বালকদের পরনে ছিল চীরবস্ত্র। সেই অবস্থায় তারা যখন এসেছিল তখন বাকি সকলের মতই দুর্যোধনও দেখেছিল। তিনটের উচ্চতা তারই মত। বাকি দুটো এখনো বেশ কিছুটা ছোট তার চেয়ে। সবচেয়ে ভাল গড়ন ভীমের। তারপরে অর্জুন। অর্জুনের চেহারা আর ভীমের মধ্যে পার্থক্য হল ভীমকে দেখলেই মনে হয় সে খাদ্যরসিক। স্নেহ পদার্থ কিছু বেশি। অন্যদিকে অর্জুনের চেহারার মধ্যে আছে দৌড়বীরের মতন ছিপছিপে ভাব। যুধিষ্ঠিরের চেহারাতে সবলতার চেয়ে অনেক বেশি আছে সৌকুমার্য্য। নকুল আর সহদেব দেখতে অনেকটা একই রকম। সহদেবের মুখে চোখে আছে সবচেয়ে বেশি লাবণ্য। তার চোখও দেখার মতন। সকলেরই চোখের গড়ন টানাটানা। ভারী অক্ষিপল্লব সহদেব ছাড়া কিন্তু কারোর নেই। সহদেবের মতই টানা ভ্রু আছে অর্জুনের। কিন্তু ধারালো মুখের মধ্যে আছে একধরণের হালকা তাচ্ছিল্য। সেই তাচ্ছিল্যই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে। সহদেব সুন্দর হলেও তার মধ্যে এই বাড়তি টানটা নেই। বাকি তিনজনের মধ্যে নকুল আর যুধিষ্ঠিরের চোখের মধ্যে আছে শান্ত ভাব। কিন্তু নকুলের আচরণে রয়েছে কিঞ্চিত আড়ষ্টতা, যা আবার নেই যুধিষ্ঠিরের মধ্যে।
দুর্যোধন খুব খুঁটিয়ে দেখেছিল তাদের। এবার যখন সামনাসামনি আলাপ হল তখনও দেখেছে সে। এরা সকলে তার ভাই। তার আরো একশোটা ভাই-এর মধ্যে আছে তার প্রতি অন্ধ আনুগত্য। তারা একসঙ্গে বড় হয়েছে। তারা জানে দুর্যোধনের আদেশ মানে তাদের করণীয় কর্তব্য। ভাল বা মন্দ এ প্রশ্ন করার স্বভাব তাদের তৈরি হয়নি। পিতা ধৃতরাষ্ট্রও তাই চেয়েছেন। দুর্যোধন তাদের একমাত্র নেতা। কিন্তু এদের ক্ষেত্রে তা যে হবেনা তা এখনই সে বুঝে নিতে পারছে। এরা পৃথক। এদের চালচলন পৃথক। বিনয় এদের সকলের মধ্যেই আছে। আছে নম্রতা। চাঞ্চল্য যদি কিছু থেকে থাকে তাহলে তা আছে ভীমের। তার স্বভাব কৌতুহলী। সব কিছুই সে দেখে নিচ্ছিল। সবাইকে দেখে নিচ্ছিল। বারেবারে দুর্যোধনের চোখ পড়ছিল এই বালকের উপর। অনেকটা তারই মতন যেন! আকারে, আচরণেও। কিন্তু মাথাটা তার মতন নয় এটা নিশ্চিত। হলে এই গৃহে প্রবেশ করার সময়ে সকলের পাদুকা একস্থানে রাখার জন্য অত সময় ব্যয় করতো না। দুর্যোধন কারোর জন্যই এতটা সময় দেবেনা।
পিতামহ গাঙ্গেয়, প্রপিতামহী সত্যবতীর উপস্থিতিতে সকলের সঙ্গেই পরিচয় ঘটেছে তার। অল্প কিছু কথাও হয়েছে। তেমন আলাদা কিছু না। সে শুধু জেনে নিয়েছে এরা শস্ত্র বিদ্যায় কত দড়! যদিও তাদের এখনো আনুষ্ঠানিক শস্ত্রবিদ্যা চর্চা শুরু হয় নি, তবুও সে স্বেচ্ছায় কিছু শিক্ষা আয়ত্ত্ব করেছে এর মধ্যেই। তার ভাল লাগে এ শিক্ষা। কিন্তু এদের এখনো এ শিক্ষা হয়নি। অবশ্য স্বাভাবিক। বনে-জঙ্গলে কেই বা শিক্ষা দেবে? পিতামহ তাদের জানিয়েছেন এবারে তাদের প্রথাগত শিক্ষা শুরু হবার সময় আসছে। সকলেই যেন মন দিয়ে শরীরচর্চা করে। তারই সঙ্গে পাঠাভ্যাসের ক্ষেত্রেও কোনো শৈথিল্য দর্শিত না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। রাজকুমারেরা খেলাধুলোর দিকে মনোনিবেশ করলেই শুধু চলবেনা, তাদের আরো অনেক বড় কাজ থাকে। সুতরাং, আচার্য্য কৃপের অধীনে প্রাথমিক বিদ্যাগুলি তাদের এবারে দ্রুত আয়ত্ত্বে আনতে হবে। শ্লোকাভ্যাসের পাশাপাশিই সঙ্গীত, নৃত্য ও বাদ্যচর্চায় তাদের দ্রুত কৃতবিদ্য হতে হবে। কিছুকালের মধ্যেই আসবেন শস্ত্রগুরু। পিতামহ নিজের দায়িত্বে তাদের শিক্ষার প্রণালী নির্মাণ করেছেন এ কথা জানে দুর্যোধন। মন্ত্রী কর্ণিক একবার মহারাজ ধৃতরাষ্ট্রের কাছে এ নিয়ে অনুযোগ করেছিলেন। তারই উপস্থিতিতে পিতা মহামন্ত্রীকে আদেশ করেন এ বিষয়ে কদাপি পিতামহের ব্যবস্থার সম্পর্কে কোনো কথা না বলতে। গাঙ্গেয় পক্ষপাতী হতে পারেন রাজনৈতিক বিচারে, কিন্তু শিক্ষক বা গুরু হিসেবে অতুলনীয় তিনি। শস্ত্রশিক্ষায় কী করণীয় তা তাঁর চেয়ে ভাল কেউ জানবেনা। মহামন্ত্রী কর্ণিক এর পরে চুপ করে থাকাই শ্রেয় বলে বুঝেছিলেন।
কিন্তু সকল বিষয়েই তিনি চুপ করে থাকেন না। সেটা তাঁর কাজও না। যেমন এখন তিনি বক্তা, বাকিরা শ্রোতা। বাকিরা বলতে মহারাজ স্বয়ং এবং সে নিজে। পঞ্চপাণ্ডব ফিরে গিয়েছে তাদের আবাসে। গাঙ্গেয় এবং সত্যবতী যে যাঁর স্থানে। কাল চলে যাচ্ছেন সত্যবতী। মহারাজ পাণ্ডুর মৃত্যুর রাষ্ট্রীয় শোকপালন শেষ হয়েছে। এবারে হস্তিনাপুর ফিরছে নিজের ছন্দে। পঞ্চপুত্রের স্বীকৃতির পরে এখন বোধহয় সকলের কাছেই পরিস্কার এই রাজ্যের উত্তরাধিকারী কে হবে!যুধিষ্ঠিরের আজকের আচরণেও তার ছাপ আছে বলেই কর্ণিক মনে করছেন। গাঙ্গেয় তাঁর পরিকল্পনা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। ধার্তরাষ্ট্রদের সঙ্গেই পাণ্ডবদের শিক্ষা হবে। রাজকোষাগার বহন করবে তার খরচ। তাছাড়া কর্ণিকের কাছে সংবাদ আছে যে পাণ্ডূপুত্ররা প্রাসাদে না থাকলেও, তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্বে স্বয়ং গাঙ্গেয় থাকছেন। তাঁর প্রহরীদের মধ্যে থেকেই বেছে নেওয়া হয়েছে বিদুরের সংলগ্ন কুন্তীর আবাসের প্রহরীদের। চব্বিশ ঘন্টা তারা থাকবে পাহারায়। সেই আবাস নিশ্চিদ্র যাতে হয় তার সবরকম প্রস্তুতিও হয়ে গিয়েছে। পরিকল্পনা এত গোপনে হয়েছে যে কুন্তীও জেনেছেন সব শেষে। সম্ভবত কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ছাড়া বিদুরই একমাত্র জানতেন এ কথা। এবারে?
এই কথাই ঘুরছিল ধৃতরাষ্ট্রের মনে। এবারে? ধীরে ধীরে নিশ্চিতভাবে যুধিষ্ঠির পৌঁছে যাবে সিংহাসনে। তিনি দেখবেন? বহুকাল আগে কর্ণিক পরামর্শ দিয়েছিল বনে ভ্রমণরত মহারাজ পাণ্ডুকে হত্যা করার। বনজদের সঙ্গে মিশে গিয়ে হত্যা করে সে হত্যার দায়ভার তাদের উপরেই চাপিয়ে দেবার। বারেবারে পাণ্ডুর সঙ্গে এদের বিরোধ হয়েছে, তাই সেটা অস্বাভাবিক হত না। বা চিত্ররথের মতন কোনো গন্ধর্বকে নিয়োগ করা পাণ্ডুকে হত্যার জন্য। প্রথম দিকে ধৃতরাষ্ট্র রাজী হতে পারেননি। ভেবেছিলেন তাঁর ভ্রাতা যে কঠিন অসুখে ভুগছে তাতে তার সন্তান জন্ম দেওয়া সম্ভব না। তাহলে আর কী? তারপরে যখন বিষয়টা নিয়ে একটু ভাবতেও বসলেন তখন দেরি হয়ে গিয়েছে। পাণ্ডু ক্ষেত্রজ পুত্রের পিতা। তাছাড়াও শতশৃঙ্গ পর্বতে ঋষিদের মধ্যে তাঁর বসবাস। সেখানে এ পরিকল্পনা সফল করা বেশ ঝুঁকির কাজ হবে। ঋষিদের মধ্যে যুদ্ধাদি বিদ্যায় দক্ষ অনেকেই। স্থানীয় অধিবাসীরাও আরণ্যক হলেও ঋষিদের সঙ্গে সুসম্পর্কের ভাগীদার। তাদের অসুখ-বিসুখে চিকিৎসাদির মাধ্যমে তাদের জীবনের সঙ্গে এরাও জড়িয়ে গিয়েছিলেন। সুতরাং সে চেষ্টা ব্যার্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু এবারে?
হস্তিনাপুরে তাঁর শাসন এখনো চলছে। কিন্তু গণের সভা যেন সেই শাসনের দেহে ফুরিয়ে যাবার চিহ্ন ছেপে দিয়ে গিয়েছে। সভার আগে অবধিও প্রতিদিন সকালে যখন সিংহাসনে উঠে বসতেন তখন তাঁর মনে হত তাঁর চেয়ে সুখী মানুষ কে আছে! আজ সেই সিংহাসনেই তাঁর কুন্ঠিত লাগে। মেজাজ ঠিক থাকেনা। কর থেকে সামান্য চুরি সবেতেই রাজার বিচার আর তাঁর পক্ষে খুব সহজ কাজ হচ্ছে না। বিগত কয়েকটা দিন তিনি অনেক বেশি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। বন্ধু সুধন্য তাঁকে এ বিষয়ে সচেতন করেছে গতকাল। এই পরিমাণ হিংসা নাগরিক ভাল ভাবে নেয় না। প্রথম দিকে উত্তেজনা থাকলেও তার পরে কিন্তু তারই আশেপাশের লোকেরা যখন এই হিংসার দ্বারা আক্রান্ত হয় তখন তার মধ্যেও ক্ষোভের সঞ্চার ঘটে। এমনিতেই পাণ্ডবকূলের সমর্থকেরা এখন থেকেই বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছে, তার উপরে এমন চলতে থাকলে তারা না যুধিষ্ঠিরের দ্রুত রাজ্যাভিষেক দাবিই করে বসে। শুনে আরো মেজাজ খারাপ হয়েছে ধৃতরাষ্ট্রের। সুধন্যকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। জানেনও, তার এ ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু ক্ষমা করেননি পিতা ব্যাস এবং গাঙ্গেয়কে। পিতা নাহয় চিরকালই তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট তিনি জানেন, যেমন অসন্তুষ্ট ছিলেন তাঁর মাতার প্রতি। কিন্তু গাঙ্গেয়? তাঁকে কম সন্মান করেছেন তিনি? তবুও গাঙ্গেয় ভোলেন না তিনি অন্ধ। কিন্তু কেন? এ কি তাঁর অপরাধ? জন্মান্ধ ধৃতরাষ্ট্রের কী অপরাধ? গাঙ্গেয় তাঁর সহায় হলে একা পিতার পক্ষেও কিছু করা কতটা সম্ভব ছিল?
ধৃতরাষ্ট্র যবে থেকে শাসনে বসেছেন তবে থেকেই তিনি চেষ্টা করেছেন পিতাকে হস্তিনাপুর থেকে দূরে রাখতে। জ্যেষ্ঠ তিনি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর অধিকার পিতা দিয়েছেন পাণ্ডুকে, এ কথা তাঁর পক্ষে ভোলা সম্ভব? বেদব্যাস যদি প্রথার বিরুদ্ধে দাঁড়াতেন তাহলে কজন তাঁর বিরোধ করতো? প্রথা তিনি প্রয়োজনে ভাঙেন না এমনও তো না!বিদুরের মত শুদ্রাণি গর্ভজাতকে বেদ শিক্ষা দিতে তিনি তো কসুর করেননি? এবার আবার সেই একই শত্রুতা করে গেলেন পিতা। যে কদিন হস্তিনাপুরে ছিলেন ব্যাস সেই কদিন ধৃতরাষ্ট্র তাঁর সঙ্গে হাতে গুণে সাক্ষাৎ করেছেন এবং সেই সব সাক্ষাৎকারই সৌজন্যমূলক। সে সব সাক্ষাৎকারের আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য হল, এ পিতা-পুত্রের সাক্ষাৎকার না, যেমন হত পাণ্ডুর আমলে, এ হল অতিথি ব্রাহ্মণ জ্ঞানী বেদব্যাসের সঙ্গে রাজার সাক্ষাৎকার।
যা বোঝানোর তাই তিনিও বুঝিয়ে দিয়েছেন। যে দিন তাঁকে বঞ্চিত করেছেন পিতা সেইদিন থেকে তিনিও বঞ্চিত করেছেন পিতাকে পুত্রপ্রেম থেকে। এমন তাঁর ক্ষেত্রে দুর্যোধন করুক তিনি নিজে চাইবেন না। তিনি চাইবেন দুর্যোধন যেন মনে রাখে তার অন্ধ পিতা তাকে তার প্রাপ্য অধিকার দিতে যথাসাধ্য লড়েছিলেন, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র থেকে নিয়তি সকলের বিরুদ্ধেই। মহামন্ত্রী কর্ণিক ঠিকই বলেছেন, শত্রুর বিনাশই একমাত্র রাজনীতি। তা সে যে ভাবেই হোক্ না কেন!
যুধিষ্ঠির যখন তাঁকে প্রণাম করতে এসেছিল তখন দীর্ঘ্যক্ষণ তার হাতদুটি ধরেছিলেন তিনি। স্পর্শে, গন্ধে অনুভব করছিলেন। নরম হাত। দীর্ঘ্য আঙ্গুল, কিছুটা কর্কশ হাতের তালু, খাটনির চিহ্ন আছে এতে। পেশীগুলি যোদ্ধার পেশী না এখনো। সংশয় আছে হাতে। আছে গুটিয়ে যাবার প্রবণতা, ভীত হবার প্রবণতা। তাঁর আঙ্গুলের মধ্যেই গুটিয়ে যাচ্ছে এই হাত। অস্বস্তিতে। এ হাত হবে শাসনের হাত? দুর্যোধনের হাত কঠিন, দীর্ঘ্য আঙ্গুল। পেশীগুলি স্পষ্ট। বাকি পাণ্ডবদের হাতের মধ্যে ভীমার্জুনের হাত যোদ্ধার প্রকৃত হাত। তারিফযোগ্য হাত। কিন্তু যুধিষ্ঠিরের না। এ হাতে শাসন যেতে দিলে কি হবে কুরুকূলের ভাগ্য? যে পৌরুষ, যে দৃঢ়তার সঙ্গে শাসন চালাতে হয় তা কি এই হাতে আছে? এ হাত আসলে, তাঁর ভাবতে দ্বিধা হয়না, বিদুরের হাত। তাত্ত্বিক, পন্ডিত, জ্ঞানী বিদুর। কিন্তু শাসন তাঁর কর্ম না। কঠোর এবং ক্ষিপ্রতার গুণসম্পন্ন বিদুর কখনোই যোদ্ধা না। একই কারণে যুধিষ্ঠিরও না। কুরুবংশের মধ্যে আসলে যে মিশ্র রক্ত ঢুকেছে তার মধ্যেও এখনো ক্ষত্রিয় ধারা কিছুটা হলেও বয়ে নিয়ে চলেছে দুর্যোধন। তাঁর দৃঢ় ধারণা যুধিষ্ঠির বিদুরের সন্তান। বাকিরা কার বা কাদের জানা নেই। কিন্তু ক্ষত্রিয় ধৃতরাষ্ট্রের সন্তান দুর্যোধন। সে-ই পারবে এ বংশ গরিমা অক্ষুণ্ণ রাখতে। পুত্রকে স্পর্শ করতে ইচ্ছুক হলেন তিনি। তাকে ডাকলেন কাছে। এতক্ষণ তাঁর ভাবনার মধ্যে কোনোভাবেই বাধা না দিয়ে চুপ করে বসে থাকা দুর্যোধন এগিয়ে এল তাঁর কাছে। পুত্রকে কাছে টেনে নিলেন। বুকের মধ্যে টেনে নিলেন তিনি। পারতে হবে। তাঁকে যুধিষ্ঠিরের শরীরের বালকোচিত গন্ধকে, নরম স্পর্শকে ভুলে গিয়েই পারতে হবে। এবার হারা চলবে না।