এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  স্মৃতিচারণ

  • শুকদেব স্যার, শ্লোক এবং এক শিক্ষা যাপন

    Somnath mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    স্মৃতিচারণ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৭৫ বার পঠিত
  • শুকদেব স্যার, শ্লোক এবং এক শিক্ষা যাপন।

    জুনিয়র হাইস্কুলের পাট চুকিয়ে হাই স্কুলে যাওয়ার সময় এগিয়ে এলো। ক্লাস এইটে আমরা তখন সাকুল্যে সাতজন - আমি, শৈবাল, তাপস, অলক, বিপুল, মলয় আর প্রদীপ। লোকজন ঠাট্টা করে বলতো দলছুট সপ্তরথী। আমাদের ছোট্ট স্কুলের তখন টিকে থাকার লড়াই। অনেক দিনের মায়ার বাঁধন আলগা করে, আমরা পাড়ি দিলাম আশপাশের হাইস্কুলের পথে। যার যেখানে আশ্রয় মেলে আর কি!

    আমি আর শৈবাল ভর্তি হলাম মতিঝিল স্কুলে। এমন তো আর নাম নয় সেই স্কুলের! চলতি নামের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক রাশভারী নাম – দমদম কৃষ্ণ কুমার হিন্দু একাডেমি। মতিঝিল হলো পল্লির নাম, যেখানে আজ‌ও মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিদ্যালয়খানি বহুকালের গরিমা শরীরে মেখে, দেশ স্বাধীন হওয়ার‌ও আগে, সেই ১৯৩৩ সাল থেকে।

    গাছকে মাটি থেকে তুলে এনে অন্য কোথাও পুঁতলে গাছের শরীরে যেমন একটা প্রবল ঝটকা লাগে, আমার তখন ঠিক তেমন‌ই দশা। এতদিনের চেনা পরিসর ছেড়ে এসে চট্ করে নতুন জল হাওয়া মাটির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে জোর লড়াই করে চলেছি। আমার ছেড়ে আসা ছোট্ট স্কুলের সঙ্গে এখানে অনেক বিষয়েই ফারাক নজরে পড়ে – অনেক অনেক ছাত্র, অনেক অনেক মাস্টারমশাই, অনেক অনেক নতুন বন্ধুবান্ধব। ভর্তি হয়েছিলাম কলা বিভাগে। কলা বিভাগের ছাত্ররা তো স্কুলের মুকুটের পালক নয়, দুয়োরাণীর বাঁদর ছানার দল। ফলে তাঁদের প্রতি একটা ভুরু কুঁচকে নাক সিটকানো মনোভাব সবার। তার ওপর আমি তো এক অর্থে বহিরাগত। এই উপেক্ষার ব্যাপারটা মনের মধ্যে একটা নতুন জেদ চাগিয়ে তুলেছিল। আমি মনে মনে চাইছিলাম একটা সমর্থনের, সাহচর্যের পরিবেশ যাতে আমার লড়াই আমিই ঠিকঠাক লড়তে পারি। নিজের ওজনটা যাতে সবাইকে টের পাইয়ে দিতে পারি। আমি একজন সংবেদনশীল মালির সান্নিধ্য লাভের জন্য উন্মুখ হয়ে উঠেছিলাম তখন। সেই পৃষ্ঠপোষকতা লাভে অবশ্য এতটুকু সময় লাগেনি। আমি চাইছিলাম অন্তত একজনকে পাশে পেতে, পেয়ে গেলাম অনেক অনেককে। এ দিক থেকে আমি নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে করি।

    ফিরে আসি আমার নতুন স্কুল যাপনের চেনা ঘটনাক্রমে।

    টিফিনের পর ওয়ার্নিং বেল পড়েছে। বিরতির পাট চুকিয়ে ছেলেরা সব হুটোপুটি করে ক্লাসে ফিরে আসছে। পরবর্তী পর্বের পঠনপাঠনের কাজ শুরু হবে। ঢাউস সাইজের এক কাঁসর হাতে নিয়ে গৌরদা দাঁড়িয়ে উশখুশ করছেন কখন দ্বিতীয় ঘণ্টা বাজাবেন। গৌরদাও ছিলেন একজন মজার মানুষ। তাঁর কথা অবশ্য আজ নয়। এদিকে আমরা কয়েকজন অবশ্য ক্লাসেই বসে আছি। তখনো নিশপিশ করা হাত কাঁসরে ঘা দেয় নি। তবে দ্বিতীয় ঘণ্টা বাজার আগেই দেখি আমাদের একতলার ক্লাস ঘরের সামনে এক দীঘল মানুষের ঋজু ছায়া নড়াচড়া করছে। তাঁর মানে, পরের ক্লাসের কাণ্ডারী হাজির! কে তিনি, যিনি সময়ের আগে চলতে ভালোবাসেন? রুটিনে অবশ্য সাংকেতিক শব্দবন্ধে লেখা রয়েছে S.G. স্যারের নাম। আমি তো চিনিনা তাঁকে!

    দুবার ঢং ঢং করে গৌর দা ঘন্টা দিতেই সেই ছায়া সটান এসে ক্লাস ঘরের চৌহদ্দিতে আবির্ভূত হন। আমরা সবাই (যে কজন হাজির হতে পেরেছিল আর কি!) উঠে দাঁড়িয়ে নমস্কার করি। ওদিক থেকে প্রতি নমস্কার আমাদের সকলের উদ্দেশ্যে। আমাদের বসতে বলে নিজের জন্য নির্দিষ্ট আসনে শান্ত ভাবে বসেন মানুষটি। হাতে করে নিয়ে আসা বেশ মোটাসোটা চেহারার ব‌ইটিকে সামনের টেবিলের ওপর রেখে নজর বুলিয়ে দেখে নেন আমাদের সকলকে। ক্লাসে আমিই একমাত্র আনকোরা নতুন মুখ। শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন -- “তুমি বোধহয় একেবারেই নতুন? কোন্ স্কুল থেকে এসেছো? কী নাম তোমার?” আমিও উঠে দাঁড়িয়ে মৃদু স্বরে প্রশ্নের ক্রমানুসারে উত্তর দিলাম। মৃদু হেসে তিনি বললেন – “খুব ভালো”। আর তারপরেই আত্মপরিচয় দিতে গিয়ে বললেন, “আমি শুকদেববাবু, শুকদেব গোস্বামী। আমি তোমাদের ভূগোলের ক্লাস নেবো, প্রাকৃতিক ভূগোলের অংশটি। আমি তোমাদের স্যার হয়ে এসেছি বলে তোমরা কখনোই ভেবনা আমি সবকিছু জানি। আসলে জানার তো কোনো শেষ নেই। আমিও কিন্তু এখনো নিজেকে ছাত্র বলেই মনে করি। মনটাকে যদি এভাবে একবার তৈরি করে নিতে পার, তাহলে দেখবে তোমার খোঁজ কখনোই শেষ হবে না।” এতো সেই ল্যাটিন শব্দ বন্ধের অনুরণন - Veni Vidi Vici – এলাম দেখলাম জয় করলাম। প্রথম মানুষটিকে দেখছি বলেই কি আমার মনে এমন অনুভূতি জেগেছিল?

    দেশ গাঁয়ে খুব চলতি একটা রসিকতা আছে – প্রথম রাতেই বিড়ালকে মারতে হয়, না হলে সে নাকি মাথায় চড়ে বসে। স্যার ওই চেনা পথ এড়িয়ে নতুন এক পথের পথিক হবার কথা বললেন। এ তো সেই বহুযুগ ধরে বহমান ভারতের অন্তরাত্মার বাণী, জ্ঞানের প্রকৃত স্বরূপ সন্ধানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত যুগ্ম সাধনার আহ্বান। পরবর্তীকালে নিজে যখন শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছি তখন‌ও এই কথাগুলোই বলেছি আমার ছাত্রদের। যতবার এই কথাগুলো উচ্চারণ করেছি ততবারই চোখের সামনে ভেসে উঠেছে শুকদেব বাবুর দীর্ঘ ঋজু সৌম্য মূর্তিটি।

    যে সময়ের কথা বলছি সেই সময়ে এই স্কুলে সব দিকপাল মাস্টারমশাইদের ভিড়। রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, খনেন্দ্র লাল চট্টোপাধ্যায়, মহেন্দ্র লাল বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে সামনের সারিতে। পেছনেই আছেন রসিকবাবু, শশাঙ্কবাবু, জগদ্বন্ধুবাবু, অনিলবাবু, নীরদবাবু, কেষ্টবাবু, বণিকবাবু, অতীনবাবু…..। নামের ধারে আর ভারে তখন রীতিমতো সমীহ জাগানো প্রতিষ্ঠান এই স্কুল। একদম ওপরের সারিতে থাকা এইসব সিনিয়র মাস্টারমশাইদের ভিড় ঠেলে সরস্বতীর আঙিনায় সবে উঁকিঝুঁকি মারতে শুরু করেছেন আরো একদল নবীনতর প্রজন্মের শিক্ষক – সমীরবাবু, দীপ্তিমানবাবু, শান্তিবাবু, দেববাবু, তপনবাবু, জগজ্জীবনবাবু। পুরনোরা তাঁদের আসন ছেড়ে দেন নতুনদের জন্য। এটাই নিয়ম, এটাই দস্তুর। আমিও একসময় এভাবেই নতুন একটা শিক্ষা যাপনের অংশীদার হয়ে উঠলাম। এই দুই প্রজন্মের শিক্ষকদের মধ্যে প্রবল পার্থক্য ছিল তাঁদের পোশাকে। প্রথম দলের সবাই ধুতি পাঞ্জাবি পরিহিত; আর নবীন প্রজন্মের শিক্ষকদের পরনে শার্ট প্যান্ট। ছাত্রদের সঙ্গে ওঠাবসায় এরফলে নিয়মের বদল এলো খানিকটা। তবে আমি বেশ অভ্যস্ত হয়ে উঠছিলাম একটু একটু করে।

    শুকদেববাবু ক্লাস শেষের ঘণ্টা বাজার আগেই পৌঁছে যান ক্লাসের বাইরে। তিনি এসে বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন টের পেয়ে ঘন্টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসন ছেড়ে দেন ক্লাসে থাকা মাস্টারমশাই। বুঝতে পারি যে মানুষটি সবার কাছেই শ্রদ্ধেয়। কর্মজীবনের শেষ দিনটিতেও স্যারের তরফে এই নিয়মের কোনো ব্যতিক্রম নজরে পড়েনি। এতটাই নিয়মনিষ্ঠ ছিলেন শুকদেব স্যার। একটুখানি অন্তর্মুখী স্বভাবের মানুষ, তবে তাঁর ছাতার নিচে ঠাঁই পাওয়া ছাত্রদের জন্য তিনি ছিলেন সত্যিই দরাজ।

    স্যার চেয়েছিলেন আমরা সবাই নতুন উদ্যমে লেখাপড়াটা করি। কিন্তু চাইলেই তো আর সবটা পাওয়া যায়না, তাই নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। এ কাজে স্যারের পক্ষ থেকে যতটা উদ্যোগ ছিল আমাদের তরফে ততটা ছিল না। একদিনের কথা বেশ মনে আছে। টিফিনের পরেই স্যারের ক্লাস। যথারীতি গৌরদার ‘ফাস্টো’ বেলের পর পরই ক্লাসের বাইরে তাঁর উপস্থিতি টের পাই। সেদিন ক্লাসে ঢুকেই স্যার ঘোষণা করেন – “আজ তোমরা পড়াবে, আমি শুনবো।” একথা শুনে আমাদের অনেকেরই প্রাণপাখি উড়ে যাবার জোগাড়। নিজের আসন এড়িয়ে স্যার আমাদের মাঝে এসে বসেন। তাতে আমাদের অস্বস্তি বাড়ে বৈ কমে না। আমাদের সঙ্গে পড়তো অসীম, ঐ বয়সেই বেশ নেতাদের মতো চেহারা, হাবভাব। সম্পর্কে সেকালের এক ডাকসাইটে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের তুতো ভাই। স্যারের এমন নির্দেশের সামনে পড়ে সে বেচারির তখন গলদঘর্ম অবস্থা। তবে সে যাত্রায় স্যার‌ই উদ্ধার করেন আমাদের। শান্ত কন্ঠে বলেন – “দেখো বাবারা, তোমাদের বিব্রত করতে আমি আজকে এমনটা করলাম তা কখনোই নয়। এই যে আমরা মাস্টারমশাইরা একতরফা কথা বলে যাই এটা কখনোই কাম্য নয়। তোমরা তোমাদের কথা বললে, তা গোটা বিষয়টাকেই অনেক বেশি কাজের করে তোলে।” আজ এতদিন পরে ফেলে আসা সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এই কথাগুলো মনে করে বেশ রোমাঞ্চিত হ‌ই।

    দিন গড়িয়ে যায়। ক্লাস নাইন থেকে টেনে উঠি। শুকদেববাবুকে কিছুদিনের জন্য নতুন চেহারায় পাই আমরা। ইংরেজির মাস্টারমশাই রসিকলাল বাবু অবসর গ্রহণ করেছেন। তাঁর জায়গায় ইংরেজি প্রোজের ক্লাস নিতে এলেন তিনি। Aldous Huxley সাহেবের লেখা একটা প্রবন্ধ পড়াতে গিয়ে প্রাণ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে স্বাভাবিক নিয়মেই। নিজেদের ভোগের জন্য নির্বিচারে প্রাণিহত্যা, বলিদান ইত্যাদি প্রসঙ্গ উঠে আসছে আলোচনার চেনা পথে। আমাদের তখন উঠতি বয়স। এই প্রসঙ্গে আমাদের পক্ষ থেকে জনৈক ছাত্রের করা কিছু আলটপকা মন্তব্য স্যারকে খুব কষ্ট দিয়েছিল সেদিন। তবে তার জন্য তিনি কাউকেই ক্লাসে সামান্যতম তিরস্কার করেন নি। আমরা কয়েকজন ক্লাসের পরে টিচার্স রুমে গিয়ে সকলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইতে গেলে তিনি মৃদু হেসে বলেছিলেন – “তোমরা তোমাদের কথা বলেছো। এতে দোষের কিছু নেই। এটাই ঠিক। সংশয় থাকা ভালো। এই ঘটনা আমাদের মধ্যের সম্পর্ককে কখনোই যেন মলিন না করে। ভুল তো আমার‌ও হতে পারে।” অহং কে কী করে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় সেই শিক্ষাই বুঝি সে দিন দিয়েছিলেন আমাদের। আমরা কয়েকজন এই ঘটনায় গভীর দুঃখবোধে আচ্ছন্ন হয়েছিলাম। পাশাপাশি পেয়েছিলাম নতুন শিক্ষা।

    আমরা যখন ক্লাস টেনের শেষ দিকে তখন‌ই স্যারের অবসর গ্রহণের সময় এগিয়ে এলো। এই বিষয়ে আমরা কানাঘুষো শুনছিলাম বটে তবে খবরটা কতোটা নির্ভরযোগ্য তা বুঝতে পারছিলাম না। স্যার নিজেই নীরবতা ভাঙলেন। নিজেই জানালেন তাঁর অবসর গ্রহণের কথা। এই খবরে আমরা মূহ্যমান। আমাদের মধ্য থেকে এক অপ্রগলভ সহপাঠী উঠে দাঁড়িয়ে বলে ওঠে – “আপনাকে আমরা ভুলছি না, ভুলবো না।” চলতি শ্লোগানের ঢঙে বলা কথাগুলো শুনে স্যার প্রথমটায় খানিকটা হতভম্ব হয়ে যান, তারপর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মৃদু হেসে বলেন – “বাবারা, তোমাদের এই আবেগকে আমি সম্মান করি। কিন্তু সত্যিটা কি জানো? কিছুদিন তোমরা আমাকে মনে রাখবে, তারপর বেমালুম ভুলে যাবে। এটাই সংসারের নিয়ম।” আমরা সমস্বরে বলে উঠি – “না স্যার! কখনোই নয়। আপনার কথা আমরা সবাই চিরকালের জন্য মনে রাখবো।” স্মিত হেসে স্যার বললেন – “তেমন যদি হয় তাহলে আমি কৃতার্থ হবো। জানবো আমার বিপ্লবী ছাত্ররা জগতে এতোদিন ধরে চলা একটা নিয়মের চাকা উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে।তবে আমি বলছি এমনটা কখনোই হবার নয়। তোমাদের একটা খুব সুন্দর শ্লোক বলি। মনে রেখো। কাজে লাগবে। যখন নিজেরা সংসারী হবে তখন মিলিয়ে নিও। মিলে গেলে দেখবে আমার কথা মনে পড়ে যাবে।” একদল উঠতি বয়সের দামাল দস্যি ছাত্র ভরা ক্লাসে তখন আলপিন পড়ার শব্দ শুনতে পাওয়ার নীরবতা। সেই স্তব্ধতা ভেঙে স্যার একটা শ্লোক বলতে শুরু করলেন –

    লব্ধ পুত্রাঃ পতিং দ্বেষ্টি, লব্ধ ভার্যা মাতরং
    লব্ধ বিদ্যা গুরুং দ্বেষ্টি, যজ্ঞান্তে দ্বেষ্টি ঋত্বিজম।

    পুত্র লাভের পর পতিকে, স্ত্রী লাভের পর মাতাকে,
    বিদ্যা লাভের পর গুরুকে, আর যজ্ঞকর্মের পর ঋত্বিকের কথা মানুষ ভুলে যায়। এটাই জগতের নিয়ম।

    আমাদের কার‌ও মুখে কোনো কথা নেই। সবাই এক বিদায়ী মানুষের আবেগহীন অভিভাষণে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। এভাবেই কেটে যায় আরও কিছু সময়। খানিক পরে বেজে ওঠা গৌরদার ঘন্টা জানিয়ে দেয় ছুটির সময় সমাগত। ধীর পায়ে স্যার ক্লাসঘর ছেড়ে বিদায় নিলেন।

    **
    আজ শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আমার সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষয়িত্রীদের উদ্দেশ্যে এই রচনাটি উৎসর্গিত হলো। তাঁরা সকলেই যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত মানুষ, এমনটা নয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এমন অনেক মানুষের সান্নিধ্য লাভের সুযোগ পেয়েছি যাঁরা নানাভাবে উস্কে দিয়েছে আমার জানার আগ্রহকে। এঁরাও আমার শিক্ষক। সাথেসাথে অভিনন্দন রইলো সকল শিক্ষার্থীদের প্রতি যাঁদের নিরন্তর সাহচর্য আমাকে আজ‌ও খুঁজে বেড়ানোর প্রেরণা যোগাচ্ছে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • স্মৃতিচারণ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৭৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সৌমেন রায় | 2409:40e1:107c:dd7d:8000::***:*** | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:১০733917
  • অসাধারণ। প্রেরণাপ্রদ। স্যারকে প্রণাম জানাই। শ্লোকটি অনবদ্য। লেখককেও শ্রদ্ধা জানাই ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন