এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ভ্রমণ  ঘুমক্কড়  খাই দাই ঘুরি ফিরি

  • জয়ের বিশ্বজয়

    জয় মণ্ডলের সাথে আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা
    ভ্রমণ | ঘুমক্কড় | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৮১২৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৪ জন)
  • ভ্যান্ডারলুস্ট। আর কোনো শব্দে ব্যাখ্যা করা যাবে না এ কাণ্ড। ১৯৭৫। বাঁকুড়ার ছোট্ট মফস্‌সল শহর বিষ্ণুপুর থেকে বেরিয়ে পড়লেন তিন তরুণ। দুনিয়া ঘুরে দেখতে হবে। সাইকেলে। ইন্টারনেট নেই। জিপিএস নেই। অর্থবল নেই। মাতৃভাষা বাংলা বই দুটি ভাষা জানা নেই। সম্বল স্রেফ স্বপ্ন। আর জেদ। হাল ছাড়লেন দুজন। কুছ পরোয়া নেহি। ঘুরতে থাকল তৃতীয়জনের সাইকেলের চাকা। ১৭ বছর। ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। ১৫৪টি দেশ। আজও এ কীর্তিতে তিনি অদ্বিতীয়। এ সফরনামা শুধু রুদ্ধশ্বাস নানা ঘটনার ভিড় নয়, নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধানের মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাওয়া এক মুসাফিরের অনন্য জীবনবীক্ষা। এই প্রথম দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে সে পরমাশ্চর্য সফরের অনুপুঙ্খ কাহিনি শোনাচ্ছেন জয় মণ্ডল। আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা


    প্রথম পর্ব—প্রস্তুতি



    সাইকেল শেখা

    নীলাঞ্জন হাজরা—সবার আগে যেটা জানতে চাইব, ১৯৭০-এর দশকের বাঁকুড়ার একটা ছোট্ট মফস্‌সল শহরের এক মধ্যবিত্ত তরুণের মাথায় এমন পরমাশ্চর্য, প্রায় অকল্পনীয় একটা ভাবনা, যে সাইকেলে চড়ে দুনিয়া ঘুরে ফেলব এটা এল কোথা থেকে। এই ভূতটা তোমার ঘাড়ে চাপল কী করে?

    জয়ন্ত মণ্ডল—এর দু-তিনটে কারণ আছে। আমি বোধহয় ছোটো থেকেই, না, বোধহয় কথাটা উইথড্র করছি, আমি নিঃসন্দেহে ডানপিটে ছিলাম। ভীষণ দুষ্টু ছিলাম, কিন্তু বদমাশ নয়।

    নী.হা.—তোমার জন্ম কবে?

    জ.ম.—১৯৫১ সালের অক্টোবরের শেষে। তো বরাবরই ডানপিটে ছিলাম। তোমার প্রশ্নের উত্তরে আমাকে প্রথমেই বলতে হবে আমার সাইকেল শেখার গল্পটা। সাইকেল শিখেছিলাম যখন ক্লাস ফোরে পড়ি। বড়ো সাইকেল। সিটে বসলে পা যেত না (পেডাল অবধি)। বাঁহাতে একটা হ্যান্ডেল ধরে, ডানহাতে ওই ব-য়ের মতো রড-টা ধরে পেডালটা অর্ধেক ঘোরাতে পারতাম। এখন, একটা মজার কথা খুব মনে পড়ে—বাবার কাছে সাইকেল চাইলে কিছুতেই দিতেন না। কেন দিতেন না? না, পড়ে যাবে, হাত-পা ভাঙবে সেটা নয়। সাইকেলটা ভাঙবে!! না-না তুমি সাইকেল চালাবে না, সাইকেলটা পড়ে যাবে, ভাঙবে, তুমি একদম চালাবে না! তো আমি আমার এক দাদার এক বন্ধুর সাইকেল নিয়ে মিশন ইস্কুলের মাঠে সাইকেল শিখেছিলাম, হাফ পেডালে! তারপর আমার বাবার এক মামাতো ভাইয়ের সাইকেল নিয়ে চালাতাম। যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি ওই সাইকেল নিয়ে একা একাই চলে গিয়েছিলাম জয়পুরের জঙ্গল। প্রায় ১৫ কিলোমিটার। তখন গভীর জঙ্গল সেটা। ১৯৬৪ সাল। তখনও সিটে বসে পেডালে পা পেতাম না, সামনের রডে বসে চালাতাম, প্রায় দাঁড়িয়ে। এত ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম যে সন্ধ্যায় পড়ার সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আর সেই দেখে, মনে আছে, বাবা বেদম পেটালেন। কিন্তু জান ওই যে জঙ্গলে চলে গেলাম একা একা সেই থেকেই আমার মধ্যে প্রকৃতির প্রতি একটা দুর্বার টান জন্মেছিল।


    বাবার সই জাল করে এনসিসি-তে

    আর-একটা সংগঠনের কথা বলতে হবে, আমার জীবনের ওপর যার গভীর প্রভাব পড়েছিল—ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর, এনসিসি। সেও বাবা কিছুতেই করতে দেবেন না। একটা ফর্ম ভরতে হত যাতে বাবা কিংবা মায়ের সই লাগত। বুঝতেই পারছ তখনকার দিনের বাঙালি পরিবার, মায়ের কোনো স্বাধীন ভয়েসই ছিল না। তো বাবাকে বলতে গেলাম, বাবা বললেন, খবরদার! তোমার দু-দাদা এনসিসি করেছে, তাদের পড়াশোনা কিচ্ছু হয়নি, তুমি এনসিসি করবে না। বহু চেষ্টা করলাম, বাবা কিছুতেই সই করলেন না। কাজেই আমি বাবার সই জাল করে কলেজে ফর্ম জমা দিয়েদিলাম! এইভাবে ভরতি হওয়া। তারপর সারাক্ষণ লুকিয়ে লুকিয়ে করতাম—রবিবারের প্যারেড ভোরবেলা, বলতাম ফুটবল খেলতে যাচ্ছি! আর-একটা ব্যাপার ছিল, যতগুলো ক্লাস করব এনসিসি-র, প্রত্যেকটার জন্য দু-টাকা কত পয়সা করে যেন পেতাম। চার-পাঁচ মাস ধরে জমা পড়লে আমাদের রামানন্দ কলেজের জিওলজি ডিপার্টমেন্টের রাখহরি দত্ত ছিলেন তাঁর কাছ থেকে টাকাটা পাওয়া যেত। মনে আছে ৫৩ বেঙ্গল ব্যাটেলিয়ান থেকে আসত টাকাটা। তো দেখা গেল আর সব ছেলেদের মধ্যে আমিই সবার ওপরে রয়েছি এনসিসিতে। কাজেই আমাকে নানা ক্যাম্পে পাঠানো হত পরের দিকে।



    এই ক্যাম্পগুলোর মধ্যে যেটা আমার ওপর খুবই প্রভাব ফেলেছিল সেটা ছিল আর্মি অ্যাটাচমেন্ট ক্যাম্প। চার সপ্তাহের মতো। আমাদের পাঠিয়েছিল হাসিমারা। সেখানে ভারতীয় সেনার একটা বিশাল শিবির আছে। সেখানে যোগ দিয়েছিল বিভিন্ন ব্যাটেলিয়ন থেকে বাছা বাছা কিছু ক্যাডেট। সেই আমার চোখ খুলে গেল। সাড়ে তিনটের সময় ঘুম থেকে তুলে দিল। তৈরি হয়ে সাড়ে চারটের সময় ড্রিলে যোগ দিতে হবে। তারপর বোধহয় দশ কিলোমিটারের মতো দৌড়তে হত। সবশেষে মনে আছে একটা মগ দেওয়া হত, আর কিচ্ছু না, সেটাতেই চান করতে হবে, সেটা নিয়েই পায়খানা যেতে হবে, আবার সেটাতেই খেতে হবে! যে-কোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। এটা পারছি না, ওটা পারব না, এ সব বলা চলবে না। ইনস্ট্রাকটারের মুখের ওপর কোনো কথা চলবে না। এইগুলো মানুষকে মানসিক ভাবে শারীরিক ভাবে সবদিক থেকেই টাফ করে তোলে। শেষ দিনে বলা হল, তোমাদের সব দিয়ে দেওয়া হবে—মানে পিঠে রুকস্যাকের বোঝা, কাঁধে রাইফেল, সেইসব নিয়ে তোমাদের ২৬ কিলোমিটার হাঁটতে হবে গভীর জঙ্গলের মধ্যে। আমাদের তো তা-ও সঙ্গে খাবার দেওয়া হয়েছিল, সেনাবাহিনীর লোকেদের তা-ও দেওয়া হয় না। তো সেইটা আমার মধ্যে একটা কনফিডেন্স তৈরি করে দিয়েছিল। এনসিসির লোগোটার নীচে লেখা থাকত— Duty and Discipline। আমি না কথাটার মানে বুঝতাম না। একদিন এনসিসির এক অফিসারকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বুঝিয়েছিলেন, Following the order of god is duty. Following the order of the superior is discipline। সেইটা আমার মধ্যে সাংঘাতিক ভাবে গেঁথে গিয়েছিল।


    প্রথম সফর

    জানো, আমি মাঝে মাঝে নিজেকে অন্যের জায়গায় ফেলে আমি ভাবি—আমি করেছি ও কেন করতে পারছে না। আমি উপলব্ধি করেছি সবারই একই দক্ষতা, একই ক্ষমতা থাকে না। হাতের পাঁচটা আঙুল এক হয় না। অথচ পাঁচটা আঙুলেরই কাজ আছে। যাই হোক এইসব তালিম পাওয়ার পরেই আমি একটা ছোটো সফর করে নিয়েছিলাম।

    নী.হা.—সেটা কোন্‌ সাল?

    জ.ম.—১৯৭৩। পার্ট ওয়ান পরীক্ষা দেওয়ার পরেই তিন মাসের একটা ছুটি পেয়েছিলাম।

    নী.হা.—তোমার সাবজেক্ট কী ছিল?

    জ.ম.—বোটানি অনার্স। তো যাই হোক, সেইসময় আমি একটা সফরে রওনা দিয়েছিলাম—কলকাতা থেকে কাশ্মীর। কিন্তু শেষপর্যন্ত কাশ্মীর আর যাওয়া হয়নি সেবার। চণ্ডিগড় থেকে সিমলা চলে গেলাম, তারপর নেপাল-টেপাল ঘুরে ফিরেছিলাম। সাইকেলে। সেই সফরে আমার সঙ্গে দুজন ছেলে আরও ছিল। আমার সঙ্গে পড়ত। একজন খাটুলের আর একজন ওঁদার। এখানে একটা কথা বলি, জানো, প্রত্যেক মানুষের জীবনেই একটা অ্যাডভেঞ্চারের ইচ্ছে থাকে। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। তুমিও না, নীলাঞ্জন। কিন্তু আমরা প্রত্যেকেই নিজের জীবনের প্রায়রিটিগুলো ঠিক করে নিই। আর সেটা ঠিক করতে গিয়েই অ্যাডভেঞ্চারটা অনেকেরই আর হয়ে ওঠে না। জয় মণ্ডল যেটা পারল, নীলাঞ্জন হাজরা পারল না কেন? আসলে ওই প্রায়রিটি। নীলাঞ্জন হাজরা বই পড়ে। জয় মণ্ডল বই পড়েই না। যাই হোক, আমার মনে আছে আমরা ৩ জানুয়ারি বেরিয়ে পড়লাম। কিছু লোকের সাহায্য নিয়েছিলাম। তার মধ্যে একজনের কথা প্রথমেই বলব—ব্রজদুলাল ঘোষ। ব্রজদা ছিল আমার দাদা প্রশান্তর বন্ধু। তো ব্রজদা ভারতের একটা অংশ সাইকেলে করে ঘুরেছিল। তার কাছ থেকে আমি পুঙ্খানুপুঙ্খ সব বিষয় জেনেছিলাম। যেমন, একটা ড্রেস চাই। তো আমি সব স্পনসর করিয়েছিলাম, বুঝলে। বোলতলা আর চকবাজারের মাঝখানে জৈন স্টোর্স নামের একটা জামা-কাপড়ের দোকান ছিল। এখনও আছে কি না কে জানে! ওরা আমাকে তিনটে গেঞ্জি আর তিনটে প্যান্ট দিয়েছিল।

    কিন্তু সাইকেল কোথাও পেলাম না। তাই বাবার সাইকালটাই সারাই-টারাই করে নিয়ে বেরোলাম। আর ব্রজদা একটা খুব জরুরি পরামর্শ দিয়েছিল—সঙ্গে একটা লগবুক রাখবে। আর যেখানেই যাবে সেখানের থানা, এসডিও বা কলেজের প্রিন্সিপ্যাল এরকম লোকজনকে দিয়ে তুমি যে গেছ সেটা লিখিয়ে একটা স্ট্যাম্প দিইয়ে নেবে। তখন আমি ভাবতাম আমি তো অ্যাডভেঞ্জার করতে বেরিয়েছি, এসব করার দরকার কী? পরে আমি রিয়েলাইজ করলাম, না, এটা তো দরকার। কারণ, লোকে দেখতে চাইছেন কোন্‌খান দিয়ে কোন্‌খান দিয়ে গেছি। তখন তো আর জিপিএস ছিল না। কিছুই ছিল না। যাই হোক ওয়ার্ল্ড ট্যুরের আগে এই সফরটা খুব ভালো একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল।

    নী.হা.—সেই অভিজ্ঞতার কিছু শুনব। শুনেছি সেইসময়েই তোমাদের চম্বলের ডাকাতে কিডন্যাপ করে নিয়ে গিয়েছিল?

    জ.ম.—শোনো, আমাদের যে রাস্তা থেকে কিডন্যাপ করে নিয়ে গেল তা কিন্তু না। সেসবই বলব। আমরা প্রথমে বাঁকুড়া গেলাম। সেখান থেকে পুরলিয়া, পুরুলিয়া থেকে রাঁচি…


    পথের প্রথম শিক্ষা

    নী.হা.—আর পয়সাকড়ি? খাচ্ছিলে কোথায়, থাকছিলে কোথায়?

    জ.ম.—এইটা একটা দারুণ ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। একটা বিরাট শিক্ষা। প্রথম প্রথম তিনজনের মধ্যেই একটা বিশাল কিন্তু-কিন্তু ভাবছিল—অ্যাপ্রোচ করব, যদি মুখের ওপর না বলে দেয়? যদি ভাবে ভিক্ষে করতে এসেছি? প্রথমবার একটা থানাতে গিয়েছিলাম। ওইটাও ব্রজদা বলে দিয়েছিল—পুলিশ ফাঁড়িতে যাবে। দেখবে একটা বেঞ্চ দিয়ে দেবে, কী একটা চারপাই দিয়ে দেবে। ওদের অনেক জায়গা থাকে। বলবে তোমরা সাইকেল ট্যুর করছ, দেখবে সবাই সাহায্য করছে। সেটা যে কী সত্যি, নীলাঞ্জন। মানুষ এগিয়ে এসেছিল। এগিয়ে আসে। হয়তো বিষ্ণুপুর থেকে একজন কোথাও একটা রেফারেন্স দিয়ে দিল, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন। সেখানে পৌঁছলে সে আবার বলল, অমুক জায়গা দিয়ে যাবে? আচ্ছা ওইখানে আমার পরিচিত আছে। এইভাবে। তখনকার দিনে ফোনে বলাও যেত না। একটা চিঠি নিয়ে নিতাম। তারপর ঠিকানা খুঁজে বার করে দেখাতাম। তখন তখনই তাঁরা ডিসিশন নিতেন—হ্যাঁ, আসুন আসুন, আসুন। হয়তো সন্ধেবেলা পৌঁছোলাম সাতটার পরে, আমাদের জন্য আলাদা করে খাবার তৈরি করে খেতে খেতে রাত্রি বারোটা বেজে গেল।

    তো যে কথা বলছিলাম, ওই চাওয়ার দ্বিধা। সেটা প্রথম কাটল ঝাঝা বলে একটা জায়গায় গিয়ে। মাইথন পার করেই। বিহারে। সেখানের দুটো ব্যাপার মনে আছে, প্রথমে তো একটা কলেজে গেছি। দেখি যদি কিছু সাহায্য পাই। তো সেখানে দেখি, ছেলেরা সব ধুতি পরে, পায়ে কালো বুট, আর গায়ে একটা গামছা! সে এক আশ্চর্য দৃশ্য, সবারই কাঁধে একটা গামছা। তো সেখানে প্রিন্সিপ্যাল চা-টা খাইয়ে বললেন, আপনি আমাদের ছাত্রদের কিছু বলুন। রাজি হয়ে গেলাম। কিন্তু সকলে জমা হওয়ার পর সাংঘাতিক নার্ভাস হয়ে পড়লাম। একে তো সবে বিষ্ণুপুর থেকে ঝাঝা এসেছি, কী আর বলব। তার ওপর না পারি হিন্দি বলতে না পারি ভালো করে ইংরেজি বলতে। তো কোনোমতে ভাঙাচোরা হিন্দিতে কিছু বললাম। কিন্তু প্রিন্সিপ্যাল অসাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি ছাত্রদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে আমাদের কিছু টাকা দিলেন।

    সেই রাত্রিতে আমরা পুলিশস্টেশনে গিয়ে হাজির হলাম। সেইখানে আমিই প্রথম সব লজ্জার মাথা খেয়ে বললাম, আমাদের কিচ্ছু খাওয়া হয়নি, যদি কিছু খাওয়া পাই তো খুব ভালো হয়। তো সেই অফিসার সঙ্গে সঙ্গে (একজনকে ডেকে) বললেন, যাও, পণ্ডিতজিকে পাশ লে যাও। খানা খিলাকে লে আও! সেই একটা শিক্ষা হয়ে গেল, ওই যে লজ্জাটা, লোকের কাছে খাবার চাওয়ার ব্যাপারে যে কিন্তু-কিন্তু ভাবটা, কেটে গেল চিরকালের মতো। আর জানলাম যে পুলিশস্টেশনে গিয়ে বললে ওরা খাইয়ে দেবে। এবং পরে দেখেছি অনেক জায়গাতেই সেটা হয়েওছে। কিন্তু কয়েক জায়গায় খুব বাজে অভিজ্ঞতাও হয়েছে, বুঝলে।

    নী.হা.—খেতে দেয়নি?

    জ.ম.—চণ্ডিগড়ে যখন পৌঁছলাম তখন রাত্রি সাড়ে এগারোটা বাজে। বেশ ঠান্ডা। আমরা সেই পানিপথ থেকে চালানো শুরু করেছি, সারা সন্ধ্যা ধরে ফুটফুটে জ্যোৎস্নার মধ্যে চালিয়েছি। দারুণ রাস্তা। তো গিয়ে এক পুলিশস্টেশনে উঠলাম। এসএইচও ছিলেন, সাবইন্সপেক্টর র‍্যাংকের। ওমা! এখানেও দেখি একজনকে ডেকে বলছেন, যাও পণ্ডিতজিকে দুকান সে খানা খিলাকে লে আও! তো যেখানে নিয়ে গেল সেখানে একটা ঠেলাগাড়িতে খাবার বিক্রি হচ্ছিল, বুঝেছ। সেখানে গিয়ে লোকটা বলতেই, (দোকানদার) পরিষ্কার বলে দিল, বহত খানা খিলায়া। একে আনো, তাকে আনো। পয়সা পাই না। আগে পয়সা আন, তারপর খাবার দেওয়া হবে। এবার লোকটা আমাদের দাঁড়াতে বলে চলে গেল। কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে সেই দোকানের মালিককে বলল, আপকো সাব বুলা রাহা হ্যায়। কিন্তু জানো, তখন আমাদের অলরেডি খাবার দিয়ে দিয়েছে। আমরা খাচ্ছি। আমি জীবনে প্রথম আলুপরাঠা খাচ্ছি! সঙ্গে আচার আর দই। তো খাওয়া শেষ হতেই সেই লোকটা দোকানদারকে তুলে নিয়ে চলে এল। আর ঢোকামাত্র ওকে কী মারটাই না মারল। সে একেবারে বেধড়ক মার। শর্ম নেহি আতি! বাহার সে মেহমান আয়া হ্যায়, অওর প্যায়সা মাঙ্গ রাহা হ্যায়? আর সে কেবলই বলে, হুজুর গলতি হো গয়া। আর গলতি হো গয়া! একটা ছড়ি বার করে মার।



    আমরা দেখে একেবারে থতমত খেয়ে গেছি। আর আমাদের কেবলই মনে হচ্ছে, ইশ্‌! আমাদের কাছে তো কিছুটা পয়সা ছিল, কেন এটা করলাম? সেই রাত্রিটা আমার ভীষণ অশান্তিতে কেটেছিল। এই ঘটনাটা জীবনে আমি কতবার যে মনে মনে অ্যানালাইজ করেছি তার ঠিক নেই। পুলিশের অফিসারের বক্তব্য ছিল, বাচ্চা ছেলে ক-টা। তাদের খিদে পেয়েছে। আমাদের অতিথি, মেহমান। তাই তোমার কাছে পাঠিয়েছি। তুমি ওদের খাবারটা আগে দিলে না কেন? তারপর আমার সঙ্গে হিসেব-নিকেশ করতে। এদিকে আমরা তো আগেই শুনেছি যে, আগেও এরকম লোককে সে খাইয়েছে, কিন্তু পয়সা পায়নি। তাই ভাবি, তার মানে, একটা স্বভাব হয়ে গেছে, কেউ এলেই পণ্ডিতজির কাছে পাঠিয়ে দাও। নিজের পকেট থেকে তো পয়সা দিচ্ছে না। ভেবে দ্যাখো, পরিস্থিতিটা, সেই পুলিশ অফিসার কিন্তু আমাদের সাহায্য করছেন, কিন্তু নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করছেন না। আবার যে লোকটা নিয়ে গিয়েছিল, তার রাগের কারণ হচ্ছে, আমি তো নিজে থেকে যাইনি। আমার সাহেব পাঠিয়েছে। তুমি তাকে যা বলার বলো। আমার মুখের ওপর বলবে কেন? দ্যাখো, তিনজনই কেমন নিজের জায়গায় ঠিক! এইটা এই পথে পথে ঘোরার একটা শিক্ষা, বুঝলে। ওই আগে যেটা বলছিলাম, অন্যের জায়গায় নিজেকে রেখে ভাবতে শেখা। যাই হোক, শেষপর্যন্ত তো দোকানদারকে ওরা ছাড়ল। সে আবার যাওয়ার আগে বলে গেল, কাল সকালে আমার এখানে আপনারা নাস্তা করে যাবেন। আমরা আর যাই-ই-নি লজ্জাতে। আমার কেবলই মনে হচ্ছিল, এইসবের জন্য আমিই দায়ী।

    এইখানে তোমাকে আমার একটা দর্শনের কথা, একটা বড়ো শিক্ষার কথা, বলি। প্রথমবার এই ট্যুরে যখন বেরিয়েছিলাম তখন আমার মধ্যে একটা ভাব ছিল, সাইকেল করছি স্রেফ সাইকেল করার জন্যই। মানুষের সঙ্গে দেখা করা, বন্ধুত্ব করা, চারপাশ দেখা, ব্যাস। নিজেকে তার বেশি আর কিছু করতে কল্পনাও করিনি। কিন্তু দুনিয়া ঘোরার সময় দেখলাম, দুনিয়াটা কত নির্দয়। কী অর্থে নির্দয়? আমি যদি জেদ করে বসে থাকি যে, আমি সাইকেল ট্যুরে বেরিয়েছি, সাইকেল চালাব, কোথাও দাঁড়াব, কোথাও খাওয়া-দাওয়া করব, রাত্রি হয়ে গেছে শুয়ে পড়ব, তারপরের দিন আবার সাইকেল চালিয়ে চলে যাব, কিন্তু কিচ্ছু শিখব না, কিছু জানব না, আমি শুধু দেখব, তা কিন্তু হবে না। দুনিয়া তোমাকে শিখিয়ে ছাড়বে। সেটাই আমার শিক্ষা। তাই আমি খুব, খুবই গর্বের সঙ্গে বলি, হ্যাঁ আমি স্কুলে গিয়েছি, অ্যারিথমেটিক শিখেছি, শিখেছি এ-বি-সি-ডি, শিখেছি অ-আ-ক-খ, কিন্তু জীবন কী সে শিক্ষাটা আমি পেয়েছি পথচলতি মানুষের কাছে। তাই সারা দুনিয়াটাই আমার গুরু। মনে আছে, একবার গুরুপূর্ণিমাতে আমি তেমন একটা কথা ফেসবুকেও লিখেছিলাম। সবাই নিজের নিজের গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছে, আমি দেখেছি সারা দুনিয়াটাই আমার গুরু। তাই আমি আমার শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সারা বিশ্বের মানবজাতিকে। তারা আমায় শিক্ষা দিয়েছে প্রত্যক্ষ ভাবে, পরোক্ষ ভাবে।



    [এই সাক্ষাৎকারে বর্ণিত অনেক ঘটনারই ফটোগ্রাফ জয় মণ্ডলের কাছে রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত সেগুলি সবই তাঁর নিউ ইয়র্কের বাড়িতে এবং তিনি লকডাউনে আটকে রয়েছেন বিষ্ণুপুরে। তাই কোনও ছবিই দেওয়া গেল না। এমনকী সেই সাইকেল চড়ে তাঁর নিজের ছবিও নয়। — নীলাঞ্জন হাজরা]

    (ক্রমশ… পরের কিস্তি পড়ুন ১ অক্টোবর)


    গ্রাফিক্স: স্মিতা দাশগুপ্ত
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ভ্রমণ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৮১২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • একক | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:০৮97283
  • পড়ছি,  প্রথম কিস্তি জমাটি।  চরে বেরানর বাতিক যাদের, সবাইকেই এ লেখা টানবে।  

  • | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:৩৪97284
  • এইটা ফাটাফাটি।  সেই কোনকালে দু'চাকার দুনিয়া পড়েছিলাম আর এই। দিনটাই ভাল হয়ে গেল। 

  • রা ন্দি ই | 110.225.***.*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:৪০97286
  • বেশ নতুন ধরণের বেড়ানো। ভালো লাগল।      

  • b | 14.139.***.*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:৪৮97287
  • বাঃ। 

  • i | 203.166.***.*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:২৫97288
  • জয় মন্ডলকে নিয়ে লেখা বেরিয়েছিল বাংলা কাগজে সঙ্গে ছবি - সম্ভবত ৯০ এর দশকের গোড়ায় - ভুল হতে পারে সামান্য। তারপরে পড়েছি ওঁকে নিয়ে  -খবরের কাগজেই - বাংলা, ইংরিজি দুইই - ছোট ছোট লেখা। বড় সাক্ষাৎকার সম্ভবতঃ এই প্রথম পড়ছি। 


    অনেক ধন্যবাদ। 

  • সন্দীপন গাঙ্গুলী | 2409:4060:2097:e615:1a46:59a3:d5d5:***:*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:৪৫97290
  • একেবারে মনকাড়া। পরের পর্বগুলোর জন্য অপেক্ষা সইছেনা।

  • | 2601:247:4280:d10:6d96:8700:c5b0:***:*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:২০97291
  • অসম্ভব ভালো!

  • জয়া চৌধুরী | 202.8.***.*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:৫৫97293
  • খুব ভাল লাগছে। বিমল বাবুর দু চাকায় দুনিয়া পড়েছি। আর এই পড়ছি সাগ্রহে।

  • অরিন্দম দত্ত | 2401:4900:382b:e1a7:1:2:a838:***:*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:২২97308
  • বেশ টানটান লেখা।


    পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

  • hu | 2607:fcc8:ec45:b800:ad3f:9a27:4ed9:***:*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:০৫97313
  • দুর্দান্ত laagal

  • Tim | 174.102.***.*** | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:৩১97314
  • খুব ভালো লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। 

  • Nirmalya Nag | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৫৬97316
  • দারুণ .

  • সুকি | 49.207.***.*** | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৭:০৯97329
  • খুব ভালো লাগলো

  • প্রেমানন্দ মিস্ত্রী | 2401:4900:1046:850:8dda:9b82:8f09:***:*** | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:৪৬97333
  • জয়ন্ত মন্ডলের সাইকেলে বিশ্বভ্রমন পড়লাম।খুব ভালো লাগল। বিষ্ণুপুরের গৌরব। পরের পর্ব পড়বার অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থেকো।

  • সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় | 122.163.***.*** | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:৩৩97357
  • দারুণ !   

  • সম্বিৎ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:১৬97359
  • দুদ্দান্ত। সফরের সঙ্গে জয় মন্ডলের সম্বন্ধেও জানতে চাই।

  • dc | 103.195.***.*** | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:২৮97366
  • "দুনিয়া তোমাকে শিখিয়ে ছাড়বে। সেটাই আমার শিক্ষা। তাই আমি খুব, খুবই গর্বের সঙ্গে বলি, হ্যাঁ আমি স্কুলে গিয়েছি, অ্যারিথমেটিক শিখেছি, শিখেছি এ-বি-সি-ডি, শিখেছি অ-আ-ক-খ, কিন্তু জীবন কী সে শিক্ষাটা আমি পেয়েছি পথচলতি মানুষের কাছে"


    অসাধারন, খুব ভালো লাগলো পড়তে। পথে চলে যে শিক্ষা তার থেকে প্র‌্যাক্টিকাল আর কিছু হয় না। 


    ওয়ান্ডারলাস্ট - এটা একটা দুর্দান্ত জিনিস। যাদের থাকে তারা জানে :-)

  • রঞ্জন সেন | 223.19.***.*** | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:৪২97368
  •  দুচাকা হয়ে  উঠেছে  দুচোখ ।বেশ  ভালো ।

  • সোমনাথ সাহা | 2409:4061:2d03:f02c::9e0b:***:*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:০০97418
  • জয় কাকুর ছবি গুলো পরে হলেও যেনো দেখতে পাই। আমরা যখন এইট এ পড়ি তখন হাইস্কুল এর অডিটোরিয়ামে Joy Kaku একটি স্লাইড শো করে ছিলেন । আফ্রিকা র   কোন উপজাতি দের সঙ্গে তোলা একটা ছবি দেখে ছিলাম।   পড়ে খুবই ভালো লাগছে। 


    পরের কিস্তির অপেক্ষায় রইলাম।

  • Rathindra Nath Biswas . | 45.249.***.*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:৪৩97419
  • Replica of Ram Nath Biswas .

  • সমীর চক্রবর্তী | 223.19.***.*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:০৫97422
  • ভুত আমারো চেপেছিল ক্লাশ সেভেনে, তাই আর হয়ে ওঠেনি।


    তবে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়েছি। NCC থেকে ১রাত্তির, ২রাত্তিরের জন‍্য সাইকেলে বেরিয়েছি।

  • প্রিয়জিত চক্রবর্তী | 2a02:c7d:e26c:6700:b97c:4343:8fac:***:*** | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:৪৮97866
  • খুব ভাল লাগলল, "দু চাকায় দুনিয়া" পড়েছিলাম অনেক আগে, মনে পরে গেল। পরের কিস্তির জন্যে অপেক্ষা করবো .

  • Moulik Majumder | ১৫ জানুয়ারি ২০২১ ০০:৩১101701
  • দারুণ 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন