এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • দূরে কোথায় ২১ 

    হীরেন সিংহরায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৩ মে ২০২২ | ১৬৬৩ বার পঠিত
  • কারো পৌষ মাস

    এপ্রিলের চার তারিখে একটি বন্ডের আসল এবং অন্য বন্ডের সুদ সহ ৬৫ কোটি ডলারের দেনা রাশিয়ার ঘাড়ে। গ্যাস তেল সোনা হীরে বেচে রাশিয়ার  ভাঁড়ারে  আজ ছ হাজার কোটি ডলার আছে। তবে এই দেনা শোধ করতে অসুবিধে কোথায়? বাগড়া দিচ্ছে আঙ্কল স্যাম। অন্য অনেক দেশের মত সুদ কম হলেও সঞ্চয়  সুরক্ষিত ভেবে রাশিয়া তার ডলার সম্পদের বেশির ভাগ আমেরিকান সরকারের কাগজে (ট্রেজারি পেপার) নিবেশ করেছিল।  আমেরিকাতে একটি বিশেষ দফতর আছে তার সংক্ষিপ্ত নাম ও এফ এ সি (অফিস অফ দি ফরেন অ্যাসেট কনট্রোল)। যেহেতু রাশিয়ার ওপরে নানান স্যঙ্কশন চাপানো হয়েছে, এই দফতর জানিয়েছে রাশিয়া তার আমেরিকায় জমা ডলার ব্যবহার করতে পারবে না, এমনকি আমেরিকান বন্ড হোল্ডারকে ঋণ ফেরত দেবার জন্যেও নয়।  

    এই সেই মউকা বা সেই মুহূর্ত বা সাউদা যার জন্যে বন্ড ট্রেডাররা মুখিয়ে থাকেন – এলো মেলো করে দে মা লুটে পুটে খাই!

    ধরুন চার বছর আগে  এক হাজার ডলারের একটি রাশিয়ান সরকারি বন্ড কিনে আপনি দেরাজে ভরে  তালা চাবি দিয়ে রেখেছিলেন। সরকারি ঋণ বলে কথা, এতো  বাজারের আলুওলা মাছওলা নয় স্বয়ং রাশিয়ান সরকার, মহামতি পুতিনের অভয় হস্ত মাথার ওপরে। বিগত পাঁচ বছরে আপনি তিন মাস অন্তর  সুদ পেয়েছেন, ২০২২ সালের চৌঠা মে তার আসলটি পাবেন।  লাভ শুভ, শুভ লাভ।  

    বন্ড যখন কিনেছিলেন তখন ইউক্রেন ঠিক কোথায়, কেন এসব নিয়ে আপনি ভাবেন নি। হঠাৎ শুনলেন  রাশিয়ার ডলার গচ্ছিত আছে আমেরিকার ঘরে সেটির ওপরে তারা তালা মেরে দিয়েছে। বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেবো কিসে?

    রাশিয়া জানাল চিন্তা করবেন না। টাকা আপনি পাবেন,  কিন্তু রুবেলে।  আপনার মতন হাজার বন্ড হোল্ডার উকিলের চিঠি পাঠাল রাশিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে - মহাপ্রভু  আপনি বন্ডের দলিলটা পড়ে  দেখুন দিকি। কোথায় লেখা আছে যে আপনি রুবেলে শোধ দিতে পারেন?  রুবেলের দায়ে আপনার  মনসা বিকিয়ে যাবার যোগাড়।

    আপনি চান আপনার হাজার ডলার।  রাশিয়া বলছে দেবো না বলিনি, রুবেলে দেবো বলেছি।  আপনি নেবেন না। অতএব আপনি বাজারে খোঁজ খবর করলেন। যে বন্ডের কাগজটি আপনি যক্ষের ধনের মতো আগলে রেখেছিলেন সেটা রাশিয়ানরা না হোক অন্য কেউ কি কিনবে?  যাঁদের মারফত আপনি এই মহামূল্য বন্ডটি কিনেছিলেন সেই  জে পি মরগান বা গোল্ডম্যান জাখসকে ফোন করলেন। অবশ্যই আপনার টাকা বাঁচল কি ডুবল তাতে এঁদের কিছু এসে যায় না। আপনি প্রাপ্ত বয়স্ক নিবেশক – চোখ খুলে, জান বুঝকে টাকা লাগিয়েছিলেন।  এখন তাদের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করলে তারা শুনবে কেন? তার মানে কি এঁরা হাত উলটে বসে থাকবেন?

    তা কখনো হয়? আপনি তাঁদের খদ্দের, "খরিদ্দার  প্রভুর সমান"  লেখা দেখেন নি কলকাতার দোকানে দোকানে? শ্যামবাজারে মায়ের সঙ্গে শাড়ি কিনতে গিয়ে কতবার দেখেছি।

    এইবার মরগান গোল্ডম্যানের আসল খেলা শুরু! স্যাম  আপনাকে এই কাগজ বেচেছিল।  খুঁজে পেতে তাকে  ফোন করলেন- 'স্যাম এই চার তারিখে আমার বন্ডের আসলটা পাওনা। এখন কি সেটা পাবো বলে মনে হয়'?

    স্যাম বললে ভীষণ ঝামেলা,  বুঝলেন তো? এই যে  ইউক্রেনের লড়াই শুরু হয়েছে  রাশিয়ার ডলার আকে গেছে। তাতে হাত দেওয়া  যাচ্ছে না।  ৪ এপ্রিল ২০২২ তারিখে যে রাশিয়ান বন্ড   ডিউ  সেটা আদৌ শোধ হবে কি না কে জানে। বাজার ভয়ানক খারাপ (সেটা জানেন বলেই তো আপনি এই ফোনটা করছেন)!  আপনি আমাদের খদ্দের। দেখি আমরা যদি কোনভাবে আপনার বন্ড বিক্রি করতে পারি '। স্যামের  ওপরে গভীর আস্থা নিয়ে আপনি শুতে গেলেন।  পরের দিন সক্কাল বেলা আপনি হয়তো সবে চায়ের কাপ হাতে নিয়েছেন এমন সময় স্যামের ফোন, 'আপনাকে এতো সকালে ফোন করার জন্য দুঃখিত।  আমি একজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলেছি যে আপনার হাজার ডলারের বন্ড কিনতে পারে'।  আপনি আহ্লাদে আটখানা হয়ে ওঠবার আগেই স্যাম জানাল, 'সে  ডলারে চার সেন্ট দিতে রাজি আছে'।

    আপনি বেচবেন  হাজার ডলারের বন্ড। এখানে সেন্টের আবার কি হিসেব? স্যাম শিশুকে বোঝানোর মতন আন্তরিক সরলতা সহকারে আপনাকে জানালো হাজার ডলারের বন্ডের বিনিময়ে আপনি চল্লিশ ডলার পাবেন।

    সর্বনাশে সমুৎপন্নে অরধং ত্যাজতি পণ্ডিত:
    অরধেন কুরুতে  কার্য  সর্বনাশো হি দুঃসহ

    এটা আপনার শোনা। এই আপ্ত বাক্য অনুযায়ী আপনি হয়তো অর্ধেক বা পাঁচশ ডলার বিসর্জন দিতে প্রস্তুত ছিলেন।ছিয়ানব্বুই শতাংশ হারিয়ে দুঃসহ সর্বনাশ ঠেকানোর কথা ভাবেন নি।

    টেলিফোনের অন্যদিকে স্যাম। সে জানতে চাইছে ডিল অর নো ডিল।

    আপনি ভাবলেন জোচ্চোরের বাড়ির ফলার, যা জোটে তাই নেওয়া যাক।  হাজার ডলারের সম্পদ বেচে আপনি পেলেন চল্লিশ ডলার।  পন্তিউস পিলাতুসের  মতন আপনি  রাশিয়ান বন্ড নামক বিষয়ের ব্যাপারে হাত ধুয়ে ফেললেন।

    দিন কাটে। রাশিয়ান সরকার জানেন  হাতে তিরিশ দিন সময় আছে।  যদি মে মাসের চার তারিখে বন্ডের টাকা শোধ না হয় তবেই তাঁরা খেলাপি হবেন। একবার রাশিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক আমেরিকানদের বলেন আমাদের জমা টাকা আটকে রেখেছেন। রুবেল না নিলে কিছুই পাবেন না। ভাবুন আপনাদের দেশের লোকেরই টাকা মারা যাবে। যে সব পেনশন ফান্ড সুনিশ্চিত সুদ ও আসলের আশায় বন্ড কিনেছিল তাদের হাতে কাঁচকলা ধরিয়ে দিচ্ছেন। আমেরিকানরা বললেন আমরা না হয় আপনাদের জমা ডলারটা কব্জা করে রেখেছি কিন্তু গ্যাস তেল বেচে যে ডলার ইউরো প্রতিদিন রোজগার করেছেন সেখান থেকে শোধ দিন না।

    চাপান উতোর চলে। মরগান গোল্ডম্যানের স্যাম, জন, বিল ভগ্নহৃদয় নিবেশকদের কাছ থেকে বন্ড কিনতে থাকে, ডলারে কাউকে দু সেন্ট কাউকে চার সেন্ট দিয়ে। কিনছে বটে কিন্তু কাকে যে তারা বিক্রি করছে সেটা আপনি আমি ক্বচিৎ জানতে পারি। 

    বাজারে রাশিয়ান সরকারের নামে  বিভিন্ন মেয়াদের আটটি বন্ড আছে।  তার লিখিত মূল্য চারশো কোটি ডলার এবং শেষ বন্ডটির আসল শোধ দেবার দিন ২০৩৬ (মহামতি পুতিনের কর্মকাল ২০৩৫ অবধি) আমরা সকলেই জানি সময়মত সুদ বা আসল না  মেটালে মণ্ডিতে বদনাম।  ভবিষ্যতে বন্ডের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে অথবা অতি উচ্চমূল্যে ধার পাওয়া যাবে।

    দুই যুযুধান পক্ষ একে অপরকে নিরীক্ষণ করছে  অত: কিম?

    তেল গ্যাস বিক্রির ডলার প্রত্যহ জমা হচ্ছে রাশিয়ার খাতায় -  প্রতি সেকেন্ডে  শুধু গ্যাস বেচে ৭০০০ ইউরো! মে মাসের চার তারিখে রাশিয়ান সরকার অকস্মাৎ জানালেন একটি বন্ডের আসল এবং আরেকটি বন্ডের দেয় সুদ, কূল মিলিয়ে  ৬৫ কোটি ডলার তাঁরা দেবেন – কথার খেলাপ নয়, অনাদায়ী ঋণ নয়।  স্লেট পরিষ্কার।

    যদি ধরে রাখতেন, আপনার হাজার ডলারের  বন্ডের কাগজের বিনিময়ে আপনি  পেতেন হাজার ডলার।
     
    মরগান গোল্ডম্যানের  স্যাম জন বিলদের পোয়া বারো। পয়সা হি পয়সা! এক মাসের পরিশ্রমে  ৯৬% লাভ। লন্ডন ডকল্যানডের তিরিশ তলার বারে বসে সর্বাধিক মূল্যের শ্যামপেন গ্লাসে  ঠোকাঠুকি করে বলছে - থ্যাংক ইউ মিস্টার পুটিন! 
     
    তাদের  ঈর্ষা না করে  অর্থনীতির পরম গুরু জন মেনারড কেইনসের উপদেশটি মনে রাখা ভালো -  "বাজারের ওলট পালটের সঙ্গে   আপনার আর্থিক সঙ্গতি তাল দিতে হয়তো পারে না  (মার্কেটস ক্যান রিমেন ইরর‍্যাশনাল লংগার  দ্যান ইউ ক্যান রিমেন সলভেনট )।
     
     
    অতএব য জীবতি স ট্রেডার। 

    কারো সর্বনাশ

    মায়ার ইউনিভার্সটির পেছনে এবং আমাদের অদূরবর্তী গ্রাম ভার্জিনিয়া ওয়াটারসকে বিলিওনেয়ারদের বস্তি বলা হয়। ভুবন বিদিত গলফ ক্লাব ওয়েনটওয়ারথ তার কেন্দ্রবিন্দু। কয়েক একর জমির লাগোয়া একের পর এক বিশাল  ভিলার সমারোহ। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে  পোর্টনেল ড্রাইভের একটি ভিলার গ্যারাজে  মিখাইল ওয়াটফোরড নামের ছেষট্টি বছর বয়স্ক এক ইউক্রেনীয় অলিগারককে ফাঁসবদ্ধ অবস্থায় ঝুলতে দেখে তাঁর মালি পুলিশকে খবর দেয়। ইংল্যান্ডে এসে তিনি তাঁর নাম তলস্তশেয় বদলে ওয়াটফোরড নামে অভিহিত হয়েছিলেন। মহামতি পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো ছিল না এবং তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে আপন অভিমত প্রকাশ করেছিলেন বলে শোনা  যায়।
     
    ইউক্রেনের লড়াই শুরুর পরের দিন গাজপ্রমের  অর্থবিভাগের  উচ্চপদস্থ অফিসার আলেকসান্দার তুইলিয়াকভের  মৃতদেহ  তাঁর সেন্ট পিটারসবুরগের বাড়ির শোবার ঘরে আবিষ্কার করেছেন তাঁর বান্ধবী। সেখানকার পুলিশের মতে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।  কোন সুইসাইড নোট মেলে নি।
     
    জানুয়ারি মাসে গাজপ্রম আধিকারিক লেওনিদ শুলমানের  মৃতদেহ তাঁর বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেন্ট পিটারসবুরগের অ্যাপার্টমেনট থেকে।  

    মিখাইল ওয়াটফোর্ডের ভিলা
    বার্সেলোনার কাছে  ভূমধ্যসাগরের তীরে ইওরেত দে মারের  এক ভিলায় সেরগেই প্রোতোসেনিয়া নামক ৫৫ বছর বয়স্ক এক রাশিয়ান এবং তাঁর স্ত্রী ও আঠারো বছরের মেয়ের প্রাণহীন দেহ এবং একটি কুড়ুল পাওয়া যায়। ফ্রান্সে তাঁর আপন অট্টালিকা  আছে।  ছুটিতে ইওরেত দে মারে বউ মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন। তাঁর ছেলে ফ্রান্স থেকে  এসে তিনটি মৃতদেহ দেখতে পেয়ে কাতালুনিয়ান পুলিশকে খবর দেয়।  প্রোতোসেনিয়া শিক্ষায় ইঞ্জিনিয়ার, একদা মহামতি পুতিনের নিকটবর্তী চক্রের অংশ।  তিনি  নোভাতেক নামের যে  গ্যাস প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন সেটির যুগ্ম মালিক পিওতর কলবিন,  যিনি পুতিনের একাধিক সম্পত্তির বেনামি মালিক।

    ক্রাসনায়া পলিয়ানা রাশিয়ার এক বিখ্যাত স্কি সেন্টার।  মহামতি পুতিনকে এখানে স্কি ছাড়াও আইস হকিতে অংশ নিতে দেখা যায়। তাঁর অতিথিদেরও  নিয়ে আসেন। গত সপ্তাহে  এই সেন্টারের ডিরেক্টর আন্দ্রে ক্রুকওস্কিকে কেবল কারের নিচের পাথরে মৃত  অবস্থায় পাওয়া যায়। তাসের খবর মাফিক  পাথরের ওপরে হাঁটার সময় তাঁর পদস্খলন হয়েছিলো।
     
    রাশিয়ান সরকারি খবর অনুযায়ী  আপন স্ত্রী ও কন্যার পাশাপাশি ভ্লাদিস্লাভ আভাইয়েভের মৃতদেহ পাওয়া গেছে তাঁর মস্কো বাসভবনে।  আভাইয়েভ এককালে ক্রেমলিনের তল্পিবাহক ছিলেন পরে  গাজপ্রমের এক অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট।  মস্কো পুলিশের মতে এটি আত্মহত্যা। গাজপ্রমেরই  এক ইউক্রেনিয়ান ভাইস প্রেসিডেন্ট ইগর ভোলোবুয়েভ মন্তব্য করেছেন ভ্লাদিস্লাভ হয়তো এমন কিছু জানতেন যা তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বলা বাহুল্য ইগর ভোলোবুয়েভ মস্কো হতে পালিয়ে এখন ইউক্রেনে লড়াই করছেন।  
     
    স্কি সেন্টারের ডিরেক্টর মহামতি পুতিনের ঘনিষ্ঠ মানুষ ছিলেন। 
     
    মিখাইল ওয়াটফোরড  ছাড়া বাকিরা  কেউ অলিগারক নন –গাজপ্রম অথবা গ্যাস / তেলের ব্যবসায়ে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।  কেউ সুইসাইড নোট লিখে যান নি।
     
    মার্চের প্রথম সপ্তাহে রাশিয়ান সংবাদসংস্থা তাস এক  অলিগারকের মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করে – নিঝনি নভগরদবাসী ভাসিলি মেলনিকভ তাঁর পত্নী  ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করে আত্মঘাতী হয়েছেন। মালদ্বীপে  ছুটি কাটিয়ে তাঁরা সবে বাড়ি  ফিরেছিলেন। কোন সুইসাইড নোট পাওয়া যায় নি।
     
    রাশিয়ার দক্ষিণে প্রত্যন্ত প্রদেশ কেমেরভোয় জন্মেছিলেন ওলেগ তিনকফ।  তাঁর বাবা কয়লাখনির শ্রমিক মা সেলাই কর্মী। তিনি নিজেই বলেছেন  তাঁর কর্মজীবনের সূচনা ব্ল্যাক মার্কেটে মাল কেনা বেচা করে – ইধার কা মাল উধর।  সেন্ট পিটারসবুরগের মাল সাইবেরিয়াতে, পোল্যান্ডের মাল সেন্ট পিটারসবুরগে।  ট্যাক্স কখনো দেন নি।  দু পয়সা হলে পরে আইনমাফিক ব্যবসা শুরু করেন:  সুপার  মার্কেট খুলেছেন, রেকর্ড লেবেল বানিয়েছেন।  হঠাৎ বাই উঠল ব্যাঙ্ক চাই – একটি বন্ধকি কারবার ছিল সেটির জন্য  যোগাড় করলেন ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স।  তার নাম দিলেন তিনকভ বাঙ্ক। ব্যবসা ভালোই চলছিল,  ব্লুমবেরগের হিসেবে তাঁর সঞ্চিত ধনের পরিমাণ নশো কোটি ডলার। মুশকিলে পড়লেন ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য মহামতি পুতিনের সমালোচনা করে। দেশত্যাগ করে  ইতালির টসকানাতে বাস করেন – সম্প্রতি তিনকভ ব্যাঙ্কে তাঁর ৩৫% শেয়ার পুতিনের বন্ধুজনকে  বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন, নিতান্ত জলের দরে। প্রাণে বাঁচলে তবে তো ভদকা অথবা কিয়ান্তি! যদিও তিনি জানেন মহামতি পুতিনের লম্বা হাত টসকানাতেও তাঁর  শরীরের সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সামুহিক ক্ষতি করতে পারে।

    ১২ মে, ২০২২
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৩ মে ২০২২ | ১৬৬৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ১৩ মে ২০২২ ১৪:৫৭507573
  • শীত লহর!!!
  • dc | 122.164.***.*** | ১৩ মে ২০২২ ১৫:১১507574
  • বন্ড অ্যানালিসিসটা একদম ঠিকঠাক হয়েছে। এদিকে আরও বেশ কিছু য়ুরোপিয়ান ক্লায়েন্ট রুবলে গ্যাস কিনতে রাজি হয়ে গেছে। 
  • S | 2405:8100:8000:5ca1::d3:***:*** | ১৩ মে ২০২২ ২০:১৮507579
  • বন্ডের হিসাব তো ঠিক হলনা। রিটার্ণ ৯৬% না। আরেক বার হিসাব করুন। ৪০ ডলারে বন্ডের দাম হল ১০০০ ডলার।
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ মে ২০২২ ২১:১০507581
  • ভুল আমারই। সরলরেখায় ৯৬ কিন্তু শতকরায় ৯২% । অনেক ধন্যবাদ । আমার স্কুলের অংক শিক্ষক বলতেন বাবা হীরু জীবনে এমন কোন কাজে যাইবা না যেথা গণিতের প্রয়োজন আসে ! 
  • S | 66.146.***.*** | ১৩ মে ২০২২ ২১:২০507582
  • আবারও ভুল। সিরিয়াসলি আপনি এই হিসাবটা করতে পারছেন না? গোল্ডম্যান আপনার কাছ থেকে ৪০ ডলারে বন্ড কিনলো। আর রাশিয়ার সরকার ফেস ভ্যালু ১০০০ ডলার দিলো গোল্ডম্যানকে। গোল্ডম্যান প্রতি ৪০ ডলার ইনভেস্টমেন্টে প্রফিট ৯৬০ ডলার। রিটার্ণ ২৪০০%।

    ক ১০০ টাকার জিনিস খ কে ১০ টাকায় বিক্রি করলো। ৯০% লোকসান। খ এর লাভ ৯০০% কারণ সে ১০০ টাকার জিনিস ১০ টাকায় পেলো।
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ মে ২০২২ ২১:৫০507583
  • ধন্যবাদ ।
    ভাগ্যিস আমাকে বন্ড ট্রেডিং করতে দেয় নি!
    অরিজিনেশনে আটকে রেখেছিলো! অন্যথা সিটি  ব্যাংক দেউলে হয়ে যেতো! 
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ মে ২০২২ ২১:৫০507584
  • ধন্যবাদ ।
    ভাগ্যিস আমাকে বন্ড ট্রেডিং করতে দেয় নি!
    অরিজিনেশনে আটকে রেখেছিলো! অন্যথা সিটি  ব্যাংক দেউলে হয়ে যেতো! 
  • যোষিতা | ১৩ মে ২০২২ ২২:০৬507585
  • এটা গোলা হচ্ছে, বড়েস হীরেনবাবুর পাটিগণিত ক্লাস নিচ্ছে।
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ মে ২০২২ ২২:৫৮507587
  • যোষিতা 
    শ্রী স আমার গণিতটা দেখে দিচ্ছেন আমি তার জন্য সাতিশয় কৃতজ্ঞ । আপনি আমার রাশিয়ান উচ্চারণগুলি ভদ্রস্থ  করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ( পূর্ব ইউরোপের ডায়েরিতে অতি দীর্ঘ আমার রাশিয়ান পর্ব আসছে শিগগির ) । আশাকরি কথার খেলাপ করবেন না ! 
     
    দশে মিলি করি কাজ , রয়্যালটি করি ভাগ 
  • যোষিতা | ১৩ মে ২০২২ ২৩:১৪507588
  • রাশিয়ানটা আমি দায়িত্ব নিয়ে দেখে দোবো কথা দিয়েছি তো।
    আপনি জাস্ট লিখে চলুন। :-)
  • guru | 103.2.***.*** | ১৪ মে ২০২২ ০৯:৫০507605
  • হিরেনবাবুকে অনেক ধন্যবাদ অর্থনৈতিক দিকটি তুলে ধরবার জন্য |
     
    ১ | আপনার লেখাটি থেকে একটা জিনিস বোঝাই যায় এখন অ্যাডভান্টেজ রাশিয়া আর পুতিন সাহেব | যেসব ওয়েস্টার্ন ব্যাঙ্ক রাশিয়া কে ধার দিয়েছিলো তাদেরই এখন দায় বেশি টাকা আদায়ের | এখন এই ব্যাপারটি থেকেই যুদ্ধটির একটি মীমাংসা করা যেতে পারে | পুতিন সাহেব শর্ত দিলেন ওয়েস্টার্ন ব্যাঙ্কেরদেরকে যে তোমরা যদি আমার থেকে এখনো আদায় চাও তাহলে নিজেদের আম্রিকি গভর্ণমেন্টকে বোঝাও যাতে ইউক্রেইন্ ভুলে যায় তারা | যদি বাইডেন না মানে তাহলে আম্রিকাতে ট্রাম্পের মতো কাউকে আবার নিয়ে এসো গদীতে যে আমার মতো কারুর কথা শুনবে | এই ব্যাপারটি আমার মনে হয় আস্তে আস্তে ওয়েস্টার্ন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার্সরা  মেনে নেবেন কেননা আদায়ের দায়ের কাছে বাইডেন ও জেলেনস্কি অতি তুচ্ছ| 
    ২ | অতি সাম্প্রতিক ঘটনাবলীও সেই দিকেই নির্দেশ করছে | প্রথমতঃ এখন নিউ ইয়র্ক টাইমস পর্যন্ত বলছে যে রাশিয়া যুদ্ধে আস্তে আস্তে জিততে চলেছে | প্রায় প্রতিদিনই খবর আসছে যে ডোনবাসের একটি একটি করে শহর পুতিন সাহেবের চেচেন বাহিনী দখল করছে | ওদিকে আম্রিকার লাস্ট কোয়ার্টারটিতে নেগেটিভ জিডিপি গ্রোথ ছিল | বর্তমান কোয়ার্টারটিতে নেগেটিভ জিডিপি গ্রোথ হওয়া মানেই রিসেশন যেটির সম্ভবনাই খুব বেশী | এখন রিসেশন মানেই নভেম্বরের মিডটার্ম বাইডেন হারাবে | নভেম্বরের মিডটার্ম বাইডেন হারা মানেই সে এখন লেম ডাক প্রেসিডেন্ট এবং যেহেতু বর্তমানে তার জনসমর্থন পার্সেন্টেজে ৪০ এর নিচে, ধরেই নেওয়া যায় যে সে ট্রাম্প বা এইরকম কারুর কাছে ২০২৪ ইলেকশন হারবে | তার মানে ওভারঅল অ্যাডভান্টেজ রাশিয়া আর পুতিন সাহেব | 
    ৩ | নিজেদের ট্রেড সারপ্লাস ডলার এ আম্রিকার কাছে রাখলে খুবই সমস্যা দেখা যাচ্ছে | বিকল্প কি ?
    ৪ | একটি দেশের এলিট ক্লাস নিজেদের সারপ্লাস ইনকাম আম্রিকা ও ইউরোপে রাখলে তো খুবই সমস্যা দেখছি কেননা দরকারের সময় তাহলে স্যাম চাচার বিরাগভাজন হলে তাদের স্যাম চাচা কানাকড়িও দেবেনা | বিকল্প কি ?
     
     
  • হীরেন সিংহরায় | ১৪ মে ২০২২ ১৩:৪৪507612
  • লন্ডনে কিয়ৎ কাল জাপানি কর্পোরেটের সেবা করবার সময় মিতসুই লন্ডনের ( এ শহরের সবচেয়ে পুরনো জাপানি প্রতিষ্ঠান ) ট্রেজারার হিরাও-সানের কথা মনে করিয়ে দিলেন।  হিরোশিমায় তাঁর পরিবারের অর্ধেক মারা যান। একদিন তিনি বলেছিলেন জাপানের হাতে একটা আণবিক অস্ত্র আছে - আমেরিকান ট্রেজারি বন্ড আজ যদি আমরা সেটা সরিয়ে নিই , তাদের ঘরে বাতি জ্বলবে না । আজ আমেরিকা একটি নেট ডেটর দেশ যার ঋণের পরিমাণ সমস্ত সম্পদের অর্থমূল্যের চেয়ে বেশি অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে এর তুলনা খুঁজে পাচ্ছি না । 
    বিকল্প কি ? প্রথমত সব দেশ যদি আজ ট্রেজারি বন্ড বেচে দেয় , ডলারের বিনিময় মূল্য শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে তাতে কারুর লাভ নেই দ্বিতীয়ত সে টাকা লাগাবেন কোথায় ? ইউরো অনিশ্চিত - গ্রিক আইরিশ ইতালিয়ান বিপর্যয় সেটার প্রমাণ । জাপান সরকার তার আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করেন কিন্তু তাদের বন্ড আপনি কিনতে পাবেন কম। পাউনড বা সুইস ফ্রাংকেটাকা কে রাখবে । বাকি রইল ইউয়ান - দশ বছর আগে ব্যাঙ্কে আমরা খুবই উঠে পড়ে লাগি ইয়ুয়ান ক্লিয়ারিং অ্যাকাউনট খুলতে । আজ অবধি তিন শতাংশের বেশি ইনভয়েস ইউয়ানে লেখা হয় ( ডলারে ৪৪%) । আরেকটা প্রশ্ন স্থিতিশীলতা । লন্ডনে একটা লোন  সাইনিংএ একজন ব্যাঙ্কার  প্রশ্ন করেছিলেন, এই যে সব ইউরো লোণ , এর দলিল সব কেন  ইংলিশ ল অনুযায়ী লেখা হয় ? উকিল নই কোন জুতসই জবাব খুঁজে না পেয়ে বলেছিলাম এই এক হাজার বছর যাবত এদের আইন বদলায় নি তো তাই লোকে হয়তো ভরসা রাখে।  এক উকিলকে পরে জিজ্ঞেস করি - তুমি হলে কি বলতে ? জেফ দাড়ি চুলকে বললে , শক্ত প্রশ্ন । হয়তো ওই ধারাবাহিকতা ( কনটিনুইটি ) বা স্থিতিশীলতা আমেরিকান ডলারকে রিজার্ভ কারেন্সি মনে করা হয় কি ওই একই কারণে ? 
  • হীরেন সিংহরায় | ১৪ মে ২০২২ ১৫:১৬507618
  • দাঁড়ি কমার সদ্ব্যবহার সহ পুনরলিখিত 
     
    লন্ডনে কিয়ৎ কাল জাপানি কর্পোরেটের সেবা করবার সময় মিতসুই লন্ডনের ( এ শহরের সবচেয়ে পুরনো জাপানি প্রতিষ্ঠান ) ট্রেজারার হিরাও-সানের সঙ্গে একটি আলাপ মনে পড়লো ।  হিরোশিমার অ্যাটম বোমায়  তাঁর পরিবারের অর্ধেক মারা যান। একদিন তিনি আমাকে বলেছিলেন জাপানের হাতে একটা আণবিক অস্ত্র আছে - তার নাম আমেরিকান ট্রেজারি বন্ড । আজ যদি আমরা সেটা তুলে  ইয়েনে নিয়ে  তাদের ঘরে বাতি জ্বলবে না । আজ ( ২০২২ ) আমেরিকা একটি নেট ডেটর দেশ যার ঋণের পরিমাণ সমস্ত সম্পদের অর্থমূল্যের চেয়ে বেশি । অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে এর তুলনা খুঁজে পাচ্ছি না । 

    বিকল্প কি ? প্রথমত সব দেশ যদি আজ ইউ এস ট্রেজারি বন্ড বেচে দেয় , ডলারের বিনিময় মূল্য শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে । তাতে কারুর লাভ নেই । দ্বিতীয়ত সে টাকা লাগাবেন কোথায় ? ইউরো অনিশ্চিত - গ্রিক আইরিশ ইতালিয়ান বিপর্যয় সেটার প্রমাণ । জাপান সরকার তার আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করেন । কিন্তু তাদের বন্ড আপনি কিনতে পাবেন কম। পাউনড বা সুইস ফ্রাংকে টাকা কে রাখবে । 
     
    বাকি রইল ইউয়ান - দশ বছর আগে ব্যাঙ্কে আমরা খুবই উঠে পড়ে লাগি ইয়ুয়ান ক্লিয়ারিং অ্যাকাউনট খুলতে । আজ মাত্র তিন শতাংশের বেশি ইনভয়েস ইউয়ানে লেখা হয় ( ডলারে ৪৪%) । আরেকটা প্রশ্ন স্থিতিশীলতা । লন্ডনে একটা লোন  সাইনিংএ একজন ব্যাঙ্কার  প্রশ্ন করেছিলেন, এই যে ইউরো লোন , এর দলিল সব কেন  ইংলিশ ল অনুযায়ী লেখা হয় ? উকিল নই । কোন জুতসই জবাব খুঁজে না পেয়ে বলেছিলাম এই এক হাজার বছর যাবত এদের আইন বদলায় নি তো,  তাই লোকে হয়তো ভরসা রাখে আইনটা হঠাৎ বদলিয়ে যাবে না ।  এক উকিলকে পরে জিজ্ঞেস করি - তুমি হলে কি বলতে ? জেফ দাড়ি চুলকে বললে , শক্ত প্রশ্ন । হয়তো ওই ধারাবাহিকতার  ( কনটিনুইটি ) কারণে !  অর্থ নিবেশের ব্যাপারে  স্থিতিশীলতা খুঁজি আমরা । আমেরিকান ডলারকে রিজার্ভ কারেন্সি মনে করা হয় কি ওই একই কারণে ? 
  • dc | 122.174.***.*** | ১৪ মে ২০২২ ১৫:৩৯507621
  • আমেরিকান ডলারকে রিজার্ভ কারেন্সি মনে করার দুয়েকটা কারন আছে মনে হয়। প্রথম, আমেরিকার অর্থনীতির ফান্ডামেন্টাল স্টেংথ আর মার্কেট সাইজ। যার জন্য ডলার বেশ কয়েক দশক সোনার থেকে ডিপেগড হয়ে যাওয়ার পরেও কেউ ডলারের ওপর রান করার কথা ভাবতে পারেনা। এছাড়া পেট্রোডলারের বেশ বড়ো একটা ভূমিকা ছিল কিছুদিন আগে পর্যন্ত। যদ্দিন আমেরিকা তেলের নেট ইম্পোর্টার ছিল, তদ্দিন সৌদি আরবের সাথে চুক্তি করে রেখেছিল আর মিডল ইস্টে ঘোঁট পাকিয়ে রেখেছিল যাতে আরেকটা অয়েল শক না আসে। তবে লাস্ট কয়েক বছরে শেল অয়েলের আবির্ভাব হওয়ার পর মিডল ইস্টের ইকুয়েশান পাল্টাতে শুরু করেছে। আর স্থিতাবস্থাও আরেকটা কারন, সবাই ডলারে ট্রানসাক্ট করতে অভ্যস্ত, কাজেই অন্য কোন কারেন্সিতে যেতে চায়না। আর সেখানেও আমেরিকার সফট পাওয়ার এর একটা বড়ো রোল আছে, কারন ফিনান্সিয়াল ট্রানসাকশানের বেশীরভাগ হয় ডলারে। 
  • S | 2405:8100:8000:5ca1::2a2:***:*** | ১৪ মে ২০২২ ১৭:০০507625
  • সেকেন্ড ওয়ারের পর যে ওয়ার্ল্ড অর্ডার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটারই একটা অংশ হল ব্রেটন উড্স সিস্টেম। যার ফলে ওয়ার্ল্ড ব্যান্ক, আইএমেফ, আর ডলার রিজার্ভ কারেন্সি হয়েছে। কেউ ডলারকে ফেলে দিতে চাইলেই পারবে না। কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলো এবং অবশ্যই আমেরিকার বন্ধু দেশগুলো এনসিওর করবে যাতে ডলারের ভ্যালু ডেপ্রেশিয়েট না করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এবং সিস্টেমগুলো যতই নিজেদের গ্লোবাল অমুক তমুক বলুক না কেন, এগুলো মূলতঃ ওয়েস্টের, আসলে আমেরিকার, ইন্টারেস্ট কায়েম রাখে।

    হ্যাঁ এইবারে গ্লোবাল সাউথ সত্যিই ভাবছে যে কিকরে এই ওয়েস্টার্ণ সিস্টেমের বাইরে একটা প্যারালাল সিস্টেম তৈরী করা যায়। কিছু উপায় আছেঃ গোল্ড, বার্টার, অন্য কারেন্সি, এমনকি হয়তো ভবিষ্যতে ক্রিপ্টো ব্যবহৃত হবে। ইতিমধ্যেই ব্রিক্স ব্যান্কের এক্সপ্যান্ডেড রোলের কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হল ওয়েস্টার্ণ নেশনগুলোর হাতে যে পরিমাণে ক্যাপিটাল রয়েছে, তার সাথে কম্পিট করা এইমূহুর্তে প্রায় অসম্ভব। তাছাড়া পস্চিমের মার্কেটও কেউ ছাড়তে চাইবে না। আর সেসব দেশকে কেউ চটাতেও চায় না। ফলে পরিবর্তন হয়তো আসবে, কিন্তু আপাতত সেটা খুবই স্লো হবে।
  • dc | 122.174.***.*** | ১৪ মে ২০২২ ১৭:১৯507626
  • ওয়েস্ট এর হাতে যে ন্যারেটিভি বিল্ডিং ক্ষমতা আছে সেটা এখনও অবধি অন্য কোন ব্লকের নেই। 
  • guru | 103.2.***.*** | ১৪ মে ২০২২ ১৯:১২507630
  • মানুষকে তো এগিয়ে চলবার জন্য কিছু না কিছু ভাবতেই হবে | দেখুন ডলার এর আগে পাউন্ড ছিলো গ্লোবাল কারেন্সী এখন তো তা নেই |
     
    প্রথমতঃ ডলার হেজেমনি এর কারণেই আম্রিকা বিশ্বের সমস্ত সংবেদনশীল জায়গাতে মাথা গলাতে সাহস পায় যার জন্য আফঘানিস্তাম ইরাক সিরিয়া ইউক্রেইন্ জাতীয় যুদ্ধগুলি হয়ে থাকে | 
     
    দ্বিতীয়তঃ যে আম্রিকার মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ন্যারাটিভ কমপ্লেক্স নামক চক্রটি এই যুদ্ধগুলি ঘটাতে থাকে যাতে এদের পেট আরো মোটা হতে থাকে এবং সারা পৃথিবীর বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো যেমন কোবিদ বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এই গুলোতে অবহেলিত হতে থাকে |
     
    ডলার হেজেমনি এর মধ্যেও আম্রিকার ভূরাজনীতিকে প্রভাবিত করার উপায় আছে | পুতিন সাহেব ইউক্রেইন্ এ এটাই করতে চান | যে ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছিলো তাদের উপরই দায়িত্ব বাইডেন এর মতো একটা অযোগ্য লোককে লাথ মেরে গদি থেকে হটানো যাতে যুদ্ধটা বন্ধ হয় নাহলে তারা রাশিয়া থেকে একটা কানাকড়িও পাবেনা | আমি আগেও বলেছি যে খুব সম্ভবত আম্রিকি ব্যাংকের্স এই দিকেই যাবে |
     
    সবচেয়ে বড়ো কথা হলো যে বর্তমান যুদ্ধ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে আম্রিকি হুকুমত ডলার হেজেমনি এর জোরে বেআইনি ভাবে কোনো দেশের টাকা মেরে দিতে পারে | এটা কোনো আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জাতি মেনে নিতে পারবেনা রাশিয়ার মতো একটি ঐতিহাসিক সভ্যতা তো নয়ই | আম্রিকি সিস্টেমের উচিত ছিলো রাশিয়ার কথা শুনে বাইডেন বুড়োটাকে হটানো যাতে যুদ্ধটা এতদিনে বন্ধ হয়ে যেত |
     
     ন্যারেটিভি বিল্ডিং ক্ষমতা আছে কিন্তু ততক্ষন যতক্ষণ বিশ্বের বেশির ভাগ লোক এটা বিশ্বাস করে | এখন বিশ্বের অন্যান্য বড়ো দেশগুলোও খুব একটা পিছিয়ে নেই | আল জাজেইরা , প্রেসটিভি , RT,CGTN এই গুলিও ন্যারেটিভি বিল্ডিং ক্ষমতা ধরে | ইউক্রেইন্ এর এই যুদ্ধে আমাদের এই ফোরামটি ছাড়া কোলকাতাতে আমি আর কাউকেই শুনিনি যে বিবিসি , CNN এর এই যুদ্ধের বর্তমান ন্যারাটিভ বিশ্বাস করে | সত্যি কথা বলতে কি , পশ্চিমের বাইরে আর কোন দেশ উক্রাইনের ব্যাপারে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ? চীন ভারত পাকিস্তান দক্ষিণ আমেরিকা  আফ্রিকা ASEAN মুসলিম বিশ্ব কেউ এখন ইউক্রেইন্ যুদ্ধ নিয়ে আম্রিকি ন্যারাটিভ বিশ্বাস করেনা | এই দেশগুলোর মোট জনসংখ্যা সমগ্র বিশ্বের প্রায় ৬০-৭০ ভাগ এবং এখন কেউই আর আফগানিস্তান আর ইরাক যুদ্ধের পরে বর্তমান ইউক্রেইন্ যুদ্ধের আম্রিকি আর পশ্চিমি ন্যারাটিভ বিশ্বাস করেনা | UAE বা সৌদি র রাজারা তো বাইডেন এর ফোন তোলেনি যুদ্ধের সময়ে |
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত প্রতিক্রিয়া দিন