পারুল বৌদিকে এ পাড়ার সকলেই মান্যগণ্য করে। তিনি জানেনও অনেক কিছু। নয়তো সমীহ করবে কেন লোকে? তাঁর দোতলা বাড়িটি এ পাড়ার টিনের বাড়িগুলির মধ্যে প্রথম মাথা তুলে দাঁড়ানো দালান কোঠা। টেলিফোন তাঁর বাড়িতে সেই ট্রাঙ্ককল এর যুগ থেকে। পাড়ার সবাই তাই কোনো ফর্ম ভরাট করতে গিয়ে টেলিফোন নম্বরের জায়গায় তাঁর বাড়ির নম্বরটি লিখে দিত। ফোন তেমন আসতোই বা কার? আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে টেলিফোন ছিল এমন বাড়িই বা কটা ছিল তখন? তা সেই টেলিফোনওয়ালা আত্মীয়রাও তো আর রোজ ফোন করতোনা! এই কালে ভদ্রে, হয়তো। তবে শক্তপোক্ত চেহারার পারুল বৌদি পরোপকারী চিরদিন ই ---মানে দাদার পৈতৃক জায়গাটিতে নিজ পাকা বাড়ি বানিয়ে এ পাড়ায় আসা ইস্তক।বৌ হয়ে তিনি টিনের বাড়িতেই উঠেছিলেন, তারপর দাদার অফিস কোয়ার্টার এ চলে যান।
বাড়িটি বেশ জোরালো, দোতলা, বাদামী আর গেরুয়াতে মেশানো।সামনে রাস্তার দিকে বেশী জায়গা ছাড়েননি। পাঁচিল ঘেঁষে নিম, বেল, টগর ইত্যাদির পরেই গ্রিলের ছোট্ট বারান্দা আর বাথরুম সহ একঘরের ব্যবস্থায় ভাড়াটে বসিয়েছেন। পেছনের গুটি তিন ঘর আর একটি বাথরুম ছাত্র উপযোগী। তারপর পেছনের খোলা জায়গা।বাগান করেননি। পরে, গুটি তিনেক ঘর নিয়ে সাদামাঠা একটা একতলা আলাদা বাড়ি উঠেছে একই উদ্দেশ্য নিয়ে। পাশে মস্ত আম গাছ, আছে কলকে, দুটো সুপুরি আর একটা পেয়ারা। দোতলার লাল মেঝেওয়ালা আড়াই খানা ঘর নিয়ে থাকেন দাদা ও পারুল বৌদি। হাফ ঘরটি রান্নাঘর। বাথরুম ও উপরেই। আর একখানা খোলা ছাদ দোতলার ঘর লাগোয়া। আছে তারের গেট, তার বসানো শোবার ঘরের একটি জানালা ছাদের দিকে তাকিয়ে। একেবারে উপরের ছাদে শেড লাগিয়ে নেওয়া হয়েছে, সেখানে হাওয়ায় আম এসে পড়ে। দোতলার ঘর লাগোয়া ছাদেই শখের গাছগুলি। বড়োসড় টবগুলিতে আছে কাগজী লেবু, আছে শিউলি, বেলি, পঞ্চমুখী লাল টকটকে জবা, অপরাজিতা, তুলসী, থলকমল ও আছে একটি। সকালের কাঁচা রোদ, দুপুরের গাঢ় রোদ, শেষ বিকেলের কমলালেবু রোদ এই বাগানে খেলা করে যায়। দখিন বাতাস আর উত্তরে বাতাস দু এরই ছোঁয়া পায় এ ছাদ গ্রীষ্ম ও শীতে। বর্ষায় কাজল কালো মেঘের ছায়া নিয়ে ভিজতেও পারে গাছগুলি। তাই এই ছাদবাগান ভারী সবুজ, স্বাস্থ্যবান প্রাণবন্ত! সকালবেলা তাই প্রজাপতির দেখা মেলে, টুনটুনি আসে পাশের বেল গাছ থেকে। বেলের ফুল গন্ধ ছড়ায় বসন্তে। প্রতিবেশীরা বেলপাতা, নিম পাতা নিয়ে যায় বৌদির অনুমতি নিয়ে। বৌদি অমত করেননা। একখানি কল আছে এই ছাদে। সকাল থেকেই জলের কলকল শব্দের সাথে মেশে বাসন মাজা আর গাছে জল ছিটনোর আওয়াজ। এ সময় কাজের মেয়ে বাসন মাজে আর পারুল বৌদি তার সাথে নানান কথা বলতে থাকেন। গাছের কথা,নানান রোগের কথা, টোটকা র কথা, ঋতু, বার, সময় ভেদে কী খাওয়া যায় আর কী খাওয়া যায়না ---সেই কথা, পুজো, আচার বিচার, রান্না বান্না ---কী নেই সে আলোচনায়? আলোচনা বলতে, কাজের মেয়ে হয়তো একটি দুটি প্রসঙ্গ পাড়ে, আর পারুল বৌদি সে প্রসঙ্গ টি ধরে তাকে শেখাতে থাকেন, বোঝাতে থাকেন ধৈর্য ভরে। মেয়েটি কৃতজ্ঞ ভঙ্গিতে বিনীত কণ্ঠে সায় দেয়। এসব করতে গিয়ে পারুল বৌদির দেরী হয়ে যায় বাজার যেতে। তবু তিনি কর্তব্য থেকে সরে আসতে পারেননা চট করে। পায়ের অসুবিধার কারণে একটি রিক্সা ধরে উনি বাজারে যান, তবু দাদাকে যেতে দেননা। দাদার অস্তিত্বটি তেমন বোঝা যায়না। তিনি চুপচাপ কখনো ছাদে একটু হাঁটেন। আপিসের পাট চুকেছে। গরমের বিকেলে তিনি পারুল বৌদি না পারলে গাছগুলি ধুইয়ে দেন। ভাড়াটেদের বিষয়ে পারুল বৌদির নিয়মগুলি যাতে বজায় থাকে সে বিষয়ে তিনি নজর রাখেন। তাছাড়া ঘরের জিনিস এটা ওটা গুছিয়ে রাখা, শীতের সকালে ছাদে আসার আগে মোজা ও মাংকি টুপি পরে নিতে তাঁর ভুল হয়না।দু বছরে একবার তাঁদের বাড়ি রং হয়। রং এর আগে টুকটাক মেরামতি। একটা যেন ‘ঠিক ঠিক’ এর আবহ সংগীত টিক টিক করে বেজে চলে এ বাড়ি ঘিরে। পাড়া প্রতিবেশির বাড়ি অনুষ্ঠানেও পারুল বৌদি সেই সংগীত বহন করে নিয়ে যান, তাই সবাই একটু ভয়ে আবার একটু নিশ্চিন্তে ও থাকে বুঝি। তিনি পুজো আচ্চা, আচার বিচারের শেষ কথাটি বলেন। লোকে পালন করে।
তবে তারা একটু বুঝি দূরত্বও বজায় রাখে নিজেদের চাপ মুক্ত রাখতে। একমাত্র মিনিরাণীর মধ্যেই বুঝি তেমন চাপ দেখা যায়না! হয়তো তার বোধশোধের অভাবের কারণেই সে ধরতে পারেনা ----মোটামুটি এমনটাই ভাবে বাকিরা।
বৌদির সঙ্গে প্রতিটি তালে পায়ে পা ফেলে বুঝি মিনিরানী। সে থাকে তার বাপের এজমালি জায়গায় ছোট্ট একটি টিনের ঘরে কোনোক্রমে তার স্বামী ও পুত্রদুটি নিয়ে। চারপাশে আরো টিনের, মুলি বাঁশের ঘরগুলিতে কিংবা উঠোনের চিৎকার, ঝগড়ায় তার কোনো গলা কোনোদিন কেউ শোনেনি। তার সামনের দুটি দাঁত একটু বার হয়ে থাকে বলে সবসময়েই মনে হয় সে বুঝি হাসছে। পারুল বৌদির বাড়ির পাশেই তার বসত, ছাদ থেকে তাকে ডেকে নেওয়া যায়। পুজো আচ্চার ফাই ফরমাশ থেকে রোজকারের নানা প্রয়োজনে ডাকলেই সে হাজির। শরীর টরির খারাপ হলে একমাত্র তাকে দিয়েই ঠাকুর বাসন মাজাতে পারেন তিনি। মিনিরানীর টানাটানির সংসারটি চলে স্বামীর ছোট মোটো ইলেকট্রিক এর কাজ, আর বাড়ির দালালি থেকে । বৌদি তার অনেকটাই সহায়। পারুল বৌদিকে না জিগ্যেস করে যেহেতু সে কোনো কাজ করেনা, সেহেতু তার প্রতি তিনি দিলখোলা, হাতখোলা। বৌদি বছরে একবার বেড়াতে যান, তখন তার ঘরেই সে সপরিবারে শোয়। সব কিছুই ব্যবহারের অনুমতি থাকে তার।
তবে বৌদির বেড়াতে যাওয়ার রুটিনটি থেমে গেল গত বছর ভাদ্র মাসে দাদার হটাৎ ই তিন দিনের জ্বরে চলে যাওয়ায়। যে প্রায় নেই হয়েই থাকে তার অনুপস্থিতি তেমন করে কেউ বোঝেনা। তবে, পারুল বৌদির ভিতরে কী হলো সেটা অন্যের জানার, অন্যের বোঝার বিষয় নয়। শক্ত মানুষ, মাস খানেক পরেই দৈনন্দিন রুটিনে দেখা গেল তাঁকে। মিনিরাণীর বড়ো ছেলেটি এর মধ্যে কাজ জোটালে, করিৎকর্মা সে, বাবার সাথে সাথে ইলেকট্রিকের কাজ শিখে নিয়েছিল, কলেজের ডিগ্রীও ছিল। সরকারি টাকায় ও ছোটখাট টিউশন করে তার খরচ সে চালিয়ে নিয়েছে এতদিন। ছোটোটি মোটর মেকানিক কোর্স এ ভর্তি হয়েছে।পড়াশুনো নিয়ে পারুল বৌদির ঘরেই ঠাঁই পেল মোটামুটি। ও বাড়িতে আর কেউ তো অক্ষরের ধারে কাছে নেই! বৌদি মিনিরাণীর সংসারটিকে ও বাড়ির আর পাঁচটা সংসার থেকে আলাদা করে অনেক উঁচুতে তুলে ধরতে চাইলেন তাঁর উদারতা, প্রজ্ঞা, দূরদৃষ্টি এবং আর্থিক সহায় হবার যোগ্যতাকে ব্যবহার করে। মিনিরানীই তাঁর একমাত্র দোসর পাড়ায়। তাঁর অতল ব্যক্তিত্বটির প্রকৃত মূল্যের একমাত্র বোঝদার সে। সেই কারণেই সে তাঁর অনুগামী , নিজের অস্তিত্বটিকে তাঁর কাছে সমর্পন করে। পারুল বৌদি জোরে জোরে তাই পরামর্শ দেন তাকে, এক ধরণের আত্মতৃপ্তি ফুটে ওঠে তাঁর কণ্ঠে, চোখেমুখে। আর কাউকে তিনি তেমন কাছে ঘেঁষতে দেননা, প্রয়োজনে সাহায্য ও পরামর্শটুকু দিয়ে ছেড়ে দেন মাত্র! এভাবেই দিন চলছিল। তারপর একদিন পাড়ার লোক যা স্বপ্নেও ভাবেনি তাই সম্ভব হলো।
মিনিরানীর পৈতৃক জায়গাটিতে একদিন শরিকি কোন্দল মিটে গেল এবং সবাই একমত হলো নিজেদের ভাগ নিয়ে। জায়গাটি পাড়ার উঠতি প্রোমোটারকে দেওয়া হবে ঠিক হলো। মাথার উপর পাকা ছাদ, নিজস্ব বাথরুম, ঝকঝকে ঘর কে না চায়? তবে বখরা নিয়ে কেউ কারুর থেকে পিছিয়ে যেতে চায়না। মিনিরানীর এতদিনের কষ্ট বুঝি সফল হলো। সে এবার নিজের ফ্ল্যাটে থাকবে। সে বাড়ি হবে চার তলা। মিনি পেল তিন তলায়। বৌদি বলে: তাইলে তোকে এখন তো আমায় এ ছাদ থেকে মাথা উঁচু করে ডাকতে হবেরে মিনি। মিনি রাণীর মুখ থেকে একটি মৃদু শব্দ বের হলো, যেহেতু তার দাঁত সবসময় দেখা যায় তাই সেটা হাসি কিনা বোঝা গেলোনা।
এর মধ্যে একদিন মিনিরানীর স্বামী অব্যয় নতুন ভাড়াটে আসার আগে পারুল বৌদির নিচের ঘর ঝাড়পোঁছ করতে গেল নিজের উদ্যোগে। সে আবিষ্কার করলো দেওয়ালের রং পাঁপড়ের মত ফুলে উঠে খসে পড়ছে। সিলিং এ ফাটল ও বুঝি দেখা যায়! সে নীচ থেকে জোরে জোরে পারুল বৌদিকে জানালো। আশেপাশে চলে ফিরে বেড়ানো, গুলতানি করা প্রতিবেশীদের মধ্যে থেকে কেউ বললো নিচের তলায় নাকি অমন হয়, সে ছ ফুট টাইলস বসিয়ে নিয়েছে, আর কী একটা মিক্সচার মিক্সচার বলতে লাগলো। সেটি লাগালে অমন নাকি হয়না।পারুল বৌদি ওদের পুরোনো বাড়ি ভেঙে এই সেদিন পাকা বাড়ি উঠতে দেখেছেন। কাজেই অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে তাঁকে ধরতে যাওয়ার চেষ্টাকে আমল না দেওয়াই ভালো। তিনি তাই উত্তর করলেননা, অব্যয়কে ডাকলেন শুধু উপরে।
তারপর বর্ষা গেল,শরত এলো। একদিন পারুল বৌদিকে সুন্দর শাড়ি পরে সেজেগুজে ছাদ থেকে মিনিরাণী র বড়ো ছেলেকে রিক্স এসেছে কিনা জিগ্যেস করতে দেখা গেল। সবাই মিলে কোথাও একটা গেল। পাড়ার লোকজনের ফিসফাস এবার সরাসরি প্রশ্ন হয়ে উঠে এলো, আর, কদিন বাদেই পারুল বৌদি ভাড়াটে উঠিয়ে নিজেও পাশের পাড়ার দেড় কামরার ভাড়াবাড়িতে গিয়ে উঠলেন। শখের গাছগুলি তিনি বিলিয়ে দিলেন পাড়া প্রতিবেশীদের যেচে।
মিস্ত্রির দল এলো পুজোর পর। প্রথমে আমগাছ কাটা পড়লো, তারপর একে একে বেল, নিম, সুপুরি ইত্যাদি। বাড়ি ভাঙতে গিয়ে মিস্ত্রিদের ঘাম আর গালাগালি দুইই ছুটলো। অবশ্য ছোট ছোট ট্রাকে করে সব রাবিশ সরাতে বেশী সময় লাগেনি। তাই ভিত খোঁড়ার কাজ খুব তাড়াতাড়ি ই শুরু হয়ে গেল। পাড়ার লোকে আসন্ন শীতের মরসুমি ফুলের দিকে চেয়ে মাটি নিয়ে যেতে থাকলো। সিমেন্ট পড়লো বালি পড়লো, লোহার রড মাথা তুললো।
ইতিমধ্যে মিনিরাণী বড়ো ছেলের বিয়ের নেমন্তন্ন করে ফেললে এ পাড়ায়। সেও অন্য পাড়ায় ভাড়া বাড়ি নিয়েছে এখন। ছেলেরই আপিসে কাজ করে কণে। পাড়ার কেউই বাদ পড়লোনা। একটু আগেই সেরে ফেললে সে কাজটি, বিয়ে হবে মাঘের শেষে। পড়শীরা আশা রাখলে, বৌ নিয়ে ছেলে সোজা ফ্ল্যাটেই উঠতে পারবে। মিনিরানী মুখে না বললেও শোনা গেল সে নাকি দুটি ফ্ল্যাট পাবে পারুল বৌদির বাড়ির। মোট তিনটি বাড়ির কোনটিতে কে থাকবে তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা চলল।পারুল বৌদিকে অনেকদিন দেখা যায়না এ পাড়ায়।
কার্তিক মাসের এক কুয়াশামাখা, উত্তুরে বাতাস ছাড়া সকালে হটাৎ ই দেখা গেল বাঁধা রিক্সাওয়ালার রিক্স চেপে পারুল বৌদি উপস্থিত। একটু বুঝি ঝরেছেন, শীতের শুরুতে একটু শুকনোও লাগে। মজুরদের মধ্যে তখন এদিকে বলরামকেই দেখা যাচ্ছে। ওদিকে মিনিরানীদের চারতলা পর্যন্ত ঢালাই হয়ে যাওয়া বাড়িটির দিকে কেউ আছে কিনা বোঝা যায়না এদিক থেকে। বৌদি হাঁক মারলেনঃ এখান থেকে মাটি নিয়ে যাবো, কাউকে পাঠিয়ে দেবো। না তাকিয়েই বলরাম বলে দেয়ঃ হবেনা, মালিক কে বলতে হবে! আসলে সাত সকালে বিস্তর কাজ তার এখন। বাড়তি ঝামেলা নিতে চায়না। পারুল বৌদিকে বলতে শোনা গেল ঃ আমারই তো বাড়ি গো! কিন্তু, গলায় তেমন জোরটি যেন ছিলোনা। একটু কেঁপেও গেল যেন গলাটা? বলরাম এবার একবার তাকিয়েই মুখ ফেরালো নিজের কাজে, বললো ঃ ঠিক আছে লোক পাঠিয়ে দেবেন পরে, দিয়ে দেওয়া যাবে। বৌদি যেন হটাৎ ই ছটফট করে বললেনঃ আচ্ছা এখনই একটু দিয়ে দাওনা। ভাড়া বাড়িতে বুঝি আবার কটি গাছের ইচ্ছে হয়েছে তাঁর, তাই সামান্য একটু মাটি হলেইতো হয়ে যায়! রিক্স তো আছেই। এবার বলরাম আরো ঝাঁঝাঁলোঃঃ এখন ওসব হবেনা, বললাম তো পাঠিয়ে দেবেন কাউকে পরে!
এরপর আর বুঝি কোনো কথা হয়না। বৌদির মুখে যেন পূর্ণিমা পেরিয়ে এসে মাথা ভেঙে যাওয়া চাঁদএর অপ্রস্তুত ফ্যাকাশে হাসি। তবুও, নিজের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠার তাগিদেই যেন, জোর করেই বলেনঃঃ ঠিক আছে পাঠিয়ে দেবো, দেবেতো?... পাঠিয়ে দেবো…..!
এবার আর কোনো উত্তর আসেনা অন্য দিক থেকে। রিকশওয়ালা রিকশ ঘোরায় উল্টো পথে, দেড় কামরার সাময়িক আবাসটির দিকে। কিন্তু, সে পথ তো আর ফেরার পথ নয়!
বেশ খানিক্ষণ পর কাজের ফাঁকে একটু জিরোতে বলরামের গ্রামতুতো শাকরেদ বসির আসে ওদিক থেকে এদিকে। বিড়ি ধরায় দুজন। বলরাম বসিরকে বলেঃ এখানের আগের বাড়িটার দোতলায় একটা মোটামত বৌ থাকতোনা?.... বয়সওয়ালা একটু….? সকালে কাজের সময় এসে মাটি চাইছে….বলছে--- “আমার বাড়ি”! দুজনের হালকা হাসির শব্দ বুঝি ভেসে আসে, বাকি কথাগুলি ব্যস্ত কাজের দিনের নানান শব্দে চাপা পড়ে যায়।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।