এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হেদুয়ার ধারে ( দ্বিতীয় খন্ড ) - ২৪

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৫৬ বার পঠিত
  • ( ২৪ )

    চিন্টু ওই ধূপের গন্ধওয়ালা লোকটার হাত ধরে, ' এস না ... এস না আমাদের বাড়িতে ... ', বলতে বলতে টানতে টানতে ওপরে নিয়ে গেল।

    স্বাতী বলল, ' কাকু আসুন ... আসুন ... মা এই যে কাকু, উনিই সেদিন ওই ওদের ... '
    স্বাতী চিন্টুর মা হাতজোড় করে বললেন, ' বসুন ... কি বলে যে আপনাকে ধন্যবাদ জানাব ... '
    সাগর বসে পড়ল। জুলি লাফিয়ে তার কোলে গিয়ে উঠল।
    স্বাতী ' অ্যাই ... অ্যাই ... কি হচ্ছে ... ', বলে জুলিকে ছাড়িয়ে আনল জুলির অনিচ্ছা সত্ত্বেও।
    সাগর বলল, ' বাহ্ ... খুব সুন্দর তো ... '
    এই প্রশংসাবাক্য শুনে স্বাতীর মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠল। স্বাতীর মা স্মিত হাসলেন।
    সাগর পকেট থেকে দুটো ক্যাডবেরি বার করে স্বাতী আর চিন্টুর হাতে দিল। ওদের মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ' আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেন ... বসুন না। কিছু না ... এমনি খবর নিতে এলাম ... আর কোন প্রবলেম হয়েছে কিনা ... বলা তো যায় না ... এদের কোন বিশ্বাস নেই ... এদিকে কমল সাহার বাড়িতে এসেছিলাম ... চেনেন তো ... বিজনেস করে ... '
    স্বাতীর মা বললেন, ' কংগ্রেস পার্টিও করে ... '
    ---- ' হ্যাঁ হ্যাঁ ... শুনেছি ... ওই আর কি ... '
    তারপর বলল, ' যাকগে ... তারপর বল, আর কোন অসুবিধে হচ্ছে না তো ? '
    স্বাতীর দিকে তাকিয়ে বলল।
    স্বাতী একটু চুপ করে থেকে কি ভাবল, তারপর বলল, ' না ... কাকু, তবে একদিন দেখেছিলাম ওকে ... রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল ... উল্টোদিক দিয়ে আসছিল ... '
    সাগর হেসে বলল, ' ও ... তাই নাকি ? তারপর কি হল ? '
    স্বাতী অন্যদিকে তাকিয়ে বলল, ' কিছু হয়নি। মাথা নীচু করে চলে গেল ... '
    ---- ' হমম্ ... তা'লে ওষুধ ধরেছে বলতে হবে ... '
    স্বাতী কি একটা ভাবতে ভাবতে বলল, ' হুঁ ... '
    তারপর আবার বলল, ' মনে হয় সেদিন তোমার বকুনি খেয়ে ওর একটু কষ্ট হয়েছে ... '
    সাগর হেসে বলল, ' তাই নাকি ? তা বকুনি খেলে
    একটু একটু কষ্ট তো হবেই ... তুমি ওসব নিয়ে ভেব না ... বদমায়েশি করলে বকুনি তো খেতেই হবে। তুমি তোমার নিজের কথা চিন্তা কর ... ওর ব্যাপার ওকে বুঝতে দাও। '
    স্বাতী আবার বলল, ' হুঁ ... '
    স্বাতীর মা বলে উঠলেন, ' কি তখন থেকে হুঁ হুঁ করছিস ... মাথা খারাপ নাকি ? '
    স্বাতী বলল, ' তাছাড়া কি বলব ? '
    সাগরের মনে হল ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।
    চিন্টু ভাবল, দিদির নিশ্চয়ই অঙ্ক পরীক্ষার খাতা বেরিয়েছে। তাই মনটা ভাল নেই।
    সাগর আর সময় নষ্ট করতে চাইল না। বলল,
    ' ঠিক আছে, আমি এখন উঠি। অনেক কাজ আছে। পরে আর একদিন আসব ? '
    চিন্টু বলল, ' আবার কবে আসবে কাকু ? '
    ---- ' আসব আসব খোকন ... যখনই তোমাদের দরকার হবে তখনই আসব। ভাল থেক ... আসি এখন ... '
    স্বাতীর মা বললেন, ' একটু চা খেয়ে গেলেন না ... '
    ---- ' না দিদিভাই ... চা, আবার যদি আসি তখন হবে ... এখন সময় নেই ... '
    সাগরের সঙ্গে চিন্টুও নীচে নামতে লাগল। জুলিও ... '

    সুর আয়রন অ্যান্ড মেটালের কারখানার গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে অফিসে যেতে হয়। সিকিউরিটি গার্ড আটকাল।
    ---- ' কোথায় যাবেন ? '
    ---- ' দেখা করব ... '
    ---- ' কার সঙ্গে ? '
    ---- ' বিশ্বজিত রায় ... অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ... '
    ---- ' এই নিন ... লিখুন ... '
    বলে খাতা মেলে ধরল। সাগর খাতায় নাম ঠিকানা লিখে দিল। দেখা করার কারণ লিখল ---- ব্যক্তিগত।
    দারোয়ান বলল, ' ঠিক আছে ... যান ... দোতলায় উঠে ডানদিকে তিন নম্বর ঘর ... জিজ্ঞেস করে নেবেন ... '

    তিন নম্বর ঘরে ঢুকে প্রথম টেবিলের একজন মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। সাগর সেখানে গিয়ে টেবিলের সামনে দাঁড়াল।
    ---- ' দাদা বিশ্বজিত রায় কোথায় বসেন ? '
    ভদ্রলোক মুখ না তুলেই বললেন, ' ওদিকে দেয়ালের ধারে ... '
    ---- ' ও, ধন্যবাদ ... '

    বিশ্বজিত ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একজন টেকনিশিয়ানকে কি বোঝাচ্ছিল খুব মন দিয়ে। টেকনিশিয়ান শুনে টুনে ঘাড় নেড়ে চলে গেল।
    বিশ্বজিত একটা কভার ফাইলে কিছু কাগজপত্র গুছিয়ে রেখে ফাইলটা বাঁধছিল। সাগর তার সামনে গিয়ে দাঁড়াল।
    ---- ' নমস্কার স্যার ... '
    বিশ্বজিত একবার মুখ তুলে দেখল সাগরকে,তারপর বলল, ' কাল ইন্সপেকশানে যাবে। আজ স্টাফ নেই। আপনি এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা কথা বলতে পারেন ... '
    ---- ' না না কোন স্টাফ লাগবে না ... তোমার সঙ্গেই একটু আলাপ করতে এলাম, মানে কথা বলতে এলাম ভাই ... '
    'তোমার', ' ভাই ' এসব শুনে থ হয়ে গেল
    বিশ্বজিত। সাগরের মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।
    বিশ্বজিত দ্রুত সামলে নিয়ে বলল, 'কোথা থেকে ?'
    সাগর সামনের চেয়ারে বসে পড়ল।
    ---- ' আমি শর্মিষ্ঠার দাদা হই। একটু দূর সম্পর্কের দাদা বলতে পার। বিয়ের সময়ে দেখেছ হয়ত। ভুলে গেছ নিশ্চয়ই। সেটাই স্বাভাবিক ... অনেকদিন হয়ে গেল তো ... '
    বিশ্বজিত কি বলা উচিত ভেবে পাচ্ছে না।
    এক চিলতে কাষ্ঠ হাসি হেসে বলল, ' ও আচ্ছা আচ্ছা ... ঠিক মনে পড়ছে না। এখানে কোথাও কাজ ছিল ? এ জায়গায় তো কাজ ছাড়া কেউ আসে না ... আমি এখানে আছি জানলেন কি করে ? '
    সাগর শেষের প্রশ্নটার উত্তর আগে দিল।
    ---- ' তুমি এখানে আছ অনেক দিন আগেই শুনেছিলাম ... '
    ---- ' কার কাছে ... শর্মিষ্ঠার কাছে ? '
    ---- ' তাই হবে বোধহয়। ঠিক খেয়াল নেই ... '
    সাগর ভাসা ভাসা উত্তর দিল। তারপর দ্বিতীয় প্রশ্নটার উত্তর দিল।
    ---- 'হ্যাঁ কাজ ছিল মানে, কাজটা আপনার সঙ্গেই... বেশ সিরিয়াস কাজ ... '
    বিশ্বজিত ভাবল, এ তো ভাল আপদের পাল্লায় পড়া গেল। ভাবল, এ ব্যাটা নিশ্চয়ই কিছু টাকা পয়সা চাইতে এসেছে। কিন্তু সম্বন্ধী বলে কথা। এক কথায় ভাগিয়েও দিতে পারছে না। বিশ্বজিত উসখুস করতে লাগল। ভাবতে লাগল কিভাবে শালাকে কাটানো যায়। মুখে অবশ্য একটা আবছা হাসি ধরে রেখেছে।
    বলল, ' ও ... তাই ? কিরকম শুনি ... '
    ---- ' আমাদের একটা সংগঠন আছে হাতিবাগানের দিকে। এ দিকেও শাখা আছে। আপনাদের পাড়ার দিকেও আছি আমরা ... '
    ---- ' কিসের সংগঠন ? '
    ---- ' এ...ই ... সমাজসেবামূলক বলতে পারেন ... '
    বিশ্বজিতের বিশ্বাস দৃঢ় হল যে তার অনুমানই ঠিক। এ নিশ্চয়ই ডোনেশানের ধান্দাতেই এসেছে।
    বিশ্বজিত চুপ করে অপেক্ষা করতে লাগল সাগরের পরবর্তী বক্তব্যের জন্য।
    সাগর বোধহয় বিশ্বজিতের মনের কথা পড়তে পারল।
    বলল, ' আমরা কারও সঙ্গে দেখা করতে গেলে, সে ভাবে ডোনেশান চাইতে এসেছে, এটাই মুশ্কিল ...'
    বিশ্বজিত অন্তত একটা ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হল।
    সাগর ধীরে ধীরে ঢেউ তুলতে লাগল।
    ---- ' কথা তেমন কিছু নেই ... এই দেখা করতে এলাম কেমন আছ তুমি। কার কাছে যেন শুনলাম তুমি অসুস্থ। কিন্তু এসে তো বেশ সুস্থই দেখছি ... '
    ---- ' কার কাছে শুনেছেন আমি অসুস্থ ? '
    ---- ' কার কাছে যেন শুনলাম ... ঠিক খেয়াল পড়ছে না। সে যাই বলুক...ভুল তো কিছু বলেনি।'
    ---- ' তার মানে ? '
    ---- ' মানেটা খুব ক্লিয়ার। মনের রোগও তো একটা অসুস্থতা। বেশ জটিল রোগ। তার ঠিকমতো চিকিৎসা দরকার। আমাদের সংগঠন এই সব মানবকল্যানমূলক কাজই করে। মানসিক চিকিৎসা করে থাকি অনেক জায়গায়। তোমার কাছে এসেছি সেই জন্যই ... '
    ---- ' কি জন্য ? '
    এবার সরাসরি মূল প্রস্তাবে ঢুকল। কিছু কথা ছিল। এখানে বসে বলা ঠিক হবে না। পাঁচকান হলে, আমার কিছু না, তোমারই অসুবিধে হবে। নীচে চল। ওই দিকে অশ্বথ গাছের নীচে যে বেদীটা আছে ওখানে বসে কথা বলা যাবে ... '
    বলে দাঁড়িয়ে উঠল। তারপর প্রায় আদেশের সুরে বলল, ' চল ... '
    বিশ্বজিত রীতিমতো ভড়কে গেল। দুষ্কর্ম করলে এমনিতেই মানুষের মানসিকতা নড়বড়ে থাকে। সেই অস্থির কাঠামোয় ধাক্কাধাক্কি করলে সেটা হেলে পড়ে।
    বিশ্বজিত অসংলগ্ন ভঙ্গীতে বলল, ' অ্যাঁ ... ওখানে ... আচ্ছা, চলুন দেখি কি বলবেন ... '
    বলে এদিক ওদিক তাকিয়ে নিল, তারপর বলল,
    ' আচ্ছা ... চলুন ... '

    কারখানার এ পাশটা বেশ নিরিবিলি। ওদিকে কারখানা সরগরম। পুরোদমে কাজ চলছে। নানারকম কর্কশ যান্ত্রিক আওয়াজ আসছে। লোকজন মাঝে মাঝে ঢুকছে,বেরোচ্ছে ব্যস্তভাবে।
    সাগর বলল, ' তোমার কি অসুবিধে হচ্ছে ? '
    বিশ্বজিত থতমত খেয়ে বলল,' কি ...কি ব্যাপারে ?
    সাগর মিছিমিছি সময় নষ্ট করার লোক নয়। সে পরিষ্কার ভাষায় বলল, ' এতদিন যা করেছ, করেছ ... এবার ওসব ছেড়ে দাও। ওতে কারও ভাল হয় না। তাছাড়া আমার বোনের জীবন নষ্ট করাটা তো আমি মেনে নেব না ... মানে, আমাদের সংগঠন মেনে নেবে না। নিজের অবস্থা খারাপ করতে চাও না নিশ্চয়ই। তুমি জান না আমি কি করতে পারি ... তোমার চাকরিটাও থাকবে না কিন্তু.... '
    বলে, সাগর বিশ্বজিতের চোখে স্থির শান্ত চোখ রেখে বসে রইল।
    এরকম আচমকা আক্রমণে বিশ্বজিতের প্রতিরক্ষা এলোমেলো হয়ে গেল। এরকম সরাসরি আক্রমণ সে আশা করেনি। সে হতচকিত হয়ে মনে মনে গুছিয়ে নেবার চেষ্টা করতে লাগল। শরীরে ঘাম জমছে। সে এরকম প্রতিপক্ষের সম্মুখীন হয়নি এর আগে কখনও।

    কিন্তু সাগর সে ফুরসত দিতে রাজি নয়। সে আবার আধিপত্যের সুরে বলল, ' কি হল ... কিছু বল ... '
    বিশ্বজিত তালগোল পাকিয়ে গিয়ে কোনরকমে একটা মার্কামারা এবং বস্তাপচা প্রত্যুত্তর দিল।
    ---- ' কি সব আজেবাজে বকছেন ? আমার স্টেটাস জানেন। কি ... কি প্রমাণ আছে আপনার কাছে ? '
    সাগর এ কথাটার জন্য তৈরি ছিল। বলল, ' নীপা আর অনুরাধা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আপনার সবকিছু ফাঁস করে দিয়েছে ... '
    কথাটা ডাহা মিথ্যে। সাগর বিশ্বাস করে যে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া কোন অন্যায় নয়। আর, ওই দুজন মেয়ের নাম সাগর সেদিন শর্মিষ্ঠার কাছ থেকে পেয়েছিল।
    বিশ্বজিত কিন্তু নীপা, অনুরাধার ব্যাপারটাকে চ্যালেঞ্জ জানাল।
    ---- ' অসম্ভব ... ইমপসিবল... আই ডোন্ট বিলিভ ইট ... নীপার সঙ্গে আমার কালকেই দেখা হয়েছে ... কই কিছু তো ... ', মুখ ফস্কে বেরিয়ে গেল।
    বলেই বিশ্বজিত বুঝতে পারল সে বেফাঁস কথা বলে বসেছে।
    সে সামাল দেবার জন্য বলল, ' ওই ... মানে, কারও সঙ্গে দেখা তো হতেই পারে ... কি আছে ? '
    সাগর ওর চোখ থেকে চোখ না সরিয়ে ঠোঁটে একটা বেঁকা হাসি মাখিয়ে বলল, ' শুধু দেখাই হল ... আর কিছু হয়নি ? '
    ---- ' আর কি হবে...হবেটা কি ? অদ্ভুত কথা তো ! '
    ---- ' কিন্তু নীপা তো আমাকে অনেক কিছু বলল ... দরকার হলে ওদের দুজনকেই এখানে হাজির করাতে পারি। তাতে তো তুমি বিরাট বিপদে পড়ে যাবে ভাই। ওরা যদি মুখ খোলে তাহলে তো ঢি ঢি পড়ে যাবে ... স্টেটাস ফেটাস তো ধুলোয় গড়াগড়ি খাবে ভাই ... '
    সাগর বুঝে নিয়েছে এ ডিফেন্সিভ প্লেয়ার। লম্পটরা সাধারণত তাই হয়।
    বিশ্বজিতের চোখের তারা উদ্ভ্রান্ত হয়ে গেল। ঠোঁট দুটো থেকে রস উবে গেছে।
    স্নায়ুর চাপে তার কথা জড়িয়ে যেতে লাগল।
    ---- ' তা ঠিক ... তাহলে ... আচ্ছা আচ্ছা ... মিটিয়ে নিন দাদা ... কি আর বলব ... '
    সাগর হেসে বিশ্বজিতের কাঁধে রাত রেখে বলল, ' না না ... ভুল তো মানুষ মাত্রেই হয়। তবে সেটা ঠিক সময়ে শুধরে নেওয়াটাও মানুষেরই কাজ। নইলে চোরা ঘূর্ণির টানে তলিয়ে যেতে হয়। আর উঠে আসা যায় না। '
    ---- ' ঠিক আছে তাহলে ... তাহলে ... '
    ---- ' তাহলে আর কিছু না ... অন্য কোন মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে না। শর্মিষ্ঠার সঙ্গে কোন খারাপ ব্যবহারের কথা যেন না শুনি। এর পর আর কিছু করলে কিন্তু আর ক্ষমা নেই। আর একটা মেয়ের নাম কি যেন ? '
    বিশ্বজিত বলে ফেলল, ' ইন্দ্রাণী... '
    ---- ' হ্যাঁ ... ইন্দ্রাণী। ওর সঙ্গেও আর মেলামেশা করবে না '
    ---- ' কিন্তু ...কিন্তু মুশ্কিল হল ... ওরা যদি ... '
    ---- ' কোন ভয় নেই। ওটা আমার ওপর ছেড়ে দাও। ওদের আমি সামলে নেব। আমাদের সংগঠন আছে ... তারা কথা বলে নেবে ... '

    সুখের চেয়ে স্বস্তি ভাল। বিশ্বজিতের ঠোঁট আবার সরস হয়ে উঠেছে।
    সে খানিকটা বশংবদ ভঙ্গীতে বলল, ' ইয়ে ... বাই দা ওয়ে, আপনার নামটা জানা হল না দাদা ... '
    সাগর অশথ গাছের তলার বেদী থেকে উঠে দাঁড়াল।
    বলল, ' সাগর মন্ডল '
    শুনে চমকে উঠল বিশ্বজিত। বোঝা গেল সাগর মন্ডল নামটাই সঙ্গে সে সম্যক পরিচিত।
    ---- ' মানে ... উল্টোডাঙার সাগর মন্ডল ? '
    ---- ' হ্যাঁ ... সেই ... '
    বিশ্বজিতের কাছে পুরো ব্যাপারটা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হতে লাগল।
    সব মিলিয়ে আধঘন্টায় কেসের ফয়সালা সারা।
    সুর আয়রন অ্যান্ড মেটালের ওয়ার্কশপে এখন সশব্দ ব্যস্ততা।

    ( চলবে )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন