মাঝে মাঝে কাকতলীয় ব্যাপার দেখা যাক বৈকি – সে বিজ্ঞান জগতে হলেও। যেমন দেখা যায় চার্লস মার্টিন হল এবং পল হেরল্ট এর জীবনে। ‘হল-হেরল্ট’ পদ্ধতির জনক এই দুই জন জন্মেছিলেন এই সালে (১৮৬৩), একই বছরে পৃথিবীর দুইপ্রান্তে পৃথক ভাবে অ্যালুমিনিয়াম নিষ্কাষণের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন (১৮৮৬), আবার দুই জন মারাও গিয়েছিলেন একই বছরে (১৯১৪)।
হল এবং হেরল্টের জীবনে ঢোকার আগে অন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার বলে নেওয়া যাক।
আগের পর্বে লিখেছিলাম যে অ্যালুমিনিয়াম কিভাবে অক্সিজেন এর সাথে জড়াজড়ি করে থাকে আর সেই বন্ধন ভাঙার জন্য দরকার হয় ‘এনার্জি’ (শক্তি) এবং নানাবিধ রাসায়নিক কলাকৌশল যা মানব সমাজকে রপ্ত করতে অপেক্ষা করতে হয়েছে শতাব্দীর পর শতাব্দী। আচ্ছা, একটা ব্যাপার আপনারা খেয়াল করে দেখেছেন কিনা জানি না – বাকি বিশ্ব অ্যালুমিনিয়াম নামে ডাকলেও, আমেরিকানরা বলে অ্যালুমিনাম। তবে দেখতে গেলে এখানে কিন্তু আমেরিকানরা দাবী করতেই পারে যে তাদের তাদের লেখা নামটাই সঠিক। কারন আর কিছুই নয়, স্যার হামফ্রী ডেভি যখন ১৮০৮ সালে অ্যালুমিনিয়াম এর নামকরণ করেন, তখন তিনি সেই নাম ধার করেছিলেন ‘অ্যালাম’ নামক খনিজ থেকে।
রসায়ণের দিক থেকে দেখতে গেলে অ্যালাম হল পটাশিয়াম অ্যালুমিনিয়াম ডাইসালফেট। ভূত্বকের উপরে মাটিতে থাকা নানা ধরণের যৌগরা যখন আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণ থেকে বেরুনো সালফিউরিক অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়া করে তখন ‘অ্যালাম’ এর জন্ম হয়। এতে অ্যালুমিনিয়াম ছাড়াও আরো থাকে ম্যাগনেশিয়াম, আয়রণ, সিলিকন, ক্যালসিয়াম এরাও। আগ্নেয়গিরি অগ্নুৎপাত এর সাথে জড়িত বলে এই অ্যালাম কে পাওয়া যায় ভূত্বকের কাছে।
এটা সবাই জানেন তো যে হামফ্রী ডেভি প্রচন্ড প্রতিভাবান রসায়নবিদ ছিলেন – যাকে বলে ওয়ান ওব দি বেষ্ট। তিনি ১৮০৭ সাল নাগাদ ইলেকট্রোলিসিস পদ্ধতি ব্যবহার করে তিনি সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, স্ট্রনসিয়াম, বেরিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম মৌল পৃথক করতে সক্ষম হলেন তাদের খনিজ যৌগ থেকে। কিন্তু ডেভী অ্যালুমিনিয়াম ধাতু পৃথক করতে পারেন নি – যদিও বাকি সমস্ত কাজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি ওই অ্যালুমিনিয়ায়ের খনিজ যৌগে যে এক ধাতু আছে তা নির্দিষ্ট করতে পেরেছিলেন। এবং তিনি প্রথমে সেই ধাতুর নাম ‘অ্যালুমিয়াম’ দিয়েছিলেন – যেখান থেকেই পরে অ্যালুমিনিয়াম এবং অ্যালুমিনাম শব্দ দুটির জন্ম। ১৮২৯ সালে মৃত্যুর য়াগে পর্যন্ত ডেভী চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর পৃথকীকরণের জন্য – কিন্তু সফলতা পান নি। অ্যালুমিনিয়ামকে ধাতু হিসেবে প্রথম উথপাদনের কৃতিত্ব দেওয়া হয় কোপেনহাগান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হান্স ক্রিশ্চিয়ান ওরষ্টেড-কে। তিনি গবেষণাগারে ১৮২৫ সালে খুব ক্ষুদ্র পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম ধাতু নিষ্কাষণে সক্ষম হয়েছিলেন।
কিভাবে অ্যালুমিনিয়াম ধাতু নিষ্কাষিত হল তার খনিজ যৌগ হতে সে ইতিহাস বেশ জটিল এবং সত্যি বলতে কি গল্প হিসেবেও বেশ বোরিং। কারণ নানা ধরণের চেষ্টা চললেও সফলতা কেউ ঠিক ঠাক পাচ্ছিলেন না। কেউ বা আবার গবেষণাগারে কিছুটা অ্যালুমিনিয়াম পৃথক করতে সক্ষম হলেও ইন্ডাষ্ট্রিয়াল স্কেলে অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন কররার জন্য আমাদের প্রায় অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১৮৫০ সালের কাছাকাছি। সেই সময়ে অ্যালুমিনিয়ামের দাম ছিল সোনার থেকেও বেশী – এক আউন্স (প্রায় ২৮ গ্রাম) সোনার দাম ছিল সেই সময়ে ১৯ ডলার, আর এক আউন্স অ্যালুমিনিয়ামের দাম ছিল ৩২ ডলার! ১৮৮৪ সালে অ্যালুমিনিয়ামের দাম সোনার দামের থেকে তো কমলোই, বেশ কমে হল রুপোর দামের সমান সমান। শক্তির সরাবরাহ সহজলভ্য হতে শুরু করার সাথে সাথে অ্যালুমিনিয়ামের দামও কমতে থাকে – ডায়নামো বা ইলেকট্রিক শক্তির ব্যবহার বেশী হতে শুরু করলে ১৮৮৬ নাগাদ দাম করে গিয়ে দাঁড়ায় ১৫ ডলার প্রতি আউন্স। কিন্তু এই দামও অনেক অনেক বেশী যদি অ্যালুমিনিয়ামকে কারিগরী কাজে লাগাতে হয় তাহলে তার দাম যা হওয়া উচিত তার থেকে।
১৮৮৬ সাল এল সেই মহেন্দ্রক্ষণ – আমেরিকার চার্লস মার্টিন হল এবং ফ্রান্সের পল হেরল্ট আবিষ্কার করে ফেললেন সেই যুগান্ত কারী পদ্ধতি – এনারা ইলেকট্রোলাইজ করে অ্যালুমিনিয়াম ধাতু উৎপাদনের পদ্ধতি আবিষ্কার করে ফেললেন। ক্রায়োলাইটে দ্রবীভূত অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডের ভিতর দিয়ে কারেন্ট পাঠিয়ে কেল্লা ফতে করলেন এনারা। এর দু বছরের মধ্যে জার্মানির কার্ল বেয়ার বক্সাইট থেকে অ্যালুমিনিয়াম অস্কাইড বের করার পদ্ধতি বের করলেন। এই সবের জন্য আকাশ থেকে অ্যালুমিনিয়ামের দাম প্রায় মাটির কাছাকাছি এসে গেল। তখনো পর্যন্ত সারা পৃথিবীর অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন ছিল বছরে মাত্র কয়েক টন – সেখান থেকে ১৮৯১ সালে ৩০০ টন অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদিত হল। আর দাম? দাম কমে দাঁড়ালো আধ ডলার প্রতি আউন্সে!
হল জন্মগ্রহন করেছিলেন আমেরিকার ওহায়ো রাজ্যের থম্পসন নামক জায়গায় – নয় বছর বয়েসে তাঁদের পরিবার ১০০ কিলোমিটার দূরে ওবেরলিন নামক জায়গায় স্থানান্তর করে কারণ সেখানে কলেজ ছিল বিশাল নামকরা। ছোটবেলা থেকেই হল-এর খুব নেশা ছিল রসায়ণ, খনিজ ইত্যাদি বিষয়ে। বাড়িতে সেই নিয়ে নাড়াঘাঁটাও করতেন সবসময়। সময় এলে সেই ওবেরলিন কলেজেই রসায়ন নিয়ে পড়তে ভর্তি হলেন হল। সেই সময় সেখানে প্রফেসর ছিলেন ফ্রাঙ্ক জিউট যিনি অনেকটা সময় জার্মানিতে কাটিয়ে এসেছিলেন গবেষণার কাজে। জার্মানিতে থাকা কালীন অ্যালুমিনিয়াম নিষ্কাষণ নিয়ে ইন্টারেষ্ট পেয়ে বসেছিল প্রফেসর জিউট-কে। গল্পে আছে, তিনি নাকি ক্লাসে একদিন একটা অ্যালুমিনিয়ামের ঢ্যালা এনে টেবিলে ঠক করে রেখে ঘোষণা দিলেন, “যে ব্যক্তি ইন্ডাষ্ট্রিয়াল স্কেলে অ্যালুমিনিয়াম নিষ্কাষণ পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পারবে, সে শুধু মানব সভ্যতায় বিশাল অবদানই রাখবে তাই নয় – প্রচুর অর্থ উপার্জন করতেও পারবে”। সেই শুনে হল নাকি তাঁর পাশের বন্ধুকে বলেছিলেন, “মেট, আমি এই ধাতুর পিছনে লাগছি”।
তারপর হল-এর আচরণ আমাদের নিমোর পালপাড়ার বাণীব্রত-র মত হয়ে গেল কিছু বছরের জন্য। এটা মেশাচ্ছে, সেটা মেশাচ্ছে – এখানে ল্যাব বানাচ্ছে, রান্না ঘর থেকে শোবার ঘরে এটা সেটা করছে। আর কলেজের ল্যাব তো আছেই। কিন্তু কিছুতেই কিস্যু হচ্ছে না কাজের কাজ। এই করতে করতে ১৮৮৬ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারী হল দেখলেন যে ক্রায়োলাইট (সোডিয়াম হেক্সাফ্লুরোঅ্যালুমিনেট) জিনিসটিকে যদি তার গলণাঙ্কের (১০০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড) থেকে বেশী তাপমাত্রায় নিয়ে যান তাঁর গ্যাসোলিন ফার্ণেসে তাহলে তা অ্যালুমিনা-কে পুরো দ্রবীভূত করছে – কফি যেমন দুধে গলে যায় তেমনই ঠিক। ব্যাস এর পরের দুরদার করে বাকি পরীক্ষা চলল – সেই সব রাসায়নিক সমীকরণের ভিতর ঢুকছি না। ১৮৮৬ সালেই ২৩ শে ফেব্রুয়ারী তিনি ল্যাবে ধাতব অ্যালুমিনিয়াম নিষ্কাষণ করে ফেললেন – এবং ৯ই জুলাই করলেন পেটেন্ট ফাইল।
ওদিকে তখন পল হেরল্ট কি করছিলেন? এনারা দুজনে কিন্তু দুজনের কাজ নিয়ে জানতেন না – মানে নিজেরা পৃথক ভাবেই অ্যালুমিনিয়ামের উপর কাজ করছিলে। হেরল্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন ফরাসীদেশের নরম্যান্ডি প্রদেশের এক ছোট্ট শহরে ১৮৬৩ সালে। হল-এর বাবা মা ছিলেন খুব শিক্ষিত – আর এদিকে হেরল্ট এর বাবার ছিল একটা চামড়ার কারখানা এবং পার্ট টাইম কাজ করতেন একসময় ‘ডেভিল’- পদ্ধতি (হেনরী ক্লেয়ার ডেভিল – ফরাসী রসায়নবিদ) ব্যবহৃত অ্যালুমিনিয়াম কারখানায়। এই ডেভিল পদ্ধতি নিয়ে পরের পর্বে লেখা যাবে ক্ষন। যাই হোক, বাবা কাজ করার সূত্রেই খুব সম্ভবত হেরল্ট পড়ে ফেলেছিলেন ডেভিল এর অ্যালুমিনিয়ামের উপর সেই বিখ্যাত বইটি। সেই থেকেই অ্যালুমিনিয়ামের উপর নেশা চেপে গিয়েছিল হেরল্টের।
১৮৮২ সালে হেরল্ট পড়তে ঢুকলেন প্যারিসের ‘ইকোল দেস মাইন্স’ কলেজে। কিন্তু অ্যালুমিনিয়ামের পিছনে দৌড়তে গিয়ে তিনি পড়াশুনা কিছুই করলেন না কলেজে – ফলে তাঁকে বলা হল, পড়াশুনাই যদি না করবে বাপু, তাহলে এখান থেকে বিদায় নাও। হেরল্ট এর পর সেনাবাহিনীতে যোগদান করলেন। ১৮৮৫ সালে হরল্টের বাবা মারা গেলেন হঠাৎ করে – ফলে পারিবারিক ট্যানারি এবং তার সাথে থাকা স্টিম ইঞ্জিনের দায়িত্ব এসে পড়ল হেরল্টের উপরে। হেরল্ট দেখলেন এই মোকা – বাপের মৃত্যুশোক কাটিয়ে হেরল্ট পড়লেন আবার অ্যালুমিনিয়াম নিয়ে। কিভাবে জানা যায় না, কিন্তু তাঁর পুরানো কলেজের কিছু বন্ধুকে তাঁর সাথে যোগ দেবার জন্য রাজী করিয়ে ফেললেন। কিন্তু টাকা তো চাই! হেরল্ট নিজের মায়ের কাছে গিয়ে ঘ্যান ঘ্যান করে ৫০০০০ ফ্রাঙ্ক আদায় করলেন একটা ৪০০ অ্যাম্প, ৩০ ভোল্টের ডায়নামো কেনার জন্য। তখনকার দিনে ৫০০০০ ফ্রাঙ্ক কম টাকা ছিল না! একটু তুলনা করলে বোঝা যাবে – তখন মাংসের কিলো ছিল ২ ফ্রাঙ্ক। গবেষণা শুরু হয়ে গেল – হল এর মত আবিষ্কারের দিনটা হেরল্টের ক্ষেত্রে ঠিক জানা যায় না। কিন্তু তিনিও সেই ক্রায়োলাইট-কে দ্রবক হিসেবে ব্যবহার করেই অ্যালুমিনিয়াম নিষ্কাষণ করে ফেললেন। আবিষ্কারের দিন না জানা গেলেও, দুটো দিন জানা যায় সঠিক ভাবে – হেরল্ট পেটেন্ট ফাইল করলেন ফ্রান্সে ১৮৮৬ সালের ২৩ শে এপ্রিল আর আমেরিকায় ২২শে মে।
তাহলে এবার কি হবে? সম্মান এর ব্যাপার তো আছেই – দুই জনেই নিজেদের স্বপ্নের পিছনে, অ্যালুমিনিয়ামের প্রতি অমোঘ আকর্ষণে জীবনে অনেকটা সময় দিয়েছিলেন। আর তা ছাড়া আছে বাণিজ্যিক এবং অর্থের ব্যাপার – সেই পেটেন্ট থেকে উপার্জিত। হেরল্ট পেটেন্ট ফাইল করেছিলেন আগে – কিন্তু হল দেখিয়েছিলেন প্রথম ডেমো নিজের প্রসেসের। তাই শেষমেশ সেই পদ্ধতির নাম দেওয়া হল “হল-হেরল্ট’ পদ্ধতি। সব চেয়ে বড় কথা এই যে এই নিয়ে দুজনের মধ্যে কোন মনমালিন্য ছিল না – যেটা বিজ্ঞান জগতে খুবই স্বাভাবিক। বরং এরা দুজনে একে অপরের অবদান মুক্তকন্ঠে স্বীকার করতেন।
হল ছিলেন শিল্পপতি মাইন্ড সেটের – অ্যালুমিনিয়াম নিষ্কাষণ কিভাবে ইন্ডাষ্ট্রিলাইজড করা যায় সেই জন্য তাঁর ব্যগ্রতার সীমা ছিল না। একটা কারখানা স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলেন – ফান্ডিং এর চেষ্টা। শেষ পর্যন্ত ক্যাপ্টেন আলফ্রেড হান্টের কাছে কুড়ি হাজার ডলার ধার নিয়ে একটা পাইলট প্ল্যান্ট খুললেন পিটসবার্গে। সেই পার্টনারশিপ থেকে জন্ম নিল “পিটসবার্গ রিডাকশন কোম্পানী” – যা পরিচিত হবে ১৯০৭ সাল থেকে ‘অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানী অফ আমেরিকা”। এর শর্ট ফর্ম অ্যালকোয়া – এরা এখন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনকারী আজকের দিনে।
হেরল্ট কিন্তু হল এর মত শুধু অ্যালুমিনিয়াম নিয়ে বাকি জীবন মেতে ছিলেন না। হল এর নেশা ছিল অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন, কিন্তু হেরল্টের নেশা ছিল অ্যালুমিনিয়াম যৌগ এবং আরো অন্য ইন্ডাষ্ট্রী। অবিবাহিত হল এবং পাঁচ সন্তানের জনক হেরল্ট দুইজনেই মারা গেচলেন ১৯১৪ সালে – প্রথম বিশ্বযুদ্ধ যখন সবে শুরু হচ্ছে।
যদি বাড়িতে সিঁড়িতে ওঠার সময় কোন ধাতব রেলিং এ হাত দেন, বা অ্যালুমিনিয়াম পাত্রে রান্না করতে গিয়ে, বা প্লেনে চেপে - তাহলে মনে মনে একবার হল-হেরল্ট কে ধন্যবাদ দিয়ে দেবেন। ওই দুজন না থাকলে এখনো অ্যালুমিনিয়াম প্রায় রুপোর মতই দামি থেকে যেত।