কোটা পদ্ধতি নিয়ে হিন্দু উচ্চবর্ণের এলিটরা যে ঐতিহাসিক আঘাত করে যাচ্ছিলেন, তা এখন আইনিভাবে বৈধ। এর সুদূরপ্রসারী পরিণতি হতে পারে।
সমাজে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশের জন্য সংরক্ষণের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ রায় আসলে প্রগতিশীল, সূক্ষ্ম এবং ইতিবাচক পদক্ষেপের বিষয়ে বিচারবিভাগীয় ঐকমত্যের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির ইঙ্গিত দেয়। এখনও পর্যন্ত উচ্চবর্ণের হিন্দু অধ্যুষিত বিচারবিভাগের উচ্চতর অংশ তার নিজস্ব সামাজিক কুসংস্কার প্রতিরোধে এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জাতভিত্তিক সামাজিক বৈষম্য দূর করার একটি প্রক্রিয়া হিসাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকাই নিয়েছে।
সাম্প্রতিক জনহিত অভিযান বনাম ভারত ইউনিয়ন (২০১৯-এর ডাব্লিউপি ৫৫) মামলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতির রায় হল তার থেকে পিছিয়ে যাওয়ার দৃষ্টান্ত, সম্ভবত ভবিষ্যতের একটি আভাস। কারণ এটি সাংবিধানিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিচারব্যবস্থার মধ্যে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তদের কুসংস্কার লালন-পালন করার সুযোগ দেয়৷ সংখ্যালঘু অধিকার সংক্রান্ত সাম্প্রতিক রায়ের ক্ষেত্রে বিচারকরা তাঁদের সামাজিক পরিমণ্ডল থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত মতামতগুলিকে প্রকাশ করে নিজেদের সীমাবদ্ধতার প্রমাণ দিয়েছেন যা এখনকার শাসক আদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। হাস্যকরভাবে, জনহিত অভিযানের রায়টি মনে রাখা হবে ‘জন’ (জনসাধারণ)-এর ‘হিত’ (স্বার্থ) আদৌ আদালত রক্ষা করতে চায় কিনা সেই বিষয়ে।
রায়টি ২০১৯ সালের ১০৩তম সংবিধান সংশোধনী আইন নিয়ে। যা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল জেনারেল ক্যাটেগরির প্রার্থীদের জন্য ইডাব্লুএস সংরক্ষণ প্রবর্তন করে। সাংবিধানিক বেঞ্চ অর্থনৈতিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে ইতিবাচক পদক্ষেপের নীতি বজায় রাখতে সর্বসম্মত। প্রধান মতপার্থক্য হল: এসসি, এসটি, ওবিসি-দের বাদ দেওয়া যেতে পারে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল প্রার্থীদের ইডাব্লুএস কোটা থেকে, এমন কথা এই সংশোধনীতে বলা হয়েছে। যদিও ভিন্নমত পোষণকারী বিচারকরা এটিকে ‘নিষ্কাশনমূলক এবং বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকরা যুক্তিসঙ্গত শ্রেণীবিভাগের মতবাদের ওপর নির্ভর করে বলেন যাঁরা এসসি, এসটি এবং ওবিসি কোটার মধ্যে পড়েন, তাঁদের সঙ্গে ভিন্ন আচরণ করা যেতে পারে। এটি টেকনিক্যাল বিবরণ নয়। তবুও সম্ভাবনা থেকে যায়, সামাজিক ন্যায়বিচারের সাংবিধানিক নীতির ব্যাখ্যায় এই মতপার্থক্য ইতিবাচক পদক্ষেপের দীর্ঘস্থায়ী আইনি ঐতিহ্যের হৃদয়ে আঘাত করতে পারে।
নির্ভুলতার অভাব গুরুতর অবিচারের সমান
বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় আদালত, বিশেষ করে এনএম থমাস (১৯৭৬) এবং ইন্দ্র সাহনি (১৯৯২), সমতার সাংবিধানিক নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ বা ক্ষতিপূরণমূলক বৈষম্যের ধারণাকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু এর জন্য আদালত কিছু কঠোর শর্ত দিয়েছে। এক, সুবিধাভোগী গোষ্ঠীকে অবশ্যই যৌক্তিকভাবে এবং সহমর্মিতা দিয়ে সংজ্ঞায়িত করতে হবে। দুই, অবশ্যই দৃঢ় প্রমাণ দেখাতে হবে, সমাজের ওই নির্দিষ্ট অংশ অসুবিধা এবং কম প্রতিনিধিত্বের শিকার, যা সংরক্ষণের জন্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তিন, সংরক্ষণ ব্যবস্থার যে কোনো পরিবর্তন অবশ্যই সামগ্রিক সীমা লঙ্ঘন করবে না। পরিশেষে, এটি অবশ্যই ‘মেধা’ বা ‘দক্ষতা’-র ওপর অযাচিত প্রভাব বিস্তার করবে না।
জনহিত অভিযানের রায়ে ইডাব্লুএস সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আদালতের এই চারটি নীতি পরিত্যাগ করার ইচ্ছা দেখা গেল। এই ধারণা এড়ানো কঠিন যে আদালত ‘তাদের’ সংরক্ষণের জন্য এক সেট কঠোর শর্তের সমর্থন করে কিন্তু ‘আমাদের মতো লোকেদের’ সংরক্ষণের জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন মানদণ্ড গ্রহণ করতে পেরে খুশি।
সংজ্ঞা নিয়ে সমস্যা প্রথমে উঠে আসে। পাঁচজন বিচারকই একমত যে ইতিবাচক পদক্ষেপের ব্যবস্থা জাতিভিত্তিক অনগ্রসরতার জন্য ক্ষতিপূরণের বাইরেও প্রসারিত হতে পারে। নীতিগতভাবে এটি ঠিক আছে। যদি আপনার বাবা-মা ভালো স্কুল এবং ব্যয়বহুল কোচিংয়ের ব্যয়ভার বহন করতে না পারেন, তবে আপনি উচ্চশিক্ষা এবং চাকরির প্রতিযোগিতায় মারাত্মক অসুবিধার সম্মুখীন হবেন। এর সীমাবদ্ধতার জন্য ক্ষতিপূরণ প্রয়োজন। আসল প্রশ্ন হল এই সীমাবদ্ধতাকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় এবং ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থার রূপ ঠিক কী হওয়া উচিত।
বেশিরভাগ মানুষ এই জটিল বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক বলে যে “অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার সামাজিক ন্যায়বিচারের পাশাপাশি সমান গুরুত্বপূর্ণ”। ইডাব্লুএস কোটা প্রদানের ফলে যে মৌলিক অসঙ্গতিগুলি তৈরি হবে, এই ধারণা তা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ। তারা ব্যাখ্যা করতে পারে না কীভাবে পরিবর্তনযোগ্য এবং প্রায়শই ক্ষণস্থায়ী অর্থনৈতিক কষ্টের প্রতিকারের জন্য জাতিভেদের মতো গুরুতর, কাঠামোগত এবং স্থায়ী অসুবিধায় পূর্ণ একই প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়।
জাতভিত্তিক সংরক্ষণের ওপর সাধারণ নজরদারির পরিবর্তে আদালতের উচিত সমাজে তার তীব্রতাকে পরীক্ষা করা। অর্থাৎ, সামাজিক সুবিধাভোগী গোষ্ঠীকে সংরক্ষণের ফলে গড়ে ওঠা সুবিধাভোগীদের সমানভাবে গুরুতর অর্থনৈতিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে। আদালত সমসত্ত্বতার পরীক্ষাকেও ছেড়ে দিয়েছে সম্ভবত, যাতে সম্পূর্ণ গোষ্ঠী একই রকম সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে। ইডাব্লুএস গোষ্ঠী অত্যন্ত অসমসত্ত্ব হতে বাধ্য। বিশেষ করে অর্থনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। তাই বিচারবিভাগীয় নজিরগুলি এক সমসত্ত্ব শ্রেণীর সংকীর্ণ সনাক্তকরণের দাবি করবে। এটি নির্ধারণে নির্ভুলতার অভাব কম অথবা বেশি অন্তর্ভুক্তির কারণে যোগ্য ব্যক্তিদের প্রতি গুরুতর অবিচার হতে পারে।
এটি বিভ্রান্তিকর যে কীভাবে অনির্ধারিত ব্যক্তিগত অসুবিধা প্রশমিত করার বিধানটি দুর্লভ সরকারি পদে অগ্রাধিকারমূলক অনুদানের যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। দুঃখজনক যে সুপ্রিম কোর্ট অর্থনৈতিক অসুবিধার প্যারামিটার, সনাক্তকরণের মাপকাঠির প্রশ্নগুলি এড়িয়ে যায় এবং এটিকে ‘যখন তারা উদ্ভূত হবে’ তখনকার বিবেচনার জন্য উন্মুক্ত রাখে। (অনুচ্ছেদ ৯৬-৯৭, মহেশ্বরী জে)।
‘মেধা’ বাদ দেওয়া
আসুন এখন প্রমাণের দিকে ফিরে যাই। কিংবা দেখি প্রমাণের অভাব রয়েছে কিনা। আশ্চর্যের ব্যাপার, কোনো রায়ই ১০ শতাংশ ইডাব্লুএস কোটা নিয়ে মৌলিক প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করে না: জেনারেল ক্যাটেগরিতে ইডাব্লুএস জনসংখ্যা কত? আমরা যদি সিনহা রিপোর্টের দিকে যাই, ঘটনাচক্রে মূল প্রমাণ যা সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতির রায়ে উল্লেখও পাওয়া যায় না, দারিদ্র্যসীমার নিচে যারা জেনারেল ক্যাটেগরির অন্তর্ভুক্ত, তাঁরা দেশের জনসংখ্যার মাত্র ৫.৪ শতাংশ (দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ অ-এসসি/এসটি/ওবিসি জনসংখ্যার মধ্যে ১৮ শতাংশ বিপিএল পরিবার গণনা করা হয়েছে)।
তাঁদের ১০ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার ভিত্তি কী? সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতির রায় পরীক্ষামূলক এবং পদ্ধতিগত প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মাথা ঘামায়নি। এতদিন আদালত সর্বদা জোর দিত এম নাগরাজ বনাম ভারত ইউনিয়ন (২০০৮) মামলায়। এবার সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু টার্গেট গোষ্ঠীর বর্তমান প্রতিনিধিত্বের স্তর বা তার দারিদ্রের পরিমাপ যাচাই করেনি।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল মেধা ও প্রথাগত সমতার ওপর এই কোটার প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৯ সালে ইডাব্লুএস সংশোধনী কার্যকর হওয়ার পর একটি পরীক্ষামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে ‘অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল’ উচ্চবর্ণের টার্গেট গোষ্ঠীর ব্যাপকভাবে প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। যা ৪৪৫টি প্রধান উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংখ্যার ২৮ শতাংশেরও বেশি।
এছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকদের রায় খুশি মনে সংরক্ষণের ৫০ শতাংশ সীমাকে ধর্তব্যের থেকে বাদ দিয়েছে। অতীতে, ৫০ শতাংশ সীমা লঙ্ঘনের কারণে স্থানীয় সংস্থাগুলিতে ওবিসি সংরক্ষণ, তফসিলি অঞ্চলে শিক্ষাগত সমতা ব্যবস্থা, কৃষিজীবী জাতি এবং বঞ্চিত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য কোটা-সহ অসংখ্য সামাজিক নীতি বাতিল করা হয়েছে। এটি দ্বিচারিতার সবচেয়ে সুস্পষ্ট নিদর্শন বলেই মনে হয়। সীমার বাধ্যবাধকতা যেন শুধুমাত্র এতদিন ধরে বজায় থাকা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু বর্তমানে এই মৌলিক সাংবিধানিক নীতির কোনো মূল্য থাকছে না।
অবশেষে, সংরক্ষণ নিয়ে এই রায় সর্বাধিক আলোচিত ‘মেধা’-র কোন উল্লেখ করে না। প্রথম দুই বছরে ইডাব্লুএস-এর কাট-অফ ওবিসি-দের থেকেও কম ছিল। এই নিয়ে কোনো কথা হয় না। স্পষ্টতই মেধার বিষয় তখনই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যখন আমরা ‘তাদের’ সন্তানদের নিয়ে আলোচনা করি। 'আমাদের' সন্তানদের ক্যাপিটেশন ফি থেকে উপকৃত হওয়া, বিদেশে জাল ডিগ্রি অর্জন করা বা ইডাব্লুএস কোটা অর্জন করা নিয়ে কথা বলার সময় মেধার প্রসঙ্গ ওঠে না।
বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী তাঁর আদেশে উল্লেখ করেন, ‘দেশের বৃহত্তর স্বার্থে’ সংরক্ষণ পুনর্বিবেচনা করার এবং সময়সীমা চালু করার জন্য একটি বড়ো সমস্যা রয়েছে এবং এই উদ্যোগ ‘রূপান্তরমূলক সাংবিধানিকতার দিকে একটি পদক্ষেপ’। মাননীয় বিচারপতি মনে করিয়ে দেন ১০৪তম সংবিধান সংশোধনী অনুসারে সংসদ এবং বিধানসভায় এসসি/এসটি সংরক্ষণ ২০৩০ সালে শেষ হয়ে যাবে। অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের কোটা ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে (অনুচ্ছেদ ২৮-২৯)। বিচারপতি পারদিওয়ালা – যিনি জাতভিত্তিক কোটা সম্পর্কে তাঁর মতামতের কারণে ভর্ৎসনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন – তিনি জাতপাতহীন সমাজের দিকে অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে অনেক কথা বললেন। কারণ স্বাধীনতার সময় জাতপাতের ব্যবধান অনেকটাই দূর করা হয়েছে। বিচারপতি পারদিওয়ালা সংরক্ষণের সময়সীমা নির্ধারণের মূল অভিপ্রায় সম্পর্কে একটি জনপ্রিয় শঙ্কা স্পষ্টভাবে উত্থাপন করেছেন এবং জোরপূর্বক যুক্তি দিয়েছেন যে সংরক্ষণকে কায়েমি স্বার্থে পরিণত হতে বাধা দেওয়া উচিত (অনুচ্ছেদ ১৯০)। এই দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্যগুলি দ্বিচারী অবস্থানকেই প্রতিফলিত করে।
এমন পরিস্থিতিতে ‘সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য’ অর্থনৈতিক ভিত্তিতে ‘জেনারেল ক্যাটেগরি’-এর জন্য তৈরি কোটা একটি ব্যতিক্রমী পরিসর তৈরি করে। ভারতীয় শাসনব্যবস্থার সূক্ষ্ম ইতিবাচক পদক্ষেপের বৈধতা ভেঙে দেওয়ার ঝুঁকি নিতে পারে। যদি অনগ্রসর শ্রেণিভিত্তিক আঞ্চলিক দল এবং অন্যান্য বহুজন সামাজিক গোষ্ঠীগুলির প্রতিক্রিয়া এমন কোনও ইঙ্গিত হয়, তবে ভারতীয় বিচারবিভাগ কঠোর তদন্ত এবং অসন্তোষের মধ্যে পড়বে। জাতভিত্তিক জনগণনা এবং সংরক্ষণের ৫০ শতাংশ ঊর্ধ্বসীমা অপসারণের দাবিতে কোটা নিয়ে ইন্দ্র সাহনি ঐকমত্য আজ প্রায় অচল। কোনো একটি একটি সাংবিধানিক বিভাগ সত্যিকারের ন্যায়সঙ্গত এবং বুদ্ধিদীপ্ত দৃষ্টিভঙ্গি না নেওয়া পর্যন্ত বৃহত্তর সংঘাত এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলবে।
এই মুহূর্তে এক সাংবিধানিক রাষ্ট্রনীতিবিদের কথা মনে হচ্ছে যাঁর সাহায্যে সুপ্রিম কোর্টের ৯ জন বিচারক সংরক্ষণের মূল নীতিগুলির জন্য ধর্মনিরপেক্ষ এবং নৈতিক ভিত্তি বুনেছিলেন উচ্চবর্ণের কোটা নীতি প্রবর্তনের বিরুদ্ধে। সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিন্নমতের ঐতিহ্যের কথাও মনে পড়ে টি দেবদাসন মামলায় বিচারপতি সুব্বা রাওয়ের আদেশ (১৯৬৪) থেকে শুরু করে, এনএম থমাস মামলার (১৯৭৬) সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকদের মতামত এবং সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলি যেমন বিকে পবিত্র (দুই) (২০১৯), সৌরভ যাদব (২০২০) এবং নিল অরেলিও নুনেস (২০২২)।
এই সূক্ষ্ম ঐকমত্য প্রায়শই বিচারকদের প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে ভারতীয় এলিটদের জাতিভেদ, বৈষম্যের ক্ষোভ এবং দেরিতে পাওয়া স্বীকৃতির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। উচ্চবর্ণের চারপাশে রাজনৈতিক একত্রীকরণ এই মানসিকতার একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন প্রতিফলিত করে। যেখানে এই এলিটরা নির্লজ্জভাবে বর্তমান সুরক্ষাগুলি কেড়ে নিচ্ছে। হিন্দু উচ্চবর্ণের এলিটরা দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ ব্যবস্থার প্রতি ঐতিহাসিক আঘাত ও তার মজা উপভোগ করেছে।
সর্বশেষ রায় বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির এই পরিবর্তনকে আইনি মতবাদে রূপান্তরিত করেছে। সুবিধাভোগীদের এই বিদ্রোহের সুদূরপ্রসারী পরিণতি হতে পারে। বৈধতা নিয়ে সংকটের সূচনা করতে পারে। কলেজিয়াম ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে এবং বিচার বিভাগকে আরও প্রতিনিধিত্ব করে, শক্তি অর্জনের আহ্বান জানাতেও পারে। যদি সাংবিধানিক বেঞ্চের সদস্যদের উপাধি এবং আদর্শগত প্রবণতা জনসাধারণের বিতর্কের বিষয় হয়ে ওঠে এবং প্রায়শই অন্যায্য মন্তব্য হয়, তাহলে একই দায়ভার আদালতের উপরই বর্তায়।
কেউ আশা করতে পারেন যে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি একটি শান্ত ও স্থিতিশীল সামাজিক কাঠামো তৈরির জন্য বিচারবিভাগীয় অঙ্গীকারকে বাস্তবায়িত করবেন।