এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  বিবিধ

  • লা জওয়াব দিল্লী - ৮

    শমীক মুখোপাধ্যায়
    ধারাবাহিক | বিবিধ | ১৫ মার্চ ২০০৯ | ৮৬০ বার পঠিত
  • উৎসবের নাম দুর্গাপূজো। মারাঠিদের যেমন গণেশ চতুর্থী, উত্তরভারতীয়দের যেমন দিওয়ালী, বাঙালির তেমনি ট্রেড সিম্বল হল দুর্গাপূজো। এমনিতেই বাঙালি কমিউনিটিপ্রিয় জাতি, বাংলার বাইরে এসে বাঙালির মত কমিউনিটি তৈরি করতে আর কোনও প্রবাসী ভারতীয় জাতি পারে না। তবে প্রবাসে সব ঐক্যের শেষ ঐক্য খাটে এই দুর্গাপূজোর সময়ে।

    ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার ফলে সেই সুলতানি আমল থেকেই সারা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ভাগ্যসন্ধানীদের সাথে সাথে বাঙলিরাও পাড়ি দিয়েছে দিল্লির দিকে, অল্পবিস্তর বাঙালি চিরদিনই দিল্লিতে ছিল, তবে বাঙালিদের প্রথম আসা শুরু হয় গেল-শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক থেকে। বিস্তর রাজনৈতিক কূটকচালী চলবার পরে অবশেষে ১৯১১ সালে রদ হল বঙ্গভঙ্গ। কার্জনবাবু শরীরে আলাদা করলেন না বটে বাংলাকে তখনকার মত, কিন্তু বঙ্গভঙ্গ ঘটালেন অন্যদিক দিয়ে, বাংলার মাজা ভেঙে দিলেন, ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে উঠিয়ে নিয়ে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করে। বাঙালি যা একরোখা জাতি, এখানে বসে রাজত্ব চালানো আর নিরাপদ নয়। রাতারাতি রাজধানী স্থানান্তর করা তো মুখের কথা নয়, ওদিকে তখন ব্রিটিশ স্থপতি চার্ল্‌স ল্যুটিয়েনের হাতের নকশায় ধীরে ধীরে ফুটে উঠছে আজকের নিউ দিল্লি, যা কিনা ছিল ঘন জঙ্গলাবৃত। সমস্ত প্রশাসনিক দপ্তর, অফিস কাছারি আদালত সমস্ত সরিয়ে আনা হল আস্তে আস্তে, কলকাতা থেকে দিল্লিতে। কিন্তু, অফিস সরিয়ে আনা মানে তো কেবল ফাইল আর চেয়ার টেবিল সরিয়ে আনা নয়! সেই যে অগুন্তি বাঙালি কেরানীবাবুর দল, যাঁরা ধুতির ভেতর শার্ট গুঁজে এতদিন কলকাতার বুকে চাকরি চালিয়ে এলেন সদাশয় ব্রিটিশ সরকারের, তাঁদের কী হল?

    কী আবার হবে! আজকাল হামেশাই কাগজে দ্যাখেন না, মালদা ডিভিশন থেকে আলাদা করে কিষেণগঞ্জ ডিভিশন বানানো হলে মালদার রেলকর্মচারীদের কাছে অপশন চাওয়া হয়, কে কে কিষেণগঞ্জে নতুন রেলের আপিসে যেতে স্বেচ্ছায় ইচ্ছুক, হাত তোলো! যে যাবে সে যাবে, যে যাবে না তাকে সাধারণত জোর করে পাঠানো হয় না। সেদিনও তাই হয়েছিল। এমন কিছু বিশাল মাইনে ছিল না কেরাণীকূলের যে, তার মোহে তাঁরা বাংলার বুকে নিজেদের বাপ পিতেমোর ভিটেমাটি জমিবাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন দিল্লির মতন অজানা অচেনা "পশ্চিমের দেশে', হামেশার মত। ইংরেজ সরকার জানতেন এমন হবে, তাই তাঁরাও অপশন দিয়েছিলেন, কে কে যাবে স্বেচ্ছায় চলো, ভালো ঘরবাড়ি দেওয়া হবে। আর যে-যে যাবে না, তাদের চাকরির এখানেই ইতি, তারা নিজের দায়িত্ব নিজেরাই বুঝে নিক। তা, সেই সময়ের বাংলায় বাঙালি তখনও পুরোপুরি চাকুরিজীবি হয়ে পড়ে নি, চাকরি না থাকলেও দেশের ক্ষেতিবাড়ি থেকে কলাটা মূলোটা যা হত তাই দিয়ে এমনিই আরামসে মানিয়ে গুছিয়ে দিন চলে যেত। ওসব আরামের আশ্রয় ছেড়ে অনেকেই গেলেন না দিল্লির দিকে, কলকাতা শহরে কি চাকরি কম পড়েছে? হাইকোর্ট তো রয়েছে, নিদেনপক্ষে মাস্টারির চাকরি তো চাইলেই পাওয়া যায়।

    কিন্তু সবাই এক রকমের ভাবেন না। তাই রাজধানীর সাথে সাথে কলকাতা ও তদ্‌সন্নিহিত অঞ্চল থেকে কেউ পরীক্ষামূলকভাবে, কেউ পাকাপাকিভাবে, অনেকেই চলে এলেন দিল্লি। আজকের যেখানে নিউ দিল্লির গোল মার্কেট এলাকা, সংসদ ভবনের খুব কাছেই, যেখানে সিপিএম পলিটব্যুরোর দিল্লি অফিস, সেখানেই ছিল এঁদের আদি বসতি। অনেক দিন পর্যন্ত এই গোল মার্কেট ছিল বাঙালিদের বিশাল বসতি এলাকা, দৈনিক এখানকার বাজারে মাছ নিলাম হত। এখনও গোলমার্কেট এলাকার আশেপাশে দু-একটা বাঙালি দশকর্মা ভান্ডার বা বইয়ের দোকান দেখতে পারেন। বাঙালি কি আর বাংলা ছাড়লেই "অবাঙালি' হয়ে যেতে পারে রাতারাতি? আপনি পেরেছেন? তাই মাছভাতের সাথে সাথে বাঙালি নিয়ে এল তার চিরন্তন কমিউনিটি বোধও। বাঙালি চিরকালের মাতৃভক্ত জাতি। গোলমার্কেটের কাছেই তাই একটুকরো জমিতে গড়ে উঠল মায়ের মন্দির। সালটা ১৯৩১। জন্ম নিল নিউ দিল্লি কালীবাড়ি।

    নিউ দিল্লি কালীবাড়ি দিল্লির একটা অন্যতম নামকরা মন্দির। এই রাস্তায় আরও বেশ কিছু মন্দির আছে, বিড়লা মন্দির ইত্যাদি, তাই এই রাস্তাটার নাম মন্দির মার্গ। মন্দির হলেই পূজোআর্চা হয়, আর বাঙালির সেরা পূজো, দুর্গাপূজো, সে-ও ধূমধাম করে শুরু হয়ে গেল কালিবাড়িতে, ঐ একই সময়ে। তবে নিউ দিল্লি কালিবাড়ির দুর্গাপূজো কিন্তু দিল্লির প্রাচীনতম পূজো নয়, সে রেকর্ড কাশ্মীরি গেট এলাকার দুর্গাপূজোর। এখানকার বাঙালিটোলা গোলমার্কেটের থেকেও পুরনো। কাশ্মীরি গেট, লালকেল্লার খুব কাছের এলাকা, দিল্লি-৬ নামেই যা আজকাল অধিক পরিচিত বলিউডের দৌলতে, এখানকার দুর্গাপূজোই দিল্লির প্রথম, ১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর পর যখন যখন দিল্লির যেখানে যেখানে বাঙালি বসতি বানিয়েছে, জন্ম নিয়েছে একটি একটি করে কালিবাড়ি। মিন্টো রোড কালিবাড়ি, সফদরজঙ্গ মাতৃমন্দির, আর কে পুরম কালিবাড়ি, চিত্তরঞ্জন পার্ক কালিবাড়ি ... একে একে সাক্ষ্য বহন করে চলেছে এক এক জায়গায় বাঙালির বসবাসের। আজ বাঙালি সারা দিল্লির প্রতিটি আনাচে কানাচে ছড়ানো, দিল্লিও আজ তার এনসিআর শহরসমূহ নিয়ে দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে সুবিশাল, এই প্রান্তে নয়ডা থেকে ঐ প্রান্তে দ্বারকা পর্যন্ত কোথায় যে তারা নেই, আর কোথায় যে তাদের কালিবাড়ি নেই, হিসেব রাখা মুশকিল।

    কালিবাড়ি না থাকলেও পুজো করতে তো বাধা নেই, তাই সারা দিল্লিতে আজ প্রায় চারশোর মত দুর্গাপূজো হয়। নয়ডা গাজিয়াবাদ গুরগাঁও ফরিদাবাদ ধরলে সংখ্যাটা আরও অনেক অনেক বেশি। গ্যাঁড়া যে সুবিশাল সোসাইটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকে, সেখানে প্রায় সত্তর পঁচাত্তর ঘর বাঙালির বাস। গত তিন বছর ধরে তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেখানেও শুরু হয়ে গেছে দুর্গাপূজো। হাজার কাজের ঝক্কি পেরিয়ে সফল বাঙালিরা ঠিক সময় বের করে নেন এই বাৎসরিক মিলনমেলার প্রস্তুতির। আমেরিকার মত অতটা ফাস্ট লাইফ নয়, তাই উইকএন্ডের পূজো হয় না, রীতিমতো পাঁজিপুঁথি মেনেই পাঁচদিন ধরেই পূজো হয় এখানে। আলাদা করে মহালয়া শোনা যায় না এখানকার রেডিওতে, ঘরে ঘরে সময়মত ক্যাসেট সিডি বাজিয়ে বচ্ছরকার দিনের মোহটা কাটিয়ে নেয় প্রবাসী বাঙালি। ভোর চারটেতে ওঠার তাড়া থাকে না কারও। দেখতে না দেখতেই যমুনার চরের অসহ্য দুষিত মাটিতে ফুলেফেঁপে ভরে ওঠে থোকায় থোকায় কাশফুল, অমন কাশফুল আজকাল কেবল সাদাকালো বাংলা সিনেমার পর্দাতেই কেবল দেখা যায়, নয়ডার আনাচে কানাচে যেখানেই একটুখানি ফাঁকা জমি দেখা যায়, সেখানেই দল বেঁধে ফুটে ওঠে ডাঁশা ডাঁশা কাশের গুচ্ছ। আর পরিবেশ তো ঢাক পিটিয়ে জানান দেয় এসেছে শরৎ, হিমের পরশ ইত্যাদি। দিল্লির এই দুটো ঋতু, শরৎ আর বসন্ত, সত্যি প্রকৃত অর্থে এনজয়েব্‌ল। গরম সহ্যের সীমায় নেমে আসে, আর এখানকার গরমে তো ঘাম হয় না, সন্ধ্যের পরে সূর্য ডুবলেই নেমে আসে হাল্কা ঠান্ডার আমেজ। সুতরাং ঘরের মেয়ের ঘরে ফেরার দিনকটির জন্য এখানকার প্রকৃতি মোটামুটি সেজেগুজে প্রস্তুত। প্রবাসী কর্মব্যস্ত বাঙালি অফিসের কাজের চাপে সে-রূপ দেখতে পায় না, অনুভব করার জন্য দু-দন্ড ফুরসৎ পায় না, সে কি প্রকৃতির দোষ?

    রাজধানী এক্সপ্রেসের বুকিং শেষ হয়ে যায় পুজোর অন্তত মাসখানেক আগে, যত বাঙালি দিল্লির দিকে পাড়ি দেয় বেড়াতে আসার জন্য, প্রায় তত বাঙালিই দিল্লি থেকে যে-যার বাড়ি যায় এই কদিনের ছুটিতে। সে যারা যায় যাক, গ্যাঁড়া আপনাদের শোনাচ্ছে দিল্লির পুজোর কিস্‌সা।

    ষষ্ঠীর দিন থেকে শুরু হয়ে যায় অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি। হ্যাঁ, এই অনুষ্ঠান আর খাওয়াদাওয়াই হল দিল্লির পূজোর বৈশিষ্ট্য। কলকাতা তথা বাংলায় যেমন সারারাত জুড়ে ঢল নামে মহম্মদ আলি পার্ক থেকে লেকটাউন সার্বজনীন, নিরাপত্তার চক্করে দিল্লির রাজপথে তেমন ভিড় দেখ অযায় না অবশ্য। পায়ে হেঁটে ঘোরার কনসেপ্ট এখানে নেই, তাই প্রবাসী বাঙালি যে-যার গাড়ি নিয়ে সন্ধ্যে থেকেই বেরিয়ে পড়েন। এদিক ওদিক ঘুরে ঠাকুর টাকুর টাকুর দেখে তাঁরা অবশেষে থিতু হয়ে বসেন কোনও এক পূজো প্যান্ডেলে, যেখানকার অনুষ্ঠানটা তখনকার মত চোখে লাগে আর কি! সেখানে হয় তো তখন জমিয়ে দিয়েছে চন্দ্রবিন্দু, কিংবা ফাটিয়ে দিচ্ছে উদিত নারায়ণ, কিংবা এখুনি শুরু হবে স্বাগতালক্ষ্মী বা সুরেশ ওয়াডকরের প্রোগ্রাম। এই রকম সব হেভিওয়েট শিল্পীদের নিয়ে, কলকাতা বম্বে দু-পাড়ারই, ভরে থাকে দিল্লির পূজোর চারসন্ধ্যে। কী ছেড়ে কী দেখবেন, সেটা আপনার ওপরেই নির্ভর করছে। আর এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য কোনও আলাদা টিকিট নেই। সব মুক্তমঞ্চ। মঞ্চে সপরিবার দুর্গাঠাকুরের স্থান এক কোণায়, বাকি মঞ্চ শিল্পীর দখলে। আর দর্শকের ঢল পেরিয়ে ঠাকুরের মুখটা কত সুন্দর, দেখার সুযোগ হামেশাই মেটে না। আর তার সাথে লাগে স্টল, পাড়ার বৌদির সরপুরিয়া, এলাকার বাঙালি মিষ্টির দোকান, আনন্দবাজার পত্রিকা, এইচএমভির ক্যাসেট, মিউজিক ওয়ার্ল্ড, ঝালমুড়ি, হোয়ার্লপুল, এলজি, সবাই মিলেমিশে একাকার এক বিশাল চাঁদোয়ার তলায়। গান শোনা আড্ডা মারা কেনাকাটা আলাপপরিচিতি সব চলছে একসাথে। চিত্তরঞ্জন পার্কের একেকটা প্যান্ডেলের ভিড় দেখলে চমকে যেতে হয়, এত বাঙালিও আছে এই দিল্লিতে!

    সন্ধ্যের জাঁকজমক ঠাটবাট এক রকমের, আবার দিনের বেলায় আরেক কিস্‌সা। দুপুর হলেই প্যান্ডেলের পেছন দিকে লম্বা লম্বা লাইন, হাতে থালা চামচ, খবরের কাগজ। খবরের কাগজটা পেতে বসার জন্যে, থালা চামচ খাদ্য উপকরণার্থে। পূজোর কদিন দিল্লি এনসিআরের কোনও বাঙালি বাড়িতে দুপুরে রান্না করেন না। পাড়ার পূজো হতে হবে এমন কোনও কথা নেই, যে-কোনও পূজোয় দুকুরের দিকে গিয়ে থালা-চামচ নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ুন, কেউ জিগ্যেস করবে না আপনি এ-পাড়ার কিনা, চাঁদা দিয়েছেন কিনা, বিনা কোশ্চেনে আপনার পাত ভরে দিয়ে দেবে ভাত তরকারি মিষ্টি চাটনি। তবে হ্যাঁ, খেয়ে যদি পেট না-ভরে, তা হলে বাকিটা বাড়ি গিয়ে রেঁধে খেতে হবে, কারণ যা লম্বা লাইন পড়ে একেকটা প্যান্ডেলে, আপনি যদি পাত পরিষ্কার করে আবার লাইনে দাঁড়াবার স্বপ্ন দ্যাখেন, তা হলে হয় লাইনের মাথায় পৌঁছবার আগে বিকেল হয়ে যাবে, ভাত ফুরিয়ে যাবে, নয় তো আপনার আবার এমন ক্ষিদে পেয়ে যাবে যে যা ভাত তরকারি দেবে তাতে আবার আপনার পেট ভরবে না।

    পূজোর শেষে বিসর্জনের পালা। দিল্লি পুলিশের কড়া নির্দেশে দশমীর দিন রাত এগারোটার মধ্যেই নিরঞ্জন ঘটাতে হয় সব প্রতিমার। উত্তর দিল্লিতে বোধ হয় নিগমবোধ ঘাট, দক্ষিণ দিল্লিতে কালিন্দী কুঞ্জ। এঁদো যমুনার জলে জল নেই, আছে কেবল থিকথিকে কেমিক্যাল বর্জ্য। গায়ে লাগলে সারাজীবনের জন্য চর্মরোগ হয়ে যেতে বাধ্য। তবু ঐ আধমানুষ উঁচু কেমিক্যাল ফেনার মধ্যেই আলতো করে ভাসিয়ে দিতে হয় মা-দুর্গাকে। তাঁর চর্মরোগ হয় না। ডুবে যেতে যেতেও ভেসে থাকে খড়ের কাঠামো, ডোবার মত জলই নেই যে। এখানে ছেলেপিলের দল ঝাঁপিয়ে পড়ে না প্রতিমার সাজসজ্জা আর "মোটুক' লুণ্ঠনের আশায়। যমুনার জলকে ভয় পায় সবাই। দুপুর থেকে বিসর্জনের জন্য বেরিয়ে পড়ে এখানকার সব বাঙালি। লরির পেছন পেছন বাস যায় এলাকার লোকজনকে যমুনার ঘাট পর্যন্ত নিয়ে যাবার জন্য, সারা রাস্তা তাসা পার্টির নৃত্য দেখার সুযোগ এখানে মেলে না, নাচ হয় কেবল পাড়ার মধ্যে এক চক্করে, ছেলে মেয়ে বুড়ো বুড়ি সব্বাই নাচে, এবং এরা সক্কলেই বাঙালি। গ্যাঁড়া হুগলিতে থেকে কখনও কল্পনাও করতে পারত না দশমীর দিন হিন্দি গানের সাথে শরীর বেঁকিয়ে নাচ করছে গ্যাঁড়ার বাপ মা শ্বশুর শাশুড়ি, কিন্তু এখানে একই বয়েসের বয়স্ক নারীপুরুষের দল বিসর্জনের আগে গানের সাথে যে উদ্দাম নৃত্যটি করেন, তার বোধ হয় কেবল প্রবাসেই দেখা মেলে। বিসর্জনেই পূজো শেষ? তা নয়। এর পর বাড়ির ছাদে ছাদে দেখা যায় না বটে আকাশপ্রদীপ, কিন্তু পরবর্তী কিছু উইকএন্ডে পাড়ার কারুর কারুর বাড়িতে বসে বিজয়া সম্মিলনী। গানবাজনা খাওয়া দাওয়া, আর পরের বছরের পূজোর স্ট্র্যাটেজি তৈয়ারি।

    এর বাইরে দিল্লির বৃহত্তর জনগণ, যারা ওড়িয়া, বিহারি, তামিল, কন্নড়, পঞ্জাবী, তারাও মিশে যান কিছু কিছু করে, এই দুর্গাপূজোর ভিড়ে। সব মিলিয়ে মিশিয়ে, এক অন্যরকমের দুর্গাপূজোয় সেজে ওঠে দিল্লির আনাচকানাচ।

    কী ভাবছেন? আসবেন নাকি এবারের পূজোয়? থেকে যাবেন দু-চারদিন?
    (চলেগা নেহি, দৌড়েগা)

    ১৫ই মার্চ, ২০০৯
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ১৫ মার্চ ২০০৯ | ৮৬০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন