এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে

  • সারনাথ

    দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে | ২৯ অক্টোবর ২০২৩ | ৮৫২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • বৌদ্ধদের চারটে তীর্থক্ষেত্র - নেপালের লুম্বিনী যেখানে শাক্যমুনি জন্মান , বোধগয়া যেখানে তিনি নির্বাণ প্রাপ্ত হয়েছিলেন , সারনাথ যেখানে মৃগদাবে[হরিণের বনে] গৌতম প্রথম পাঁচ শিষ্যকে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা দেন এবং কুশীনগর - যেখানে তার মৃত্যু হয়েছিল। শার্ঙ্গনাথ মানে হরিণদের রাজা, সেখান থেকেই সারনাথ নাম বলে অনেকের অনুমান। জৈনদের একাদশতম তীর্থঙ্কর শ্রেয়াংশনাথও এখানেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। 
     
    সন্ধ্যে আটটায় নয়াদিল্লি ছেড়ে শিবগঙ্গা এক্সপ্রেস কানপুর , প্রয়াগরাজ [ইলাহাবাদ] হয়ে বেনারস পৌঁছয় সকাল ছটায়। বেনারসে তিনটে ট্রেন স্টেশন। বাকি দুটো বেনারস জাঙ্কশন এবং ক্যান্টনমেন্ট। সারনাথ হচ্ছে কাশীর উত্তরে। সকালবেলায় বেনারসের ঘাটগুলো ঘুরে দুপুরে সারনাথ যাবার প্ল্যান। সেটা মাথায় রেখে ঘাটের হাঁটা বেনারসের দক্ষিণ দিক দিয়ে শুরু করতে হল। আস্তে আস্তে উত্তরের দিকে উঠতে হবে। বর্ষাকালে আকাশ মেঘে ঢাকা এবং গুমোট গরম। বেনারস স্টেশনের সাত নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরোতে শুনতে পেলাম শেয়ার অটোওলারা চেঁচাচ্ছে 'লঙ্কা বি এইচ ইউ' , 'লঙ্কা বি এইচ ইউ'। 
     
    ~১৯১৬তে মদনমোহন মালব্য , আনি বেসান্ত মিলে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী করেন। ভেতরের ক্যাম্পাসটা ম্যাপে জ্যামিতির আদ্দেকটা চাঁদার মতো।  
     
     
    তারপর গুরু রবিদাস গেটকে ডানদিকে রেখে অটো নামিয়ে দিল বেনারসের দক্ষিণতম ঘাট অসি ঘাটের সামনে। বেনারসের ঘাট নিয়ে আগে অনেকে গুরুতে বিশদে লিখেছেন তাই বিশদে বলছি না। বেনারসের অনেক ঘাটই মূলত কোনো না কোনো দেশীয় রাজ্যের - বাঙালি , মারাঠি , দক্ষিণ ভারতের রাজাদের বানানো। কোচবিহারের রাজাদেরও একটা ঘাট আছে। প্রতিটা ঘাটের নিজস্ব গল্প এবং ইতিহাস আছে। ঘাটগুলোর মধ্যে হেঁটে যাবার রাস্তা কাশীর বিখ্যাত সরু গলিঘুঁজি। গলির মধ্যেকার বাড়িগুলোরও নিজস্ব সব গল্প। একজায়গায় মহাকবি ভারতিয়ারের বাড়ির বাইরে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্টালিনের নাম সমেত ফলক লাগানো। অনেক জায়গায় পুরোনো বাড়ি ভেঙে ভেঙে পড়ছে। 
     
    অসি ঘাটে কাদায় নৌকা এবং বজরার ভিড়। গঙ্গার সেতু পেরোলে ওদিকে ~১৭৫২ সালে তৈরী কাশীর রাজা বলবন্ত সিংহের রামনগর কেল্লা। 
     
     
    তুলসী ঘাটে তুলসীদাস রামচরিতমানস লিখেছিলেন ~পনেরশো সালে। প্রতিটা ঘাটের গায়ে কোথাও না কোথাও এভাবে ঘাটের নাম এবং অনেক জায়গায় কিউ আর কোড লাগানো আছে , সেগুলো স্ক্যান করলে ঘাটের ইতিহাস জানা যায়। 
     
     

    মজাদার গ্রাফিত্তি 
     
    এক অনামী গলির মধ্যে বাংলা নামওয়ালা বাড়ি। 
     
     
     
    দশাশ্বমেধ ঘাটের দিকে যেতে যেতে বাতাসে পোড়া ঘির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ধীরে ধীরে তার সঙ্গে ধূপ এবং কচুরির গন্ধ মিশতে থাকল। গলিতে গরু , কুকুর এবং গোবর। তার মধ্যে দিয়ে সাইকেল এবং বাইক , স্কুটি চলছে অনায়াসে। ঘাটগুলোর পাশে পাশে আখড়ায় মুগুর ভাঁজছে জনতা। 
     

    দশাশ্বমেধ ঘাটে এই ফলকটা লাগানো আছে বেনারসের সমস্ত ঘাটগুলোর অবস্থান বোঝাতে। দশাশ্বমেধ ঘাটে পরপর পাতা মাথায় ছাতাওলা কাঠের মোটা তক্তা। সাধুদের জটলা , একজায়গায় তিন চার জন বসে ছিলিম টানছে। ঘাটকাজ , পিন্ডদান, চুল কামানো , গঙ্গাস্নান চলছে। মাঝিরা ডাকাডাকি করছে নৌকায় ঘাট সফরের জন্য। 
     

    দশাশ্বমেধ ঘাটে কুন্তল বিসর্জনের উপাচার।
     
    দশাশ্বমেধ ঘাটের পাশেই মানমহল ঘাটে আমেরের জয় সিংহের বানানো কাশীর যন্তর মন্তর। এখন সারিয়ে এএসআই ছোট সংগ্রহশালা বানিয়েছে ভেতরে। মানমন্দিরের যন্ত্রগুলো আছে এই বাড়ির ছাদে। 
     
    সংগ্রহশালায় রাখা বেনারসের কাছে এক গ্রামে তৈরী পঞ্চমুখী গণেশের পুতুলমূর্তি। 
     
    সংগ্রহশালায় কিছু প্রোজেক্টর , ট্যাবলেটের মাধ্যমে বেনারসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং বেনারসে ঘুরে যাওয়া বিখ্যাত ব্যক্তিত্ত্বদের নাম জানা যায়, সন্ধ্যেবেলা মনে হয় ভেতরে একজায়গায় একটা শব্দ এবং আলোর শোও চলে। গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময় ফা হিয়েন , ~৬০০ খ্রিস্টাব্দে হিউয়েন সাং কাশীতে এবং সারনাথে এসেছেন। তার হাজার বছর পরে দারা শিকো কাশীতে থাকাকালীন ফার্সি ভাষায় উপনিষদ অনুবাদ করান। ইউরোপীয় পর্যটক ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ের বা জঁ ব্যাপ্টিস্ট তাভার্নিয়ারও কাশিতে এসে সময় কাটিয়ে গেছেন।
     
     
    ~১৭৮১ ওয়ারেন হেস্টিংস কাশিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অন্তর্ভুক্ত করলেন। ~১৮০০ জেমস প্রিন্সেপ প্রথম কাশীর আধুনিক ম্যাপ আঁকলেন। তার আগে একটা হাতে আঁকা ম্যাপ ছিল কাশি দর্পণ বলে , সেটারও এক কপি বাঁধিয়ে এখানে রাখা আছে। 
     

    কাশী দর্পণের পুরোনো হাতে আঁকা মানচিত্র। মাঝের ওই চৌকো বাক্সটা হচ্ছে মূল বেনারস। [ছবি - ইন্টারনেট]
     
    অষ্টম শতাব্দীর লেখাতেও কাশীর তন্তুবায়দের বানানো সোনালী সুতোর শাড়ির কথা পাওয়া যায়। গঙ্গার জলপথ ব্যবহার করে এই সব পোশাক পৌঁছে যেত রেশম পথ ধরে পারস্য , চীন এবং অন্যত্র। সন্ত কবীর নিজেও তাঁতি ছিলেন। তাঁত চালাতে চালাতে গুনগুন করে অনেক দোঁহা রচনা করেন। তার সঙ্গেই চামড়ার জুতো বানাতেন সন্ত রবিদাস। পনেরোশো শতাব্দীতে তারা ভক্তি আন্দোলনে যোগ দেন। ভক্তি আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গুরু নানক প্রচলন করলেন শিখ ধর্ম। শিখদের ধর্মগ্রন্থ গুরু গ্রন্থসাহিবে কবীর এবং রবিদাসের দোঁহা এবং কবিতা লেখা আছে। 
     
    মানমন্দিরের ছাদে সময় এবং সূর্য বা চাঁদের কোণ বোঝার জন্য সম্রাট যন্ত্র। এর আরেকটা ছোট সংস্করণ লঘু সম্রাট যন্ত্র রাখা আছে ছাদের আরেকটা দিকে। 
     
     

    লুকোচুরি খেলা 
     
    বিষুবরেখা থেকে সূর্য চাঁদ তারার দূরত্ব সময় এককে মাপার জন্য চক্রযন্ত্র। এই পিছনের পাঁচিলে বসেই বিকাশ সিংহের চরিত্রটি বলেছিল - "এখানে আমার কোনো ভবিষ্যৎ নেই , মিস্টার মিত্তির। আপনি বিশ্বাস করুন। মগনলাল আমাকে পাঁচশো টাকা দিয়েছিল , পরে মূর্তিটা এনে দিলে আরো পাঁচশো। আর কলকাতায় একটা চাকরি। "
     
     

    তারাদের azimuth বোঝার জন্য দিগাংশ যন্ত্র। ওপর থেকে ড্রোন দিয়ে তুললে পূর্ণ বৃত্তাকার দেখাবে। গায়ে মাপার স্কেলগুলো দাগ কেটে দেখানো আছে।    
     

    মেরিডিয়ান[দ্রাঘিমা রেখা] থেকে তারাদের উচ্চতা বোঝার জন্য দক্ষিণোভিত্তি যন্ত্র। এটাকে ঠিক গিটার বাজানোর প্লেকট্রামের মত দেখতে না? 
     
    এই বাড়ি থেকে বেরোলেই পাশে বিশ্বনাথ মন্দিরকে ঘিরে বেনারসের গোদাউলা বাজার। পাতি লস্যির দোকানের বাইরেও সারি দিয়ে লকার রাখা, যাতে জিনিস রেখে দেওয়া যাবে মন্দিরে ঢোকার আগে। কচুরি , আলু কালো ছোলার তরকারি , একটা লবঙ্গলতিকা আরেকটা সরভাজা মিষ্টি খাওয়া গেল। 
     
    এদিককার গলিঘুঁজি দিয়ে মন্দিরে না ঢুকে ঘাটের দিক দিয়ে চলে গেলাম মণিকর্ণিকার দিকে। সেখানে পাঁচ টাকায় বিটনুন দেওয়া লেবু চা। পাশে রাখা স্তূপাকৃত কাঠ থেকে বিরাট তুলাপাত্রে সৎকারের কাঠ ওজন করে বিক্রি হচ্ছে। কোমরে মাথায় লাল গামছা জড়ানো শ্মশানবন্ধুদের ভিড়ে নিজেকে বেমানান মনে হয়। মণিকর্ণিকা নিয়ে কিছুদিন আগে পড়া সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা কবিতা, মরাচৌর 'অরূপ তোমার এঁটোকাঁটা' এসবের কথা মনে পড়ে। মণিকর্ণিকার ঘাটে পিসার মিনারের মত ৯ ডিগ্রী হেলে থাকা রত্নেশ্বর মহাদেব মন্দির। গর্ভগৃহ জলে ডুবে থাকে বছরের অধিকাংশ সময়। দক্ষযজ্ঞের সময় মহাদেবের কানের দুল [কর্ণমণি] এখানে পড়ে একটা কুন্ড [সম্ভবত উল্কাপাতকে এভাবে গল্প দিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে] তৈরী হয়েছিল বলে ঘাটের এরকম নাম। সেই কুন্ডটা কাদায় আর ঘোলা জলে ভর্তি এখন।
     
     
     
    এদিক দিয়ে সহজেই ভিড় এড়িয়ে ফাঁকায় বিশ্বনাথ মন্দিরে ঢোকা যায়। পুরো জায়গাটা সংস্কার করে মণিকর্ণিকা থেকে বিশ্বনাথ মন্দিরে যাবার রাস্তা করা হয়েছে - বিতর্কিত নতুন কাশী বিশ্বনাথ করিডোর।
     
    সংস্কারের পর এই জায়গাটা চারপাশের সঙ্গে কিছুটা বেমানান। বেনারসের ঘাট ধরে হাঁটার পথে এক টুকরো দ্বীপের মত। বাঁদিকে দূরে মণিকর্ণিকা শ্মশানের চুল্লি দেখা যাচ্ছে। 
     
    নতুন করিডোরে অনেকগুলো পুরোনো মন্দির খুঁজে পেয়ে সারিয়ে ঠিকঠাক করা হয়েছে।
     
    "ছলাৎ ছল ছলাৎ ছল ছলাৎ ছল /  ঘাটের কাছে গল্প বলে নদীর জল" 
     
    বেনারসের আরেক বিখ্যাত ভোঁসলে ঘাট ১৭৮০ সালের নাগপুরের ভোঁসলে রাজাদের বানানো। প্রাসাদের ধারের বাড়িগুলো হেরিটেজ হোটেল এখন। 
     
     
    এই ঘাট থেকে ওপর দিকে হেঁটে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর বুঝলাম কাশির কুখ্যাত গলিতে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি। কোনমতে প্রধান রাস্তায় এসে শেয়ার অটো ধরা গেল। এখান থেকে আরো উত্তরের দিকে রাজঘাট দশ টাকা। বড় রাস্তায় কলকাতার মত প্যাডেল করা সাইকেল রিকশার ভিড়। ভিড়ের চোটে সবাই সবার ঘাড়ের ওপর উঠে পড়ছে কিন্তু আশ্চর্য ঘটনা যে কারুর গায়ে কোনো আঁচড় পড়ছে না। বেনারসের এই প্রধান রাস্তার দুধারের বাড়িগুলোকে অমৃতসর বা জয়পুরের ব্যবসা কেন্দ্রের মত সারিয়ে গোলাপি রঙের করা হয়েছে। একতলাগুলো সবই নানারকম দোকান। 
     

    বেনারসের একেবারে উত্তরে প্রাচীন রাজঘাটের পাশে নতুন তৈরি এই নমো (?!) ঘাট। করিডোরের মত এটাও প্রধান সেবকের সময়কালে তৈরী বলে নামকরণটা খেয়াল করবেন। 
     

    রাজঘাটের পাশে গেইলের সিএনজি রিফিলিং স্টেশনে অটোর ভিড়। রাজঘাট আর নমোঘাটের মালব্য ব্রীজ পেরিয়ে ট্রেন লাইন চলে গেছে মুঘলসরাইয়ের দিকে। ব্রীজের ওপরে প্রথম স্তরে রেললাইন। তার ওপরে দ্বিতীয় স্তরে গাড়ি , মানুষ যাবার রাস্তা। 
     
     
    রাজঘাট ষোড়শ মহাজনপদের সময় কাশী জনপদের রাজধানী। কাশি ট্রেন স্টেশন তৈরির সময় খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে এসব মেলে ১৯৪০ সাল থেকে। খৃস্টপূর্ব অষ্টম শতকের টেরাকোটা মূর্তি , মুদ্রা , ঘর গেরস্থালীর জিনিস পাওয়া গেছে। খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতক থেকে এখানে মানুষ বাস করে। এ এস আই এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক আওয়াধ কিশোর নারায়ণ এবং ত্রিভুবন নাথ রায়ের অধীনে খননকার্য চলেছে ১৯৬০ থেকে ১৯৬৯। এখানেই নানারকম সময়ের স্তরে স্তরে বাসস্থানের চিহ্ন পাওয়ার জন্য কাশীর এই অংশকে পৃথিবীর সবথেকে পুরোনো জনবসতির মধ্যে একটা ধরা হয় , যেখানে আড়াই হাজারেরও বেশি বছর ধরে একটানা মানুষ বসবাস করছে।  
     
    রাজঘাটের পিছনে - ১৭৭৩ সালে কাশীর রাজাদের অধিনায়ক লাল খানের সমাধি। লাল খানের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী কাশীর রাজা তাঁকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের এখানে সমাধি দেন। সমাধিকে ঘিরে একটা চৌকো বাগানের চারকোণে চারটে অষ্টভুজ পাথরের ছত্রী [ক্যানোপি]। 
     
     

     
     
    লাল খানের সমাধির পাশে প্রাচীন কাশী মহাজনপদের ইঁটের শহরের অবশেষ। 
     

     
     
    বেনারস থেকে একটা ট্রেন লাইন সারনাথের দিকে বেঁকে যায়। এছাড়াও বেনারসে ওলা , উবার চলে। সারনাথে যাবার জন্য বুক করতে চালক বললেন স্যার সোজা রাস্তায় ট্রেন লাইনের ওপর উড়ালপুল তৈরী হচ্ছে। বেনারস জংশনের পাশে পুলিশ লাইন দিয়ে ঘুরে যেতে হবে। আধঘন্টা সময় লাগল সারানাথের মিউজিয়াম এবং চত্ত্বরের বাইরে পৌঁছতে। 
     
    আঠেরোশোতে আলেক্সান্ডার কানিংহ্যাম, তারপর জন মার্শাল, হ্যারল্ড হারগ্রিভস হয়ে সারনাথে শেষ খোঁড়াখুঁড়ি করেছেন দয়ারাম সাহানি। এখানে খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে বারোশো শতাব্দীর সময়কালীন একগাদা বিহার , স্তুপ , মন্দির , লিপি , মূর্তি পাওয়া গেছে। জার্মান প্রত্নতাত্ত্বিক ফ্রিডরিখ অস্কার ওয়ের্টেল সারনাথের অশোক স্তম্ভ আবিষ্কার করেন ১৯০৫ সালের মার্চ মাসে। এত এত জিনিস পাওয়া যাচ্ছিল দেখে ১৯১০ সালে জন মার্শাল উদ্যোগ নিয়ে সেসব জিনিস রাখার জন্য অর্ধেক বৌদ্ধ সংঘারামের মত ধাঁচে সারনাথ সংগ্রশালা বানানোর নির্দেশ দেন। জাতীয় প্রতীকের সঙ্গে নিজস্বী তোলার ভিড় কমাতে এখন সারনাথ সংগ্রহশালায় মোবাইল নিয়ে ঢোকা বারণ। বাইরে বিনামূল্যে ব্যাগ এবং মোবাইল জমা রাখার লকার আছে। 
     
     
    সংগ্রহশালার বাইরে দুদিকের বারান্দায় রাখা আছে প্রচুর door jamb। আর ঢুকে প্রথমেই জাতীয় প্রতীকের অশোক স্তম্ভের ক্যাপিটাল এবং তার এবাকাসে ধর্মচক্রের সঙ্গে সঙ্গে খোদাই করা বৃষ, হাতি ,সিংহ এবং ঘোড়া চোখে পড়ে। সিংহগুলির মাথার ভাঙা অশোক চক্রের টুকরোগুলো দেওয়ালে জুড়ে পূর্ণ চক্রটিকে বোঝানোর চেষ্টা। এছাড়াও কুষাণ যুগের মথুরা ঘরানায় তৈরী বালক বোধিসত্ত্বের মূর্তি। পাথরের একটা বিরাট বড় ছাতা। টেরাকোটা , বেলেপাথরে তৈরি আরো কিছু মূর্তির মাথা। অনন্তশয্যায় বিষ্ণু আর গৌতম বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ মূর্তিগুলোর মধ্যে মিলটা চোখে পড়ার মতন। একজন গাইড শুনলাম একদল জাপানী পর্যটককে গৌতম বুদ্ধের এক ভূমিস্পর্শমুদ্রার মূর্তি বোঝাচ্ছেন। জাম্ভালা এবং বসুধারা, জমন্তক, হেরুক ইত্যাদি ব্যক্তিত্ত্বদের ছোট ছোট মূর্তিও রাখা আছে। 
     

    সারনাথ মিউজিয়ামে রাখা স্কুলপাঠ্য ইতিহাস বইয়ের পাতার গুপ্তযুগের সবথেকে বিখ্যাত ধর্মচক্র প্রববর্তনকারী বুদ্ধমূর্তি , যেখানে সারনাথ ঘরানার ছাপ স্পষ্ট [ছবি - উইকি] । সিদ্ধার্থর দুদিকের কনুইয়ের পাশে ভ্যাল / leogryph দুটোকে খেয়াল করুন। 
     
     
    মন্দার পর্বতে ধ্যানরত শিবের চোখ খেলাচ্ছলে পার্বতী পিছন থেকে চেপে ধরেন , তাতে শিবের তৃতীয় চোখ থেকে এক ফোঁটা ঘাম মাটিতে পড়ে অন্ধক বলে এক অন্ধ এবং বিকৃত চেহারার শিশুর জন্ম হয়। অসুর হিরণ্যক্ষ যখন তপস্যা করে শিবের কাছে এক সন্তান চাইলেন, তখন শিব অন্ধককে প্রতিপালনের জন্য দিয়ে দিলেন তার কাছে। কালক্রমে বিষ্ণুর বরাহ অবতারের হাতে হিরণ্যক্ষের মৃত্যুর পর অন্ধকই অসুরদের রাজা হবার কথা। কিন্তু শিব এবং পার্বতীর সন্তান বলে বাকি অসুররা তাকে মানতে চাইত না। তখন অন্ধক তপস্যা করে ব্রহ্মার থেকে অমরত্ত্ব লাভ করলেন , কিন্তু ব্রহ্মা এও জানিয়ে দেন শিবের হাতে তার অমরত্ত্ব প্রযোজ্য নয়। অমরত্ত্ব লাভ করে অন্ধক তার প্রতিযোগী অসুরদের সরিয়ে রাজা হলেন। শুধু রাজা হলে তো আর হবেনা , রাণীও চাই। অন্ধক পার্বতীকে হরণের লক্ষ্যে কৈলাস আক্রমণ করলেন। শিবের সঙ্গে অন্ধকের লড়াইতে অন্ধকের প্রতি রক্তবিন্দু থেকে এক একজন অন্ধকের জন্ম হচ্ছে দেখে বিষ্ণু কয়েক জন মাতৃকাকে তৈরী করলেন যারা অন্ধকের রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই সংগ্রহ করে নেবেন পাত্রের ভেতর। 
     

    সারনাথের মিউজিয়ামে এই সেই ত্রিশূল দিয়ে অন্ধক অসুরকে মারতে উদ্যত শিবের ছ ফুটেরও বেশি উচ্চতার মূর্তি। এই মূর্তিতে শিবের গালে চাপ দাড়িটা খেয়াল করবেন। একজন মাতৃকার হাতের পাত্রও মূর্তিতে দেখা যাচ্ছে। [ছবি - ইন্টারনেট] 
     
     
    মিউজিয়ম থেকে বেরিয়ে সারনাথ ASI কমপ্লেক্সের দিকে এগোলাম। ঢুকেই ইংরেজি ছাড়াও জাপানি এবং তামিলে ট্যাবলেটে লেখা আছে। সাদা জামাকাপড় পরা সিংহলী বৌদ্ধদের দুটো বড় বড় দল সারনাথ ঘুরতে এসেছেন। 
     
    প্রথম বৌদ্ধ সংঘের ভিত্তিপ্রস্তরও সারনাথে প্রোথিত হয়। 
     
     
    অশোক স্তম্ভের অবশেষ এক কাঁচের বাক্সের ভেতর রাখা আছে। এই সেই স্তম্ভের গায়ের অশোকের আদেশের ব্রাহ্মী লিপি। 
     
    অশোক স্তম্ভের গায়ে উৎকীর্ণ ব্রাহ্মীলিপির অনুবাদ। দেবনামপ্রিয় অর্থে সম্রাট অশোক। 
     

    অশোক স্তম্ভের পাশে সারি দিয়ে বৌদ্ধ বিহারগুলো। প্রথম বিহারটা ধর্মচক্রজীন [জ্ঞান]  বিহার নামে পরিচিত - কনৌজের গাহারবাল রাজা গোবিন্দ চন্দ্রের বৌদ্ধ রাণী কুমার দেবী এটার শিলান্যাস করেছিলেন এগারোশো শতাব্দীতে। প্রথম বৌদ্ধ বিহার থেকে সংস্কৃত ভাষায় এবং শুরুর দিকের নাগরী শিলালিপি থেকে জানা যায় এই প্রশস্তি রচনা করেন কবি শ্রীকুন্ড এবং খোদাই করেন বামন। আকারে ছোট এবং প্রকোষ্ঠ যুক্ত স্তূপগুলো votive স্তুপ বলে পরিচিত। দূরে দেখা যাচ্ছে বিখ্যাত ধামেক স্তুপ। 
     
    তৃতীয় বৌদ্ধ বিহার 
     
     
    মূলগন্ধকুটি বিহার। ওই মাঝখানের মুলাগন্ধা কুটিতে সিদ্ধার্থ বসে ধ্যান করতেন। হিউয়েন সাংয়ের লেখা অনুযায়ী সেই জায়গার ওপর গুপ্ত যুগে এই মন্দিরটা তৈরী হয়। 
     
     

    বিহারের ছাদ ধরে রাখার স্তম্ভসমূহের টুকরো টাকরা একদিকে সাজিয়ে রাখা আছে
     

     

    যেখানে দাঁড়িয়ে বুদ্ধ প্রথম ধর্মচক্র প্রবর্তন সারমন দিয়েছিলেন, সেই পবিত্র স্থানেই পরবর্তীকালে এই ধামেক স্তুপ তৈরী হয়। হাজার শতাব্দীর এক শিলালিপি অনুযায়ী এটার নাম আগে ছিল ধর্মচক্র স্তুপ। স্তুপের একেবারে ওপরের ছাদ থেকে থেকে ভরকেন্দ্র বরাবর একটা সরু টানেল করে  ক্যানিংহ্যাম স্তুপের মাঝখান অবধি গিয়ে একটা ষষ্ঠ শতাব্দীর ব্রাহ্মী শিলালিপি পান , যেখানে লেখা ছিল "ইয়ে ধম্ম হেতু প্রবাহ"।
     
    স্তুপকে ঘিরে আটটা কুলুঙ্গিতে আটটা বুদ্ধমূর্তি ছিল। কাছে গেলে দেখা যাবে গুপ্তযুগের স্বস্তিকা , ফুল লতাপাতা , পাখি এবং মানুষের অলংকরণ।
     
    সারনাথ কমপ্লেক্স থেকে আবার বেরিয়ে কাশির দিকে হাঁটতে থাকলে ডানদিকে আলাদা একটা ঘেরা জায়গায় পড়ে অন্য একটি বিখ্যাত স্তুপ চৌখন্ডি স্তুপ। আকারে চতুর্ভুজ বলে এরকম নাম। নির্বাণের পর এখানে সিদ্ধার্থ প্রথম শিষ্যদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন , তারপর উত্তরদিকে হেঁটে গিয়ে তাদের সারমন দেন। হিউয়েন সাঙের লেখায় দেড় হাজার বছর আগে গুপ্তযুগে তৈরী এই স্তুপের উল্লেখ আছে। ধর্মচক্র প্রবর্তন মুদ্রার গুপ্তযুগের বিখ্যাত মূর্তিটা এখান থেকেই পাওয়া গেছে। 
     
    হুমায়ূনের এই এলাকায় পদার্পণকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য স্তুপের মাথায় অষ্টভুজাকৃতি মিনারটা আকবরের অর্থমন্ত্রী টোডরমলের ছেলে গোবর্ধন তৈরী করেন ১৫৮৮ সালে। 
     

    চৌখণ্ডি স্তুপ দেখে বেরিয়ে ফেরার সময় রাস্তার পাশে চোখে পড়ল ফোক্সভাগেন কাশি , কেটিএম কাশি এরকম সব গাড়ি , বাইকের শোরুম। সকালবেলা নিচের দিক দিয়ে বেনারসে ঢুকেছি বলে এই ওপরের দিকটা দেখতে পাইনি। পুলিশ লাইন পেরোনোর পর চারদিকে ঝকঝকে মল,  কুড়িতলা আবাসনের মিনার, চওড়া রাস্তা। একসময় অনেক জমিদার বা বাঙালি অবস্থাপন্ন পরিবারের কাশীতে একটা করে বাড়ি থাকত। এটাও কি সেরকম হচ্ছে? এখানে ফ্ল্যাট কিনে রেখে দেবে কেউ শীতকালে এসে তিনমাস কাটিয়ে পুণ্য অর্জন করার জন্য? রথযাত্রা চৌমাথায় নেমে হেঁটে গিয়ে বেনারসী চাটের দোকান। দই পাপড়ি চাট , দই ফুচকা ইত্যাদি হুলিয়ে বিক্কিরি হচ্ছে। সন্ধ্যে নামছে বেনারসে। রাস্তায় ভিড় বাড়ছে। গঙ্গা আরতি দেখার জন্য জনতা চলেছে দশাশ্বমেধের দিকে। ফিরতি ট্রেনের সময় হয়ে এল বলে আমি উল্টোদিকের টোটোতে চেপে বসি। 
     
     
    মণিকর্ণিকায় দাঁড়িয়ে যে কবিতাটা মনে পড়ছিল সেটাও শেষে এখানে জুড়ে দিলাম। 
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ২৯ অক্টোবর ২০২৩ | ৮৫২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2607:fb90:ea0c:cd31:c5e4:bfd6:bab5:***:*** | ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:৫২525322
  • অত্যন্ত ভালো লাগলো। আপনার সব লেখাতেই ঘোরার গল্প যেমন সহজ স্বচ্ছন্দে থাকে তার সাথেই সেই জায়গা সম্পর্কে ইনফর্মেশন আর তার বিশ্লেষণও খুব ভালো ভাবে আসে। সেটা আমার খুব ভালো লাগে। ছবিগুলো নিয়ে তো কথাই হবেনা। একেকটা ছবির অ্যাংগল, তার আলোছায়া, মেঘলা আকাশ, কিম্বা রং, সবই খুব উঁচুমানের। আর অনেকগুলো ছবিতেই এত সুন্দর গল্প আছে, আপনার সেটা ধরার ক্ষমতা আগেও দেখেছি, এখানেও তার ব্যতিক্রম নেই। বিশেষ করে ঐ বাংলায় নাম লেখা বাড়ির ছবিটার দিকে তো অনেকক্ষণ তাকিয়ে বসে থাকতে হলো। যদি কখনো সময় থাকে, ইচ্ছে হয়, তো ঐ ছবির গল্পটা লেখার অনুরোধ রাখলাম। গুরুতে এখন বেশ কয়েকটা ভ্রমণকাহিনী বেরোচ্ছে। সবগুলোই এত সুন্দর জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে যে বড় ভালোলাগায় মন ভরে যাচ্ছে।
  • দীমু | 182.69.***.*** | ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:৪০525340
  • অনেক ধন্যবাদ কেকে। ইন্দ্রাণীর 'মুকুলের বাড়ি' বলে এরকম একটা গল্পর কথা মনে পড়ছে। ওই বাড়ির গল্পটা লিখতে গেলে আমাকে কিছু একটা অন্য ভাবে ভাবতে হবে , চেষ্টা করব কখনো।
  • সমরেশ মুখার্জী | ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ২০:০৩525352
  • আপনার লেখায় বর্ণিত চারটি বৌদ্ধ তীর্থে‌র দুটি‌তে গেছি - সারনাথ ও বোধগয়া। বেনারস চারবার গেছি - ২০০৮ / ১১ / ১২/ ১৮ - মানে নবনির্মিত বিশ্বনাথ করিডর দেখা হয়নি। দেখেছি ঘাটগুলি, রামনগর প‍্যালেস, সারনাথ। সময় নিয়ে দেখেছি BHU Campus এর মধ‍্যে ভারত কলাভবন এবং নতুন বিশ্বনাথ মন্দির। তবু আপনার লেখায় অনেক কিছু জানলাম। তবে বেনারস হয়তো আড়াই হাজার বছরের‌ও প্রাচীন - নেটে দেখলাম ৩২০০ থেকে ৩৮০০ বছরের প্রাচীন পূরাতাত্বিক বসবাসের নমুনা পাওয়া গেছে।  

    মধ‍্যপ্রদেশে পর্যটন সার্কিটে অপ্রচলিত কিন্তু সুন্দর একটি জায়গায় সন্ত রবিদাস আশ্রমে দু রাত ছিলাম কিন্তু আপনার লেখাতেই জানলাম তিনি জুতো বানাতে‌ন। তেমনি জৈন তীর্থঙ্কর শ্রেয়াংসনাথের নামে এক জায়গায় তিন দিন ঘুরে এসেছি কিন্তু জানতাম না তিনি বেনারসে জন্মগ্ৰহণ করেছেন। চারবার গিয়ে‌ও দেখা হয়নি লাল খানের সমাধিসৌধ। নাম‌ও এই লেখা‌য় জানলাম। আপনার দেখার দৃষ্টি ও বর্ণণা তাই ঋদ্ধ করে। অন্তিমে সুনীলের লেখাটি পড়ে একটু থমকে যেতে‌ই হয়। বেশ লাগলো। 
  • | ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৫৯525355
  • চমৎকার যথারীতি। 
     
    আহা একটু রাবড়ি, ঠান্ডাই, কচুরি, প্যাঁড়া ইত্যাদি খেলেন না? আর বেনারসের আর একটা অতি বিখ্যাত জিনিষ হল মনাক্কা। উরিবাবা সে প্রায় নির্বাণলাভ করিয়ে দেয়। wink
    ট্যুরপ্ল্যানারে সম্ভবত একটা বেনারসে খাবারদাবারের গাইড দেখেছিলাম।  সে অতি সুস্বাদু। 
  • দীমু | 182.69.***.*** | ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ০১:০০525365
  • ধন্যবাদ সমরেশবাবু, আমি এই ইতিহাসের জিনিসগুলো নানা জায়গার পাশে লাগানো ASI র ফলক দেখে বাংলায় লিখে দিই। ২৮০০ বছরের কথাটাও সেরকম ফলক থেকে পাওয়া, কাজেই ৩২০০ থেকে ৩৮০০র ব্যাপারটা জানি না। 
     
     
    এখন গেলে মনে হয় আপনি আগেকার কাশি বিশ্বনাথ করিডোরের সঙ্গে এখনকার করিডোরের তুলনাটা অনেক ভালো করতে পারবেন। আমি এই প্রথমবার গেলাম ওদিকে। 
     
    দ, কচুরি খেয়েছিলাম। মিষ্টির ব্যাপারে কাশি তো বিখ্যাত জায়গা। রাবড়ি দেখছিলাম প্রায় সব দোকানেই বড় গোল কড়াইতে জমানো। হাতা দিয়ে কেটে কেটে তুলছে। মনাক্কাটা জানতাম না। ছবি দেখলাম ছোট গজার মত দেখতে। আগে জানলে খেতাম একপিস laugh​। মালাই টোস্টও খাবার ইচ্ছে ছিল, একটু খুঁজতে হত।  
  • হীরেন সিংহরায় | 2a00:23c7:672e:2001:308a:f428:f06f:***:*** | ০১ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৫525411
  • অসাধারণ ॥ 
  • দীমু | 182.69.***.*** | ০১ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৫৮525426
  • ধন্যবাদ হীরেনবাবু।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন