তো যাই হোক, সেদিন খুব ভোর ভোর সৌমিত্র হাজির হলেন উত্তমকুমারের বাড়ি। সেখান থেকে দুজনে গড়ের মাঠে যাবেন উত্তমকুমারের গাড়িতে করে। এমনটাই চলছিল বেশ কয়েকদিন। এমনিতে উত্তমকুমার আর সৌমিত্র দুইজনাই একদম সাহেবী টাইম মেনটেন করতে ভালোবাসেন। সৌমিত্র পৌঁছালে দুজনে এককাপ করে চা খেয়েই বেড়িয়ে যেতেন গাড়ি নিয়ে। অন্যদিনের মত বাড়ি ঢুকেই সৌমিত্র হাঁক দিলেন, “বৌদি, চা দাও”। কিন্তু সেদিন আশেপাশে উত্তমকুমারকে দেখা গেল না। বরং বাড়ির ভিতর থেকে দাদার আওয়াজ ভেসে এল, “পুলু, তুই খানিক বসে চা খা – আমি আসছি”।
সৌমিত্র বেশ অবাক হলেন – এমন সময় চায়ের কাপ হাতে বাইরের ঘরে এসে ঢুকলেন গৌরী দেবী। যাঁরা ভাবেন কেবল সুপ্রিয়াদেবী-ই ‘তোমাদের দাদা’ বলে উল্লেখ করতেন তাঁদের জানিয়ে রাখি, ‘তোমাদের দাদা’ উনার কপিরাইটেড ফ্রেজ নয়। গৌরী দেবীও বাইরের লোকের সামনে ‘তোমাদের দাদা’ নামেই উল্লেখ করতেন। চা-য়ের কাপটা সৌমিত্রের দিকে বাড়িয়ে বললেন –
- ঠাকুরপো, তুমি চা খাও। তোমাদের দাদা আসছে খানিক পরে
- কি ব্যাপার বৌদি? উত্তম-দা তো দেরী একদম পছন্দ করেন না!
- আর বোলো না। সবাইকে তো আর বলা যায় না, কিন্তু তুমি তো ঘরের লোক। আজ সকাল থেকেই তুলকালাম চলছে। দেড় খানা বিড়ি আর এককাপ চা না খেলে তোমাদের দাদার পায়খানা পরিষ্কার হয় না সকালে। তোমার সাথে বসে খাওয়া চা উনার দ্বিতীয় কাপ সকালে
- তো আজ আবার এমন কি হল? উত্তম-দা যে বিড়ি খায় সেটা তো জানতাম না!
- কেউ জানে না! তুমি আবার বাইরে এসব কথা ফাঁস কোরো না যেন! জানোই তো তোমাদের দাদা নিজের ইমেজ নিয়ে কি সচেতন। ওদিকে সেই পোর্টে চাকুরী করার সময় যে বিড়ি খাবার অভ্যাসটা ধরে ছিল সেটা পুরোপুরি ত্যাগ করতে পারছে না। তখন তো কিছুদিন মেসে ছিল। সেই মেসের ছেলেদের কাছেই বিড়ি খাওয়া শেখা – আর বুঝতেই পারছো মেসের মাত্র একটা পায়খানায় কি ভাবে কাড়াকাড়ি পড়ে যেত। যাই হোক, বাদ দাও সেই সব কথা।
- কিন্তু আজ হলটা কি? বিড়ি ফুরিয়ে গেছে গেছে নাকি?
- আরে বিড়ি ফুরায় নি। কিন্তু বাড়ির কাজের লোক ‘সুতপা’ বিড়ির বদলে কি এক অন্য ব্র্যান্ড এনে দিয়েছে। সেই বিড়ি খেয়ে নাকি পায়খানা হবে না – এই নিয়ে সকাল থেকে ঝামেলা! বিড়িরও যে ব্র্যান্ড হয় তা জানা ছিল না বাপু!
এই সব কথার মাঝে ঘরে ঢুকলেন উত্তমকুমার। ঢুকেই বললেন, “এবার চল পুলু, আজ আর আমার সেকেন্ড কাপ চা খাবার সময় হবে না, দেরী হয়ে গেছে। ওদিকে রশিদ রেগে যাবে খুব”। দুজনা গাড়ি চেপে রওয়ানা দিলেন ময়দানের দিকে ঘোড়ায় চড়া শিখতে।
এবার তাহলে ঘোড়ায় চড়া শেখার ব্যাকগ্রাউন্ড একটু ক্লীয়ার করে নেওয়া যাক। এটা শুধু শখের ঘোড়া চড়া শেখা নয় – কতটা প্রফেশন্যাল কমিটমেন্ট থাকলে এমন সময় দিয়ে কোন কিছু শেখা যায়, বাংলা সিনেমা জগতে এই কিংবদন্তী দুইজন তার উদাহরণ ছিলেন জীবন্ত। এঁরা দুজন তখন ঘোড়ায় চড়া শিখছেন ‘ঝিন্দের বন্দী’ সিনেমার জন্য।
১৯৫৯-৬০ সালের কথা। তপন সিংহ তখন ক্ষুধিত পাষাণ শেষ করে ঝিন্দের বন্দীতে হাত দিয়েছেন – ক্ষুধিত পাষাণের সাবটাইটেল করতে গিয়ে লন্ডন গিয়ে হোটেলে বসে দশ দিনের মধ্যে লিখে ফেলেছিলেন চিত্রনাট্য। আমরা এটা সবাই জানি যে ‘ঝিন্দের বন্দী’ উপন্যাস শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আর সেটা অ্যাডাপ্ট করা হয়েছিল ১৮৯৪ সালে লেখা অ্যান্থনী হোপের লেখা ‘প্রিজনার অফ জেন্দা’ উপন্যাস থেকে। এই সব সাহিত্যিক কচকচি-তে আজকে ঢুকবো না – শুধু এটুকু উল্লেখ করে দিই যে মূল ‘ঝিন্দের বন্দী’ উপন্যাস থেকে সিনেমার কাহিনী অনেকটা বিচ্যুত হয়েছিল। এবং এর জন্য তপন সিংহ বেশ সন্দীহান ছিলেন এই ভেবে যে এমনটা করা ঠিক হল কিনা – বা পাবলিক এই পরিবর্তন কেমন ভাবে নেবে! তবে সিনেমা রিলিজের পর বিশাল হিট হলে টের পাওয়া গেল যে পাবলিক খুব খারাপ ভাবে নেয় নি ব্যাপারটা!
তো সিনেমার চিত্রনাট্য তো ঠিক হল – প্রডিউসারও পাওয়া গেল। কাষ্টিং ঠিক হল সৌমিত্র ময়ূরবাহন, উত্তম কুমার ডবল রোলে – গৌরীশঙ্কর রায় আর শঙ্কর সিং, অরুন্ধতী দেবী রানী কস্তুরী বাই এর ভূমিকায়। এমনিতে মধ্যপ্রদেশের পটভূমিকায় উপন্যাসটা লেখা হলেও সিনেমার আউটডোর লোকেশন ঠিক হল রাজস্থানের উদয়পুর। অনেক কিছু চ্যালেঞ্জ আসতে আসতে সমাধান হতে শুরু করলেও, দুটো সমস্যা বেশ প্রবল ভাবেই প্রকট হল। এই সিনেমাটা করতে হলে দুটো জিনিস ভালো ভাবে শিখতে হবে সৌমিত্র এবং উত্তমকুমার দুইজনকেই – তা হল, প্রথমত ঘোড়ায় চড়া শেখা আর দ্বিতীয়ত তলোয়ার চালানো রপ্ত করা।
তপন বাবু পড়লেন মুশকিলে। ঘোড়ায় চড়া কিভাবে শেখাবেন উত্তম-সৌমিত্রকে! আর বললেই কি ওরা রাজী হবে! প্রথম স্ক্রীপ্ট রিডিং হল যেদিন কলকাতায়, সেই স্ক্রীপ্ট শুনেই দুজনেই তো প্রবল ভাবে রাজী হয়ে গেল সিনেমা করতে। এর আগে সৌমিত্র নেগেটিভ চরিত্র করেন নি – তপন সিংহ একটা রিস্ক নিয়েছিলেন, কিন্তু সৌমিত্রের দিক থেকে কোন দ্বিধা ছিল না চরিত্রটা করার পিছনে। স্ক্রীপ্ট রিডিং শেষ হলে তপন বাবু বললেন, “সবই তো হল, কিন্তু চরিত্র অথেন্টিক করার জন্য তো তোমাদের দুজনকেই ঘোড়ায় চড়া আর তলোয়ার খেলা শিখতে হবে”। উত্তম বললেন –
- কি রে পুলু, পারবিনা শিখতে?
- তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করছো উতো-দা? জানো আমি কি ডানপিটে ছিলাম? কৃষ্ণনগরে একবার কাঠের ইলেকট্রিক পোলে উঠেছিলাম সরস্বতী পুজোয় প্যান্ডেলের জন্য হুকিং করতে! বিশ্বাস না হয় তুমি সুধীর-কে জিজ্ঞেস করে নিও পরের বার দেখা হলে।
- তাহলে তুই রাজী বলছিস?
- রাজী মানে! একপায়ে খাড়া আমি! এবার তুমি বলো রাজী কিনা! তোমার এখন কাল্ট স্ট্যাটাস। সময় বের করতে পারবে!
- সে না হয় ভোরের দিকে সময় বের করা যাবে। কিন্তু শেখাবে কে আমাদের তপন?
জটিল প্রশ্ন – শেখাবে কে! কলকাতায় বসে সমস্যার সমাধান করতে পারলেন না। তখন অন্য এক কাজে বেশ কিছু সময় বোম্বেতে কাটাতে হচ্ছিল তপনবাবুকে। বোম্বে ফিরে গিয়ে এক পার্টিতে দেখা রাজকাপুরের সাথে – এক টেবিলেই বসে ডিনার সারছিলেন সেদিন। রাজকাপুরের প্রবল পছন্দের ডিস ছিল ‘পনীর পসন্দ’ – ব্যুফে থেকে প্লেট ভর্তি করে রাজকাপুরের খাওয়া দেখতে দেখতে তপন বাবুর চোখ কপালে উঠেছিল। তিনি নিজে খেতে ভালোবাসলেও বেশ পেট পাতলা লোক – বাড়িতে অরুন্ধতি দেবী প্রায়শঃই তখন কাঁচকালার ঝোল রেঁধে খাওয়াচ্ছেন। কে বলবে যে মাত্র দুই বছর আগেই বাকি অনেক কিছু গুণের সাথে অরুন্ধতি দেবী নিজের হাতের রাঁধা পটলের দোর্মা খেয়েই প্রেমে কাবু হয়ে গিয়েছিলেন তপনবাবু।
পনীর পসন্দ খাচ্ছেন না দেখে রাজকাপুর প্রশ্ন করলেন তপন বাবুকে
- কি তপা, পনীর পসন্দ হচ্ছে না তোমার? এখানে আর বাঙালী মছলি কোথায় পাবে!
- না না, এমন কোন ব্যাপার নয়
- তাহলে খাচ্ছ না কেন? কিছু কিছু চিন্তায় আছো নাকি?
রাজকাপুর আর তপন সিংহ একদম সমরয়েসী। তপন বাবু রাজকাপুরকে ডাকতেন রাজু, আর রাজকাপুর ডাকতেন তপা বলে। ‘অঙ্কুশ’ দেখার পর থেকেই রাজকাপুর তপন বাবুর কাজের ফ্যান – ‘কাবুলিওয়ালা’ দেখে তো একদম ফিদা। তপন বাবুকে সেটা রাজকাপুর আগে নানা ভাবে জানিয়েছেন।
হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল তপন সিংহের যে ঘোড়ার ব্যাপারে হয়ত রাজকাপুর সাহায্য করতে পারবেন। তাই রাজকাপুরের কাছ থেকে হেল্প পাবার ব্যাপার তপন বাবু বেশ নিশ্চিত ছিলেন। ঘোড়ার সাথে রাজকাপুরের সম্পর্ক বেশ অনেক দিনের – রেসকোর্সের মাঠে রাজকাপুরকে প্রায়ই দেখা যেত - বোম্বের মহালক্ষ্মী রেস কোর্সের মাঠ (রয়াল ওয়েষ্টার্ণ ইন্ডিয়ান টার্ফ ক্লাবের হোম গ্রাউন্ড যাকে বলে) তো প্রায় রাজকাপুরের হোমগ্রাউন্ড ছিল। রেসের ঘোড়াও ছিল খান দুয়েক। এই সব ভেবেই তপন সিংহ জিজ্ঞেস করলেন –
- রাজু, ঘোড়ার ব্যাপারে কিছু হেল্প চাই
- ঘোড়া কিনবে নাকি? বহুত খুব – আমার অনেক চেনাশুনা আছে
- আরে ঘোড়া কিনছি না, কিন্তু ঘোড়ার ট্রেনারের দরকার আছে।
- ঘোড়া ছাড়া ঘোড়ার ট্রেনার নিয়ে করবে?
তপা তখন রাজুকে খুলে বলল ঝিন্দের বন্দীর ব্যাপারটা – যে উত্তম-সৌমিত্র-কে ঘোড়ায় চড়া শেখাতে হবে। রাজকাপুর বললেন –
- আরে সেটা বল! ঘোড়াকে ট্রেনিং দিয়ে হবে না, ঘোড়ায় চড়া শেখাতে হবে!
- হ্যাঁ, হ্যাঁ সেটাই
- ঠিক আছে আমি রশিদ-কে বলে দিচ্ছি। এখন অফ সিজিন চলছে। দেখো যদি মাস খানেকের জন্য কোলকাতা যেতে রাজী হয়।
এই ভাবেই যোগাযোগ হয়ে গেল ঘোড় দৌড়ের সেই বিখ্যাত ট্রেনার রশিদ ব্রামজী-এ সাথে। প্রথমে কলকাতা আসরে রাজী হচ্ছিলেন না রশিদ ব্রামজী। একটু খোঁজ নিয়ে রশিদের দুর্বলতম স্থান জেনে নিলেন তপনবাবু- রশিদ খেতে খুব ভালোবাসতেন। সেই লাইনে আলোচনা টেনে নিয়ে গিয়ে আর্সেলানের, সিরাজ আর নিজামের বিরিয়ানীর লোভ দেখিয়ে রাজী করানো গেল উনাকে কলকাতা আসতে। টালিগঞ্জের এক গেষ্ট হাউসে প্রায় একমাস ছিলেন উনি – উত্তম কুমার প্রতি দিন সকালে সৌমিত্র-কে সঙ্গে করে রশিদ ব্রামজীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ময়দানে যেতেন ঘোড়ায় চড়া শিখতে। অনুরূপ ভাবে তলোয়ার খেলাও শিখলেন উনারা ম্যাসি টেলর বলে এক বিদেশীর কাছ থেকে। ম্যাসি টেলরের গল্প অন্যদিন হবে।
উত্তম-সৌমিত্র কে এই ভাবে ঝিন্দের বন্দীর জন্য তৈরী হতে হলেও অরুন্ধতী দেবীকে তেমন ভাবে রাণীর চরিত্রের জন্য তেমন ভাবে তৈরী হতে হল না। বিশ্ব ভারতী থেকে পড়াশুনা করা, গান জানা অরুন্ধতী দেবীএ মধ্যে এক জন্মগত আভিজাত্য ছিলই- সেটাই আর একটি ঘষেমেজে নেওয়া। মাত্র বছর দুয়েক হল বিয়ে হয়েছে তপন সিংহের সাথে অরুন্ধতী দেবীর। তবে সিনেমা হিসেবে এটা উনাদের দ্বিতীয় সিনেমা – কিছুদিন আগে তপন বাবুর পরিচালনায় প্রথম বারের জন্য ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন অরুন্ধতী দেবী। প্রভাত মুখার্জীর সাথে প্রথম বিবাহের বিচ্ছেদ হয়েছে কিছুদিন হল – এমন সময় বার্লিন ফিল্ম ফেষ্টিভেল এ গিয়ে পরিচয় হল তপন বাবুর সাথে অরুন্ধতী দেবীর সাথে। দুজনাই দুজনার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করলেন – একদিন বাড়িতে তপন বাবুকে খেতে ডাকলেন অরুন্ধতী। রাঁধলেন পটলের দোর্মা। আগে যেমন লিখেছি, সেই পটলের দোর্মা খেয়েই তপন বাবু ফ্ল্যাট হয়ে প্রোপোজ করে ফেললেন – এবং তার কিছু দিনের মধ্যেই বিবাহ।
সেই পটলের দোর্মার গল্প উঠে এল অনেক দিন পরে ঝিন্দের বন্দী শ্যুটিং চলা কালীন উদয়পুরে। সারাদিন শ্যুটিং এর হাড়ভাঙা খাটুনির পর জমিয়ে মজলিশি গল্প হত সেই শ্যুটিং লোকেশনের – পুরানো রাজপ্রাসাদে। একদিন গল্প করতে করতে উত্তম কুমার বললেন যে – “কতদিন বাঙালি রান্না খাওয়া হয় না”। সেই শুনে সৌমিত্র একপায়ে খাড়া,
- তাহলে উতো-দা, একদিন পিকনিক হয়ে যাক। আমি রান্না করব
- তুই করবি রান্না? জানিস বাঙালী রান্না?
- কি বলছো! কৃষ্ণনগরে তো ক্লাবের সব পিকনিকে আমিই রান্না করতাম। বিশ্বাস না হলে তুমি সুধীর-কে জিজ্ঞেস করে নিও পরের বার দেখা হলে
- সুধীর-কে যে কত কিছু জিজ্ঞেস করার আছে আমার! খাতায় লিখে রাখতে হবে এবার। তোরা কৃষ্ণনগরে কি কি করিস নি বলতো? শুধু ঘোড়ায় চড়া আর তলোয়ার খেলাটাই যা দেখলাম বাকি রেখেছিস
- তুমি এমন ব্যাঙ্গ করছো তো!
আবহাওয়া হালকা ভারী হয়ে উঠছে দেখে অরুন্ধতী দেবী আসরে নামলেন। বললেন, “ঠিক আছে, আমিও না হয় হাত লাগাবো”। পাশ থেকে সেই শুনে তপন সিংহ বলে উঠলেন, “তাহলে পটলের দোর্মা হয়ে যাক”!
পরের দিন উদয়পুরের বাজারে পটল খুঁজতে বেরোলেন উত্তম-সৌমিত্র। এখানে উনাদের তেমন কেউ চিনত না আমজনতা। তাই দুজনা বেশ আনন্দ করে বাজার করতে লাগলেন। কিন্তু এই দূর দেশে পটল কোথায় পাওয়া যাবে! অনেক খুঁজে চৌধুরী গেষ্ট হাউসের সেই ভদ্রলোকের সাথে দেখা, স্থানীয় বাঙালী। এঁর সাথে গিয়েই পুঁই শাক কিনলেন উত্তম সৌমিত্র, পেলেন পটলও। সৌমিত্র বললেন –
- বুঝলে উতো-দা, এই পুঁই শাক দেখে কৃষ্ণনগর বাজারের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে
উত্তমকুমার কিছু না বলে শুধু একবার চাইলেন সৌমিত্রের মুখের দিকে। ঠিক এমন চাউনি এর থেকে বছর চোদ্দ পরে সত্যজিৎ রায় দিয়েছিলেন সোনার কেল্লার শ্যুটিং করতে এসে, সৌমিত্র যখন বলেছিলেন, “মানিক-দা, কাল রাতের ডিনারে তাহলে পটলে দোর্মা হয়ে যাক”।
সে গল্প অন্য কোনদিন -