এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  সমাজ

  • গোবিন্দ  ধর : মলয় রায়চৌধুরীর সাহিত্যিক মূল্যায়ন

    Malay Roychoudhury লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | সমাজ | ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ | ১১০৪ বার পঠিত
  • 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 | 30 | 31 | 32 | 33 | 34 | 35 | 36 | 37 | 38 | 39 | 40 | 41 | 42 | 43 | 44 | 45 | 46 | 47 | 48 | 49 | 50 | 51 | 52 | 53 | 54 | 55 | 56 | 58 | 59 | 60 | 61 | 62 | 63 | 64 | 65 | 66 | 67 | 68 | 69 | 70 | 71 | 72 | 73 | 74 | 75 | 76 | 77 | 78 | 79 | 80 | 81 | 82 | 83 | 84 | 85 | 86 | 87 | 88 | 89 | 90 | 91 | 92 | 93
    মলয় রায়চৌধুরীর সাহিত্যিক মূল্যায়ন
    গোবিন্দ ধর



    মলয় রায়চৌধুরীর নাম উচ্চারণ করলে অনেকেরই মনে পড়ে যায় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ উপন্যাসের এই লাইনখানা : “আকাশের দেবতা সেইখানে তাহার দিকে চাহিয়া কটাক্ষ করিলেন।” হ্যাঁ, বাংলা সাহিত্যের নিস্তরঙ্গ আবহে মলয় রায়চৌধুরী আকাশের দেবতার কটাক্ষের মতো বজ্রবিদ্যুৎসহ নেমে এসেছিলেন এবং তোলপাড় ঘটিয়ে দিয়েছিলেন। 
     
    তিনি যোদ্ধাদের পরিবারের সন্তান, যা বাঙালি সাহিত্যিকদের পারিবারিক ইতিহাসে বিরল। তাঁর পূর্বপুরুষ পঞ্চানন ছিলেন আফগান ঘোড়সওয়ার বাহিনীর প্রধান এবং শৌর্য প্রদর্শনের জন্য ‘সখত খান’ উপাধিতে ভূষিত হন। তাঁর আরেক পূর্বপুরুষ, লক্ষ্মীকান্ত, যাঁর সময় থেকে তাঁরা গঙ্গোপাধ্যায় থেকে রায়চৌধুরী হলেন এবং কলকাতা সংলগ্ন সুন্দরবন অঞ্চলের জায়গির পেলেন, ছিলেন মহারাজা প্রতাপাদিত্যের অমাত্য। কার্তিক মাসে জন্মগ্রহণ করে মলয় পেয়েছেন সমুদ্রগুপ্ত-নন্দিত ষড়াননের দক্ষতা। তিনি সবায়ের থেকে ভিন্ন।

    অত্যন্ত কম পরিসরে উৎপলকুমার বসু স্পষ্ট করে দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যে মলয় রায়চৌধুরীর ভূমিকা। তিনি বলেছেন, “ মলয় রায়চৌধুরী এখনকার বাংলা সাহিত্যে একটি বিশিষ্ট নাম। তিনি ছয়ের দশকে লিখতে শুরু করেন এবং এখনও লিখছেন। তাঁর কবিতা, গদ্য, প্রবন্ধ, সাক্ষাৎকার, ইস্তাহার ও Polemics এর সমগ্র সংগ্রহ প্রকাশিত হলে একটি প্রয়োজনীয় কাজ হবে বলে আমার ধারণা। তিনি সাহিত্যিক নন। অর্থাৎ ‘সাহিত্যের সেবক’ বললে আমাদের স্মরণে যে-ছবিটি ভেসে ওঠে, তাঁকে সেই শ্রেণিতে ফেলা যাবে না। বাংলা সাহিত্য তাঁর হাতে যতটা না পূজিত হয়েছে --- আক্রান্ত হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি। সংক্ষেপে এটুকু বলা যায় যে মলয় রায়চৌধুরী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়েই যুদ্ধে নেমেছিলেন। তাঁর তাত্বিক প্রস্তুতি ছিল। এবং তথাকথিত বাংলা ‘সংস্কৃতি’-র ঘরে তাঁর লালন পালন নয় বলে ওই কালচারের পীঠভূমিগুলিকে অবজ্ঞা করার মতো দুঃসাহস তিনি দেখিয়েছেন।”

    মলয় রায়চৌধুরী, যাঁকে কলিম খান বলেছেন ‘রাজদ্রোহী রাজকুমার’ তাঁর সাহিত্যিক অবদান  মূল্যায়ন করা সাহসের ব্যাপার। বহু পাঠক তাঁর নাম শুনেছেন অথচ তাঁর বইপত্র পড়েননি ; তাঁদের অনেকে তাঁর নামের মহিমায় এতোই আতঙ্কিত যে তাঁর বিরুদ্ধে কয়েক লাইন লিখে বা ফেসবুকে মন্তব্য ভাসিয়ে দায়িত্ব সমাধা করে ফেলেন। তার প্রধান কারণ হাংরি আন্দোলনের সময়ে তাঁর যে কুখ্যাতি বাংলায় ছড়িয়েছিল এবং সুখ্যাতি সারা বিশ্বে ছড়িয়েছিল, তার জোয়ারে বহু পাঠকের মেধার নৌকাডুবি হবার সম্ভাবনা থাকে। মলয় রায়চৌধুরী যেন পৌরাণিক যুগের দেবতা, যাঁর সম্পর্কে যথেচ্ছ ধারণা গড়ে নেয়া যায়। আমরা শুনে এসেছি, পৌরাণিক দেবতারা ছিলেন ইন্দ্রিয়পরায়ণ, কামাসক্ত, অজাচারী, বহুপত্নীক ও ব্যভিচারী। দেবসভায়  যখন অপ্সরারা নাচতেন, তখন দেবসভা মুখরিত হয়ে থাকত অপ্সরাদের নাচগানে। মলয়ের কবিতার অবন্তিকাদের মতো যেন ছিলেন উর্বশী, মেনকা, রস্তা, তিলোত্তম, ঘৃতাচী, মুকেশী, মঞ্চঘোষা, অলম্বুষা, বিদ্যুৎপর্ণা, সুবাহু, মুপ্রিয়া, সরসা, পঞ্জিকাস্থল ও বিশ্বাচী। মলয়ের হাংরি এবং পোস্টমডার্ন জগতের যাবতীয় কর্মকাণ্ডে তাঁরা পারদর্শিনী। তাঁদের সৌন্দর্য ও যৌন আবেদন কল্পনা করে নিতে হয়। মলয়ের অবন্তিকাদেরও তেমনই কল্পনা করে নিতে হয়। তাঁরা ছিলেন স্বর্গের স্বাধীন নারী, যেমন মলয়ের হাংরি কবিতার শুভা এবং পোস্টমডার্ন প্রেমের কবিতার অবন্তিকারা। মর্ত্যলোকের অবন্তিকারা স্বর্গের অবন্তিকাদের টক্কর দিতে পারে। 

    কেবল প্রেমের কবিতা নয়, মলয়ের অন্যান্য কবিতা, কাব্যনাট্য, উপন্যাস ও ছোটোগল্পেও চরিত্রেরা বহুমাত্রিক, কোনও চরিত্রকে একটি পাত্রে ঢেলে ফিট করা যাবে না। এরকম একজন সাহিত্যিকের রচনা পড়ে পাঠকের অস্বস্তি হতেই পারে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আমেরিকা থেকে মলয় রায়চৌধুরীকে মাস্তানসুলভ হুমকি দিয়ে লিখেছিলেন যে তাঁর “গায়ে পদ্মাপাড়ের রক্ত আছে”। ফিরে এসে মলয়ের বিখ্যাত কবিতা ‘প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার’ সম্পর্কে সমীর রায়চৌধুরীকে লিখেছিলেন যে কবিতাটি পড়ে তাঁর “গা রি-রি করে উঠেছিল।” মানুষ গোড়া থেকেই তার দেবতাকে নিজের স্বরূপে কল্পনা করে নিয়েছিল। সেজন্য মানুষের যে সব দোষ-গুণ আছে, তার দেবতাদেরও তাই ছিল। মলয় রায়চৌধুরীকে পাঠক মনে-মনে দেবতার স্হানে বসিয়ে ঈর্ষা করেছেন, তাঁর ক্ষমতায়, পাণ্ডিত্যে, ভাষানির্মাণে, গদ্যবিন্যাসে, প্লটবিনির্মাণে এবং খোলাখুলি নিজের কথাবার্তা উপস্হাপনে। ‘প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার’ কবিতাটি একটি মাইলস্টোন, বাংলা কবিতায় এবং মলয়ের সাহিত্যজীবনে। পনেরোজন তাঁর এই কবিতাটি ইউটিউবে আবৃত্তি করেছেন। জ্যোতির্ময় মুখোপাধ্যায় যথার্থ বলেছেন যে এই কবিতাটি মলয়ের ক্ষতিও করেছে, কেননা বহু পাঠক মলয়কে এই কবিতাটি দিয়ে চেনেন। শীতল চৌধুরী তাঁর প্রবন্ধে বলেছেন যে মলয়ের এই কবিতাটি পরের দশকের কবিদের প্রভাবিত করেছে, এমনকী জয় গোস্বামীকেও। কবিতাটি নিয়ে ফিল্ম করেছেন মৃগাঙ্ক গঙ্গোপাধ্যায়।

    পরবর্তীকালে তাঁর কবিতায় যে বিপুল পরিবর্তন ঘটেছে, তা চিহ্ণিত করতে পেরেছেন বহতা অংশুমালী মুখোপাধ্যায় যিনি বলেছেন মলয়ের সাহিত্যে পৌরুষের উপস্হিতির কথা ; এবং সোনালী মিত্র, যিনি মলয় রায়চৌধুরীর জীবনের ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে মলয় পুরাণ-বর্ণিত শ্রীকৃষ্ণের মতো। সোনালী মিত্র বলেছেন, জীবনের কোনো ঘটনা লুকোছাপা করেননি মলয়। মুসলমান যুবতী কুলসুম-এর সংসর্গ যেমন স্বীকার করেছেন, তেমনই সেই তরুণীর কথা যিনি মলয়কে সঙ্গে নিয়ে ইলোপ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং প্রত্যাখ্যাত হয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন অথবা সেই ডিভোর্সি যুবতীর কথা, যিনি মলয়ের সঙ্গে পরিচয়ের প্রথম দিনই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তাঁর ইউটেরাস নেই। এই মহিলারাই মলয়ের অবন্তিকা হয়ে দেখা দিয়েছেন। ফলে, আমরা পাই তাঁর নতুন পর্বে অকল্পনীয় বাকপ্রতিমা, নিজের মাথা কেটে প্রেমিকাকে উপহার দেবার প্রস্তাব। “মাথা কেটে পাঠাচ্ছি যত্ন করে রেখো” কবিতাটি ইউটিউবে আবৃত্তি করেছেন দশজন তরুণী। সমীর রায়চৌধুরী মলয়ের অবন্তিকা সম্পর্কিত কবিতা আলোচনাকালে দর্শিয়েছেন যে অবন্তিকা নামের যুবতীরা বনলতা, নীরা, সুপর্না, গায়ত্রী নন। মলয়ের নারী একজন পোস্টমডার্ন নারী। বাংলা কবিতার ইতিহাসে মলয় রায়চৌধুরীই প্রথম, যিনি ‘আভাঁগার্দ’ কবিতা লিখেছেন।

    মলয় রায়চৌধুরীর বাল্যস্মৃতি “ছোটোলোকের ছোটোবেলা” পড়ে আমরা জানতে পারি যে তাঁর শৈশবের ইমলিতলা পাড়া ছিল পৌরাণিক দেবী-দেবতার পাড়া, সেখানে জাতিপ্রথার এবং ধর্মের বাঁধন ছিল না। শুভশ্রী দাস সেকারণে বইটির ঘটনাবলীকে বলেছেন জাদুবাস্তব। “ছোটোলোক” কেন ? সেকথা বলেছেন অরিজিৎ সব্যসাচী দাশ, “"ছোটলোক"। ঠিক সেজন্যই যেন তাঁরা ছিলেন, ইমলিতলায় আলাদা, দরিয়াপুরে আলাদা, পাটনার বড়লোক বাঙালিদের চেয়ে আলাদা, পেনিটিতে আলাদা, আহিরিটোলায় আলাদা, যে উদ্বাস্তুরা গোলা রোডে আর ভোমরপোখরে এসেছে তাদের চেয়ে আলাদা, যারা কলকাতায় থাকে তাদের চেয়েও আলাদা।”  অভিনব সেই ইমলিতলা পাড়া, যেখানে অন্ত্যজদের সঙ্গে মলয় ও তাঁর দাদা ইঁদুর পোড়া, শুয়োরের মাংস, ছাগলের থনের ঝোল খেয়েছেন তাড়ি, বাংলা মদ, গাঁজা সহযোগে। যে পাড়ায় এক বৃদ্ধ মলয়দের রকে বসে শিশুদের অশ্লীল গালাগাল শেখান। উদ্বাস্তু পরিবারের সদস্য না হয়েও মলয় সেই অভিশপ্ত জীবনের ভয়াবহতা একটামাত্র কবিতার মাধ্যমে যে প্রকাশ করতে পেরেছেন তা ব্যাখ্যা করেছেন সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, ‘কে একজন ঝুলছে’ কবিতায়। 

    ইমলিতলার ছোটোলোক পাড়ার নিবাসী হয়েও কী ছিল না সেই বাড়িতে ! উত্তরপাড়া থেকে আনা সাবর্ণ চৌধুরীদের ইরানি আতরের আলমারি, কোলাপসিবল গেটের মতন গড়গড়া, সোনালী ফ্রেমের বিশাল আয়না, এইচএমভির চোঙাঅলা গ্রামোফোন, গহরজানের সময় থেকে রকর্ড, বীণা, অরগ্যান, হারমোনিয়াম, সেতার, দেয়ালে টাঙানো বাঘ, হরিণ, নেকড়ের মুখ। তাঁর মেজদাকে তাঁর বড়ো জ্যাঠা এক বেশ্যার কাছ থেকে দেড়শো টাকায় কিনেছিলেন। কোনো সাহিত্যিকের পরিবারে এরকম অভিজ্ঞতা সঞ্চিত বলে মনে হয় না। বাংলার বাইরে বসবাস করেও বাংলার প্রতি মলয়ের ভালোবাসা পরিলক্ষিত হয় বাংলার ইতিহাস নিয়ে লেখা তাঁর জাদুবাস্তব উপন্যাস ‘জিন্নতুলবিলাদের রূপকথা’ ; বাংলার ইসলামি শাসকরা বঙ্গদেশকে বলতেন জিন্নতুলবিলাদ, অর্থাৎ মর্ত্যের স্বর্গ। তিনি একটি কবিতায় বলেছেন যে আবার জন্মাতে চান, কিন্তু অবিভক্ত বাংলায়, তাই দুই বাংলার মানুষের ভাষা হয়ে জন্মাতে চান। পশ্চিমবাংলার বামপন্হী শাসনের সময়কালকে ফুটিয়ে তুলেছেন ‘গহ্বরতীর্থের কুশীলব’ নামের জাদুবাস্তব বড়ো গল্পে।

    এই প্রসঙ্গে অনুপম মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “মলয় রায়চৌধুরীর স্বাভাবিক বিরোধাভাসটা এই যে, তিনি নিজেকে ছোটলোক ইত্যাদি দাবি করেও, বাঙালির সামগ্রিক হড়কে যাওয়ার কবন্ধ শরিক হননি, বিশেষ কোনো প্রাতিষ্ঠানিক খুড়োর কলে নিজেকে জুড়ে ফেলেননি, বরং নিজেকে সারা পৃথিবীর সাপেক্ষে জায়মান লেখক করে তুলতে পেরেছেন। তাঁর উপন্যাস এবং কবিতা এবং প্রবন্ধকে প্রাদেশিক চেতনার বাইরে দাঁড়িয়ে পড়া যায়। এটা এই মুহূর্তে জীবিত দ্বিতীয় কোনো বাঙালি সাহিত্যিক সম্পর্কে আমি বলতে পারছি না। এটা আমার অজ্ঞতাপ্রসূত হলেও, দৃঢ় ধারণা, এবং কোনো প্রশংসাবাক্য নয়। একজন লেখকের জীবনে প্রায়ই এটা ঘটে যে, তিনি নিজের জন্য একটি লাগসই ভাবমূর্তি বেছে নিলেন, কিন্তু নিজেকে সেই মাপে ঢালতেই পারলেন না। মলয় রায়চৌধুরীর ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে। তিনি নিজেকে বিহারের ইমলিতলা থেকে উঠে আসা ছোটলোক হিসাবে পেশ করতে চাইলেন, কিন্তু হাড়ে হাড়ে বোঝা গেল এই লেখকটি সাবর্ণ রায়চৌধুরীর বংশপরিচয়েই অধিক মানানসই, কারণ, মলয়ের মধ্যে যে আভিজাত্য আছে, যে আত্মসচেতন উদাসীনতা আছে, তা গত ১০০ বছরের বাংলা সাহিত্যে যথেষ্ট দুর্লভ, তাঁর মধ্যে অস্তিত্বের উৎকণ্ঠা থাকলেও বাংলা বাজারের ইতরতা নেই, প্রান্তিকতা যদি কিছু থেকে থাকে, সেটা স্বরচিত।”

    মলয়ের নিরীক্ষামূলক আখ্যান ‘নখদন্ত’ সম্পর্কে শর্মিষ্ঠা ঘোষ বলেছেন, “ডিকনস্ট্রাকশন করেছি আমার সাধ্য অনুযায়ী , ইউনিটি অব টাইম প্লেস অ্যাকশান মান্য করল কি করল না ভাবা বাদ দিয়ে বা ফার্স্ট পার্সন ন্যারেটিভের একটি বিপজ্জনক প্রবণতা , নিজ মতবাদের প্রতিফলন কাহিনী থ্রেডকে প্রভাবিত করতে পারে এই আশঙ্কা সাময়িক ভাবে সরিয়ে রেখে। রোমান এ ক্লেফ না বিলডানসরোমান তর্কাতর্কির পরেও যে সংবেদনশীলতা ভিখারি পাসওয়ান কেসের আগে পরে একটি তৃতীয় নয়নের উপস্হিতি মহাকালের দৃষ্টি না এড়ানো নেমেসিস হয়ে আসে তা অস্বীকার করা যায় না।” মলয়ের ছোটোগল্পকে উদয়ন ঘোষ, যিনি একদা কমিউনিস্ট ছিলেন, তাঁর প্রবন্ধে বলেছেন “পোস্টমডার্ন ও পোস্টকলোনিয়াল”।

    মলয় রায়চৌধুরী তিনটি উপন্যাস বেশ বিখ্যাত, যাকে আলোচক সমীর সেনগুপ্ত, অজিত রায়, কৌস্তুভ দে সরকার, সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন ট্রিলজি -- ডুবজলে যেটুকু প্রশ্বাস, জলাঞ্জলি ও নামগন্ধ। এই তিনটি উপন্যাসকে মলয় আরও এগিয়ে নিয়ে গেছেন ঔরস এবং প্রাকার পরিধিতে। মলয় রায়চৌধুরী রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভালো চাকুরি ছেড়ে নাবার্ডে গ্রামীণ উন্নয়ন আধিকারিকের চাকরি নেন, ভারতের গ্রামজীবন দেখার লোভে এবং সেই জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে উপন্যাস ও গল্প লেখার অভিপ্রায়ে। এই অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের কারণে তিনি কলকাতার বন্ধুদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছিলেন। ভালোই করেছিলেন। আমরা অবশ্য দেখেছি তিনি অনুযোগ করেছেন যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের চাকরি ছাড়ার ফলে তাঁর মাইনে এবং পেনশন অনেক কমে গেছে। সাহিত্যের খাতিরে সেই ক্ষতি এমন কিছু নয়।

    উপন্যাসগুলোতে মলয় রায়চৌধুরী অসাধারণ বর্ণনায় উপস্হাপন করেছেন বিহারে জাতিপ্রথার কারণে ধ্বংসযজ্ঞ, পশ্চিমবাংলায় চাষের, তাঁতের, কোল্ড স্টোরেজের নোংরা রাজনীতি, উদ্বাস্তুদের নিয়ে নেতাদের ছেলেখেলা,  অবুঝমাঢ়ে আদিবাসীদের কোনঠাশা জঙ্গলজীবন। অলোক গোস্বামী ব্যক্তি মলয়কে অপছন্দ করেও প্রশংসা করেছেন মলয়ের দৃষ্টিপ্রতিভা ও গদ্যনির্মাণকে। অজিত রায় এবং সমীর সেনগুপ্ত মলয়ের প্লটনির্মাণকে গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন তাঁর প্রথম পৃষ্ঠায় সন্ত্রাস ও শেষে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটানোর টেকনিকের কথা যা পাঠকদের হতবাক করে দেয়। ‘ঔরস’ উপন্যাস প্রসঙ্গে রঞ্জন রায় লিখেছেন, “দু'দিন ধরে কোনরকমে নাওয়া-খাওয়া সেরে একটানা পড়ে শেষ করলাম --"ঔরস" উপন্যাস। অসাধারণ লেগেছে। হয়ত মলয়বাবুকে নিয়ে কিছু পূর্ব ধারণার কারণে এমন গদ্যরচনা আসা করিনি। এটি উপন্যাসের ভঙ্গিমায় একটি সোশিও অ্যান্থ্রপলজিক্যাল বয়ানকথা। আমি বীজাপুর, নারায়নপুর, কোন্ডাগাঁও, বস্তার, দন্তেওয়াড়া সুকমা গেছি। অবুঝমাড়ে ঢুকি নি। বেশ কিছু প্রত্যক্ষদর্শীর রিপোর্ট পড়েছি যাতে শহুরে মানুষের রোম্যান্টিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রবল।

    এই প্রথম 'অবুঝমাড়' নিয়ে একটি অথেন্টিক লেখা পড়লাম, তার প্রকৃতি, বনসম্পদ ও মানুষ নিয়ে। আশি পেরোনো মলয়বাবু কবে এসব এমন নিবিড় করে দেখলেন? আমি মাথা নোয়ালাম। যারা পড়েন নি পড়ে ফেলুন; ঠকবেন না -- গ্যারান্টি!” বলা বাহুল্য যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নোট পোড়াবার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি যেমন আমাদের দিয়েছেন ‘ডুবজলে যেটুকু প্রশ্বাস’ উপন্যাস, তেমন নাবার্ডের গ্রামীণ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসাবে দিয়েছেন, ‘নামগন্ধ’, ‘ঔরস’ ও ‘প্রাকার পরিখা’।

    মলয় নিজেকে বিস্তারিত করেছেন বিভিন্ন জনারে, যেমন রহস্যোপন্যাস “নোরা পরীর কংকাল প্রেমিক”, “ভ্যান গগের কান”-এ, তেমনই ইরটিক উপন্যাস লিখেছেন “অরূপ তোমার এঁটোকাটা” নামে। বহতা অংশুমালী মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, “উপন্যাসের  নামটা আমাকে বুঝতেই দেয়নি ভিতরের খনিজের উপস্থিতি। বুঝিনি এই অতি সংক্ষিপ্ত উপন্যাসের প্রতিটি লাইন এক বিরল জীবনদর্শনের মুখোমুখি করে দেবে আমাকে। এক অন্য ধরণের সত্যানুসন্ধান , সাধারণ খুনের মামলার প্রেক্ষাপটে যা এক যুবক-যুবতীর উৎকেন্দ্রিক আরণ্যক ভালোবাসা থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে। সবটুকু মিলিয়ে বলা যায় যে এরকম প্রেমের উপন্যাস, যা কিনা অনেকগুলি বহুমুখী সত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা বহুভূজের মধ্যে আমাদের এক অন্যরকম জীবনচেতনার মুখোমুখি করে দেয়, খুব বেশী লেখা হয় নি বাংলা ভাষায়। বিষয়বৈচিত্র্য ও সাহসী মনোজ্ঞ বর্ণনায় এই উপন্যাসটি বড্ড আলাদা, উৎকেন্দ্রিক, ঠিক এর লেখকের মতোই। পড়ে দেখতে পারেন সময় করে। মনের জটগুলো খুলে যাবে (অন্ততঃ আমার তো গেছে), আলো আসবে মনে।”

    ইরটিক উপন্যাস ‘অরূপ তোমার এঁটোকাঁটা” আলোচনায় অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “স্থির কেন্দ্র, ঘুর্ননের আপাত স্থির বিন্দু--- যাকে জন অ্যাশবেরী  'আ হিম টু পসিবিলিটি' বলে থাকেন, তা এই নভেলাতে ঘেপ্‌টে আছে জটিল এক কেমোফ্ল্যাজে। তিনটি ভিন্ন ডেমোগ্রাফির তিন কথককে উপস্থিত করে যে আখ্যানের বুনন তার স্থির কেন্দ্র দুটিঃ এক-  পোস্ট কোলোনিয়াল ভারতের রাজনৈতিক প্রেক্ষিত। ভারতবর্ষ, তরুণতর মেধাবী বাঙ্গালীর রাজনৈতিক সচেতনতা আর তার  উত্তাল অভিমুখ; দুইঃ গ্লোবাল কানেকশন- আমেরিকার হিপ্সটার আন্দোলনের তরঙ্গ। সেই তরঙ্গ মুহুর্মুহু আছড়ে পড়ছিল, ষাট থেকে সত্তরের  প্রথম ভাগে- নেপাল থেকে বারানসী। গুরু থেকে গাঞ্জা। বেলাগম সেক্স। তুলকালাম মাদক। অব্যর্থ শূন্যের ভেতর অনিশ্চিত জীবনের মানে খোঁজা। ভারত তখন  হয়ে উঠেছে ঘরছাড়া হিপিদের হতাশ-নিরঞ্জন অভয়াক্ষেত্র- ইহমুক্তি খুঁজতে আসা শয়ে শয়ে মার্কিনি তরুন-তরুণী বারানসীর গলিতে গলিতে। এই বেনারসকেই বেছে নিয়েছেন মলয় তার নভেলার স্থানিক পট হিসেবে। কলকাতা থেকে বিকেন্দ্রীকরণ। আবার কলকাতা ও প্রবাস, বাংলা সাহিত্যের কেন্দ্র ও প্রান্তিক, এই দুই বাইনারি ছাপিয়ে তা মলয়ের আত্মজৈবনিক প্রয়াসও। ষাটের দশক। সত্তরের প্রথম ভাগ।  বিটরা এসে যাবেন, কারণ- মলয় ও হাংরিদের  বিট-কানেকশন ও মিথ পর্যায়ের। মলয় আমাকে এক  সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন- হাংরিরা নয়, বরং বিটরাই অনেকভাবে  হাংরিদের প্রভাবে প্রভাবিত ছিলেন। ইতিহাস, দর্শন, মনোবিশ্লেষণ, ক্র্যাফট ও  কৌশলের নিরিখে এটি, হতে পারে, মলয় রায়চৌধুরীর শ্রেষ্ঠ ফিকশন কাজ।”

    উপন্যাসগুলো সম্পর্কে সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর আলোচনার শুরুতেই বলেছেন, “মলয় রায়চৌধুরীর  উপন্যাসের বিষয়, ভাষা ও নির্মাণকে বুঝতে চাইলে সবার আগে পাঠককে সরে আসতে হবে উপন্যাস-পাঠের প্রচলিত অভ্যাস থেকে।  মলয় খুব সচেতনভাবে প্রত্যাখ্যান করতে চেয়েছেন আমাদের চৈতন্যের ঔপনিবেশিকরণের ভিত্তিতে গড়ে-ওঠা উপন্যাস-ভাবনাকে। মলয়ের বয়ন-বুনন পদ্ধতি ও ভাষাতাত্ত্বিক সন্দর্ভ, বাংলা ও বিহারের প্রকৃতি, সমাজ ও ব্যক্তিমানুষের পারস্পরিক সম্পর্কসমূহের দ্বান্দ্বিক সমগ্রতাকে এবং তাদের পরিবর্তনের ধারাবাহিকতাকে অবিচ্ছিন্ন করে তুলতে চেয়েছে--- চারপাশের বাস্তবের সমালোচনা করতে-করতে ও তাকে অতিক্রম করে শিল্পের নিজস্ব বাস্তব নির্মাণ করতে-করতে।তার ফলে মলয়কে সবার আগে ভাঙতে হয়েছে প্রথাগত ইউরোপীয় কোড বা সংকেতগুলিকে। এমনকি, সেই সঙ্গে, তাঁকে সমালোচনা করতে হয়েছে, অতিক্রম করে যেতে হয়েছে, ইউরোপ থেকে আসা প্রধান আধুনিকোত্তরবাদী সন্দর্ভগুলির প্রশ্নহীন বশ্যতা ও উপযোগিতার মানসিকতাকেও। অনিবার্য পরিণতি হিসাবে মলয়ের উপন্যাস তিনটিতে এমন এক নতুন, এতদিন আমাদের সামনে অনাবিষ্কৃত, ভারতীয় বাস্তবতার সন্ধান পাই, যাকে ঔপনিবেশিক চৈতন্য-কাঠামোর পরিসীমার মধ্যে ধারণ করা সম্ভব ছিল না। ঔপনিবেশিক শাসক ও শোষিত মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের কয়েক শতাব্দীর ধারাবাহিকতা আবিশ্বে যে-নিষ্ঠুরতা ও সাংস্কৃতিক আক্রমণ-অবক্ষয়ের জন্ম দিয়েছে--- তাকে প্রত্যাখ্যান করতে চেয়েছেন বলেই মলয়কে এই রাস্তায় হাঁটতে হয়েছে। অন্যদিকে আবার, মলয়ের বয়ন-বুনন পদ্ধতি ও ভাষাতাত্ত্বিক সন্দর্ভ কিন্তু যান্ত্রিকভাবে ইউরোপকে প্রত্যাখ্যান করে প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বয়ান বা টেক্সটের মধ্যে পাঠককে সীমাবদ্ধ রাখার বার্তা প্রেরণ করে না। পক্ষান্তরে তাঁর বয়ন-বুনন পদ্ধতি ও ভাষাতাত্ত্বিক সন্দর্ভ ইউরোপীয় জ্ঞানতত্ত্ব এবং ভারতীয় স্বাধীন অভিজ্ঞান অনুসন্ধান ও সৃষ্টির আবেগ ও স্পন্দনশীলতার দ্বান্দ্বিক সংশ্লেষের পরিণতি। মলয় তাঁর নিজের মতো করে, তাঁর উপন্যাস তিনটিতে ধারাবাহিকভাবে, ঔপনিবেশিকতার দায়মোচনের প্রক্রিয়াকে বিকশিত করে তুলেছেন। তা করতে-করতে তাঁর উপন্যাসের বয়ান একই সঙ্গে ধারণ করেছে আধিপত্যকামী কেন্দ্রীয় ব্যবস্হাসমূহ ও তাদের বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে-থাকা প্রান্তীয় শক্তিসমূহের দ্বান্দ্বিকতাকে এবং ওই কেন্দ্রীয় ব্যবস্হাসমূহ থেকে উৎপন্ন মহাসন্দর্ভ ও প্রান্তীয় বর্গের প্রতিদিনের যাপিত জীবনের গভীর থেকে উৎসারিত বিকল্প সন্দর্ভের দ্বান্দ্বিকতাকে।”

    এলেক্ট্রা কমপ্লেক্স নিয়ে মলয় রায়চৌধুরী লিখেছেন ‘আঁস্তাকুড়ের এলেক্ট্রা’ উপন্যাস। মানুষের বিস্টিয়ালিটি নিয়ে লিখেছেন ‘জঙ্গলরোমিও’ উপন্যাস। তরুণীদের স্বেচ্ছাকৃত অরগ্যাজমের আগ্রহ নিয়ে লিখেছেন ‘লাবিয়ার মাকড়ি’ উপন্যাস। নেক্রোফিলিয়া, পেডোফিলিয়া, এক্সিবিশনিজম, ফ্রটারিজম, সেক্সুয়াল স্যাডিজম, পাইরোমেনিয়া, ক্লেপটোম্যানিয়া ইত্যাদি মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত পুরুষদের মৃত নারীদের ধর্ষণ করার প্রবৃত্তি নিয়ে লিখেছেন ‘নেক্রোপুরুষ’। মলয়ের অনুবাদের কাজও প্রশংসার্হ ; তিনি যে কেবল প্রখ্যাত কবি বোদলেয়ার, র‌্যাঁবো, ভেরলেন, জাঁ জেনে, অঁতনা আতো, উইলিয়াম ব্লেক, ব্লাইজি সঁদরা, জাঁ ককতো, গিন্সবার্গ, সুররিয়ালিস্ট কবিদের অনুবাদ করেছেন, তাই নয় ; তিনি পাকিস্তানি, উইঘুর, তিব্বতি, ইরানি, নাগা, মিজো কবিদেরও অনুবাদ করেছেন। জীবনী লিখেছেন র‌্যাঁবো, বোদলেয়ার, জেমস জয়েস, হেনরি মিলার, গিন্সবার্গ ও বিনয় মজুমদারের।

    মলয় রায়চৌধুরী এখন আশির কোঠায়। আঙুলে আরথ্রাইটিস হবার পর এই বয়সে কমপিউটার শিখে নিয়েছেন। আমরা চাইবো তিনি এইভাবেই আমাদের মাঝে সক্রিয় থাকুন।
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 | 30 | 31 | 32 | 33 | 34 | 35 | 36 | 37 | 38 | 39 | 40 | 41 | 42 | 43 | 44 | 45 | 46 | 47 | 48 | 49 | 50 | 51 | 52 | 53 | 54 | 55 | 56 | 58 | 59 | 60 | 61 | 62 | 63 | 64 | 65 | 66 | 67 | 68 | 69 | 70 | 71 | 72 | 73 | 74 | 75 | 76 | 77 | 78 | 79 | 80 | 81 | 82 | 83 | 84 | 85 | 86 | 87 | 88 | 89 | 90 | 91 | 92 | 93
  • আলোচনা | ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ | ১১০৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Malay Roychoudhury | ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১০:২০514418
  • প্রতিক্রিয়া দিয়ে কেটে পড়বেন না । ঝেঁটিয়ে মন্তব্য করুন ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন