এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ভোটুৎসবে ভাট - সাদা ঘুঁটে - পুনশ্চ 

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ মে ২০২৪ | ৩৩৩ বার পঠিত
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩
    প্রাককথন
     
    পুনশ্চ‌র প্রাককথন! সেটা আবার কী মশায়? গেঞ্জির বুকপকেট? নাকি বাইকের সীটবেল্ট? 

    আহা ব‍্যঙ্গ করেন কেন? মানছি সাধারণত তা হয় না। তবু করতে হচ্ছে। কারণ -  পুনশ্চ সচরাচর মূল লেখার থেকে বড় হয় না। তবে যা সচরাচর হয় না তাও তো কখনো হতে পারে। তাই তো বারো হাত কাঁকুড়ে‌র তেরোহাত … বা বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় গোছের প্রবাদ চালু বাজারে।

    ছয় ইঞ্জিন - তিনশো ওয়াগন - সাড়ে তিন কিমি লম্বা সুপার বাসুকি মালগাড়ির মতো আপনার দীর্ঘ পুনশ্চ পড়বো‌ই বা কেন? কী লাভ? 

    তা অবশ‍্য ঠিক, তবে বিগত ৭৭ বছর ধরে এতোবার লাইন দিয়ে তর্জনীতে কালি লাগিয়ে‌‌ই বা কী লাভ হয়েছে?  যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ (অথবা পূতানা) মেগা সিরিয়াল তো হয়ে‌ই চলছে। তবু তো অনেকে যায় আঙ্গুলে কালি লাগাতে। উঠতি লেখক‌কে উৎসাহ দিতে না হয় দেখলেন একটু পড়ে। ভালো লাগলে এগোবেন। না হলে ছেড়ে দেবেন।

    হিমশৈলের দশ শতাংশ দৃশ‍্যমান, নব্বই শতাংশ অদৃশ‍্য। ধ্রুপদী প্রতীকী রচনা এই গোত্রের। কিছু পাতি উপমা ছাড়া প্রতীক, ট্রতীক আমার মাথায় আসে না। আমি গাছ, মাছ, বেড়াল, কুকুর নিয়ে যা লিখি তা ওল্টানো হিমশৈল। তবু অদৃশ‍্য দশ শতাংশে অনুক্ত কিছু তাৎপর্য খুঁজে পেলে সে কৃতিত্ব পাঠকের। 

    শরতের নীলাম্বরে শোনপাপড়ি‌র মতো ভেসে বেড়ানো ফিনফিনে মেঘ উত্তমের শ‍্যাম্পূ‌করা ফাঁপানো চুলের মতো নিছক দৃষ্টি‌লোভন। তাতে না আছে জল না ছায়া। এ‌ই পুনশ্চ‌টি‌‌ও তেমনি। হাওয়া বালিশের মতো ‘মূঢ়মুড়ে’ প‍্যাকেট। খাদ‍্যগুণ নেই তবে খেতে মন্দ নয়। এর ব্র‍্যান্ড এ্যামবাসাডর হাস‍্যমুখী বিগতযৌবনা বলিতারকা জেসমিন কফিওলা। এর টুকরো বারো বার চিবিয়ে‌ও বোঝা যায় না কি দিয়ে তৈরি। সোশ‍্যাল মিডিয়া গবেষণা মতে - কিছুটা প্লাস্টিক দিয়ে। তবু পাবলিক খাচ্ছে। ভাঁড়ে মা ভবানী রেলদপ্তর নানা বিচিত্র উপায়ে রোজগার বাড়াতে চালু করেছে কয়েকটি ‘মূঢ়মুড়ে এক্সপ্রেস’। গোটা ট্রেনের দুপাশে চিপকানো প‍্যাকেট হাতে জেসমিনের পোস্টার। এসব যদি হতে পারে দীর্ঘ পুনশ্চ হতে পারে না? 

           ****************************************

    মূল প্রসঙ্গ ১৬.৫.২৪ পোষ্টানো - সাদা ঘুঁটে। সেদিন আটসকালে বৌমণির ঝঙ্কৃত সম্ভাষণে মটকা মারা ঘুম চটকে মন ম‍্যাজম‍্যাজ করছিল। চারটে সাদা ঘুঁটে সাঁটিয়ে, তার মহিমায় কাব‍্যচর্চা করে চোখ প‍্যাঁ-প‍্যাঁ করতে শুরু করলো। তাই বারোটা নাগাদ বডি ফেললাম ডাইনিং হলের খাটে যার বৈশিষ্ট্য‌ বর্ণিত হয়েছে - ১৪.৫.২৪ - “কে তুমি তন্দ্রাহরণী” লেখা‌য়। পূনরাবৃত্তি নিষ্প্রয়োজন।


     
    ঐ বারোয়ারী খাটে একটি বালিশ মন্দিরের সামনে দানপেটির মতো পাতা থাকে। চোখ প‍্যাঁ প‍্যাঁ করলে ওতেই মাথা পাতি। চোখে ডলার ছাপ তিরিশ টাকার আইপ‍্যাড দিলে ভরদুপুরে‌ও অমাবস‍্যা। পয়সা‌কড়ি পাওয়ার স্বপ্ন বোনাস। একাকী ভ্রমণে এটা আমার অবশ‍্যসঙ্গী। ট্রেনে গভীর রাতে‌ আলো জ্বললে বা দুপুরে কোনো পার্কে গাছের ছায়ায় প্লাস্টিক বিছিয়ে ঝপকি নিতে কোনো অসুবিধা নেই।

    ঘুমোলেই আমি স্বপ্ন দেখি। নয়তো তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় নানা চিন্তা মনে আইস-বাইস খেলে বেড়ায়। বিশ্রামান্তে কিছু বিক্ষিপ্ত ভাবনা, বিশেষ স্বপ্ন চলভাষে দানা বাঁধে। নিঃসঙ্গ শিশু যেমন মেঝেতে খেলনা ছড়িয়ে একা একা খেলে তেমনি দ্বিতীয় শৈশবে আমায় মজিয়ে রাখে অবান্তর শব্দক্রীড়া।

    সেদিন ঐ খাটে শুয়ে দিবাস্বপ্নে বসে ছিলাম স্বর্গের উদ‍্যানে। সবুজ লনে বিশাল শিরীষের ছায়ায় কয়েকটি বেঞ্চ। সেখানে অতীতের কিছু মহান সাহিত‍্যিক গল্প করছেন। এই রম‍্য পুনশ্চে তাঁদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের বিন্দুমাত্র অভিপ্রায় নেই। তবু ভেবে নিলাম চারটি কল্পিত চরিত্র। আলোচনা হচ্ছিল নিম্নরূপ:

        *********************************

    মধ‍্য পঞ্চাশের বক্রেন্দু চক্রবর্তী পায়চারি করতে করতে গম্ভীর স্বরে স্বগোতোক্তি করেন, এযুগে মর্তের কিছু মূঢ় মানবের মনোবাসনা অনুধাবন দূর্বোধ‍্য হ‌ইয়া উঠিতেছে।

    তাঁর থেকে তিন বছর পরে মর্তে ল‍্যান্ড করে মাত্র উনত্রিশ বছর বয়সে নন্দনকাননে মাইগ্ৰেট করেছেন ফাজিল যুবক তারাপ্রসন্ন সিনহা। তিনি বক্রেন্দু বাবু‌কে বলেন, বাঁকাদা, এখানে‌ও সাধুভাষায় কথা না বললে‌ই নয়? এখানে সুন্দরী অপ্সরাদের মুখে‌ও অনর্গল দেবভাষা শুনে কান পচে গেছে। একটু বিশ্রম্ভালাপ করবো তার‌ উপায় নেই। মর্তে সহজ ভাষায় সংস্কৃত মহাকাব‍্য অনুবাদের উদ‍্যোগ নিলেও দেবভাষায় সিডাকশনের ফান্ডা আমার অজানা। আপনি নীচে জজগিরির অবসরে‌ই যা লিখে এসেছেন তার গুঁতোতে‌‌ই কিছু ডেন্টিস্ট করে খেয়েছে। সোজাসুজি বলুন না দাদা, চাপটা কিসের?

    আপদলম্বিত আলখাল্লা পরে পায়চারী করছিলেন দীর্ঘদেহী আচার্য‌সদৃশ সৌম‍্য বৃদ্ধ - সূর্যনারায়ন শর্বদেব। আবক্ষ বিস্তৃত শ্মশ্রুতে হাত বুলিয়ে তিনি বক্রেন্দুবাবুকে বলেন, 

    আসিয়া মোরা উরধ গগনে 
    ত‍্যাগিয়া ধরায় সকল দ্বেষ
    হেথায় হেরিয়া অসীম শান্তি 
    ছিলেম ভুলিয়া সকল ক্লেশ
    এখন এ কোন তুচ্ছ পীড়ায়
    তব মনে ছায় বিষাদ রেশ?


    যুবক (স্বর্গে আসার পর কারুর আর বয়স বাড়ে না, সেটা‌ই দস্তূর) তারাপ্রসন্ন হাঁসফাঁস করে বলেন, সূর্য‌দাদু, তোমার সাধারণ কথাও হাজিরকাব‍্য করে বলার চিরকেলে অভ‍্যাস। এসো না আমরা মর্তের স্বকীয় সাহিত‍্যচর্চার ভাষা ছেড়ে এখানে সোজা সাপটা ভাষায় কথা বলি।

    শ্মশ্রুগুম্ফহীন ধারালো মুখ, একমাথা পক্ককেশ, রেলস্টেশনে সাঁটা সময়সারণীর মতো মুখভাবে স্থায়ী বিষন্নতা। নাম তাঁর শরদিন্দু চট্টোপাধ্যায়। তূষের চাদর গায়ে চুপ করে বসেছিলেন। অনেক ওপরে বলে স্বর্গে ঝকঝকে সকালে‌ও বারোমাস শীত। জীবদ্দশায় তিনি‌ সহজ ভাষায় গদ‍্যচর্চা করেছেন। তিনি তারুর কথায় সায় দিতে বাকি দুজনে‌ও সম্মতি জানালেন। উৎফুল্ল মুখে তারু বলেন, এবার বলুন তো বাঁকাদা, কেস‌টা কি?

    তবলার বিড়ের মতো ডোরাকাটা পাগড়ি‌টা একটু হেলে গেছিল। সেটা ঠিক করে বক্রেন্দুবাবু বলেন, তারু তোমায় কতোবার বলেছি আমায় বাঁকাদা বলবে না, এই শেষবার বলছি,  নাহলে কিন্তু...

    তারু লজ্জিত হয়ে বলেন, আচ্ছা, এবার থেকে ইন্দুদা বলবো। কিন্তু “নাহলে কিন্তু” বলে কি বলতে চাইছিলেন? নীচে ব্রিটিশ আমলে তো পান থেকে চূণ খসলে জজ ম‍্যাজিস্ট্রেটরা লোকজনকে জেলে পাঠাতো। এখানে‌‌ও কি আপনি আদালত‌হীন বিচারক অবমাননার দায়ে আমায় শাস্তি দেবেন?

    আরে না, না, সে যুগ‌ আর নেই। এখন তো নীচে সর্বোচ্চ আদালতের রায়‌ও পছন্দ না হলে লোকজন প্রখর সমালোচনা করে। ব্রিটিশ‌রাজে জজগিরির গুমোর আর নেই। আমি বলতে চাইছিলাম নাহলে কিন্তু আমি আর তোমার সাথে কথাই বলবো না।

    আচ্ছা ঠিক আছে, রাগ করবেন না। এখন বলুন না, হয়েছেটা কি?

    জানো তারু, একদা আমি মর্তে সাধুভাষায় এক বিশেষ বাংলা গদ‍্যরীতি‌র প্রচলন করেছিলাম। মানছি আমার আঙ্গিক ছিল আলংকারিক‌। আমার লেখা এখন আর অনেকেই পড়ে না। তবু কিছু প্রকৃত সাহিত‍্যরসিক আমায় বাংলা উপন‍্যাসের জনক বলে মানে। কিন্তু কার্তিক নামক এক অর্বাচীন, শখের লেখালেখি করে। সে‌ও দেখি সাধুভাষায় আমার শৈলী অনুকরন করতে গেছে। আর তা ক‍রতে গিয়ে, প্রকৃত জ্ঞান না থাকলে যা হয়, তাই হয়েছে। অজগরের মতো লম্বা প‍্যাঁচালো বাক‍্যবিন‍্যাস করেছে। আমি এই ঐতিহ্য রেখে এলাম মর্তে? এহেন ধৃষ্টতা কি সহ‍্য করা যায়? 

    অর্বাচীন কার্তিকের ধৃষ্টতায় মর্মাহত ইন্দুবাবুর হাঁচি, কাশি, হেঁচকি, হাই, দীর্ঘশ্বাস, ঢেঁকুর উপর্যুপরি হতে, উঠতে বা পড়তে লাগলো। তারু দ্রুত তাম্রপাত্রে জল এনে (ইন্দ্রের ফরমানে স্বর্গে প্লাস্টিক অচল) ইন্দুদাকে দিয়ে পিঠে হাত বুলিয়ে বলেন, জল খান, জল খান।

    ইন্দুবাবু কিঞ্চিৎ সুস্থ বোধ করতে সূর্যবাবু বলেন, আপনার আঙ্গিকে আজকের দিনে রচনা সহজ নয়। কার্তিকের মতো অর্বাচীন ছেলে ছোকড়া তার একটু হনুকরন করতে পারে মাত্র। এতে মর্মপীড়ার কোনো কারণ দেখি না। উপেক্ষা‌ই এক্ষেত্রে কাম‍্য।

    সূর্য‌বাবু, কার্তিক ছোকড়া নয়, প্রবীণ। ছাত্রজীবনে সে ব‍্যাকরণ পড়েনি। বাংলায় পেয়েছে ৩৭%, আর সে কিনা শখ করে আমায় নকল করতে যায়। অমন শখের ক‍্যাঁতায় আগুন।

    মর্তে তাঁর নামের আগে ঋষি লেখা হতো। কিন্তু মর্মপীড়ায় তাঁর ভাষ‍্যে প্রাকৃত ভঙ্গিতে প্রকৃত মর্মবেদনা ফুটে বেরিয়েছে। পরক্ষণেই কিঞ্চিৎ অপ্রতিভ‌ হয়ে সামলে নিয়েছেন। 
     
    সূর্য‌বাবু বলেন, শান্ত হোন। বৃথা কষ্ট পাবেন না। এসব‌ কালের অমোঘ লিখন। যুগধর্ম। আমার কথাই ধরুন। এখানে চলে আসার পর আমার সব রচনা সরকার সাতাশ খন্ডে আঠারো হাজার ছশো পাতায় ছাপলেন। কিন্ত কী লাভ হলো? ছৌ মুখোশের মতো ঘর সাজাতে সূর্য রচনাবলী‌ও সংস্কৃতিমনস্কতার পরিচায়ক। তাই ড্রয়িং‌রুমে বুককেসে শোভা পায়। কিন্তু পড়ে কজন? তাই তো আমি মর্তে‌ই লিখেছিলাম:

    যখন পড়বে না মোর গল্প গাথা কেউ পরে
    তবে জন্ম দিনে আসবে তারা ছল করে 
    সেথায় গাইবে নানা সূর্য‌গীতি ভুল সুরে

    আমার স্থাপিত তালপুর ‘প্রশান্তি নিলয়’ আশ্রম মহাবিদ্যালয়ের কিছু লবঙ্গ‌লতিকা‌সদৃশ মেয়ে আজ‌ও আমার ‘অন্তিম পদ‍্য’ অনুসরণে সুমিতকে ‘সুমিতো’ উচ্চারণ করে দয়িতকে প্রেম নিবেদন করে। তবে ওসব ঐ তালপুরে‌ই চলে। কলকাতার কালচার অন‍্য। তুই তোকারি করা -  বীয়ার হাগ দেওয়া -  হটপ‍্যান্ট পরে বিড়িফোঁকা মেয়েরা ওসব বলে না। 

    তবে যখন দেখি রাত্রিবেলা‌ও মঞ্চে কালোচশমা পরে, ঝাঁকড়া চুল ঝাঁকিয়ে, AK47 এর মতো গীটার নাচিয়ে, স্ট‍্যান্ড থেকে মাইক্রোফোন উপড়ে আমার‌ গান জগঝম্প স্টাইলে গাইছে তখন অদ্ভুত লাগে। শুনলাম এমন রক শৈলী‌র Gunকে নাকি বলে ‘সূর্যালো ফিউসন’। বেশ অর্থবহ নাম। মূল থেকে সরা সুর, উজ্জ্বল নাচুনে আলো, উদ্দাম চিৎকার - মনে হয় রক‌ ছোঁড়াছুঁড়ি‌ই হচ্ছে। ফিউশন টিউশন আমাদের কালে ছিল না বলে বুঝি‌ না। ওপর থেকে দেখে লাগলো - টোটাল কনফিউশন‌। তবু আমি কিছু মনে করি না। কেন জানেন? এসব যুগধর্ম। কেউ খন্ডাতে পারবে না।

    ইন্দুবাবু বললেন, আপনি এক জীবনে অতলান্তিক সাহিত্য‌চর্চা ছাড়াও আরো এতো কিছু করেছেন যা প্রায় অবিশ্বাস্য মনে হয়। মর্তের মানুষ আজ‌ও আপনার টাইম ম‍্যানেজমেন্ট নিয়ে গবেষণা করে। বার্মিংহাম অফ দ‍্য ইস্টের নানা নামী কারখানা যখন একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তখন‌ও আপনি বাংলায় ‘ওয়ান ম‍্যান ইন্ডাস্ট্রি’। বহু মানুষ আপনাকে ভাঙ্গিয়ে খাচ্ছে। এমন ডিউরেবল ব্র‍্যান্ড বাঙালি সহজে ভুলবে না নিজে‌র গরজে। সূদুর ভবিষ্যতে‌ও মর্তে আপনার আসন পাকা।  যদি কিছু মনে না করেন তো একটা ব‍্যক্তিগত প্রসঙ্গ তুলি? 

    সূর্যবাবু বলেন, বিখ‍্যাত মানুষের ব‍্যক্তিগত বলে কিছু হয় না। প্রিয়জনের সাথে নিভৃত আলাপচারিতা বা চিঠিপত্রে প্রকাশিত মনোভাব‌ও সূর্য‌গবেষকরা প‍্যাঁটরা হাঁটকে, সাক্ষাৎ‌কার নিয়ে খুঁজে বার করেছে।  তা নিয়ে কাগজে, পত্রিকায়, গ্ৰন্থে, টিভিতে, সমাজমাধ‍্যমে কাটাছেঁড়া করেছে। এসব খ‍্যাতি‌র বিড়ম্বনা। মর্তে রবি ঠাকুরের একটি গান মনে পড়ছে। গান তো নয়, যেন হৃদ‍য় নিংড়ানো আকুতি, একটু গাইবো? 

    ইন্দু‌বাবু বোঝেন সূর্য‌বাবু একটু আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছে‌ন, তাই সাগ্ৰহে বললেন, নিশ্চ‌ই গান না, আমরাও শুনি।

    সূর্য‌বাবু চোখ বুঁজে তন্ময় ভাবে ধরলেন:
    নিভৃত প্রাণের দেবতা  যেখানে জাগেন একা,
    ভক্ত, সেথায় খোলো দ্বার আজ লব তাঁর দেখা।
    সারাদিন শুধু বাহিরে ঘুরে ঘুরে কারে চাহি রে,
    সন্ধ্যা‌বেলার আরতি হয় নি আমার শেখা।
    তব জীবনের আলোতে জীবনপ্রদীপ জ্বালি
    হে পূজারি, আজ নিভৃতে সাজাব আমার থালি।
    যেথা নিখিলের সাধনা পূজালোক করে রচনা
    সেথায় আমি‌ও ধরিব একটি জ‍্যোতির রেখা।

    সেই প্রার্থনা সংগীতের কথা, সুর, গায়কী‌র মাধূর্যে স্বর্গের মনোরম সকালে‌ও সবাই স্তব্ধ‌বাক। লঘুচিত্তের তারুর চোখ দিয়ে‌ও গড়িয়ে পড়ছে  অশ্রু। শরদিন্দু‌বাবু চাদরে চোখ মুছছেন। ইন্দুবাবু তাকিয়ে আকাশপানে। সূর্য‌বাবু মর্তে প্রিয় সন্তান‌কে শ্মশানে দাহ করে এসে‌ পূর্বনির্ধারিত সভায় যোগ দিয়ে বক্তব‍্য রেখেছেন। মর্তে তাঁর কর্তব্যজ্ঞান ও নশ্বরতাবোধের দার্শনিক প্রজ্ঞায় লালিত নির্লিপ্ততা কিংবদন্তি‌প্রায়। স্বর্গে সেই মুখোশ পরার প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই কখনো একটু আবেগের প্রকাশ হয়ে যায়। পরক্ষণেই সামলে নিয়ে বলেন, আচ্ছা  আপনি কি বলছি‌লেন যেন?

    আপনার বৌদি ভারতী দেবী সম্পর্কে। আমরা শুনেছি আপনাদের মধ‍্যে প্রীতির সম্পর্ক ছিল। তাঁর আত্মহত্যার কারণ যাই হোক, সেটা আপনাদের পারিবারিক ব‍্যাপার। তবু মনোরঞ্জন বটব‍্যাল নামক এক চলচ্চিত্র সমালোচক কাম টিভি সঞ্চালক ঐ প্রসঙ্গে ‘ভারতী দেবীর শেষ পত্র’ শিরোনামে একটি ব‌ই লিখে তাতে নানা কাল্পনিক মেলোড্রামাটিক গালগল্প ফাঁদলেন কেন? 

    ঋষিসূলভ অবিচলতায় সূর্য‌বাবু বলেন, প্রসঙ্গটি স্পর্শকাতর। তবু সত‍্যভাষন করছি। দেখুন নারী পুরুষের সম্পর্ক জটিল দৈবিক রসায়ন। তার চর্চা আপনার উপন্যাসে‌ও এসেছে। এই সম্পর্ক যে কোনো নিয়ম, নীতি, হিসাবের গণ্ডিতে বাঁধা থাকে না তা আমরা এখানে দেবতাদের মধ‍্যেও দেখছি। বৌদিকে আমি খুব ভালোবাসতাম। তিনি তার যোগ‍্যা। আমার থেকে মাত্র দু বছরের বড়। তাই সখার মত‌ সম্পর্ক ছিল আমাদের।  আমার লেখার প্রথম পাঠিকা ছিলেন তিনি। তাঁর কাছে পেয়েছি নানা পরামর্শ, সৃজনশীল অনুপ্রেরণা। লেখকের কাছে বৌদ্ধিক পাঠকের সুচিন্তিত মতামতের গুরুত্ব আপনি‌ও লেখক হিসেবে নিশ্চিত বোঝেন। 

    ইন্দুবাবু নীরবে সম্মতি জ্ঞাপন করেন।

    কাব‍্যচর্চা‌র মোহে তখন আমার মন মানব সম্পর্কে‌র নানা আলোছায়াময় প্রাঙ্গনে আবিস্কারের নেশায় ঘোরাফেরা করছে। তখন ওনার নারীত্বের মাধূর্য, আচরণের কমনীয়‌তা, স্বামী সঙ্গহীনতার একাকীত্ব, অনায়াস নৈকট‍্য, আমার চব্বিশ বসন্তের বয়সধর্ম - এহেন নানা অণুঘটক প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে কিভাবে আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলেছে তা আমরা সজ্ঞানে অনুধাবন করতে পারিনি। আমার বিবাহের অনতিপরে উনি আত্মঘাতী হতে আমি‌ নিদারুণ মানসিক আঘাত পেয়েছিলাম। আমি জানিনা কি কারণে  উনি ঐ চরম পথ বেছে নিলেন। আমার বিবাহের ফলে ওনাকে আগের মতো সাহচর্য দিতে পারিনি। ক্রমশ বহির্জগতে আমার ক্রমবর্ধমান পদার্পনের ফলে উনি পুনরায় নিঃসঙ্গ বোধ ক‍রতে শুরু করেছিলেন। তখন তাঁর একটি সন্তান থাকলে হয়তো মাতৃত্বের আনন্দে খুঁজে পেতেন বেঁচে থাকার সার্থকতা। তাহলে হয়তো তিনি ঐ চরমপন্থা অবলম্বন করতেন না।

    লেখিকা আনাই নিন তাঁর অতি অন্তরঙ্গ অভিজ্ঞতা, অনুভূতি প্রকাশ করে বলেছিলেন "The role of a writer is not to say what we all can say, but what we are unable to say." এটা ওনার অভিমত। আমার অভিমত, কেউ নিজে প্রকাশ করতে না চাইলে, কারুর একান্ত ব‍্যক্তিগত প্রসঙ্গ, অনুভব বিপণন‌যোগ‍্য নয়। তাই বৌদির যে চিঠি, ডায়েরি‌ পাওয়া যায়নি সেই নাম দিয়ে একটি ব‌ই লিখে তাতে উপন‍্যাসের আঙ্গিকে কল্পনার জাল বোনা আমার অমানবিক লেগেছে। মৃত মানুষের সম্মান রক্ষার্থে এমন কল্পিত আখ‍্যান না লেখা‌ই উচিত ছিল।

    সেই তুলনায় দূর্বলভাবে আপনার আঙ্গিক অনুকরণ করে কার্তিকের সাধু ভাষায় কিছু লিখতে চাওয়া নির্দোষ প্রয়াস। তার জন‍্য আপনার বিমর্ষ হ‌ওয়া উচিত নয়। তাহলে আমার জায়গায় থাকলে আপনার কেমন লাগতো?

    তারু‌ বলেন, ইন্দুদা আপনাকে কেউ নকল করতে চাইছে মানে তো লোকে আপনাকে মনে রেখেছে। এতে তো আপনার কিছু মনে করা উচিত নয়। আমাকে‌‌ দেখুন। আমি ‘তোতাপাখির তামাশা’ নামে কথ‍্য ভাষায় - বলচে, কচ্চে, করে কিছু নকশাবাজি করেছিলাম। এখন কী আর কেউ ওভাবে লেখে? আমি আপনার থেকে প্রায় সিকি শতাব্দী আগে এখানে চলে না এসে মর্তে আরো অনেকদিন থাকলে হয়তো আপনার প্রভাবে আমি‌ও সাধু ভাষায় লিখতে যেতাম।

    ইন্দু‌বাবু বললেন, না হে তারু, সাহিত‍্যচর্চা করতে সবাইকে যে এক‌ই ঘাটে জল খেতে হবে তার কোনো মানে নেই। যে যার মতো লিখবে। নাহলে তো সবাই ঝাঁকের ক‌ই হয়ে যাবে। তাতে বৈচিত্র্য থাকবে না। দীর্ঘজীবী হলে‌ই যে সাহিত্য‌চর্চার মান‌ বাড়বে তার‌ কোনো মানে নেই। অনেকের‌ লেখাতে পরে বয়সের ছাপ পড়ে যায়। শ্রীকুমার মাত্র ছত্রিশ বছরে এখানে চলে এলো। কিন্তু ঐটুকু সময়ে যে অনন‍্য ধারার সাহিত‍্যসৃষ্টি সে করে এলো, তার আবেদন আজ‌ও অমলিন।

    তারু প্রফুল্ল মনে বলে, সত‍্যি বলতে কি ইন্দু‌দা এতো তাড়াতাড়ি চলে আসতে হয়েছিল বলে তখন বেশ  খারাপ‌ই লেগেছিল। আর কিছুদিন বাঁচলে মর্তে আর একটু তামাশা করা যেতো। কিন্তু আজ আপনার সাট্টিপিটি পেয়ে বেশ লাগলো। আমাদের শরদিন্দুবাবুকে‌ই দেখুন। আজ না হয় মর্তে "আমি‌ও" আন্দোলন করে নানা হৈ চৈ হচ্ছে। কিন্তু অতীতেও তো মেয়েদের ওপর অনেক অত‍্যাচার, অবিচার হয়েছিল। তবু তখন তাদের এমন আন্দোলন করার উপায় ছিল‌না। তখন শরদিন্দু‌দা পথের দাবী মিটিয়ে, চরিত্রে কলঙ্কের পরোয়া না করে অসহায় নারীদের চোখের জল তাঁর লেখার কাগজে মুছেছেন। আজ তা‍ঁর লেখা‌ও বিশেষ কেউ পড়ে বলে মনে হয় না। যাদের কথা এতো লিখেছেন সেই মেয়েরা‌ও বোধহয় না।

    স্বর্গের ডাইনিং হলে ব্রেকফাস্টের ঘন্টা পড়লো। রম্ভা, মেনকা, উর্বশী‌ প্রসাধন করে, রেশমি ঘাগরা, চূমকী বসানো কাঁচূলী পরে, খোঁপায় পারিজাত গুঁজে সবাইকে রিনরিনে কণ্ঠে খেতে ডাকছে। সেদিকে তাকিয়ে তারু বয়সধর্মে একটু উচাটন হয়ে পড়লো। তার আর সাহিত্য আলোচনা‌য় মন নেই। তবে নানা সভায় সভাপতি‌ত্ব করে, আশ্রমে আচার্য‌গিরি করে সূর্যনারায়ন শর্বদেব আলোচনা অসমাপ্ত রেখে খেতে যাওয়ার পক্ষপাতী নন। তিনি গলা খাঁকড়ে তারুর মনযোগ পুনরায় এদিকে আকর্ষণ করে ছোট্ট সমাপ্তি ভাষণ দিলেন।

    বললেন, আজ সকালে‌ আমাদের আলোচনা শুরু হয়েছিল ইন্দু‌বাবুর মৃদু ক্ষুব্ধ মন্তব্য দিয়ে। পরে নানা আলোচনা‌য় আমরা অনুধাবন করলাম সাহিত‍্যসৃষ্টি নিয়ে আমাদের যত‌ই আত্মগরিমা থাকুক, কালের নিয়মে তার অভিঘাত অধিকাংশের কাছে ক্ষীণ হয়ে যেতেই পারে। তাতে মর্মাহত হ‌ওয়া‌র কিছু নেই। ধীমান মানুষ চিরকাল সংখ্যালঘু। তবু তাদের চর্চার মাধ‍্যমে‌ই ললিতকলা বেঁচে থাকে। তার সাথে যদি কার্তিকের মতো কিছু অর্বাচীন‌ মাতৃভাষা চর্চার আনন্দে ইন্দু‌বাবুর শৈলী অনুকরণের অক্ষম প্রয়াস করে - তাতে ক্ষতি কী? অধিকাংশ মর্তের মানুষের যখন আজকাল প্রয়োজন ছাড়া লেখার অভ‍্যাস চলে যাচ্ছে তখন প্রকৃত জ্ঞানী লেখকের সাথে কার্তিকের মতো কেউ যদি শখের লেখালেখি‌ও করে, তাতে‌ তো আমাদের খুশি হবার‌ই কথা। তাই না? 

    সূর্য‌বাবুর এহেন গোছালো বক্তব‍্যে তিনজন একবাক‍্যে সম্মত হলেন। তার‌পর সবাই চললেন প্রাতরাশ করতে। আমি‌ও তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় শোনা সেই আলোচনা খাট থেকে উঠে, মুখেচোখে জল দিয়ে, ভুলে যাওয়ায় আগে লিখে ফেললাম।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩
  • ব্লগ | ১৭ মে ২০২৪ | ৩৩৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দিব্বি | 2409:4060:2e88:5dbc::1f8b:***:*** | ২৩ মে ২০২৪ ১৮:১৮532234
  • তিরিশ টাকার আই প‍্যাড smiley
  • Animesh Chakraborty | ২৩ মে ২০২৪ ২১:১৯532247
  • আপনার লেখায় " যখন পড়বে না মোর গল্প গাথা --------------------------- সেথায় গাইবে নানা সূর্যগীতি ভুল সুরে।"  অনবদ্য লেগেছে। সত্যিই সমরেশ বাবু, আপনার লেখা পড়ে মন ভরে যাচ্ছে।
  • সমরেশ মুখার্জী | ২৫ মে ২০২৪ ২১:৩৭532328
  • অনিমেষ‌বাবু,

    লেখাটি এবং তাতে আমাকৃত কবিগুরুর “যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন” গানের প‍্যারোডি আপনার ভালো লেগেছে বলে জানিয়েছেন। ভালো লাগলো। কিন্তু বিশ্বাস করুন, চতুর্দিকে রবীন্দ্র‌ভক্তি‌র নামে করুণ অন্তঃসারশূন্য প্রদর্শন‌বাদীতার নানা উচ্চকিত ঢক্কানিনাদ দেখে ঐ প‍্যারোডি আমি গভীর দুঃখের সাথে লিখেছি।

    এখন বঙ্গে নানা স্থান‌মাহাত্ম্য তৈরী হচ্ছে - পানাগড়ের কাছে মাটি তীর্থ। বর্ধমানে হয়েছে মিষ্টি হাব। হিন্দি বলয়ের রামরাজ‍্যের সাথে পাল্লা দিতে ভবিষ্যতে ওখানকার বিখ্যাত মিষ্টির নামে হতে‌ও পারে সীতাতীর্থ। 
     
    উদযাপন হচ্ছে মাটি উৎসব, ঘুঁটে উৎসব। হতে পারে ল‍্যাংচা উৎসব। এসবই বাংলার শিল্প, শিল্পী, কর্মসংস্থানের নিমিত্তে শুভ উদ‍্যোগ। এভাবেই নানা খেলা, মেলা, দিবস, উৎসবের ভাবনা‌, আয়োজন সুখী, উৎফুল্ল রাজ‍্যবাসীকে আনন্দে মাতিয়ে রাখতে। এভাবেই বসন্ত উৎসব, পৌষ মেলার মতো, রবীন্দ্রজন্মোৎসব‌ও এখন আনন্দ উৎসবে পরিণত হয়েছে। বাঙ্গালী‌র প্রিয় কবি‌র জন্মদিন এর থেকে ভালো‌ভাবে আর কীভাবেই বা পালিত হতে পারে?
     
    দূরদর্শী কবি‌  এসব ভেবে‌ই তাই গান  লিখে  গেছেন: 

    তোমার পূজার   ছলে তোমায়   ভুলেই থাকি।
    বুঝতে নারি   কখন্‌  তুমি   দাও-যে ফাঁকি ॥
    ফুলের মালা   দীপের আলো   ধূপের ধোঁওয়ার
    পিছন হতে   পাই নে সুযোগ   চরণ-ছোঁওয়ার,
    স্তবের বাণীর   আড়াল টানি   তোমায় ঢাকি ॥

    এ গানের দ্বিতীয় লাইনে তুমি টা “আমি” আর দা‌ও-যে টা  “দি‌ই-যে” করলে‌ও গানটি গাইতে বা শুনতে এতোটুকু হোঁচট লাগবে না। শুনে দেখুন।



     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন