এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ

  • মালয়েশিয়ার স্ট্রীট ফুড

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ২৯৯০ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)


  • রয়টার্স নাকি ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের পর্যটকদের মধ্যে একটা সার্ভে করেছিল, যেখানে তাদের বেছে নিতে বলা হয়েছিল স্ট্রিট ফুডের জন্য পৃথিবীরে বিখ্যাত শহরগুলিকে। তার মধ্যে মালয়েশিয়ার পেনাং আসে তৃতীয় স্থানে – এবং ইন্টারেষ্টিংলি প্রথম দুটি জায়গাও এই এশিয়ার শহরই দখল করেছে – প্রথম স্থানে থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক এবং দ্বিতীয় স্থানে সিঙ্গাপুর। ষষ্ঠ স্থানে আছে ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটি। সত্যি কথা বলতে কি এই র‍্যাঙ্কিং নিয়ে বিশেষ দ্বিমত হবার চান্স নেই – এশিয়ার যে শহরগুলির নাম করা হয়েছে, তাদের স্ট্রীট ফুড সত্যিই অসাধারণ। তবে আমাকে বললে, আমি হয়ত সিঙ্গাপুরের জায়গায় মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরকে রাখতাম। আর প্রথম দশটি স্থানে যেখানে ঠাঁই নিতে পেরেছে এশিয়ার চারটি শহর, তাই এই কথা মেনে নিতে কোন বাধা নেই যে, স্ট্রীট ফুডের স্বর্গ হল এই এশিয়ার নানা শহর।

    মালয়েশিয়ার পর্যটনের বিজ্ঞাপনে লেখা হয় – “মালয়েশিয়া – ট্রুলি এশিয়া”। এই ট্যাগলাইনটা যে শুধু মালয়েশিয়া ভ্রমণের জন্য প্রযোজ্য তা নয় – বরং এটা আরো বেশী করে সত্যি মালয়েশিয়ার খাবারের ক্ষেত্রে। কারণ মালয়েশিয়ার ক্যুজিন প্রধানত তিনটি দেশের সংস্কৃতির সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে – মালয়, চাইনীজ এবং ভারতীয়। আর তা ছাড়া সুস্পষ্ট প্রভাব আছে ইন্দোনেশীয়া, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডেরও। মালয়েশিয়ার খাবারের উপর এই সব প্রতিবেশী দেশ গুলির প্রভাব একদিন গড়ে ওঠে নি – বরং এই প্রভাব এসেছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নানা দেশের সংস্কৃতির মিশ্রণের মধ্যমে। এই মিশ্রণ-কে ঠিক ওই ‘ফিউশন’ ডিস্‌ গুলির সাথে তুলনা করা যাবে না – কারণ নানা দেশের খাবারের মিশ্রণ ঘটিয়ে নতুন কিছু করার জন্য একদিনে সৃষ্টি হয় নি মালয়েশিয়ান ক্যুজিন। বরং দীর্ঘদিনের সহবস্থানের ফলে হয়ত বা অজান্তেই হয়ে উঠেছে অন্য দেশের প্রভাবে মালয়েশিয়ান খাবার সম্পৃক্ত। এই কারণেই আজকের মালয়েশিয়ায় অনেক খাবার পাওয়া যাবে আর যেগুলি মালয়েশিয়ান বলে পরিচিত, সেগুলি অনেককেই পাওয়া যাবে অন্য দেশে। কিন্তু তাদের নামগুলি হয়ত পালটে গেছে বা স্বাদে তারা পরিবর্তিত হয়ে গেছে মালয়েশিয়াতে।

    সেই হিসেবে দেখতে গেলে নানা দেশের খাদ্যাভ্যাস মালয়েশিয়াতে মিশে যাওয়াতে, এদের ক্যুজিন কিন্তু বেশ অভিনব হয়ে উঠেছে। এদেশের খাবারের মূল উপদানগুলি হল – নারকেলের দুধ, লেমন গ্রাস, হলুদ, তেঁতুল, চিঙড়ি মাছ বাটা এবং গ্যালানগাল (আদা বা হলুদ জাতীয় গাছের মূল)। আমাদের মত মালয়েশিয়ারও প্রধান খাদ্য হল ভাত – যা এরা মূলক খায় চিকেন/অন্য মাংস বা মাছের ডিস্‌ এবং সব্জীর সাথে।

    মালয়েশিয়ায় সেই মেলাকা সাম্রাজ্যের সময় থেকে নানা দেশের ব্যবসায়ীদের আনাগোনা ছিল এবং সেই ভাবেই এই দেশে প্রবেশ করে রান্নার মশালা এবং অন্য নানাবিধ উপাদান ভারত, চীন, মধ্য প্রাচ্য এবং ইউরোপ থেকে। আজকের মালয়েশিয়ার খাবারে ঝাল এবং মশালাদার স্বাদ আসে প্রধানত লঙ্কা এবং অন্যান্য স্থানীয় মশালা থেকে। আর অন্যদিকে আছে টক-মিষ্টির উপাখ্যান যা আসে মূলত তেঁতুল এবং পাল্ম চিনি/গুড় থেকে। এই মিষ্টি-টক দিয়েই ব্যালেন্স করা হয় ঝাল এবং মশালার মিশ্রণ।

    এবার দেখে নেওয়া যাক মালয়েশিয়ায় সকাল, দুপুর বা রাতে প্রধানত কি খাওয়া হয়। এরা প্রাতরাশ সারে নানা ধরণের খাবার দিয়ে – তা সে রুটি হতে পারে, বা নারকেলের থেকে তোইরী প্যানকেক, ডিমসাম্‌ বা ন্যূডল স্যুপ। সবচেয়ে জনপ্রিয় সকালের খাবার হল ‘নাসি লেমাক’ (নারকেলের দুধ দিয়ে সিদ্ধ ভাত) – যা পরিবেশন করা হয় মশালাদার সম্বল, সিদ্ধ ডিম, বাদাম, শসার টুকরো এবং ভাজা অ্যাঞ্চোভি-র সাথে। এই ব্যাপারটা আমার প্রথম দিকে মালয়েশিয়ায় গিয়ে বেশ অবাক লেগেছিল – কারণ সকালে ভাত খেতে আমি খুব একটা দেশে দেখি নি। আর সেখানে অফিসে দেখি (এখানে বেশীর ভাগ অফিস খুব সকালে শুরু হয়, যেমন আমাদের অফিস ৭.৩০ থেকে শুরু হত) স্থানীয় লোকেরা কম্পিউটার সুইচ অন করে ক্যান্টিনে চলল – আর সেখানে গিয়ে দেদার ‘নাসি লামক’ সাঁটাচ্ছে।! এই যে সকাল থেকে শুরু হল ‘নাসি লেমাক’ খাওয়া – এটা কিন্তু সারা দিনই পাওয়া যায়, আপনি চাইলেই।

    এর পরেই সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাতরাশ হল ‘রুটি চানাই’ – এ মানে আমাদের দেশের ছেঁড়া পরোটা যাকে বলে। আর এর সাথে দেওয়াও হত কিছু একটা কারি বা ডাল। এর মধ্যে ভারতীয় প্রভাব বা ভারত থেকে এই জিনিসের এর আইডিয়া এরা পেলেও, এখন এটা পুরোপুরি মালয়েশিয়ারই খাবার! এছাড়াও আছে নানা প্রকারের ন্যুডলস্‌ - কি প্রকারের ন্যুডলস আপনার পছন্দ নির্ভর করে আপনি কোন এথিনিক ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছেন। তাই ন্যুডুলস পাওয়া যায় ফ্রায়েড বা স্যুপ হিসাবেও। চাইনীজরা যেমন পছন্দ করে হালকা ধরণের ন্যুডল স্যুপ এবং সয়া সস্‌ দিয়ে তৈরী স্টার-ফ্রায়েড ন্যুডলস। আর ওদিকে মালয়ে-রা খায় ঝাল ঝাল মশালাদার স্টার-ফ্রায়েড ন্যুডলস, কারি ন্যুডলস্‌ বা লাক্সা। লাক্সা নিয়ে বিস্তারে লেখা যেতেই পারে – কারণ এটা বেশ বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু আপাতত জানা থাক যে এই লাক্সা মূলত সী-ফুড দিয়ে তৈরী একধরণের ন্যুডলস স্যুপ। আর ভারতীয়রা কি পছন্দ করে বলাই বাহুল্য – ‘রুটি চানাই’। আপনি যদি মালয়েশিয়ার কোন ফাইভ-স্টার হোটেল বা লাক্সারি হোটেলে ওঠেন তা হলে সেখানেই এই উপরের লেখা প্রাতরাশ গুলি পাবেন। আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়, খাবার ব্যাপারে মালয়েশিয়ায় খুব বড়লোক এবং সাধারণ মধ্যবিত্তদের খুব একটা পছন্দের পার্থক্য নেই।



    এ ছাড়াও প্রাতরাশে পাবেন একধরনের কেক যাকে এরা বলে ‘কুই’ – তৈরী হয় রাইস ফ্লাওয়ার, গ্লুটোনিয়াস রাইস এবং নারকেলের দুধ দিয়ে। কেকগুলো বেকড্‌, সিদ্ধ, ভাজা বা গ্রীল – যা কিছু করেই হতে পারে। সর্বাধিক জনপ্রিয় হল ‘ননওয়া’ এবং ‘মালয়’ কুই। এই কেকের সাথে আসবে গিয়ে আপনার চা বা কফি। এছাড়াও চাইনীজদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় আছে ‘পরিজ’ – এটাও অনেকে প্রাতরাশে খায়।

    শহরের দিকে লোকেরা সাধারণত লাঞ্চটা বাইরে রেষ্টুরান্টেই সেরে নেয় – আর রেষ্টুরান্ট অর্থে খুব ফর্মাল কিছু নয়। এই খানেই মালেয়েশিয়ার বিশেষত্ব – আগে যেমন লিখেছি, রাস্তার ধারে ফুড কোর্ট আমরা যাকে বলি তেমন ভাবে প্রচুর ছোট-বড় জায়গা চটজলদি খাবার পরিবেশন করে। মানুষ ব্যস্ত থাকে বলে দুপুরে খেতে গিয়ে খুব বেশী সময় নষ্ট করতে চায় না। অবশ্য যদি না বিজনেস বা তেমন কাজের লাঞ্চ না হয় – আপনি যদি মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর যান, সেখানে বড় বড় হোটেলের রেষ্টুরান্ট গুলো দেখবেন এমন বিজনেস লাঞ্চে ব্যস্ত। আর অন্য যে বিখ্যাত চেন রেষ্টুরান্ট বা ক্যাফে – সে গুলোও ব্যস্ত, তবে প্রধানত সেই বিজনেস জনতা বা এক্সপ্যাট লোকজনদের দ্বারা। কিন্তু রোজকার মালয় জনতা ওই ছোট-খাট স্ট্রীট ফুড জাতীয় রেষ্টুরান্টগুলোতেই লাঞ্চ সারতে ভালোবাসে।

    দুপুরের টিপিক্যাল মালয়েশিয়ান রেষ্টুরান্টগুলোতে পাওয়া যায় ‘নাসি ক্যাম্পুর’ বা মিক্সড রাইস যাকে বলে। রেষ্টুরান্টের সামনের ডিস-প্লে বা ফুড ক্যাবিনেটে এমন সব কিছু ডিস সাজানো থাকবে, সেখান থেকেই আপনি পছন্দ করে নিতে পারেন। কিছু কিছু জায়গায় প্রায় গোটা ২০-৩০ ডিস সাজানো থাকে – স্যালাড, সম্বল, মাছ, মাংস, ফ্রায়েড চিকেন, গ্রীলড মাছ, স্যুপ, শাকসব্জী, এবং আরো অনেক কিছু। আর আমাদের মত মালয়েশিয়ানরাও হাত দিয়ে খেতে পছন্দ করে – তাই আপনি দুপুরের খাবার খেতে গিয়ে অনেককেই দেখবেন যে, এটা প্লেট নিয়ে, তাতে নিজের পছন্দ মত শাকসব্জী, মাছ/মাংস ইত্যাদি সাজিয়ে নিয়ে জমিয়ে খাচ্ছে হাত ব্যবহার করে। আসলে উপরে যে সব মালয়েশিয়ান খাবারের কথা লিখেছি, তার বেশীর ভাগই খুব কম সময়ে চট করে বানিয়ে নেওয়া যাবে কারণ সেই খাবার বানাবার মূল উপাদান গুলি আগে থেকেই প্রস্তুত করা থাকে। তবে এই ফুড কোর্ট বা রাস্তার পাশের টিপিক্যাল মালয়েশিয়ান খাবারের দোকান গুলি লাঞ্চের সময় বেশী ব্যবসা করে সপ্তাহে কাজের দিনগুলিতে। উইকএন্ডে মানুষের হাতে সময় বেশী থাকে – তাই তখন তারা বাড়িতে সময় নিয়ে খাবার বানায় বা ফরম্যাল রেষ্টুরান্ট গুলোতে যায়। মালয়েশিয়ার বড় শহর গুলোতে মানুষ বাইরে খেতে বেশী পছন্দ করে তুলনামূলক – কিন্তু ছোট গ্রাম বা শহরগুলোতে এখনো পরিবার নিজেদের খাবার নিজেরাই বাড়িতে বানিয়ে নেয়।



    মালয়েশিয়ায় নানা ধরণের খাবারের জায়গা জনপ্রিয় – স্ট্রীট ফুড, ফুড কোর্ট, কিয়স্ক, কফি শপ এবং নানাবিধ রেষ্টুরান্ট যাদের বিস্তার ফাষ্ট ফুড থেকে ফাইন ডাইনিং অবধি। জায়গার উপর নির্ভর করে খাবারের দাম তাই সস্তা, মাঝামাঝি বা দামি – এমন হতে পারে। কুয়ালালামপুরে খাবারের দাম মালয়েশিয়ার অন্য জায়গার থেকে বেশী – কিন্তু যদি আপনি ইউরোপীয় বা এশিয়ারই অন্য বড় শহরের সাথে তুলনা করে তা হলে বলতেই হবে মালয়েশিয়ায় খাবার তুলনামূলক সস্তাই।

    ওপেন এয়ার ফুড কোর্ট বা স্ট্রিট ফুডের জায়গাগুলি বেশী জমজমাট হয়ে ওঠে রাতের ডিনারে। মালয়েশিয়া গরম দেশ, তাই দিনের বেলায় রাস্তার ধারে বা খোলা জায়গায় খাওয়া খুব স্বাচ্ছন্দের নয়। রাত নামলেই ভিড় বেড়ে ওঠে – যেন গমগম করতে থাকে স্ট্রীট ফুড এবং ফুডকোর্টগুলি। অনেক মালয়েশিয়ান ফ্যামিলি সাইজে বেশ বড় হওয়ায় এদের মধ্যে খুব চল আছে রেষ্টুরান্ট থেকে কিনে এনে বাড়িতে বসে খাওয়া। ডিনার বলে স্পেশাল ডিস তেমন কিছু আলাদা করে নেই – আগে আলোচিত সব খাবারই ডিনারে পাওয়া যায়। তবে জায়গা বিশেষে নির্ভর করে ওই সী-ফুডের ব্যাপারটা। সী-ফুডের স্টলগুলি এই সন্ধ্যাবেলাতেই জমজমাট – তাই যে সী-ফুড ডিস্‌গুলি আপনি দিনের বেলায় পেতেন না, তা পেয়ে যাবেন সন্ধ্যা নামলেই।



    মালয়েশিয়ার স্ট্রিট ফুড নিয়ে যদি কাউকে লিখতে হয়, তাহলে যে জায়গাটার নাম সর্বপ্রথম মনে আসে সেটা হল পেনাং। আজকের দিনে পেনাং যেন স্ট্রিড-ফুড ক্যুইন হয়ে বসেছে মালয়েশিয়াতে! পেনাং বেড়াতে গিয়ে বড় বড় রেষ্টুরান্টে খাবার কোন অর্থ হয় না – তাই আমি যখন গিয়েছিলাম, তখনো ওই স্ট্রিট ফুডেই মন দিয়েছিলাম। আর যত টুরিষ্ট যায় পেনাং-এ এবং তার মধ্যে যত বিদেশী, সেই হিসাবে দেখতে গেলে অন্য জায়গার তুলনায় পেনাং-য়ে ফাইন ডাইনিং রেষ্টুরান্টের সংখ্যা কম। কারণ ওই একটাই – পেনাং-য়ের বিখ্যাত স্ট্রিট ফুড। সেখানে অলিতে-গলিতে রাস্তের ধারে খাবারের স্টল – পেনাং-য়ে এই স্ট্রিট ফুডকে ‘হকার ফুড’-ও বলা হয়। বেশ কিছু জায়গায় ওপেন এরিয়াতে ফুড স্টল-গুলি একত্রিত থাকে – মানে ওই ‘হাব’-এর মত আর কি! কলকাতায় যেমন ‘মিষ্টি’ হাব! বেশির ভাগ স্টল গুলো দেখে তেমন ভক্তি হবে না – ঠিক আমাদের রাস্তার ধারে এগ-রোল, মোগলাই বা মোমোর দোকান গুলির মত। যে বিদেশীরা রান্নার পরিচ্ছনতা, ব্যবহৃত জলের কোয়ালিটি ইত্যাদি নিয়ে মাথা ঘামায় এশিয়ায় ঘুরতে এলে, তারাই দেখা যাবে দলে দলে পেনাং-এ এই স্ট্রিট হকারদের দোকানে বসে হাত দিয়ে চেটেপুটে খাচ্ছে – পেনাং-য়ের এমনই মাহাত্ম!



    বাকি মালয়েশিয়ার মত পেনাং-য়ের স্ট্রিট ফুডে মালয়, চাইনীজ এবং ভারতীয় ছাপ তো আছেই – এ ছাড়া আছে ‘ননোয়া’ (Nyonya) ক্যুজিন এর এর ছাপ। পেনাং-য়ে কিন্তু স্ট্রীট হকার মানে নিজেদের ইচ্ছে মত ফিউশন ডিস্‌ এমন নয় কিন্তু – বরং বেশীর ভাগ হকার-ই সার্ভ করে ট্র্যাডিশনাল রেসিপি গুলি। আর সেই জন্যই তারা ঐতিহ্য ধরে রাখতে পেরেছে আর সেই জন্যই আজও ভালোবেসে লোক সেখানে খেতে যায়। এই সব চিরন্তন ডিস্‌ গুলোর মধ্যে রয়েছে পেনাং-য়ের সুবিখ্যাত ‘হোক্কিয়েন মি’ (প্রণ ন্যুডলস্‌), ‘ওয়ান ট্যান মি’ (ডাম্পলিং সহযোগে এগ ন্যুডুলস), ‘নাসি লেমাক’, ‘আসাম লাক্সা (ন্যুডলস্‌ উইথ হট অ্যান্ড সাওয়ার স্যুপ), ‘নাসি ক্যান্ডার’ (প্রচন্ড মশালাদার ডিসের সাথে ভাত), ‘চার কোয়ে টিও’ (ফ্রায়েড রাইস ন্যুডলস্‌), ‘রোটি চানাই’ এবং আরো অনেক কিছু।



    পেনাঙ-য়ের স্থানীয় লোকজন যদিও নিজেদের ট্র্যাডিশনাল খাবার বেশী পছন্দ করে, কিন্তু তাহলেও সেই হকার ফুড স্টলগুলোতে খুঁজলে আপনি পেয়ে যাবেন বিদেশী খাবারও – যেমন মেক্সিকান, আরাবিয়ান, ইতালিয়ান, জার্মান। আর তা ছাড়া প্রতিবেশী এশিয়ান দেশগুলি থাইল্যান্ড, জাপান, কোরিয়ান বা ফিলিপিন্সের খাবারও এখানে পাওয়া যায়। এত বেশী চয়েস থাকে যে আপনি যদি আগে থেকে না ঠিক করে যান কোন ক্যুজিন ট্রাই করবেন সেদিন, তাহলে পুরোপুরি বিভ্রান্ত হয়ে যেতে পারেন! স্টলগুলো ঘুরে দেখে ঠিক করতে করতেই রাত গভীর হয়ে যাবে! তবে আমার মতে পেনাং-য়ে বেড়াতে গিয়ে মেক্সিকান বা ইতালিয়ান খাবার কোন অর্থ হয় না! লোকাল ট্যাডিশনাল ডিস্‌ গুলো খান – তবেই বেড়াতে যাওয়া সার্থক হবে!
    পেনাং-য়ে ব্রেকফাষ্টে কিন্তু ডিমসাম্‌ খুব জনপ্রিয় (আমরা যাকে মোমো বলি অনেকটা সেরকম) আর এছাড়া অন্য ট্রাডিশনাল ব্রেকফাষ্ট যেগুলো আগে বর্ণণা করেছি সেগুলো তো আছেই। লাঞ্চেও সেই বাকি মালয়েশিয়ার মত ২০-৩০ রকম ডিস্‌ নিয়ে স্ট্রীট হকাররা বসে আছে – টুক করে যা খেতে চান, খেয়ে নিলেই হল। তবে এখানে আলাদা করে একটা জিনিসের উল্লেখ করে নিতে হবে – ভাত খাওয়া ঘিরে যে কালচারটা গড়ে উঠেছে ‘চু-চার’ (কুক, ফ্রাই) – মানে নানা ডিস্‌ আপনি অর্ডার করলেন এবং তা ভাগ করে নিলেন একটা গ্রুপে। এমন একটা ফেমাস ‘চু-চার’ রেষ্টুরান্ট হল পেনাং-এর জর্জটাউনের ‘টিইক সেঙ’। গেলে একবার খেয়ে দেখতে পারেন।



    এবং বাকি মালয়েশিয়ার মতই পেনাং-য়ে স্ট্রীট ফুড বা হকার ফুড সত্যিকারের প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে সন্ধ্যে নামার পর। আপনার হাতে অনেক চয়েস থাকবে – যদি আপনি বীচের ধার ঘেঁসে খেতে চান, তাহলে চলে যান ‘বাতু ফিরিঙ্গি’ নামক জায়গার হকার সেন্টারে। এখানে অসংখ্য ফুড স্টল – অনেকে লাইভ বারবিকিউ করছে। মন মত স্টল দেখে বসে যান। প্রায় সব খাবারই ফ্রেস বানানো, তাই ওই সব নিয়ে বেশী চিন্তা করতে হবে না আপনাকে। এখানকার প্রধান আকর্ষনই হল পাশের সমুদ্র থেকে ধরা ‘সী-ফুড’!



    মালয়েশিয়ার স্ট্রীট ফুডের যে এই ঐতিহ্য এর পিছনে দেখলে কিন্তু ইমিগ্র্যান্ট লেবার/ওয়ার্কারদের অনেক অবদান আছে – তা সে ভারত থেকে ব্রিটিশ রাজের সময়ে রাবার প্ল্যানটেশনে কাজ করতে আসা তামিল লোকজন বা চীন দেশ থেকে টিনের খনিতে কাজ করার জন্য শ্রমিক – যাই হোক না কেন। ভারত থেকে যেমন গিয়েছিল বেশীর ভাগ তামিল লোকজন, তেমনি চীন থেকে উনবিংশ শাতাব্দীর প্রথম এবং মধ্যভাগে এসেছিল ‘ননোয়া’ বা ‘স্ট্রেইটস্‌’ চাইনীজরা। যারা রাবার প্ল্যানটেশনে বা টিনের খনিতে কাজ করত না, তারা অর্থ উপার্জনের জন্য বেছে নিয়েছিল ফেরিওয়ালার কাজ – অনেকে বিক্রী করত রাস্তার ধারে খাবার। এই ভাবেই ঐতিহ্য গড়ে ওঠে মালয়েশিয়ায় ‘হকার’ ফুডের। সময়ের সাথে এই ভারতীয় বা চাইনীজরা স্থানীয় মালয়-দের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে শুরু করল। মিশ্রণ ঘটতে শুরু হল নানা দেশের সংস্কৃতির – আর প্রধান প্রভাব পরতে শুরু করল খাদ্যাভাসে।

    বাইরের দেশের লোকের কাছে মালয়েশিয়ার স্ট্রিট ফুডের মধ্যে যেগুলো জনপ্রিয় তার মধ্যে – নাসি লেমাক, রোটি চানাই, ছার ক্যুই তাও (চাল দিয়ে বানানো চ্যাপ্টা ন্যুডুলস), এবং আপাম (প্যানকেক) –এর কথা আগেই লিখেছি। কিন্তু আর দুটো ডিসের নাম না করলে এই তালিকা সম্পূর্ণ হবে না – আর তা হল ‘হাইনান স্টাইল চিকেন রাইস’ এবং ‘সম্বল ক্যাঙকঙ’ (স্টার-ফ্রায়েড মশালাদার গ্রীন ভেজিটেবলস্‌)। নানা প্রকার চিকেন রাইস কিন্তু মালয়েশিয়ায় জনপ্রিয় – খুব চটজলদি এই জিনিস পাওয়া যায়, আর টেক-অ্যাওয়ে এর জন্য এই চিকেন রাইস আদর্শ। একটা কাগজে মুড়ে ভাত, চিকেনের টুকরো এবং তার সাথে একটু স্পেশাল তরকারীর ঝোল টাইপের – লাঞ্চের জন্য আদর্শ খাবার।

    স্টার-ফ্রায়েড মশালাদার গ্রীন ভেজিটেবলস্‌ আপনি মালয়েশিয়ার প্রায় সবজায়গাতেই পাবেন – এবং খুব জনপ্রিয়। ভাতের সাথে এই ডিস সার্ভ করা হয়। চাইনীজ ক্যাবেজ, বা বোক-চয় দিয়েও এটা বানানো যায়। কিন্তু ক্যাঙকঙ হচ্ছে একধরণের ‘ননোয়া’ চাইনীজ স্পেশালিটি। আপনি বেশী পাবেন পেনাং-এর দিকে গেলে। ক্যাঙকঙ-কে আবার অনেক সময় ‘ওয়াটার কনভোলভুলুস’ বলা হয় এবং আপনি পেয়ে যাবেন যে কোন মালয়েশিয়ান মার্কেটে – এই ডিসের সাথে আপনি প্রণ-ও দিতে পারেন।



    এছাড়া আছে ‘চিকেন স্যাতে’ – এটা তো আমি আজকাল শুনলাম বাঙালীদের বিয়ে বাড়িতেও খুব জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু আমি একটা বাঙালী বিয়ে বাড়িতে স্টার্টার হিসাবে হিসাবে যেই ভাবে ‘চিকেন স্যাতে’ বানাতে দেখলাম, তা দেখলে মালয়েশিয়ার লোকেরা ভিরমি খেতে পারে, আর ইন্দোনেশিয়ার লোকেরা তো ভিরমি খাবে সিওর! আসলে এই ‘স্যাতে’ জিনিসটা আমাদের ওই মিনি কাবাবের মত – চিকেন, পর্ক, বীফ বা সী-ফুডের হতে পারে। এগুলো সার্ভ করা হয় পিনাট সসের সাথে। স্যাতে বাইরের জগতে ইন্দোনেশীয়ান ডেলিকেসী বলে বেশী প্রচারিত হলেও, মালয়েশিয়া, থাইল্যাণ্ড এবং ভিয়েতনামেও এ জিনিস সমান জনপ্রিয়।

    মালয়েশিয়ায় চিকেনের আর একটা ডিস্‌ স্ট্রীট হিসাবে খুব জনপ্রিয়, তা হচ্ছে – ‘আয়াম গোলেক’ (নারকেলের ক্রীম/দুধ দিয়ে মশালাদার গ্রীলড্‌ চিকেন)। এটা বানাতে ব্যবহার করা হয় – শ্যালত, লবঙ্গ, গ্যালানগল, লেমনগ্রাস এবং আরো নানাবিধ মশালা – এর বৈশিষ্ট হচ্ছে রান্নায় ব্যবহৃত মুরগীর ব্যস বেশি হলে হবে না, বাচ্ছা চিকেনে এই ডিস্‌টা সবচেয়ে ভালো হয়। ভাত, গ্রীন স্যালাড, বা সব্জীর সাথে এই ডিস্‌ সবচেয়ে ভালো যায় –
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ২৯৯০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:০৫96924
  • মালয়েশিয়া যাবোই যাবো,  আর পেনাং-য়ের বিখ্যাত স্ট্রিট ফুডও খেয়েে দেখবো।  নইলে সত্যিই খুব মিস করবো। 

     লেখাটি সত্যিই খুব ক্ষুধা উদ্রেককারী

    উড়ুক! 

  • শঙ্খ | 103.217.***.*** | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:৩৪96928
  • ওফ পড়েই একটা চনমনে খিদে চাগাড় দিয়ে উঠলো। মালেশিয়া যাইনি কিন্তু শ্যামদেশে গিয়ে আমরা সকালের ব্রেকফাস্টটা বাদে সারাদিনের খাওয়া ঐরকম ফুডস্টলে ঘুরে ঘুরেই করতুম।
    তো ক্রাবিতে গিয়ে একটা জিনিস দেখেছিলুম, একটা হাটের মত বসেছে রাতের দিকে পাশাপাশি আর সামনে পেছনে একের পর এক খাবারের দোকান। সেখানে পাশাপাশি দুটো দোকানের একটায় পাওয়া যাচ্ছে বিফ কাবাব অন্যটায় পর্ক কাবাব। মানে ধর্মজনিত কারণ খুব সম্ভব। চিকেন দুটোতেই কমন। আর কাবাব বোলে তো ঐ স্কিউয়ারে গাঁথা টুকরো বারবিকিউ করা।
    তো আমরা সর্বভূক, দুই দোকান থেকেই কিছুমিছু নিলুম। এবারে একটা বড় নোট দিয়েছি, কাছে খুচরো কম। দুই প্রতিবেশি দোকান হাসিমুখে নিজেদের মধ্যে খুচরো বিনিময় করে আমাকে ভাঙতি করে দিলো।

    আমি খালি ভাবলুম আমাদের এখানে কোনওদিন পাশাপাশি এরকম দোকান দেখতে পাবো, নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব তো বাদই দিলুম!!

    নাথিং টু কিল অর ডাই ফর
    অ্যান্ড নো রিলিজিওন টু
  • সুকি | 49.207.***.*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:১৩96942
  • বিপ্লব, শঙ্খ - ধন্যবাদ।

    পারলে মালয়েশিয়া ঘুরে এস - বাকি কিছু তো ছেড়ে দিলাম, আজকের দিনে কুয়ালালামপুরকে দেখলে বোঝা যাবে ইচ্ছে থাকলে এখনো অনেক কিছু করা যায়। আর এমন নয় যে মালয়েশিয়ার রাজনীতির লোকেরা কেউ কোরাপ্ট নয় - তবুও

  • অরিন | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:০৩96947
  • সত্যি, মালয়েশিয়ার  এই স্ট্রীট ফুডের তুলনা পাওয়া ভার। 

    তবে এ জিনিস আপনি সিঙ্গাপুরেও কিছুটা পাবেন। এমনকি, নেহাৎ কিছু না হলে চাঙি এয়ারপোর্টে হাতে ঘন্টাদুয়েক থাকলে টার্মিনাল ৩ এর ওপরের তলায় সকালের দিকে একটা সাংঘাতিক রকমের ভাল কায়া টোস্ট (নারকেলের জ্যাম দেয়া টোস্ট আর মিষ্টি কফি, তার সঙ্গে "টলটলে ডিম" খেয়ে দেখবেন, :-), আর তারপর নানান রকমের মালয়েশিয়ান খাবার দোকান তো আছেই |

    অস্ট্রেলিয়ায় ব্রিসবেনে Papa Rich নামে একটি মালয়েশিয়ান চেন হেোটেলের কয়েকটি শাখা আছে, মালয়েশিয়া না গেলে সে সব জায়গাতেও খেয়ে দেখতে পারেন। 

  • রোটি চানাই | 165.225.***.*** | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩১96996
  • রোটি তেলুরও তো খাই, হালকা মোগলাই টাইপ লাগে
  • Amit | 121.2.***.*** | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৫৭96997
  • অরিন পাপা রিচ এর কথা লিখেছেন দেখলুম. খেয়ে দেখেছি , ওই মোটামুটি আর কি. তবে এসব দেশে বাইরের সব খাবারকেই লোকাল লোকজনের প্যালেট অনুসারে বড্ডো বেশি মডিফাই করে ফেলে. আসল জিনিস এর স্বাদ একবার পেলে ভালো লাগা খুব মুশকিল. ওই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো আর কি.

    মালয়েশিয়ান স্ট্রিট ফুড সত্যি দারুন আর বেশি দাম নয়, সিঙ্গাপুর ও দারুন, দামটা ন্যাচারালি বেশি. দু বছর থাকার সুবাদে দেখেছি ওদের আবার ডিফারেন্ট স্টেট্ র নিজের নিজের স্টাইল র খাবার নিয়ে বেশ গর্ব আছে, অনেকটা আমাদের সাউথ স্টেট্ গুলোর ইডলি সম্বর এর মতো. এক লাকসা নিয়েই দেখেছি- পেনাং এর লোক বলে ওদেরটাই বেস্ট, মেলাকা র লোক বলে ওদেরটা, আবার ইস্ট আইল্যান্ড এ সারাওয়াক বা সাবা র লোক বলে ওদেরটা. আমি যখন যার বাড়ি যেতুম, তাদেরটাকেই সবথেকে ভালো বলে আসতাম যাতে পরে খেতে ডাকে আবার. :) :)
  • সুকি | 165.225.***.*** | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:১৭97018
  • অরিন-দা, অমিতাভদা, 

               ধন্যবাদ। চাঙ্গি এয়ারপোর্টে তো হিসেব করলে জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়ে ফেলেছি :) অ্যাম্বাসাডার হোটেল/এয়ারলাইন্স লাউঞ্জ থেকে শুরু করে সব কিছুই বারে বারে ট্রাই করে গেছি। ওই ফুড কোর্টটাই অনেক ভালো খাবার খেয়েছি - ভালো থাই খাবারও! কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি সিঙ্গাপুরে ঠিক ফিলিংসটা আসে না স্ট্রীট ফুডের আমার নিজের ক্ষেত্রে - খুব ডিসিপ্লিনড ব্যবস্থা হলে যা হয়। একটু ছড়িয়ে ছিটিয়ে না থাকলে হয় নাকি! 

  • অরিন | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:৩৭97147
  • "সিঙ্গাপুরে ঠিক ফিলিংসটা আসে না স্ট্রীট ফুডের আমার নিজের ক্ষেত্রে - খুব ডিসিপ্লিনড ব্যবস্থা হলে যা হয়। একটু ছড়িয়ে ছিটিয়ে না থাকলে হয় নাকি! "

    সুকি, এই কমেন্টটা কি চাঙি'র ফুড স্ট্রীট সম্বন্ধে? তাহলে পুরোপুরি একমত, ওইজন্যই তো বললাম, হাতে যদি ঘন্টাখানেক থাকে | তার বেশী থাকলে ট্রেন ধরুন, চলুন সিম লিম টাওয়ার চত্বরের রাস্তয় | বহু বহুদিন আগে, সে চত্বরে এক বর্মী খাবারের দোকানে  ঝোল ভাত খেয়েছিলাম, মুখে স্বাদ এখনো লেগে আছে, তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলাম, এ যেন হুবহু আমাদের মা-মাসির হাতে রান্না করা ঝোল! 

    আমার নিজের বিশ্বাস, সে বিশ্বাস থেকে আমি টলতে রাজি নই, বাংলা হল যাকে বলে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার পশ্চিমতম প্রান্ত | আমাদের সাবেকি খাওয়া দাওয়া, আচার আচরণ, সব কিছুর মধ্যে আমি মিল খুঁজে পাই | 

  • Amit | 27.32.***.*** | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:২৩97151
  • বার্মিজ রান্নার সাথে বাংলাদেশ র চট্টগ্রাম র রান্নার তো দারুন মিল. দেশের সাথে একরকম তো লাগবেই. আগে তো সব বড়োলোক দের বাড়িতে মগ দেশের রাঁধুনি থাকতো. তারাই তখন সেলিব্রিটি শেফ .
  • dc | 103.195.***.*** | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৭:৩৮97161
  • সাউথ ইস্ট এশিয়ার দেশগুলোতে স্ট্রিট ফুডের সত্যি কোন তুলনা হয় না। আর সবথেকে ভালো ব্যপার হলো, এই দেশগুলোয় লোকজন সারাক্ষন খাইখাই করেই চলে, রাস্তার দোকানগুলোয় খাবার বিক্রি হতেই থাকে। এটা আমার ভারি ভাল্লাগে।
  • Pallab Basu | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:০২97225
  • Bapok !!

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন