১০
'কোলকাতা থেকে সায়গন কদ্দূর?’
সকালের দিকে একটু ঘুম এল। ব্যথাও কমে গেছে। এমন সময় আমার বিছানার কাছে এসে দাঁড়ালেন একজন, সাদা পোষাক। ডাক্তার এই অসময়ে কেন?
ডাক্তার, আমাকে একটু ঘুমোতে দিন। ওসব আগড়ম বাগড়ম -- বডি টেম্পারেচার, প্রেসার, ইউরিন, প্লেটলেট কাউন্ট -- সব আমার ফাইলে আছে।
নিন, সিস্টারের সঙ্গে কথা বলে সব জেনে নিন। আমাকে ঘাঁটাবেন না। কোন স্তোকবাক্য শোনাবেন না।
সেদিন বেরিয়ে যেতে যেতে নীচুগলায় আপনি জুনিয়রকে বলছিলেন -- কিছু করার নেই, এক টন ক্যানসার নিয়ে এসেছে, স্টেজ ফোর, যে কদিন চলে।
আমি চোখ বুঁজে ছিলাম। ঘুমুইনি, শুনে ফেলেছিলাম। তা হলে আর ন্যাকামি কেন? বরং আমার মরফিনের ডোজটা বাড়িয়ে দিন।
আর সুন্দরী নার্সের সঙ্গে ফস্টিনষ্টি করুন। আমি কিছু মনে করব না।
কী বললেন? আপনি এরকম করতে পারেন না। কেন পারেন না? ডাক্তার বলে কি আপনি পুরুষ নন?
নারীর কাছে এলে আপনার চিত্তহারা, বক্ষে নাচে রক্তধারা হয় না? ফালতু ঢপ দেবেন না।
হরি হরি! আপনি নারী। সরি সরি!
কিছু মনে করবেন না, আপনার ওই বয়কাট চুল দেখে ভুল বুঝেছিলাম। আপনি নতুন এসেছেন? ইন্টার্ন?
কিন্তু আপনার বয়্স তো অত কম নয়! এমবিবিএস করতে প্রত্যেক ইয়ারে দু-দু অ্যাটেম্প্ট ?
বেশ, চেয়ারে বসুন, কেস হিস্ট্রি পড়ুন, আমাকে জ্বালাবেন না।
একী, গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন? তার কোন দরকার নেই।
না, আমার জ্বর টর আসে নি। জ্বর আসলে মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিত। কী বললেন?
আপনিও একজন মা! তা হতেই পারেন। তাতে আমার কী! ও হো! আপনি পন্ডিচেরি থেকে এসেছেন?
শ্রীমা ? মানে ওই যে ফটোটা চিত্রা আমার বালিশের নীচে রেখে গেছে।
প্লীজ, আপনি পন্ডিচেরি ফিরে যান, নইলে আমার বালিশের নীচে ফ্রেমের ভেতরে ঢুকে যান।
কিন্তু-- কিন্তু আমার সত্যি বড় ঘুম পাচ্ছে, আর ব্যথাও হটাৎ কমে গেছে।
মা, আমার সারা গায়ে হাত বুলিয়ে দিন, ঘুম পাড়িয়ে দিন। একটু আরাম করে ঘুমুতে চাই।
সকালে টানা ঘুমোতে পারলে বেশ ভালো লাগে। কিন্তু জেগে উঠলে একটা আতংক চেপে ধরে---রাত্তিরে দু'চোখের পাতা এক করা যাবে না।
মানে, ওষুধ খেয়ে অনেক সাধ্যসাধনা করে শেষে আসলেও আসতে পারে, তবে কোন গ্যারান্টি নেই।
আর এক একটা রাত কাটানো-- দুঃসহ। যেমন আজকের রাতটা।
দুঃসহ? কোথায় যেন প্রথম শুনেছিলাম শব্দটা? না, না শুনি নি। কেউ অমন সব শব্দ সাজিয়ে কথা বলে না।
তবে? হ্যাঁ, পড়েছিলাম।
সম্ভবতঃ রবি ঠাকুর। কী যেন?
হ্যাঁ, 'কী যন্ত্রণায় মরেছে পাথরে দুঃসহ মাথা কুটে!"
আরে, সুকান্তর প্রথম লাইনটাই তো---
আঠের বছর বয়স কী দুঃসহ!
স্পর্দ্ধায় নেয় মাথা তুলবার ঝুঁকি।
এই স্পর্ধা কী জিনিস আমি জানি না। তবে 'আস্পর্দা' কী আমি জানি। আমার ছিল।
আঠের নয়, ষোল বছর বয়সেই।
নাকতলা স্কুলে পড়ার সময় অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার সোমনাথবাবুর হাতের থেকে বেত কেড়ে নিয়ে ক্লাসরুমের জানলা গলিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলাম।
-- এই যে ! এসে গেছ শ্রীমান! কাদের বাড়ির দুধের কেঁড়ে থেকে চুরি করে খেয়ে এসেছ?
-- সবসময় চোর চোর করবে না তো! ক্ষিদের সময় কারো বাড়তি খাবার খেয়ে নিলে তাকে চুরি করা বলে না।
আমার বাবা রোজ দুধটুকু চাই, বলে দিলাম হ্যাঁ।
--- তুমি কী আফিংখোর না গুলিখোর? নাকি রোজ ভাঙ সেবন করিয়া থাক! নইলে রোজ রোজ দুধ চাই কেন?
কমলাকান্ত না হয় আফিং খেত।
-- কমলাকান্ত কে?
-- এমন উদগান্ডু লোকের সঙ্গে আড্ডা জমে না। সব সেন্টেন্সে একটা করে ফুটনোট?
কোন কমলাকান্ত? আরে বংকিমের কমলাকান্ত! এই বাংলাবাজারে ক'টা কমলাকান্ত আছে?
--- সারাক্ষণ সবজান্তা ভাব আর রাগারাগি! একটু শান্ত হলে খেয়াল করতে যে আরের জন কমলাকান্ত আছেন--সাধক কমলাকান্ত।
যাঁর শ্যামাসঙ্গীত রামপ্রসাদের পাশেই ঠাঁই পায়।
ধর, ' মজলো আমার মনভ্রমরা, শ্যামাপদ হৃৎকমলে,
যত বিষয়মধু তুচ্ছ হল কামাদিকুসুম সকলে।'
--- হয়েছে হয়েছে, বেশি ফান্ডা ঝাড়তে হবে না। মুখ বন্ধ রাখ।
-- বেশ, তবে তুমি তোমার সেই স্যারের হাতের বেত কেড়ে নেওয়ার গল্পটা শেষ কর।
-- ও এমন কিছু না। এখন সব ছেলেমানুষি মনে হয়। সোমনাথবাবু সেকেলে টিচার। ইংরেজি পড়াতেন।
ওনার পড়ানো মানে একটা পুরনো নেসফিল্ড থেকে যত্সব কূটকচালি কোশ্চেন এনে আমাদের লিখতে দিয়ে চলে যাওয়া।
মানছি, উনি স্কুল -অন্ত প্রাণ ছিলেন। ঘুরে ঘুরে দেখতেন কোন ক্লাসে টিচার নেই, সেখানে কিছু টাস্ক দিয়ে সবাইকে এনগেজ করে অন্য আরেকটা ক্লাসে যেতেন।
শেষে ঘ্ন্টা পড়ার পাঁচমিনিট আগে এসে ক্লাসের ফার্স্টবয়কে দাঁড় করিয়ে ওর উত্তরগুলো জোরে জোরে শোনাতে বলতেন।
ভুল হলে ওর খাতায় কারেকশন করে দিয়ে ওকেই বলতেন বোর্ডে লিখে দিতে আর বাকি সবাইকে বলতেন --এবার টুকে নাও।
--- খুব সিরিয়াস আর পরিশ্রমী স্যার পেয়েছিলে বল!
-- ওসব ঠিক আছে, কিন্তু ওঁর থেকে ইংরেজি ভাষাটা কিছুই শিখিনি।
-- তা হয় না। কিছু তো শিখে থাকবে, সেগুলোই শোনাও।
-- উফ্! শোন তা'লে। কগনেট অবজেক্ট, কজিটিভ ভার্ব। জিরান্ড, প্রেসেন্ট পার্টিসিপল ও ভার্বাল নাউন।
নাউন ইকুইভ্যালেন্ট, অ্যাডজেক্টিভ ইকুইভ্যালেন্ট, কোয়াসি-প্যাসিভ ভার্ব।
--- বস করো রামদাস! পাগল হয়ে যাবো! কিন্তু গল্পটা?
-- হ্যাঁ, লাস্ট বেঞ্চে বসে জানলা দিয়ে নীচের জামগাছের ডালে দুটো শালিকপাখির ফস্টিনস্টি দেখছিলাম।
চোখে পড়ল গাছটার নীচে রামাবতার পুলিশের বউ আরো দুজন মহিলার সঙ্গে হাত লাগিয়ে একটা ছাগলের পেট থেকে বাচ্চা টেনে বের করছে। পা বেরিয়েছে।
এমন বায়োলজির প্র্যাকটিক্যাল ছাড়া যায়? ঠিকমত শিখলে গাঁয়ের দিকে ভেটারিনারি ডাক্তার নয় তো অ্যাসিস্ট্যান্ট হওয়া আটকায় কে!
তো স্যারের চোখ গেল আমাদের দিকে। ওখানে কি হচ্ছে?
আমরা যত বলি কিস্যু না, আপনি পড়ান আমরা শুনছি,---উনি মানবেন না।
শেষে উনি গোটা কামরা পেরিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে জানলা দিয়ে ওই স্বর্গীয় দৃশ্যটি দেখলেন।
ঝাড়া একমিনিট। তারপর আমাকে পেটাতে শুরু করলেন।
আমার যে কী হয়েছিল? হটাৎ দেখলাম যে আমি স্যারের হাত থেকে বেত কেড়ে নিয়ে হাঁটুতে ঠেকিয়ে মট্ করে ভেঙে জানলা দিয়ে ফেলে দিয়েছি।
গোটা ক্লাস একেবারে --সভা হল নিস্তব্ধ।
এই আচমকা হামলায় ওঁর মুখে কথা ফুটছিল না। একবার হাঁ করছিলেন , ফের বন্ধ।
আমি দেখলাম আধখ্যাঁচড়া কাজ করলে কেস খেয়ে যাব। সঙ্গে সঙ্গে মর্যাল স্ট্যান্ড নিলাম।
-- আমরা কোন গরুছাগল না স্যার যে আমাদের পেছনে পাচনের বাড়ি লাগাবেন।
যা বলার মুখে বলুন। আপনাদের দিন শেষ, পুরনো কারবার চলবে না।
এটাই ছিল স্কুলে আমার প্রথম অ্যাকশন। গত মাসে স্কুলে স্টুডেন্ট ইউনিট ফর্ম হয়েছিল, নক্শালপন্থী। আমি সেক্রেটারি।
আমরা এগারো জন। চারু মজুমদার জানলে নিশ্চয়ই গর্বিত হতেন।
-- আহা হা হা! গর্বিত হতেন! প্রথম অ্যাকশন? আর পরের গুলো?
-- মানে? পরের তো কোন শেষ নেই। পরের পরে, পরের পরে-- কোথায় থামবো?
-- উট চলেছে মুখটি তুলে,
দীর্ঘ-ঊ টি আছে ঝুলে!
ন্যাকাষষ্ঠী!
-- ফোট শালা! অনেকক্ষণ ধরে জ্বালিয়েছিস। ওষুধের টেবিলের ওপর ওই পেপারওয়েটটা দেখছিস? যদি মাথায় লাগে না--; আমার টিপ সহজে ফসকায় না।
--- তো সেই টিপের কথাই হোক, বা প্রথম বোমা বানানো। প্রথম প্রেমে পরা, প্রথম কাউকে ঠ্যাঙানো। যেখান থেকে খুশি। একটা আসলেই আর একটা আসবে।
আর পেপারওয়েট ছুঁড়ে মারার হুমকি চলবে না। ডান হাতটাই তো ছুঁচ বিঁধিয়ে বিঁধিয়ে গ্লুকোজ-ব্লাড-কেমো দিয়ে দিয়ে অসাড় হয়ে গেছে।
হ্যাঁ, প্রথম ভালো করে বানিয়েছিলাম সমর বলে ছেলেটাকে। আজকালের ঘটনা হলে বলতাম--কেলিয়েছিলাম।
আমাদের সময়ে ওটাকে ক্যালানো না বলে বানানো বলা হত।
হল কি, আমরা নাকতলা স্কুলে একটা দেয়াল পত্রিকা বার করেছিলাম। তাতে আমার বন্ধু শুভ একটা ছোট্ট কবিতা লিখেছিল। ওই সম্পাদক।
'কোলকাতা থেকে সায়গন কদ্দূর?
পার হয়ে কোন রক্ত-সমুদ্দুর
পৌঁছনো যাবে প্লেইমে'র জঙ্গলে?
সেখানে মাটিতে শুনেছি যে সোনা ফলে,
কেননা জমিন ঊর্বর বহু দস্যুর কংকালে।
বল কতবার রক্ত ঝরালে গঙ্গার ঘোলা জল,
হবে মেকংয়ের মত উদ্দাম দুর্বার উজ্বল?
সেই দর্পণে প্রভাত সূর্য দেখবে তাহার মুখ,
যদিও আজ তা মনে হয় কৌতুক।'
স্যারেরা প্রশংসা করলেন। আমরা বার খেয়ে গেলাম।
আরে, সালটা হল ১৯৬৯। হ্যানয়, হাইফং এ মুড়িমুড়কির মত বোমা পড়ছে, নাপামে বাতাসে আগুন ধরে যাচ্ছে।
বার্ট্রান্ড রাসেল মার্কিন সরকারের যুদ্ধ অপরাধ নিয়ে আন্তর্জাতিক ওয়ার ট্রাইবুনাল বসিয়েছেন।
আমরা ভিয়েতনাম থেকে আসা কিছু অ্যালবাম ও সাংবাদিক উইলফ্রেড বার্চেটের লেখা থেকে দেখছি মেরিন সেনারা যুবতীর স্তন কেটে নিয়েছে।
সে ছিল স্ট্রিট ফাইটিং ডেজ।
-- হয়েছে, হয়েছে। তুমি একটু লড়াই ক্ষ্যাপা আছ। ওসব ছেড়ে কাজের কথায় এস।
- আমাদের ঐ ম্যাগাজিনের দ্বিতীয় সংখ্যায় একটা প্রবন্ধ বেরোল-- "খাদ্যসমস্যা ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ"। লিখেছে ক্লাস টেনের সমর বলে একটি ছেলে।
লেখাটা কিছু ডেটা ও কুযুক্তি দিয়ে ভারত সরকারের পরিবার পরিকল্পনার প্রচার ছাড়া কিছু মনে হল না। আমার মাথায় আগুন ধরে গেল।
প্রথমে শুভর মা-মাসি করলাম-- কেন ও আমাকে না জানিয়ে এই প্রতিক্রিয়াশীল লেখাটি ছেপেছে?
শুভ তো তো করে বলল-- লেখাটা বেশ ইয়ে, মানে ঝরঝরে।
--- শালা! তোর ইয়ে ঝরঝরে করে দেব। এটা একটা থার্ডক্লাস লেখা। ছেলেটাকে চিনি।
বড়লোকের বখা ছেলে, বন্ধুদের পকেট মানির পয়সায় সিনেমা দেখিয়ে ফোতো কাপ্তেন হয়েছে।
একদিকে আমাদের সরকার আমেরিকার ইশারায় পানের দোকানে নিরোধ বিক্রি শুরু করেছে,
দশ পয়সায় দুটো! এসব যুবশক্তিকে বিপ্লবের রাস্তা থেকে সরিয়ে এনে শস্তা যৌনতার কানাগলিতে ঠেলে দেওয়া।
কোথায় আমাদের পত্রিকা এই কনস্পিরেসিকে একস্পোজ করবে , তা না --।
ওই ছেলেটাকে ডাক।
--শোন, তার দরকার নেই। তুই ওর যুক্তিকে কাউন্টার করে একটা লেখা দে। পরের সংখ্যায় যাবে। ডিবেট জমে যাবে।
-- শালা, আর তুমি একজন আঁতেল সম্পাদক হবে? ওকে ডাক। এদিকে ডেবরা-গোপীবল্লভপুরে রেড জোন তৈরি হয়েছে।
অসীম-সন্তোষ-মিহির -লেবাচাঁদ টুডু, অমূল্য কালাপাহাড় এরা নতুন ইতিহাস তৈরি করছে। আর আমি এখন একটা ইয়ের সঙ্গে ডিবেট মারাবো?
ওকে ডাকতে বলছি না?
ছেলেটা বেশ অহংকারী। স্কুলছুটির পরে খেলার মাঠের বাইরে ওকে ধরলাম। বললাম যে ওরই উচিত এর খন্ডন করে প্রবন্ধ লেখা।
বোঝালাম খাদ্যসমস্যার কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি নয়, ভিলেন হল মজুতদারের দল, যারা কালোটাকার জোরে হোর্ড করে রাখে।
যুক্তি দিয়ে বললাম--মানুষ শুধু পেট নয়, দুটো হাত আর একটা মাথা নিয়ে জন্মায়।
উদাহরণ দিলাম যে দেবেন ঠাকুর ফ্যামিলি প্ল্যানিং করলে আমরা রবি ঠাকুরকে পেতাম না।
এগুলো আসলে মূল কারণ শ্রেণীশোষণকে আড়াল করা।
মার্ক্স বা কমরেড মাও-- কেউই ফ্যামিলি প্ল্যানিং করেন নি।
কাজেই তুমি তোমার কম পড়াশোনা ও অল্পবুদ্ধির ফল ওই প্রবন্ধের পালটা প্রবন্ধ লিখে ফেল, আমরা আগামী সংখ্যায় ছাপতে চাই।
ছেলেটা এতক্ষণ একটা কথাও বলেনি। একাগ্র হয়ে আমার কথা শুনছিল। আমার ভাল লাগছিল।
চশমার ভেতর দিয়ে তাকিয়ে থাকা একজোড়া বুদ্ধিদীপ্ত চোখ। নাঃ, ছেলেটা খারাপ নয়।
আমি থামলে ও কিছু না বলে চশমা খুলে কাঁচ পরিষ্কার করতে লাগল।
শুভ বলল,-- কী? রাজি তো? তাহলে শনিবারের মধ্যেই লেখাটা দিয়ে দাও। আমাদের সামনে প্রি--টেস্ট।
-- আমি লিখতে পারব না।
ওর সাহস দেখে আমরা অবাক।
-- কেন?
-- কারণ আমি আপনার সঙ্গে একমত নই।
-- যেমন?
--- যেমন মার্ক্সের সময় নিরোধ ছিল না, থাকলে উনি নিশ্চয় ব্যবহার করতেন, অন্ততঃ নিজের স্ত্রী জেনির স্বাস্থ্যের কথা ভেবে।
আর চৌ এন-লাইয়ের সরকার চিনে সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি হলে সরকারি কর্মচারিদের ইনক্রিমেন্ট প্রমোশন বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারত সরকার তো তবু "দো ইয়া তিন" বলেছে।
এত মিথ্যে কথা সহ্য হয়? তাও নির্লজ্জের মত জোর গলায়?
ছেলেটা প্রথমে অবাক হল, তারপর গোঙাতে লাগল।
আমাকে স্কুল সাতদিনের জন্যে ক্লাসে আসতে বারণ করল। আর আমাদের দেয়াল পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেল।
রুটি বানাতে হলে
--বেশ, দুটো হল; আর বাকি দুটো?
-- কোন দুটো?
--- মানে ওই প্রথম বোম বাঁধা আর প্রেমে পড়া? তার রোমাঞ্চ?
-- উঃ; বড্ড নাছোড়বান্দা তো! ভাগ শালা। লেজ তুলে জানলা দিয়ে পালানোর আগে একটু স্নিগ্ধা সিস্টারকে ডেকে দে! গলা শুকিয়ে গেছে। ও এসে একটু রাইল টিউবে গ্লুকোজ মেশানো জল ঢেলে দেবে।
-- আচ্ছা! আমি সিস্টারকে ডেকে দেব? মাথাটা একেবারে গেছে মনে হচ্ছে! বেড়াল কী করে সিস্টারকে ডাকবে? মানে কোন ভাষায়?
-- কোন ভাষায়? ম্যাও ম্যাও ভাষায়! যত্তসব। জানলায় উঠে একটু ফ্যাঁস ফোঁস করে ডাক, দেখবি ও ব্যস্ত হয়ে আসবে।
তোকে দেখতে পাবে না ঠিকই, কিন্তু আওয়াজ শুনতে পাবে। তাতেই কাজ হবে। এবার যা!
--যাব না।
-- মানে?
-- মানে আবার কী? যাব না, ব্যস্।
-- কেন?
-- কেন আবার কী, আমি কি তোমার হুকুমের গোলাম নাকি! আগে ওই গল্প দুটো বল, তবে যাব।
--- আচ্ছা খানকির ছেলে তো তুই! শালা, এদিকে আমার গলা শুকুচ্ছে ওদিকে ওনাকে গপ্পো শোনাতে হবে!
তোর ঘটে কি কিছুই নেই? আগে সিস্টারকে ডেকে আমার গলা ভেজানোর বন্দোবস্ত কর, তবে তো গপ্পো শুনবি।
-- তাই বল। এর জন্যে সিস্টারকে আসতে হবে কেন? ওই রাইল টিউবে গ্লুকোজ জল ঢেলে দেওয়ার কাজটা আমিই করে দিচ্ছি।
তুমি গপ্পোগুলো মনে করতে থাক।
-- তুই! তুই জল ঢেলে দিবি? টিউবে? কী করে?
--সায়েন্স এখন অনেক এগিয়ে গিয়েছে। সবই সম্ভব। নিজেই দেখে নাও। করে দিচ্ছি।
--আঃ, যেন জান মেঁ জান আয়ী! তুই কেরে ? হিন্দি সিনেমার ইচ্ছাধারী নাগিনের মত মায়াবী মার্জার?
যখন জল খাওয়াচ্ছিলি তখন তোর গায়ের গন্ধ পাচ্ছিলাম। একবার যেন সিস্টারের মতন। কিন্তু যখন মুখ মুছিয়ে দিচ্ছিলি তখন যেন--?
-- তখন যেন কী?
-- না মানে একটা অনেক আগের ভুলে যাওয়া গন্ধের মতন। একটু পরে আর একটা ঝাঁঝালো তীব্র গন্ধ।
-- মনে করিয়ে দিচ্ছি-- পরেরটা হল বোমা বেঁধে ফাটানোর পর সেই বারুদ গন্ধ। আর আগেরটা --!
-- বারুদগন্ধ বুকে নিয়ে আকাশে ওঠে জ্যোৎস্না,
ময়লা হাতে ওকে যেন ছোঁস না।
ওরে মন,
পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন।"
-- কোবতে না আউড়ে বোমা বাঁধার কায়দাকানুন বল দেখি!
-- জেনে কী করবি?
-- আমিও বাঁধব।
-- কেন?
-- মাঝে মাঝে মনে হয় চারদিকে বোম মেরে সব উড়িয়ে দিই!
-- হাসতে হাসতে পড়ে যাব! কিন্তু হাত ক্ল্যাম্পের সঙ্গে বাঁধা! শালা! পারিস ও বটে! তোর মত ঢ্যামনা রুটি বানাবে?
-- কায়দাটা বলবে?
--আচ্ছা শোন তাহলে!
আচ্ছা, আগে বলতো তুই শালা কে? খোচড়? আইবির লোক? শুনে টুনে আমাকেই ফাঁসিয়ে দিবি না তো?
---- কেন এত আত্মশ্লাঘা? আজ ক্যান্সার ওয়ার্ডে শুয়ে আছ বলে নয়, অনেকদিনই কোন পুলিস টুলিস তোমার পেছনে নেই। কাজেই গল্প বল।
পুরনো দিনের গল্প। তোমার বোকামি আর একচোখোমির গল্প।
-- কেন?
--- আর কেন? আচ্ছা, আজকের মত ওই দুটোই বল। বললে পরে নিজেই বুঝতে পারবে। আর না পারলে আমি বুঝিয়ে দেব খন।
-- ও হো! বেড়ালেও পড়েছে 'ও শ্যামাদাস'!
--- কেন পড়বে না? বেড়ালে পড়াশুনো করে না? হ-য-ব-র-ল খোল, শুরুতেই পাবে-- ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল!
-- বাস্ করো রামদাস!
-- তুমিও ফালতু না বকে শুরু করো দিকি। লক্ষ্মীছেলে!
--- স্বদেশী যুগের প্রারম্ভে বোমা নির্মাণের কৃৎকৌশল এই বঙ্গভূমিতে গোপন সূত্রে পহুঁছিয়া গেল। ইহাতে বাঙ্গাল অনুশীলন দলের চেয়ে অধিক কৃতিত্ব ঘটি যুগান্তরদলের ।
--মানে? এর কোন প্রমাণ? তথ্য? রিসার্চ?
--চুপ বে! মাঝে কোন প্রশ্ন করবি না। প্রশ্নোত্তরপর্ব শুরু হবে শেষে। আরে মুরারিপুকুর বোমার মামলা, মেছুয়াবাজার বোমার মামলা সব তো যুগান্তরদলের ছড়ানোর গল্প।
অনুশীলনের বাঙালরা লাঠি-ছোরা-পিস্তলে বেশি বিশ্বাস করত।
এমনকি ভগত সিংহের দলও কোলকাতা থেকেই বোমার ফর্মূলা পেয়েছিল। আর ক্ষুদিরাম বোস?
গানটা ভাব --" কলের বোমা তৈরি করে, দাঁড়িয়ে ছিলাম লাইনের ধারে--"? সব ঘটির দল। বার খেয়ে ভুল টার্গেটে বোমা ছুঁড়েছে।
ওদিকে চাটগাঁয়ে সূর্য সেন অনন্ত সিং প্রীতিলতা কল্পনা দত্ত গণেশ ঘোষ-- সব বড় স্বপ্ন দেখতেন। তাই আর্মারি রেড।
সোজা স্টেনগান, ব্রেনগান, এলএমজি, মর্টার এইসব।
অনন্ত সিং অবশ্য স্বাধীন ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি জয়েন করেও এইসব করতেন-- তাই পার্টি থেকে হুড়ো খেয়েছিলেন। সে অন্য গল্প।
--- আচ্ছা ফ্যাসাদে পড়া গেল। বলছি প্রেসি লিখতে, লিখছ "ভাব -সম্প্রসারণ"। মহা গোলা লোক তো! দেখ, তোমার মত অবস্থায় কেউ ঢপ দেয় না।
-- শালা! তোর ইয়েতে--! আমি ঢপ দিচ্ছি?
-- রাগ কর কেন? হয় তুমি বোমা বানাতে জান, নয় জান না। এতে লজ্জার কী আছে?
তোমাদের চারু মজুমদার তো শ্রেণীঘৃণা থাকলে ছুরি-কাঁচি-দা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলতেন!
সুকান্ত বোধহয় এঁর কথা ভেবেই 'আদিম হিংস্র মানবিকতা'র কথা বলেছিলেন!
বেড়ালের মুখে সুকান্ত আর চারুদার কথা? হাত বাঁধা হলে কি হয়, পা তো খোলা। আর বেড়ালটা বেশ কাছে ঘেঁষে এসেছে।
সজোরে চালানো লাথিটা খাটের লোহার পায়ায় একটু ছুঁয়ে গেল। না, বেশি ব্যথা লাগে নি। কারণ লাথিটা--মনে মনে যেমনই ভেবে থাকি না কেন-- 'সজোরে' চলে নি।
পায়ে কোমরের পাওয়ার হাউস থেকে সেই শক্তিটা এল না।
আর বেড়ালটা জানলার তাকে উঠে গা-জ্বালানো মুচকি হাসি হাসতে লাগল। বলল-- লক্ষ্মীছেলে!
আমি ছাদের দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে বলতে শুরু করলামঃ
বোমা -- ইংরাজিতে ক্র্যাকার, বঙ্গীয় অপভাষায় মাল বা রুটি। কখনও চেহারা ও সাইজের কারণে নারকোল বা ঝুনো নারকোল।
ইহা কেরোসিন বা পাউডারে শুকনা মশলা মাখিয়া তাহাতে পাথরকুঁচি, পেরেক বা গ্রামোফোনের পিন ভরিয়া গোলা পাকাইয়া দিলীপের মুস্কিপাতি জর্দার খালি কৌটায় ভরিয়া
অবশেষে পাটের সুতলি দিয়া বাঁধিয়া তৈরি হয়। এই বাঁধা ব্যাপারটাই শিল্পীসুলভ দক্ষতার দাবি করে।
সুতলির একপ্রান্ত দাঁতে চাপিয়া বাম হস্তে মশলা ভর্তি গোলাটি কাগজে মুড়িয়া দক্ষিণ হস্তে সুতলিকে ভূগোলের গ্লোবের দ্রাঘিমাংশের লাইনের অনুরূপ ঘুরাইয়া ঘুরাইয়া টাইট করিয়া বাঁধিতে হয়। মশলাটি ভাল করিয়া না ঠাসিলে ফ্রিকশন হইয়া বিস্ফোরণের আগাম সম্ভাবনা।
তাই কেরোসিন বা পেট্রোলে ভিজাইয়া মাখিতে হয়। শুকাইলে দ্রুত বিস্ফোরণ।
বড় বড় ওস্তাদ শুখা শুখা বাঁধিতে পারেন। পেট্রোল দ্রুত উপিয়া গিয়া মালকে শুকাইয়া তোলে, তাই তাহার বড় কদর, কিন্তু শিক্ষানবীশদের জন্য কেরোসিনই শুভ।
বিস্ফোরণ হইলে উহার গর্ভে রাখা পাথরকুঁচি, পেরেক, পিন ইত্যাদি স্প্লিন্টারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হইয়া লক্ষ্যবস্তুর বা ধারণকারীর শরীরে প্রবেশ করিলে ক্ষত, রক্তপাত,অঙ্গহানি ও মৃত্যুর কারণ হইতে পারে।
বাঁধিবার পর একটি ছোট জর্দার কৌটা দড়ি জড়ানো ঝুনা নারিকেলের রূপ ধারণ করে। পূর্বেই বলিয়াছি--- আসল বাহাদুরি ও নৈপূণ্য বাঁধিবার দক্ষতায়।
উহা ঘুরাইয়া ঘুরাইয়া একই তাল ও লয়ে বাঁধিতে হয়। ঝটকা লাগিলে তৎক্ষণাৎ বিপদের সম্ভাবনা। তাই উহা যদি মধ্যলয়ে বাঁধা শুরু হয়, তো সেই লয়েতেই শেষ করিতে হইবে।
জলদ চলিবে না; দুনি বা চৌদুনের কোন সুযোগ নাই। তেহাই বা উঠানের প্রশ্নই নাই।
তবু এই পদ্ধতিটি বড় বিপজ্জনক ও স্থুল, ইহাতে সন্দেহ নাই।
শত সাবধানতা সত্ত্বেও প্রতিবছর বেশ কিছু তরুণ এইরূপ বাঁধার প্রক্রিয়ায় বোমা ফাটিয়া চোখ, হাত, পা , অন্ডকোষ ও প্রাণ হারাইয়া থাকে।
এই অনুষ্ঠানের গত অর্ধশতাব্দীর রেকর্ড একই প্রকার।
আশার কথা, বিপ্লবের জন্য নিবেদিত প্রাণ নারীদের এই নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রবেশ নিষেধ। ইহা একমাত্র মেন -ওনলি পেশা। তাই রক্ষা!
এবার আমি পাশ ফিরলাম।
কিন্তু ভবি ভোলে না।
-- এখনও মশলার কথা বললে না। আর প্রোডাক্শানের সময় কোন সেফটি মেজার ?
ওঃ, এই শালা জ্বালিয়ে খেলে! (শালা না শালী? ঠিক দেখেছি তো?)
কিন্তু একবার পা পিছলে গেলে আর থামা যায়?
--- অ্যাই! দুটো যৌনরোগের নাম বলত!
-- এ আবার কী?
--- শালা, এদিকে মা-ষষ্ঠীর বাহন হয়েছিস আর দুটো ভিডির নাম বলতে পারছিস না? তুই শালা কেমন বেড়াল?
-- বোমা বাঁধার সঙ্গে ভিডির কী সম্পর্ক?
--আছে, আছে। সম্পর্ক আছে। আগে তুই নাম বল, তারপর আমিও মশলা বলছি।
--- বড় দুটো হল সিফিলিস আর গনোরিয়া।এছাড়া আরাও কিছু ছুটকো-ছাটকা আছে, সেগুলো ধর্তব্য নয়।
--- ঠিক ,ঠিক। পাশ। তেমনি বঙ্গের বোমা বা ক্র্যাকারকুলের মুখ্যতঃ দুইটি বংশঃ লাল-সাদা আর হলুদ--সাদা।
--- আর নীল-সাদা?
-- ভাগ শালা! ফালতু পেঁয়াজি না।
দেখছিস তো, সাদাটা কমন ফ্যাক্টর-- এটা হল পটাসিয়াম ক্লোরেট। আর লাল হল আর্সেনিক সালফাইড , চালু নাম মোমছাল।
হলুদ মানে সালফার বা গন্ধক। সাদার সঙ্গে লাল বা হলুদ সমান বা ১-২ বা ১-৩ ইত্যাদি অনুপাতে সাপ্লাই ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে মেশানো হয়।
এগুলো একটাও আলাদা করে বিস্ফোরক নয়, কিন্তু দুইয়ে মিললে একেবারে রাসলীলা। সোজা বিন্দেবন দেখিয়ে দেবে।
যৌনরোগের সঙ্গে এগুলোর আর একটা মারাত্মক মিল আছে। দুটোতেই ক্ষয়ক্ষতি নিশ্চিত ; আজ নয় কাল, মৃত্যুও হতে পারে।
তবু সব জেনেও লোকে বেপাড়ায় যায়, ভাবে সাবধানে গুটি গুটি যাব। চোখ নামিয়ে বেড়িয়ে আসব। কেউ টের পাবে না।
কিস্যু হবে না। তবু টের পাওয়া যায়, ক্ষতিও হয়। দুটোতেই। সাবধান থাকলেও।
-- কী করে সাবধান?
-- বে’পাড়ায় যাইনি, কী করে জানব?
বেড়ালটা লজ্জা পেল, বলল- ধ্যেৎ!
বুঝে গেলাম যে এটি হুলো নয় মেনি!
--আমি বোম বানানোর কথা জিগ্যেস করছি।
--শোন, অনেকেই বন্ধ ক্লাবঘরে, পোড়োবাড়ি বা নির্মীয়মাণ বহুতলের ঘুপচিতে বানায়। খুব রিস্কি।
একটা ফাটলে বেঁধে রাখা অন্যগুলোও হাওয়ায় ভাইব্রেশনে ফাটতে থাকবে, একেবারে পুঁদিচ্চেরি কেস!
নাকতলা পাড়ায় বামনা বিভাস নীচের তলায় গোটা দশেক বোমা বেঁধে বসেছিল। ওর চেলা দোতলা থেকে দুটো নারকোল নিয়ে ভারা বেয়ে নীচে নামছিল।
ওভার- কনফিডেন্স! শেষরক্ষা হল না। শেষ পাদানিতে সিলিপ খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল -- বোমা ধরা হাত পেটের তলায়। ওর নাড়িভুঁড়ি আর প্রাণ একই সঙ্গে বেরিয়ে গেল।
কিন্তু নীচের তলায় ঘরে হাওয়ার তীব্র কাঁপুনিতে বেঁধে রাখা বোমাগুলো পর পর ফাটতে লাগল।
বিভাসের সাথী মরল। বিভাস বেঁচে উঠল একটা চোখ ও একটা হাত হারিয়ে।
--- আর?
-- আমরা বাঁধতাম খোলা জায়গায়, গঙ্গার পাড়ে। ফাটলেও কিছু হবে না। চাপ থাকবে না। আর সামনে থাকত গঙ্গামাটি বা বালি ভরা এয়ারব্যাগ, তখনকার ভাষায় কিটব্যাগ।
মুখ থাকবে ব্যাগের থেকে একটু পিছিয়ে আর হাত দুটো ব্যাগের সামনে।
--কেন?
--- বুঝলি না! ফাটলেও মুখচোখ, পেট বেঁচে যাবে। মানে জান বাঁচবে। বড়জোর হাতের আঙুলের ওপর দিয়ে যাবে।
আর কোন প্রশ্ন আছে, কমরেড ক্যাট?
উত্তর নেই। আমি থামার আগেই বেটি পালিয়েছে।
(চলবে)
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।