কেউ মরতে চায় না। তাই শহর ছেড়ে গ্রামের ভেতরে গিয়ে লুকোয়, কখনো গ্রাম ছেড়ে শহরের জনারণ্যে মিশে যেতে চায়। এই মৃত্যুভয়, দাওয়ার ধারের ফুলের গাছ আর রান্নাঘরের মাটির উনুনের জন্য পিছুটান, বৃক্ষের মতোই শেকড় ছড়ানোর ইচ্ছে, মানুষকে আর্ত করে, অসম্ভব জেনেও বিমানের চাকায় নিজেকে বেঁধে নিরাপদ ভূমিতে আশ্রয়ের খোঁজে বেরোতে প্ররোচিত করে। এই সুযোগে শব্দভান্ডারে যুক্ত হয়ে যায় দুটি অর্থহীন কৃত্রিম শব্দ, সীমান্ত এবং শরণার্থী। কে সীমান্তে লক্ষ্মণ রেখা টানে, কে কাকে শরণার্থী প্রমাণ করে ! লক্ষ লক্ষ বছরের মানব ইতিহাসে এই দুটি এবং এই জাতীয় একগুচ্ছ শব্দের যাথার্থ্য কতোটুকু ! কিন্তু আশ্চর্য এই, এই চাপিয়ে দেওয়া কৃত্রিম শব্দদুটিই এখন অগুনতি মানুষের ভাগ্যনিয়ন্তা এবং শাসকের হাতে সবচেয়ে নিষ্ঠুর অস্ত্রবিশেষ। এরাই এখন আমাদের স্বাধীনতার ধারণার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
সীমান্ত মানে না প্রকৃতি, নদী, পাহাড়, গাছের শেকড়, পাখির ডানা। পাসপোর্ট ভিসা সীমান্তের কাঁটাতার প্রহরা, মানুষের অবাধ বিচরণ ঠেকানোর জন্য মানুষের সৃষ্টি। কিন্তু যাদের বলপ্রয়োগে ভিটেছাড়া করা হয়, মেরে তাড়ানো হয় এতোদিন স্বদেশ বলে জেনে আসা ভূখণ্ড থেকে, তাদের মন এবং হাতেপায়ের শৃঙ্খল যে সবচেয়ে ভারী, সেটা বোঝার জন্য হাতিঘোড়া-বজরাপানসি কিছুই লাগে না, একটা সংবেদনশীল মনই যথেষ্ট। যেহেতু তার অগম্য কিছুই নয়, সেই মনই খুঁটিয়ে বুঝতে পারে কেন দেশ না হারিয়েও, কোনো ক্ষতি স্বীকার না করেও কিছু কিছু মানুষ হয়ে পড়ে চূড়ান্ত সাম্প্রদায়িক, মনে হয় যেন তথাকথিত বিধর্মীর ওপর তাদের ঘৃণা তারা মায়ের জঠর থেকে নিয়েই জন্মেছে। কিন্তু একটু গভীরে ভাবলেই বোঝা যায় এই মনোভাব একটি অনড় সামাজিক নির্মাণ, যার চর্চা চলছে বহু শতক ধরে। এই আপাত কারণহীন বিদ্বেষীরা সংখ্যায় কিছু কম নয়। বিকৃত জাতীয়তাবাদের ধারণা এই ধর্মীয় আধিপত্যকামীদের আশ্রয়, দেশপ্রেম তাদের মুখোস। এই মুখোসকে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া একটি গল্প জয়ন্ত দে-র পেন্ডুলাম, যেখানে উল্টো অবস্থান থেকে দেখানো হয়েছে যাদের দেশ হারায়নি কখনো, তারাও কিভাবে কট্টর প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে যায় তার প্রতিবেশীর ওপর, যে প্রতিবেশীর দোষের মধ্যে দুই, তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা যায়নি আর ধর্মে সে অপর। আমাদের রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতার ধারণাকে পূর্ণতা দিতে হলে এই গল্পটি অবশ্যপাঠ্যের মধ্যে অন্যতম।
এইরকম উদাহরণ ঢের। চিনি এদের ব্যক্তিগতভাবেও, সব বিপর্যয়ের দায় চাপিয়ে দিতে চায় 'শ্যাখের বেটা'দের ওপর। কী প্রচন্ড ঘৃণা আজীবন পুষে রাখে, ধর্তব্যের মধ্যে আনে না সে সময়ের রাজনৈতিক ইতিহাস, আধিপত্যকামীদের দাবার চাল, যা সম্ভব করেছিলো দেশভাগ নামে বিশাল ট্র্যাজেডি এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নামক মানবেতিহাসের রক্তাক্ত এবং লজ্জাজনক অধ্যায়। যুযুধান দুই পক্ষকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে আজকের আফগানিস্তানের মতোই সেদিন পালিয়ে যায়নি ব্রিটিশ বীরপুঙ্গবরা? সে অবস্থা থেকে বেরনো সম্ভব হয়েছিলো বিপুলসংখ্যক মানুষের সর্বস্বান্ত হবার বিনিময়ে এবং অন্তত ভারতীয় ভূখণ্ডটুকুতে ধর্মীয় মৌলবাদকে আর দৃশ্যত বাড়তে না দিয়ে। তৎকালীন ভারতীয় রাষ্ট্রনায়কদের সে বাবদ ধন্যবাদ পাওনা হলেও, মানুষের মন থেকে বিদ্বেষ বিষ মুছে ফেলার কাজে তারা নিতান্তই ব্যর্থ, আর এখন তো বিদ্বেষের আহুতিতে ঘৃণার হোমাগ্নি অর্পণই বর্তমান শাসকের প্রধান কাজ। এইভাবে মুছে ফেলা যেটুকু সম্প্রীতি ভাবনা টিঁকে ছিলো তার শেষ চিনহটুকু। আলোচ্য গল্পটি সেই বাড়বাড়ন্তের গল্প, আবার শেষ অব্দি সেই জাল কেটে খোলা হাওয়ায় নিঃশ্বাস নেবার মানবিক প্রচেষ্টার বহুস্তরীয় কাহিনিও বটে।
পেন্ডুলাম গল্পের যে মূল কথক, তার বাবা নিজের অধিকারে থাকা একটি আশ্চর্য সুন্দর 'বেজাতের ঘড়ি' দেখিয়ে বেদম গর্ব অনুভব করত। বলা বাহুল্য ঘড়িটি দাঙ্গার সময় এক মুসলমানের ঘর থেকে লুটে আনা। ওটি তার বীরত্ব এবং প্রতিশোধের প্রতীক, নানা গল্পকথার কেন্দ্র। মুশকিল হলো এই ঘড়িটি একদিন খারাপ হয়ে গেল। বাবার মুষড়ে পড়া অবস্থা দেখে কথক ঘড়িটি ঠিক করবার তাড়ায় নানা দোকান ঘুরতে ঘুরতে হাজির হয় তার বাল্যবন্ধুর ঘড়ির দোকানে। বাল্যবন্ধুটি জাতে মুসলমান এবং কলকাতা শহরে তার চার পুরুষের বাস। সে সফল ব্যবসায়ীও বটে।
ফলে মনস্তাত্ত্বিক কারণে তাকে দেখেই কথকের অনুপ্রবেশ সমস্যার কথা মনে পড়ে যায়, কলকাতা শহর যে সবার লুটেপুটে খাবার জায়গা, এই কথা মনে পড়ে ঈর্ষা এবং আপশোস হতে থাকে। এই জায়গাগুলো লেখক ছোট ছোট আঁচড়ে চমৎকার এনেছেন। এইসব মনে হওয়া সত্ত্বেও সব দোকান থেকে প্রত্যাখ্যাত নিরুপায় কথক ঘড়িটি মুসলমান বন্ধুকেই সারাতে দেন এবং তার পরেও তার মনে হতে থাকে, 'ফট করে সামুর মুখ অনুপ্রবেশের কথা বলতে কেমন চুপ মেরে গেল... কথাটা কোনো ক্যাচালে ফেলবে না তো?'
এইসব মনে হওয়া-হওয়িতে আমরা বহুকাল অভ্যস্ত, তাই কথকের প্রতিটি কথা, প্রতিটি ভঙ্গি আমাদের খুব চেনা। বাল্যবন্ধুর তরুণ ছেলে সারানো ঘড়িটা বাড়ি বয়ে ফেরত দিতে আসে, তার ধর্ম না জেনেই তার কাছে বাবা ফলাও করে নিজের বীরত্বের কাহিনি বলতে বসে- 'বাবা হুংকার দিয়ে ওঠে, বন্দেমাতরম, ফিয়ার্স লেনে, সাগর দত্ত লেনে প্রচুর হিন্দু মরেছে। ঠিক হলো একটা হিন্দুর লাশ দেখলে দশটা মুসলমানের লাশ ফেলতে হবে...লাশে লাশে ভরে গেল কলকাতা, আর সেইসময়েই লুটে এনেছিলাম এই ঘড়ি। এক মুসলমানের অন্দরমহল থেকে। সেই ১৯৪৬! আজ কত বছর? কত বছর হলো?'
তরুণ ছেলেটির মুখ তখন লাল। দু হাত শক্ত হয়ে মুষ্টিবদ্ধ। কথক বুঝতে পারছে বাবাকে থামানো দরকার, সে চিৎকার করে ওঠে বাবা, বাবা। তার থেকেও বেশি জোরে চিৎকার করে ওঠে তার বাবা, 'থাম, একদম চুপ করে থাকবি, কাপুরুষ, নপুংসক।' আঁতে এবং পৌরুষে ঘা লাগায় তখন পুত্রও উলসে ওঠে, শূন্যে চাপড় মেরে দাবী করে, 'আমরা বাবরি মসজিদ ভেঙেছি' বা 'আমরা ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাব'।
আমাদের আচমকা মনে হয় কথাগুলো কি আমাদেরই নাভিমূল থেকে উঠে এলো?
এইভাবে প্রত্যেক পদক্ষেপে লেখক আমাদের আত্ম-জিজ্ঞাসার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেন। লজ্জা করে, যখন ছেলের সারাই বাবদ চেয়ে নিয়ে যাওয়া দুশো টাকা ফেরত দিতে কথকের বাড়ি চলে আসে বাল্যবন্ধু সামু। সে বুঝতে পারে না সারাই বাবদ কিছু না নিতে বলা সত্ত্বেও কেন ছেলে এই টাকা নিয়ে গেল। শুধ নেওয়া নয়, বাড়ি গিয়েই 'স্নান সেরে ছুটল মসজিদে। অথচ অন্য সময় বলে বলে পাঠাতে হয়। কাল কেমন যেন…!'
মন্দির মসজিদকে সামনে রেখে ছড়ানো ঘৃণা তো বিদ্বেষের জন্ম দেবেই, বিদ্বেষ ঘৃণার। এরা যেন দুই পরজীবী, মানুষের মন নামক মহীরুহের রস শুষে যাদের বাড়বাড়ন্ত। শোনা যায় আফগান নাগরিকদের নব্বই শতাংশ তালিবানকে চায় না। এ দেশে ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আফগানদের একশ শতাংশের এই মত। তারা নিজের অপরূপ এবং বিরল খনিজ সম্পদে পূর্ণ দেশকে গণতান্ত্রিক ও আধুনিক করে তোলার পক্ষপাতী। তাদের অযোগ্য নেতৃত্ব কুশাসনে জেরবার করে তুলেছিল তাদের। তবু তারা তালিবানকে চায়নি। গোপনে শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সমঝোতা হলো, বিশ্ববিবেক চোখে কাপড় বেঁধে তাদের তুলে দিলো তালিবানের হাতে। মাথার ওপর প্রশাসন বিক্রি হয়ে গেছে, হতাশ এবং ভীত সরকারি বাহিনি লড়াই না করে তালিবানের এগোবার পথ প্রশস্ত করে দিলো। অতীত যা বলে তাতে এবার আফিম চাষের থেকেও দ্রুত ছড়ানোর আশংকা ধর্মীয় বিদ্বেষ, নারীর অবমাননা। বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মুক্তমনা মানুষের আরো বিপদ বাড়লো, ভারতের দক্ষিণ পন্থী সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলি এইবার তালিবানি জুজু দেখিয়ে কাজ দ্রুত হাসিল করতে চাইবে।
তাহলে গত ৭৫ বছরে পৃথিবী পাল্টালো কোথায়! বাংলা থেকে আফগানিস্তান, শরণার্থী আর সীমান্তে ঠেলাঠেলি যেন এক বহতা রক্তনদীর ধারা, মাঝ নদীর উত্তাল ঢেউয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে প্যালেস্টাইন, সিরিয়া, ইরাক, তুর্কির 'শরণার্থীরা'। ধর্ম আর সাম্রাজ্যবাদ হাত ধরাধরি করে চলছে, পাশার দান লক্ষ কোটি মানুষের জীবন। তথাকথিত সাম্যবাদী রাষ্ট্রগুলোও পুঁজিবাদের পাশাপাশি এই মারণ যজ্ঞে সামিল। তাহলে আশা গচ্ছিত রাখবো কোথায় ? বিদ্বেষ ঘৃণা মৌলবাদ বর্জিত সেই দেশ কোথায় যেখানে মানুষ এতো সস্তা নয় যে অনায়াসে কেটে ছড়িয়ে দিতে পারা যাবে ?
উত্তরটা এই যে সে দেশ এখনো, ইতিহাসের এতো শিক্ষার পরও, এক অলীক মরিচীকা। আত্মত্যাগ আর চিত্তশুদ্ধিকে যাঁরা মোক্ষম দাওয়াই মনে করেছিলেন সেই মহাত্মা গান্ধী এবং তাঁর সমমনারা এখন হাসি বিদ্রুপের খোরাক। দেশভাগের জন্য তিনি দায়ী নন, সত্যিই তাঁর রক্তে শুধতে হয়েছিল এই সিদ্ধান্তের ঋণ, একথা না জেনেই গান্ধীজিকে নিয়ে অশ্লীল মিম হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে হাত থেকে হাতে। তাঁদের ভাবনা রিডান্ডান্ট, অকেজো, বর্জনীয় বলে শেখাই উত্তর প্রজন্মকে। অথচ যতো দিন যাচ্ছে স্পষ্ট হয়ে উঠছে কালের শিক্ষা--সাম্য অর্জন করা যায় কেবল ত্যাগের মূল্যে, ধর্মীয় মৌলবাদকে লড়াই দিতে পারে কেবল বিজ্ঞান, শিক্ষা আর যুক্তি।
নিরপেক্ষ ইতিহাসকে এই দেশে ক্রমে সোনার পাথরবাটি করে তোলা হচ্ছে। নাহলে তথ্যের পাশে যে সাহিত্য-সমাজদর্পণের ঠাঁই হওয়া উচিত ছিলো পেন্ডুলাম গল্পটি তার অন্যতম। গল্পের শেষ এক ধেয়ে আসা আসন্ন সর্বনাশে, তবু মনে হয় সব শেষ হয়ে যায়নি, সব শেষ হয়না। উদ্ধৃতি দেবার লোভ সংবরণ করলাম না, কেনই বা করবো, যখন মর্মে গিয়ে প্রোথিত হয় গল্পের মূল কথকের মানসিক দ্বন্দ্ব! একদিকে তার জিঘাংসু বাবা, অন্যদিকে সরল বাল্যবন্ধু --'বাড়ির ভেতর থেকে বাবার গলার শব্দ, কাশির শব্দ, পায়ের শব্দ বারান্দার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি চেয়ার ঘুরিয়ে ঘরের দরজা আড়াল করি, সামসুদ্দিনকে আড়াল করি। ফিসফিস করে বলি--- তুই অনেকদিন পর এদিকে এলি সামু। গোপাল বীরুর বাড়িতে যাবি ? চ, সামু, চ। অনেকদিন কোথাও যাওয়া হয়নি। চল, আজ চারজনে মিলে কোথাও ঘুরে আসি।'
৭৫ বছরে কিছু পাল্টায়নি, কারণ আমাদের বুকের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো অনড় হয়ে আছে ঘৃণার পাহাড়। পাল্টাতে হলে সেটাকে সরাতে হবে। দাঙ্গার আগুন আর রক্ত সত্য, সত্য মানুষের নিষ্ঠুরতা। কিন্তু তাকে পেরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেকগুলো 'তবু', যেগুলোর কাছে যাওয়া খুব কঠিন কাজ। কিন্তু এমন মানুষ তো বিরল নন, যারা দাঙ্গায় সর্বস্ব খুইয়েছেন, কিন্তু তবু সাম্প্রদায়িকতাকে মনে স্থান দেননি। এখনই মনে পড়ছে সদ্য প্রয়াতা সীমা দাসের কথা যাঁর আত্মজৈবনিক "দ্যাশ থেকে দেশে" বইটি প্রচন্ড নাড়া দিয়েছিল। মিহির সেনগুপ্তের সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম, অমর মিত্রের দেশভাগ-বেদনার উত্তরাধিকার পড়লেই বোঝা যায় উভয় পক্ষেরই দাঙ্গা-উত্তর মানসিকতা কী হওয়া উচিত।
এই আগুন ও রক্ত আর ঐ 'তবু'র মধ্যে নিরন্তর দোল খায় যে পেন্ডুলাম তার নাম মানুষের মন। যখন সে থামে, দেখা যায় তা নিশ্চিত
হেলে আছে 'তবু'-র দিকেই।
পুনশ্চঃ লেখাটি লিখছি, আজ ১৮ই অগাস্ট, ২০২১, দেশকে পুরোপুরি দখলের দ্বিতীয় দিনে আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহরে সরকারি দপ্তরের মাথায় কেন তালিবানি পতাকা থাকবে এই প্রশ্ন নিয়ে পথে নেমেছিলেন শ'য়ে শ'য়ে আফগান নাগরিক। তালিবানি গুলিবর্ষণ আজ তাদের ছত্রভঙ্গ ক'রে দিয়েছে বটে, তবু...