এই আগষ্ট মাসে আমার ‘মালটা’ দেশে থাকার কথা ছিল - যোসেফের বিয়ে অ্যাটেন্ড করতে। প্রায় এক-বছর আগে নিমন্ত্রণ পাঠিয়ে জানিয়ে রেখেছিল, গত বছর আগষ্টে ওদের কাগুজে বিয়ে হয়, আর এই বছর বড় করে চার্চ বিয়ে আর রিশেপশন হবার কথা ছিল। কিন্তু বলাই বাহুল্য সেই বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয় করোনার ঝামেলার জন্য। যোসেফের লেটেষ্ট বান্ধবী, গত বছর থেকে যে বউ হয়েছে, সেই মোনিকার সাথে আমার সামনা সামনি কোনদিন দেখা হ্য় নি। যোসেফের বেশীর ভাগ জিনিসই প্রেডিক্টেবল ছিল, সেই কারণেই মোনিকা-কে ব্যক্তিগত ভাবে না চিনলেও, তার বউ কোন দেশের মেয়ে হতে পারে সেই বিষয়ে আমি প্রায় ৯০% নিশ্চিত ছিলাম, আর আমাকে হতাশ না করে সে কলম্বিয়ার মেয়েকেই বিয়ে করল।
সেদিন রবিবার দুপুরে খেয়ে দেয়ে উঠে বসে বসে এই সব এলোপাথাড়ী স্মৃতি হাঁটকাচ্ছি, আর খুব মনে খুব ভাবছি “দেয়া-নেয়া” সিনেমাটার হিন্দি ভার্সেনটার নাম। ইচ্ছে করলেই ইন্টারনেটে দেখে নেওয়া যায়। কিন্তু নিজেই নিজেকে চ্যালেঞ্জ করছি, আজকাল খুব বেশি চ্যালেঞ্জিং জিনিসের মুখোমুখি তো হতে হয় না!
কিন্তু মনে হয় পুরানো স্মৃতি মনে করতে গিয়ে বেশী স্ট্রেস দিয়ে ফেলেছিলাম, কেমন যে টেলিপ্যাথিক ব্যাপার স্যাপার হয়ে গেল। এমন ভাবতে গিয়েই ফোন চলে এল যোসেফের! আমি তো বেশ অবাক, এমন অসময়ে ফোন বলে! কিন্তু ওদিকে জো-র স্বভাবও জানা আছে – ঠিক আমাদের গ্রামের মানিক-কাকার মত! মানে বুঝতে হবে লাইফে শান্ত শিষ্ট ভাবে বাকাল্যাপ করা প্রায় দুঃসাধ্য! সব সময় ঘোড়ায় জীন চড়িয়ে এসেছে যেন! ফোন করেই বলে, “সুকি, তুই আমাকে চটপট তন্দুরি চিকেনের রেসিপিটা পাঠিয়ে দে, যেটা সেই তুই আমাকে ইংল্যান্ডে দিয়েছিলি”! মাত্র দশ বছর আগে পাঠানো মেলের কথা বলছে তখনো যোসেফের জিমেল অ্যাকাউন্ট ছিল না। হটমেলে চালাচালি করতাম – তা সেই হটমেল অ্যাকাউন্টে কি প্রবলেম হওয়াতে সে পুরানো রেসিপির পাঠানো মেলটা খুলতে পারছে না – আর হার্ড কপি নেই! এদিকে আমিই বা কোথায় সেই ফাইল পাব! তন্দুরী চিকেনের রেসিপি হার্ড কপি নিয়ে বানাতে হলে ভারতীয় হিসাবে লজ্জা!
তাই ওকে বললাম, তুই ইন্টারনেট থেকে সার্চ করে দেখে নে না একটা, বি বি সি-এর রেসিপি গুলো দেখ, ওদের ইন্ডিয়ান রেসিপিগুলো ভালোই হয়। কিন্তু সে নাছোড় – যুক্তি হচ্ছে, আগে তোর রেসিপি ফলো করে সাকসেস এসেছে, তাই আজ ডিভিয়েট করে গেষ্টদের কাছে ছড়াতে চাই না। মোনিকার সব বান্ধবীরা আসছে, ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে যে আজকে আমি ইন্ডিয়ান রান্না করব – তাই এখন আর পিছোনো সম্ভব নয়। তুই যে করে হোক অথেন্টিক রেসিপি পাঠা। দরকার হলে হাতে লিখে ছবি তুলে পাঠা! আমি জানি ওদের গোটা ফ্যামিলি গর্ডন রামসের ভক্ত। এবং ওদের বাড়ি যখন গিয়েছিলাম ঘুরতে তখন দেখেছি গর্ডনের প্রায় সব বইই আছে ওদের কাছে। তাই জিজ্ঞেস করলাম, গর্ডনের গ্রেট এসকেপ বইটা আছে কিনা। কিছু দিন আগে আমি এই বইটা নিয়ে কিছু লিখছিলাম বলে হাতের কাছেই ছিল। ওই বইতে একটা ভালো তন্দুরীর রেসিপি আছে – তবে সেটা কোয়েল তন্দুরী। যোসেফ বই খুঁজে পেল – বললাম, কোয়েল রিপ্লেস করে চিকেন দিয়ে বাকি রেসিপি ফলো কর। পরের দিন শুনলাম সেদিনও গ্র্যান্ড সাকসেস পেয়েছিল তন্দুরীতে। মোনিকা খুশ, মোনিকার বান্ধবীরা খুশ – এবং ফলে যোসেফও খুশ।
যোসেফ এখন তার দেশে প্রোফেসর হয়ে গ্যাছে ইউনির্ভাসিটিতে। মেয়েদের প্রতি জো-র দূর্বলতা ছিল অসীম এবং পড়াশোনা চলাকালীন আমরা যে বাড়িতে থাকতাম সেখানে তা ছিল সর্বজনবিদিত। তবে সেই দূর্বলতা মাতৃ বা ভগিনী ভাবের নয় – পুরোটাই প্রেম মূলক। যোসেফ এর আন্ডারে এখন ছেলে পুলে মাষ্টার্স এবং পি এইচ ডি করে। মাঝে মাঝে আমাকে যোসেফ এক্সটারন্যাল একজামিনার হবার জন্য অনুরোধ জানায়। ইউনিভার্সিটি গিয়েও যোসেফ তার ট্র্যাডিশন বজায় রেখেছে, আমাকে যে কটা থিসিস এক্সামিন করতে বলেছে এখনো পর্যন্ত তার সব কটাই মেয়ে! এই নিয়ে একটু আধটু এদিক ওদিকে লিখেছিলাম – হালকা করে রিপিট করে দিচ্ছি খেই ধরিয়ে দেবার জন্য।
একদিন ইউনিভার্সিটি ল্যাবে কাজ করছি, হন্তদন্ত হয়ে হয়ে সাদা ল্যাব কোট পরে যোসেফ আমাদের ল্যাবে ঢুকলো। সে কাজ করত আমাদের পাশের ল্যাবে। হন্তদন্ত ব্যাপারটা আপেক্ষিক – যোসেফ হন্তদন্ত হয়ে যাচ্ছে মানে সে খুব ব্যাস্ত এমন কিছু নয়। ল্যাবে ঢুকেই আমাকে যোসেফ বলল,
“সুকি, এখন তোর সব ফালতু এক্সপেরিমেন্ট থামা। কারমেন বিশাল সমস্যায় পরে গ্যাছে, আমাদের যেতে হবে”।
কারমেন হল আমাদের সেই ইংল্যান্ডের বাড়িতে (গ্রেস হাউস) থাকা স্প্যানিশ মেয়ে যে আমাকে ভারতীয় রান্না নিয়ে প্রশ্ন করে পাগল করে দিত! কারমেন কি সমস্যায় পড়েছে যার জন্য আমাদের ছুটতে হবে এক্সপেরিমেন্ট ফেলে সেটা যোসেফ-এর কাছ থেকে বুঝে নিতে বেশ সমস্যা হল। যা বুঝতে পারলাম, কারমেন গ্যাছে অন্য কারো সাইকেল ধার নিয়ে সুপারমার্কেটে বাজার করতে। দোকানের সামনে একটা লাইট পোষ্টে সাইকেলটা চেন দিয়ে বেঁধে গিয়েছিল তালা লাগিয়ে – কিন্তু এবার চাবি হারিয়ে ফেলেছে। একটুখানি এদিক ওদিক খুঁজে প্রায় কাঁদো কাঁদো গলায় যোসেফ-কে ফোন করে সেই অবস্থা থেকে উদ্ধার করার জন্য। তাকেই কেন কারমেন ফোন করে তার কারণ আমি শুরুতেই ব্যাখা করে দিয়েছি। আমি বললাম , যাব না এখন, এক্সপেরিমেন্ট করছি। সেই শুনে যোসেফ বিশাল এক ডায়লগ দিল ভৈরব গাঙ্গুলির যাত্রার মত। আমি নাকি প্রকৃত বন্ধু নয় – দুঃসময়ে তার পাশে নেই ইত্যাদি ইত্যাদি। কি আর করা, অগত্যা বললাম চল। পাশে এক্সপেরিমেন্টে ব্যস্ত থাকা রব উইন্সলি-র পরামার্শ পেয়ে আমরা নীচের মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপের ডেরেকের কাছ থেকে চেন কাটার ধার নিয়ে হাজির হলাম হারবোর্ণ মার্কেটে।
পরের দৃশ্যে আমরা দুজন হারবর্ণ মার্কেটে মেন রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোষ্টে বাঁধা সাইকেলের চেন কাটার চেষ্টা করছি, পরণে সাদা ল্যাব কোট। কিছুক্ষণ পরেই দেখলাম কোথা থেকে পুলিশের গাড়ি চলে এল – মনে হয় আশে পাশে টহল দিচ্ছিল। এসেই আমাদেরকে পাওড়াও। ওদিকে পুলিশের গাড়ি আসতে দেখেই কারমেন হাওয়া – মেয়ে চালাক। যোসেফ পুলিশ-কে ব্যখ্যা করার চেষ্টা করছে কারমেনের ডাকেই আমরা হাজির হয়েছি। পুলিশ বলল কারমেনকে ডাকা হোক – কোথায় তখন কারমেন! অনেকক্ষণ হ্যাজানো চলল – আমরা ড্রাগ অ্যাডিক্ট কিনা, মানে সাইকেল চুরী করে ড্রাগ কিনি কিনা সেই নিয়ে তল্লাশী হল। সাদা পোষাক পরে আছি কিনা সেই নিয়েও বাওয়াল – শেষ পর্যন্ত ইউনিভারসিটির পরিচয়পত্র দেখিয়ে মুক্তি পেলাম।
কিছুদিন পরেই আবার পুলিশের কাছে ধরা খাওয়া – সেবারেও আমি আর যোসেফ তার ভাঙা গাড়িতে। মালটা দেশে সবসময়েই গরম প্রায়, বরফ পড়ার সম্ভাবনাই নেই। ফলতঃ গাড়িয়ে যে উইন্ডশিল্ড পরিষ্কার করার জন্য স্ক্রাপার জাতীয় কিছু রাখতে হয়, সেটাও তেনার অজানা। শনিবার একটু বেলা বেলা উঠে আমরা ব্রেকফাষ্ট খাবার তোড়জোড় করছি সব একসাথে, দেখা গেল কিছু মাল শর্টেজ। ফলতঃ আমি আর যোসেফ গাড়ি করে গিয়ে মাল কিনে আনার ভার পেলাম। বাইরে বেরিয়ে দেখি গাড়ির কাঁচে বেশ ফ্রষ্ট জমে গ্যাছে শক্ত হয়ে। এত পুরানো গাড়ি যে হিটিং সিষ্টেম বলে কিছু নেই। আমাকে বলল তুই টাইট হয়ে সীটে বসে থাক, আমি হালকা দেখতে পাচ্ছি, এতেই চালাব। গাড়ি বাড়ির পার্কিং থেকে বেরিয়েই বোঝা গেল যে রাস্তার কিছুই দেখা যাচ্ছে না। যোসেফ করল কি নিজের দিকের দরজাটা খুলে ঝুঁকে মুখটা বার করে রাস্তা দেখে বাঁহাতে স্টিয়ারিং ধরে গাড়ি চালাতে লাগল। আমাকে জানালো এমনটা মালটা দেশে কমন ব্যাপার! কেন কমন কিছু খুলে বলল না। এই করতে করতে মেন রাস্তায় এসে গেলাম – ভীড় রাস্তায় একজন গাড়ি থেকে মুখ বের করে সামনের রাস্তা দেখার চেষ্টা করতে করতে গাড়ি চালাচ্ছে, সামনের কাঁচে বরফে ভর্তি – এটা বিদেশী পুলিশ বেশী ক্ষণ সইতে পারল না। আবার আমরা দুজনে পুলিশের কাছে আটকে পড়লাম।
এইভাবেই চলছিল – একদিন ডিনার শেষে লিভিং রুমে আমাদের রোজকার ভাঁটে যোগ দিতে গিয়ে দেখি গল্প অলরেডি শুরু হয়ে গেছে। ভিভিয়ান, জেন, ওলা আরো বেশ কয়েকজন ছিল – সেদিন দেখি জোরদার আলোচনা চলছে স্তন নিয়ে! স্তনের আকার এবং আকৃতির সাথে সাইকোলজি – মেয়ে এবং ছেলে উভয়ের তরফ থেকেই – সে এক জটিল আলোচনা। যোসেফ দেখলাম সিরিয়াসলি কি সব ব্যাখ্যা করছে – এই সব বিষয়ে যোসেফ ফান্ডা দেবে না তা তো আর হতে পারে না! আরেক দিন এলেন, অলিভিয়ার সাথে কামাসূত্র বইটির উপযোগীতা এবং তা ওভার হাইপড কিনা সেই নিয়ে বিশাল তর্ক বিতর্ক – সেখানে আমাকে ভারতীয় বলে শেষ কথা বলার অধিকার দেওয়া হয়েছিল যা আমি জাষ্টিফাই করতে পারি নি বলাই বাহুল্য।
পাশের ল্যাব থেকে মাঝে মাঝেই অদ্ভূত রিকোয়েষ্ট নিয়ে আসত যোসেফ, তাতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। একদিন শনিবার সকালে বাড়ির রুমে হন্তদন্ত হয়ে চলে এলো সে – বলল, “সুকি রেডী হয়ে নে, আমাকে মেডিক্যাল টেষ্ট করাতে যেতে হবে, তুই সাথে যাবি”। আমি এমারজেন্সী ভেবে জিজ্ঞেস করলাম কেস কি? একটু চিন্তা হল – কিন্তু যা শুনলাম তাতে চিন্তা আরো বেড়ে গেল। যোসেফ যাবে STD রোগের টেষ্ট করাতে! কাল রাতে ব্রড স্ট্রিট থেকে গভীর রাতে এক কলম্বিয়ান মেয়ের সাথে আলাপ হয়ে যায় এবং মাতাল অবস্থায় সেই মেয়ের সাথে তার বাড়ি গমন করে। এবং সেখানে ঠিক কি হয়েছিল তা আর আলাদা করে জিজ্ঞেস করলাম না – কিন্তু সকালে উঠে সেই মেয়ের অ্যাপার্টমেন্টের অবস্থা দেখে যোসেফের হয়ে যায়! ড্রাগ ইত্যাদি তো নেয়ই – এবং মেয়ে নাকি নিজেই বলে প্রত্যেক উইকএন্ডে আলাদা আলাদা ছেলের সাথে রাত যাপন করে! রাতে মাতাল থাকা অবস্থায় ঠিক খেয়াল ছিল না, কিন্তু সকালের আলোয় খেয়াল আসে মেয়ের হাইজিন সংক্রান্ত ভাবনাতেও ঘাটতি আছে। ফলে স্পষ্টতঃই বেশ ভালো ভয় খেয়ে গেছে – আমাকে বলল, কলম্বিয়া এখন মাথায় থাক, আগে টেষ্ট করিয়ে দেখে আসি চল আমার কি অবস্থা।
গাড়িতে যেতে যেতে আমি যোসেফকে বললাম বাই চান্স যদি তোর STD রোগ পজিটিভ আসে, তুই আর গ্রেস হাউসে (যেখানে আমরা থাকতাম) এই রোগ ছড়াস ন প্লীজ। আমাকে আশ্বাস দিল যোসেফ এই বলে যে, গ্রেস হাউসের কোন মেয়ের সাথে অমন সম্পর্ক নেই, ফলে আমাকে চিন্তা করতে হবে না সেই নিয়ে। আমি যোসেফকে জিজ্ঞেস করলাম, তুই অজানা মেয়ের সাথে শোবার আগে ভাবিস না কেন যে কি রোগ আস্তে পারে? যোসেফ বলল, সুকি তুই বুঝছিস না, ওই সময় সেক্সটা বড় কথা ছিল না – মেয়েটাকে ভালো লাগাতে তার বাড়ি যাই এবং সেখান থেকে সেক্সে দাঁড়ায়। আমি ফের প্রশ্ন করলাম, “মেয়েটার বাড়িতে গিয়ে তোর ভয় কি চলে গেল আন-প্রোটেক্টেড সেক্স করার আগে?” উত্তর এল, “কলম্বিয়ান মেয়েটাকে ততক্ষণে ভালো লেগে গ্যাছে যে”!
এই ঘটনার পরে আমি নিজে অ্যানালিসিস করার চেষ্টা করেছি যোসেফের ব্যবহার – তবে সেই নিয়ে পড়াশুনা করার সময় ছিল না তখন। পরে এই নিয়ে ভাবতে গিয়ে একটা রিসার্চের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম যেখানে মানুষের ভয় বা উদ্বেগ জনিত অবস্থার সাথে যৌন উত্তেজনার জাগার সম্পর্ক খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছিল।
ভ্যাঙ্কুভার শহরের কাছে মানুষ পারাপারের ক্যাপিলানো ঝুলন্ত ব্রীজ। যাঁরা কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার দিকে গেছেন তাঁরা জানেন যে ওখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য খুব সুন্দর। আর এই ব্রীজটা ঠিক বাণিজ্যিক ব্রীজ নয় বরং খুব সুন্দর প্রাকৃতিক জায়গার মধ্যে বেড়াতে গিয়ে ব্যবহার করার জুলন্ত সেতুর মত – প্রায় ৪৫০ ফুট মত লম্বা – পুরোটাই কাঠ এবং দড়ি দিয়ে তৈরী, এবং খুব সরু। বুঝতেই পারছেন কাঠের পাটাতনের উপর দিয়ে এই ব্রীজ পেরোবার সময় বেশ ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ হত – আর পায়ের নীচে দেখা যেত প্রায় ২৫ তলা বাড়ির সমান গভীর পাথুরে খাদ। হাওয়া দিলে বা জোরে চলার চেষ্টা করলে সেই কাঠের সেতু দুলত – এবং কিছু এদিক ওদিক হয়ে গেলে নীচে পাথরের উপর পরে গেলেই ব্যাস গল্প খতম!
১৯৭৪ সালের কোন এক দিন - এক খুব সুন্দরী মহিলা সেই ঝুলন্ত সেতুর উপর যে সমস্ত একাকী যুবক পারাপার করছিল তাদের কাছে (এক সময়ে একজনের কাছে) এগিয়ে, একহাত দিয়ে সেই ঝুলন্ত দুলতে থাকা ব্রীজের ধারের দড়ি ধরে নিজের ব্যালেন্স রাখার চেষ্টা করতে করতে মিষ্টি করে হেসে বলছিল, “আমি একটা মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা করতে চাইছি আমার রিসার্চের সাথে জড়িত, তা আপনারা কেউ কি স্বচ্ছায় অংশগ্রহন করবেন প্লীজ?” গবেষণার বিষয় জানানো হল, “মানুষের সৃজনশীল ভাব প্রকাশে প্রাকৃতিক সৌন্দের্য্যের প্রভাব”। যে সমস্ত যুবক সমীক্ষায় অংশগ্রহন করতে রাজী হল, তাদের এবার দেখানো হল একটি ছবি যেখানে একটা মেয়ে তার হাত দিয়ে মুখের কাছটা ঢেকে আছে। সেই ছবি দেখাবার পর যুবকদের অনুরোধ করা হল সেই ছবির বিষয়ে একটা ছোট গল্প লিখতে, যতই নাটকীয় হোক না সেই গল্প, তাতে কোন অসুবিধা নেই। যুবকরা সেই ব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে গল্প লিখতে শুরু করল, ওদিকে হাওয়ায় ব্রীজ বেশ দুলছে, কাঠের পাটাতনে শব্দ হচ্ছে ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে – অর্থাৎ নীচের পাথুরে খাদে পড়ে যাবার ভয় মাথায় নিয়ে গল্প লেখা চলছিল। গল্প লেখা শেষ হয়ে গেলে সেই সুন্দরী গবেষক মধুর হেসে ধন্যবাদ জানালো যুবকদের – আরো জানালো তার নাম গ্লোরিয়া। শুধু তাই নয় একটা কাগজে তার ফোন নাম্বার লিখে যুবকদের দিয়ে জানালো যদি তারা ইচ্ছুক হয় পরে ফোন করতে পারে সেই পরীক্ষা বিষয়ে আরো জানার জন্য।
সেই দিনে যে কুড়ি জন যুবক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছিল এবং গ্লোরিয়া যাদেরকে তার ফোন নাম্বার দিয়েছিল তার মধ্যে তেরো জন পরে ফোন করেছিল। এবং ফোনের বার্তা থেকে এটা স্পষ্ট ছিল যে তারা গ্লোরিয়ার রিসার্চ সম্পর্কে বিশেষ উৎসাহী ছিল না, যতটা ছিল সুন্দরী গ্লোরিয়ার প্রতি। কিন্তু এখানেই এবার টুইষ্ট, ঝুলন্ত সেতুর উপর সেই মেয়েটি প্রেমিক বা ডেট-এর সন্ধানে ব্যস্ত ছিল না, আর নিজের ফোন নাম্বার সেই কারণেও দেয় নি তাদের। আর “মানুষের সৃজনশীল ভাব প্রকাশে প্রাকৃতিক সৌন্দের্য্যের প্রভাব” – সেটাও তার রিসার্চের বিষয় ছিল না! ওটা কেবল একটা গুলতানি গল্প ছিল, বাহানা মাত্র – রিসার্চের আসল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের ভীতি এবং যৌন উত্তেজনার মধ্যে কোন সম্পর্ক আদৌ আছে কিনা তা তলিয়ে দেখার চেষ্টা!
ডোনাল্ড ডাটন এবং আর্থার আরন নামে দুই গবেষক ব্যাপারটা তলিয়ে দেখার জন্য ওই পরীক্ষাটির আয়োজন করেছিলেন। তাঁদের অনুমান (হাইপোথিসিস) ছিল যে, যদি এক ভীতপ্রদ বা উদ্বেগজনিত পরিস্থিতিতে এক সুন্দরী মহিলার সাথে কোন যুবকের দেখা হয় তাহলে সেই যুবক মহিলাটিকে আরো বেশী আকর্ষনীয় মনে করবে এবং ফলতঃ পরীক্ষার পরে মেয়েটিকে কল-ব্যাক করবে তাদেরকে দেওয়া ফোন নাম্বারটায়। কিন্তু এই গবেষণা সম্পূর্ণ করার জন্য তাহলে তো অমুনানের অপর দিকটা নিয়েও পরীক্ষা করতে হয়! তাঁরা সেটাও করলেন –
এবার বেছে নেওয়া হল একটা খুব সুন্দর পার্কের শান্ত পরিবেশ – অনেকে সেখানে বসে গা এলিয়ে রিল্যাক্স করছিল, কেউ বই পড়ছিল। সেই সুন্দরী মেয়েটি এবারও একই জিনিস করল – একাকী যুবকদের কাছে গিয়ে মিষ্টি হেসে - “আমি একটা মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা করতে চাইছি..”। বাকি গল্পটা আগের ঝুলন্ত ব্রীজের পরীক্ষার মতনই। তবে সেদিন মেয়েটি নিজের নাম বলেছিল ডোনা, ইন্টারভিউ নিয়েছিল ২৩ জনের এবং সবাইকে আগের দিনের মতই নিজের ফোন নাম্বার দিয়ে পরে কল-ব্যাক করতে বলেছিল। কি মনে হয়? পার্কের পরিবেশে থেকে কতজন কল-ব্যাক করেছিল?
সেদিনের ২৩ জনের মধ্যে মাত্র সাত জন কল-ব্যাক করেছিল ডোনা-কে! খুব খারাপ রেসপন্স এমন নয়, কিন্তু খুব ভালোও নয়, বিশেষ করে আপনি যদি আগের ঝুলন্ত ব্রীজের দিনের রেসপন্স রেটের সাথে তুলনা করেন। শুধু তাই নয়, ইন্টারভিউ দেওয়া যুবকেরা যে গল্পগুলি লিখেছিল তাদের মধ্যেও সুস্পষ্ট পার্থক্য ছিল জুলন্ত ব্রীজের এবং শান্ত-মনোরম পার্কের লেখার মধ্যে। ঝুলন্ত ব্রীজের যুবকদের যে গল্পগুলি লিখেছিল মুখের সামনে হাত রাখা মেয়েটির ছবি দেখে, সেই গল্পগুলি অনেক বেশী ‘এক্সোটিক’ ছিল পার্কের গল্পগুলির তুলনায়। পরীক্ষার এই সব ফলাফল গুলি বিশ্লেষণ করলে এটা প্রমাণিত হয় যে যৌন উত্তেজনা জাগরণের সাথে ভীতি বা উদ্বেগ জনিত অবস্থার একটা সম্পর্ক আছে।
ডোনাল্ড ডাটন এবং আর্থার আরন অনুমান করেছিলেন যে ভীতি বা উদ্বেগ জনিত অবস্থা যৌন উত্তেজনা বাড়াবে কারণ সেই অবস্থায় আমাদের মস্তিষ্ক ভুলভাবে সনাক্ত করবে যৌন উত্তেজনা জাগরণের মূল কারণ (“মিস-অ্যাট্রিবিউশন অফ আর্যাউজাল”)। এই থিওরী অনুযায়ী, যদি আমরা এমন কোন অবস্থার মধ্যে থাকি যা আমাদের মধ্যে খুব বেশী আবেগ জাগিয়ে তোলে, তাহলে আমরা বেশীর ভাগ সময় ভুল ভাবে আবেগের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করি আমাদের সাথে থাকা মানুষটার সাথে – আসলে যেখানে আমাদের চালিত করছে সেই মুহুর্তে কোন পরিস্থিতিতে আছি মূলত সেটাই। মাটির থেকে ২৫০ ফুট উপরে ঝুলন্ত দুলতে থাকা কাঠের ব্রীজে এমনিতেই আপনার আপনার অনুভূতি অত্যন্ত সজাগ থাকবে, আপনার হৃদস্পন্দন দ্রুত চলবে, হয়ত বা হাতের তালুও ঘামতে থাকবে। সেই অবস্থায় কোন সুন্দরী মহিলা আপনার কাছে এসে আপনার সাথে কথাবার্তা বলতে শুরু করলে, আপনার মস্তিষ্ক খুব সহজেই আপনার অনুভূতির সাথে মেয়েটিকে জড়িয়ে নেবে। আপনি ভাবতে শুরু করবেন যে আপনি প্রেমে পড়ে যাচ্ছেন – বাস্তবে কিন্তু কাজ করছে ঝুলন্ত ব্রীজ থেকে পড়ে যাবার ভয়!
তো মোদ্দা কথা ভীতি বা উদ্বেগ জনিত অবস্থায় তুলনামূলক বেশী যৌন উত্তেজনা জাগরণের এক প্রবল সম্ভাবনা আছে। আর আমার এটাই মাঝে মাঝে মনে হত যোসেফের চালিকা শক্তি সেই সব অদ্ভূত পরিস্থিতিতে। ব্রড স্ট্রিট থেকে এক অচেনে মেয়ের সাথে তার বাড়ি চলে যাওয়া থেকে যার শুরু এবং পরে অচেনা কারো সাথে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্কের যে এক অবচেতন ভয়, এই দুই যোসেফকে মিস-অ্যাট্রিবিউট করাতো সে ঠিক কিসের প্রেমে পড়েছে!
যোসেফ তখন যদিও জোর দিয়ে বলেছিল যে আমাদের গ্রেস হাউসের কোন মেয়ের সাথে ওই ভাবে সম্পর্ক নেই তার, কিন্তু তার কিছু দিনের মধ্যেই সে ধীরে ধীরে প্রতিজ্ঞা চ্যুত হতে শুরু করে। অলিভিয়া ফরাসী দেশের মেয়ে এবং আমার মতে গ্রেস হাউসের সবচেয়ে বুদ্ধিমতি মেয়ে ছিল সেই – ওয়েল ইন্ডাষ্ট্রির সাথে জড়িত ইন্টারন্যাশানাল ল নিয়ে স্পেশালাইজেশন এবং মাষ্টার্স করছিল সে। কিভাবে যে ওদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা শুরু হল বন্ধুত্ব থেকেও একটু অন্যভাবে। তখনো টাচ স্ক্রীন মোবাইল আসে নি – যোসেফের সাথে গল্প করছি একদিন সন্ধ্যে বেলায়, পিঁক পিঁক করে একটা টেক্সট ম্যাসেজ এল তার মোবাইলে – দুরদার করে যোসেফ উঠে পড়ল, জানতে চাইলাম কি হল? আমাকে ম্যাসেজ দ্যাখালো, অলিভিয়ার কাছ থেকে এসেছে, তিনটে স্টার * * * - আমি ভাবলাম আই লাভ ইউ বোঝাচ্ছে হয়ত স্টার গুলি, তাই বললাম, কনগ্র্যাটস্, প্রেমে পড়ে গেলি তাহলে এই বাড়িতেই! যোসেফ বলল, আরে ধুর তিনটে স্টার আমাদের ক্ষেত্রে মানে ‘ওয়ান্ট এ ফাক’! অলিভিয়া প্র্যাক্টিক্যাল মেয়ে ছিল, এটা প্রেম বলে ভাবে নি সে, শুধু মাত্র ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিটসের মতন। এতে যোসেফেরও খুব একটা প্রবলেম ছিল না প্রথম দিকে। কিন্তু ওই যে মানুষের মন! যোসেফ সত্যিকারের প্রেমে পড়ে গেল অলিভিয়ার – জীবনে প্রথমবারের মতন!
যোসেফ যা কিছু করে বেশ সিরিয়াসলি করে - তাই এই অলিভিয়ার প্রেমে পড়াটাও সিরিয়াসলি নিয়ে ফেলল। আমি মাঝে মাঝেই ওকে বোঝাতে শুরু করলাম দেখ আমার মনে হচ্ছে না অলিভিয়ার দিক থেকে কেসটা প্রেমের দিকে গড়িয়েছে, আর সত্যি কথা বলতে কি মনেও হয় না গড়াবে! বেশ তো থ্রী স্টার ম্যাসেজ দিয়েই ভালো আছিস তোরা দুজনে – কেন আবার জিনিস কমপ্লিকেটেড করে! প্রেমে পড়া মানুষ পরামর্শ শোনে না এসপার-ওসপার না হওয়া পর্যন্ত, তাই যোসেফও শুনলো না আমার কথা। আর এদিকে আমি প্রেম বিষয়ক এক্সপার্ট না হলেও, নিজের বাস্তব বুদ্ধির উপর প্রবল আস্থা আমার চিরকালই ছিল। কয়েক সপ্তাহ পর থেকে দেখতে শুরু করলাম অলিভিয়া এড়িয়ে চলছে যোসেফের উপস্থিতি যতটা পারে – আমাদের সবার সাথে একসাথে থাকেলেও সেই মুহুর্তগুলো এড়াচ্ছে যেখানে সে আর যোসেফ কেবল মাত্র দুজনা! আমি দেখলাম কেস বাজে দিকে এগুচ্ছে – এই করতে করতে যোসেফের জন্মদিন চলে এল। আর আমাকে না অবাক করে অলিভিয়ার ঠিক সেই দিনেই কি একটা কাজ পড়ে গেল সুইজারল্যান্ডে! যোসেফের জন্মদিনের পার্টি হচ্ছে, অলিভিয়া নেই! গভীর রাতে আমি মাতাল যোসেফকে টেনে তার ঘরে ঢুকিয়ে দিতে যাচ্ছি – আমাকে একাকী পেয়ে সে প্রায় কাঁদাকাঁদো – “অলিভিয়া কেন সুইজারল্যান্ড যাবে!” বিছানায় বসে রাতের অনেকটা কেটে গেল সেই রিপিটেড আক্ষেপ নিয়ে। আমি ভাবলাম বেশ ভালো ঘুম হলে পরের দিন হয়ত অনেকটা ঠিক হয়ে যাবে সে। কিন্তু পরের দিন অনেক বেলায় দুজনে মিলে তার ভক্সওয়াগনে চেপে বাজার করতে বেরিয়ে ওর প্রকৃত মনখারাপের রুপ দেখলাম – বেচারা সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছে অলিভিয়াকে। নিজের মনেই স্বিকারোক্তির মতন অনেক কিছু বলে গেল – এই নিয়ে আমি আমার প্রথম এবং একমাত্র কবিতার বইয়ে একটু কবিতাও লিখেছিলাম, “ভক্সওয়াগনে যোসেফের স্বীকারোক্তি”, যার কয়েকটি লাইন ছিল এমনঃ
“শুধু হাইওয়ে জেনে রাখে অলিভিয়া এখনো মেল করেনি
হয়ত কোনদিনই
এভাবেই আমাদের প্রতিটি গল্পে ঘন্টাধ্বনি ঢুকে পড়ে
ওদের প্রতিধ্বনিও ডপলার পরশের মত সরে সরে গিয়ে
এক সুনিশ্চিত সাঁঝবেলাতে নাগরিক করে তোলে
যোসেফ, আমাকে আর শিথিল হাতের চাকাকেও
আমি তো এখনো বলি বিরহ জানিনে অথচ
পাশের সীটেই বিরহ গলিয়া ওঠে
স্বীকার করিনে অথচ দৃশ্যত বুঝি
স্বীকারোক্তিতে ভিজে যায় অচেনা যোসেফ এবং মসৃণ হাইওয়ে”
এর প্রভাব বেশ অনেক দিন ছিল যতদিন না আবার যোসেফ প্রেমে পড়ল এক তাইওয়ানের মেয়ের। আমি আবার সতর্ক করলাম – আবারো প্রেম ভাঙলো। পরের বছর সে আমাদের বাড়ির বাইরের এক অন্য কলম্বিয়ান মেয়ের প্রেমে পড়ে তার সাথে গ্রীষ্মের ছুটি কাটাতে চলে গেল কলম্বিয়া। সেটাই ছিল তার দীর্ঘতম প্রেম – তারপর আমরা পড়াশুনা শেষ করে ইংল্যান্ড ছাড়লাম দুইজনেই। নিজের দেশ মালটায় ফেরার পর সেই কলম্বিয়ান মেয়েটিও দূরে চলে গেল।
কিন্তু কলম্বিয়ার প্রতি যোসেফের আকর্ষণ গেল না – তাকে জিজ্ঞেস করে আমি বুঝেছিলাম যে কলম্বিয়ান মেয়েদের প্রতি আকর্ষিত হয়ে কিন্তু তার সেই দেশের প্রতি ভালোলাগা শুরু হয় নি। যোসেফ প্রায় পাগলের মত ভালোবাসত দুই ফুটবলারকে সেই ছোট থেকে – একজন ভালদোরামো এবং আরেকজন হিগুইতা। সেই ফুটবলার পুজো দিয়েই দেশের প্রতি আকর্ষণ শুরু।
মালটা ছোট দেশ, কিন্তু সেখানেও কলম্বিয়ার একটা কনস্যুলেট আছে। যোসেফ দীর্ঘদিন তাদের সাথে স্বেচ্ছা সেবকের কাজে যুক্ত। আর এখন সে ‘অনারেরী কনস্যুল ইন মালটা”। সেই কনস্যুলেই কাজ করত মোনিকা, সেখান থেকেই আলাপ – প্রেম –এবং বিয়ে। গত ২৮শে মে যোসেফ এবং কনস্যুলেটের উদ্যোগে করোনার জন্য মালটায় আটকে থেকে কলম্বিয়ানদের দেশের ফেরার প্রথম ফ্লাইট উড়ে যায়। কলম্বিয়ান সরকার ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা তো জানায়ই – কিন্তু যোসেফের কাছে তার চমক হিসাবে আসে হিগুইতার ভিডিও কল! হিগুইতা যোসেফকে ধন্যবাদ জানায় কলম্বিয়ার মানুষকে ফেরাবার কাজে যোসেফের ভূমিকার জন্য। তার সেই ছোট বেলার স্বপ্ন পূরণ হয় – হিগুইতার সাথে অনেকক্ষণ কথা হয় তার।
ফুটবল থেকে দেশ – সেই দেশের সাথে প্রেম – প্রেম সেই দেশের মেয়েদের সাথে – এবং ভালোবাসার কলম্বিয়ান গৃহিণী। আশা করি যোসেফ-মোনিকার বিয়েতে মালটায় উপস্থিত থাকতে পারব পরের বছর।
ভালো থাকিস যোসেফ।
আপনার ঝরঝরে প্রাণবন্ত লেখা সুযোগ পেলেই পড়ি, ভাবলাম কোনও কঠিন বিষয়ে লেখা, পড়ে বুঝলাম সেরকমই মজার মোড়কে।বিশেষ করে মানিক কাকা,, ভৈরব গাঙ্গুলির রেফারেন্স অনবদ্য।
দারুণ উপভোগ করলাম লেখাটা।
Tor porichito eto bivinno akorshonio charitra....tui ekta uponnas lekh...jome jabe
যথারীতি অসাধারণ! আপনার এই বিবিধের প্রতি টান আমার বেশ ভালো লাগে। মুজতবা আলি সাহেবের লেখাগুলি যখন নাইন টেন এ প্রথম পড়ছি - সেই সময়ের মতো লাগছে। তবে তখন রোজ পড়তাম, আর এখন সপ্তাহে একটা!
ভক্সওয়াগনে যোসেফের স্বীকারোক্তি ভাল লাগলো। একটি দুর্দান্ত চরিত্র।
যৌনতার পরীক্ষাটি কৌতুহল জাগায়। ব্রেভো সুকি
ক্যা বাৎ , ক্যা বাৎ , ক্যা বাৎ , !
hu, অন্তরা, অনুপমা, শিবাংশুদা, কৌশিকদা, পার্থ, অরণ্যদা, বিপ্লব, রঞ্জনদা - সবাইকে ধন্যবাদ লেখা পড়ার জন্য।
:I: সেটা ঠিক - আমার লেখা উচিত ছিল যাঁরা লেখা পড়লেন এবং যাঁরা কমেন্ট করলেন সবাইকে ধন্যবাদ :)
খুব ভালো লাগল। দারুণ হচ্ছে এই সিরিজটা!
আপনার বন্ধুদের নিয়ে সব লেখাগুলোই পড়তে দারুন লাগে। মনটা একদম ফ্রেশ হয়ে গেলো।