তবিলদারের দুনিয়াদারি ১২
ফেলিনির রিমিনি: বোরগো সান জুলিয়ানো
সম্রাট অগাস্টাসের আর্চ থেকে উত্তর দক্ষিণ বরাবর যে রাস্তাটি চলে যায় তিবেরিউসের সেতু অবধি তার নাম করসো দা’গসতো। নগর পরিকল্পনায় গ্রিড সিস্টেম বানানোর কপিরাইট রোমানদের– যে রাস্তা যেত উত্তর-দক্ষিণ তার নাম কারদো, শহরের ঠিক মাঝখানে পুব থেকে পশ্চিমমুখী আরেকটি রাস্তা আড়াআড়ি তাকে অতিক্রম করে, তার নাম ডেকামানুস (আজকের নাম ৪ নভেম্বর পথ)। রিমিনির রোমান ফোরামে এই দুই পথের চৌমাথায় ছিল যাবতীয় সরকারি অফিস, কলোসিউম, সেনেট। রিমিনি বা রোমান আরিমিনুমের শহরসীমা শেষ হয় উত্তর প্রান্তে তিবেরিয়াসের সেতুতে।
তিবেরিয়াসের সেতু
সেটি পেরুলেই ডান হাতে পড়ে শ’খানেক ঘর নিয়ে একটি গ্রাম, বোরগো সান জুলিয়ানো, এককালে মেছুরেদের বাস ছিল। শহরের এবং আইন কানুনের বাইরে- সকল প্রকার ক্রিমিনাল, চোর-ডাকাতের আড্ডা, গাঁজা, আফিং, নারী-ব্যবসা ইত্যাদি বেআইনি কাজের আখড়া সেখানে। রোমান আরমিনিউমের আইন সেখানে চালু হত না, ইতালিয়ান রিপাবলিকও পারতপক্ষে সেদিকে মাথা গলায়নি বরং সান জুলিয়ানোকে দু’হাত দূরেই রেখেছিল। এমনকী খুনখারাপি হলেও পুলিশ বা অ্যাম্বুলেন্স সেখানে যেতে চাইত না, যেমনটা হয়ে থাকে ধনী শহরের অবাঞ্ছিত গরিব উপকণ্ঠে; ওরা থেকে ওধারে, থাকুক।
পুরনো সান জুলিয়ানো
হঠাৎ একদিন কিছু বদলাতে শুরু করল। ১৯৭৯ সালে জুলিয়ানো গ্রামের কিছু উদ্যোগী মানুষ একটি মেলার আয়োজন করলেন। কোনও খোলা মাঠে নয়, সেটি বসবে এই গ্রামের গলিতে, বাসিন্দারা তাঁদের ঘরের দুয়োর খুলে দেবেন। ভালোবাসা এবং সাদর অভ্যর্থনা ছাড়া দেওয়ার কিছু নেই, তবে হাতে হাতে বানাবেন পাস্তা, পিৎজা, গ্লাসে ভরে দেবেন কিয়ান্তি। একেই আজকাল স্ট্রিটফেয়ার বলে। রিমিনির সভ্য মানুষজন সেতু পেরিয়ে এই অবধি আসতে কুণ্ঠিত হয়েছিলেন; দিনে ডাকাতি না হোক পকেটমারের অভাব কি! সব দুশ্চিন্তা কাটিয়ে আগস্ট মাসের এক উজ্জ্বল দিনে দেখা গেল সান জুলিয়ানোর অলিতে গলিতে সুখী জনতার ভিড়, শিশুদের কলরব। গ্রামের লোকেরা যে যেখানে পেরেছেন দুটো চেয়ার পেতে দশজন মানুষকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যদি হও সুজন তেঁতুল পাতায় কত জন!
মেলা বসল আবার পরের বছর এবং তার পর থেকে দু-বছর অন্তর আগস্ট/সেপ্টেম্বর মাসে। কেউ কখনো আক্রান্ত হননি, ছিনতাই হয়নি, ড্রাগ বিক্রেতার সঙ্গে মোলাকাত হয়নি কারো। লোকমুখে ক্রমশ তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে, ট্যুরিস্টরা রোমান রিমিনি, সমুদ্রতট দেখা শেষ হলে একবার ঢুঁ মারেন সান জুলিয়ানো গ্রামে।
ফেলিনির আগে রিমিনির সান জুলিয়ানোর দেওয়ালচিত্র
এতদিন রিমিনি শহরকর্তৃপক্ষ মোটেই গা করেননি, কিন্তু এবার উঠে বসলেন। সামান্য খ্যাতির সঙ্গে জাতে উঠে এবং মেলায় হাতে দুটো পয়সা পেয়ে গ্রামবাসীরা প্রথমেই বিবর্ণ দেওয়ালগুলিতে রঙের পোঁচ দিলেন, কোনও উৎসাহী পুরুষ সদ্য রঙ করা সোঁদা দেওয়ালে দুটো ছবি আঁকলেন (ফরাসি ম্যুরাল, ইতালিয়ানে মুরালে) যার যেমন খুশি। গাড়ি সেখানে চলে না। পথচারিদের জন্য পৌরসভা সমস্ত গলি মেরামত করে দিলেন, অন্ধকার গলিতে আলো জ্বলল। দু-বছরের মধ্যে সান জুলিয়ানোর চেহারা বদলে গেল। গ্রামের সকলেই কিছু জুনিয়র পিকাসো বা মাতিস নন তবু মইয়ে বা ভারায় চড়ে দেওয়ালে তুলি বুলিয়েছেন, বন্ধুজনেদের ডেকেছেন। সেই ছবি আঁকার সময়ে অনেক মানুষ হয়তো এই প্রথম প্রতিবেশীদের কাছ থেকে দেখলেন, জানলেন। পিনো গ্রিজিওর গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বললেন, সালুত! বাড়ল সৌহার্দ্য। প্রতি মেলায়, ‘ফেসটো দেল বোরগো জুলিয়ানো’-তে নতুন চালচিত্র আঁকার ধুম পড়ে গেল, গ্রামবাসীরা শিল্পী ভাড়া করে নিজের বাড়ির পুরোনো ছবি মুছে আঁকালেন নতুন ছবি; গোটা গ্রামের দেওয়াল তাঁদের স্কেচবুক! সকাল বিকেল পথে বেরিয়ে গর্বিত মানুষেরা নিজেদের কীর্তি দেখেন, ‘কভি খুদকো, কভি অপনে ঘর কো দেখতে হ্যাঁয়!’
আবার একদিন সান জুলিয়ানোর দেওয়ালচিত্রের রঙরূপ বদলে গেল।
১৯৯৩ সালের অক্টোবর মাসের শেষদিনে রোমে মারা গেলেন রিমিনির বরেণ্য সন্তান ফেদেরিকো ফেলিনি; আগের দিন জুলিয়েতা মাসিনার সঙ্গে বিয়ের পঞ্চাশ বছর পূর্তির আনন্দ অনুষ্ঠান যাপন করেছিলেন।
কবে কীভাবে কারা একত্র বসে কোন আলোচনা করলেন কেউ জানে না। বোরগো সান জুলিয়ানোর দেওয়ালে, বাড়ির দরজায়, ছাদের কোনায়, উঠোনে, বাগানে, কফির দোকানের ঝাঁপে এবার দেখা গেলো ফেলিনিকে- কোথাও তাঁর ছবির দৃশ্য, কোথাও দেখা দিলেন তিনি স্বয়ং। একদিন যেমন ফেলিনি ড্রইং-এর খাতায় তাঁর স্বপ্ন, তাঁর ফ্যান্টাসিকে রূপ দিতেন, তেমনই সান জুলিয়ানোর মানুষ নিজেদের মতন করে দেখলেন, দেখালেন ফেলিনিকে। কল্পনায় কোথাও তাঁদের হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা, সেন্সরবোর্ড নেই, শহর প্ল্যানিং কমিশনের রক্তচক্ষু নেই। কোনও ফেলিনি ইনক বা ফেলিনি লিমিটেড এসে ধমকাবে না, তাদের সার্টিফিকেটের দরকার নেই। যাদের পছন্দ হবে না তাঁরা না হয় মুখ ঘুরিয়ে চলে যাবেন, দাঁড়িয়ে দেখার জন্য কেউ মাথার দিব্যি দিচ্ছে না।
সারাদিন রিমিনিতে ঘুরেছি ফেলিনির পদচিহ্ন, আমারকর্ডের সুতোটি ধরে। কাস্তেল সিসমনদো, সিনেমা ফুলগোর এর সামনে ফেলিনির ছোট ছবি আছে, তার সঙ্গে কিছু ইতিহাস, সিসমনদোতে ফেলিনি মিউজিয়াম। কিন্তু মঙ্গলগ্রহ থেকে হঠাৎ কেউ রিমিনিতে অবতীর্ণ হলে তিনি এই মানুষটির সম্বন্ধে বিশেষ কিছুই জানবেন না। পিয়াতসা কাভুরের ফোয়ারার সামনে স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে শীতের প্রচণ্ড তুষারপাতের মধ্যে পায়রার পেখম মেলার ছবিটি কল্পনা করতে পারবেন না– তিনি আমারকর্ড দেখেননি। ফেলিনির জীবন, তাঁর ছবির দৃশ্য ভেবে রিমিনি শহরে তাঁকে মনের ভিতরে খুঁজে নিতে হয়- গ্র্যান্ড হোটেলের সামনের পারকো দি ফেলিনি ছাড়া আর কোথাও কোনও সাইনবোর্ডে তাঁর নাম নেই। তিনি আপনার আমার চোখের সামনে বিরাজ করেন না, রিমিনির কোনোখানে ফেলিনির বিশাল ছবি দেওয়ালে সাঁটা হয়নি, তাঁর কোনো স্ট্যাচু নেই। আমারকর্ড, এইট অ্যান্ড এ হাফ নামের রাস্তা আছে কিন্তু ফেলিনির নামে নেই। তাঁর বাড়ির সামনে নীল সাদা বোর্ডে লেখা নেই, ‘এখানে তিনি বাস করতেন।’ স্কুলের চিহ্ন নেই- সেটি এখন ফ্ল্যাটবাড়ি। আমার মতন ফেলিনিতে আচ্ছন্ন মানুষ তাঁকে ব্যোমকেশের স্টাইলে খুঁজে নেন।
জার্মানে একটা কথা আছে, নুর ফুয়ের কেনার, বাংলায়, বুঝ গুণী যে জান সন্ধান।
সান জুলিয়ানোতে এসে দেখলাম, তাঁকে খুঁজতে হয় না। দেওয়ালে দেওয়ালে চিত্রিত হয়ে আছেন তিনি অথবা তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ছবি– আমারকর্ডের অরেলিওর লণ্ডভণ্ড খাবার টেবিল, ফনতানা দেই ত্রেভিতে, লা দলচে ভিতার আইকনিক সিলভিয়া, লা স্ত্রাদার ছেলেটি কাঠের পোল ধরে ঝুলছে, কাসানোভা, সিটি অফ উইমেন (লা চিতা দেলে দনে), একটি দেওয়ালে আমারকর্ডের সমস্ত চরিত্রের মুখ তার মাঝখানে বসে ফেলিনি মাথার চুল ছিঁড়ছেন। মূর্খ অজ্ঞ মানুষদের সুবিধার্থে কোথাও অবশ্য লেখা নেই, ইনি ফেদেরিকো ফেলিনি! আর আছে কিছু স্বতন্ত্র বক্তব্য– স্বাধীনতা কোনও উপহার নয়!
ছবিগুলি
সান জুলিয়ানোর বাড়িগুলো সবই একমাপের, ছোট, অত্যন্ত সাধাসিধে, দোতলা। রঙিন দেওয়াল বাদে তাদের কোনো জৌলুস নেই কিন্তু সবার বাড়ির সামনে, আনাচে কানাচে সাজানো আছে অজস্র ফুলের টব, কোথাও সে ফুলগাছের ডালপালা আকাশ ছোঁয়ার চেষ্টায় অন্তত উঠে গেছে দোতলায়। গ্রামের একমাত্র বাহন, বাইসাইকেল ফেলে রাখা আছে এখানে ওখানে। তিনটে খোলা রেস্তোরাঁ, বাড়ির উঠোনে রাখা যেন ডেকোরেটারের চেয়ার। অতি মূল্যবান স্টার না দিলেও মিশেলিন গাইড উল্লেখ করে সান জুলিয়ানোর ‘অস্তারিয়া দে বোরগ’ নামের ছোট রেস্তোরাঁর, তার অ্যাম্বিয়েন্স, এমিলিও রোমানিয়ার শ্রেষ্ঠ ভোজন। আরেকটি গলিতে এক গুণী, শেরাটনের বিখ্যাত S লোগোটি সেঁটে দিয়েছেন তাঁর রেস্তোরাঁর গায়ে।
অস্তারিয়া দে বোরগ
একদিন আমরা হারিয়ে গিয়েছি ফেদেরিকো ফেলিনির স্বপ্ন, সত্য, ফ্যান্টাসির মাঝে। এই সান জুলিয়ানোর মেছুরে মানুষ তাঁকে দেখেছে, তাদের নিজেদের ম্যাজিক লন্ঠনের আলোয়। আমাদের দেখিয়েছে।
নদীর ধারে ওয়াইন ফেস্ট– জনতার মৃদু কলরোল।
পাশ দিয়ে বয়ে যায় মারেকিয়া নদী, সেতুর প্রাচীন খিলানের নিচ দিয়ে। কোনও কথা নয়, অলস বিকেলের আলোয় স্তব্ধ সময়।
নদীর ধারে ওয়াইন ফেস্ট
মানুষের মৃত্যু হলে
১৯৯৩ সালের পয়লা নভেম্বর থেকে শীত ও তুষারকে উপেক্ষা করে অজস্র মানুষ এসেছিলেন চিনে চিতা স্টুডিওতে চিরনিদ্রায় শায়িত এমিলিও রোমানিয়ার গ্রামের দরিদ্র চাষির সন্তান ফেদেরিকো দোমেনিকো মারচেলো ফেলিনিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর প্রিয় রিমিনিতে, যেখানে একদিন তিনি স্কেচ বিক্রি করে সিনেমা দেখার টিকিট জোগাড় করেছিলেন। সারা শহর তাঁর শেষযাত্রায় যোগ দিয়েছিল।
রিমিনি সমাধিক্ষেত্র, বাঁয়ে ফেলিনি ডাইনে গ্রুয়াউ শায়িত
দুশো বছর আগে নেপোলিয়ন ইতালি অধিকারের পরে ফরমান জারি করেন গিরজের বাগানে নয়, নগরস্বাস্থ্য রক্ষার কারণে মৃতের শেষ আস্তানা জনসমাজ থেকে দূরে হতে হবে। তাই রিমিনির নগর সমাধিস্থলটি শহরের বাইরে। ফেদেরিকো ফেলিনি, জুলিয়েতা মাসিনি এবং শিশু সন্তান পিয়ের ফেদেরিকো ফেলিনি সমাহিত হয়েছেন এখানে। কিছু অসাধারণ উচ্চমানের স্থাপত্যের দরুন মনুমেন্টাল সেমেট্রি নামেও এটি পরিচিত। ফেলিনির সমাধির ওপরে কোনো ক্রুশ নয়, মাটির ওপরে একটি বিন্দুতে দাঁড়িয়ে আছে ব্রোঞ্জে তৈরি একটি জাহাজের মাথা (লা গ্রান্দে পুয়া/ বিগ শিপ’স বো), উচ্চতায় দেড় মানুষ। স্থপতির নাম আরনালদো পমোদরো। রিমিনির টেকনিক্যাল স্কুলে পড়াশোনা করেছেন, পরে স্থাপত্যের জগতে ফেলিনির মতন বিশ্ববিখ্যাত হন। মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্ট ম্যানহাটানে আছে তাঁর বিখ্যাত স্ফিয়ার। টিকিট না কেটেও দেখা যায় তাঁর কিছু কাজ- ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে, ডাবলিন, মিলানে। লা গ্রান্দে পুয়া আমারকর্ডে আবছা দেখা সেই রেক্স জাহাজকে মনে করিয়ে দেয়। পমোদরো বলেছিলেন জল থেকে উঠে মাটি ছাড়িয়ে আকাশ ছুঁতে চায় এই জাহাজের চুড়ো– ফেলিনির জীবনের প্রতীক!
ফেলিনির স্মরণস্তম্ভ, লা গ্রান্দে পুয়া
ফেলিনির স্মারকের মুখোমুখি বিখ্যাত ডিজাইনার রেনে গ্রুয়াউয়ের (প্রকৃত নাম কাউন্ট রেনাতো কামিনাতে) সমাধি। পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের পরে রিমিনি ছেড়ে মায়ের সঙ্গে প্যারিসপ্রবাসী হয়েছিলেন। চোদ্দ বছর বয়েসে ভোগ, মারি ক্লেয়ারের মতো ফ্যাশন পত্রিকায় চিত্রণ করেন। হয়তো আমরা লক্ষ করি না কিন্তু আজকের অনেক নামকরা ব্র্যান্ডে তাঁর তুলির বা পেন্সিলের ছোঁয়া আছে, যেমন দিওর, অয় সাভাজ, ঝিভঞ্চি! ক্রিস্টিয়ান দিওরের বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেনে তাঁর ছবি ব্যবহৃত হয়েছে, প্যারিসের মূলাঁ রুজ ও লিডোর ভেতরে বেশ কিছু অলঙ্করণ করেছিলেন তিনি।
রেনে গ্রুয়াউ ‘লা দলচে ভিতা’-র আইকনিক পোস্টারটি এঁকেছিলেন। ফেলিনির মৃত্যুর দশ বছর বাদে তিনি মারা যান; চেয়েছিলেন তাঁর স্মরণস্তম্ভটি যেন ফেলিনির পাশে থাকে। মরণেও লা দলচে ভিতা, মিষ্ট জীবন তাঁদের বেঁধেছে এক বন্ধনে।
রেনে গ্রুয়াউ-এর সমাধি
পুনশ্চ: ফেলিনির সমাধি দেখতে যাবার সময়ে আমার ট্যাক্সি চালকের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে বুঝলাম তিনি কেবল স্বচ্ছন্দ ইংরেজি বলেন না, ফিল্ম ও আর্ট জগতের খবরও রাখেন। গ্রান্দে পুয়াও-এর সামনে দাঁড়িয়ে তিনি জানালেন এর নির্মাতা আরনালদো পমোদরো মিলানে মারা গেছেন কয়েকদিন আগে, ২৫শে জুন। বয়েস হয়েছিল ৯৮। এখন অবধি জানা যায়নি তবে তিনি মনে করেন রিমিনির সেই কৃতি সন্তান, আরনালদো পমোদরোর মরদেহের শেষ শয্যা এখানেই পাতা হবে। আমার আর কোনোদিন রিমিনি যাওয়া হবে না জানি, তবু দূরের কোনও আকাশ কল্পনা করে নিতে বাধা নেই যেখানে ফেদেরিকো ফেলিনি স্কেচবুকে চিত্রনাট্য লিখছেন, রেনে গ্রুয়াউ বানাচ্ছেন নতুন পোস্টার, আরনালদো পমোদরো পেতল ও ব্রোঞ্জ দিয়ে গড়ছেন মূর্তি। অনেক নিচে, রিমিনির এক সবুজ উদ্যানে তাঁদের স্মৃতিচিহ্নের ওপরে আদ্রিয়াতিক সাগরের বাতাস খেলা করে সারাদিন, তারারা জেগে থাকে সারারাত।
রিমিনি
১০ই জুলাই, ২০২৫
সান জুলিয়ানের আরও কিছু দেওয়াল চিত্র