এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  স্মৃতিচারণ  নস্টালজিয়া

  • চেনা মানুষ অজানা কথা - ১৩

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    স্মৃতিচারণ | নস্টালজিয়া | ১৪ মে ২০২২ | ১৫৮১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • কে কোথায় যে মিলে যাবে আর তার ফলে শুধু তাদের নিজেদের জীবন বদলে যাবে তাই নয়, সাথে জড়িয়ে যাবে দেশের মানুষের জীবন, তা আগে থেকে অনুমান করা শক্ত! তবে এটা ঠিক যে বৃটিশ পিরিওডে, এক গাদা ভারতীয়কে জাতিয়তাবোধে সম্পৃক্ত করে তোলার জন্য এবং এমনকি কট্টর স্বদেশী করে তোলার জন্য, তখনকার রেল এর অবদান কম ছিল না! রেল কামরায় উঠে ইংরাজদের কাছে অপমানিত হয়ে কত যে ভারতীয় স্থির করে নিয়েছিল যে যাই হোক করে এদের ভাগাতে হবে, তার সংখ্যা নেহাত কম নয়।  বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামীরা অনেকেই এই লিষ্টে আছেন – যেমন ছিলেন বিধান চন্দ্র রায়।  সেদিন বর্ধমান থেকে ফেরার পথে, এই ঘটনা না ঘটলে হয়ত বিধান রায় রাজনীতিতে আসার কথা ভাবতেনই না! আর আমরা হারাতাম পশ্চিম বাংলার রূপকারকে – থাকত না দুর্গাপুর, কল্যাণী, বিধাননগর সহ অনেক জায়গা।  

    ১৯০৪ সালের কথা – বিধান রায় তখন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র, হোষ্টেলে থাকেন।  একবার হোষ্টেলের বন্ধুদের সাথে বর্ধমান থেকে ফেরার জন্য তখনকার দিনের ইন্টার-ক্লাস ট্রেন কমপার্টমেন্টে উঠেছেন।  কামরা পুরো ভর্তি, অনেকেই দাঁড়িয়ে আছে – কিন্তু দুটো বেঞ্চ জুড়ে এক অ্যাঙলো দম্পত্তি দিব্যি হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে।  বিধান রায় এবং তাঁর বন্ধুরা গিয়ে সেই ভদ্রলোককে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করল যে এই ভাবে বসে থাকা ঠিক নয় – কিন্তু কে শোনে কার কথা! বৃটিশ রক্তের নাকি বেশী অধিকার থাকবে নেটিভ ভারতীয়দের থেকে এমনটাই সেই লোকের মনে ছিল – এবং তার ফলে সে বিধান রায়ের এক বন্ধুকে বিশাল অপমান এবং গালাগাল দিতে লাগলো।  ব্যাস – আর যায় কোথায়! কলেজের ছেলেরা মিলে সেই অ্যাঙলোর সাথে হাতাহাতি হবার জোগাড়। শেষ পর্যন্ত তিনি রণে ভঙ্গ দিলেন। বিধান এবং তাঁর বন্ধুরা সেই কামরায় অন্য বয়ষ্ক এবং মহিলাদের সেই বেঞ্চগুলিতে বসার ব্যবস্থা করে দিলেন।  এবং সাথে তাঁরা অনেকে শপথ নিলেন – যে যার মত করে আপ্রাণ চেষ্টা করবে এই জঞ্জালগুলোর হাত থেকে ভারতকে মুক্তো করতে।    

    পড়াশুনা করে ইংল্যান্ড থেকে ১৯১১ সালে ভারতে ফিরে এসেছিলেন বিধান রায়।  আচ্ছা একটা কথা এই ফাঁকে বলে নেওয়া যাক বি ই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র হিসাবে – বিধান রায় কিন্তু চাইলে বি ই কলেজে ভর্তি হতেই পারতেন।  ভ্যাগিস হন নি! পাটনা কলেজ থেকে অঙ্কে বি এ ডিগ্রী নিয়ে কি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা করবেন ঠিক করতেন পারছিলেন না বিধান রায় – কিন্তু কলকাতাতেই যে পড়বেন সেটা ঠিক।  চিরকাল ভালো ছাত্র ছিলেন – তাই তাঁর দুই কলেজে ভর্তির অ্যাপ্লিকেশন – কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং বি ই কলেজ এই গ্রাহ্য হল।  তিনি ঠিক করলেন ডাক্তারি পড়বেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে – ভর্তি হলেন ১৯০১ সালে।  পুরো কলেজ লাইফে এবং বলতে কি সারা জীবন বিধান রায় বিড়ি, সিগারেট বা মদ ছোঁন নি – এবং সেটা সম্ভব হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়েছেন বলেই। বি ই কলেজে ভর্তি হলে ভাবীর দোকানের এবং বোটানিক্যাল গার্ডেনে চাষ হওয়া গাঁজা বা মদের ফোয়ারা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারতেন কিনা তা এখন বিতর্ক যোগ্য।   

    উচ্চশিক্ষার জন্য বিধান রায়ের আকাঙ্খা ছিল প্রচুর – এবং সেই আশায় জলসিঞ্চন করে গিয়েছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের তখনকার সেকেন্ড প্রিন্সিপ্যাল কর্ণেল লুকিস।  এই লুকিস ভদ্রলোক অন্য বৃটিশদের মত ছিলেন না – ইন ফ্যাক্ট বিধান রায় সহ অনেক ভারতীয় ছাত্রদের মনে জাতীয়তাবোধ যাতে জেগে থাকে তার জন্য উনি শিক্ষা দিয়েছিলেন। বিধান রায় কর্ণেল লুকিস-কে নিজের জীবনের গাইড এবং গুরু মানতেন – পরবর্তী সারাজীবনে নিজের টেবিলে কর্ণেল লুকিসের ছবি রেখে দিয়েছিলেন।  তো এই লুকিস বিধান রায়ের প্রতিভা বুঝতে পেরেছিলেন – তিনি নিজে লন্ডনের বিখ্যাত সেন্ট বার্থোলোমিউ হসপিটালে পড়াশুনা করেছেন।  তিনি বিধান রায়কে রেকমেন্ডশন দিয়ে উৎসাহ দিলেন বিলেত যেতে – সেই মত ১৯০৯ সালে মাত্র ১২০০ টাকা পকেটে নিয়ে জাহাজে চেপে বসলেন বিধান রায়।   

    বিলেতে পৌঁছে দেখলেন হিসেবে ভুল হয়ে গেছে - সেন্ট বার্থোলোমিউ হসপিটাল ছিল তখনকার দিনে সবচেয়ে খরচ সাপেক্ষ কলেজ! তখন বার্থোলোমিউ হসপিটালে লকেজের ডিন ছিলেন ডাঃ শোর।  ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো ছিল না – তাই তিনি প্রত্যাখ্যান করলেন বিধান রায়-কে।  বলা হয়ে থাকে যে বিধান রায়-কে নাকি ডাঃ শোর ত্রিশ বার ফেরত পাঠিয়েছিলেন কলেজের তাঁর রুম থেকে দেড় মাসের ব্যবধানে।  কিন্তু বিধান রায় হাল ছাড়বার পাত্র নয়।  শেষমেশ তিনি রাজী হলেন ডাঃ শোর বিধান রায়-কে ভর্তি করতে।  

    ১৯০৯ সাল থেকে পরের দুই বছর তিন মাস তিনি সেন্ট বার্থোলোমিউ হসপিটাল থেকে শেষ করে ফেললেন এম আর সি পি এবং এফ আর সি এস দুটোই – হলেন রয়েল কলেজ অফ ফিজিশিয়ান এবং রয়েল কলেজ অফ সার্জেন দুটোরই সদস্য একই সাথে। সে এক অভূতপূর্ব কীর্তি! এত কম সময়ে এমন জিনিস আগে কোন ছাত্র করে দেখাতে পারে নি।  ডাঃ শোর ছিলেন বড় মনের মানুষ – বিধান রায়ের ফেয়ারওয়েল নোটে তিনি লিখেছিলেন, 

    “ডাঃ রায়, আমি খুব দুঃখিত যে আমি আপনাকে জাজ করতে ভুল করেছিলাম এবং অত বার আপনাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। যা হয়ে গেছে সেটা তো আর ফেরাতে পারব না – কিন্তু আমি প্রমিস করছি যে আমি যতদিন এখানে ডিন থাকত ততদিন যে ছাত্র আপনার রেকমেন্ডেশন লেটার নিয়ে আসবে, তার জন্য এই হাসপাতালের ভর্তির দরজা সবসময় খোলা থাকবে”।  

    ডাঃ শোর কথা রেখেছিলেন – বিধান রায় বেশ কিছু ছাত্র পাঠিয়েছিলেন পরে।  ডাঃ রণজিৎ পাঁজা-কেও নাকি তিনি সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন (ততদিনে অবশ্য ডাঃ শোর আর ডিন ছিলেন না, ইনফ্যাক্ট মারা গিয়েছিলেন) – যতদূর মনে হয় উনি পাঁজা গিয়ে উঠতে পারেন নি।  

    তো যাই হোক, ১৯০১১ সালে দেশে ফিরে আসার পর আর বিলেত যাবার তেমন উৎসাহ ছিল না বিধান রায়ের – দেশের কাজে নিজেকে ক্রমশঃ নিয়োজিত করছিলেন।  তাই আর সুযোগ এলেও এক-দুই মাস করে যাওয়া আসা মিলিয়ে তিন-চার মাস জাহাজে থেকে সময় নষ্ট করার মত ইচ্ছে ছিল না তাঁর।  কিন্তু ব্যাপারটা পালটে গেল ১৯১৮ সালে – হঠাৎ করে মারা গেলেন বিধান রায়ের ফ্রেন্ড, ফিলসফার, গাইড কর্ণেল লুকিস।  অন্ধকার নেমে এল বিধান রায়ের চোখে এতটা তাঁর জীবন জুড়ে ছিলেন লুকিস।  উনার মৃতদেহ কফিনে ঢুকিয়ে গোড় দেওয়া হল – বিধান রায় সেই কবরের মাটি একটা ঘটে ধরে রাখলেন কিছুটা।  কর্ণেলের বিধবার কাছে প্রতিজ্ঞা করলেন যে লন্ডনে গিয়ে কর্ণেলের বাৎসরিক কাজ করবেন তিনি।  সেই মত ১৯১৯ সালে লন্ডনে যাবার জাহাজে চাপলেন বিধান রায়

    জাহাজ চলছে বিলেতের উদ্দেশ্যে – মাস দেড়েকের ধাক্কা।  শান্ত নিরবিচ্ছিন্ন জীবন – পড়াশুনা করছেন বিধান রায় এক বিশেষ ধরণের সার্জারি নিয়ে।  নানা ছবি আঁকছেন সেই সব কনসেপ্টের – বিশেষ ধরণের এক সার্জারি ট্রাই করবেন তিনি এবার দেশে ফিরে যাতে করে অল্প জায়গা কেটে সার্জারি করা যায়।  এর মূলে ছিল কলকাতায় ডাক্তারি করার প্রথম অভিজ্ঞতা – সাধারণ লোককে অপারেশন করতে হবে বললেই প্রথম প্রশ্ন ছিল, “ডাক্তারবাবু তাহলে অপারেশনের পর কবে কাজে ফিরতে পারব?” কম জায়গা কেটে অপারেশন মানে তাড়াতাড়ি রিকভারি। 

    স্টেপ বাই স্টেপ সব লিখলেন – জাহাজের নিজের কেবিনের জানালার ধারে টেবিলে বসে।  সারা সকাল এই এই সব করেন – বিকেলের দিকে জাহাজের ডেকে খানিক পায়চারী করে চা-টা খান।  বেশ কয়েক দিন লক্ষ্য করলেন জাহাজের ডেকে তাঁর থেকে বছর দশেকের ছোট (পরে জানবেন আসলে সেই ছেলে তাঁর থেকে পনেরো বছরের ছোট বয়েসে) এক ছেলে বসে এক মনে দর্শনের বই পড়ে।  দর্শন নিয়ে উৎসাহ আছে বলে বিধান রায় নিজে থেকে আলাপ করলেন সেই ছেলের সাথে – প্রচন্ড উজ্জ্বল চোখের অধিকারী ছেলেটি।  আলাপ গাঢ় হল ক্রমশঃ – জানতে পারলেন সেই ছেলে নিজের অনিচ্ছায়, বলতে গেলে বাপের চাপেই একপ্রকার ইংল্যান্ড যাচ্ছে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে।  

    হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন এই ভাবেই জাহাজে প্রথম আলাপ হয় বিধান রায়ের সাথে সুভাষ বোসের।  বিধান রায় সুভাষ বোসের প্রিয় বিধে-দা হয়ে ওঠেন সেই জাহাজ যাত্রাকালীন।  তখনো দুই জনার কেউই রাজনীতিতে জড়ান নি – সুভাষের বয়স বছর বাইশ।  এর আগে সুভাষ বাড়ির বাইরে তেমন বেরোন নি – বাপের আদুরে ছেলে ছিলেন।  জাহাজের খাবার খেয়ে সেই কি বিশাল পেট ছেড়ে গেল – তার পরেও পেটের গড়বড় চলতেই থাকল সুভাষের পুরো জাহাজ যাত্রা জুড়েই। এবং সেই সময় সুভাষের পেটের রোগের পুরো চিকিৎসা করলেন বিধান রায়।  কি করলে পেট ঠিক থাকবে, পাদ কম হবে – সবই পুরো ছকে দিলেন।  তার পর থেকে সুভাষ দেশে ফিরে কলকাতায় থাকলে বিধান রায়ের সাথে মাঝে মাঝেই কনসাল্ট করতেন।  

    এবং সেই হিসেবে দেখলে সুভাষ শেষ দিন পর্যন্ত মোটামুটি ফিট ছিলেন গড়পড়তা বাঙালির থেকে। তার পিছনেও ছিল বিধান রায়ের তৈরী করে দেওয়া ডায়াট চার্ট।  বিধান রায় বুঝিয়েছিলেন যে সুভাষ যদি ওই সেনার পোষাক পরে ইমেজ গড়ে তুলতে চান, তাহলে নিজের ভুঁড়ির ব্যাপারটা কন্ট্রোলে রাখতে হবে।  কারণ ভুঁড়িওলা যুদ্ধ সেনা প্রধান খুব এক দৃশ্য সুখকর নয়।  বিধে-দার সেই পরামর্শ মেনে চলেছিলেন আজীবন সুভাষ।  কেবল সেবারে এমিলি-র সাথে বিয়ের পর অষ্ট্রিয়াতে যে দুই মাস ছুটি কাটিয়ে এলেন তখন বেশ খানিকটা ওজন বেড়ে গিয়েছিলেন।  বিধান রায় সেই দেখে বলেছিলেন, 

    - সুবু, এটা কি করছিস! বলেছি না কনট্রোলে রাখবি ডায়াট!
    - বিধে-দা, আর বোলো না। এমিলি খুব ভালো রান্না করে।  ওই যে আলু ভাজা টাইপের সুইস ডিসটা আছে (সুভাষ বলতে চেয়েছিলেন বিখ্যাত ‘সুইস পট্যাটো রোষ্টি’-র কথা), সেটা এত ভালো খেতে লাগে! 

    সুভাষ নিজেকে আবার কনট্রোলে এসেছিলেন বিধে-দার বকুনি খেয়ে।  যাই হোক, আবার ফিরে যাওয়া যাক এনাদের প্রথম আলাপের সেই জাহাজের ডেকে। একদিন সুভাষ খুবই অনুযোগ করছেন –

    - এই দেখুন না, আমার একদম যেতে ইচ্ছে নেই বিলেত যেতে বা আই সি এস এর প্রিপারেশন নিতে
    - দ্যাখো, ইচ্ছে না থাকলে সেই জিনিস না করাই ভালো
    - তাহলে, ফিরে যাব বলছেন? পরের স্টপে নেমে ফিরে যাব?
    - সেটা কি ঠিক হবে? দ্যাখো বাবা-মা পাঠিয়েছে অনেক আশা নিয়ে। তাছাড়া এমনও তো হতে পারে যে একবার সিরিয়াসলি পড়তে শুরু করলে হয়ত বিষয়টা ভালোবেসে ফেলবে! একবার ট্রাই করেই দ্যাখোনা!
    - বলছেন? ঠিক আছে – তাহলে দেখি একবার ট্রাই করে

    সেদিন পাশে বিধান রায় না থাকলে সুভাষ হয়ত নেমেই পড়তেন পরের বন্দরে।  সেদিন এই ভাবে কথা বলতে বলতে বেশ বিকেল গড়িয়ে এসেছে – সময়ের দিকে খেয়াল নেই উনাদের দুজনেরই জাহাজের ডেকে বসে। সমন সময় আকাশ জুড়ে মেঘ করে বেশ ঝড় উঠলো। হঠাৎ করে মনে পড়ল বিধান রায়ের যে কেবিনের দরজা খোলা – আর সারা টেবিল জুড়ে ছড়ানো আছে সেই বিশেষ সার্জারির ভাবনা-চিন্তা, ড্রয়িং।  

    এটা মনে আসতেই দুরদার করে নিজের কেবিনের দিকে দৌড় দিলেন বিধান রায়। গিয়ে দেখলেন যা ক্ষতি হবার হয়েই গেছে – সব কাগজপত্র জাহাজের জানালা দিয়ে উড়ে গেছে সমুদ্রের জলে! মাথায় হাত দিয়ে মন খারাপ করে বসে রইলেন।  এত দিনের পরিশ্রম – আর আমাদেরও ভাগ্য খারাপ। সেদিনের সেই কাগজ পত্র গুলো না হারালে আজকের দিনের ‘কি-হোল সার্জারী’ বা ‘লেপ্রোস্কপিক সার্জারী’ এগুলোর জনক হিসেবে বিধান রায়ের নামই জানতাম।

    কর্ণেল লুকিস এর অক্সফোর্ডশায়ারের বাড়িতে বাৎসরিক কাজ সেরে, লন্ডনের টেমস নদীতে পিন্ডি বিসর্জন নিয়ে তর্পণ করে সেই ১৯১৯ সালেই দেশে ফিরলেন বিধান রায়।  আই সি এস পরীক্ষায় ছড়িয়ে সুভাষ দেশে ফিরলেন ১৯২১ সালে।  এর পর নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে।  দুজনাই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন – এক বিশ্বাসের সাথে শুরু করলেও ক্রমশঃ রাজনীতি মতাদর্শ তফাত হয়ে যাচ্ছিল দুজনাই বুঝতে পারছিলেন। কিন্তু নিজেদের মধ্যে ভালোবাসার খামতি ছিল না কোনদিন। 

    একদিন দুজনা মৌলালির মোড়ে এক চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে চা খেতে খেতে গল্প করছেন এমন সময় দেখা গেল এক ভারতীয় নিয়ম মেনেই রাস্তা পার হচ্ছিল, কিন্তু তাতে করে এক ব্রিটিশের গাড়ি চালানোয় নাকি অসুবিধা হওয়াতে, গাড়ি থেকে নেমে সপাটে এক চড় মারলো সেই সাহেব ভারতীয়টিকে। এটা দেখে হাতের চায়ের কাপ ছুঁড়ে ফেলে দিলেন সুভাষ, প্রচন্ড রাগে।  চায়ের ছিটে লাগলো বিধান রায়ের সাদা জামায় – বিধান রায় বললেন,

    - কি হল রে সুবু?
    - বিধে-দা, তুমি ভাবছো এই অসভ্যগুলো শিখবে অহিংস ভাবে?
    - তো তুই কি করবি? তোর সহিংস ক্ষমতা আছে?
    - কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে হবে – দরকার হলে আমি জার্মানী গিয়ে হিটলারের সাথে মিটিং করব!
    - হিটলারের সাথে মিটিং এ টিকতে পারবি?
    - কেন টিকতে পারবো না কেন? 
    - কিছু না – এমনি বলছিলাম।

    সেদিন কথা আর এগুয় নি।  বিধান রায় বুঝতে পারেন নি যে সুভাষ সিরিয়াসলি হিটলারের সাথে দেখা করার কথা ভাববে! আর সুভাষও বুঝতে পারেন নি কোন প্রসঙ্গে বিধান রায়, হিটলারের সাথে মিটিং-এ টিকতে পারার কথা বলছেন! সুভাষ সেটা বুঝবেন হাড়ে হাড়ে ১৯৪২ সালে যখন ফাইন্যালি হিটলারের সাথে দেখা করবেন – আর সেই সাক্ষাতের পর প্রথম চিঠিটা সুভাষ বিধান রায়-কেই লিখবেন –

    এই রহস্যটা জানতে হলে একটু ফিরে দেখতে হবে ইতিহাস -  অনেকেই এটা জানেন যে হিটলারের নিজস্ব ডাক্তার ছিলেন থিওডোর মোরেল।  হিটলারের সাথে আলাপ এবং জুড়ে যাবার অনেক আগেই থিওডোর মোরেলের সাথে পরিচয় ছিল বিধান রায়ের। এঁরা দুজনাই প্রায় একই বয়সী – প্রথম বিশ্বযুদ্ধ তখনো বেশ কিছু বছর দূরে, ইংল্যান্ড আর জার্মানীর সম্পর্ক তেমন খারাপ হয়নি তখনো।  ১৯১০ সালের গ্রীষ্মে সামার ট্রেনিং করতে ইংল্যান্ডের সেন্ট বার্থোলোমিউ হসপিটালে এসেছিলেন থিওডোর মোরেল। সেখানেই আলাপ মোরেল এবং বিধান রায়ের।  মোরেল অত ব্রাইট ছাত্র ছিলেন না – কিন্তু তাঁর এক গুণ ছিল, এদিক ওদিক করে ইনফর্মেশন নিয়ে, এটা সেটা যোগাড় করে কাজ সামলে নেবার – মানে জুগাড়ে টাইপের।  সেই গুণটা তাঁর ক্ষেত্রে অনেক কাজ দিয়েছিল হিটলারের সাথে কাজ করার সময়।  যাই হোক, সেই সামার ট্রেনিং এ মোরেল বুঝতে পেরেছিলেন যে বিধান রায় এক মেডিক্যাল জিনিয়াস।  তাই বিধান রায়ের সাথে কানেক্ট রেখেছিলেন অনেকদিন – যতদিন পর্যন্ত না বিধান রায় হিটলার এবং নাজি-দের সাথে মোরেলের সম্পর্ক জানতে পেরেছিলেন।  মেডিক্যাল প্রফেশন এক অদ্ভূত বস্তু – এখানে নীতির সীমারেখাও অনেক সময় বিতর্ক যোগ্য হয়ে ওঠে।  মোরেল মাঝে মাঝেই চিঠি দিয়ে মেডিক্যাল পরামর্শ চাইতেন বিধান রায়ের কাছে।  রুগীর কনফিডেনশিয়ালিটি বজায় রাখার জন্য বিধান রায় কোন দিন রুগীর নাম জিজ্ঞেস করেন নি।  তিনি কেবল রোগের চিকিৎসা পরামর্শ দিতেন।

    আজ আমরা যেমন জানি মোরেল ছিলেন হিটলারের এক্সক্লুসিভ ফিজিসিয়ান, সেই খবরটা সেই যুগে অত চট করে ছড়িয়ে পরে নি।  বাইরে তথ্য বেরুবার খুব কড়াকড়ি ছিল তখন।  একবার মোরেলের কাছ থেকে চিঠি পেলেন বিধান রায় যে তাঁর এক রুগী খুব পেটে ক্র্যাম্প, বদহজম এবং পাদের প্রবলেমে ভোগেন।  মোরেল অনেক কিছু দিয়েছেন, কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না – ডিনারের পরে টেবিলেই পাদ শুরু হয়ে যায়।  আর সেই পাদে বিভৎস গন্ধ।  রুগী খুব প্রভাবশালী বলে কেউ ভয়ে মুখ খোলে না। কিন্তু পরে সবাই আলোচনা করে যে কি কথা হচ্ছিল সবাই মন দিয়ে শোনেই নি – তাড়াতাড়ি টেবিল থেকে পালানোর জন্য সেই প্রতাপশালী ব্যক্তি যাই বলে, তাতেই হ্যাঁ করে সবাই কেটে পরে।  

    বিধান রায় বাকি কথায় নজর না দিয়ে পেট আর পাদের প্রবলেমটার দিকে নজর দিলেন।  চিঠিতে জানালেন যে এই ভাবে দুম করে তো আর ঔষুধ পেসক্রাইব করা যায় না, তবে ডায়াটে কিছু পরিবর্তন আনা দরকার খুব তাড়াতাড়ি।  কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি দেখেছেন যে মাড়োয়ারীদের পাদের গন্ধ গড়পড়তা বাঙালীর পাদের গন্ধের থেকে একটু কম।  তার মানে মাড়োয়ারীরা যে নিরামিষ খাবার খায়, তাতেই গন্ধ কম হয় পাদে।  সেই অ্যানালজি টেনে বিধান রায় মোরেল-কে বললেন যে তিনি যে রুগীকে ভেজিটেরিয়ান ডায়াটে রাখেন।  পাদে গন্ধ আগে কমানো যাক – তারপর পাদ কমানোর চেষ্টা করা যাবে, স্টেপ বাই স্টেপ।

    এই হল বিধান রায়ের শেষ পরামর্শ মোরেল-কে।  কারণ এর কিছুদিন পরের বিধান রায় কাগজে দেখেন যে হিটলার গেছেন মুসোলিনির সাথে দেখা করতে – আর ছবিতে হিটলারের পাশে দেখা যাচ্ছে মোরেল-কে।  দুই আর দুই এ চার করে নিতে সমস্যা হল না বিধান রায়ের – কোন পাদের রুগীর চিকিৎসা করছিলেন মোরেল বুঝে নিতে অসুবিধা হল না বিধান রায়ের। এর কিছু দিন পর বিধান রায় চিঠি পান মোরেলের এই মর্মের যে নিরামিষ ডায়াটে তাঁর রুগীর পাদের গন্ধ কমেছে।  এবার তাহলে পাদের পরিমাণ কিভাবে কমাবে তার চিকিৎসা করা যাক।  কিন্তু নাজি-দের সাথে কোন সম্পর্ক রাখতে চান না বলে বিধান রায় আর সেই চিঠির জবার দেন নি। কিন্তু হিটলারের পাদের গন্ধের ব্যাপারটা সেই ১৯৩৮ সাল থেকেই বিধান রায় জানতেন – বাকি বিশ্ব যেটা জানবে আরো তিরিশ বছরপরে জার্মানির গোপন নথী ডি-ক্লাসিফাই করা হলে।  

    তাই যেদিন সুভাষ বলেছিল হিটলারের সাথে দেখা করতে যাবে, সেদিন বিধান রায় রসিকতা করেছিলেন মিটিং এর সময় সুভাষ টিকতে পারবে কিনা! যদিও সেদিন আর সুভাষ-কে হিটলারের পাদের গন্ধের ব্যাপারটা খুলে না বলে, কিছু নয় বলে এড়িয়ে গিয়েছিলেন।

    ১৯৪২ সালে হিটলারের সাথে সুভাষ দেখা করতে গিয়ে যে ডিনারের আয়োজন হয়েছিল সেখানে একদম ফার্ষ্ট হ্যান্ড অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন বিধে-দা ‘টিকতে পারবি’ তো বলে কি বোঝাতে চেয়েছিলেন! মেন কোর্স শেষ হয়েছে কি হয় নি, শুরু হল হিটলারের বিশাল পাদ। সেদিন সুভাষের অনারে মাংস ইত্যাদি ছিল পুরো দস্তুর – তাই পাদের গন্ধও তেমন বিপুল! হিটলারের সাগরেদরা এর জন্য প্রস্তুত ছিল – মুখ মোছার নাম করে, নাক ঝাড়ার নাম করে সুগন্ধি রুমাল বারে বারে মুখে চেপে আছে সব।  কিন্তু সুভাষ তো আর রুমালে সেন্ট মাখিয়ে নিয়ে যান নি! ইন ফ্যাক্ট রুমালই নিয়ে যান নি সেদিন।  আলোচনা আর বেশী গড়াচ্ছে না কোন বিষয়েই – হিটলার যাই প্রস্তাব দিচ্ছেন, তাতেই তাঁর সেনা বাহিনী প্রধান থেকে রাষ্ট্রের বাকি হোমড়া চোমড়া-রা রাজী।  সুভাষের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা নেহাত কম ছিল না বলে তিনি কেস বুঝতে পেরে গিয়েছিলেন – 

    বাড়ি ফিরে তিনি চিঠি লিখেছিলেন তাঁর বিধা-দা কে। মনে পড়ে গিয়েছিল সেই বিলেত যাত্রার সময় তাঁর পেটের চিকিৎসা কিভাবে করেছিলেন বিধান রায়।  বিধান রায় সেই চিঠি আর হাতে পান নি – হঠাৎ করেই সাবমেরিনে করে জার্মানি ছাড়া সিদ্ধান্ত নেন সুভাষ।  

    সেদিনের বিধান রায়-কে লেখা চিঠি এখনো ভারত সরকার ডি-ক্লাসিফাই করে নি। যেদিন ডি-ক্লাসিফাই করবে সেদিন এমন কিছু নজরে আসবে, 

    “বিধে-দা, সেদিন মৌলালির মোড়ে আমি যখন হিটলারের সাথে দেখা করব বলেছিলেম, তুমি বলেছিলে ‘টিকতে পারবি’।  সেদিন আমি এর অর্থ বুঝতে না পারলেও আজ ডিনার থেকে ফিরে অন্তর থেকে টের পেলাম তুমি কি বলতে চেয়েছিলে! সত্যিই টেকা এক দম অসম্ভব।  আর তার থেকেও বড় কথা এই যুদ্ধে জার্মানীর যদি পতন হয় – তার এক অন্যতম বাকি সবার অজানা কারণ থাকবে এই পাদের গন্ধ! উনার কোন মন্ত্রী, সচিব, সাগরেদ মনোযোগ দিয়ে উনার কথা শুনছেই না! সবাই ঘর থেকে পালাবার জন্য ব্যস্ত। 

    হিটলার জিজ্ঞেস করছেন, “তাহলে পোল্যান্ড-কে আক্রমণ করা হোক নাকি?” কথা শেষ না হতেই সমস্বরে, ‘হ্যাঁ হোক, হ্যাঁ হোক’ বলে সায় দিল।  “রাশিয়া কি যাওয়া ঠিক হবে এখন”?  বাকি সবাই “অবশ্যই হবে, আমরা রেডি” রায় দিয়ে দিল।  

    শারীর বৃত্তিয় কোন কর্ম যে এই ভাবে যুদ্ধের গতিবিধি তথা মানব ইতিহাসকে কন্ট্রোল করে, এমন উদাহরণ আমি আজ পর্যন্ত দেখি নি বিধে-দা”।

    আজকের দিনে হিটলারের মেডিক্যাল রেকর্ড অনেকটাই প্রকাশিত হয়েছে – ওপিয়াম ইত্যাদির সাথে হিটলারের পাদের সম্পর্কও।  সেদিন সেই চিঠি বিধান রায়ের হাতে এলে কে জানে ইতিহাস কেমন দাঁড়াতো!  

    নীচের ছবিতে বিলেতে ১৯১১ সালে বিধান রায় -
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • স্মৃতিচারণ | ১৪ মে ২০২২ | ১৫৮১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ১৫ মে ২০২২ ২১:৪৩507691
  • একঘর। অরিজিনাল সূকি!!
  • Amit | 121.2.***.*** | ১৭ মে ২০২২ ১৮:১৩507785
  • এটা যাতা লেভেলের হয়েছে মাইরি। 
     
    কে জানে বাবা হালের একাডেমী পুরস্কারে ও এমনই  কিছু ঘটেছিলো কি না। তবে লিখলেই রোদ্দুর রায় র মতো কেস খাওয়ার রিস্ক আছে। 
  • শান্তনিক বসাক | 2402:3a80:1986:8c8a:478:5634:1232:***:*** | ০৯ জুন ২০২৪ ২৩:২৪532969
  • এটা না জাস্ট যা তা....মানে যাআআ তাআআআ লেভেল!!! কোন কথা হবে না!!!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন