এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা   অর্থনীতি

  • ভারতে ইউপিআই এর জনপ্রিয়তাঃ কি ও কেন

    dc
    আলোচনা | অর্থনীতি | ০৩ নভেম্বর ২০২৫ | ৪৩ বার পঠিত
  • ভারতে ইউপিআই পেমেন্ট এর জনপ্রিয়তা এক্সপোনেনশিয়াল হারে বাড়ছে। এনপিসিআই এর তথ্য অনুসারে, সেপ্টেম্বর মাসে ইউপিআই এর মাধ্যমে ২৪.৮৯ লক্ষ কোটি টাকার ট্র‌্যানসাকসান হয়েছিল এবং অক্টোবর মাসে দৈনিক ষাট হাজার থেকে এক লক্ষ কোটি টাকার ট্র‌্যানসাকসান হয়েছে। দৈনিক গড়ে ষাট থেকে সত্তর কোটি ট্র‌্যানসাকসান হয়েছে। (https://www.npci.org.in/product/upi/product-statistics) ইউপিআই ব্যাবহার করে তিনভাবে পেমেন্ট ​​​​​​​করা ​​​​​​​যায়ঃ ​​​​​​​আপনার ​​​​​​​ফোন ​​​​​​​থেকে ​​​​​​​অন্য ​​​​​​​কারুর ফোনে ​​​​​​​সরাসরি ​​​​​​​টাকা ​​​​​​​পাঠাতে ​​​​​​​পারেন (যদি ​​​​​​​আপনার ​​​​​​​আর ​​​​​​​অন্যজনের ​​​​​​​ফোন ​​​​​​​এর ​​​​​​​সাথে ​​​​​​​ব্যাংক ​​​​​​​অ্যাকাউন্ট ​​​​​​​লিংকড ​​​​​​​থাকে), ​​​​​​​বা ​​​​​​​আপনার ​​​​​​​ফোন ​​​​​​​থেকে ​​​​​​​অন্যজনের ​​​​​​​ইউপিআই ​​​​​​​আইডিতে ​​​​​​​টাকা ​​​​​​​পাঠাতে পারেন ​​​​​​​(যাকে ​​​​​​​বলে ​​​​​​​ভিপিএ বা ​​​​​​​ভার্চুয়াল ​​​​​​​পেমেন্ট অ্যাড্রেস), বা ​​​​​​​দোকানে ​​​​​​​গিয়ে ​​​​​​​কিউ ​​​​​​​আর ​​​​​​​কোড ​​​​​​​স্ক্যান ​​​​​​​করে ​​​​​​​টাকা ​​​​​​​পাঠাতে ​​​​​​​পারেন। ​​​​​​​টাকা ​​​​​​​পাঠানোর ​​​​​​​জন্য ​​​​​​​আপনার ​​​​​​​ফোনে গুগল ​​​​​​​পে, ​​​​​​​বা ​​​​​​​পেটিএম, ​​​​​​​বা ​​​​​​​ফোনপে ​​​​​​​ইত্যাদি ​​​​​​​কোন ​​​​​​​একটা ​​​​​​​অ্যাপ ​​​​​​​ইনস্টল ​​​​​​​করতে হবে। ​​​​​​​তবে ​​​​​​​এর ​​​​​​​জন্য ​​​​​​​যে স্মার্টফোনই ​​​​​​​দরকার তা ​​​​​​​নয়, তথাকথিত ​​​​​​​ফিচার ফোনেও ​​​​​​​কিছু ইউপিআই ​​​​​​​অ্যাপ ​​​​​​​প্রিইনস্টল ​​​​​​​করা ​​​​​​​থাকে, ​​​​​​​তাছাড়া ​​​​​​​এসেমেস বা ​​​​​​​স্পেশাল ​​​​​​​কোড ​​​​​​​দিয়েও ​​​​​​​বোধায় ট্র‌্যানসাকসান করা ​​​​​​​যায়। 
     
    প্রশ্ন হলো, ভারতে ইউপিআই এর জনপ্রিয়তা এতো বেশী কিভাবে হলো, যেখানে আগে ডিজিটাল ট্র‌্যানসাকসানের ভলিউম অতি সামান্য ছিল? আমার মতে প্রথম কারন অবশ্যই কনভিনিয়েন্স। এখন আপনার পকেটে কারেন্সি না থাকলেও চলবে, শুধু ফোন থাকলেই হবে। আর কে না জানে ফোন ছাড়া আমরা আজকাল এক পাও চলতে পারি না, ঘুম থেকে উঠে আমরা প্রথমেই ফোনের দিকে হাত বাড়াই, আর রাতে শোয়ার সময়েও ​​​​​​​ফোনে ​​​​​​​য়ুটুব ​​​​​​​দেখতে ​​​​​​​দেখতে ​​​​​​​ঘুমিয়ে ​​​​​​​পড়ি। ​​​​​​​কাজেই বাজার ​​​​​​​করতে ​​​​​​​গিয়েই হোক ​​​​​​​বা ​​​​​​​চায়ের দোকানে ​​​​​​​দাড়িয়েই ​​​​​​​হোক, ​​​​​​​পকেট ​​​​​​​থেকে ​​​​​​​মোবাইল ফোন বার ​​​​​​​করে ​​​​​​​পেমেন্ট ​​​​​​​করার ​​​​​​​সুবিধা ​​​​​​​অতুলনীয়। ​​​​​​​এর ​​​​​​​সাথে ​​​​​​​যোগ ​​​​​​​করা ​​​​​​​যেতে ​​​​​​​পারে ​​​​​​​রিয়েল ​​​​​​​টাইম ​​​​​​​সেটলমেন্ট, ​​​​​​​অর্থাত ​​​​​​​আপনি ​​​​​​​পেমেন্ট ​​​​​​​করা ​​​​​​​মাত্র যেমন ​​​​​​​আপনার ​​​​​​​ফোনে মেসেজ ​​​​​​​এলো ​​​​​​​যে ​​​​​​​আপনার টাকা ​​​​​​​বেরিয়ে ​​​​​​​গেছে, ​​​​​​​সেরকমই অন্যজনের ​​​​​​​ফোনেও তৎক্ষনাত ​​​​​​​মেসেজ ​​​​​​​আসে ​​​​​​​যে ​​​​​​​তিনি ​​​​​​​টাকা ​​​​​​​পেয়ে ​​​​​​​গেছেন ​​​​​​​(বা দোকানী ​​​​​​​হলে ​​​​​​​তাঁর ​​​​​​​সাউন্ড ​​​​​​​বক্সে ​​​​​​​অ্যানাউন্সমেন্ট হয়)। ​​​​​​​এরই ​​​​​​​সাথে ​​​​​​​যুক্ত দ্বিতীয় কারন ​​​​​​​ট্রাস্ট, ​​​​​​​অর্থাত ​​​​​​​আপনি ​​​​​​​এবং ​​​​​​​দোকানী ​​​​​​​দুজনেই ​​​​​​​সিস্টেমকে ​​​​​​​ট্রাস্ট ​​​​​​​করতে ​​​​​​​পারছেন, দোকানী নিশ্চিন্তে আপনাকে জিনিস বা সার্ভিস বিক্রি করতে পারছেন। রিয়েল টাইম সেটলমেন্টের ফলে আপনার ফোন কার্যত কারেন্সি নোটের ভূমিকা পালন করছে। 
     
    তৃতীয় কারন হলো ইউপিআই এখনও অবধি ফ্রি, আপনার এবং দোকানদার, দুজনের জন্যই। অন্যদিকে, ক্রেডিট কার্ড সেল এর জন্য কিন্তু দোকানিকে ২% কমিশান দিতে হয়, যার জন্য ক্রেডিট কার্ডে হাই ভ্যালু ট্র‌্যানজাকশান করতে গেলে অনেক সময়ে দোকানি ২% এক্সট্রা চান। ফ্রি হওয়ার ফলে ফাইনান্সিয়াল ইনক্লুশানও তৈরি হয়েছে, আপনি চাইলে কাউকে এক টাকাও পাঠাতে পারেন, অন্যজন ওই এক টাকাই পাবেন। এটাও একটা বড়ো কারন লো ভ্যালু ট্রান্সাকশান এতো বেশী জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে। বলাই বাহুল্য এর ফলে ভিসা আর মাস্টারকার্ড এর রেভিনিউ কিছুটা কমেছে। এর বোধায় একটা ভালো দিকও আছে, ক্রেডিট কার্ড পেমেন্ট মানে ধার করে পেমেন্ট, আপনি পরে শোধ করবেন, কিন্তু ইউপিআই পেমেন্ট আপনার ব্যাংক থেকে হচ্ছে, ফলে আপনার কাছে যে টাকা নেই সেটা আপনি খরচ করতে পারবেন না। অবশ্য ডিজিটাল ট্রান্জাকশান মাত্রেই "টাকা" বা কারেন্সি মেটিরিয়াল ভ্যালু কমিয়ে দেয়, নোট খরচ করার বদলে স্ক্রিনে নম্বর টিপে পেমেন্ট করলে খরচের প্রবণতা বেড়ে যায়, তবে সে অন্য গল্প।  
     
    চতুর্থ কারন হলো, ইন্টারাপারেবিলিটি। ইউপিআই ইন্টারফেস এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে করে আপনি যে কোন অ্যাপ অন্য যেকোন অ্যাপে টাকা পাঠাতে পারেন। এই সুবিধা বোধায় অন্য বেশ কিছু দেশে নেই, যার ফলে বহু দেশে ট্যাপ টু পে বা স্ক্যান টু পের বন্দোবস্ত থাকলেও সেগুলো ইউপিআই এর মতো জনপ্রিয় হয়নি। ইউপিআই যেহেতু ভারত সরকারের দ্বারা পরিচালিত, তাই এটা ফ্র‌্যাগমেন্টেড নয়। 
     
    ভারতে ইউপিআই জনপ্রিয় হওয়ার একটা ভালো দিক, আমার মতে, ডিজিটাইজেশান অফ ফাইন্যান্স, যার ফলে ফর্মাল সেক্টর আরও বাড়বে, সরকারের আর পেমেন্ট কোম্পানি গুলোর হাতে আরও তথ্য আসবে, আর হয়তো ট্যাক্স ক্যালকুলেশানেও আরও সুবিধা হবে (ডাইরেক্ট আর ইনডাইরেক্ট দুরকমই)। তবে এর ফলে ইন্ডিয়ান কনসিউমারদের বিহেভিয়ারে কিরকম পরিবর্তন হচ্ছে, বা ইকোনমির ওপর কি এফেক্ট হচ্ছে? এগুলো খুব ইন্টারেস্টিং গবেষণার বিষয় হতে পারে। 
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন