এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  উপন্যাস  শনিবারবেলা

  • অন্য দেশের পাখি - ২৭,২৮

    শেখরনাথ মুখোপাধ্যায়
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৩৩৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ছবি: রমিত
    ২৭


    কামিলার কাছে গিয়ে বলে ফল্গু, আমাকে একটা নম্বর দিয়েছিলেন শ্যাভেজ, বলেছিলেন কোন প্রয়োজন হলেই ওই নম্বরটায় যেন যোগাযোগ করি। প্রয়োজন খুবই আছে, কিন্তু নিজের সেফটির জন্যে নয়, এবার আমার পুলিশকে লাগবে, কাজ গুটিয়ে আনতে হবে, অপরাধীকে অ্যারেস্ট করতে হবে।

    অ্যালেক্স তো এখানেই আছে, কোথায় যেন বেরোল, খবর পাঠাব? – জিজ্ঞেস করে কামিলা।

    হ্যাঁ, চলে আসতে বলুন। ওঁকে পার্সোনালি দরকার হবে।

    বেরিয়ে যাবার আগে নূরের কাছ থেকে নেওয়া ব্যাগটা ও দেয় কামিলাকে, এটা যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি টেস্ট করানো চাই।

    উল্কি আর মুড়কিকে নিয়ে বেরিয়ে যায় ফল্গু। যাবার আগে বলে যায় কামিলাকে, টেলিফোনে সব সময় পাওয়া যাবে আমাকে।

    ওখান থেকে বেরিয়ে প্রথম ফোন করে ফল্গু চন্দ্রশেখরকে। বলে, আমার মনে হচ্ছে, অপরাধীকে অ্যারেস্ট করাতে পারব আজকালের মধ্যে। কিন্তু তার আগে একটা ব্যাপারে আপনার সাহায্য চাই। নূর-উদ্দিনের পুরো ঘটনাটা ও বলে চন্দ্রশেখরকে, এই ছেলেটাকেও অ্যারেস্ট করবে পুলিশ, করতেই হবে পুলিশকে, কিন্তু ওকে বাঁচাতেই হবে। আপনি বলছিলেন পেরুতেও খুব হাই-লেভেলে ইনফ্লুয়েন্স আছে আপনার।

    চন্দ্রশেখর বললেন, দু ঘন্টার মধ্যে ফোন করছি তোমাকে।

    এর পরের ফোন ফিনিগানকে, কতক্ষণে আসতে পারবেন?

    কোথায় যেতে হবে? কতক্ষণে যাওয়া দরকার?

    তাম্বোপাতা ট্র্যাভ্‌লার্স-ইন, আধ ঘন্টার মধ্যে।

    হেঁটে হেঁটে ওরা ট্র্যাভ্‌লার্স-ইন পৌঁছতে পৌঁছতে ফিনিগান আর রায়া হাজির। নূরের ঘটনাটা ওদের বলে ফল্গু। ফিনিগানকে বলে, আজ বিকেল চারটের সময় বাটারফ্লাই পার্কের গেট থেকে দশ মিনিট এয়ারপোর্টের দিকে হেঁটে নূরের সঙ্গে আমার দেখা হবে, আপনারা আসবেন সেখানে। চেষ্টা করব পুলিশকে দিয়ে কাল রেইড করাতে, আপনাদের থাকতে হবে। আজ সারাদিন তৈরি থাকবেন, প্রয়োজন হলেই ফোনে যোগাযোগ করব। আর একটা কথা, একটা এক্সট্রা ফোন চাই, নূরকে দিয়ে আসতে হবে। কিছুক্ষণ পরেই ওদের অবাক করে দিয়ে আসে অ্যালবার্ট পেরীরার ফোন। বলেন, একটা অফিশিয়াল কাজে কালই আসছি পেরুতে, গিয়ে তোমাদের ফোন করব। কোথায় থাকব, কীভাবে দেখা হবে সব জানাব তখন। ফল্গু বোঝে, চন্দ্রশেখর কথা বলেছেন পেরীরার সঙ্গে। এটাই ওঁর স্টাইল।

    ট্র্যাভ্‌লার্স-ইনের কাছেই একটা ছোট রেস্টোর‍্যান্টে লাঞ্চের জন্যে গিয়েছিল ওরা। খাওয়ার মাঝেই ফোন এল শ্যাভেজের, পাঁচটায় ফিরব অফিসে। একাই, চলবে তো?

    একা নয়, এবার চাই পুলিশ চীফ অথবা তাঁর প্রতিনিধিকে, ঠিক পাঁচটাতেই আসছি, বলে ফল্গু।

    খাওয়াদাওয়ার পর এধার-ওধার একটু-আধটু ঘোরাঘুরি করে চারটের সময় ওরা তিনজন পৌঁছোয় বাটারফ্লাই পার্কের কাছে, নির্দিষ্ট জায়গায়। নূর দাঁড়িয়ে আছে। একটু পর হাজির হলো ফিনিগান আর রায়াও। নূরকে জিজ্ঞেস করে ফল্গু, কী, কী ভাবলে?

    ভাববার তো আর কিছু নেই দিদি, আপনি যা বলবেন তা-ই করব এখন।

    তোমার সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা হবার পর তিনটে অল্টারনেটিভ থাকবে তোমার। এক নম্বর, যা যা বলেছি কাল থেকে, সব ভুলে যাওয়া। দু নম্বর, না ভুলে চিত্রগুপ্ত্‌কে সব কথা বলে দেওয়া, তারপর যা বলবে চিত্রগুপ্ত্‌ সে ভাবে কাজ করা। তিন নম্বর, আমরা এখন থেকে যা যা বলব সেগুলো ঠিক ঠিক করা। কী করবে তুমি?

    আপনি তো জানেন দিদি, আপনি যেটা বলবেন ঠিক সেটাই আমি করব।

    হয়তো জানি, বলে ফল্গু, কিন্তু প্রথম দুটো যদি কর – করতেই পার – তাহলে এই আদ্রিয়ানোর জীবনটাই তুমি বেছে নিলে। এখনকার পরের আদ্রিয়ানোর জীবন অবিশ্যি আর-একটু কঠিন হবে, কারণ তুমি যে সিদ্ধান্তই নাও-না-কেন, চিত্রগুপ্তর শাস্তি হবেই। আর আমাদেরও কোন ক্ষতি হবে না।

    কাঁদ-কাঁদ মুখ হয়ে যায় নূরের, আমাকে বিশ্বাস করুন দিদি, আমাকে একটা চান্স দিন।

    সকাল বেলার রুটিন কী চিত্রগুপ্ত্‌ বর্মার?

    ভোরবেলা উঠে পড়াশোনা করেন, তারপর মর্ণিং ওয়াক। ফিরে আসেন ঠিক আটটায়। এসে আবার একটু কাজ করেন, তারপর সাড়ে আটটা-ন'টা নাগাদ হাতমুখ ধুয়ে ব্রেকফাস্ট। তারপর যেদিন যেরকম কাজ।

    তোমাকে একটা ফোন দিয়ে যাব, মোবাইল ফোন। কীভাবে ব্যবহার করতে হয় জান?

    করিনি কখনও।

    ফিনিগান পকেট থেকে বের করে একটা ফোন, শিখিয়ে দেয় ব্যবহার। পাঁচ মিনিটেই সড়গড় নূরের, তারপর ফল্গুর নম্বরটা ফিনিগান নিজেই সেভ করে দেয়।

    ঠিক আছে, আজ রাতে উনি, মানে চিত্রগুপ্ত্‌ সাহেব, ফিরে এলে আমাকে একটা ফোন করবে। কাল সকালে উনি মর্ণিং ওয়াকে বেরিয়ে গেলে আবার একটা ফোন। না যদি বেরোন কোন কারণে, আমাকে জানাবে। তারপর কী করতে হবে আমি বলে দেব।

    একটা ট্যাক্সি ডেকে সোজা ওরা পৌঁছোয় ট্যুরিস্ট ইনফর্মেশন সেন্টারে। সেখানে কামিলা আর শ্যাভেজের সঙ্গে বসে আছেন স্বাস্থ্যবান মাঝবয়েসী এক ভদ্রলোক। পরিচয় করিয়ে দেবার জন্যে অপেক্ষা না করে বলেন তিনি, ওয়েলকাম মিজ ফল্গু, প্লীজ সিট ডাউন। কনগ্র্যাচুলেশনস, যেভাবে আপনি – মুড়কিকে দেখিয়ে বলেন ভদ্রলোক – এই বাচ্চা মেয়েটাকে উদ্ধার করেছেন ফ্রম ক্যাপটিভিটি, তাতে আমরা সবাই আপনার ফ্যান হয়ে গেছি এখন। আই হ্যাপ্‌ন্‌ টু বি দ্য পুলিস চীফ হিয়ার, বলুন কী করতে পারি।

    ফল্গু বলে, কাল দুটো রেইড করাতে চাই, আমার তদন্তে যাদের আসল আসামী বলে বুঝেছি, তাদের সবাইকেই ধরব। খুব একটা অসুবিধে হবে বলে মনে হয়না, আমার অ্যাসেসমেন্টে স্মূদই হবে অপারেশন। তবে এখনই যদি ডিটেইল না জিজ্ঞাসা করেন বাধিত হব। আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন, আর আমাকে যদি প্রি-অ্যারেস্ট ব্যাখ্যা দিতে হয়, তাহলে দেরি হয়ে যাবে, যে সুযোগটা এসেছে সেটাকে নষ্ট করতে চাইনা।

    বুঝলাম বেঙ্গল টাইগ্রেস, টাইগ্রেস-সাইজ্‌ড্‌ ইগো! কিন্তু আপনার ওপর আমার ভরসা আছে। কী কী করতে হবে বলুন।

    দু' জায়গায় রেইড হবে, বলে ফল্গু, ইন্টারন্যাশনাল বাটারফ্লাই পার্ক আর একটা লণ্ড্রোম্যাট। বাটারফ্লাই পার্কের ক্যাচই হচ্ছে মেইন কালপ্রিট, তাছাড়া তিনজন সহযোগী। তিনজনের মধ্যে একজন জুভেনাইল, একজন ফিমেল। এখানে আমার চাই অন্তত তিরিশজনের ফোর্স, উইদ টূ সীনিয়র অ্যাণ্ড ওয়ান ভেরি সীনিয়র অফিসার। কিন্তু য়্যুনিফর্ম পরবে না কেউ, সবাই ইন প্লেইন ক্লোদ্‌স্‌ অ্যাণ্ড আই-ডি। সঙ্গে থাকব আমি আর মুড়কি।

    সেকেণ্ড সাইট, ফল্গু বলে, লণ্ড্রোম্যাট। রাস্তার নাম জানিনা, যে রাস্তায় তাম্বোপাতা ট্র্যাভ্‌লার্স-ইন, সেই রাস্তাতেই। ট্র্যাভ্‌লার্স-ইন কে বাঁদিকে রেখে মিনিট দশেক হাঁটলে বাঁয়ে পড়বে লণ্ড্রোম্যাটটা। আমার কাছে খবর আছে লণ্ড্রোম্যাটটা এখন অফিশিয়ালি বন্ধ, কিন্তু পাশে একটা ছোট দরজা আছে, সেটা দিয়ে ঢোকা যাবে। দুজন পুলিসম্যান আর একজন সীনিয়র হলেই যথেষ্ট, ইন য়্যুনিফর্ম। অ্যারেস্টী একজন মহিলা, নিজেকে ম্যানেজার বলে পরিচয় দেন। সব কটা ওয়াশিং মেশিন থরোলি সার্চ করতে হবে, তাছাড়া পুরো প্রেমিসেজ। সীজার লিস্টে মহিলার সিগনেচার স্পটেই নিতে হবে। আমাদের দিক থেকে থাকবেন এই দুজন – ফল্গু পরিচয় করিয়ে দেয় – রায়া আর ফিনিগান, তাছাড়া এই উল্কি।

    জাস্ট ইগো নয় স্যর, ফল্গু বলতে থাকে, আপনাকে যে ব্যাখ্যা দিতে রাজি হলাম না এখনই, তার কারণ আছে। আমার মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট উইটনেস এবং মেজর সোর্স অব ইনফর্মেশনের লাইফ রিস্ক আছে। কিছু হয়ে গেলে মুশকিলে পড়ে যাব, কেস দাঁড় করাতে অসুবিধে হবে। ছেলেটি মাইনর, এবং তাকেও কাল অ্যারেস্ট করা হবে। সেগুলো আমি কাল ডিসকাস করব, আফটার দ্য অ্যারেস্ট। সকাল সাতটায় বাটারফ্লাই পার্কের দু'কিলোমিটার আগে আমি থাকব। আপনার ফোর্সকে আমার কাছে ওই সময় রিপোর্ট করতে বলবেন। লণ্ড্রোম্যাটে রিপোর্টিং আটটায়। উল্কি রায়া আর ফিনিগান পৌঁছে যাবে।

    আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি স্যর, ফল্গু বলে। সবাইকে অ্যারেস্ট করে প্রথমে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে?

    সিটি পুলিস হেডকোয়ার্টার, বলেন পুলিস চীফ।

    তাহলে কাল ওখানেই দেখা হবে, মোটামুটি সাড়ে ন'টায়। গূড নাইট স্যর।

    গূড নাইট মানে? – প্রায় গর্জন করে ওঠেন শ্যাভেজ, পুলিস চীফের সঙ্গেই শুধু কাজ, আমরা কেউ নই?

    পুলিস চীফকে যে কাজ দিয়েছি সেটার ব্যবস্থা করতে ওঁর মাঝ-রাত্তির হয়ে যাবে, বলে ফল্গু। তাই ওঁকে গূড নাইট করে দিলাম, আপনাদের করিনি তো। তারপর কামিলাকে বলে, যে ব্যাগটা দিয়েছিলাম সেটা আর রিপোর্টটা কাল কলেক্ট করব।


    ২৮


    যেমন কথা ছিল, চিত্রগুপ্ত্‌ সকালে বেরিয়ে যাবার পর ফোন এল নূরের কাছ থেকে। চিত্রগুপ্তের রুটিন ঠিক আছে, সে বেরিয়ে গেছে মর্ণিং ওয়কে।

    সিটি চীফ অব পুলিস, তাঁর দুই ডেপুটী এবং তিরিশজনের একটা ফোর্স কথা মত য়্যুনিফর্ম ছাড়া সকাল সাতটায় হাজির নির্দিষ্ট জায়গায়। দুই ডেপুটী চীফের তত্ত্বাবধানে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হলো বাটারফ্লাই পার্কটাকে বাইরে থেকে ঘিরে রাখতে। ঠিক আটটায় – যখন পার্ক খোলার কথা – মুড়কি ফল্গু আর সিটি চীফ পার্কে ঢোকার টিকিট কাউন্টার থেকে তিনখানা টিকিট কিনে ঢুকে পড়ল পার্কের মধ্যে। সময় নষ্ট না করে তারা সোজা পৌঁছোলো স্যুভেনির-কাম-স্ন্যাক বার-এ।

    দিয়েগো নামের যে লোকটাকে ওরা প্রথমে স্ন্যাক-বারের মালিক মনে করেছিল, একটা ট্রে থেকে নানারকমের প্রাতরাশের খাবার সে সাজাচ্ছিল টেবিলের ওপর – কচৌরি, কাবলি ছোলার ঘুগনী, একটা গ্লাসে সাদা কোন পানীয়, দেখে মনে হয় দইয়ের ঘোল হবে, এবং একটা বাটিতে রাবড়ির মতো দেখতে ঘন সাদা থকথকে কিছু। পাশে দাঁড়িয়ে চিত্রগুপ্ত্‌, প্যান্ট আর ঢোলা শার্ট গোছের কিছু পরা, বসতে যাচ্ছে চেয়ারে।

    প্রথমে ফল্গু, তার পেছনে মুড়কি, আর সব শেষে সিটি চীফ। ফল্গুকে হঠাৎ দেখেই প্যান্টের পকেট থেকে একটা রিভলভার বের করে তাক করে চিত্রগুপ্ত্‌। চেঁচিয়ে বলে, আর এক পা এগোলেই এই মেয়ে-টিকিটিকির লাশ লুটিয়ে পড়বে এখানে।

    যে সব চার্জ আপনার বিরুদ্ধে আছে, তার সঙ্গে আর একটা ঠাণ্ডা মাথায় খুনের চার্জ যোগ হওয়া ছাড়া কোন লাভ হবে না মিস্টার চিত্রগুপ্ত্‌ বর্মা, বলে ওঠেন সিটি-চীফ, নিজে বা অন্য কারো পালাবার চেষ্টা করে লাভ নেই। আপনার পুরো বাটারফ্লাই পার্ক এখন বাইরে থেকে পুলিশ ঘিরে রেখেছে।

    একটা কথারও উত্তর দেয় না চিত্রগুপ্ত্‌, ঠিক একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে, একই ভঙ্গীতে রিভলভারটা তাক করা ফল্গুর দিকে।

    রিভলভারটা ফেলে দিন, উচ্চ কণ্ঠে নির্দেশ দেন সিটি চীফ, এবং ঠিক সেই মুহূর্তেই আঁ-আঁ-আঁ করে একটা তীব্র আর্তনাদ; রিভলভারটা চিত্রগুপ্তের হাত থেকে পড়ে যায় মাটিতে। দৌড়ে গিয়ে পায়ের তলায় রিভলভারটাকে চেপে ধরে ফল্গু, আর দড়াম করে চিৎ হয়ে পড়ে যায়, চিত্রগুপ্ত্‌। একটা কাকাতুয়া তখনো কামড়ে ধরে আছে তার নাকটা, আর অঝোরে রক্ত ঝরছে সেখান থেকে।

    সবায়ের চোখ এখন গিয়ে পড়ে বেসমেন্টের সিঁড়ির সবচেয়ে ওপরের ধাপে, সেখানে দাঁড়িয়ে আছে নূর-উদ্দিন, তার হাতে একটা চামড়ার ব্যাগ, মনে হয় সেখান থেকেই উড়ে এসেছিল কাকাতুয়াটা। ফল্গুর দিকে তাকিয়ে সে বলে, বেশি কোকেইনে রাগী আর পাগল হয়ে যাওয়া কাকাতুয়া।

    হাতকড়া পরানো হয় চিত্রগুপ্ত্‌ আর দিয়েগোকে। হুইস্‌ল্‌ বাজান সিটি চীফ, ততক্ষণে মুড়কি আর ফল্গু ব্যাণ্ডেজ বেঁধে ফেলে চিত্রগুপ্তের নাকে, বেসমেন্ট থেকে একটা ইঞ্জেকশনের ভায়াল আর সিরিঞ্জ নিয়ে আসে নূর, অভ্যস্ত হাতে একটা ইঞ্জেকশনও দেয় চিত্রগুপ্ত্‌কে।

    আগে থেকে করে রাখা ব্যবস্থা অনুযায়ী ক্যাশ-কাউন্টারের দুদিকে দুই অস্ত্রধারী পুলিশ পাহারা দেয় কাউন্টারের মেয়েটাকে, আর পাঁচজন দৌড়িয়ে চলে আসে স্ন্যাক-বারে। বেসমেন্টের ঘর থেকে নিয়ে যাবার মতো যা যা পাওয়া যায় – মরা জ্যান্ত এবং নেশায় বুঁদ কয়েকটা কাকাতুয়া এবং কক অব দ্য রক, কয়েক প্যাকেট কোকেইন, দুটো রিভলভার, কার্তুজ, বড় ছোরা দুখানা, নানা সাইজের ট্যুইজার ড্রিল এবং আরও কয়েকটা যন্ত্রপাতি – পুলিশের লোকরা সংগ্রহ করে এবং সীজার লিস্টে সই করানো হয় চিত্রগুপ্ত্‌ দিয়েগো এবং ক্যাশ-কাউন্টারের মেয়েটিকে দিয়ে, যার নাম লুসিয়ানা।

    পুলিস-ভ্যান আসে, তাতে এক-এক করে চিত্রগুপ্ত্‌ দিয়েগো আর লুসিয়ানাকে ওঠানো হয়। ওঠানো হয় নূর-উদ্দিনকেও। স্যুভেনির-কাম-স্ন্যাক বারে আর বাটারফ্লাই পার্কের গেট-এ তালা দিয়ে সীল করে দেন সিটি চীফ। তাঁর জীপে ওঠেন তিনি, দুই সীনিয়র অফিসার, মুড়কি আর ফল্গু। তাদের গন্তব্য সিটি পুলিস হেডকোয়ার্টার।

    ওরা যখন পৌঁছোয় হেডকোয়ার্টারে, ততক্ষণে রেইড সেরে লণ্ড্রোম্যাট থেকে ফিরে এসেছে ফোর্স, সঙ্গে উল্কি ফিনিগান আর রায়া। যত সহজে লণ্ড্রোম্যাটের কাজটা হয়ে যাবে ভেবেছিল ফল্গু, হয়নি তত সহজে। পুলিশের লোকদের আর ফিনিগান-রায়াকে নিয়ে যখন পৌঁছোলো উল্কি, দেখল একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে লণ্ড্রোম্যাটটার সামনে। কার গাড়ি, কেন গাড়ি, বোঝা যাচ্ছে না কিছুই। উল্কি বলল, এই গাড়িটাকে ছেড়ে এখনই আমরা ঢুকব না ভেতরে। আধ ঘন্টা অন্তত অপেক্ষা করা যাক। মিনিট দশেক পর লণ্ড্রোম্যাটের পাশের ছোট দরজাটা খুলে যায়, বেশ বড়োসড়ো একটা চামড়ার ব্যাগ ধরাধরি করে ম্যানেজার-মহিলা এবং ওদের অপরিচিত একজন বেরিয়ে আসে। ওদের যেন দেখতেই পায়নি এমন ভঙ্গিতে দুজনে মিলে ব্যাগটা তুলে দেয় গাড়িটার বূটে।

    ঠিক ব্যাগটা তোলা হয়েছে যে মুহূর্তে তখনই এসে লোকটার হাত চেপে ধরে সীনিয়র পুলিস অফিসার: চাবিটা দাও।

    কেন?

    সে প্রশ্নের জবাব পুলিস স্টেশনে গিয়ে দেব, এখন তোমাদের দুজনকেই নার্কো অ্যাক্টে অ্যারেস্ট করা হচ্ছে।

    নার্কো অ্যাক্ট কেন? – জিজ্ঞেস করেন মহিলাটি।

    সব প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া যাবে পুলিস স্টেশনে। গাড়িটা কার?

    ড্রাইভার বলে, গাড়ি যার তাকে চিনি না। আমি প্রফেশনাল ড্রাইভার, আমাকে গাড়িটা চালাবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আজকের মতো।

    গূড। ড্রাইভিং লাইসেন্স?

    লোকটা হিপ-পকেট থেকে ওয়ালেট বের করে, সেখান থেকে লাইসেন্সটা বের করে পুলিস অফিসারের হাতে দেয়।

    এবার আমরা সবাই মিলে ভেতরে যাব, বলে পুলিস অফিসার, চাবির রিংটা দেখি।

    ড্রাইভারকে দেখে মনে হয় সে বুঝেছে হম্বিতম্বি করে লাভ নেই, সে নিঃশব্দে দিয়ে দেয় চাবির গোছা। পুলিসের অপরজনকে গাড়িটার সামনে দাঁড়াবার নির্দেশ দিয়ে মহিলাকে এবং ড্রাইভারকে অফিসার বলে, ভেতরে চলুন।

    রুখে দাঁড়ান মহিলা, আমার ডাক্তারের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে, আমি অসুস্থ, ভেতরে যাবার সময় নেই।

    সময় যদি সত্যি সত্যিই না থাকে তাহলে সময় নষ্ট করবেন না। মেডিকাল হেল্প পুলিস স্টেশনে থাকবে।

    গাড়িটা দেখার কথা পুলিসের যে লোকটাকে বলা হয়েছিল সে ছাড়া সবাই ঢুকে যায় লণ্ড্রোম্যাটের ভেতরে, কিছুক্ষণ পর ফিরে আসে সবাই। তিনখানা ওয়াশিং মেশিন ভর্তি ট্যাক্সিডার্মি করা পেট-কাটা কাকাতুয়া আর দুখানা ওয়াশিং মেশিন ভর্তি চামড়ার মুখোশ সীল করে এসেছে পুলিশ। এ ছাড়া আরও নানা যন্ত্রপাতি, পাঁচখানা ধনুক আটখানা তীর এবং তিন প্যাকেট কোকেইন। জীবন্ত, কথা-কওয়া একটা কাকাতুয়া আর যারা ভেতরে গিয়েছিল তাদের সবাইকে নিয়ে বেরোল পুলিশ। সীলও করা হল লণ্ড্রোম্যাট সহ পুরো বাড়িটাকে ।

    পুলিস স্টেশনে আসবার পর প্রাথমিক পরীক্ষায় বোঝা গেল, বূটের ব্যাগটায় আছে মিহি করে গুঁড়ো করা কোন গাছের পাতা। ভাবা ছিল গাড়িটা চন্দ্রগুপ্তরই হবে, কিন্তু কাগজপত্র পরীক্ষা করে যে নামটা পাওয়া গেল সেটা চন্দ্রগুপ্তর নয়।

    নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ যখন কাগজপত্র তৈরি করতে ব্যস্ত সেই সময় টেলিফোন আসে অ্যালবার্ট পেরীরার কাছ থেকে। তিনি পুয়ের্তো ম্যালডোনাডোর এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেছেন, জিজ্ঞেস করলেন কোথায় এলে ফল্গুর সঙ্গে দেখা হবে। সিটি পুলিস হেডকোয়ার্টার মাত্র চার-পাঁচ কিলোমিটারের রাস্তা শুনে বললেন, আধ ঘন্টার মধ্যেই আসছি। ফল্গুকে তিনি বললেন, এখানকার পুলিশের সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেবার সময় ফল্গু যেন জানায় যে তিনি এসেছেন এখানকার ন্যাশনাল জিওলজিকাল লেবরেটরির একটা মীটিঙে, এবং নূর নামের যে নাবালক ছেলেটিকে পুলিশ সম্ভবত অ্যারেস্ট করবে তার বিষয়ে কথা বলার জন্যে। পেরীরা এসে পৌঁছোলেন ঠিক পঁচিশ মিনিট পর। ততক্ষণে হেডকোয়ার্টারে এসে পৌঁছেছেন পুলিস চীফও। সিটি পুলিস চীফের অফিসে বসার ব্যবস্থা হলো ফল্গু-উল্কি-মুড়কির, সঙ্গে অ্যালবার্ট পেরীরা আর রায়া-ফিনিগান এবং অবশ্যই পুলিস চীফ আর সিটি পুলিস চীফের।

    প্রাথমিক পরিচয় পর্বের পর পুলিস চীফকে লক্ষ্য করে ফল্গু বললো, আজ যে দুটো জায়গায় রেইড হলো, সেই জায়গা দুটো থেকে নানা জিনিস উদ্ধার করে আনা হয়েছে। সেগুলোই প্রমাণ করবে যে পুরুষ কক-অব-দ্য-রক চুরির প্রধান পাণ্ডা চিত্রগুপ্ত্‌ বর্মা। পরীক্ষা করলেই তার মোডাস অপারেণ্ডি বোঝা যাবে। লেকিং সাইটের কোলাহল থেকে এক ঝাঁক পাখিকে ধরে তাদের কোকেইন-মাখানো চামড়ার ব্যাগে ভরে বেহুঁশ অবস্থায় নিঃশব্দে নিয়ে আসা হতো। পেরুর আইনের সুযোগ নিয়ে বহু অস্ট্রেলিয়ান কাকাতুয়া গত এক বছরে আমদানি করা হয়েছে। এগুলো আসতো ওবেলিস্কোর মিউজিয়ামে। এই কাকাতুয়াকে পেট কেটে মেরে ফেলে ট্যাক্সিডার্মি করা হতো। উদ্দেশ্য ছিল কাকাতুয়ার পেটের মধ্যে বেহুঁশ কক-অব-দ্য-রককে ভরে দেশের বাইরে চালান করা। এই উদ্দেশ্য খুব যে সফল হয়েছে তা নয়, কারণ কোকেইন প্রয়োগে যে পাখিদের বেহুঁশ করা হয়েছে অনেক চেষ্টাতেও তাদের হুঁশ ফেরানো যায়নি। কাকাতুয়া এবং কক-অব-দ্য-রকের ওজন এবং আয়তন প্রায় একই রকমের। আমদানি করা কাকাতুয়া প্রধানত ব্যবহৃত হয়েছে কোকেইনের ডোজ নির্ধারণের পরীক্ষায়। এই কাজ মূলত করতো চিত্রগুপ্ত্‌ নিজে, এবং তার সহকারী ছিল কলকাতা থেকে বেআইনী পথে নিয়ে আসা এক অনাথ বালক। জুভেনাইল এই বন্দীই এই মামলার মূল সাক্ষী হবে। চিত্রগুপ্তর প্রধান সহযোগী লণ্ড্রোম্যাট থেকে অ্যারেস্ট হওয়া মহিলা, লণ্ড্রোম্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে যে বিপুল পরিমাণ ট্যাক্সিডার্মি-করা কাকাতুয়া এবং চামড়ার মুখোশ, এবং মহিলার হেপাজত থেকে পাওয়া গেছে সম্ভবত কোকা পাউডারের যে ব্যাগ, তার থেকেই মহিলার ভূমিকা অনেকটা বোঝা যাবে। ফল্গু বলতে থাকে, আমাদের পেরু ভ্রমণের দ্বিতীয় দিনে আমরা যখন ইন্টারন্যাশনাল বাটারফ্লাই পার্কে বেড়াতে যাই, চিত্রগুপ্ত্‌ তখনই সন্দেহ করে, আমরা শুধুই বেড়াবার জন্যে পেরুতে আসিনি, আমাদের অন্য উদ্দেশ্যও আছে। পার্ক থেকে আমরা বেরিয়ে আসার পরেই চিত্রগুপ্ত্‌ আমাদের পিছু নেয়, সেই রাতেই আমরা অ্যামাজন প্রজেক্টে কক-অব-দ্য-রক দেখতে যাচ্ছি এমন সন্দেহে। যে নদী পেরিয়ে আমরা প্রজেক্টে যাব, সময় নষ্ট না করে সেই নদীতে জলের তলায় নোঙর-করা ওর নিজের দলের নার্কোসাবের লোকজনকে চোদ্দ বছরের কিশোরী আমার সহযোগী মুড়কিকে অপহরণ করার নির্দেশ দেয় সে। অপহরণ করে তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে তারও ব্যবস্থা সে করে। নদীর তীরে অপেক্ষারত মাৎসিগোঙ্কা জনজাতির একজন মানুষ ষড়যন্ত্রটা বুঝতে পেরে নার্কোসাবের লোকদের নৌকোয় তাদের সহযোগী হয়, অপহৃত মুড়কিকে অনুসরণ করে শেষ পর্যন্ত তার সঙ্গে যোগাযোগও করে। তার খবর আমাদের কাছে দিতে আসার সময় তাকে তীরের সাহায্যে খুন করা হয়। নিহত এই মাৎসিগোঙ্কা মানুষটির নাম পুন্টু। তার খুনের ব্যাপারে তদন্ত করছে এখানকার পুলিশ, কিন্তু এটি এই মহিলারই কীর্তি হওয়া সম্ভব। তাঁর কাছ থেকে যা যা পাওয়া গেছে তার মধ্যে এক গুচ্ছ তীর এবং ধনুক এই সন্দেহ বাড়িয়ে দেয়।

    এই পর্যন্ত বলার পর ফল্গু বলে, আজ সকালে যে রেইড হয়েছে সে ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত মৌখিক রিপোর্ট আপনাকে দিলাম। আজ বিকেল চারটে থেকে পাঁচটার মধ্যে একটা বিশদ লিখিত রিপোর্ট – প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত পেরুতে আমাদের যাবতীয় কাজের খুঁটিনাটি – এই অফিসে আমি পৌঁছিয়ে দিয়ে যাব। রিপোর্টটা আজ রাতের মধ্যে পড়ে শেষ করার জন্যে আমি আপনাকে অনুরোধ করছি। আগামী কাল বেলা বারটায় আমরা আবার আসব, এবং আপনার যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দেব। প্রফেসর পেরীরা এখানে কেন এসেছেন আপনাকে আমি জানিয়েছি। তিনি এখন কথা বলবেন।

    পেরীরা বললেন, আমি ব্রাজিলের নাগরিক, কিন্তু ইণ্ডিয়া থেকে স্কুলের পড়া শেষ করে ব্রাজিলে এসে নাগরিকত্ব নিয়েছি। আমি শুনেছি নূর-উদ্দিন নামের যে ইণ্ডিয়ান ছেলেটাকে আপনারা গ্রেপ্তার করেছেন তাকে বেআইনী পথে প্রায় চুরি করে নিয়ে এসে অপরাধ-জগতে ঠেলে দিয়েছে চিত্রগুপ্ত্‌। বয়েস অনুযায়ী তার জুভেনাইল কোর্টে বিচার হবার কথা। বিচারে যাই হোক, মুক্তির পর আমি তার দায়িত্ব নিতে আগ্রহী। আমি শুনেছি ছেলেটা অনাথ। এ ব্যাপারে আইনত যা যা করণীয় আমি করতে রাজি আছি।

    সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে পুলিস চীফ বললেন ফল্গুর রিপোর্ট পেলেই তিনি আগ্রহের সঙ্গে পড়বেন, এবং কোন প্রশ্ন থাকলে লিখে রাখবেন। পেরীরাকেও তিনি সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিলেন। সব শেষে বললেন, পরের দিন ফল্গু স্বাগত, কিন্তু সে একা এলে চলবে না। তার পুরো টীমকে – অর্থাৎ উল্কি মুড়কি রায়া এবং ফিনিগান, আর তাছাড়া প্রফেসর পেরীরাকেও – তিনি লাঞ্চে আহ্বান করছেন। লাঞ্চে থাকবেন কামিলা শ্যাভেজ আর সিটি চীফ অব পুলিসও।

    নিজের, প্রফেসর পেরীরার এবং আমার সহযোগীদের হয়ে আপনার লাঞ্চের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করলাম স্যর, সোজা পুলিস চীফের দিকে তাকিয়ে বলে ফল্গু, কিন্তু আমার দিক থেকেও একটা ছোট নিমন্ত্রণ আছে। তাম্বোপাতা ট্র্যাভ্‌লার্স-ইন নামের যে ছোট হোটেলটায় আমরা আপাতত অতিথি সেখানে কাল সকালে আপনাকে ব্রেকফাস্টে আহ্বান করতে পারি কি?

    এক মুহূর্তের জন্যে একটু থতমত খেয়ে যান পুলিশ প্রধান, অতি দ্রুত সেটা সামলিয়ে নিয়ে বলেন, আপনি যে কাজ আমাদের জন্যে করে দিয়েছেন, তার পর আপনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করি কীভাবে? তারপর বলেন, প্রোটোকল অনুয়ায়ী যে পাঁচজন অফিসার আমার সঙ্গে সর্বত্র যান তাঁরাও কি নিমন্ত্রিত?

    ঠিক নিমন্ত্রিত নন, বলে ফল্গু, তবে তাঁরা তাঁদের জীপ নিয়ে বাইরে অপেক্ষা করতে পারেন। সিভিল ড্রেসে আপনাকে কি এই শহরের অনেকেই চিনবে?

    না চেনারই কথা, বলেন পুলিস চীফ, আমি সাধারণত জনতার সামনে আসিনা।



    আগামী সংখ্যায় সমাপ্য
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৩৩৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৪১540333
  • মনে হচ্ছে আরো একটা চমক আছে। 
  • swapan kumar mondal | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৪২540337
  • ভারত থোরিয়াম এর কি হল? চিন্তায় আছি।
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন