পিপুলতলা গ্রামের ডামল বেশ কদিন বাড়িতে ছিল না। আজ সন্ধের বেশ একটু পরেই সে বাড়ি ফিরল।
এরকমই তার স্বভাব। বাড়ি থেকে সে বেরোয় ভোরের আলো ফোটার আগে, আর ফেরে রাত্রি প্রথম প্রহরে। মাঝে মাঝে আবার বেশ কদিন তার পাত্তা থাকে না। গ্রামের লোক ডামলকে দেখতে পায়, তার বড়োসড়ো অসুখ হলে কিংবা বড়ো পালাপার্বণে। অবিশ্যি অসুখ তার করে না বললেই চলে। ডামলের যা স্বাস্থ্য অসুখ-বিসুখ তাকে তেমন কাবু করতে পারে না। লম্বা দোহারা চিতার মতো চেহারা। প্রবল শক্তি এবং অসম্ভব দ্রুত তার চলা ফেরা। লাঠি বা বল্লম খেলায় ওস্তাদ। রণপা নিয়ে সে যখন দৌড়য় – তেজি ঘোড়াও হার মানে তার গতিতে।
উঠোনে এসে ডামল যখন দাঁড়াল, ডামলের বুড়ি মা আঁতকে উঠেছিলেন প্রথমে। ঘরের ভেতরে জ্বলা প্রদীপের আভাসে চিনতে না পেরে বুড়ি চেঁচিয়ে উঠেছিলেন, “কে র্যা ওখানে”।
ডামল হেসে ফেলল, বলল, “নিজির ব্যাটারে চিনতি পারলিনি, কেমন মা বটে রে তুই?”
শ্বাশুড়ি আর ডামালের গলা শুনে রান্নাঘরের দরজায় লম্ফ হাতে এসে দাঁড়াল মহুল, ডামালের বউ। লম্ফের আলোয় উঠোনের আঁধার কিছুটা ঘুঁচল। ডামলের মা একটু লজ্জা পেলেন, ছেলের কথায়, “তোরে চিনব কী করে রে, ড্যাকরা? মুখভর্তি দাড়ি, মাতায় চুলের বোজা...কি চেহারা করেছিস?”
মাটির দাওয়ায় উঠে বসল ডামল, বুক খোলা ফতুয়াটা খুলে ঝুলিয়ে দিল, আড়ায়। বউকে বলল, “হুল, এক ঘটি জল দে দিনি। তেষ্টা পেয়েচে খুব”। আদরের বউকে ডামল হুল বলে ডাকে।
ডামলের মা ছেলের পাশে বসলেন, “দিন দিন তুই বাপের মতন হয়ে উঠচিস। ভিটেতে তার মন বসত না। কোথায় যেত, কী করত কিচুই খোলসা করেনি কোনদিন। একলষেঁড়ে। আর ঠিক তোর মতোই হুট করে ঘরে ঢুকেই হ্যা হ্যা করে হাসত। হাড়জ্বালানে”।
বউয়ের হাত থেকে এখো গুড়ের ডাবটা নিয়ে মুখে পুরল ডামল। তারপর মুখের উঁচুতে ঘটি তুলে গলায় ঢালতে গিয়েও থমকে গেল, হা হা করে হেসে বলল, “বাপের ব্যাটা বটি। বাপের মতো হব না তো কি, ও পাড়ার নাদু মোড়লের মতো হবো?” তারপর কলাৎ কলাৎ শব্দে ঘটির জল শেষ করে, খালি ঘটি দাওয়ায় রাখল।
ডামলের মা একটু অপ্রস্তুত হলেন। মঝের পাড়ার নাদু, গাঁয়ে না মানে আপনি মোড়ল ছিল। ডামল তখন ছোট্ট। ডামলের বাপ ডামলের মতোই মাঝেমাঝেই হপ্তাভর, মাসভর বাড়ি থাকত না। তখন নাদু সন্ধের পর বাড়ির সামনে ঘুরঘুর করত। ‘চোখ গেল’ পাখির শিস দিত। নাদুর ছিল ছোঁকছোঁকানি রোগ, একলা মেয়েছেলে দেখলেই হুলো হয়ে উঠত। ডামলের মা বেশ কিছুদিন দেখে দেখে থাকতে পারেননি। একদিন রামদা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেড়ার ধারের পেয়ারাগাছের আড়ালে। নাদু শিস দিয়ে দুবার ‘চোখ গেল’ ডাকতেই – খনখনিয়ে উঠেছিলেন ডামলের মা, “কোন আবাগির পুতের আঁতে চোক গেল পাকি সেঁদিয়েচে র্যা? আয় না, এই রামদার চোপে গলাটা ফাঁক করে দি। দেকবি? সে পাকি ক্যামনে উড়ে যায় খাঁচা ছেড়ে”? এমনিতেই ডামলের বাপকে নাদু ভয় পেত খুব। ওই দিনের পর সেই ‘চোখ গেল’ পাখি আর কোনদিন ফিরে আসেনি ওদের পাড়ায়।
সেই ঘটনার কথাই আজ মনে করিয়ে দিল ডামল। বহুদিন হল নাদু যমের দখিন দুয়োরে গেছে। ডামলের বাপও চলে গেছে বছর তিনেক হল। ডামল বড়ো হয়েছে, সংসার হয়েছে, আর অবিকল বাপের মতোই হয়ে উঠছে দিন কে দিন। ভুরু কুঁচকে ডামলের দিকে তাকিয়ে ডামলের মা বললে, “আলঝাল বকে কতা ঘুরোস ক্যান? কোন চুলোয় ছিলি অ্যাদ্দিন – কী কাজ আমারে বল দিনি”।
ডামল মায়ের দিকে তাকিয়ে চোক নাচিয়ে মুচকি হেসে বলল, “আমার বাপ তোরে কোনদিন কয়েচিল, কোতা যায়, কী করে? শুধোলি কইত “আজকাজ”। আমারও সেই “আজকাজ”। তয় কোন আজা, কেমন আজা, তার আনি কে, সেটি বুলতে পারবনি। আমার বাপও ওই কাজই করত, সে কতা তুই, জানিস। তুই যে ওই ভুঁড়ো-শেয়াল নাদুটাকে ঢিট করেছিলি, সে কতাটা জেনেই বাপ আমার, তোকে-আমাকে ছেড়ে লিশ্চিন্তে বাইরে বাইরে কাজে ফিরতে পারত। তুই আমার বৌ হুলটার বুকেও অমন বল এনে দে দিকিন, মা”।
“নে, নে আমারে আর বেশি ভালাই বুলোতি হবে নি। আজকাজ করিস না কি ছাইপাঁশ করিস, বুজি না বাপু। আজার সঙ্গের নোকেরাও দেকেচি – কেমন সোন্দর সাজপোশাক পরে, মাথায় পাগ বাঁধে, গলায় এতএত সোনার হার পরে। তোদের বাপ-ব্যাটার মতো অখদ্দ্যে চেহারার কাউকে কোনদিন দেকিনি”।
ডামল অবাক হয়ে বলল, “তুই আবার আজা-আনিদের কবে চাক্ষুষ করলি, মা?”
ডামলের মা মুখ ঝামটা দিয়ে বললেন, “ক্যানে? যাত্রাপালায় দেকায় না বুজি? আজা থাকে, আনি থাকে, তাদের সঙ্গে মহামন্তী, সেনাপতি, নগরপাল...দেকিনি নাকি?”
ডামল হো হো করে হেসে উঠল, তারপর বলল, “কতাটা কয়েচিস ঠিকই মা, ওরা হল গে উঁচু থাকের মানুষ। ওরা সবাই মিলে আমাদের এই আজ্যটা চালায়। কিন্তু ওদের আদেশে আসল কাজগুলো করে নিচের তলার মানুষরা। আমাদের মতন মানুষরা। যেমন ধর, সেপাই, সান্ত্রী, ছোট কোটাল, বড় কোটাল...সে অনেক লোক”।
ছেলেটা তার মাকে ফাঁকি দিতে পারেনি – ধরে ফেলেছে ঠিক, ডামলের মা এমন একটা হাসি মুখে নিয়ে বললেন, “তয় তুই কি? সেপাই? সান্ত্রী না কোটাল”?
ডামল আবার হাসল, বলল, “অত সহজ লয় কো মা। আজ্য চালাতে কত নোকের যে কত কাজ থাকে – সে তোর শুনে কাজ নেই কো। এটুকুন জেনে রাক, আমার বাপ আর আমিও তাদেরই একজন”।
ডামলের মা বুঝলেন, ছেলে শেষমেষ খোলসা করে কিছুই ভাঙল না। এড়িয়ে গেল কথাটা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপ করে বসে রইলেন। ডামল মায়ের এই আকুতিটা বোঝে। এ গ্রামের কেউ চাষ করে, কেউ দোকান খুলে বাণিজ্য করে, কেউ মাটির হাঁড়ি কলসি বানায়, কেউ লোহার দা, কাটারি, শাবল বানায়। এই সব লোকদের চেনা যায়, বোঝা যায়। কিন্তু তার বাপ কী করত, এবং এখন সে কী করে - কেউ জানেও না, বোঝেও না। গ্রামের মণ্ডলসভায় তাদের নিয়ে জল্পনা হয়, সে জানে। কেউ ভাবে ডামলের বাপ ডাকাতি করত, কেউ বলে ঠগী। ডামলও এখন সেই দলেই নাম লিখিয়েছে। তা নাহলে তাদের পরিবারটা চলে কী করে? ডামলের বাপ কখনও কখনও দুমাস তিনমাস বাড়ি ফিরত না, কিন্তু তাতেও তার পরিবারকে কোনদিন অভাবে-আতান্তরে পড়তে হয় না। কেন? তাদের পেশার এই দুর্বোধ্যতার কারণেই গ্রামের কুচুটে দুর্জনেরা ওদের পরিবারটিকে সদাসর্বদা এড়িয়ে চলে। ঘনিষ্ঠ মিত্রতা করতেও যেমন কেউ আসে না, তেমনি আসে না সামান্যতম কলহ করতেও।
ডামল মায়ের ডানহাতটা নিজের হাতে তুলে নিয়ে, মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, “বিশ্বেস যা মা, আমরা যা করি খুব গোপন আজকাজ। সে কথা বুক ফুলিয়ে পাঁচজনকে বলার মতন লয়। ছেলেমানুষ কাল থেকে দেকেচি, তোর কাচে ভিনগাঁয়ের এক মেয়েমানুষ আসত, আমি বলতাম “ময়নামাসি”। মনে আচে? সে এসে আমাদের পরিবারের সকলের তত্ত্বতাবাস করত। পয়সা-কড়িও দিয়ে যেত। এখনও তো তাই করে – ময়নামাসির মেয়ে ফুলকিদিদি। করে না?”
ডামলের মা ডামলের মুখের দিকে তাকিয়ে কথা শুনছিলেন। কিছু বললেন না, ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালেন। ডামল উত্তরে বলল, “ওরাও কিন্তু আমাদেরই মতো আজকাজ করছে, মা। কিন্তু এ কতা কোনভাবেই যেন কারও কাছে পেকাশ করিস না, মা। পাঁচকান হলেই আমাদের সবার জেবনে বেপদ নামবে”।
ডামলের মা কিছু বললেন না, চুপ করে বসে রইলেন অনেকক্ষণ। ডামল মুখ তুলে দাওয়ার কোণের দিকে তাকাল। হুল বসে আছে উনুনের সামনে, কড়াইতে কিছু রান্না হচ্ছে - বেশ সুবাস ছেড়েছে বাড়িময়। হুল মুখ তুলে তাকাল – চোখাচোখি হল ডামলের সঙ্গে। লম্ফ আর উনুনের আভায় তার মুখখানিতে আলো-আঁধারি ছায়া, কিন্তু চোখ দুটি বেশ উজ্জ্বল। সেই মায়াবী মেদুর দৃষ্টিতে সে একটু আনমনা হয়ে গেল।
এই ঘর, বুড়ি মা আর ওই যুবতী বউ নিয়ে তার সংসার – এই সব কিছু ছেড়ে তাকে কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়াতে হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় সব কাজ ছেড়েছুড়ে দিয়ে গ্রামে এসে জমি-জায়গা নিয়ে চাষ করবে। গ্রামের আর সব লোকের মতো গতরে খেটে ফসল ফলাবে – শস্যে ভরে তুলবে গোলা। তার বুকে পিঠে খেলা করবে – তার আর হুলের সন্তানরা…। তাদের নির্মল হাসিতে ভরে উঠবে এই বাড়ির উঠোন, দাওয়া আর ঘরগুলি…।
কিন্তু গ্রামে একটানা কিছুদিন থাকলেই তার মন-প্রাণ আনচান করতে থাকে। তার মন চলে যায় রাতের অন্ধকারে নির্জন পথে দৌড়ে চলায়। পথের ধারের চটিগুলিতে অপেক্ষা করে এক একজন অচেনা অজানা মানুষ – নির্দিষ্ট নির্দেশ নিয়ে – অচেনা পথের হদিস নিয়ে। এ রাজ্যের নগরে-বন্দরে তাকে ঘুরে বেড়াতে হয় নানান সংবাদের খোঁজে, বিচিত্র উদ্দেশে। ঠিক মানুষের থেকে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে হয় রাজধানীতে। এই রহস্যময় অথচ গুরুত্বপূর্ণ কাজে তার যেন নেশা ধরে গেছে – এই ধরনের দুশ্চিন্তা আর উত্তেজনাবিহীন গ্রাম্য জীবন তার জন্যে নয় – সেকথা বুঝে গিয়েছে বেশ ক’বছর। তাই আজকাল সে এই জীবনের জন্যে আর হাহুতাশ করে না। বরং বাড়িতে অবসর যাপনের সময়ও সে উদ্গ্রীব অপেক্ষায় থাকে কবে আসবে তার ডাক। এবারে অবশ্য সে এসেছে, মাত্র, দুটি রাতের ছুটি নিয়ে।
ডামল মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, “শোন না মা, আমি কিন্তু পরশু ভোর থাকতেই বেরিয়ে যাব। আর এবার ফিরতে ফিরতে অন্ততঃ মাস চার-পাঁচ…”।
ডামলের মা ডামলের হাত থেকে নিজের হাতটা এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিলেন, তারপর বেশ ক্রুদ্ধ স্বরে বললেন, “তাই বলি, মায়ের সঙ্গে তোর হঠাৎ এত নলপতা-সলপতা কেন? তুই বেরিয়ে যা, এখনই – পরশু কেন? তোকে থাকতে হবে না, আজই বেরিয়ে যা। অ বৌ, ভাত বেড়ে দে, ডামল বেরোবে…”।
ডামলের মা হাঁফাতে থাকেন রাগে এবং হতাশায়। ডামল চোখ তুলে তাকাল হুলের দিকে, হুল একইভাবে তাকিয়ে আছে – মাটিতে গড়া মূর্তির মত।
“ও মা, শোন না, রাগ করিস না। এবারটা যেতে দে। এ কাজটায় না গেলেই নয়। আমি কথা দিচ্ছি, এই কাজ সেরে অন্ততঃ ছমাস বাড়ির বাইরে পা রাখব না”।
ডামলের মা পাগলের মত বলে উঠলেন, “তুই কি জানিস, আজ প্রায় দু’মাস হল তোর বৌ পোয়াতি? এসময় ওই মেয়েটার সোয়ামিকে কাছে পাওয়াটা কত দরকারি তুই বুজিস? আমি এই বুড়ো বয়সে তোর সংসার সামলাবো, আর তোর বউকে নিয়ে আতুপুতু করে দিন কাটাব? পাষণ্ড, পিশাচ – ওরে ওই বাচ্চাটা যে তোর, তার প্রতিও তোর কোন দয়ামায়া নেই, রে অলপ্পেয়ে আক্খুটে? তুই পরশু যাবি তো? বেশ কথা। আমি কাল ভোরেই বেরিয়ে যাব বাড়ি থেকে… তোর সংসার তুই বুঝে নে… আমি এই জ্বালা আর সইতে পারবনি”।
তিন ধাপ পৈঠে ভেঙে মহুল দ্রুত নেমে এল উঠোনে, বুকে জড়িয়ে ধরল শাশুড়ি মাকে। কান্নাধরা গলায় বলল, “শান্ত হ, শান্ত হ, মা রে, এত রাগ করিসনি… নিজের বেটাকে গাল দেওয়া মানে আমার বাচ্চাকেও গাল দেওয়া, মা। ওর জন্ম যেমন ডামলের রক্তে, তেমনি তোর রক্তেও তো! ঠানদিদির গাল যে তার কাছে অভিশাপ, সেটা ভুলে গেলি কেন, মা? শান্ত হ, শান্ত হ…”।
মহুলের কথায় এবং স্পর্শে ডামলের মায়ের রাগ অনেকটাই স্তিমিত হল। দু হাতে বউয়ের মুখখানি ধরে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন, তারপর মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন, “এ সব আমি কি বলে ফেললাম রে, বউ, এ আমার কি হল…”।
ডামল উঠোনের একধারে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্যে অনুভব করল, তার বউ আর মায়ের পারষ্পরিক নির্ভরতা আর নিবিড় ভালোবাসা। সে স্বস্তির শ্বাস ফেলল নিঃশব্দে। তার মা আর বউয়ের মধ্যে, মমতা আর মায়ার এই যে নিবিড় সম্পর্ক, সে কি ওরা দুজনেই মা বলে? একজন অভিজ্ঞা জননী আর অন্যজন অপত্য-সম্ভবা। বাপ হয়ে এই মমতা সে কোনদিন অনুভব করতে পারবে কি? তার প্রতি তার বাপের কি এমন মমতা ছিল? কিছু একটা ছিল সেটা মমতা না হোক, অন্য কিছু।
ছোটবেলায় বাড়ি ফিরলে, বাবা তাকে কোনসময়ই কাছছাড়া করত না। হাটে, ধ্বজাপূজার মেলায় কিংবা গ্রামসভায় যেত বেটাকে কাঁধে চাপিয়ে। নদীতে নিয়ে যেত সাঁতার শেখাতে। সেখানে সারা গায়ে কাদা মাখিয়ে কুস্তি শেখাত। বড় হতে হতে নিজের হাতে শিখিয়েছে নদীতে নৌকো বাইতে। তারপর তরোয়াল চালাতে, বল্লম চালাতে শিখিয়েছে। শিখিয়েছে রণপা চড়ে দৌড়ে বেড়াতে। শিক্ষায় সন্তুষ্ট হলে বুকে জড়িয়ে ধরেছে ডামলের ঘর্মাক্ত শরীর। ডামলের আজও মনে পড়ে, তার বাবার মুখের সেই তৃপ্তির হাসি আর দুই চোখের আশ্চর্য আলো। বাবার মতো সে কি পারবে তার সন্তানকে বুকে করে গড়ে তুলতে?
ক্রমশ...