এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • দূরে কোথায় ২৫

    হীরেন সিংহরায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ০১ জুন ২০২২ | ১৮৭২ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • পুতিন এবং পিয়ানো

    কার্ল- হান্স বললে  'পুতিনকে খুব কাছ থেকে দেখেছি এই তোমার সঙ্গে যেমন গল্প করছি তেমনি। আর  প্রত্যক্ষ ভাবে জানি ভ্লাদিমির পুতিন ক্ল্যাসিকাল সঙ্গীত শুনতে ভালবাসেন, বিশেষ করে পিয়ানোতে'।



    রাশিয়া থেকে রোজ নতুন নতুন  খবর আসে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে যে মানুষটির অভ্যুদয় হয়েছিলো সেই বরিস নিকোলায়েভিচ ইয়েলতসিনের কাছে আমরা, ব্যাঙ্কাররা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ বোধ করি। তিনি বাজারি অর্থনীতির মূল মন্ত্রের তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দু রকমের পাঠ আপামর জনগণকে পড়িয়ে দিয়েছেন। জিনিসপত্রের দাম, ডলারের বিনিময়ে রুবলের দাম স্থির হয় অর্থ দপ্তরে নয়, খোলা বাজারে।  জনগণের  সম্পত্তির বেসরকারিকরণ চলছে দুর্বার বেগে।  খুব শিগগির এই সর্বহারার দেশে দেখা দেবেন অকল্পনীয় এক ধনী গোষ্ঠী - জিরো থেকে হিরো। আমরা আদার ব্যাপারী মাত্র। সোভিয়েত ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থার পতনের চার বছরের ভেতরে গাজপ্রমের জন্য  ধনতান্ত্রিক হট্ট মন্দির থেকে ১৭৫ কোটি ডলার তুলতে পেরে আমরা হর্ষিত। আমরা শুধু ইতিহাস সৃষ্টি করেছি তাই নয়, প্রাপ্ত বোনাসের দৌলতে  আমাদের পত্নীদের কাছে খাতির বেড়েছে। যদিও বা ইয়েলতসিনের প্রকাশ্য ভদকা প্রীতি কখনো কখনো তাঁর দেশবাসীর বিড়ম্বনার কারণ হয়েছে, আমাদের কাছে তিনি বরেণ্য মানুষ ছিলেন,  ১৯৯৭ অবধি। তারপরে যে হুলুস্থুল হল তার গল্প আমার পূর্ব ইউরোপের ডায়েরির পাতায় প্রকাশিতব্য।

    বাজারের অবস্থা অতিশয় বেহাল।  এমতাবস্থায় ১৯৯৯ সালে অকস্মাৎ ভ্লাদিমির পুতিন নামক রাশিয়ার যে  নতুন কর্ণধারের উদয় হয়েছে  তাঁর সম্বন্ধে আমরা জানি কম। রাশিয়ান বাজারে ওলট পালটের কারণে পশ্চিমি ব্যাঙ্কগুলি সে বাগে আর এগোতে দ্বিধাগ্রস্ত। ক্রেদি সুইস,  সলোমন, মেরিল ইত্যাদি ওয়াল স্ট্রিট শের ল্যাজ গুটিয়ে পালিয়েছেন।   সিটি ব্যাঙ্কে,  আমাদের নিজেদের দোকানে, রাশিয়ান ডিলের কথা ক্রেডিট গুরুরা শুনতে চান না – অফিস থেকে দূর করে দেন।  আগে কহো আর। জানতে উৎসুক হয়েছি -  নতুন নায়কটি কে? কি রকমের?  

    রাজা উজির মারার জুতসই  জার্মান অনুবাদ খুঁজে না পেয়ে আমি বললাম 'সে কি! ব্যাঙ্কে কি এমন কাজ করো যে খোদ রাশিয়ার প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে ওঠা বসা! শুনেছি এখন সে দেশে আইন কানুন সব্বনেশে। সাবধানে থেকো'।

    সালটা  ২০০২। কার্ল- হান্সের সঙ্গে  বসে আছি  আমাদের ফ্রান্সের বাড়ির বারান্দায়।  বেশ কয়েক বছর রাশিয়ায় কাটিয়ে সবে ফিরেছে আপন দেশে। কিছু দিন আগে ভিয়েনায় একটা কনফারেন্সে আবার দেখা। বলেছি একবার গ্রামের বাড়িতে এসো মাত্র ঘণ্টা চারকের পথ, তোমার ও আমার দুজনেরই।  রোদ ঝলমলে দিন।  অনেক দূরের শ্যামলিমায় মোড়া পাহাড় দেখা যায়। গাছে গাছে পাখির ডাক।  একটা বেড়াল এদিক ওদিক তাকিয়ে বাগান পার হয়ে গেল।


    দূরে শ্যামলিমায় মোড়া পাহাড়


    কার্ল-হান্স এক কট্টর প্রাশিয়ান পরিবারের ছেলে, রাইনের তীরবর্তী ওয়েজেল শহরে বাড়ি।  আপনি থেকে তুমিতে নামতে ঝাড়া একটি বছর লেগেছিল। তার পিতামহ পিতৃব্যগণ এককালে জার্মান প্রশাসনে, এমনকি আফ্রিকায় প্রাদেশিক গভর্নর পদেও অধিষ্ঠিত ছিলেন।  বিদ্যা শিক্ষা শেষে কার্ল-হান্স ড্রেসনার ব্যাঙ্কে যোগ দিয়ে বহু বছর কাজ করে।  আজ সেটির অস্তিত্ব বিলীন – অধিকৃত হবার পরে তার নাম কমেরৎসবাঙ্ক।  আমি তাকে  বলেছি  অ্যাটলাসের মতন ড্রেসনার ব্যাঙ্ককে কাঁধে করে রেখেছিলে-  তুমি চাকরি  ছেড়ে দিতেই ব্যাঙ্ক ভূপতিত।

    আমার সঙ্গে কার্ল-হান্সের পরিচয়  ১৯৭৮  সাল নাগাদ।  জার্মানি এসেছি আগের বছর। পৌঁছুনোর ঠিক পরের দিন  স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ফ্রাঙ্কফুর্ট আমাকে ছ মাসের  ট্রেনিঙের জন্য  ড্রেসনার ব্যাঙ্কের হাতে সমর্পণ করে। দু মাসে  জার্মান ভাষা ও চার মাসে ইউরোপীয় ব্যাঙ্কিং  বিদ্যা শেখা হয় না। বড়জোর  সেলেটে অ আ ক খ লেখার মতো এলেম জোটে। তাতেই বলীয়ান হয়ে গোয়েথে স্ত্রাসের ছাব্বিশ নম্বর বাড়িতে ষ্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অফিসে কাজে যোগ দিয়েছি।


    স্টেট ব্যাংক অফ ইনডিয়া গোয়থে স্ত্রাসে ২৬ ফ্রাঙ্কফুর্ট


    একদিন একটা ফোন এলো। আমাদের টেলেক্স এবং টেলিফোন ব্যবস্থা পরিচালনার ভারপ্রাপ্ত কর্মী ইনগ্রিড ল্যারচার আমাকে জানালেন ড্রেসনার ব্যাঙ্ক ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে কার্ল -হান্স নামক এক ব্যক্তি আমার সঙ্গে বাক্যালাপে  ইচ্ছুক। আমি কি তাঁর সঙ্গে বার্তা বিনিময়ে সম্যক  আগ্রহী? এক বর্ণ বাড়িয়ে বলছি না সেকালের জার্মান রিসেপশনিসট বা সেক্রেটারিরা সিগরিড বা ম্যাজিনো লাইনের চেয়েও বড়ো  বাধা ছিলেন। দূরভাষ যোগে যে ব্যক্তি  তাঁদের অফিসের এমনকি কোন মাঝারি আধিকারিককে  উত্যক্ত করার দুর্মতি প্রকাশ করেছেন প্রথমে তাঁদের পরীক্ষা নিরীক্ষা হবে- কেন, কি কারণে এই ফোন, তিনি খুব ব্যস্ত মানুষ,  আগে থেকে সময় নেওয়া আছে কিনা ইত্যাদি বারোটা প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব পেলে তবেই প্রার্থিত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুমোদন দেবেন। বলা বাহুল্য জার্মান বসেরা এই মেঘের আড়ালে,  আম জনতার  ধরা  ছোঁয়ার বাইরে বসে দিব্যি সুখে জীবন যাপন করতেন। মোবাইল নামক বিভীষিকা তাঁদের স্বাধীনতা হরণ করবে দু দশক বাদে।  
    সেক্রেটারিদের একদা দুর্ভেদ্য প্রাচীর হবে বিধ্বংস।

    কৌতূহলের জয় হল। সবে এ অফিসে যোগ দিয়েছি,  ইতিমধ্যেই আমার নাম ফ্রাঙ্কফুর্টের ব্যাঙ্কিং  দুনিয়াতে চাউর হয়ে গেছে! ভয়ও হল, ইনি যদি শুদ্ধ  জার্মানে ডয়েচ মার্ক এবং ভারতীয় টাকার ভূত ভবিষ্যৎ নিয়ে বিচার বিমর্শ আরম্ভ  করেন তাহলেই  তো চিত্তির!  আমার আশঙ্কা অমূলক সাব্যস্ত হল। পরিষ্কার ইংরেজিতে প্রভাতি সম্ভাষণ শেষে জানালেন তিনি আমার সঙ্গে আলাপ পরিচয় করতে আগ্রহী। আমি কি অমুক দিন সন্ধ্যা লগ্নে ফ্রাঙ্কফুর্ট হাউপটভাখের কোণায় একটি চৈনিক রেস্তোরাঁয় একত্র অন্ন গ্রহণে  সম্মত আছি?

    ফ্ল্যাটে আমার সহকর্মী নিরামিষাশী শ্রীধর (পরে স্টেট ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হয়ে আমাদের ব্যাচের মানুষদের সম্মানিত করেছে) ডাল ভাত  রাঁধে, আমি সোনা মুখ করে খাই। বাসন ধুয়ে দিই  । ষ্টেট ব্যাঙ্ক যা মাইনে দেয় তাতে বাইরে ভাল মন্দ খাওয়া  যায় না।

    খেতে রাজি কিনা? বলে কি? হাত ধোব কোথায়?

    ভোজনের আমন্ত্রণে  আনন্দ এবং ছ মাস যাবত আমার দেখা শোনা করার জন্য ড্রেসনার ব্যাঙ্কের অপার করুণা এবং দাক্ষিণ্যের দরুন আন্তরিক  কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার সুযোগ  ছাড়লাম না। কার্ল- হান্সের কৌতুকবোধ আর তার বিন্যাস ছিল অসাধারণ - ইংরেজিতে যাকে বলে টাং ইন চিক হিউমর। সে বললে 'ওই খরচা উশুল করার ভারটা আমার ওপরে পড়েছে। আসুন  সামনের সপ্তাহে গল্প গুজব হবে'।

    চার দশকের বন্ধুত্বের সেই সূচনা।  ষ্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আমন্ত্রণে কার্ল-হান্স একমাস বাদে ভারতে যাবে, যেমন আমি জার্মানি এসেছিলাম তাঁদের আতিথ্য বরণ করতে। কুইদ প্রো কো!   ছ মাসের ট্রেনিঙে তার ভাষা শিক্ষার বালাই নেই।  ইংরেজিটা সে জানে এবং হিন্দি শেখার প্রশ্ন ওঠে না। অতএব ছটি মাস কার্ল-হান্স কলকাতা, বোম্বাই, দিল্লি এবং মাদ্রাজে ষ্টেট ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার বিভিন্ন দফতরে ব্যাঙ্কের কর্ম পদ্ধতি অনুধাবন করবে, আমি যেমন বার্লিন ফ্রাঙ্কফুর্ট মিউনিক নুরেমবেরগ ঘুরেছি।  সরকারি কাগজপত্র সে পেয়েছে, ভারত সম্পর্কে পড়াশোনা করে ফেলেছে। তবে যাবার আগে সে দেশটার  সম্বন্ধে কিছু ব্যবহারিক উপদেশ চায় আমার কাছে। বলা বাহুল্য আমার জ্ঞান দেবার পালা কেবল চিনে রেস্তোরাঁয় শেষ হয় নি, চলেছে কিস্তিতে কিস্তিতে। চার সপ্তাহ বাদে কার্ল-হান্স লুফতহান্সার বোম্বাইগামী হাওয়াই জাহাজে না চড়া অবধি আমরা নিয়মিত আড্ডায় বসেছি।

    ড্রেসনার ব্যাঙ্কে কার্ল- হান্সের অগ্রগতি হয়েছে দ্রুত। তার গল্প অনেক- সেটা আমার জার্মান স্মৃতি কাহিনীর  অংশ।

    সোভিয়েত ইউনিয়নের অবসান হলে পর ড্রেসনার ব্যাঙ্ক রাশিয়ান সরকারের কাছে সেন্ট পিটারসবুরগ শাখা খোলার আবেদন জানায়। ব্যাঙ্কের শাখা এবং একটি রুশ সাবসিডিয়ারি খোলার বিষয়টি নিয়ে ড্রেসনার ব্যাঙ্কের পক্ষে যিনি  আলোচনা শুরু করেন তাঁর নাম মাথিয়াস ভারনিগ,  আটের দশকে পূর্ব জার্মানির স্টাজির সক্রিয় কর্মকর্তা।এই বিষয়টি নিয়ে মাথিয়াস যার সঙ্গে কথা বলবেন তিনি সেন্ট পিটারসবুরগ শহরের মেয়র আনাতোলি সোবচাকের  বিদেশ বিভাগ ও অর্থনীতিক উপদেষ্টা, দু বছর  আগে ড্রেসডেন শহরে কে জি বির অফিসার হিসেবে মোতায়েন ছিলেন।  

    তাঁর নাম  ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন।

    এই দুই ব্যক্তি অর্থনীতি অথবা ব্যাঙ্কিং কতটা বোঝেন সেটা জরুরি বিষয় ছিল না।  কাজটা এঁরা করে দিলেন।  আটের দশকে দক্ষিণ আমেরিকার ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতির সময়ে সিটি ব্যাঙ্ক যে ইলেকট্রনিক ব্যাংকিং সুবিধার প্রচলন করে তার স্লোগান ছিল –

    আপনার অর্থের চেয়েও বেশি জরুরি তথ্য হল তার খবর 

    ইনফরমেশন অন  ইওর মানি ইজ মোর ইম্পরট্যান্ট দ্যান মানি ইটসেলফ

    এর বছর দুই বাদে কার্ল-হান্সের সেন্ট পিটারসবুরগে বা পিটারে (সে শহরের ডাকনাম) আসা যাওয়া শুরু হয়। তার আবাস মস্কোয় – প্রথম দিনেই সে মস্কো শহরের ওয়াইল্ড ইস্ট  রূপে খ্যাতির বিষয়ে সবিশেষ অবগত হয়েছে।  বিমান বন্দর থেকে বুলেট প্রুফ কালো মারসিদিস গাড়িতে চড়ে যে অ্যাপার্টমেনটে সে ঢুকেছে তার  দরোজার দুটো পাল্লা। বাইরেরটা নিরেট লোহার। কঠোর পরিশ্রম করে রাশিয়ান ভাষা শিখছে।


    মেয়রের অফিসের সামনে বর কনে - সেনট পিটারসবুরগ


    আনাতোলি আলেকসানদ্রভিচ সোবচাক তখন শহরের প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তি – সেন্ট পিটারসবুরগের  (অথবা পেট্রোগ্রাদ বা লেনিনগ্রাদ) ইতিহাসে প্রথম নির্বাচিত মেয়র।  ভ্লাদিমির পুতিন এবং দিমিত্রি মেদভিদেভ  (অদূর ভবিষ্যতে যারা পালা করে প্রধান মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হবেন) তাঁর সুযোগ্য সহকারী।  মাথিয়াস ভারনিগের সূত্রে এবং পুতিনের কল্যাণে  ড্রেসনার ব্যাঙ্কের ওপরতলার মানুষদের জন্য সেন্ট পিটারসবুরগের অনেক দ্বার তখন উন্মুক্ত।

    কার্ল-হান্সের সঙ্গে পুতিনের প্রথম সাক্ষাতের দিন সে তার রাশিয়ান ফলাতে গিয়েছিল। তাকে রীতিমত চমকে দিয়ে পুতিন পরিষ্কার জার্মানে জবাব দিয়েছেন।  কার্ল- হান্স অবশ্য তাঁর অ্যাকসেন্ট শুনে খুব মজা পায়।  পুতিনের জার্মান জাখসেন প্রভাব দুষ্ট -  যে উচ্চারণ আমি স্টাডরোডার হাইকে ও তার পরিবারের লোকজনের  মুখে শুনেছি। ওই যে কয়েক বছর পুতিন ড্রেসডেনে ছিলেন, এটা সেই সংসর্গের ফল! কার্ল-হান্স খাঁটি প্রাশিয়ান - তার মতো পরিশীলিত জার্মান খুব কম লোককে বলতে শুনেছি। সভ্য সমাজে সোয়েবিশ হেসিশের মতন জাখসেন ডায়ালেকটকে একটু  নিচু নজরে দেখা হয়।

    "তবে পুতিন যে জার্মান  বলছেন  তাতেই আমরা ধন্য!  এটা মনে রেখো পুতিন একটিমাত্র বিদেশি  ভাষায় স্বচ্ছন্দ – সেটি জার্মান। হয়তো সেই কারণে প্রাক্তন জার্মান চ্যান্সেলর গ্যারহার্ড শ্রয়েডারের সঙ্গে পুতিনের সখ্য সহজেই গড়ে ওঠে – পুতিন তাঁকে গাজপ্রমের চাকরি দেন"।

    পরবর্তী জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল একটিমাত্র বিদেশি ভাষায় সড়গড়- সেটি রাশিয়ান। ভালো রাশিয়ান জানার জন্য স্কুলে অনেক পুরস্কার  পেয়েছেন।   কোন দোভাষী ছাড়াই  পুতিনের সঙ্গে স্বছন্দ  রাশিয়ানে কথা বলেন। বন বার্লিনের সরকারি আমলারা  তাতে অসন্তুষ্ট হতেন বলে শোনা যায়।

    ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পরে চ্যান্সেলর শোলতস বলেছেন  আমরা পুতিনকে বুঝতে ভুল করেছি।

    আর যাই হোক সেটার জন্য অনুবাদককে  দায়ী করা যায় না (নট লস্ট ইন ট্রানস্লেশান!)।

    একদিন কার্ল-হান্সের কাছে অনুরোধ, মতান্তরে আদেশ, এলো ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর প্রিয় মানুষদের জন্য একটি একান্ত সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন করতে ইচ্ছুক।  স্থান নির্দেশ করবেন তিনি, তবে সেটি অনুষ্ঠিত হবে  ড্রেসনার ব্যাঙ্কের ছত্রছায়ায়। কয়েকটি খ্যাতনামা জার্মান পিয়ানো বাদকের নাম দিয়েছিলেন।  তাঁদের সকলকে নয়,  অন্তত কয়েকজনকে কার্ল-হান্স  এই সান্ধ্য জলসায় এনে পুতিনের প্রশংসা অর্জন করে। কার্ল-হান্স বললে কয়েকটা কথা খুব মনে আছে –

    ব্যাঙ্কের বাড়িতে বা কোন মঞ্চে নয়, জলসা হয় একটা সরকারি বাড়ির মাটির অনেক গভীরের  হলঘরে।  সাদা পোষাকে সন্ত্রির সংখ্যা অগুনতি, পারকিং এলাকা থেকে সিঁড়ি সর্বত্র তারা দাঁড়িয়ে। যদিও কাগজে কলমে এটি ড্রেসনার ব্যাঙ্কের আয়োজন, অভ্যাগতদের আমন্ত্রণ করার কাজটি পুতিনের প্রোটোকল সম্পন্ন করে। তাঁদের কোন লিস্ট ব্যাঙ্ককে দেওয়া হয় নি। পারকিং লট থেকে তাঁদের সঙ্গীত সভায় নিয়ে এসেছে প্রোটোকলের লোক।

    ওয়াইনের গ্লাসে আরেক চুমুক দিয়ে কার্ল-হান্স বললে, "পুতিনকে দেখে মনে হয়েছে  ইনি ঠাণ্ডা মাথায় গুলি চালাতে দ্বিধা করবেন না। হলফ করে বলতে পারি, এই মানুষটির সঙ্গে একা  ঘরে বসতে চাইব না  (ইখ মোয়েষটে নিমালস মিট ইম ইন আইনেম তসিমার অ্যালাইনে জিতসেন)।"

    নয়ই নভেম্বর ১৯৮৯ সালে ড্রেসডেনে কে জি বির ফাইল পুড়িয়ে দেশে ফিরলে আনাতোলি সোবচাক  পুতিনকে আশ্রয়, সমর্থন এবং চাকরি দেন।  নিজের এবং মেয়ের ফ্ল্যাট কেনার ব্যপারে কয়েক হাজার ডলারের দুর্নীতির গল্প চাউর হলো – পুতিনের মেনটর, গুরু  সোবচাক ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে হাজার খানেক ভোটের ব্যবধানে হারলেন ডেপুটি মেয়র ভ্লাদিমির ইয়াকভলিয়েভের  কাছে। দেশত্যাগ করে  বিনা পাসপোর্টে ফ্রান্সে হাজির হয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নিলেন।  তিন বছর বাদে পাশা উলটে গেছে – পুতিন প্রধানমন্ত্রী।  তাঁর ভরসায় সোবচাক দেশে ফিরলেন। পুতিনের রাষ্ট্রপতি পদের সমর্থনে নানা জায়গায় ভাষণ দিলেন। দেশে ফেরার ছ মাস বাদে কালিনিনগ্রাদে একটি বক্তৃতা করতে গিয়েছিলেন।  হোটেলের ঘরে ফেরার পরে  তাঁর হৃদযন্ত্র থেমে যায়।  ঠিক কি হয়ে ছিল জানা যায় না তবে অ্যাম্বুলেন্স আসে বিলম্বে। এই স্বল্প সময়ে পুতিনকে রাজনৈতিক সমর্থন দিলেও তাঁর  আমলে কিছু দুর্নীতির কথা সোবচাক  উল্লেখ করেছিলেন।  গ্লাস নস্তের মূল উদ্দেশ্যই তো তাই ছিল।

    গল্প শেষ করে কার্ল-হান্স বললে "যা বললাম তার সবটাই  প্রকাশিত খবর, ব্যাখ্যা বাদে। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ এই দশ বছরে  পুতিনের পুনর্জন্ম – আনাতোলি আলেকসান্দ্রভিচের চেয়ে বেশি পুতিনের  বিষয়ে আর কেউ হয়তো জানতো  না। তবে অন্য অনেক কিছুর মতন এ নিয়েও  মস্কো বা পিটারে কোন আলোচনা স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকারক"।

    রোদিকা গ্রামের বুলাঞ্জেরিতে রুটি কিনতে গেছে। সন্ধ্যে নামে, আটলান্তিকের মৃদু বাতাস ভেসে আসে।  এই পৃথিবীর  রণ রক্ত সফলতা এখান  থেকে  দূরে,  অনেক দূরে।

    মে ৩০, ২০২২
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০১ জুন ২০২২ | ১৮৭২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • মাখনলাল | 148.72.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৪:০৯508358
  • দাদা, আপনি পুতিনকে দেখেছেন , পুতিনের সঙ্গে গল্প করেছেন জেনে বুকটা বাঙালির গর্বে ভোরে উঠল। বাংলার ছেলে আজও দুনিয়া জয় করছে।
  • Amit | 121.2.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৪:২৪508359
  • বাপরে। পুরো থ্রিলার মনে হলো । এক দমে শেষ করে দিয়েছি। 
  • হীরেন সিংহরায় | ০১ জুন ২০২২ ১৫:১৪508360
  • শ্রী মাখনলাল 
     
     এটা আমার বন্ধু কার্ল- হান্সের গল্প- সে দেখেছে পুতিনকে ।
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৫:৫০508361
  • ডেপুটি মেয়র ভ্লাদিমির ইয়াকোলেভের কাছে। --- ওটা ইয়াকভলিয়েভ হবে মনে হচ্ছে।
     
  • হীরেন সিংহরায় | ০১ জুন ২০২২ ১৫:৫৯508362
  • Vladimir Yakovlev বানান । 
     
    তাহলে ইয়াকভলেভ হবে কি? ইয়াকোলেভ অবশ্যই নয়। 
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:০৪508363
  • "ইখ মোয়েষটে নিমালস মিট ইম ইন আইনেম তসিমার অ্যালাইনে জিতসেন"

    হয় "ইশ মোয়েষটে" লিখুন নয় "ইখ মোয়েখটে" ঃ-)

    ৎসিমার - Zimmer
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:০৫508364
  • হ্যাঁ, ইয়াকভ্লিয়েভ
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:১২508365
  • এই যে আজ আপনি "গোয়েথে" লিখলেন, খুব একাত্ম বোধ করলুম, বুঝলেন? আগে যখন গোয়েথে লিখ্তুম, সেকী ঝামেলা! পাবলিক আমাকে ভুল প্রমাণ না করে ছাড়বেই না। তারা সব লেখে গ্যেটে বা ঐজাতীয় সব বানান।
    এখন কেউ আর গোয়েথে তে প্রতিবাদ করবে না, সম্ভবত আমি মেয়ে বলেই পাবলিক আমার উচ্চারণ মানতে চায় নি।
  • হীরেন সিংহরায় | ০১ জুন ২০২২ ১৬:১২508366
  • আমার জার্মান শিক্ষায় ইখ মোয়েষটে লিখি। সাড়ে চার দশক বাদে বদলাতে পারব না। ত আর ৎ কানের ওপর। 
     
    মেয়রের নাম সংশোধন করে দিলাম। 
  • | ০১ জুন ২০২২ ১৬:১৬508367
  • যোষিতা,  গ্যেটে  ঠিক কিনা প্রশ্নটা আমি করেছিলাম। আর আমার লেখায় কিন্তু আপনার গোয়েথে-ই রেখেছিলাম। সেটাও বলুন যে প্রশ্নকারিনী আপনার কথাই মেনেছিল। smiley
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:১৭508368
  • দ ইজ কারেক্ট, :-)
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:২২508369
  • সুইসরা ইখ, মিখ, দিখ... করে। তাদের হচ্ছে গিয়ে ডিয়ালেক্ট, মুন্ডার্ট। আপনি তো কুলীন হাইজারমান (Schriftdeutsch) বোলনেওয়ালা। আগে সুইস ডিয়ালেক্টগুলোকে আওয়াজ দিয়েছিলেন, মনে আছে? ;-)
  • Amit | 220.235.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:২৬508370
  • "কমেরৎসবাঙ্ক" এর অনুবাদ কি কমরেড'স ব্যাঙ্ক ?
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:২৭508371
  • Commerzbank -> Commerce Bank
  • dc | 2401:4900:1cd0:a4c3:9843:1fc8:22a8:***:*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:২৮508372
  • প্রতিটা পর্বই পড়তে খুব ভাল্লাগে, এটাও তাই। পুটিন জার্মান ভাষা জানেন, জানতাম না। আর গ্যেটে রাস্তায় এসবিআই এর অফিস দেখে বেশ ভাল্লাগলো।  
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:২৯508373
  • কমরেড হচ্ছে ইংরিজি শব্দ, জারমানে কামেরাড, রাশিয়ানে তাভারিশ।
  • হীরেন সিংহরায় | ০১ জুন ২০২২ ১৬:৪৮508374
  • শ্রী ডি সি 
    অনেক ধন্যবাদ । পুতিন জার্মান জানেন , বলেন। তিনি একটিমাত্র বিদেশি ভাষায় স্বচ্ছন্দ এটা আমার সেকেন্ড হ্যান্ড ইনফরমেশন তবে কার্ল -হান্স আমার প্রথম শ্রেণির বন্ধু ! বাজে গপ্প করবে না । ওই জাখসেনের ডায়ালেকতে বলেন , মানে সে সময় বলতেন । 
  • dc | 2401:4900:1cd0:a4c3:9843:1fc8:22a8:***:*** | ০১ জুন ২০২২ ১৬:৫৮508375
  • আচ্ছা। 
     
    আমার বাবাও এসবিআইতে চাকরি করতো আর একেবারে অফিস অন্ত প্রাণ ছিল, বাবারও এই অফিসের ছবি দেখলে ভাল্লাগতো মনে হয়। 
  • হীরেন সিংহরায় | ০১ জুন ২০২২ ১৬:৫৯508376
  • যোষিতা 
     
    মুশকিল হলো জার্মান উচ্চারণকে ফোনেটিক ভাবে বাঙলায় প্রকাশ করা হয়তো শক্ত । আমি যখন ইখ বলি, সেই খ আর বাখের খ আলাদা উচ্চারণ প্রথম ক্ষেত্রে খ অত্যন্ত হালকা, সফট । দ্বিতীয়টায় তা নয় । যেমন হামবুর্গের উচ্চারণে আর মিউনিকের উচ্চারণে Stein দু রকম শোনায় । স বদলে প্রায় ষ হয়ে যায় । 
     
    সুইস জার্মান বিশেষ করে বেরনার ওবারলানড নিয়ে আমার একটি ব্যক্তিগত প্রতিবেদন আছে ( সেটা আমার ইউরোপ স্মৃতি বইতে বলেছি - কিনবেন আশা করি )। সারা দিন কাটাতে হয়েছিল এক সি এফ ওর সঙ্গে। কথা হচ্ছিল জার্মানে ,মানে আমার জানা জার্মান ভাষায় । লাঞ্চে তিনি বললেন আমরা কি ইংরেজিতে বাকি সময় বাক্যালাপ করতে পারি ? খুদ্ধ হয়ে বললাম আমার জার্মান কি খারাপ ? তিনি বললেন না, আমার পক্ষে আপনার সঙ্গে ঠেকা দেওয়া শক্ত হচ্ছে! 
     
    মজার ব্যাপার এই যে সুইস টি ভি তে যখন খবর পড়া হয় সেটি একেবারে হানোভার গোয়েটিংগেনের দরবারি ভাষা ! 
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ০১ জুন ২০২২ ১৭:১১508377
  • টিভিতে রেডিওতেতো "ভদ্র ভাষায়" কথা বলার রেওয়াজ। কলকাতা দূরদর্শন কি আকাশবাণীতে যেমন করে বাংলা বলা হতো, বা রেডিও বাংলদেশ ঢাকা। সুইসজার্মান তো ভাষা নয়, উপভাষা, ব্যাকরণে ভবিষ্যৎ কাল্টাই ঠিকমত করে নেই। এবং সুইসজার্মান একটি উপভাষা নয়, অসংখ্য। ভালিসের উপভাষা কেও বুঝতে পারে না। আপনি ব্যার্নার ওবারলাণ্ডের ডিয়ালেক্টেই কুপোকাৎ? ভালিসের লোকজনের কথা শুনলে তো অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবেন!
  • Ranjan Roy | ০২ জুন ২০২২ ১০:৪৮508393
  • এই পর্বটি আমার বিশেষ ভালো লেগেছে। যেন ভাস্করের ছেনি বাটালিতে মেপেজুকে নির্মিত। অত্যন্ত শৈল্পিক।
  • Amit | 121.2.***.*** | ০২ জুন ২০২২ ১১:২৫508394
  • সে তো সব ভাষাতেই। নোটঃ আয়র্লণ্ড এর ইংলিশ শুনলে লন্ডনার রা ভিরমি খায়। আর কলকাতার বাঙালিরা চট্টগ্রামের বাঙ্লা শুনলে নির্ঘাত মূর্ছা যাবে।  সে প্রায় মগ মুলুকের ডিয়ালেক্ট। 
  • guru | 115.187.***.*** | ০২ জুন ২০২২ ১৪:১৬508396
  • সিম্পলি অসাধারণ হচ্ছে হীরেনবাবু |
     
    চালিয়ে যান | 
  • guru | 115.187.***.*** | ০২ জুন ২০২২ ১৫:৫২508401
  • আপনার পূর্ব জার্মানি এর উপরের লেখাটি পড়ে মনে হচ্ছে যে পুতিনের উত্থানের পিছনে একটা বড়ো কারণ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পরের একটা অস্থিরতা ও অনিশ্চিয়তা যা আপনি নিশ্চয় সেই সময়ের য়েলৎসিনের রাশিয়াতে গিয়ে দেখেছিলেন | 
     
    বর্তমান রাশিয়া আর সেই সময়ের রাশিয়াতে মানুষের অনুভবের কিছু কি পার্থক্য দেখেছেন ? জানতে আগ্রহ রইলো |
  • হীরেন সিংহরায় | ০২ জুন ২০২২ ১৯:১০508406
  • শ্রী গুরু 
     
    সঠিক। অর্থনৈতিক অনিশচয়তা একটা বডো কারন। 
     
    ১৭ আগস্ট ১৯৯৮ রাশিয়ান সরকার তার রুবল ঋন শোধ দিতে অক্ষম হয় ( ডিফলট)। পুতিনের অভ্যুদয় হল । 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন