সেদিন লোভের বসে কারি ফ্লেভার, ভারতীয় টুইষ্ট দেওয়া পিৎজা অর্ডার দিয়ে ফেলেছিলাম। এক স্লাইস খাবার পর আমার মনে চলে এল অনুরূপ অবস্থায় গর্ডন রামসের প্রখ্যাত উক্তিঃ
“দিস ইজ নট এ পিৎজা, দিস ইজ এ মিসটেক। দিস ইজ অ্যান ইতালিয়ান ট্রাজেডি”
আর
“দিস পিৎজা ইজ সো ডিসগাষ্টিং, ইফ ইউ টেক ইট টু ইতালি, ইউ উইল গেট অ্যারেষ্টেড”
এ সব বললে আবার কেউ আমাকে ‘পিৎজা-আঁতেল’ হিসাবে দাগিয়ে দিতেই পারেন। কারণ গুণতিতে কম হলেও কিছু কিছু বার শুনেছি, "তোমরা যাই বলো, আমার বাপু কেচাপে্ চপচপে করে পিৎজা না খেলে পোষায় না"। ডায়াবেটিক সন্দেশ দেখলে আমার মনের ভিতরটা যেমন করে, এই ধরণের পিৎজা দেখলে ইতালিয়ানদের হয়ত অনুরূপ অনুভূতি হবে। কিন্তু কিছু করার নেই – প্রবাদ বাক্যেই আছে নিজের রুচি মত খাবার উপদেশ। তবুও কিছু কথা থেকে যায় – পিৎজার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, এ খাবার যেমন সাধারণের, তেমনই এর সাথে যুক্ত আছে কিছু রাজ-রাজার, অভিজাতদের আভিজাত্যের গল্পও। সেই সব নিয়েই আজকের দুকথা।
পিৎজা বলে আধুনিক কালে আমরা যে জিনিসটিকে চিনি তার জন্ম হয় ১৮৮৯ সালে ইতালির নেপলস্-এ। তো দুনিয়া কাঁপানো এমন জিনিসের জন্ম হবে আর তা নিয়ে উপকথা থাকবে না এমন হয় নাকি! আমাদের রসগোল্লার মতন পিৎজা ঘিরেও বেশ গল্প গুজব ছড়িয়ে আছে। এর মধ্যে সব থেকে বহুল প্রচলিত এবং আভিজাত্যে ভরা গল্পটি হল এমনঃ
সমন্বিত ইতালির দ্বিতীয় রাজা প্রথম উমবার্তো এবং তাঁর স্ত্রী রাণী মার্গারিটা নেপলস্ ভ্রমণে আসবেন বলে ঠিক হল ১৮৮৯ সালে। চারিদিকে হই হই লেগে গেল – থাকা ইত্যাদি তো ঠিক আছে, কিন্তু রাণী এখানে এসে খাবেন কি! তখনকার দিনে ইউরোপের বেশীর ভাগ রাজার রান্নাঘরে ফরাসী রান্নার আধিক্য এবং প্রাধান্য ছিল। কিন্তু রাজা-রাণী নেপলস্-এ এসে শুধুই কি ফরাসী হাবিজাবি খাবার খাবেন! এখানকার স্পেশালিটি কিছু না বানালে তো মান সম্মান নিয়ে টানাটানি! আর ওদিকে শোনা যাচ্ছে রাজা-রাণীর দুজনেরই জিবে চড়া পড়ে গেছে ওই একই খাবার খেয়ে খেয়ে – তাঁরাও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন লোকাল ডেলিকেসী ট্রাই করবেন বলে।
তো ডাক গেল তখনকার নেপলসের বিখ্যাত পিৎজা বানানো শেফের কাছে – পিজারিয়া ব্র্যান্ডির রাফায়েলে এস্পোসিতো। তাঁকে বলা হল তুমি বাপু নানা রকম পিৎজা বানিয়ে রাজা রাণীকে পরিবেশন কর। আর গতানুগতিক জিনিস না বানিয়ে, মাথা ঘামিয়ে নতুন কিছু বানাও। রাফায়েলে এস্পোসিতো বানালেন বেশ কিছু রকমের পিৎজা - তিনি একটা পিৎজা বানালেন লার্ড, কাচ্চিয়াকাভাল্লো, এবং বেসিল দিয়ে, একটা বানালেন ছোট ছোট মাছ দিয়ে, আর একটা বানালেন ট্যামাটো, মোজারেল্লা এবং বেসিল সহযোগে। এই শেষের ডিসটি তখনো নেপলস্-এর বাজারে পরিচিত ছিল ‘পিৎজা আলা মোজারেল্লা’ নামে। এবং এই পিৎজা খেয়েই রাণী কুপোকাত – বিশাল ভালোবেসে ফেলে ডিক্লেয়ার করে দিলেন যে এটাই তাঁর সবথেকে প্রিয় পিৎজা। ব্যাস, সেই থেকে এই পিৎজার নাম হয়ে গেল ‘পিৎজা মার্গারিটা’।
এখনো নেপলস্ এ গেলে নাকি পিজারিয়া ব্র্যান্ডি-তে সেই সার্টিফিকেট ঝোলানো দেখা যাবে। রাণীর তরফ থেকে রান্নাঘরের তখনকার ইনচার্জ গ্যাল্লি ক্যামিলো ইস্যু করেছিলেন সেই ‘থ্যাঙ্কু’ নোট। এবার কেস হল হল কি কাকতলীয় ভাবে ইতালীর জাতিয়তা বোধও জুড়ে গেল এই পিৎজা মার্গারিটার সাথে। কারণ আর কিছু নয়, এই পিৎজার উপাদানের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব হয়ে গেল ইতালির পতাকার লাল, সাদা এবং সবুজ রঙের। লাল এসেছিলো ট্যামেটো থেকে, সাদা মোজ্জারেল্লা চীজ্ এবং সবুজ বেসিল পাতার মাধ্যমে। এই নিয়ে ইতালির লোকজন এখনো প্রচুর গর্বিত – দাবী করে যে পিৎজা মার্গারিটা হল মাত্র দুইখানি অথেন্টিক নেপোলিটান (নেপলস্ এর অধিবাসী) পিৎজার মধ্যে একটি।
তবে এক অভিজাত পছন্দ করেছে পিৎজা কিন্তু তাঁর বউ করেনি এমন গল্পও আছে। নেপলস এর চতুর্থ ফার্দিনান্দ বিশাল পছন্দ করতেন, কিন্তু ম্যাডাম মারিয়া ক্যারোলিনা দুচোখে দেখতে পারতেন পিৎজা জিনিসটাকে। তার প্রাসাদের ধারেপাশে পিৎজা বানাবার জিনিসপত্র ঘেঁসতে দেন নি – ফলতঃ ফার্দিনান্দ বাবু করেছিলেন কি, তাঁর গ্রীষ্মকালীন সময় কাটাবার বাগানবাড়িতে বসিয়ে নিয়েছিলেন পিৎজা বানাবার ওভান।
সেই ভাবে দেখতে গেলে মার্গারিটা পিৎজা বানানোর উপাদান খুবই সাধারণ এবং রানীর প্রিয়তম হয়ে ওঠার অনেক আগে থেকেই নেপলসের আপমর জনসাধারণের মধ্যে বহুল প্রচলিত ছিল এই পিৎজা। এবার গল্পে ঢুকে পরল রোমান্টিকতা – এক সাধারণ খাবারের রাজার হেঁসেলে জয়ের উপকথা।
তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে ১৮৮৯ সালের পর থেকেই ভিনি ভিডি ভিস-র মত পিৎজা মার্গারিটা বিশ্বজয়ে বেরিয়ে পরল! এটা ঠিক যে এই ঘটনার পর থেকে দক্ষিণ ইতালির নাম রান্না-বান্নার মেনস্ট্রীমে বেশ গেঁথে যাওয়া উচিত ছিল বা উপাদানগুলির সাধারণত্বের জন্য সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরার কথা তখন থেকেই – কিন্তু বাস্তব একটু অন্য ধরনের। পিৎজার বিশ্বজয় দেখতে হলে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে আরো বেশ কয়েক দশক, মানে ধরুণ গিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত। সারা পৃথিবী তো ছেড়েই দিন, ইতালির দেশের মধ্যেই সব লোকজনের মধ্যে পিৎজার প্রবল জনপ্রিয়তা ছিল না। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে এবং ফ্যাসিষ্ট সময়কালে (১৯২২-১৯৪৫), বেশীর ভাগ ইতালি জুড়েই পিৎজা ছিল অবহেলিত। ফ্যাসিষ্ট সময়কালের অনেক রান্নার বইতে পিৎজা-কে উল্লেখ করা হয়েছে ‘আঞ্চলিক খাবার’ বলে। মুসোলিনি যখন দেশ জুড়ে গমের স্টক ঠিকঠাক রাখতে মনোযোগ দিলেন, তখনো কিন্তু দেশবাসীর প্রতি তাঁর আবেদন ছিল, ‘রুটি নষ্ট করো না’ – পিৎজা নষ্ট করা নিয়ে তাঁর কিছু বক্তব্য ছিল না, কারণ তখনো বেশী ইতালিয়ান এটা খেতো না। কিন্তু হাওয়া বেশ পালটে গেল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে – ইতালি জুড়ে লোকজন বেশী বেশী করে পিৎজা খাওয়া শুরু করল। এর পিছনে বৃটিশ সেনাদের অবদানও অবশ্য কম ছিল না। যে সমস্ত বৃটিশ সেনাকে পাঠানো হয়েছিল দক্ষিণ ইতালিতে, তারা তো পিৎজা খেয়ে একদম ফিদা। ইতালির যেখানে যাচ্ছে সেখানেই পিৎজা চাই বলে হাল্লা মাচাচ্ছে! তো এই ভাবে তারা পিৎজা বিস্তারে হেল্পিং হ্যান্ড দিয়েছিল। আর তা ছাড়া ছিল আরো কয়েকটি ব্যাপার যার মধ্যে পার্যটন এবং লোকজনের আরো বেশী বেশী দেশান্তরে গমণ (মাইগ্রেশন) প্রধান। দক্ষিণ ইতালির লোকেরা শুধু ইতালির অন্য জায়গায় নয়, বরং সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল। আর নিজেদের শরীরের সাথে ইতালিয়ানরা নিয়ে গেল তাদের খাদ্য এবং সংস্কৃতি। এর ফলে নতুন নতুন পিজারিয়ার যেমন জন্ম হল ইতালির মিলানে, তেমনি দেখা গেল সুইডেনের স্টকহোমেও।
পর্যটন ব্যাপারটা কিন্তু বেশ গভীর প্রভাব ফেলেছিল পিৎজার জীবনে। আগেকার দিনে সৌখিন পর্যটন মূলত সীমাবদ্ধ ছিল সম্ভ্রান্ত এবং পয়সাওলা লোকজনের মধ্যে। কিন্তু ১৯৫০ বা ৬০ এর দশকে ইউরোপীয় পর্যটন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল, মধ্যবিত্ত এবং এমনকি ওয়ার্কিং-ক্লাস দের মধ্যেও। এদের অনেকের পক্ষেই আঞ্চলিক জায়গায় গিয়ে গিয়ে সেখানকার খাবার দাবার ট্রাই করা সম্ভব ছিল – অনেকেই চাইত ইতালির কোন জায়গায় বেড়াতে গেলে সেখানে যেন চাইলে নিদেনপক্ষে ইতালির নানা জায়গার আঞ্চলিক খাবার গুলো চাখা যায়। এই এই ভাবেও পিৎজার জনপ্রিয়তার পারদ চরতে শুরু করে।
সেই অর্থে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার নয়, কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধত্তর সময় কালে নেপোলিটান পিৎজার সবচেয়ে বিখ্যাত প্রচারক সম্ভবত ছিলেন সোফিয়া লোরেন। লোকে দাবি দাওয়া করে ১৯৫৪ সালের সিনেমা ‘লোরো ডি নেপোল’-তে সোফিয়া সেই যে পিৎজা প্রস্তুতকারীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, তার থেকে সুন্দরী পিৎজা কারিগর নাকি খোদ ইতালীতেও আর জন্মায় নি। শেষে অবশ্য ১৯৮৮ সালে জুলিয়া রবার্টস ‘মিষ্টিক পিৎজা’ সিনেমা অভিনয় করে একটু কম্পিটিশনে ফেলেছিলেন সোফিয়াকে। সোফিয়া লোরেন বলে দিয়েছিলেন পিৎজার মতন জিনিস হয় না, আর পিৎজার এই প্রবল জনপ্রিয়তা ছেলেবুড়োদের মাঝে দেখে তিনি ইতালিয়ান হিসাবে গর্ব অনুভব করেন। তবে সোফিয়া লোরেন মনে হয় অথেন্টিক ইতালিয়ান পিৎজার কথা মাথায় রেখেই তেমন মন্তব্য করেছিলেন – আমেরিকান ভার্সান ‘হাওয়াইয়ান পিৎজা’ নয়। এই হাওয়াইয়ান পিৎজার সম্পর্কে অভিমত জানাতে বলা হয়েছিল নেপলস্ এর এক পিৎজা প্রস্তুতকারীকে – তিনি অবাক হয়ে বলেছিলেন, “আনারস দিয়ে পিৎজা? সেটাকে তো কেক বলে!” আমেরিকার আর এক বিখ্যাত উদ্ভাবন ‘বারবিকিউ চিকেন পিৎজা’ বা জাপানের (এবং এখন অনেক দেশেই) সেই সব ভেরিয়েশন যেখানে পিৎজা পাওয়া যায় মেয়োনীজ, আলু বা সসেজ দেওয়া! অনেক ইতালিয়ান এই নিয়ে খুব দুঃখ প্রকাশ করে এবং ক্ষোভও। অনেকে পিৎজার এ হেন ইজ্জত হানির জন্য সরাসরি আমেরিকানদের দায়ী করে – পিৎজাকে ফাষ্ট ফুডের স্তরে নামিয়ে এনে তার কৌলিন্য হারানোর ক্ষোভ।
রসগোল্লা বাঁচাও বলে কোন কমিটি বা অ্যাশোশিয়েশন আছে কিনা আমার জানা নেই – কিন্তু নেপলসের পিৎজা প্রস্তুতকারীরা তাঁদের লিগ্যাসী বাঁচিয়ে রাখার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ইউরোপের অনেক জায়গায় এবং আমেরিকায় পিৎজাকে কেমন টুইষ্ট দেওয়া হচ্ছে তা দেশে শুনে তাঁরা বেশ আতঙ্কিত হয়ে উঠলেন। ১৯৮৪ সালে মূলত দুটো প্রধান লক্ষ্য নিয়ে স্থাপিত হয় ‘অ্যাসোশিয়াজিওনে ভেরাসে পিৎজা নেপোলিটানা’ (বা সংক্ষেপে VPN)। এক, নেপোলিটান পিৎজার সুরক্ষা এবং তাকে বাঁচিয়ে রাখা; দুই, নেপোলিটান পিৎজাকে এক স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে প্রচার, যাকে মাপকাঠি করে অন্য পিৎজা-দের যাচাই হবে। আজকের দিনে এই VPN অ্যাপ্রুভড পিজারিয়া কেবল ইতালিতেই নয়, এদের দেখা পাওয়া যাবে আমেরিকা, ইংল্যান্ড এবং জাপানেও। পরের বার আপনি এই সব দেশে পিজারিয়াতে ঢুকলে দেখে নিতে পারেন যে তারা এই VPN অনুমোদিত কিনা, নীচের চিহ্ণ দেখেঃ
এই নিয়ে আর বেশী ভাঁটাবো না, কেবল এই বলে শেষ করি যে, VPN অনুমোদিত পিৎজা মাত্র তিনটি –
১) মার্গারিটা (টম্যাটো, অলিভ অয়েল, বেসিল এবং মোজারেল্লা)
২) মারিনারা (টম্যাটো, অলিভ অয়েল, অরিগ্যানো এবং গার্লিক)
৩) মার্গারিটা এক্সট্রা (টম্যাটো, ফ্রেস চেরী টম্যাটো, অয়েল, বেসিল এবং মোজারেল্লা)
তবে পিৎজা আজকের মত ঘরে ঘরে ঢুকিয়ে দিতে আমেরিকার অবদান প্রায় আন-প্যারাল্যাল। নানা পিৎজা চেন – সে পিৎজা-হাটই হোক বা ডোমিনোস, এখন প্রায় সারা বিশ্বে জাল ছড়িয়ে পিৎজা খাইয়ে যাচ্ছে দিন-রাত। গোঁড়া ইতালিয়ান-রা এই সব পিৎজা চেনের প্রসবিত জিনিস নিয়ে ভুরু খুঁচকে থাকলেও (যদিও খুব সঙ্গত কারণ আছে তার), কে আর তাদের গোঁসার তোয়াক্কা করে। এই খানেই আমেরিকার মার্কেইং স্ট্র্যাটেজি এবং অ্যাডাপেটিবিলিটি। যেখানে যেমন খেতে চাইছে লোকে তাদের তেমন খাওয়াও। কেবলমাত্র খোদ রোমে গিয়ে রোমান হবার থেকেই পিৎজা-হাট এবং ডোমিনো নিজেদের যা বাঁচিয়ে রেখেছে – না হলে কারি ফ্লেভার পিৎজাই হোক বা সম্বল-পিৎজা, কোনতেই এনাদের কমতি নেই। আমেরিকার পিৎজা ইতিহাস প্রসার ইত্যাদি নিয়ে গাব্দা গাব্দা বই আছে – লিখতে গেলে অন্য পুরো এক পর্বে হয়ে যাবে। আর আমেরিকার গল্প বাদ দিয়ে পিৎজার বিশ্বজয়ের গল্পও পরিপূর্ণ হয় না। তাই খুব ভিতরে না ঢুকে কিছু জাষ্ট টাচ্ করে রাখা যাক।
বলাই বাহুল্য আমেরিকার মধ্যে পিৎজা বিক্রী প্রথম শুরু হয় উনবিংশ শতাব্দীর প্রায় শেষদিকে নিউ ইয়র্কের রাস্তায় যেখানে ইতালিয়ান ইমিগ্র্যান্টরা এ জিনিস বিক্রী শুরু করে। দোকান করে পিৎজা বিক্রী শুরু করেন জেনারো লোম্বার্ডি ১৯০৫ সালে নিউ ইয়র্কের ৫৩ ১/২ স্প্রীং স্ট্রীটে। মোটামুটি লোম্বার্ডিকেই আমেরিকায় পিৎজার জনক বলে ধরে নেওয়া হয়। ১৯৩০ সাল নাগাদ লোম্বার্ডি তাঁর পিৎজা বিক্রীর দোকানটাকে রেষ্টুরান্টে পরিণত করেন – শুধু মাত্র পাস্তা এবং পিৎজা সার্ভ করা হত। সেই রেষ্টুরান্ট ঘিরেই শুরু হল এক খাদ্য বিপ্লব প্রায় – নিউ ইয়র্কের লিটিল ইতালি।
কিন্তু ইউরোপের মতই, আমেরিকা তেও প্রায় কয়েক দশক লেগে যায় নিউ ইয়র্কের রাস্তা থেকে প্রত্যন্ত ঘরে ঘরে পিৎজার প্রবেশে। আজকের দিনে আমেরিকার থেকে বেশী পিৎজা পৃথিবীর আর কোন দেশ খায় না, কোন কোন সোর্স বলে তার পরিমান নাকি এক বিলিয়ন টন এর কাছাকাছি! আর শুধুমাত্র ফ্রোজেন পিৎজার বিক্রীই আমেরিকাতে বছরে এক বিলিয়ন ডলারের বেশী। আগে যেমন উল্লেখ করেছি, আমেরিকায় পাবলিক পিৎজা নিয়ে নিজেদের মতন এক্সপেরিমেন্ট শুরু করে – এই ব্যাপারে আমেরিকানরা ফরাসী বা ইতালিয়ানদের থেকে পুরো আলাদা। এর ফলে আমেরিকার বুকে দেখা যায় - নিউ ইয়র্কের টেক অ্যাওয়ে স্লাইস, শিকাগোর ডিপ-ডিস, সেন্ট লুইস পিৎজা, বিভৎস থিক ক্রাষ্টের কলোরাডো রকি মাউন্টেন পাই।
ইতালিয়ানরা যেমন পিৎজা বলতে ফ্ল্যাট ব্রেডের উপর চেরা টম্যাটো এবং চীজ ছড়াতো – সেখান থেকে আমেরিকানরা এর মধ্যে ঢুকিয়ে দিল বারবিকিউ-র কেরামতি। উদ্ভাবিত হল সাধারণের মাঝে প্রবল জনপ্রিয় ‘নিউ হেভেন পিৎজা’ (ক্ল্যামস আর অরিগ্যানো টপিং) থেকে শুরু করে হলিউডের কেউকেটাদের জন্য দামী পিৎজা যার টপিং এ থাকে রোষ্ট ডাক এবং গোট চীজ। আগেই বলেছি বারবিকিউ চিকেন পিৎজা (বারবিকিউ চিকেন, রেড ওনিয়ন এবং স্মোকড গুডা চীজ টপিং) যা প্রথম দিকে ছিল ক্যালিফোর্ণিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ – কিন্তু এখন প্রায় সব জায়গাতেই পাবেন। রয়েছে হাওয়াইয়ান পিৎজা – আনারসের টুকরো আর কানাডিয়ান বেকন টপিং।
টপিং ছাড়াও ইতালিয়ান পিৎজার সাথে আমেরিকান ভার্সেনের আরেক মূল তফাত ছিল ব্যবহৃত ক্রাষ্ট-এ। পিৎজা মানেই থিন ক্রাষ্ট এই কনসেপ্টটাও ঘুলিয়ে দিল আমেরিকানরা – ইন ফ্যাক্ট আমেরিকায় বেশী জনপ্রিয় হয়ে গেল থিক-ক্রাষ্ট পিৎজা। আরো বেশী বেশী খাব – বেশী মানেই ভালো এই ভাব থেকেই দেওয়া শুরু হল বেশী বেশী টপিং, মানে বোঝাই টপিং – ডিপ ডিস পিৎজা যার শেষ পরিণতি। তবে ১৯৮০ দশকের পর থেকে এক ধরণের পরিবর্তন দেখা যায় আমেরিকানদের পিৎজা চাহিদায়। নানা পিৎজা চেনের স্ট্যান্ডার্ড পিৎজা এবং ফ্রোজেন পিৎজার আধিক্যে অনেকেই বিরক্ত হয়ে উঠল। ফ্রেস উপাদান ব্যবহারে অনেকে জোর দিল এবং সেই পিৎজা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করল – তা সে ফ্রেস মোজারেল্লাই হোক বা সঠিক কাঠের জ্বালানির ওভান। ১৯৯০ দশক থেকে দেখা গেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট পিজারিয়া যারা ফ্রেস উপাদান দিয়ে পিৎজা বানাচ্ছে তাদের ব্যবসা বেশ ভালো অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসা ভালো দেখে আরো অনেক এমন ইন্ডিপেন্ডেন্ট পিজারিয়া খুলে গেল আমেরিকার বুকে। এমনটা বলা যায় যে আজকের দিনে এই ভাবেই আমেরিকার বুকে আপনি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পিজারিয়ার পিৎজা এবং স্ট্যান্ডার্ডাজাইড পিৎজা দুই পেতে পারেন প্রায় সমভাবেই।
তাহলে কি পিৎজার ইতিহাস মাত্রই একশো তিরিশ বছরের? একদম না – অনেকে মনে করেন যে পিৎজা-র চল সেই ‘প্রস্তর যুগ’ থেকে চলে আসছে, কিন্তু লিপিবদ্ধ প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় খ্রীষ্টপূর্ব ১০০০ বছর আগে যখন ‘পিজায়রে’ শব্দটা ব্যবহৃত হয় – যার অর্থ ছিল ‘চিমটে নেওয়া’ বা ‘ছোঁ মেরে তুলে নেওয়া’। মনে করা হয় যে গরম উনুনের ভিতর থেকে রুটি তুলে নেওয়া বোঝাতেই এই শব্দের ব্যবহার শুরু।
যে কোন বিখ্যাত প্রাচীন জিনিসের উদ্ভাবন ঠিক কোথায় সেই নিয়ে প্যাচাল হবেই! দু-চার প্রাচীন সভ্যতা এটা ‘আমার বাপের’ বলে দাবি দাওয়া করবে এবং সেই নিয়ে চাপান উতোর চলবে সেটাও স্বাভাবিক। পিৎজার ক্ষেত্রে ফাইনাল লড়াই দাঁড়িয়েছিল মিশর এবং ইতালির মধ্যে। মিশর দাবি করল যে পিৎজার পূর্বপুরুষ হচ্ছে আমাদের “চ্যাপ্টা রুটি” (ফ্ল্যাট ব্রেড)। কিন্তু বেশীর ভাগ ঐতিহাসিক আজকাল প্রায় একমত যে, পিৎজার বাপ হিসাবে নামের দাবিদার ইতালিয়ানরাই। তবে এটাও জেনে রাখা ভালো যে পিৎজার কনসেপ্ট ইতালির উত্তরের বাজারে চালু করে ‘এট্রুস্ক্যানস্’-রা (ইতালির উত্তরে ‘ইট্রুরিয়া’ প্রদেশের বাসিন্দা) আর দেশের দক্ষিণে চালু করে গ্রীক-রা।
‘এট্রুস্ক্যানস্’-রা একটু মোটা ধরণের রুটি বানাতো গরম পাথর ব্যবহারের মাধ্যমে সেই রুটি পক্ক করে। রান্না হয়ে যাবার পরে সেই রুটির উপর এটা ওটা টপিং ছড়াতো স্বাদ বাড়াতে। সেই রুটি একদিকে যেমন খাবার বস্তু ছিল আবার অন্যভাবে সেই রুটিকে অনেকটা খাবার পাত্র হিসাবেও ব্যবহার করত তারা। ঝোল বা স্যুপ জাতীয় কিছু রুটির উপর ঢেলে দেদার সাঁটাও। এই যে স্বাদ যুক্ত রুটির কনসেপ্ট তৈরী হয়েছিল সেকালে, সেখান থেকেই দীরে ধীরে পিৎজার বিবর্তন বলে অনেকে মনে করেন।
কিন্তু ইতালীর দক্ষিণ দিকে গ্রীক-রা ওই মোটা ভোজ্য রুটিকে একটু অন্যভাবে ব্যবহার করল ‘এট্রুস্ক্যানস্’-দের থেকে। রুটি বানানোর পর তাতে ফ্লেভার যোগ না করে গ্রীকরা করল কি – আগে থেকে রুটি-তে যা ফ্লেভার মনে হয় যোগ করে তারপরে সেই রুটিকে বেক্ করল। তার ফলে গ্রীকদের কাছে সেই রুটি মেন ডিস্ হয়ে উঠল, তার সাথে স্যুপ ইত্যাদি যোগ করার দরকার হত না।
এর পর রোমান-রা যখন ইতালীতে জাঁকিয়ে বসল, তারা করল কি উত্তরে ‘এট্রুস্ক্যানস্’ আর দক্ষিণে গ্রীক – এই দুই রুটির কনসেপ্ট-ই গ্রহণ করল এবং তার উপর ভিত্তি করে একাধিক রকমের খাবার তৈরী করল। তেমন রুটির কনসেপ্ট এই ভাবে গোটা ইতালিতে ছড়িয়ে পড়েছিল – এবং আজও দেখা যায় ইতালিতে জায়গার উপর নির্ভর করে তাদের নিজের স্থানীয় স্পেশালিটি আছে পিৎজার – যা আসলে সেই রুটির বিবর্তনেরই কাহিনী।
রোমান রাজনীতিবিদ কাতো নাকি বক্তব্য রেখেছিলেন, “গোলাকার আটার তাল যাকে চ্যাপ্টা করে তাতে নানা ধরণের হার্বস, ওলিভ ওয়েল এবং মধু ছড়িয়ে গরম পাথরের উপর বেক্ করা হত” – তো এরপর কি আর সন্দেহ থাকে পিৎজা আদপেই কোথা থেকে উৎপত্তি হয়েছিল!
এবার ব্যাপার হল আরো অনেক জিনিসের মতন ‘আমেরিকান পিৎজা’-ও আমেরিকার নিজেদের উদ্ভাবন! যারা খেয়েছেন তারা জানেন যে, ইউরোপীয়ান পিৎজার সাথে রেগুলার আমেরিকান পিৎজার পার্থক্য অনেক খানি। কিছু বছরের পুরানো হিসাব অনুযায়ী, আমেরিকায় প্রতি সেকেন্ডে ৩৫০ পিৎজার স্লাইস পাবলিকের পেটে যায় এবং দিনে প্রায় এরা ১০০ একর জায়গা জুড়ে থাকবে এত পিৎজা খেয়ে ফেলে! প্রায় ৬১,০০০ পিৎজার দোকান আছে আমেরিকায় ছড়িয়ে – সবচেয়ে জনপ্রিয় টপিং হল পিপারনি এবং কম জনপ্রিয় অ্যাঞ্চোভি!
যদি জানতে চান, সবচেয়ে বড় পিৎজা বানাবার রেকর্ড কার আছে? তাহলে মনে রেখে দিন, সবচেয়ে বড় পিৎজাটি বানান ১৯৮৭ সালে লোরেন্টো আমাতো এবং লুই পিয়ানকোন। এর আয়তন ছিল প্রায় ১০,০০০ স্কোয়ার ফিট এবং ব্যাস ১৪০ ফিট। মালটার ওজন দাঁড়িয়ে ছিল প্রায় ২১,০০০ কিলো - সেটাকে কাটা হয়েছিল ৯৪,০০০ স্লাইসে – এবং সবটাই খেয়ে ফেলেছিল দেখতে আসা ৩০,০০০ দর্শক!
পৃথিবীর নানা জায়গায় পিৎজা ট্রাই করেছি – আশেপাশে স্পেশাল পিজারিয়ার খোঁজ না পেলে অনেক সময় পিৎজা চেনেও খেয়েছি। অপ্রত্যাশিত জায়গায় খুব খুব ভালো পিৎজা খেয়েছি – যেমন এই মুহুর্তে মনে পড়ছে বালি ঘুরতে গিয়ে সানুর নামক এক জায়গায় রাতে আমি আর অমৃতা হাঁটতে হাঁটতে খুঁজে পেয়ে যাই এক ছোট্ট ইতালিয়ান রেষ্টুরাণ্টের। মালিক ইতালিয়ান – এক ইন্দোনেশিয়ানকে বিয়ে করে বালিতেই থিতু হয়েছে কিছু বছর। প্রপার উড ফায়ারড থীন ক্রাষ্ট পিৎজা খেলাম খুব খুব আনন্দ করে। এই ইতালিয়ান শেফের সাথে কিছুক্ষণ গল্পও হল। আমাদের আমষ্টারডামের বাড়ির আশেপাশে বেশ কিছু ভালো রেষ্টুরান্ট ছিল। তার মধ্যে বাড়ির একদম পিছনে ছোট্ট এক ইতালিয়ান রেষ্টুরান্ট ছিল – ডাচ মহিলা বিবাহিত ইতালিয়ান লোকের সাথে। তারা দুজনাই চালাতো রেষ্টুরান্টটা। টুরিষ্টের আনাগোনা বেশী ছিল না সেই জায়গায় – স্থানীয় লোকজন্দের ভীড়েই চলত প্রায় দোকানাটা – মুখ চেনা হয়ে গিয়েছিল। আমি আর অমৃতা প্রায়ই যেতাম সেখানে খেতে – গিয়ে টেবিলে বসলেই চলে আসত ঘরে বানানো ব্রেড এবং গার্লিক বাটার। সেই স্বাদ এখনো মুখে গেলে আছে – টাইপ করতে গিয়ে কি-বোর্ডে এক ফোঁটা লাল পরে গেল!
শেষ কথা এই টাই যে আজকের দিনে পিৎজা এক গ্লোবাল ফুড – মনে হয় সবথেকে জনপ্রিয়ও। ইতালিয়ানরা রেগে যাক বা না যাক, পিৎজাকে সব দেশ নিজের মত আপন করে নিয়েছে। কতটা গ্লোবাল? নীচের বিজ্ঞাপনের ছবিটা দিয়েই শেষ করা যাক – এক আমেরিকান ফুড চেন বিজ্ঞাপন দিচ্ছে পোল্যান্ডে, ভারতীয় নতর্কী সাজে! এর থেকে বড় বিশ্বয়নের প্রমাণ আর কি হতে পারে!
তথ্যসূত্রঃ
১) Carol Helstosky, “Pizza – a Global History”, 2013, Reaktion Books, London.
২) Liz Barrett, “Pizza - A Slice of American History, 2014, Voyageur Press, Texas.
বোনের জামাই তার ফাদার ইন ল কে পিজ্জা বানিয়ে খাইয়েছে , উনিও নাকি পিৎজা খুব পছন্দ করেন .
বোন বললো ওতো গেম লেভেল আপ করে ফেললো , এবার আমি কি করি?
আমি আর কি বলবো জানা শোনা নেই বেশি বুদ্ধি তারও কম - শুনে গেলাম
Kato যখন বলেছেন তখন পিৎজা ওদেরই
পিৎজা তো ভালোই লাগে জেলা শহরেও মোটামুটি স্ট্যান্ডার্ড পিৎজা এখন কিনতে পাওয়া যায়
আর ২০ টাকা/কাপ মেশিনের কফির দোকানেও একটা সস্তা সিস্টেম বের করে ফেলেছে
আমরা ছোট বেলা যে বড় গোল বন রুটি কিনতাম ঐটার উপর টমেটো সস পেঁয়াজ আর এটা সেটা দিয়ে একটা ভার্সন তৈরী করেছে , তবে ওগুলো বার্গার হট ডগ এর দেশি ভার্সন , অথবা ব্রিটিশ পেটিস এর চে কম চলে ,
তবু ওরা রাখে হয়তো যাতে কেউ ''এহ ! এখানে পিৎজা নেই এখানে খাবোনা ! '' বলতে না পারে
কারি বলতে সারা বিশ্ব যেমন একটা থকথকে মশলা দেওয়া তরকারি বোঝে, আমরাও পিৎজা বলতে গুচ্ছ চিজ আর টপিং দেওয়া পিৎজা বুঝি:-)
পিৎজা চেনের চাইতে পাড়ার দোকানের পিৎজা যে কোনওদিন ভালো( আমেরিকায়)।পরে কখনো সুযোগ পেলে ওল্ডশিকাগোর পিৎজা খাবেন। এটিও চেন তবে ভালো পিৎজা বানায়।
'পিৎজা চেনের চাইতে পাড়ার দোকানের পিৎজা যে কোনওদিন ভালো( আমেরিকায়)' - একমত
এ পাড়ায় আরেক জিনিস জনপ্রিয় হয়েছে। কাস্টম মেড পার্সোনাল পিৎজা। ডো থেকে শুরু করে সস, টপিং সব নিজে পছন্দ করতে হবে। নিজের টপিং নিজে পছন্দ করুন তো অনেকদিনই আছে।
কাস্টমমেড টা ভুলে গেছিলাম। ওল্ডশিকাগো ভালো লাগার সেটাও একটা কারণ।
♤♡♢♧ , আপনি অন্য একটা নিক নিয়েই ফেলুন প্লীজ, এই নাম টাইপ করে রিপ্লাই দেওয়া যাচ্ছে না, কপি পেষ্ট করতে হচ্ছে! ওই যেটা বান টাইপের জিনিসটা বলছেন, সেটা আমিও দেখেছি দোকানের শোকেসে। মিও-আমোরে দোকানের কাউন্টারেও দেখেছি মনে হচ্ছে। তবে বলতে বাধ্য হচ্ছি, ভয়ে কেনার চেষ্টা করি নি।
ম-দি, অরণ্যদা - একমত যে চেনের পিৎজার থেকে পাড়ার দোকান যে কোন দিন, যে কোন সময় ভালো। এ বছর তো আমেরিকা যাওয়াই হল না - ওল্ড শিকাগো থেকে খেয়েছি কিনা মনে পড়ছে না - খেলেও আলাদা করে মনে নেই। তবে এবার গেলে মনে রাখব।
ন্যাড়াদা, কাস্টম মেড পার্সোনাল পিৎজা বেশ কয়েক জায়গাতে দেখলাম - এমনকি মনে হচ্ছে কুয়ালালামপুরের শেষ বার গিয়ে দেখলাম বেশ জনপ্রিয়।
সুকি, আম্রিগা এলে কি ইস্ট কোস্টে কোথাও আস?
অরণ্যদা, শেষ কয়েক বছর ইষ্টে কোষ্টে যাওয়া হয় নি, ট্রানজিট ছাড়া। আজকাল বেশীর ভাগ টেক্সাস বা গালফ ওফ মেক্সিকোর আশেপাশে। শিকাগোর কথা শুনে মনে পরে গেল, শেষ বার শিকাগো গিয়ে হোয়াইট সকসের এর একটা বেসবল গেম দেখতে গিয়েছিলাম।
হুম, তোমার সাথে মোলাকাত নিমো-তেই হবে, তাইলে :-)
এখানে একটা মিডল ইস্টের দোকান মাঝখানে ল্যাম্ব পিৎজা বিক্রি করছিল। ভালোই চলছিল দোকানটা, নানা রকম ল্যাম্ব আর চিকেনের ডিশ বেশ রাখত, হঠাৎ উঠে গেল। :(
অসাধারন! পিজা আর ক্রয়স্যন্ট, এই দুটো আমার সবচাইতে প্রিয় খাবার, অর্থাত কিনা ইতালি আর ফ্রান্সের যোগসেতু :-) মার্গারিটার গল্পটা আগেও শুনেছিলাম, এখানে পড়তে আবার ভালো লাগলো। নিয়াপোলিটার আর নিউ ইয়র্কার, এই দুটো স্টাইলের কথাই অনেককে বলতে শুনেছি। আর সুকি বাবুর সাথে একমত, উড ফায়ার্ড পিজা অসাধারন। সাথে এক মগ বিয়ার পেলে আর কোন কথা হবে না।