আমার ব্যক্তিগত মতঃপ্রত্যেক ধর্ম নিজেদের অন্য ধর্মের তুলনায় শ্রেষ্ঠ মনে করে। এবং একইভাবে সমস্ত আব্রাহামিক ধর্ম অন্যদের দীক্ষিত করার ব্যাপারে বিশ্বাসী। যে সমস্ত রাষ্ট্র খোলাখুলি ভাবে ধার্মিক রাষ্ট্র, তাঁরা স্বাভাবিক ভাবেই রাষ্ট্রযন্ত্রের সাহায্যে এবং বিশেষ আইন কানুন বানিয়ে অন্য ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানিয়ে রাখবেন, এটাই স্বাভাবিক। আমি ক'বছর আগের বইমেলায় কোলকাতার ইসলামিক প্যাভেলিয়ন থেকে বাংলায় কুরআন এবং ইসলামিক রাষ্ট্রে নারী ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের স্থান বোঝার জন্যে দুটো বুকলেট কিনলাম। তাতে স্পষ্ট করে বলা আছে যে যেহেতু রাষ্ট্র পরিচালনা ইস্লামিক আদর্শে হবে তাই অন্য ধর্মাবলম্বীদের সেই পরিচালনায় কোন মতামত থাকতে পারে না। তারা বেসিক নাগরিক অধিকার পাবে, ব্যস। মেয়েরাও ইসলামিক আদর্শ মানলে পুরুষের সমানে সব ব্যাপারে অংশ গ্রহণ করতে পারে না।
দেখবেন, সানিয়া মির্জার টেনিস খেলার পোষাক নিয়ে কথা ওঠায় টিভিতে জনৈক মৌলবী হাসিমুখে বলেছিলেন--মেয়েদের এতসব খেল্ধূলোর কী দরকার?
তাই ধার্মিক রাষ্ট্রে যদি সেই ধর্মের লোকজন বিশেষ সুবিধা না পায় তাহলে কিসের ধার্মিক রাষ্ট্র? ভারতে মিশনারী স্কুলে অন্য ধর্মের টিচারদের সঙ্গে ভেদভাব করা হয়।
সাভারকরের হিন্দু রাষ্ট্রের কল্পনায় একইভাবে মুসলমানদের কোন স্থান নেই। আমরা যারা এদেশকে হিন্দু রাষ্ট্র ভাবতে ভালবাসি তাঁরা ক্রমশঃ মুসলিমদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করছি। কোথাও পঞ্চায়েতে প্রস্তাব পাশ করছি যে মুসলমানদের দোকান থেকে জিনিস কেনা চলবে না। কোথাও কল্পিত জেহাদের জিগির তুলে তাদের বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধের ডাক দিচ্ছি।
না, এগুলো বে আইনি নয়, কারণ এ তো আত্মরক্ষার জন্যে! আর সে অধিকার সবারই আছে।
ইসলামে সুদের ব্যবসা করা হারাম। তাই পাকিস্তানের ইসলামিক ব্যাংক জমা বা ঋণ --কোনটাতেই সুদ দেয় বা নেয় না। কিছু সার্ভিস চার্জ নেয়, সেটা দিয়েই ওভারহেড ম্যানেজ করা হয়।
ভারতেও অনেক সাধারণ ব্যাংকে কিছু মুসলমান (সবাই নন) জমা খাতায় সুদ নিতে চান না। তাঁরা সেই প্রাপ্ত সুদ ফের ব্যাংককে ফেরত করে দেন অথবা কারেন্ট অ্যাকাউন্টে রাখেন।
খেয়াল করে দেখুন, ইসলামিক দেশে ওদের ব্যাংক মুসলিমদের যেমন বিনা সুদে ঋণ দেয়, তেমনই তাদের জমাখাতায় সুদ দেয় না।
এব্যাপারে আমি যদি ভুল বকে থাকি রাহলে হীরেনবাবু বা অন্য কেউ নিশ্চয়ই সেটা ধরিয়ে দেবেন।