হয়তো নেই কিন্তু ইংরেজ, আমেরিকান টুরিস্টের কাছে কানে শুনে  ঠেঁট অ্যাকসেন্টটি আয়ত্ত করেছেন। আমার নিজের ইংরেজি ব্যাকরণ জ্ঞান যতোই দঢ় বলে মনে করি না কেন, বরানগরের স্কুলে কানে শেখা  উচ্চারণ পঞ্চাশ বছরে শোধরায় নি ।

    গত বছর কাঁটাকলে অর্থনীতির বিখ্যাত  ছাত্র, অধুনা ইন্সটিটিউট অফ ডেভেলপমেনটাল স্টাডিজের অধ্যক্ষ অনুজ প্রতিম অচিন চক্রবর্তী ও ইন্দ্রাণীকে কভেনট গার্ডেনের সেই চত্বরে নিয়ে গেলাম যেখানে দাঁড়িয়ে  হেনরি হিগিনস ( মাই ফেয়ার লেডি ছবিতে দেখা ! ) কেবলমাত্র মুখের কথা শুনে বলে দিচ্ছিলেন  কে কোথাকার বাসিন্দা : লিসন গ্রোভ , হক্সটন, হ্যাম্পটন কোর্ট! তা  এঁরা তো সবাই নেহাত লন্ডনের বাসিন্দা ! তাঁকে একটি একটি কঠিন কেস দেওয়া হলো -এই যে  কর্নেল পিকারিং,  ইনি নানা জায়গায়  ঘুরেছেন , বলুন দিকি কোথায় কোথায় ? তাঁর মুখের কথা শুনে হিগিনস অবলীলাক্রমে বললেন, চেলটেনহ্যাম, হ্যারো , কেমব্রিজ ,  ইন্ডিয়া ! চমৎকৃত পিকারিং জানতে চাইলেন কোন মায়াবলে হিগিনস এই অসাধ্য সাধন করেন , হাও ডু ইউ ডু ইট?  উত্তরে হিগিনস বললেন,সিম্পল  ফোনেটিকস , দি সায়েন্স অফ স্পিচ !

    তিনি তো বলেই খালাস কিন্তু আমাকে যে নেশাটি ধরিয়ে দিলেন সেটা আজও কাটিয়ে উঠতে পারি নি ।

    শুরুটা দেশে থাকতে । বাড়ি বীরভূমের পদুমায় , মামাবাড়ি আশুরিয়া সে জেলার শেষ গ্রাম,  সেখানে একটা রাস্তা পেরুলে মুর্শিদাবাদ , বর্ধমানে দুই  দাদা,  এক দিদি , ভাইপো ভাগ্নে । ছাত্রাবস্থা থেকে আসা যাওয়ার সূত্রে  ক্রমশ উচ্চারণের তফাৎ বোঝবার চেষ্টা করেছি । সিউড়ির   কাছে নগরী  গ্রামে রেনুদির শ্বশুর বাড়ি । ভাগ্নিরা আশুরিয়া যাবে -  আমাদের জামাই বাবু সুধীর বাবু তাদের বলছেন  মামাবাড়ির উচ্চারণগুলো শিখে এসো না ! ফিরে এসে ভাইকে  বোলো না যেন , হ্যাঁরে তুই কি আমার কলমটা লিয়াছিস ?

    তারপরে প্রথম চাকরি , উত্তর বাংলা , অবিস্মরণীয় জলপাইগুড়ি ! শুধু তাফাল ক্যাচাল নয় , বড়ো আদরের এক কথ্য বাংলা ভাষার  স্মৃতি বুকে নিয়ে ফিরেছি। উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার তফাৎ বুঝতে চেয়েছি,  আন্নাঘর শুনে হেসেছি! র দুবার বলা যায় না? 

    হেনরি হিগিন্সের কাছে অর্জিত  ব্যামোটি রয়ে  গেল।  কারো ইংরেজি উচ্চারণ শুনে সে ব্রিটেনের কোন অঞ্চলের বা কোন দেশের মানুষ সেটা নির্ণয় করা আমার প্রাথমিক  হবি;  লোককে চমকে দেওয়ার একটা অনাবিল আনন্দ আছে ।  স্কটিশ ইংরেজির সঙ্গে প্রথম পরিচয় ফ্রাঙ্কফুর্টে । জন হেরোন নামের গ্লাসগোবাসী এক যুবক ছিল  আমাদের ড্রেসনার ব্যাঙ্কের ট্রেনিঙের সতীর্থ – সে ইংরেজি বলছে বটে কিন্তু কিছু বুঝি না , খুব লজ্জায় পড়েছি ! আমাদের আরেক সহপাঠিনী ইংল্যান্ডের রেডিঙ্গ  শহরের ফিওনা আমাকে আশ্বস্ত করে বলল , আমিও বুঝি না ! আমেরিকান ইংরেজির মাতা আইরিশ ও লন্ডন ককনির সন্তান অস্ট্রেলিয়ান উচ্চারণ চেনা সহজ , ওয়েলশের একটা মিষ্টি টান আছে, চিনতে সময় লাগে। ডাচ, স্প্যানিশ, চেকের কথ্য ইংরেজির ফারাক বোঝার চেষ্টা করি।  এই সেদিন আমাদের বাড়ির সামনে এক ভদ্র মহিলার গাড়ি অচল হলো, তিনি সহায়তার জন্য অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশনকে ফোন করেছেন , তাদের এসে পৌঁছুতে সময় লাগবে।  কিন্তু তাঁর মেয়েটিকে স্কুলে পৌঁছুতে হবে দশ মিনিটের মধ্যে। তাঁদের আমার গাড়িতে তুলে নিয়ে মেয়ের স্কুলে যাবার পথে জিজ্ঞেস করলাম আপনার বাড়ি কি জোহানেসবুরগ না কেপ টাউন ?

    তিনি চমৎকৃত। কি করে অনুমান করলাম ? সেই হেনরি হিগিনস! সিম্পল ফোনেটিকস ! বাহাদুরি দেখিয়ে লাভ নেই- ভুল কি হয় না ? হয় , কিন্তু ভুল করে যে আনন্দ আরও বেশি! আমি যে এক বিদেশির বাড়ির ঠিকানা হাতড়াচ্ছি তা জেনে বক্তা প্রফুল্ল হন ! 

    মিউনিকের রাস্তায় পথ আইন ভাঙার অপরাধে ব্যাভেরিয়ান পুলিশ এইচ এইচ ( হানসেস্টাড হামবুর্গ ) লাইসেন্স প্লেটওলা  মার্সিডিজ গাড়ি থামিয়েছে । অত্যন্ত সুসজ্জিতা এক মহিলা নেমে  সানগ্লাস খুলে পুলিশের দিকে তাঁর সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে  লাউট রাইনেস চোস্ত জার্মানে উষ্মা ব্যক্ত করে  আপন অপরাধ জানতে চেয়েছেন।  উত্তরে ব্যাভেরিয়ান পুলিশ যা বলেছে তার কিছুই না বুঝতে পেরে সেই মহিলা বলেন , মে উই স্পিক ইন ইংলিশ ?

    প্রাশিয়ান ( মানে যে কোন নন ব্যাভেরিয়ান ) বনাম ব্যাভেরিয়ানদের চির পরিচিত বিতণ্ডার নমুনা বলে একে উড়িয়ে দিতে পারেন কিন্তু এটি আজ কিংবদন্তির পর্যায়ে পৌঁছে গেছে । জার্মানিতে ভাষার আঞ্চলিক বৈচিত্র্য অন্তহীন। কখনো কঠিন জায়গায় গিয়ে পড়েছি- ফ্রাঙ্কফুর্টের একশ কিলোমিটার দূরে ফোগেলসবেরগের কথ্য ভাষা, ট্রেনিঙের সময়ে শোনা পুরনো নুরেমবেরগের উপভাষা - আলট নুরনবেরগিশ । একবার স্টুটগারটের ঘণ্টা খানেক দূরে  হাইলব্রনে  আমার তৎকালীন  সহকর্মী  গ্রাতসিয়ার বাড়ি গেছি । দেশটা একই , সাইনবোর্ডের লেখা,  খবরের কাগজ বেশ পড়তে পারি কিন্তু তাদের বাড়ির লোক জনের সঙ্গে গল্প গুজব করাটা কঠিন হয়ে পড়ল । সক্কালবেলা আপনি কেমন আছেন ( ভদ্র জার্মানে ভি গেটস ইনেন ) জানতে চেয়ে কেউ বলেন,  হা নয় !  গ্রাতসিয়াকে একটু কুণ্ঠিত হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমার কুশল জানবার মানসে তিনি ভিয়েতনামের একটা শহরকে নিয়ে টানাটানি করছেন কেন ?  সে বললে ,  হাঁ করে থেকো, লোকে জানবে কিছুই বোঝো নি। তবে তোমার জার্মান নির্ভয়ে চালাতে পারো , আমাদের পরিজন কষ্ট করে বুঝে নেবে !

    সকালবেলার প্রথম সম্ভাষণ ফ্রাঙ্কফুর্টে , হেসেন প্রদেশে  আয় গুডে ভি, ব্রেমেনে ময়েন -তার উত্তরও ময়েন । খাঁটি বার্লিনের উচ্চারণে জি হয়ে যায় ইউ - গুট ( গুড,  ভালো ) হলো ইউট ।

    স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ফ্রাঙ্কফুর্টের সহকর্মী দিয়েত্রিখ লেমানের পরিবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে   বিধ্বস্ত সাইলেসিয়া থেকে শান্তির সন্ধানে যান  মোজাম্বিক ,  ক্রমে সেখানেও অশান্তি দেখা দিলে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকা । জোহানেসবুরগের বশ কোম্পানির কারখানায় ট্রেনি ছিলেন দিয়েত্রিখ। বশের হেড অফিস স্টুটগারটের লোকে ভর্তি। তাদের উচ্চারণ বুঝতে না পেরে  বিশ বছরের দিয়েত্রিখ বলেছিলেন আপোষে না হয় ইংরেজি বলা হোক!  এটি কোন গল্পগাছা নয় , তাঁর কাছে বসে শোনা।

    প্রবাদ প্রতিম জার্মান ফিল্ড মার্শাল এরউইন রোমেলের পুত্র মানফ্রেড রোমেল  (রোমেল যখন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন তখন মানফ্রেডের বয়েস ষোল )  ৭২% ভোট পেয়ে স্টুটগারটের   মেয়র হয়েছিলেন , টেলিভিশনে তাঁর বক্তৃতা শুনেছি , একেবারে স্থানীয় লবজে । তিনি কেতাবি জার্মান বলার চেষ্টাই  করতেন না । পার্লামেন্টে  দাঁড়িয়ে নিজস্ব  স্থানীয় উচ্চারণে কথা বলতে অনেকেই কুণ্ঠা বোধ করেন না - দুই জার্মানির মিলনের পরে সেখানে উচ্চারণের বৈচিত্র্য অনেক বেড়ে গেছে। আমার মনে হয়,  ভাষা যদিও এক , বাচনভঙ্গির বিভিন্নতার কারণে সর্বজন সুবিধার্থে হেডফোনের ব্যবস্থা করা উচিত!

    ভাষা শিক্ষার সময়ে  গোয়েথে  ইন্সিটিউটে  আঞ্চলিক  জার্মান অ্যাকসেন্টের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করানো হয়েছে  হেডফোন দিয়ে। আমাদের শিক্ষিকা ব্রিগিটে লেওনহার্ড বলতেন এটা শুধু জার্মান উচ্চারনের রকমফের বোঝানোর জন্যে,  ভুল করেও কোনটি আয়ত্ত করবেন না।  নিচু জার্মানের ( প্লাত দয়েচ ) সঙ্গে সেই আলাপ, তার সঙ্গে  আবার সাক্ষাৎ হয়েছে  অনেক পরে হামবুর্গের ডক  এলাকায় ।

    স্টাডরোডার হাইকের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে ( পূর্ব ইউরোপের ডায়েরিতে তার কাহিনি আছে) জাকসেনের ভাষা বেশ চিনি।  প্রসঙ্গত পুতিন একটিমাত্র বিদেশি ভাষা জানেন , জার্মান, সেটি শিখেছিলেন আবার ড্রেসডেনে কে জি বির কাজে – তাই তাঁর অ্যাকসেন্ট জেকশিশ ! জার্মানদের কাছে সেটি কৌতুকের বস্তু।

    অজস্র উপভাষা লবজে বিভক্ত জার্মানির গ্রাম শহর জেলা উপজেলা গর্বের সঙ্গে আপন ডায়ালেকট বাঁচিয়ে রাখে – সাত লক্ষ লোকের শহর ফ্রাঙ্কফুর্টের পাড়াতুতো উচ্চারণের ফারাক আছে । বর্ণহাইমের লোক গিনহাইমের কথা শুনে ঠাট্টা করেন, গিনহাইমের লোক তাদের কাছে হয়ে যান গিনেমার ( সঠিক গিনহাইমার ), গিনেমারের মানুষের কাছে বর্ণহাইম - বেরনেম । হালে জার্মান টেলিভিশনে দেখলাম  এক স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান হানোভারের পণ্ডিতি  বাচনভঙ্গি  নিয়ে নির্মম পরিহাস করছেন ( নামই দিয়েছেন হানোভার অক্সফোর্ড !)। তা এইসব নিয়ে কোনমতে মানিয়ে গুছিয়ে আছে দেশটা । মনে আছে আমাদের ব্যাঙ্কে এক অডিটর আসতেন,  ফ্রাঙ্কফুর্টের অনতিদূরে ফ্রাইগেরিখটে তাঁর বাড়ি  । একদিন পাবে বসে বিভিন্ন ডায়ালেকট নিয়ে গল্প হচ্ছিল;  আমি আমাদের জেলা মাফিক পার্থক্যের কথা তুললে তিনি প্রশ্ন করেন অন্য জেলার কথা বুঝে কথা বার্তা চালাতে পারেন ? বর্ধমানের মানুষ স্বচ্ছন্দে আলাপ করতে পারেন বীরভূমের লোকের সঙ্গে  তা জেনে বললেন, ‘ এই ফ্রাইগেরিখটে চালু আমাদের কথ্য ভাষা বললে ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের খুব কম মানুষ তা বুঝবেন’।  

    গতকালই  একটা কাজের ব্যাপারে ফোনে কথা  হচ্ছিল ফ্রাঙ্কফুর্টের এক এস্টেট এজেন্টের সঙ্গে । বাড়ি কোথায় জানতে চাইলে তিনি বললেন ,  ঊনটার হাখিং ( মিউনিকের দক্ষিণে )  । আমি বললাম আপনার উচ্চারণে  ব্যাভেরিয়ান উচ্চারণের কোন ছাপ নেই !  বললেন আচ্ছা,  এবারে দুটো মনের কথা বলি, শুনুন !  

    কিছু বুঝলেন ?

    বললাম ওই গ্রুস গট ( হ্যালো ) আর সারভুস ( বাই )  ছাড়া কিছুই বুঝলাম না !

    কে যেন বলেছিলেন বিষ্ণু দের কবিতার বাংলা অনুবাদ হওয়া  উচিত। জার্মানির কিছু দুর্বোধ্য অজস্র  অবোধ্য আঞ্চলিক সুর শুনে মনে হয়েছে সর্বজন হিতার্থে প্রথমত এগুলির জার্মান অনুবাদ করা হোক।
      
    আজকের  ইউরোপীয় ইউনিয়নে চব্বিশটি সরকারি ভাষা,  সেই চব্বিশের বাচন ভঙ্গি  
    আড়াই হাজার! এছাড়া আছে তিনটি  হরফ;  ল্যাটিন , গ্রিক এবং বুলগারিয়ার যোগদানের ফলে  সিরিলিক । আমাদের দেশে নোটের মূল্য সম্ভবত পনেরোটি ভাষায় লেখা হয়ে থাকে , ইউরো নোটে  তিন হরফে ।

    নানা ভাষা, উপভাষা,  চিজ, বিয়ার, রুটি নানা পরিধান নিয়ে ইউরোপ আমার কাছে আরেক ভারতবর্ষ ।

    ক্রমশ

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০১ মার্চ ২০২৪ | ৯৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Arindam Basu | ০১ মার্চ ২০২৪ ১৩:২২528945
  • বাহ, চমতকার লাগল। 
    ভাষার এদিক ওদিক অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যাণ্ডেও বিস্তর। 
    এ নিয়ে টাসমানের এপার ওপারে বিস্তর গালগল্প।
    যেমন, আমাদের ফুশ অ্যাণ্ড চুপস, আর ওদের (অস্ট্রেলিয়দের), ফী-ই-ই-শ চী-ই-ই-পস । 
     
    এই গত বৃহস্পতিবার, একটা কাফে থেকে খান তিনেক কাপ কফির অর্ডার দিয়ে নিতে যাবার সময় কাউন্টারের ছেলেটিকে বলতে শুনলাম, "ডু ইউ ওয়াননা ট্রাই?", 
    ট্রাই?
    সায়েব কি ট্রাই করতে বলছে? 
    জিজ্ঞেস করতে একগাল হাসি, ছেলেটি তিন কাপ কফি নিয়ে যেতে ট্রে লাগবে কিনা জানতে চাইছিল, :-)
     
    ওহ, আরেকটা খুব তুচ্ছ বিষয, ওটা ভিদিয়াধর সুরজপ্রসাদ হবে মনে হয়,   "অ্যান এরিয়া অব ডারকনেস" অনবদ্য বই।
     
  • হীরেন সিংহরায় | ০১ মার্চ ২০২৪ ১৩:৫৪528946
  • শুধু স্মৃতি নয়, পেরিয়ে সত্তর হারিয়েছি অনেক কিছুই । এই নিয়ে তৃতীয়বার কোথাও একই ভুল করলাম। ভিদিয়াধর সুরজপ্রসাদ নাইপলকে সুরজ প্রকাশ লিখে ফেলেছি। সংশোধন করলাম। অশেষ ধন্যবাদ।
     
  • হীরেন সিংহরায় | ০১ মার্চ ২০২৪ ১৩:৫৯528947
  • প্রসঙ্গত অ্যান এরিয়া অফ ডার্কনেস  বছর দশেক ভারতবর্ষে নিষিদ্ধ পুস্তকের তালিকা ভুক্ত  ছিল। ১৯৭০ নাগাদ আমি হাতে পাই। 
  • | ০১ মার্চ ২০২৪ ২৩:১৩528963
  • হ্যাঁ অ্যান এরিয়া অব ডার্কনেস আর অমিতাভ ঘোষের ইন অ্যান অ্যান্টিক ল্যান্ড অপূর্ব। 
     
    আমাদের ময়মনসিংহের ভাষার মূল ভাগ বোধহয় দুটো ভাটিদেশের আর উজানদেশের। কিন্তু সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম ভাগ যে কত! জঙ্গলবাড়ির সাথে ভৈরবের তফাৎ আছে। কিশোরগঞ্জ আবার এদের থেকে সামান্য আলাদা। 
  • Amit | 60.242.***.*** | ০২ মার্চ ২০২৪ ০৮:০১528974
  • হিরেন দা কে প্রশ্ন ছিল: বাংলা বা হিন্দি র বহু বাচিক ভার্সন থাকলেও মনে হয় লিখিত ভাষার তফাৎ টা অতটা নয়। প্রমিত ভার্সন টাই চলে বেশি। মানে যেটুকু দেখি আর কি। পব র লোকেদের কাছে চট্টগ্রাম বা বরিশালের কথা বোঝা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু খবরের কাগজ পড়লে হয়তো দু জায়গার লোকেই জেনারেলি বুঝতে পারবেন দু একটা লোকাল কথা বাদ দিয়ে। 
     
    জার্মান ভাষার ব্যাপার টাও কি সিমিলার ? নাকি বাচিক ভার্সনের মত লেখার ভার্সন ও অনেক গুলো  ? 
     
    দ্বিতীয়টা হলে সরকারি সার্কুলার ইত্যাদি ম্যানেজ করে কি ভাবে ?নাকি সব লোকাল ভার্সন এ ট্রান্সলেট করায় ?
  • হীরেন সিংহরায় | ০২ মার্চ ২০২৪ ১৪:০২528979
  • অমিত

    ঠিক। আজকের জার্মানিতে লিখিত ফর্ম সারা দেশে একই। সরকারি সার্কুলার পুলিশের নোটিস একই ভাষায় লেখা হয় - গোয়েথে ইনসটিটুটে আমাদের ডজন খানেক লোকাল অ্যাকসেন্ট শোনানো হয়েছিল সে সব অবশ্যই সিলেট বরিশাল চাটগাঁর মতোই বর্ণময়! একেবারে বাংলার মতন – লিখিত কথিত আলাদা এবার মনে রাখুন জার্মান ভাষা বিভিন্ন রূপে দেখা দেয় সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, লিখটেনস্টাইন , লুকসেমবুরগে – সেটা আমার পরের কিস্তির বিষয় বস্তু।  

    আরেকটা অপ্রয়োজনীয় তথ্য – সরকারি হিসেবে স্পেনের ভাষার নাম স্প্যানিশ নয়! তাঁদের চারটে ভাষা। বিশাল সংখ্যক লোক যেটা বলেন , যেটা আমরা শিখি সেটা কাসতেইয়ান এছাড়া স্বীকৃত ভাষা  কাতালান , গালিসিয়ান এবং বাস্ক ( সেটা আরেক উপাখ্যান) । দক্ষিণ আমেরিকায় ওই  কাসতেইয়ানকে স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয় যদিও আমার চেনা , আমাদের স্থানীয় লিবারাল ডেমোক্র্যাট দলের এক কলোম্বিয়ান সদস্য স্পেনের চেয়ে ঢের  ভালো স্প্যানিশ দক্ষিণ আমেরিকায় বলা হয় ( অনেক শব্দ আলাদা – কাসতেইয়ানে গাড়ি এল কোচে , চিলিতে  এল অটো )।  আমার মেয়ে বলে তার  ইউনিভারসিটির দক্ষিণ আমেরিকান বিভিন্ন দেশের সহপাঠীরাও সে বিষয়ে একমত।  

    একবারে মাইনফিল্ডে ঢুকে পড়েছি !
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন