১৫১।
রাস্তার পাশে দেখি ফুল ছড়িয়ে আছে
হালকা বেগুনী তার রঙ
আকাশের মত নয়, ছাদ জুড়ে উড়তে থাকা চুলের মত নয়
সমুদ্র যখন ঠোঁট লবণাত্ব করে, তেমন সন্ধ্যের জলের মতও নয়
বরং অনেকটা জামার ভিতরে উঁকি মারা গোপনীয়তার মত
ফুলগুলিতে অসতর্ক পা দিয়ে দেখি বড়ই নরম
বড়ই নরম সেই বেগুনী রঙ
হাঁটু মুড়ে বসে হাতের তালুতে মেখে নিই
পেলবতা, চকিতে ছুঁয়ে যাওয়া গোপন স্পর্শগুলি
তখনি এক গাড়ি এসে দাঁড়ায় পাশে
একসময়ের চেনা গলা বলে ওঠে
“এখনো তোমার ফুল কুড়াবার শখ ফুরায় নি”?
কাঁচের ফাঁক দিয়ে চুলের ফিতে বেরিয়ে এসেছে
টের পাই অস্থির কেউ ব্রেকে চাপ দিয়ে আছে অনিচ্ছায়
বলা হয়ে ওঠে না, ধূসরতার ওদিকে তোমার টিপের রঙ
ফিতের সাথে মেলানো জানি এখনো –
“বাড়ি যাও এবার” – বলে গাড়ি চলে যায়
চোখ না তুলেই দেখি হাতের তালুতে ধরা দিয়েছে
হালকা বেগুনী রঙ
১৫২।
এখনো সময় আছে বলে কতটা পথ পেরোনো যায়?
কুয়াশা ভেদ করে বেরিয়ে আসবে কেউ এই ভেবে
প্রতিদিন সকালে হাঁটতে হাঁটতে কল্পিত ছাঁয়া মাড়িয়ে
মনে হয় যদি পথের ওদিকে বাঁক থাকে?
পাশ কাটিয়ে যায় দুধের ক্যান নিয়ে সাইকেল
বাঁকের উল্টোদিক থেকে বাইনোকুলার হাতে ঘুম চোখ
কাল রাতে সে শুনেছিল চেনা শব্দ আবার নতুন করে
গরম পোষাকের ভিতর থেকে উঠে আসা সৌরভ
গায়ে মেখে সেই কোন সকালে কুয়াশায় নেমেছে
এমনই কি তাহলে হয় এমন সকাল গুলি?
ওপাশ ফিরে আর কিছুদিন পরে দেখবে আবার নতুন কাউকে
সে হয়ত সকালের মোরগের ডাক ভালোবাসে না
বন্ধ জানালার পর্দা আরো ভালো করে টেনে নিয়ে
চেনা শব্দ খুঁজতে ফিরে আসবে পশমের ওমে
সে কি বাইনোকুলার ভালোবাসবে?
“নিতে ভুলো না” – মনে করিয়ে দেবে কি তখনও
ঘুম চোখে, কুয়াশা ভেজা দরজার ওপাশ থেকে?
১৫৩।
রাতের বেলা রাত নতুন করে ধরা দেয়
চকচকে জুতোর হিল প্রবল আত্মবিশ্বাসের সাথে চকিতে মেশে
জ্যোৎস্নার সাথে
সরু ফিতের দিকে তাকিয়ে ভাবি
হাতের ছোঁয়া দিয়ে জাগিয়ে দেব নাকি আচম্বিতে?
ফিতে সরিয়ে প্রবেশ করা যায় একরাশ নতুন মুখ মেলাতে
আবার ফিতে সরিয়ে নিলে তুমি কেমন ভঙ্গুর হয়ে যাও -
জানে কি ওরা?
নাকি শুধু কোমরের আবছা ট্যাটুই দেখেছে সকলে?
বা লাল সাদা বেলুনে ফুটে ওঠা তোমার অর্ধেক মুখ
এত হালকা আলোয় কি কাঁধের তিল দেখতে পাবে?
ফিতের ওদিকে রোমকূপে জমে ওঠা আহ্বান
জানে কি ওরা?
নাকি শুধু ঝলকানো কোমরের বেল্টই দেখছে সকলে?
চেনে কি ওরা ফেলে আসা নাকের নথ?
ঘাম মুছে নিয়ে, ফিতে সরিয়ে দিলে
এখনো কি জাগো তুমি, তোমার পুরোটা নিয়ে?
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।