এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক

  • মহাভারত অষ্টম পর্ব

    শুদ্ধসত্ব ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | ২০ নভেম্বর ২০১১ | ১৫৩০ বার পঠিত
  • সনাতন ধর্ম পালন করেছেন বিদুর। তিনি নিষ্ঠ। প্রশ্নহীন তাঁর আচরণ। কখনো মনে হয়নি পিতার শিক্ষা তাঁর প্রশ্ন করে দেখা উচিত। আজ একী বিড়ম্বনা? কাল থেকে ভারী বিচিত্র সময় কাটছে বিদুরের। প্রথমত কুন্তী কাল রাত্রে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎপ্রার্থিনী হয়েছিলেন বটে, কিন্তু যুধিষ্ঠির ভিন্ন অপর চার পুত্র সম্পর্কে কিছুই জানাননি। কুন্তীর সঙ্গে আসা ঋষিকূল সভাস্থলে যেমন পরিচয় দিয়ে গিয়েছিলেন তেমন পরিচয়ের বাইরে বিদুরও কিছু জানলেন না। কুন্তীকে প্রশ্ন করা বিদুরের সাধ্যাতীত। আরো দুই পুত্রের জন্ম হয়েছে কুন্তীর গর্ভে এই জানাকেই অবলম্বন করেই চলতে হবে বাকী জীবন। তার উপরে তাঁর গৃহেই অবস্থান করতে চান কুন্তী। পারসব বিদুর ভোলেননি তাঁর পরিচয়। ব্যাসের পুত্র হলেও তিনি শুদ্রাণি গর্ভজাত। তাঁকে অন্যান্য সামাজিকের চেয়ে অনেক কঠিন ভাবেই মানতে হয় সামাজিক রীতিনীতি। একেই তো হস্তিনাপুর জুড়ে ছড়িয়ে আছে কুন্তীর নানান কাহিনী এবং এই আগমনে তার শাখা-প্রশাখা পল্লবিত হয়েছে মাত্র, তারই সঙ্গে তিনি নিজে জানেন ধৃতরাষ্ট্রের যথেষ্ট সন্দেহ আছে কুন্তী এবং তাঁর সম্পর্ক নিয়ে। সেখানে কুন্তী তাঁর গৃহবাসিনী হলে বিদুরের পক্ষে কতটা উচিত কাজ হবে তা জানা আবশ্যক।

    সেই প্রশ্নের উত্তরের জন্যই এসেছিলেন পিতার কাছে। পিতা অবস্থান করছেন কুতুহলশালায়। আজ সারা দিন নানান মানুষ আসবেন তাঁর কাছে। হস্তিনাপুর শুধু না, যে কোনো বড় শহরেই থাকে এই কুতুহলশালা। এখানে জ্ঞানী-গু ণী ব্যাক্তির সমাবেশ ঘটে যখন তাঁরা আসেন নগরে। সেখানে নাগরিকেরা নানা প্রশ্ন নিয়ে তাঁদের কাছে আসেন। ধর্মালোচনা থেকে দর্শনগত প্রশ্নের উত্তর সকলই তাঁদের কাম্য। পিতা সমগ্র শুধু এই দোয়াব নয়, দেবখন্ডের থেকে দক্ষিণাপথ সবেরই অন্যতম শ্রেষ্ঠ পন্ডিত। তাই হস্তিনাপুর আজ মুখিয়ে থাকবে তাঁর দর্শনে এবং এই কুতুহলশালায় আজ রাজারাও সাধারণের মতই। কাজেই বিদুর কুন্তী রাত থাকতে থাকতে ফিরে যাবার পরেই গৃহদেবতার পূজা সেরেই চলে এসেছেন। পিতা যেন জানতেন তিনি আসবেন। তাঁরই জন্য অপেক্ষা করুছিলেন কুতুহলশালার অন্দরের একটি কক্ষে। বিদুর তাঁকে সঙ্কটের কথা বলার আগেই এমন প্রশ্ন করলেন যে বিদুরের বাক্য রহিত দশা উপস্থিত। এমন প্রশ্ন শুধু কৃষ্ণ দ্বৈপায়নই করতে পারেন। এখনো কানে বাজছে সেই প্রশ্ন।

    -তুমি ধর্মাত্মা বলে পরিচিত হয়েছে পুত্র! বলতো ধর্ম কী?

