জেনারেল ক্যাটেগরির দরিদ্র মানুষদের জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা অনুমোদনের সিলমোহর দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রাথমিকভাবে এই সিদ্ধান্ত ন্যায়সঙ্গত এবং যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের এই রায় থেকে বেশ কিছু বড় প্রশ্ন উঠে আসে। এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে অনেক অসঙ্গতির জন্ম দেবে।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে উচ্চবর্ণের মধ্যেও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অর্থাৎ দরিদ্রদের সংখ্যা যথেষ্ট। উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার থেকে দিল্লি এবং মুম্বইয়ের মতো মহানগরগুলিতে শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে যেতে বাধ্য হন বিপুল সংখ্যক উচ্চবর্ণের লোক, যাঁরা সামাজিক অবস্থানের কারণে নিজেদের গ্রামে শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে পারেন না। এছাড়া কোনো সন্দেহ নেই যে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা পালন করে।
আজকাল প্রতিটি পরীক্ষার ফলাফল টিউশন এবং কোচিংয়ের ওপর নির্ভরশীল। আপনার জাত যাই হোক, বাবা-মা যদি ব্যয়বহুল কোচিংয়ের বন্দোবস্ত না করতে পারেন, তাহলে উচ্চশিক্ষা এবং চাকরির পরীক্ষায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। সেই কারণে তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি ছাড়াও জেনারেল ক্যাটেগরির দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের জন্যও উন্নত কোচিং বা টিউশনের বন্দোবস্ত করা প্রয়োজন।
প্রশ্ন হল, এই ব্যবস্থা কি সংরক্ষণের রূপ নেবে? জেনারেল ক্যাটেগরির দরিদ্র মানুষদেরও কি শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণের সুবিধা পাওয়া উচিত? দলিত, জনজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণির গরিবদের কি দারিদ্র্যের ভিত্তিতে দেওয়া এই সংরক্ষণের বাইরে রাখা উচিত? এই প্রশ্ন ছিল সুপ্রিম কোর্টের সামনে। ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে ১০৩তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সরকার এতদিন বজায় থাকা সংরক্ষণের পাশাপাশি জেনারেল ক্যাটেগরির দরিদ্র প্রার্থীদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে। তখন সব দলই সমর্থন জানায়।
এর আগে নরসিমহা রাওয়ের কংগ্রেস সরকারও একই রকম ব্যবস্থা করেছিল। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট এটিকে অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে। এই নতুন সংশোধনীকেও সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়। কিন্তু এবার সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ তাতে অনুমোদন দিয়েছে। সিদ্ধান্তটি সর্বসম্মত হয়নি। তিন বিচারক অর্থাৎ বিচারপতি মহেশ্বরী, ত্রিবেদী এবং পারদিওয়ালা এই সাংবিধানিক সংশোধনী বহাল রাখেন, অন্যদিকে বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত এবং বিচারপতি ভাট এটিকে অসাংবিধানিক বলে অভিহিত করেন।
বেঞ্চের পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ার পর তা নিয়ে অনেক কাটছেঁড়া, মন্তব্য ও বিতর্ক হবে – তা স্পষ্ট। তবে শুরুতেই আদালতের দেওয়া রায়ে দেওয়া যুক্তির ভিত্তিতে কিছু প্রশ্ন তোলা দরকার। আপাতত আইনি সমস্যাকে বাদ দিয়ে দুটি বড় প্রশ্ন উত্থাপন করা জরুরি।
প্রথম প্রশ্ন হল, সংরক্ষণ কি দারিদ্র্য রোগের সঠিক ওষুধ? সংবিধানে ‘সামাজিক ও শিক্ষাগতভাবে অনগ্রসর শ্রেণি’র জন্য বিশেষ ব্যবস্থার অনুমতি গরিবদের জন্য প্রযোজ্য হবে কি, না তাতে আইনি প্যাঁচ আছে? কিন্তু এই আইনি সমস্যাটিকে বাদ দিলেও প্রশ্ন জাগে, কোন পরিস্থিতিতে সংরক্ষণের মতো হাতিয়ার ব্যবহার করা ঠিক হবে? এখনও অবধি, সংরক্ষণের পক্ষে যুক্তি হল, এটি এমন অসাধারণ হাতিয়ার যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলা শত শত বছরের নিষেধাজ্ঞা এবং বঞ্চনাকে অতিক্রমের জন্য ব্যবহার করা উচিত।
এটি যদি কোনো একটি পরিবার বা ব্যক্তির সমস্যা বা সুযোগের সমতার জন্য ব্যবহার করা হয়, তবে সংরক্ষণের মতো অসাধারণ হাতিয়ারের অপব্যবহার হবে। দারিদ্র্যের কারণে যে বৈষম্য তৈরি হয়, তা সংশোধন করতে চাইলে আরও ভালো স্কুল ব্যবস্থা, বৃত্তি ও অন্যান্য শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। যদি সত্যিই গরিবদের শিক্ষা ও চাকরির ভালো সুযোগ দিতে হয়, তাহলে সবার আগে শিক্ষার বেসরকারিকরণ বন্ধ করতে হবে, যার কারণে দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের ভালো শিক্ষা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রশ্ন হল, শিক্ষার খরচ নিয়ে তাঁদের ক্ষোভ থেকে মনোযোগ সরানোর জন্য কি সংরক্ষণের ললিপপ এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে গরিবদের হাতে?
দ্বিতীয় প্রশ্ন হল, দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের জন্য যদি সংরক্ষণ করতেই হয়, তবে তা শুধু জেনারেল ক্যাটেগরির জন্য কেন? রায়ের ভিন্ন মতে বিচারপতি ভাট এবং ললিত একটি সরকারি সমীক্ষার উল্লেখ করেছেন যা দেখায়, দেশের ৬ জন দরিদ্র মানুষের মধ্যে ৫ জন তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে, এঁরাও দরিদ্রদের জন্য সংরক্ষণের একটি বড় অংশ দাবি করতে পারেন। কিন্তু সংবিধানের ১০৩তম সংশোধন অনুসারে, দারিদ্র্য সংরক্ষণের সুবিধা শুধুমাত্র সেই পরিবারগুলিকে দেওয়া হবে যারা এসসি, এসটি বা ওবিসিভুক্ত নয়।
যুক্তি হল, যাঁরা জাতপাতের ভিত্তিতে সংরক্ষণ পাচ্ছেন, তাঁদের অর্থনৈতিক ভিত্তিতে দ্বিগুণ সুবিধা দেওয়া যাবে না। যার অর্থ হল, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ লোক ৫০ শতাংশ চাকরির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন এবং বাকি ৫০ শতাংশ চাকরি কার্যত দেশের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ উচ্চবর্ণের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
উচ্চবর্ণের দরিদ্ররা কোনোভাবেই দেশের জনসংখ্যার ৫ থেকে ৬ শতাংশের বেশি নয়। তাঁদের ১০ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? এটা হবে সামাজিক ন্যায়ের নামে অবিচার। যাই হোক, আমাদের দেশে জাত-পাতের ভুয়ো শংসাপত্র তৈরি করা কঠিন, তবে দারিদ্র্যের মিথ্যা শংসাপত্র তৈরি করা সবচেয়ে সহজ। যে যত ধনী, সে তত সহজে দারিদ্রের সনদ তৈরি করতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত সেই সমস্ত লোককে হতাশ করেছে যাঁরা এই দেশে চলমান সামাজিক অবিচারের পাল্টা হিসাবে সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে দেখেছেন। এই সিদ্ধান্তটি পাল্টাতে কত বছর বা দশক লাগে তা দেখার বিষয়।
(বিশেষ সহযোগিতা — প্রণব ধাওয়ান)
যখন ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু হয়েছিল, তখন বন্ধুরা ফোন করে বলতেন, “কেন আপনি রাহুল গান্ধির সফরে শামিল হচ্ছেন?” এখন দুই মাস পেরিয়ে তাঁরা ফোন করে জানতে চান: “ভারত জোড়ো যাত্রায় কোথায় যোগ দেবেন? কীভাবে যোগ দেবেন?” গত দুই মাসে ভারত জোড়ো যাত্রার প্রভাবেই এই পরিবর্তন এসেছে। প্রায় ৭০ দিন এবং ১৮০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি হাঁটার পর এখন পর্যন্ত এই যাত্রা তার অর্ধেক দূরত্ব অতিক্রম করেছে। তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রা কেরালা, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা হয়ে এখন মহারাষ্ট্র পেরিয়ে মধ্যপ্রদেশে পৌঁছেছে।
স্পষ্টতই, কংগ্রেস পার্টি আয়োজিত এই যাত্রায় কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। ১০০ জনের বেশি ‘ভারতযাত্রী’ রাহুল গান্ধির সঙ্গে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত পথ হাঁটছেন। শত শত ‘প্রদেশযাত্রী’ বিভিন্ন রাজ্যের শুরু থেকে সীমান্তের শেষ পর্যন্ত সফর করছেন। আর প্রতিদিন হাজার হাজার স্থানীয় কর্মী পদযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন। প্রতিটি রাজ্যে দু-এক জায়গায় বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরে কিছু ইতিবাচক কাজ পেয়েছে কংগ্রেস সংগঠন। বহুদিন পর রাস্তায় নেমেছেন কংগ্রেস কর্মীরা। এই নতুন কর্মসূচি থেকে একটা নতুন আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, আমাদের নিজেদের নেতৃত্বে বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এত তাড়াতাড়ি কংগ্রেসের পুনর্জন্ম সম্পর্কে কথা বলা বাড়াবাড়ি হবে, তবে কিছু মৌলিক পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
এই দুই মাসে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হয়েছে রাহুল গান্ধির ভাবমূর্তিতে। যখন যাত্রা শুরু হল, অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী আমাকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন: “আপনি রাস্তায় হাঁটতে থাকবেন, কিন্তু রাহুল গান্ধি কয়েকদিন পর গাড়িতে চড়ে বিদেশে চলে যাবেন।” পাপ্পুর ছবি রাহুল গান্ধির ব্যক্তিত্বকে পুরোপুরি ঢেকে দিয়েছিল। গত ১৫ বছরে যে রাহুল গান্ধিকে আমি চিনতাম তিনি একজন দয়ালু, গম্ভীর, অকপট এবং অনুসন্ধানী ব্যক্তি। তাঁর মধ্যে কোনো ছলনা বা কৃত্রিমতা নেই। সাংবিধানিক মূল্যবোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, শেষতম মানুষটির জন্য উদ্বিগ্ন এবং সুবিধাবাদী রাজনীতি এড়িয়ে চলা এক ব্যক্তি। এমনকি যখন আমি কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করেছিলাম এবং রাস্তায় নেমে তার সরকারের বিরোধিতা করেছিলাম, তখনও রাহুল গান্ধির ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে আমার ধারণার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
রাহুল গান্ধিকে পাপ্পু বানানো মিডিয়া ও রাজনৈতিক প্রচার কিন্তু অন্য ছবি তুলে ধরেছে জনগণের কাছে। একজন সাধারণ মানুষ যিনি তাঁকে চিনতেন না, তিনি ধরে নিতেন যে রাহুল গান্ধি কোনো রাজপরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের নেতাদের মতোই নির্বোধ, দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন, বিবেকহীন এবং অহংকারী। এদেশের ধুলো দু’দিনও সহ্য করতে পারেন না। কিন্তু এখন দুই মাস ধরে দেশের মানুষ দেখছে একই রাহুল গান্ধিকে, যিনি এদেশের রুক্ষ রাস্তায় হাঁটছেন, তাঁর ‘রাজনৈতিক তপস্যার’ সংকল্প পূরণ করছেন। একদিকে প্রধানমন্ত্রী যিনি ফ্লাইওভারে ২০ মিনিটের জন্য আটকে থাকা সত্ত্বেও নিজের দলের সমর্থকদের জন্য জানালার কাঁচ নামিয়ে দেন না, অন্যদিকে রাহুল গান্ধি প্রত্যেক শিশু, বৃদ্ধ এবং যুবককে আলিঙ্গন করছেন। অপরিচিতের হাত ধরে হাঁটছেন, দৌড়চ্ছেন, খেলছেন। এই রাহুল গান্ধি প্রতি সন্ধ্যায় দেশের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং ধনী-গরিব ব্যবধান সম্পর্কে দেশকে সতর্ক করছেন। মর্যাদা ও ভারসাম্য না হারিয়ে ঘৃণার রাজনীতিকে আক্রমণ করছেন। নতুন রাহুল গান্ধির সাক্ষী এখন গোটা দেশ।
রাহুল গান্ধি এবং কংগ্রেসের বাইরেও এই যাত্রা দেশের গণ-আন্দোলন এবং গণসংগঠন সমূহের মধ্যে একটি নতুন শক্তি সঞ্চার করছে এবং সমন্বয় ঘটিয়েছে। এই যাত্রার আহ্বান জানিয়ে কংগ্রেস দেশের সব রাজনৈতিক দল, গণ-আন্দোলন ও গণসংগঠনকে এই যাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। আমন্ত্রণ গ্রহণ করে দেশের বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি ও গণসংগঠন শুরু থেকেই এই যাত্রার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অনেকের সন্দেহ ছিল, অনেকের নানা পুরানো অভিযোগ ছিল। গত দুই মাসে তা পাল্টেছে। কংগ্রেস কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলনের মিছিল অংশ নিচ্ছে যাত্রায়। প্রতিদিন স্থানীয় গণসংগঠনগুলো জমি সংক্রান্ত ইস্যুতে রাহুল গান্ধির সঙ্গে বৈঠক করছে। একদিন আত্মহত্যাকারী কৃষকের পরিবার তো অন্যদিন বিড়ি শ্রমিকরা। কোনোদিন দেবদাসী প্রথার শিকার নারীরা আবার কোনোদিন উন্নয়ন ও মুক্ত সমাজের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা আদিবাসী গোষ্ঠী। কোনোদিন মদ নিষিদ্ধ করতে চাওয়া আন্দোলনের প্রতিনিধি আবার কখনও বিকল্প শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সংগঠন। এই যাত্রা কত স্বপ্নকে যুক্ত করছে, বেদনার সঙ্গে বেদনাকে যুক্ত করছে। গত কয়েকদিনে এই নদীতে অনেক স্রোত এসে মিশছে, ছোট ছোট যাত্রা এসে মিশছে, বিশিষ্ট নাগরিকরা যুক্ত হচ্ছেন। রাহুল গান্ধির সঙ্গে হাঁটছেন প্রশান্ত ভূষণ, যিনি একসময় দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কংগ্রেসের বিরোধিতা করেছিলেন। এসেছেন নৌবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান অ্যাডমিরাল রামদাস। অন্যদিকে চলচ্চিত্র জগতের তারকা পূজা ভাট এবং সুশান্ত সিংও অংশ নিয়েছেন সফরে। কংগ্রেস শাসনের জরুরি অবস্থার সময় ১৯ মাস জেলে কাটিয়েছেন এমন সংগ্রামীরা পথ চলছেন, কোনো দলীয় সংগঠনের যুক্ত না থাকা যুবক-যুবতীরাও চলেছেন। ধীরে ধীরে সরু স্রোত এখন নদীতে পরিণত হচ্ছে।
তাহলে কি দেশের মেজাজ পাল্টেছে? ঘৃণার রাজনীতি কি বন্ধ হবে? গুজরাট ও হিমাচলের নির্বাচনী ফলাফলে প্রভাব পড়বে? বর্তমানে এমন কোনো দীর্ঘমেয়াদী বা তাৎক্ষণিক প্রত্যাশা করা ভুল হবে। আপাতত শুধু এটুকু বলা উচিত, দেশে বিরাজমান অন্ধকার, হতাশা ও অবসাদের পরিবেশে ফাটল দেখা দিয়েছে। আগে কোনো বিকল্প ছিল না, বরং ছিল নীরবতা, একাকীত্ব ও ভয়ের প্রাচীর। অন্ধকারে আলোর রশ্মি দেখা যাচ্ছে। ভোপালে এই পদযাত্রা নিয়ে আয়োজিত একটি সেমিনারে বামপন্থী চিন্তাবিদ এবং কর্মী বাদল সরোজ বলেন, “ভারত জোড়ো যাত্রা আমাদের সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা”।
যখন কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করে যে আপনি এই যাত্রা থেকে কী পেয়েছেন, আমি রঘুবীর সহায়ের বিখ্যাত কবিতা ‘আত্মহত্যার বিরুদ্ধে’ থেকে এই লাইনগুলি উদ্ধৃত করি:
“कुछ होगा कुछ होगा अगर मैं बोलूँगा
न टूटे न टूटे तिलिस्म सत्ता का मेरे अंदर एक कायर टूटेगा”