~অভিমান ২~
যারা ভোর-ভোর উঠে স্বাস্থ্যচর্চা করে
পার্কে দৌড়ায়
ঠিক করে দেখলে
আসলে তারা মৃত্যুভয়ে দৌড়ায়
একথা লিখেই মনে পড়লো—
তুমিও তো ঠিক করে দ্যাখোনি কখনো
আমি কেন এভাবে দৌড়ে গেছি তোমার দিকে
পড়ে গিয়ে, হোঁচট খেয়ে, আবার হেঁটে গেছি
এক বর্ষা আগুনের ভিতর দিয়ে শুধুই তোমাকে পাবার জন্য!
**********
~সরলরেখা~
১.
অসম্ভব দুঃখের কোনো দিনে চমৎকার হাসিখুশি সব মানুষ সর্বত্র
২.
দুঃখের কবিতা লিখে আমি আনন্দ পেয়েছি
**********
~মেঘ~
ব্যথার খণ্ডগুলি হাতে তুলে নিয়ে বাহবা কুড়নো যায় খুব।
ঈশ্বরও কেটে পড়েছেন এই বেলা—
তাছাড়া অভুক্ত, দৃষ্টিহীন, খোঁড়া, মানসিক প্রতিবন্ধী আছে বহু।
মানুষের সন্তান তাই আজ অন্য মানুষের আয়নায় ঝুঁকে পড়ে
নিজেকে সাজিয়ে নিচ্ছে
নিজের ইচ্ছে মতন
**********
~স্পর্শফুল~
তোমাকে বারবার
কেন দূর থেকে পাই?
**********
~রুমেলী~
পুরনো দিনের মতো তোমাকে পাব না আর—
এটুকু লিখেই ভাবি, পুরনো দিনগুলোর মতো, নাকি
অনেক দিন আগে তুমি যেরকম ছিলে, তার মতো?
এই দ্ব্যর্থবোধকতার মীমাংসা হয় না কোনো
তবু তোমাকে পাব না আর পুরনো দিনগুলোর মতো ভেবে
আমি দেখি, তোমাকে পেয়েছি আমি পুরনো দিনগুলোর মতো
**********
~স্ক্রোল ডাউন~
মেয়েটি একটি ভাষা, সান্ধ্যভাষা—
প্রেমের কবিতা লিখছে
অথচ এমন একটা একটা অদ্ভুত ন্যারেটিভ
যে মনে হচ্ছে অন্য কোনো যন্ত্রণার কথা বলা হচ্ছে
মনে হচ্ছে একজন বহু নদী, তারকাঁটা, বিষফুলে ভরা জঙ্গল
পার করে
ফিরে এসেছে ছেলেবেলার বাড়িতে
মা মা বলে ডাকছে অভ্যাসবশত
অথচ কেউ সাড়া দিচ্ছে না
শুধু জানালা-দরজা বন্ধ বাড়ির ভিতর থেকে
ছোটবেলাকার রেডিও স্টেশনগুলি দ্রুত বদলাবার শব্দ আসছে
**********
~আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি~
নানারকম আঁক কষে মেশিনটা সন্দেহ করছে যে
কোনো ভুল হয়ে যাচ্ছে
আর এভাবেই মেশিনটা শিখে ফেলছে
মানুষের হতাশা, মানুষের ভাষা,
চোখের জল…
আর এখন এমন ভাবে মানুষের দিকে তাকাচ্ছে যে
“অন্ধকারে আকণ্ঠ মদ তুমি, ওগো যৌন আকৃতি”
**********
~বুক~
ছেলেবেলায় পড়েছিলাম
যে কোনো জল,
সমুদ্রের হোক আর পানা পুকুরের
কীভাবে বাষ্পীভূত হয়, মেঘ হয়
তারপর একসময় বৃষ্টির জল হয়ে আবার মাটিতে ফিরে আসে
চোখের জল ছাড়া প্রায় সব জলই এভাবে ফিরে আসে
শুধু চোখের জল শুকিয়ে গেলে
তা আর ফিরে আসে না
একফোঁটা জলের জন্য তখন খা খা করে ওঠে
বিষাদ আর মাটি দিয়ে ঢাকা হাড়গুলি