    কিশোরবালককে এ প্রশ্ন করা সঙ্গত। তা বলে বিদুরকে? অন্য কেউ হলে এমনই ভাবনা আসতো তার মনে। কিন্তু বিদুর স্বয়ং পিতাকে চেনেন। জানেন গূঢ় এই প্রশ্ন। এর উত্তর তাঁর জানা থাকতেই পারেনা। থাকলে তাঁকে এই প্রশ্ন ব্যাস করতেন না। তিনি নিশ্চুপ থাকাই সঙ্গত মনে করলেন। শুধু বললেন,

    -আমি চিরকাল আপনার সন্তান শুধু নয়, ছাত্রও বটে। আমাকে আলোকিত করুন পিতা!

    এই বিনয়ই বিদুরকে বিদুর করেছে। ব্যাস তাঁর পিতা বলেই শুধু কুরুকূলে তাঁর প্রতিষ্ঠা নয়। গাঙ্গেয় বিশেষ স্নেহ করেছেন এই পারসবকে এই বিনয়ের জন্যই। পান্ডু অমিত বলশালী হবার পাশাপাশি স্বভাবে উদ্ধতও ছিল বটে। ধৃতরাষ্ট্রের সর্বদা অস্থির মতি আর ক্রুর সন্দেহগ্রস্ত। কিন্তু সকলের চেয়ে বঞ্চিত এই শুদ্রাণিসন্তানের বিনয় থাকতো সকলের জন্য। দেশে দেশে বিদুরের ধর্মজ্ঞানের কথা ছড়িয়েছে এমনি এমনি নয়। সস্নেহে পুত্রের দিকে চাইলেন ব্যাস। এখনো, এখনো এই পুত্র সেই কিশোরকালের মতই নম্র থেকে গেল।

    -ধর্ম শুধু ঈশ্বর চেতনা নয় পুত্র।

    এমনই কিছু আশা করেছিলেন বিদুর। বেদব্যাস প্রশ্ন করলে তার উত্তর এমনই হবে। এ ভাবনা মনে আসাই অন্যের কাছে যেখানে কঠিনতম কাজ সেখানেই বেদব্যাসের অনায়াস গতায়াত।

    -ধর্ম যাগ-যজ্ঞাদির বর্ণনা নয়।

    বিদুর শুনেছিলেন প্রপিতামহ পরাশরের নামে প্রচলিত পরাশর সংহিতার অনেকাংশই আসলে পিতার রচনা।

    -ধর্ম আচরণীয় কর্তব্য-কর্মাদির বিবরণ নয় মাত্র।

    বহু দূর থেকে কথা বলছেন যেন ব্যাস। মন তাঁর এখানে নেই। আছে অনেক দূরের কোনো সমস্যার মধ্যে নিবদ্ধ। কন্ঠস্বরে তেমন আভাসই পাচ্ছেন বিদুর।

    -ধর্ম এককালে ছিল সমাজ শাসনের রীতি-নীতি!

    বিদুর চমকিত হলেন। বহুবার মনুসংহিতা পড়তে পড়তে তাঁরও মনে হয়েছে ধর্মাধর্ম আসলে একধরণের বিচার প্রক্রিয়া। ন্যায়-নীতির নির্ণয়। সেখানে শুক্লা পঞ্চমীতে কী ভক্ষ্য তা শুধুমাত্র কার্য্য হিসেবে দেখলে চলবে না, দেখতে হবে উদ্দেশ্য কী তা! বিধানের পিছনে কোন ভাবনা কাজ করেছে তা না বুঝলে সেই বিধান কাজ করবেনা।

    -সেই ধর্মসংস্থাপন করতে হবে যা সমাজকে চালনা করতে সক্ষম। সমাজের মধ্যকার ভেদাত্মক শক্তিকে অতিক্রম করতে সক্ষম।

    ভেদাত্মক শক্তি? কোন শক্তি? পিতা কি শ্রমণিকদের কথা বলছেন? এই দোয়াব অঞ্চলে এদের শক্তি সত্যি ক্রমশ বেড়েই চলেছে। আগের সময়ের বহু প্রথা, বহু দেবতাকে এঁরা ক্রমাগত উপেক্ষা করে চলেছেন। নতুন নতুন নগরগুলোর আশেপাশে এঁদের অবস্থান। আবার এঁদের মধ্যে যাঁরা মতাদর্শে আরো বেশী বেদবিরোধী তাঁরা গহন অরণ্য-দুর্গম পাহাড়কে আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তুলছেন। এঁরা আগের কালেও ছিলেন। কিন্তু সেই সব শ্রমণেরা মূলত ব্যাক্তির আধ্যাত্মিক মুক্তিচিন্তায় ব্যাপৃত থাকতেন। এঁরা সেই আচরণ থেকে ক্রমশ সরে আসছেন। এঁদের চিন্তা জুড়ে থাকছে সমাজ। যে সমাজকে তাঁরা ত্যাগ করে যাচ্ছেন সেই সমাজকেই নতুন করে গড়ে তোলার কথা ভাবছেন। বিদুর ব্যাক্তিগতভাবে এঁদের অনেককেই জানেন। এঁদের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন এঁদের নীতি বিষয়ে জানতে। বহু ভাগে এখনো বিভক্ত এঁরা। এঁদের মধ্যে সব চাইতে বেদবিরোধী চার্বাকরা। গুরু বৃহস্পতির সূত্র ধরেই এঁরা বিরোধ করছেন বেদের। ইনি দেবগুরু বৃহস্পতি নন। ইনি মূলত শুক্রাচার্য্যের শিষ্য। বিদুর নিজেও যেহেতু দানব গুরু শুক্রাচার্য্যের শিক্ষা লাভ করেছেন তাই এঁদের সঙ্গে পরিচয় সহজ হয়েছে। শুদ্র বিদুর দানবগুরুর শিক্ষা লাভ করতে পেরেছেন, যা তাঁর অন্যান্য ভ্রাতাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। প্রতিটি রাজশাসনে এমন এক ব্যাক্তি থাকেন যিনি দানব প্রথা সম্পর্কে অভিজ্ঞ। না হলে বৈরী শক্তির সম্পর্কে ধারণা করা যাবেনা। এটি কূটনৈতিক কৌশল। পিতা কি এঁদের নিয়ে চিন্তিত আজ?

    -দানবগুরুর শিক্ষা না দেবগুরুর শিক্ষা বড় সে কথা, সে বিতর্ক তোমার যৌবনকাল আচ্ছন্ন করেছিল। আজ আশা করি সে ধোঁয়াসা কেটেছে?

    বিদুর লজ্জিত হলেন। একদা এ সম্পর্কে তাঁর অশেষ জিজ্ঞাসা ছিল। সেই সব জিজ্ঞাসার মূলে ছিল তাঁর আত্মপরিচয়। এই হস্তিনাপুরের দাস এবং শূদ্রদের নিপীড়ন তাঁর নিজের চোখে দেখা। হস্তিনাপুর থেকে সামান্য দূরত্বে যে কটি গ্রাম রয়েছে সেখানে চাষের কাজ করে যে শূদ্ররা তারা দাস মূলত। সমাজভূক্তির খাতিরে এদের শূদ্রায়ণ ঘটানো হয়েছে। বিজীত জাতির যোদ্ধা থেকে শুরু করে, তাদের পুত্র-পৌত্র-প্রপৌত্র সকলেই একই অভিধায় জন্ম-জন্মান্তর যাপন করবে এই সমাজের অভিলাষ। হস্তিনাপুরের সন্মানীয় নাগরিকেরা দৈহিক শ্রমকে ঘৃণা করেন। অন্য সকল রাজ শাসিত বা গণ শাসিত অঞ্চলের মতই এঁরাও রাজা বা শাসনতন্ত্রের কাছাকাছি থাকতে থাকতে নিজেদের শাসক ভাবতেই অভ্যস্ত। কায়িক পরিশ্রম শুধু মাত্র যুদ্ধাদি ক্রিয়ায় লাগে, অন্যথায় বিলাস-ব্যাসনে কালপাতই এঁদের বৈশিষ্ট্য। এঁদের দখলে থাকা কৃষিজমি কর্ষণ, গবাদিপশু পালন এ সকল কাজের জন্য নিযুক্ত দাস, যার শূদ্রায়ণও হয়নি, বা শূদ্র যে বংশপরম্পরায় দাস।

    হস্তিনাপুর দাসের জন্ম-মৃত্যু নিয়ে চিন্তিত নয়। দাস গেলে দাস আসে। কিন্তু শ্রমণ এবং চার্বাকদের কল্যাণে তারা ক্রমে চিন্তিত হয়েছে। দাসেদের বিক্ষোভ বেড়েছে ক্রমশ। তারা বা শূদ্ররা সমাজের কাছে নিজেদের দাবী তুলে ধরেছে। রামায়ণে রামচন্দ্রকে শম্বুক বধ করতে হয়েছে এই শূদ্রকে দমন করার জন্যই। বেদপাঠের মত কাজ আসলে জ্ঞানার্জনের কাজ। সেই জ্ঞান সকলের জন্য নয়। সকলেই বেদ-এর বিষয়বস্তু সম্যক জেনে গেলে শাসন চলবে কী করে? অথচ শূদ্ররা প্রথমে সেই কাজকেই মনে করেছে জরুরী। তাই বিধান জারী রাখতে হত্যা করতে হয়েছে এদের এবং সেই পরিণাম কথকের মুখে মুখে ছড়িয়ে দিতে রামায়ণ গানে অন্তর্ভূক্ত করতে হয়েছে এই বধ প্রসঙ্গ। অথচ সেই শূদ্রগর্ভজাত বিদুর যিনি পারসব নামেই খ্যাত আজ বেদজ্ঞ। কী অপার মহিমা ক্ষমতার! যাঁর পিতা বশিষ্ঠ বংশজ ব্যাসদেব, পিতামহী রাজমাতা সত্যবতী, তাঁর জন্য রামচন্দ্রের খড়?গও কাজ করেনা। এই বৈপরীত্য সেকালে ভাবিয়েছে বিদুরকে। তাই তিনি জানতে চেয়েছেন ইতিহাস। বেদ-উপনিষদ ইত্যাকার গাথা-কাহিনী-দর্শনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সমাজের ইতিহাস। সেই ইতিহাসের উপাদান হল জ্ঞানের ধারার দ্বন্দ্বগুলি। পিতা সেকালে তাঁর সকল জিজ্ঞাসার উত্তরও যেমন করেন নি তেমন তাঁকে বাঁধাও দেন নি জানতে।

    -মিটেছে পিতা।

    সত্যি কি? হ্যঁ¡-ও বলা যেতে পারে আবার না-ও। আজ তিনি হস্তিনাপুরের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে অভ্যস্ত। আজ তিনি জানেন এই তাঁর জীবন। এর বাইরের যে পৃথিবী তা বড় কঠিন-কঠোর। যে পরিচয়ে তিনি অধিষ্ঠিত তার বাইরে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই। যে কালে গড়ে তুলতে পারতেনও বা সেই কালে ওই রমণী তাঁকে বেঁধে ফেলেছে। তিনি হার স্বীকার করে নিয়েছেন। পরাভবের যন্ত্রণা ভুলতে চেয়েছেন ওই সান্নিধ্যে। কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয় তবু তো তিনি ভেবেছেন, তবু তো তিনি খুঁজেছেন, কিন্তু অন্য দুই বর্ণশংকর, তারা কী করেছে? তাঁর দুই ভ্রাতা রাজসুখে প্রমত্ত্ব হয়ে ভুলেই গ্যাছে তারা কোন পরিচয় ধার করে এ ধরিত্রীতে অস্তিত্ববান। অবশ্য তাদের কথা বলে কী হবে, এই ভরত বংশই তো সম্পূর্ণত বর্ণ-পরিচয়হীন। ক্ষাত্রধর্মের কথা মহারাজ ভরতের পালিত সন্তানের বংশে আসে কোথা থেকে? তিনি মেনে নিয়েছেন ক্ষমতাই সেই বস্তু যা তাঁদের পৃথক করেছে বাকী দাসগোষ্ঠী থেকে। তাই এ একরকম মেটাই বটে। আবার সেই প্রশ্নই তুমুল হয়ে ওঠে রাজপদ-সঙ্কট সময়ে। কোন অধিকারে তাহলে পান্ডু বা ধৃতরাষ্ট্র রাজা হয়? তিনি শারীরিক এবং বুদ্ধিগতভাবে অনেক সক্ষম। তাহলে? তারাও তাঁরই মত বর্ণসংকর! আজ, এই রাজ অধিকার নিয়ে এত কথাবার্তার মধ্যে একবারও তাঁর মনে আসেনি একথা, এ বলা মানে অসত্য ভাষণ।

    -পুত্র, ধর্ম বস্তুত একটি অনুচ্চারিত দর্শনগত অবস্থান। জন্ম-মৃত্যু-রাজকার্য্য সকলই সেই অবস্থান থেকেই নির্ধারিত হয়। এই অবস্থান নির্মাণ করতেই তোমার পূর্বজগণ নিজেদের উৎসর্গ করেছেন। সে কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি।

    পিতার দিকে তাকালেন বিদুর। কৃষ্ণ বর্ণের এই বিরাট পুরুষের শরীর এখনো অটুট। মুখের উপরে যে ছায়া দুলছে তা আসছে কেশভারের থেকে। জটাজুট ধারী ঋষির যে ছবি মনে আসে পিতা তেমনটি নন। বাল্যকাল থেকে বিদুর মনে করতেও পারেন না পিতা অসংবৃত থেকেছেন কবে? কেশ দীর্ঘ্য কিন্তু বিন্যস্ত এবং নিয়মিত পরিচর্য্যা হয় তার। পিতামহীর ছায়া পড়েনি ততটা যতটা লোকে বলে পিতামহের আদল দেখা যায় পিতার মধ্যে। কিন্তু সবল সুস্থ পেশীধারী এই দীর্ঘ্য পুরুষকে একদর্শনে সূরূপও বলা যাবেনা পিতামহের মত। বরং মুখমন্ডল ছোট দেহের তুলনায়। তাই এক অসমঞ্জস্য সৃষ্টি হয়েছে এবং সময় নিয়ে না দেখলে ভীষণ ভাবই প্রবল। বিশেষ করে চক্ষু। তীব্র, উজ্জ্বল এবং গাঢ় বাদামী অক্ষিতারা। এর গভীরে কি আছে তা বোঝা খুব কঠিন কাজ! খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই চোখ সরিয়ে নিতে ইচ্ছে হয়। যেন খুব ভেতর থেকে কেউ সব দেখে নিচ্ছে। সব ক্লেদ, সব পাপ, সব লোভ দেখে নিচ্ছে। খুব স্বচ্ছ মনের মানুষ না হলে এই চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে কেউ পারেনা। কেউ বুঝতে পারেনা এই মানুষটার মন আসলে কী বলছে!

    কেউ পারে না কি? না। একটু ভুল হল। একজনের কখনো ভুল হয় নি। তিনি মাতা স্বয়ং! অতি মৃদুভাষী ছিলেন তাঁর মাতা। পিতার সংশ্রবে আসার পর থেকে পিতামহী তাঁকে দাসীবৃত্তি থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। গড়ে দিয়েছিলেন একটি ছোট্ট আবাস স্থল, যাতে প্রাসাদের প্রাচুর্য্য না থাকলেও অভাবও নেই। সেই রম্য গৃহের একান্তে একটি পুষ্করিণী এবং একটি উদ্যান রয়েছে। মাতার পালিতা হংসের দল সেই পুষ্করিণীতে খেলা করে সারাদিন। হরিণ আর খড়গোসের দল খেলে উদ্যানে। মাতা এঁদের পরিচর্য্যায় থাকতেন সারাদিন। রাজকোষ থেকে আসতো মাসোহারা। মহারাণী সত্যবতী মাঝে মাঝেই মাতাকে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যেতেন প্রাসাদে পূজাদি উপলক্ষে। শূদ্রাণির এমন ভাগ্যে যারা ঈর্ষিত তারাও জানে সে ঈর্ষার খবর বাতাসও পেলে প্রাণ সংশয় হতে পারত। ইনি মহারাণী সত্যবতীর পুত্রবধু। রাণী অম্বিকা বা অম্বালিকা ক্ষেত্রজ পুত্রের গর্ভ, কিন্তু এই নারী অনূড়া ছিলেন। বিবাহ পিতা কখনো করেন নি ঠিকই, কিন্তু হস্তিনাপুর আগমনে এই গৃহ কখনো বঞ্চিত হয়নি তাঁর পদার্পণে। বিদুর জানেন মাতা জীবিত থাকলে এবারেও তার অন্যথা হত না। হস্তিনাপুর রাজশক্তির কর্ম সম্পন্ন হলে পিতা এই কুতুহল-শালা ছেড়ে চলে আসতেন তাঁর মাতৃ-আলয়ে, যেখানে বর্তমানে তিনিও বাস করেন একা। কিছুকাল সেখানে অতিবাহিত করতেন। তারপরে আবার বিদায় নিতেন। কেউ জানেনা কত দিনের সে বিদায়!

    কিন্তু মাতা কি অবিচল! দিনের পর দিন বছরের পর বছর প্রতীক্ষায় তাঁর যেন কোনো ক্লেশ নেই। অন্তত বিদুর কখনো দেখেননি। যেমন শোনেননি তাঁকে নিজের অতীতের কথা বলতে। অনেক অনুরোধে শুধু বিদুরকে এইটুকু জানিয়েছিলেন তিনি এক বিজিতা জাতির রমণী যাঁকে কাশী রাজকন্যা দাসী হিসেবে গ্রহণ করেছেন দাস বাজার থেকে ক্রয়ের পরেই। ব্যাস্‌! এই শুরু, এই শেষ। অতীত যখন মহান কিছু দিতে সক্ষম নয় তখন তাকে স্মরণ না করাই শ্রেয়। সেই জাতি অদ্যাবধি বিজিত। তাদের জয়ের বা স্বাধীনতার কোনো সম্ভাবনাই নেই। বিদুর এক বয়সে কল্পনা করার চেষ্টা করেছেন অনেক। কে হতে পারে? চেদী, মৎস্য, বিরাট, গান্ধার, কোশল? কোন রাজ্য? কোন জনপদ? অনেক বোঝার চেষ্টা করেছেন। মাতার শরীর গঠন থেকে পাঠ করে নিতে চেয়েছেন উত্তর। কিন্তু সেখানেও সমস্যা। গৌরবর্ণের সংস্কৃতভাষীদের সাধারণ যে চেহারা মাতাও তার ব্যাতিক্রম না। এখন এমন চেহারা বহু বহু রাজ্যের মানুষের বৈশিষ্ট্য। এর থেকে কিছুই বোঝা সম্ভব নয়। রাণী অম্বিকা বা অম্বালিকা এ প্রশ্নের উত্তর জানেন না। তাঁরা শুধু মাত্র দাসীকে জানেন, তার ইতিহাস তাঁদের আগ্রহের বস্তু কখনোই ছিল না। পিতাকে প্রশ্ন করেছিলেন একদিন সাহস ভরে। পিতা স্মিত হাস্যে বলেছিলেন, ইনি জন্মান্তর লাভ করেছেন। এঁর পূর্ব জন্মপরিচয় নিতান্তই গর্হিত কাজ। এখন এঁর পরিচয় পিতার পরিচয়েই। এর পরে বাকী ছিল ভাষা এবং কথন পদ্ধতির পরীক্ষা। কিন্তু পিতার আদেশে মাতার শিক্ষাও হয়েছে সংস্কৃতে। বৈদিক ছান্দস্‌ মাতার অধিগত না হলেও কথোপকথন প্রাকৃতের থেকে স্বতন্ত্র। বিদুরের বাল্যকালে এই সংস্কৃত শ্রবণ তাঁকে সাহায্য করেছে দ্রুত এ ভাষা আয়ত্ত্ব করতে। পিতার অভিলাষও এই ছিল।

    -পুত্র পান্ডুর অন্তেষ্ট্যিক্রিয়া থেকেই শুরু হবে সেই ধর্ম সংস্থাপনের কাজ।

    -আমি ঠিক বুঝলাম না পিতা।

    বলেই বিদুর ভাবলেন এটি অপ্রয়োজনীয় ছিল। বেদব্যাস যা জানাবার তা নিজেই জানাবেন, যা জানাবার নয় তা...।

    -মাতা সত্যবতী ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বাণপ্রস্থের, নিশ্চই জেনেছ তুমি?

    বিদুর বিষ্মিত। পিতা লক্ষ করেছেন সে বিষ্ময়ভাব।

    -কাল আমাকে জানিয়েছেন তাঁর ইচ্ছের কথা।

    কী আশ্চর্য্য! গতকাল সকালেও দেখা হয়েছে তাঁর সঙ্গে, কিন্তু একবারের জন্যও বলেন নি তিনি এম একটা সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন। পিতা যেন পড়তে পারছেন তাঁর মনোভাব।

    -আমি এই পরামর্শ দিয়েছি তাঁকে। সংসার দীর্ঘ্যকাল তাঁর সেবা লাভ করেছে। এই কুরুবৃক্ষটি বহু যত্ন পেয়েছে তাঁর। এবারে তাঁর ছুটির দিন এসেছে। কুরু বংশের উত্তরপুরুষদের হাতে এই শাসনের ভার তুলে দিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া এখনো মাথার উপরে রয়েছেন ভীষ্ম স্বয়ং! কর্তব্য-অকর্তব্য সকলি জানেন তিনি।

    -গাঙ্গেয় কি জানেন এই সিদ্ধান্ত?

    -জানবেন। মাতা আজ তাঁকে জানাবেন। কাল সভা হবে গণের। তার আগেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরী ছিল। অন্যথায় নানান কথার সুযোগ থেকে যেতে পারতো।

    বিদুর বুঝছেন এবারে। দ্বৈপায়ন তাঁর কোনো পরিকল্পনাকেই আংশিক অবস্থায় ছাড়ার পক্ষপাতী না। নতুন শক্তিকে স্থান করে দিতে গেলে পুরোনোকে সরে যেতে হবে। সে যদি নিজে সে স্থান ত্যাগ না করতে পারে তাহলে তাকে সরিয়ে দিতে হবে। তাহলে কাল কী হতে চলেছে সে কথা সুস্পষ্ট করে জানেন পিতা! কিন্তু পিতামহী এত সহজে ছেড়ে দিলেন? অত্যন্ত কঠিন এই রমণী। স্বামী-পুত্র-পৌত্রাদির শোককে অতিক্রম করেও চলার ক্ষমতা রাখেন। মহারাজ শান্তনুর মৃত্যুর পরে দ্ব্যার্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি সহমৃতা হতে প্রস্তুত নন। তাঁর পুত্রদের প্রতিপালন অনেক বড় ধর্ম তাঁর কাছে। নি:শব্দে তাঁকে সমর্থন করে গিয়েছিলেন ভীষ্ম। হস্তিনাপুরের সংলগ্ন অঞ্চলে এই সহমরণের প্রথা খুব যে প্রচলিত এমনও নয়। গণের সভা তাই জোর করতে পারেনি। এ যদি দোয়াবের পশ্চিম বা উত্তরাংশ হত তাহলে এই নিয়ে অনেক বড় যুদ্ধের আশঙ্কা ছিল। কিন্তু এখানে উত্তর কুরুতেই বিবাহ সংক্রান্ত নিয়মাদি অনেক শিথিল। সেখানে এখনো কুমারীদের ইচ্ছামাফিক বিহার স্বীকৃত। কাজেই গণের মধ্যে কারোর কারোর ইচ্ছে থাকলেও কুরুবংশের রাজত্বকে উৎখাত করার উপায় ছিল না। সামরিক শক্তিতে দেবব্রত যতকাল আছেন ততকাল এই স্বপ্ন সম্ভবত রাজা জরাসন্ধও দেখবেন না।

    একই কাজ সত্যবতী করেছিলেন তাঁর পুত্রবধূদের জন্যও। অনেকটা তাঁরই জন্য তাঁর পুত্রের মৃত্যুর পরেও দুই রাণীর সহমরণের কথা ওঠেনি। উপরন্তু নিয়োগপ্রথায় সন্তান লাভ করেছেন তাঁরা। বিদুর জানেন সেই ক্ষোভ তাঁদের রয়ে গ্যাছে। একে এই বিবাহ তাঁরা করেছিলেন বীর্য্যশুল্কা হয়ে, তায় যিনি সেই বীর তিনি নিজে গ্রহণ করেননি তাঁদের। চোখের সামনে দেখেছেন এই কারণেই তাঁদের জ্যেষ্ঠা মৃত্যুবরণ করেছেন। মহাবল শাল্ব নিজের সন্মানকেই অনেক বেশী বড় মনে করেছেন প্রেমিকার আর্তির চেয়ে। অন্যদিকে গাঙ্গেয় তাঁর শান্তনু এবং সত্যবতীর জন্য করা কঠোর প্রতিজ্ঞা ভাঙেননি শত অনুরোধেও। দুই পুরুষ তাঁদের তাঁদের অবস্থান বজায় রেখেছেন এবং তার দাম দিতে হয়েছে এই রমণীদের। হয়তো ভীষ্ম বা পিতামহীর সঙ্গে সম্পর্ক তাঁদের সহজ হয়নি এই সব কারণে। কিন্তু এই দুই কুশীলব এই নাট্যের এক অঙ্কে এসে অন্তত দুজনের উপকারই করেছেন। তবুও এঁদের সম্পর্ক সহজ হয় নি। তাহলে এঁরা এখন কী করবেন?

    -বিচিত্রবীর্য্যের দুই রাণীও সহগমন করবেন মাতার!

    বিচিত্রবীর্য্যের রাণী! পিতা কখনো এঁদের ক্ষমা করতে পারেন নি। বিদুর রথারূড় হয়ে ভাবছিলেন। পিতার কর্মের বিচার তাঁর পক্ষে অনুচিত। কিন্তু না ভেবেও বিদুর পারেন না যে পিতা সেই অপমান কখনো ভোলেননি। তাহলে তাঁর অবস্থানে কী করতেন পিতা? যে রমণীকে চিরকাল চেয়ে এলেন তিনি ভ্রাতৃবধূ। কোনো দিন বিবাহ তাঁর সম্ভব হল না। তার উপরে সেই রমণীর গর্ভে বহু পুরুষের সন্তান। কোনো দিন সে এ নিয়ে যে ওই রমণী বিচলিত এমনও বিদুর কখন বোধ করেননি। আবার কখনও তাঁর প্রতি অযত্নশীল এমনও তিনি বলতে পারবেন না। অন্তত যতক্ষণ হস্তিনাপুরের সঙ্গে এই রমণীর সম্পর্ক থাকবে ততদিন এর অন্যথা বোধ হয় হবেনা। তাহলে? কখনো বিদুরও ভাবতে পারতেন যে তাঁকে নিপুণ ভাবে ব্যবহার করে গেলেন এই পৃথা! ভাবেন নি কখনো এমনও নয়। কিন্তু সে ভাবনা স্থায়ী হয়নি কুশল বিনিময়ে মনের থেকে কখন যে সকল খেদ মিটিয়ে দিয়েছেন পৃথা তা বিদুর টেরও পাননি। একী ছলনা? যদি তাই হয় তবে তাই হোক! এই ছলনাই আজন্মের সম্পদ তাঁর। বঞ্চিত, অবহেলিত বিদুরের অন্তত কখনো নিজেকে পুরুষ এবং বলবীর্য্যশালী ভাবার অবকাশ এসেছে পৃথার হাত ধরে। বক্ষপট আকাশের মত বিস্তৃত করে এঁকে ধারণ করেছেন তিনি। যে সুধা তাঁর নিবিড় সঙ্গে তিনি পান করেছেন তাকে অমৃত জেনেই পান করেছেন। সে যদি বিষ হয় তাহলেই বা কি? এ ছাড়া তাঁর ছিলই বা কী? পিতা বেদব্যাস, পিতা পন্ডিতস্মন্য। কিন্তু হয়তো সমর্পণ শেখেননি। নারীর কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হয় তাকে পেতে গেলে। কোনো শাসন, কোনো বিচার, কোনো ক্ষমতা তার অন্তর জয় করতে সক্ষম নয়! শুধু একান্ত সমর্পণেই এ পাওয়া চরম হয়, পরম হয়। বিদুর হাসলেন। তাঁর কোনো ক্ষোভ নেই আজ, কোনো লোভ নেই। তিনি পরিতৃপ্ত। পৃথা তাঁর কাছেই এসেছে ফিরে। পিতার কাছে এসেছিলেন পৃথাকে নিজ গৃহে রাখা কতটা সঙ্গত তার বিচার জানতে, কিন্তু আর প্রয়োজন নেই তাঁর। এ যদি অসঙ্গত হয় তাহলে সম্পূর্ণ সৃষ্টিই অসঙ্গত, স্রষ্টাও! তাঁর শূন্য গৃহ আজ পূর্ণ হতে চললো। বিদুর উদিত সূর্যের দিকে তাকালেন। এতদিনে, এতদিনে তাঁরও মনে হচ্ছে এই জীবন শুধু অকারণ গেলোনা, শুধু অপচয়ে গেলোনা!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ২০ নভেম্বর ২০১১ | ১৫৩০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Censor Board | ***:*** | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১০:৩০89035
  • বিড়ি খাবেন না
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন