এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • কাস্টমার

    মোহাম্মদ কাজী মামুন লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ১৭ অক্টোবর ২০২৫ | ২২ বার পঠিত
  • ‘গরম লাগছে ভাই? এসি ছেড়ে দেই?’ – রিমোট হাতে নিতে নিতে বলল মোরসালিন। হালকা শীত লাগায় বন্ধ রেখেছিল এসিটা, কিন্তু সামনে বসে থাকা বিশাল বপুর লোকটি তাকে চিন্তায় ফেলেছিল।

    ‘না না, আমার কোন সমস্যা হইতেছে না। আপনের লাগলে ছাইড়া দ্যান।’ – রুমাল দিয়ে চোখ ও কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বলল লোকটি। সে বিব্রত, কিছুটা লজ্জিতও যেন।
    ‘আমার জন্য একদম ভাববেন না! এই এসি আপনাদের জন্যই বসানো হয়েছে… এখানে যা কিছু দেখতে পাচ্ছেন...এই টেবিল... চেয়ার… এই যে লতিয়ে উঠা ইনডোর প্লান্ট ... এ সব কিছুই তো আপনাদের। এমনকি এই আমিও আপনাদের জন্য।‘ –বিনয়ে ঝুঁকে পড়তে পড়তে রিমোট টিপে মোরসালিন।

    লোকটি বিষ্মিত হয়, আরও অনেক ব্যাংকে যাওয়া আসা আছে, কিন্তু এমন আগে দেখেনি, শোনেনি। কাউন্টার থেকে তার ঘষামাজা চেকটি ফিরিয়ে দেয়ায় এসেছিল ম্যানেজার সাহেবের কাছে - যদি তাকে অনুরোধ করে পাস করিয়ে নেয়া যায়!

    প্রায় চারমাস হল মোরসালিন শাখাটির দায়িত্ব পেয়েছে। আর এর মধ্যেই জমে উঠেছে, প্রতিদিন লম্বা লাইন লেগে যাচ্ছে কাউন্টারের সামনে । শাখার নিরাপত্তা রক্ষী মোতালেব এমন দেখেনি তার দীর্ঘ চাকরী জীবনে, পিয়ন রশিদকে কথায় কথায় একদিন বলছিল, ‘দেখিস্‌, বছর ঘুরতে নতুন অফিস নিতে হবে, জায়গা সংকুলান হবে না।‘

    অথচ এতেও ক্ষিদে মেটেনি ম্যানেজার সাহেবের, গেল সপ্তাহের মিটিংয়ে শাখার কর্মীদের সে আকুল আবেদন জানায় কাস্টমার হান্টের জন্য - ‘ঘরে বসে থাকলে কাস্টমার আসবে না, দৌঁড়াতে হবে, দোরে দোরে কড়া নাড়তে হবে। যে আপনার কাছে এসে ধর্না দিয়ে পড়ে থাকছে, তাকে দিয়ে আপনার কোন কাজ হবে না। বরং যে বেশী বেশী প্রশ্ন করবে, বিরক্ত করবে, ধরে নেবেন সে-ই আপনার আসল কাস্টমার। ‘

    মোস্তাকিম, ঠোটঁকাটা হিসেবে যার সুনাম ও দুর্নাম দুই-ই ছিল অফিসে, বাগড়া দেয়ার সুযোগটা ছাড়লো না, ‘কই, প্রায় ছ মাস চেষ্টার পর ‘বঙ্গস্বপ্ন’ কে তো নিয়ে এলাম, কাজের কি হল, দিন শেষে তো পোলটি দিল!‘ মোরসালিন প্রতিবাদ করে উঠে, ‘সে ফিরে আসবে দেখে নিয়েন। যে সুবিধাগুলি অফার করা হয়েছিল, পছন্দ না হওয়ায় গেলেনি। এখন সে ইনজিউরড, ভুলতে কয়েকটা দিন সময় দিন।‘ ঠিক যেন সন্তুষ্ট হতে পারে না মোস্তাকিম, ‘কিন্তু আমাদের ব্যাংকের প্রোডাক্ট কি আরো আকর্ষনীয় …… ?’ এগুতে দেয় না মোরসালিন, ‘আমাদের ব্যাংক’ কথাটা আর না, এখন থেকে সব সময় কাস্টমারদের ব্যাংক... ‘

    তো সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ল। নিজেদের বিচিত্র অভিজ্ঞতা বলাবলি করতে লাগলো তারা। অফিসের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য মাজহার সাহেব, অতিশয় নিরীহ - লোকে বলে, তার এক গালে চড় মারলে অন্য গাল পেতে দেন সবিনয়ে। মাজহার সাহেব অনেক দিন ধরেই চেষ্টা করছিলেন এই মুহুর্তে তাদের এলাকার ‘মা-বাপ’ বলে খ্যাত ওয়াসিম শেখের নাগাল পেতে। তার এক জ্ঞাতি ভাই ওয়াসিম শেখের খানিক চেনাশোনা ছিল। তো তারই লেজ ধরে সেদিন গিয়েছিলেন পার্টি অফিসে, ওয়াসিম শেখ খাতির করে চা বিস্কুট খাইয়েছে, এমনকি ছবি তোলার অনুরোধ জানালে পাশে দাঁড়িয়ে পোজও দিয়েছে। ‘কিছু আসবে তো, মাজহার ভাই? ’ – মোরসালিন আশা ভরা কন্ঠে শুধায়। দুয়েকবার অকারণ নাক টানলেন মাজহার সাহেব, তারপর থুতনিটা স্বাভাবিকের থেকে উঁচুতে রেখে বলতে শুরু করলেন, ‘তার ব্যবসা প্রতিদিনই বাড়তেছে, পরিবারেও সময় দিতে পারতেছেন না ইদানিং…ব্যস্ততা একটু কমলে সে নিজে এসে আপনার সাথে চা খেয়ে যাবে, স্যার।‘ মোরসালিন হতাশ হয় না, সে মাজহার সাহেবকে পরামর্শ দেয় সম্পর্কটা রানিং রাখতে।

    প্রতিটা অফিসেই কিছু সিরিয়াস লোক থাকে, তারা অফিসের কাজকে এক প্রকার ইবাদত মনে করে থাকে। সেলিম সাহেব এই টাইপের কিনা বলা যাচ্ছে না, তবে সবার আগে অফিসে প্রবেশের রেকর্ডটি তারই দখলে। আজ সেই লোকটিকে আধবেলা পর্যন্ত না দেখতে পেয়ে স্বয়ং রেকর্ড ভংগকারীর মনেও কেমন যেন ‘নাই’ ‘নাই’ বোধ হতে লাগল। সেলিম সাহেব বেলা তিনটেয় অবশ্য অফিসে ঢুকলেন, কিন্তু সবাইকে অবাক করে সোজা চললেন ম্যানেজারের চেম্বারে, ‘মানিক চৌধুরীর সাথে দেখা করে এলাম, স্যার… উনাকে পেলে আর কাউকে লাগবে না আমাদের।‘ –ঠিকমত দম নিতে পারছিলেন না তিনি, তবু অভিযানের রোমাঞ্চকর গল্প থামালেন না - ‘ সকাল থেকে তার বাড়িতে। এগারোটার আগে দমই নিতে পারলেন না। এরপর তো দুপুরে না খেয়ে আসতেই দেবেন না। প্রায় এক ঘন্টা একান্ত আলাপ করলেন আমার সাথে।‘’

    ‘তো উনি কি নিয়ে আলাপ করলেন’ - কিছুটা কৌতুকপূর্ণ স্বরে জিজ্ঞাসা করে মোরসালিন। সেলিম সাহেবের উৎসাহের গ্যাসে যেন কাঠি জ্বেলে দেয়া হয়েছে - ‘সে তো আর অল্পে বর্ণনা করা সম্ভব না, স্যার। কিভাবে ব্যবসা শুরু করলেন, কোথায় কি কি আছে তার, কি কি সমস্যা ফেইস করছেন…সরকারের উপর খুব রাগ মানিক চৌধূরির… লোকে বলে, অপোজিশান পার্টির সাথে ভাল খাতির।‘ থামিয়ে দেয় মোরসালিন , ‘তাতে সমস্য কী? সরকারী লোক পেলে আপনি পুরোপুরি সরকারী হয়ে যাবেন, আর সরকারী বিরোধী কাউকে পেলে তাদের কথায় নীরবে সায় দিয়ে যাবেন। আসল কথাটা হল, মানুষের মনের মধ্যে ঢুকে পড়তে হবে, মানে… সবাই যেন ভাবে, আমরা তাদেরই লোক।‘

    লোকটির দৌড় সম্পর্কে মোরসালিনের পরিষ্কার ধারণা ছিল, তাই তাকে আর অ্যাটেনশান না দিয়ে মোরসালিন ডাইনিং রুমের দিকে পা বাড়াল। হঠাৎ চোখ পড়ে গেল একজন সৌম্য দর্শন প্রৌঢ় লোকের উপর। একটি বিল হাতে নিয়ে অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে আছেন কাউন্টারের সামনে - নিশ্চিত কোন ঝামেলা হয়েছে। মোরসালিন লোকটিকে লাইন থেকে বের করে সসন্মানে তাকে নিয়ে এল চেম্বারে, নিজ হাতে বসিয়ে দিল তার সামনের একটি চেয়ারে। একটা ক্ষুদে টেকনিক্যাল সমস্যা ছিল, লোকটির সামনেই কয়েক জায়গায় কথা বলল মোরসালিন। একসময় হাসি ফুটলো লোকটির মুখে, ‘থ্যাংক ইউ’ এর ফোয়ার ছোটাতে ছোটাতে বের হয়ে গেলেন তিনি প্রেক্ষাগৃহ থেকে।

    সপ্তাহ খানেক বাদে প্রৌঢ় লোকটিকে ফের দেখা গেল অফিসটিতে, অবশ্য কোন বিলটিল ছিল না হাতে। চেম্বারে বসে চা পানের ফাঁকে হাতের ব্যাগটি খুলে একটি সুদৃশ্য ডায়েরি ও কলম বের করে রাখলেন টেবিলের উপর। কথায় কথায় জানালেন, একটি ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান। এখানকার সার্ভিস তার এত ভাল লেগেছে যে, ট্রাস্টের সমুদয় কার্যক্রম এখান থেকেই পরিচালনার চিন্তা করছেন। মোরসালিনকে শুধোলেন, ‘কি, আমাদের সুযোগ দেবেন তো আপনাদের প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহণের?’ মোরসালিন মনে মনে বলল, ‘আমি জানতাম, জানতাম… ।‘

    পরের সপ্তাহটা অনাহুত কিছু প্রশাসনিক ঝড়-বানালে কাটলো মোরসালিনদের। এরই মাঝে একদিন চেম্বারের দরজায় তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাড়াল মোরসালিন। সামনের চেয়ারগুলো সব দখলে ছিল, এই অবস্থায় প্রৌঢ় নিজেই একটি চেয়ার বাহির থেকে টেনে বসতে গেলে, মোরসালিন আঁতকে উঠে বলল, ‘আহা করছেন কি, স্যার! লোক ডাকছি আমি।‘ একটি চেক সই করতে করতে লোকটি বললেন, ‘আমায় স্যার সম্বোধন করবেন না দয়া করে। আসলে কি জানেন, এই স্যার শব্দটাই আমাদের দেশটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।… আমাকে আলফাজ ভাই বলে ডাকলে খুশী হব। ‘

    তার চোখে-মুখে স্থির সমুদ্রের সমাহিত একটা ভাব খেলে যাচ্ছিল। নানা গল্প করলেন সেদিন। কথায় কথায় জানালেন, সময় পেলে কিঞ্চিৎ সাহিত্য চর্চা করেন। মোরসালিনও বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে কবিতা-টবিতা লিখত। সুতরাং, আলফাজ সাহেবের সাহিত্যনিষ্ঠা তাকে যেন জাগিয়ে তুললো, নিজের সাহিত্য জ্ঞানের প্রায় সবটুকু ফল্গুধারায় ছোটাতে লাগলো। ভদ্রলোক মোহিত হয়ে পড়লেন, একজন ব্যাংকার হয়ে কি করে? খুব তারিফ করলেন মোরসালিনের, আর একটি কবিতার বই উপহার দিয়ে গেলেন বিদায়বেলায়।

    এরপর এক অপরাহ্নে একটি ভিজিটের উদ্দেশ্যে বেরুতে যাচ্ছিল, এমন সময় আলফাজ সাহেবকে সিড়ি দিয়ে উঠতে দেখে মাথা ও শরীরের যৌথ প্রয়াসে খুব ন্যাচারাল একটি হাসি ফুটিয়ে তুলল মোরসালিন। তাদের একাউন্টের খুঁটিনাটি খোঁজ করার পাশাপাশি পত্রিকায় ছাপা হওয়া নিজের একটি নতুন কবিতার সংবাদ দিলেন আলফাজ সাহেব। মোরসালিন ভিজিট টাইমের সহনীয় সীমা অতিক্রম করছিল, তারপরো স্মার্ট ফোনের নির্দিষ্ট পাতায় ঢুকে প্রায় এক নিঃশ্বাসেই পড়ে ফেলে বললঃ ‘বাহ।‘ ভদ্রলোক যেন লজ্জায় কুকরে গেলেন, ‘না, তেমন কিছু হয়নি, মানুষ যেমন কমেন্ট করছে, তার সিকিভাগও হয়নি’। মোরসালিন কমেন্টবক্সে আঙ্গুল বোলাতে শুরু করেছিল ততক্ষণে …. হঠাৎ বেশ শব্দ করে জেগে উঠল ফোনটি, মেরে না ফেলে বাজতে দিল সে শব্দটাকে, কারণ পর পর একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে বাজতেই থাকবে সে, বাঁধা দিয়ে কোন লাভ হবে না।

    ‘জানেন, পৃথিবীতে দুই দল লোক আছে, এক দল কবিতা বোঝে, আর এক দল পৃথিবীর বাকি সব কিছু‘ – আলফাজ সাহেব যখন কথাটা বলছিল, মাথাটা স্বাভাবিকের থেকে অতিরিক্ত ঝাঁকিয়ে তাকে পূর্ণ সমর্থন করলো মোরসালিন, ‘হ্যা, সেই-ই। জীবনানন্দ তো বেঁচে থাকতে সমাদর পেলেন না…।‘ স্থান ও সময় জ্ঞান হারিয়ে ভদ্রলোক এবার চেচিয়ে উঠলেন প্রায়, ‘আপনি জীবনানন্দ ভালবাসেন? সে আমারও প্রিয়। এই যে আসছে শুক্রবার তাকে নিয়ে এক সম্মেলন হচ্ছে, সেখানে এই অধমকেও ডেকেছে দু চার কথা বলতে, আসবেন নাকি?‘

    তলপেটে ভীষন পাঁক দিচ্ছিল, সে অবস্থাতেই লোকটিকে সিড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে নিজেও নামতে যাচ্ছিল, এমন সময় পিয়ন আনোয়ার অপরাধী মুখে সামনে এসে দাঁড়াল, হাতে একটা কার্ড, গতকালে পৌঁছে দিতে ভুলে গিয়েছিল - একটি উরশ শরিফের দাওয়াতপত্র। আয়োজক মোরসালিনের একজন ভক্ত কাস্টমার যার মনে অনেক বড় আশা যে, তার মত একজন বুজর্গ ব্যক্তি আসছে শুক্রবার মাহফিলটিকে যথাযথ খেদমত করবে।

    কেমন যেন শূণ্য শূণ্য লাগছিল। সেদিন বাসা থেকে মাইল দেড়েক আগেই নেমে গেল গাড়ি থেকে। খুব যত্ন করে একটা সিগারেট ধরানোর ইচ্ছে কাছের দোকান থেকে…এরপর হাঁটতে শুরু করবে অপেক্ষাকৃত নিরিবিলি ফুটপাত দিয়ে… ভেবেছিল, অনেকক্ষন ধরেই ঝিনঝিন করতে থাকা মাথাটা হালকা হবে। দেশলাইটা জ্বালতে গিয়ে দেখলো কয়েক ফুট দূরত্বেই দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি বোরকা পরা মেয়ে, সাথে কেউ নেই। মোরসালিন ভাল করে বুঝে নিতে চাইছিল বলেই যেন মেয়েটি তার নেকাবটা উল্টিয়ে রাখলো কয়েকটা মুহূর্ত। তারপর যা ভেবেছিল, সে হাঁটা শুরু করতেই তার পেছন পেছন নিরাপদ দূরত্ব রেখে অনেকটা পথ গেঁথে রইল মেয়েটি।

    বাড়িতে ঢোকার পরে আরও ধরেছে মাথাটা, শিরাউপশিরাগুলো রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত। খাওয়া দাওয়া সারার পর বিছানায় শুয়ে নিজেই নিজের কপাল টিপছিল। হঠাৎ মা কি একটি কাগজ হাতে নিয়ে চেয়ার টেনে সামনে বসলেন। মোরসালিন উঠল না, জানে, ওখানে একটা সিভি আছে, আর তাতে পিনাপ করা একটি সুন্দরী মেয়ের ফটো আছে। অন্যদিন হলে আড়চোখে ফটোটির দিকে তাকাতো হয়ত, আজ সোজা সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে রইল। মা একটু ঘাবড়ে গেলেও সামলে নিলেন সঙ্গে সঙ্গে, ‘আগামি শুক্রবার তোর খালার বাসায় …মেয়ের ভাবি মেয়েকে নিয়ে ….,’ থামিয়ে দেয় মোরসালিন, ‘কোনভাবেই সম্ভব না, আমার ইম্পর্টেন্ট মিটিং আছে, কাস্টমারের সাথে।‘

    মা অস্থির হয়ে উঠেন, ‘খুব ভাল একটি সম্বন্ধ রে। গায়ের রং খুব পরিষ্কার, আর চেহারাও মাশাল্লাহ্‌! অনার্স ফাইনাল …’, হেসে উঠে মোরসালিন, ‘তার মানে আমার চেয়ে দশ বছরের ছোট, কেন পছন্দ করবে আমাকে?’ মা রেগে উঠেন, ‘ওর পছন্দের চিন্তা করতে হবে না। তোর পছন্দ হয় কিনা বল! তোর মত ছেলে কয়টা আছে? কয়জনের আছে এমন বাড়ি, গাড়ি আর মোটা বেতন?’

    দু দুটো প্যারাসিটামল খেয়ে নিয়েছিল। তাই একটু একটু করে ব্যথাটা চাপা পড়ছিল। কিছুটা রিলাক্স হতে মোরসালিন ঘরময় পায়চারি শুরু করল। এক পর্যায়ে জানালার পাশে গিয়ে দাড়ালো। রাত তখন এগারোটা। তবু মানুষের হাঁকডাক শোনা যাচ্ছিল। তাদের বাসাটার নীচেই একটি বড় বাজার… এমন কোন জিনিস নেই পাওয়া যায় না এখানে। রকমারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে রেখেছে বণিকেরা। ক্রেতার দল হামলে পড়েছে সেখানে। এই রাত-দুপুরেও বাজার সরগরম। বাজারটার কী এক অদৃশ্য টান ছিল যে মোরসালিন তন্ময় হয়ে তাকিয়ে রইল আর একটু একটু করে বিলীন হতে লাগল ! 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ১৭ অক্টোবর ২০২৫ | ২২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    লাল রঙ - Nirmalya Nag
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন