সুস্রিতা পাহাড়ের গা ঘেঁষে আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে খানিকটা ওপরে উঠলেই এক অপূর্ব সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম, নাম 'পাকদন্ডী'। জঙ্গলে ঘেরা এই গ্রামের শেষ প্রান্ত দিয়ে বয়ে চলেছে নাম না জানা এক ছোট্ট নদী। গ্রামের অনেকেই তার খবর জানে না। সেই গ্রামেই থাকতো এক দস্যি ছেলে, অমল। পাহাড়ের ঢালে, বনে - জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে তার বেশ লাগতো। রাতে তারাদের দিকে চেয়ে যেমন সে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতে পারতো, তেমনি নিমেষের মধ্যে ছুটে পাহাড়ের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যেতে পারত। কৌতুহলী মন নিয়ে নতুন নতুন জিনিস খুঁজে বার করতে তার ভারী মজা লাগতো।
অমল একদিন এদিক ওদিক ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ খুঁজে পেল গ্রামের প্রান্ত ভাগ দিয়ে বয়ে চলা সেই অজানা নদীটিকে। নদীটির কাছে পৌঁছে অমলের মনে হলো এমন অপরূপ দৃশ্য সে কোনদিন দেখেনি। সে যেন এক অন্য জগতে চলে এসেছে। নদীটির কাছে গিয়ে নদীর জলে পা ছোঁয়াতেই আমলের মনে হলো সে যেন এক অলৌকিক জগতে পৌঁছে গেছে।নিজের চোখকেই সে আর বিশ্বাস করতে পারছিল না। হঠাৎ নিজের চারিদিকে সে দেখতে পেল তার কাছের মানুষজনদের, তার মা, বাবা, বন্ধু রহিম, বোন সীমা সকলকে। আর দেখতে পেল তার প্রিয় বাঁশিটিকে। অমলের মনে হলো সেই বাঁশির করুন সুর তাকে হাতছানি দিচ্ছে এক নতুন জগতে। হঠাৎ আমল চিৎকার করে ডেকে উঠলো, 'মা'!
এরপর আর অমলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার বাবা সমস্ত পাহাড় তন্ন তন্ন করে খুঁজেছিলেন। আর তার মা! রোজ জানলার কাছে বসে থাকেন, আর কাউকে দেখতে পেলেই জিজ্ঞাসা করেন, "আমার অমল কোথায় গেল"?