এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ভোটুৎসবে ভাট - মক্ষী দর্পণ

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ৩০ মে ২০২৪ | ৩২২ বার পঠিত
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩
    শিরোনাম‌ দেখে মনে হতে পারে এটি “নীল দর্পণ” দ্বারা অনুপ্রাণিত। নাটক‌টি আমি পড়িনি। শুনেছি নীল বিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে দীনবন্ধু মিত্র লিখিত সেই নাটকে ছিল গুরুত্বপূর্ণ সমকালীন সমস‍্যার সাহসিক প্রতিফলন। নাটকের বিষয়বস্তু তৎকালীন বঙ্গদেশে নীলকর সাহেবদের দেশীয় চাষী‌দের ওপর শোষন ও অত‍্যাচার‌। ঐতিহাসিক‌রা মনে করেন সেই সময় উপর্যুপরি খরা, সাধ‍্যের অতিরিক্ত হারে কর আদায়, গ্ৰামীণ  পরিকাঠামো উন্নয়নে বিদেশী শাসকদের অনীহা, বিলাসব‍্যাসনে মগ্ন অধিকাংশ জমিদার‌দের‌ও‌ এ ব‍্যাপারে নিদারুণ অবহেলা, লাগাতার  নানান যুদ্ধের প্রয়োজনে সৈন‍্যদের জন‍্য অতিরিক্ত খাদ‍্য বরাদ্দের হুকুম ইত‍্যাদি নানা কারনের সাথে অধিক মূনাফার লোভে ও ইংরেজ শাসকদের জবরদস্তি‌র কারণে বহু জমিতে ধানের বদলে ব‍্যাপক হারে নীলচাষের কারণেও সাধারণ মানুষের মধ‍্যে দেখা দেয় খাদ‍্যের হাহাকার। 

    শাসকদের এই অমানবিক অবিমৃষ‍্যকারিতা ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে অভিশাপ রূপে দেখা দেয়। বঙ্গাব্দ ১১৭৬ থেকে ৮০ নিম্ন গাঙ্গেয় অঞ্চলে পশ্চিমে বিহার থেকে পূবে অবিভক্ত বাংলার প্রান্ত অবধি প্রায় এক কোটি‌র‌ বেশী মানুষের মৃত্যু হয় অপুষ্টি ও অনাহারে। তৎকালীন জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ‌ই মারা যায় চার বছর ব‍্যাপী ভয়াবহ, মনূষ‍্যসৃষ্ট দুর্ভিক্ষে।

    মক্ষী দর্পণে এমন কোনো জ্বলন্ত আর্থসামাজিক বিষয়ে আলোচনা করা হয়নি। সে যোগ্যতা‌ও আমার নেই। এটা নিছক‌ একটি লঘুরচনা। 

    সেদিন বুধবার সকাল নটা। এই সময় অনেকে‌ই কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার প্রস্তুতি‌তে নিচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের আড়াই বছর আগে স্বেচ্ছায় পেশাগত জীবনে ইতি টেনে আমার তখন অলস অবসর। তাই জমিয়ে চা জলখাবার খেয়ে ল‍্যাপটপে নামিবিয়া‌র ওপর একটা মনোরম ভ্রমণ ভিডিও দেখছিলাম। কল্পনায় উঁচু বালিয়াড়িতে উঠে ঢাল বেয়ে গড়িয়ে নামছি বাস্তবের হুল্লুড়ে ট‍্যুরিস্টদের সাথে। 

    ঠিক সেই সময় পাতি মাছি‌টা দিল সব গুলিয়ে। মাছি আবার পাতি কি? আসলে পাতি মানে পাতি বাংলায় সাধারণ। যেমন পাতিহাঁস, পাতিলেবু, পাতি ফুটানি - তেমন। মনে হলো পাতি বিশেষন‌টার বুৎপত্তিগত উৎপত্তি হয়তো প্রাচীন ফরাসী শব্দ petit থেকে, যার অর্থ ক্ষুদ্র, অকিঞ্চৎকর বা আভিজাত্য‌হীন। তার থেকেই হয়তো ইংরেজী‌তে এসেছে petty শব্দটা, যেমন petty cash, petty crime, petty politics ইত্যাদি। তবে এই বক্রোক্তি-মূলক বিশেষনটি মহান কার্ল মার্ক্স দ্বারা প্রবর্তিত অষ্টাদশ শতাব্দীর একটি অভিধায় অমর হয়ে গেছে - Petite Bourgeois  যা বঙ্গদেশে এসে অবশেষে হয়ে দাঁড়ায় - পাতি বুর্জোয়া।

    যাকগে, পাতি মাছি থেকে কোথায় চলে গেলাম। এই হয়েছে অকেজো ঢেঁকির ধান ভানা ছেড়ে অযথা ঢেঁকুর তোলার বদ‌অভ‍্যাস। তো সেই পাতি মাছিটা পোঁওও আওয়াজ করে কানে, কপালে তার ঘিনঘিনে, সুড়সুড়ে পায়ে বসে দিলো আমার মনযোগ ভেস্তে। গায়ে হাত ছুঁইয়ে ভিক্ষা চাওয়া নাছোড় ভিখারি তাড়ানোর মতো করে তাড়াই সেটাকে। সেও ছিনে জোঁকের মতো লেগে থাকে। একটু বাদে বাদেই ঘুরে ফিরে উড়ে এসে ফের বসে আমার গায়ে। ও যে আমার গাত্র সৌরভে কি মধু পেয়েছে তা ওই জানে!

    খুব বিরক্তি লাগে। আবার মনে হয় মানুষ হয়ে একটা তুচ্ছ মাছির কাছে এভাবে নাজেহাল হয়ে যাবো? আমার মনুষ‍্যোচিত আমিত্ব কিঞ্চিৎ আহত হয়।

    এর থেকে মুক্তি পাওয়ার দুটো উপায় আছে। এক, খবরের কাগজ পাকিয়ে স‍্যাটাক্ করে মিসাইল ঝেড়ে ওর ভবলীলা সাঙ্গ করা। মাছি বনাম মানুষের এই বালকোচিত সংগ্ৰামে আমি এর আগেও বেশ কয়েকবার জিতেছি। এটা আমার অসম যুদ্ধ বলে‌ও মনে হয় না। আমার যদি থাকে মিসাইল, মনসংযোগ ও তীব্র গতি ওর‌ও আছে প্রতিবর্তী প্রেরণায় ঠিক সময়ে ফুরুৎ করে উড়ে পালানোর প্রত‍্যুতপন্নমতিত্বময় পাখনা। 

    দু একটাকে পেড়ে ফেললেই কিভাবে যেন ওরা সাবধান হয়ে যায়। নিমেষে হাওয়া হয়ে যায়। হয়তো ওদের মধ‍্যেও আছে বেতালের কমিকসে দেখানো পিগমীদের ড্রাম বাজিয়ে জঙ্গলে‌র মধ‍্যে দুর দুরান্তে খবর পাঠানোর মতো কোনো কায়দা, যেটা আমরা, মানুষেরা জানি না।  “দিকে দিকে সেই বার্তা রটি গেল ক্রমে” গোছের কোনো একটা ব‍্যাপার। কিন্তু এটা খেয়াল করেছি দু চারবার কাগজ পিটুনি খেয়ে অন্তত বেশ কিছুক্ষণ আর ওরা আমার ধারে কাছে মাড়ায় না। কাপড় টাঙানোর তারে সার দিয়ে বসে আমার দিকে পিট পিট করে তাকায়। হয়তো নিজেদের মধ‍্যে আমার মুন্ডুপাত করে বলাবলি করে “ওরে ওদিকে যাস নে এখন। কর্মহীন  বুড়ো‌টার‌ কাজ নেই বলে গেলেই কাগজ পেটা করবে”।

    দু নম্বর উপায়টা উচ্চমার্গের ব‍্যাপার। অনেকদিন আগে কোথাও পড়েছিলাম যে রবীন্দ্রনাথের পায়ে একবার ইয়াব্বড় একটা ডেঁয়ো পিঁপড়ে কামড়েছে। পিঁপড়ে‌র দংশনে ফরমিক এ্যাসিডের জ্বলুনি কম নয়। কিন্তু তিনি নির্বিকার চিত্তে, দার্শনিক অভিজ্ঞানে ভাবতে চেষ্টা করলেন, যদি কিছুক্ষণের জন‍্য ধরে নি‌ই পিঁপড়ে‌টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নামক কোনো ব‍্যাক্তিকে কামড়েছে, আমাকে নয়, কারণ ঐ পরিচিতি‌টাই তো আমার একমাত্র সত্তা নয়, তাহলে তো আমার কোনো অনুভূতি হ‌ওয়ার‌ই কথা নয়। এটা ভাবতে ভাবতে তাঁর জ্বলুনি‌র অনুভূতি চলে গেল। 

    মনোবৈজ্ঞানিক ব‍্যাখ‍্যা মতে এরকম বা তার থেকেও অবিশ্বাস‍্য ঘটনা হিপনোটিক অটো সাজেশানের মাধ‍্যমে ঘটানো সম্ভব। একাধিক “অলৌকিক নয় লৌকিক” গ্ৰন্থাবলীর লেখক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শ্রী প্রবীর ঘোষ এ জিনিস বেশ কয়েকবার  মঞ্চে দর্শকদের সামনে করে দেখিয়েছেন। তিনি একটি মেয়েকে মঞ্চে ডেকে, সম্মোহিত করে বলবেন, এইবার আমি তোমার হাতে একটা গনগনে, লাল, গরম লোহার শলাকা ছোঁয়াচ্ছি। এই বলে তিনি তাঁর কলমটি মেয়েটির হাতে ঠেকানো মাত্র সে যে শুধু দারুণ চমকে উঠবে তা‌ই নয়, খানিক বাদে তার হাতে ফুটে উঠবে ফোসকা পড়ার মতো চিহ্ন।

    প্রবীরবাবু এহেন আপাত অবিশ্বাস্য ঘটনা দেখিয়ে প্রমাণ করেছেন এর মধ্যে অলৌকিক কিছু‌ নেই। তিনি বলেন এটাই যদি কোনো ভন্ড সাধু বাবা দেখায় তাহলে ভক্তরা ভক্তি‌তে গদগদ হয়ে তার পায়ে লুটিয়ে পড়বে। তবে কারুর সংযম, মনসংযোগ বা পারিপার্শ্বিক হতে বিযুক্তিকরণের (withdrawal) ক্ষমতা অতি উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছলে সে নিজে‌ও স্বেচ্ছায় এরকম ঘটনা ঘটাতে পারে। 
    আমি রবীন্দ্রনাথ ন‌ই। অল্পেই প্রতিক্রিয়াপ্রবণ ‌অসংযমী মানুষ। তবু স্ক্রিন নামিয়ে চুপ করে বসে কিঞ্চিৎ সংযমের পরীক্ষা দে‌ওয়ার চেষ্টা করি। সে এবার তাড়া না খেয়ে ক্রমাগত সাহসী হয়ে ওঠে। নাকের ওপর, গোঁফের পাশে, ঠোঁটের কোনে গটগটিয়ে হেঁটে বেড়ায়। ব‍্যাপার কী? আজ কি চায়ে চিনি বেশী ছিল? ঠোঁটের পাশে কি হালকা দুধের  সর লেগে আছে? জানি না। এবার সে পার্কে পদচারণা‌ করার মতো গাল বেয়ে লম্বা হন্টন লাগায়। কি মনে করে ডাঁটি বেয়ে চশমায় উঠে পড়ে। কাঁচের ওপর চলে বেড়ায়। ও যে কী এত পর্যবেক্ষণে রত বুঝিনা। ও নিজেও জানে কিনা কে জানে!

    এবার আমার মুখমন্ডল‌কে রেহাই দিয়ে ও উড়ে এসে বসে টেবিলে রাখা আমার হাতে। পাশেই রাখা ছিল একটা বড় আতস কাঁচ। আস্তে করে সেটা তুলে তার মধ‍্যে দিয়ে দেখি। এবার পরিস্কার, বড় করে দেখা যাচ্ছে ওকে। সেও মুখ তুলে দেখছে আমায়। এখন আর ভয় পাচ্ছে না। সম্পূর্ণ কালো নয়, তার শরীরের রঙ ছিটছিটে, অবিশ্বস্ত ধূসর। মাথার দুপাশে চোখের মতো কিছু রয়েছে বটে কিন্তু তা আমার পরিচিত চোখের মতো নয়। পুঞ্জাক্ষী! 
     
    চোখের ভাষা পড়তে না পারলেও ছবিতে বা সামনাসামনি আলাপে কারুর চোখ না দেখতে পেলে একটু অস্বস্তি হয়। সন্ধ্যায় সানগ্লাস পরা মুখ দেখলে সেটা বাড়ে। আবার কখনো কেউ সাদা চোখে তাকালে‌ও দারুণ অস্বস্তি হয়। সেটা যে কেন, তা অনেক সময় সঠিক বোঝা যায় না।

    পিছন‌টা একটু নীচু, সামনের দু পায়ে ভর দিয়ে কাঁধটা ইষৎ উঁচু করে যখন সে ইতিউতি দেখছে কেন জানি না হায়েনার মত লাগছে ভঙ্গিটা। মাঝে মাঝে উপবৃত্তাকার মুন্ডু‌টা অকারণেই মোসাহেবদের মতো এপাশ ওপাশ নাড়ছে। মুখে একটা আঠালো, হেঃ হেঃ গোছের দেঁতো হাসি লেগে আছে কিনা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। ক্ষনে ক্ষনে দু হাত তুলে কচলে কচলে নমস্কার করছে আমায়। কেন তা জানিনা। ওটা নমস্কার কিনা তাও জানি না। কিন্তু ভঙ্গি‌টা সেরকমই লাগছে।

    আমি তার মধ‍্যে রাজনৈতিক নেতাদের প্রচলিত প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম। তখন বর্ষাকাল। এই সময় মাছিদের একটু প্রাদূর্ভাব দেখা দেয়। নেতাদের বেলাতেও তাই। অন‍্য সময় টিভির ছোট পর্দায়  বা রাস্তার বিরাট পোস্টারে ছাড়া বাস্তবে তাঁদের টিকি বিশেষ দেখা না গেলেও ভোটের আগে শীতের পরিযায়ী পাখিদের মতো তাঁদের ক্রমশ জনসমক্ষে আনাগোনা শুরু হয়। মিছিলে‌র পুরোভাগে হুডখোলা জীপের মাথায় জড়ো করা উত্থাপিত হস্তে, আকর্ণবিস্তৃত কৃত্তিম হাস‍্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তাদের। তখন তাদের একটা বড়সড় দুপেয়ে মাছি‌র মতো লাগে। নানান জনসভায় শোনা যায় ঘন ঘন “বন্ধুগণ” ধ্বনি সহযোগে উচ্চ কণ্ঠে উচ্চারিত নানা অবিশ্বাস্য আশ্বাসের ফিরিস্তি। ভোটের পর অচিরেই মিলিয়ে যায় তার অনুরণন। 

    এই ছিটছিটে, ধূসর, ঠিকমতো চোখ দেখতে না পাওয়া, ক্রমাগত হাত কচলানো, হায়েনা‌র মতো অস্বস্তি‌কর ঘিনঘিনে মাছিটা যেন ঐ সব রাজনৈতিক নেতাদের‌ই প্রতিভূ। হাজার তাড়ালেও যেতে চায় না। সাতাত্তর বছর ধরে বহুবার ভোট দিয়ে সুদিন ও সুশাসনের প্রত‍্যাশা‌ই সার। হতাশা‌ই সম্বল।

    আর এক ধরণের খানদানি ডুমো মাছি‌ও কালেভদ্রে দেখা দেয়। স্বভাবে অনেকটা‌ই ধূসরের সমগোত্রীয় তবে বাহ‍্যিক চেকনাই‌তে উচ্চমার্গের প্রজাতি বলে মনে হয়। উজ্বল নীল ও ফ্লূরোসেন্ট সবুজের চাকচিক্যময় সংমিশ্রণে অনবদ‍্য উপস্থিতি। আকারেও রাঘব বোয়ালের মত পেল্লায়। আম, কাঁঠালের গন্ধে তাদের বেশী আসতে দেখা যায়। তাদের আওয়াজ‌ পিনপিনে পোঁওওও নয়, বনবনে বোঁওওও।

    ঐ ডুমো মাছি গোত্রের হেভিওয়েট নেতাদের‌ও কিন্ত কার্যসিদ্ধি‌র জন‍্য ধুলো ওড়া জনসভায়, তেরপল ঢাকা বাঁশের মঞ্চে হাত পা নাড়িয়ে, গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে হয়। তবে ওসব প্রাচীন পদ্ধতি ছাড়াও তাঁরা অবলম্বন করেন যুগপোযোগী নানা নবীন পন্থা। ট‍্যুইটার, মেল, SMS, ফোন মারফৎ আসে মেঘ না চাইতে জলের মতো বাণী। এসবের মাঝে এক সৃজনশীল ডুমো আবার সবা‌ইকে ছাপিয়ে গেছে। মাঝে মাঝে নভোমন্ডল হতে বিতরিত হয় তাঁর প্রজ্ঞা। সাময়িক নগণ‍্য সমস‍্যায় বিভ্রান্ত জনসাধারণের লুপ্ত মনোবল উজ্জীবিত করার জন‍্য ঘোষিত হয় ভবিষ্যতে‌র উজ্জ্বল, রঙিন চিত্রকল্প। নিন্দুকে বলে সেগুলি নাকি নিছক‌ই প্রতিশ্রুতি। তবে রেকর্ড যেমন তৈরী‌ই হয় ভাঙ্গা‌র জন‍্য, প্রতিশ্রুতি‌ও তাই।

    যুগ যুগ ধরে মহারাজ - মহারাণী, সুলতান - সুলতানার তালে তাল মিলিয়ে নানা সেজো, মেজো উজিরের‌‌ও এহেন সব বিচিত্র রঙ-তামাশার সিলসিলা চলে আসছে। দেখে শুনে মনে পড়ে “শাপমোচন” ছবিতে হেমন্তের কন্ঠে সেই অনবদ‍্য গানটি। 

    “শোন বন্ধু শোন, 
    প্রাণহীন এই শহরের ইতিকথা,
    শীতের পাঁজরে, লোহার খাঁচায়
    দারুণ মর্মব‍্যাথা।”

    বিজ্ঞজনে বলেন নানা কারণে অহর্নিশি দুশ্চিন্তায় কাটানো উচিত নয়। বিশেষতঃ এমন সমস‍্যা নিয়ে বেশী না ভাবাই ভালো যার সমাধান নিজের হাতে নেই, যাদের হাতে আছে তাদের সমাধানের সদিচ্ছা নেই। তাই ঐ মর্মস্পর্শী গানটির কথা মনে আসতেই মাথায় এলো তার একট প‍্যারোডিও। আপন মনেই খানিক হাসলাম। মন ও শরীরের পক্ষে হাসি স্বাস্থ্যকর।

    শোনো গো বন্ধু শোনো 
    বেতারে শুধু আমার‌ মনের কথা
    বেকার, চাষার, রেপের খবরে 
    কেন এতো মাথাব্যথা?

    কার শাপ? কে করবে মোচন? এর উত্তর শাপগ্ৰস্থদের জানা নেই। শুধু জানা আছে এই শাপ থেকে অচিরে মুক্ত হ‌ওয়ার আশা নেই। বরং সুন্দর গানটি শোনা যাক।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩
  • ব্লগ | ৩০ মে ২০২৪ | ৩২২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন