এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • চৌখাম্বার চত্বরে - ২

    সুদীপ্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ০৯ নভেম্বর ২০২৩ | ৯৪০ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ভোরবেলায় ঘুম ভাঙলো একরাশ পাখিদের কিচির-মিচির আর অলকানন্দা-মন্দাকিনীর সঙ্গমের জলোচ্ছ্বাসের শব্দ সঙ্গে নিয়ে। রুদ্রপ্রয়াগে দুই নদী-ই খরস্রোতা, মন্দাকিনী কিছুটা শীর্ণা। জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে মনে হলো, এমন ভোর রোজ কেন হয় না। অবশ্য ভালো জিনিস কম থাকাই শ্রেয়, আর ঘর থেকে দূরে থাকাই ভালো নইলে আবার ফিরে আসার উৎসাহ পাবো কেমন করে! যদিও রুদ্রপ্রয়াগ থেকে সারি যেতে লাগে ঘন্টা আড়াই মাত্র, কিন্তু আমাদের সকাল সকাল বেরিয়ে পড়তে হবে, কারণ প্রথমে আমরা যাবো চোপতা, সেখানে একটা ক্যাম্পসাইট ঠিক করে বড় ব্যাগটা রেখে আসবো তাদের কাছে, যাতে ট্রেকের সময় আর আলাদা করে পোর্টার/মালবাহক না নিতে হয়। তবে তার পরেও পিঠের ঝোলা জল, ক্যামেরা, পঞ্চো, মোটা পাফার জ্যাকেট, প্রয়োজনীয় ওষুধ, টর্চ, পাওয়ার ব্যাঙ্ক এসব নিয়ে দাঁড়িয়েছে ছ-সাত কেজির মতো। সারিতে গিয়ে যেহেতু তাড়াতাড়ি লাঞ্চ করে বেরিয়ে পড়ব দেওরিয়া তালের দিকে, তাই কেক-বিস্কিট দিয়ে হালকা প্রাতঃরাশ সেরে বেরিয়ে পড়লাম আটটার মধ্যে।
    শুরুতেই একটি রাস্তা ডানদিকে চলে যায় গৌচর হয়ে কর্ণপ্রয়াগের দিকে। তার সাথে আমাদের পথ থেকে আলাদা হয়ে চলে যায় অলকানন্দাও। বিখ্যাত শিবানন্দী চটি বা পিপল চটি পড়ে ঐ রাস্তায়, যদিও আজ আর সেসব আছে কিনা সন্দেহ। না আছে প্রবোধ সান্যালের পায়ে ফোস্কা পড়ার সে সকরুণ বর্ণনা সারা যাত্রাপথ জুড়ে, না আছে যোগী সাধুবাবা আর পায়ে হাঁটা তীর্থযাত্রীর দল, আর না আছে সে ভয়াবহ মাছির উপদ্রব।  মাছি আছে সে ঠিক, রাস্তার পাশের ধাবাগুলোতে খেতে গেলে টের পাওয়া যায়, তবে সে চাদরে আপাদমস্তক মুড়ি দেওয়ার অবস্থা নয়। এবার আমাদের পথের সঙ্গী মন্দাকিনী, যেমন নাম, তেমন রূপ! দেখে চোখ ফেরে না। রুদ্রপ্রয়াগ থেকে বেরিয়ে কিছুদূর গিয়ে তিলওয়ারা-র কাছে রাস্তা দু-ভাগে ভাগ হয়ে গেছে, মূল রাস্তা বদ্রীনাথের পথে যায়, আর একটা রাস্তা মন্দাকিনী পার হয়ে টেহরীর দিকে চলে যায়। রুদ্রপ্রয়াগের পর থেকে রাস্তার সৌন্দর্য হঠাৎ করে শতগুণ বেড়ে যায়, তাপমাত্রাও কমতে থাকে ঝপাঝপ। ধুলোবালিও কমে। এত সকালে গাড়ী কম, কারণ হরিদ্বার হোক বা গৌরীকুন্ড অথবা যোশীমঠ, কোনো দিক থেকেই গাড়ি এত তাড়াতাড়ি এই জায়গায় পৌঁছনো সম্ভব নয়। এই তিলওয়ারা থেকে অগস্ত্যমুনির দিকে এগোতে এগোতেই সামনে এলো সেই সাদা ঝলক, চৌখাম্বা! আজ সকাল থেকে আকাশ এত পরিষ্কার যে মেঘ বলে ভুল করার কোনো সু্যোগই নেই। এরপর যত এগোলাম বাঁদিকে জুড়ে বেরিয়ে এলো কেদারের গিরিশ্রেণী, খর্চাকুন্ট, সুমেরু, কেদারনাথ, কেদার ডোম। মাঝে মধ্যে ভারতেকুন্ট-ও উঁকি দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু চৌখাম্বা অদৃশ্য, তাকে ভালোভাবে পেতে হলে উঠতে হবে আরও উপরে উখীমঠ ছাড়িয়ে।
     
    তারে ধরি ধরি মনে করি... 

     
    উখীমঠের কিছু আগে থেকে রাস্তার চড়াই শুরু হল। এখান থেকে গুপ্তকাশীর রাস্তাও চলে গেল নদী পার হয়ে ওপারে। কেদারের পথ ঐদিকেই মন্দাকিনী বরাবর। এপাশ থেকে আমরা দেখলাম অপর পাশে পাহাড়ের গায়ে স্তরে স্তরে বাড়ি-ঘর নিয়ে সেজে ওঠা গুপ্তকাশী, ঠিক যেন কেউ আঠা দিয়ে খেলনা কিছু ঘরবাড়ি বসিয়ে দিয়েছে, এমন ঝুলে আছে বলে মনে হচ্ছে সেগুলো! আর পাহাড়ের গায়ে ধাপে ধাপে চাষ-বাসের উদ্যোগ। সবুজ উপত্যকা মাঝে মাঝেই বেশ কিছুটা পাহাড়ি ঢাল জুড়ে। আমরা ফেরার পথে উখীমঠ দেখবো, এখন সোজা চোপতা যেতে হবে। উখীমঠ থেকে চোপতার রাস্তার সৌন্দর্যে চোখ জুড়িয়ে যায়। অপরাজিত-এ অপুর প্রণবকে লেখা চিঠির কথা মনে পড়ে “I enter it by the Ancient way, Through the Ivory Gate and Golden”! এই পথ ঐতিহাসিক পথ, এই পথ পুরাণের-ও পথ। ইতিহাস আর পুরাণ এসে মিলে যায় যেন এই পথে। শিব মহিষের রূপ ধরে পালিয়ে বেড়ান পঞ্চকেদারের পথে, পঞ্চপান্ডব তাড়া করে ফেরেন তাঁকে ধরবেন বলে, উমাপ্রসাদ, প্রবোধকুমার, জলধর সেনরা জীবনকে নতুন করে খুঁজে বেড়ান, মানুষ দেখেন, ইতিহাসকে জানার চেষ্টা করেন, জানিয়ে দেন আমাদের। আর আমরা ফিরে ফিরে এসে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করি সেসব বারবার, মানুষ, ইতিহাস, পুরাণ আর সর্বোপরি হিমালয়ের অতুলনীয় সৌন্দর্য-সম্পদ। তীর্থযাত্রার বা ধর্মকর্মের উদ্দেশ্যে বের হইনি, কিন্তু হিমালয় নিজেই যে তীর্থ, সে স্থান-মাহাত্ম্যে আর সৌন্দর্যে প্রতি মুহূর্তে মালুম হয়। অজস্র বাঁক পথে, সব গাড়িকেই কিছুটা ধীরে চলতে হয়, রাস্তাও খুব প্রশস্ত নয়, পাইন আর দেওদার ঘিরে রেখেছে। কখনো একদিক ফাঁকা হয়, চৌখাম্বা উঁকি মারে, কেদার তো আর অদৃশ্য হওয়ার নাম-গন্ধ নেই, আবার বাঁক ঘুরে গেলে জঙ্গল। রাস্তা ছায়াময়। মন্দাকিনী-কে আমরা ছেড়ে এসেছি আগেই, এখন আর কোনো নদী নেই, অনেক উপরে চলে এসেছে রাস্তা, যেদিকে তাকাই পাহাড়ের সারি। একদিকে পুরো আকাশ জুড়ে রয়েছে মন্দানি , জহ্নুকুট , মেরু-সুমেরু, কেদারনাথ, ভারতেকুন্ট, থালায়সাগর, যোগিন, গঙ্গোত্রীর শিখরশ্রেণী, চৌখাম্বাও জেগে রয়েছে সবার শুরুতে রাজার মতো।
     
    গুপ্তকাশী - মন্দাকিনীর অপর পাশ থেকে 

     
    ধাপে ধাপে চাষের ব্যবস্থা 
     
    চৌখাম্বা , জহ্নুকুট ,মন্দানি - ডানদিক থেকে 

     
    প্রায় সাড়ে দশটায় আমরা এসে পৌঁছলাম চোপতায়। চোপতা পাহাড়ের মাথায় খানিকটা সমতল মতো একটা জায়গা, অনেকগুলো বড় বড় বুগিয়াল একসাথে রয়েছে। ঘন সবুজ ঘাসে ছাওয়া, কোথাও তাতে দেওদার আর পাইনের ছায়া। আর একপাশে উঠে গেছে তুঙ্গনাথের চড়াই। চোপতার কথায় পরে আসবো আবার। তুঙ্গনাথের প্রবেশপথ-কে ঘিরে গোটা পঁচিশ-ত্রিশ দোকান আর গুটিকয় খুব সাধারণ মাথা গোঁজার মত কয়েকটা হোটেল ছাড়া কিছু নেই। অল্প কিছু ক্যাম্পসাইট আছে। এখানে এসে শুনলাম, বে-আইনী হওয়ায় বানিয়াকুন্ডের ক্যাম্পসাইট ভেঙে দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। চোপতা আর আশেপাশের এলাকায় সরকার খুব কড়া পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে, শুনে ভালো লাগলো। তবে এসব যোশীমঠের পরিণতির জন্যেও হতে পারে, দুদিন পর ভুলে না গেলেই হল। এখানে এসে ক্যাম্পসাইটের খোঁজ করতে গিয়ে এক দোকানে আলাপ হল আনন্দ ভান্ডারী-জীর সাথে। উনি সঙ্গে সঙ্গে শুধু চোপতার ক্যাম্প নয়, এমনকি তুঙ্গনাথে রাত্রিবাসের ব্যবস্থাও করে দিলেন। যেটা লক্ষ্য করলাম এমন ভরা সিজনে এসেও আশপাশ খুব ভিড়-কবলিত নয়। ব্যাগের ব্যবস্থা মিটিয়ে হালকা হয়ে  এবার আমরা ফিরে চললাম সারির দিকে। চোপতা থেকে সারি দশ-বারো কিলোমিটারের রাস্তা।
     
     সুমেরু আর খর্চাকুন্ট 
     
    ভার্তেকুন্ট , কেদারনাথ,কেদার ডোম, সুমেরু , খর্চাকুন্ট  - বাঁদিক থেকে (চোপতা থেকে)

    সারি একটা ছোট্টো পাহাড়ি গ্রাম। কুল্যে ত্রিশ-চল্লিশটি পরিবারের বাস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। দেখলাম আমার এয়ারটেলের পরিষেবা এখানে দিব্যি চলল। একেবারে গুগল ম্যাপ ধরে সোজা এসে হাজির হয়ে গেলাম পৃথ্বী সিং নেগী-র বাড়িতে। পৃথ্বী নেগী নিজেই এগিয়ে এসে হোম-স্টের একটা ঘর খুলে দিলেন বিশ্রামের জন্যে। বাজে তখন সাড়ে এগারোটা। আমরা পবন-কে আপাততঃ পরের তিন দিনের জন্যে বিদায় জানিয়ে এলাম। ঠিক হল, সাড়ে বারোটার মধ্যে খাওয়ার পাট সেরে, দেড়টায় আমরা যাত্রা শুরু করব। পৃথ্বী আমাদের সঙ্গে পরে এসে যোগ দেবে রাস্তায়। পাহাড়ি মানুষ, এঁদের কাছে এসব এক ফার্লং রাস্তা, নস্যি! এখানে দেখলাম প্রায় সব বাড়িতেই নিজেদের ছোটো ছোটো আবাদ রয়েছে, এমনকি বাড়ির ছাদেও সব্জী ফলানো হয় বছর-ভ’র। এখানে বেশ ঠান্ডা। আমরা গ্রামের রাস্তায় ঘুরে বেড়ালাম কিছুটা। এখান থেকে তুঙ্গনাথ আর চন্দ্রশিলার পাহাড় বেশ দেখা যায়। চন্দ্রশিলার পাহাড় বেশ সাদা, তার মানে আজ-কাল বরফ পড়েছে রাত্রে। পাহাড়টার উপরের ভাগ ঠিক যেন ত্রিশূলের মত, মাঝখানের অগ্রভাগে দেখা যায় চন্দ্রশিলা। আর কিছুটা নীচে একটা পাথরের খাঁজের মত জায়গায় ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়ে তুঙ্গনাথের মন্দির। এক বাড়ির বেরিয়ে থাকা কার্নিশে নরম রোদে বসে সেসব দেখতে দেখতে সময় কাটে।
     
    ত্রিশূলের মাঝের ফলায় চন্দ্রশিলা - সারি থেকে 

     
    চন্দ্রশিলা তার ঠিক নীচেই মাঝামাঝি যে পাথরের খাঁজ,সেখানেই তুঙ্গনাথ।

     
    সারি গ্রাম - দূরে আকাশে তুঙ্গনাথ চন্দ্রশিলা 

    সাড়ে বারোটা বাজতেই খাবার তৈরী। ভাত, পাঁচমিশালী ডাল আর মিষ্টি করলার তরকারী। মিষ্টি করলা (মিঠা কেরেলা) এখানকার খুব চালু সব্জি। পটল আর করলার মাঝামাঝি দেখতে, গায়ে ছোট ছোট কাঁটা, যদিও খাওয়ার সময় মুখে লাগে না, কাঁকরোল ধরণের, কিন্তু মোটেই তেতো নয়। সঙ্গে পাঁপড়, আচার। গরম গরম সেসব পেটে চালান করে দেওয়া গেল। সবই বাড়ির সব্জী, একেবারে অর্গ্যানিক যাকে বলে, মায় ভাত পর্যন্ত। আধঘন্টা বিশ্রাম নিয়ে এবার ট্রেকিং পোলগুলো খুলে ঠিকঠাক করে নিলাম। পৃথ্বীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে ২০-২৫ মিটারের মধ্যেই এক পাশে দেওরিয়া তালের প্রবেশ দ্বার। সান্দাকফুর অভিজ্ঞতার পর আমি আর ভ্লগ দেখি না, কারণ কোনো ভ্লগেই পথের সঠিক চড়াই ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায় না। লোকে বলে ‘অমুক চড়াই, জার্মান কা লড়াই’। আমার কাছে তো যে কোনো ট্রেকের প্রথম দুই ঘন্টা চিরকাল-ই দেখি জার্মান কা লড়াই, তায় আবার এই বাঙালী কলকব্জার শরীরে। শুরুতেই দেখি একেবারে খাড়া পাথুরে ধাপ উঠতে শুরু করেছে, পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রী হবে প্রায়। তারপর যত এগোই, সে বাড়তে থাকে, উঠছি তো উঠছি। আধঘন্টা, পঁয়তাল্লিশ মিনিট মত চলার পর উপরে একটা পুরনো শিবমন্দির, একটা সিমেন্টে বাঁধানো চত্বরে  – নাগদেবতা ওঙ্কার রত্নেশ্বর মহাদেবের মন্দির। গ্রামবাসীদের মতে এই শিবলিঙ্গের উপর জল ঢাললে নাকি সাপের মত আকৃতি নিয়ে নেমে আসে। এখানে মেলা বসে জন্মাষ্টমী বা শিবরাত্রির সময়। এখান থেকে সারি গ্রামটা নীচে দেখা যায় ভারি সুন্দর। একই ফ্রেমে ধরা পড়ে দূরে তুঙ্গনাথ, চন্দ্রশিলা। মাঝরাস্তায় এক ভদ্রমহিলা-কে দেখি হাল ছেড়ে দিয়ে বসে পড়েছেন, আর ওনার স্বামী-কন্যা এগিয়ে গেছেন তালের দিকে। আজ দেখে নেমে আসার কথা, এদিকে উনি আর উঠতে পারছেন না চড়াই। আশে পাশে দু-একজন স্থানীয় মহিলা জুটে গিয়ে তাঁকে সাহস জোগাচ্ছেন। কিছুদূর চলার পর দেখি তিনি উঠে দাঁড়িয়েছেন, উঠে আসতে শুরু করেছেন ধীরে ধীরে। তীর্থযাত্রা। হিমালয়-যাত্রা। মনের থেকে সবল আর বেগবান আর কী-ই বা হতে পারে!
     
    পান্ডবদের পথে - দ্বৈতবনের প্রবেশপথ? 

     
    নীচে সেই শিবমন্দির আরও নীচে সারি গ্রাম 

     
    আরও উপর থেকে - সারি গ্রাম 

    প্রায় দু-আড়াই কিলোমিটার খাড়া চড়াই ওঠার পর যখন জিভ বেরিয়ে গেছে, রাস্তা কিছুটা সহজ হল। মানে উৎরাই বা সমতল মোটেই নয়, কিন্তু সহনশীল চড়াই, আর তা ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে।  পাথুরে রাস্তা, সান্দাকফুতে এমন রাস্তায় জুতোর সমস্যায় ভুগেছিলাম নরম সোলের দরুণ, এবার তৈরী হয়ে এসেছি, অসুবিধে হচ্ছে না একেবারেই। পথের পাশে এক পাথরে লেখা ‘দেওরিয়া তাল – ১ কিমি’ দেখে প্রাণ জুড়োলো। সারি থেকে দেওরিয়া তাল সাড়ে তিন কিলোমিটারের রাস্তা, তবে পাহাড়ি ফলক আর পাহাড়ি লোকের দূরত্ব নিয়ে বক্তব্যে আমি কান দিই না। যা বলে বা লেখা থাকে তার থেকে এক দেড় কিলোমিটার বাড়িয়ে ধরি, ওতে মনে বেশ আরাম পাওয়া যায়। ইতিমধ্যে দেখি পৃথ্বী ঘাড়ে এক বস্তা নিয়ে আমাদের পার হয়ে যায়। মনে হচ্ছে পাহাড়ের মাথায় পৌঁছে গেছি, এই বাঁক ঘুরলেই তাল দেখতে পাবো – কোথায় কি, চলতে থাকি। অবশেষে দু-চারটে ছোটো দোকানের দেখা পাই, পৃথ্বীর এখানে একটা ছোট্টো দোকান আছে, সেখানেই তাঁবুর সরঞ্জাম রাখা, রান্নার জায়গা। সেখান থেকে আরও দুশো মিটার এগিয়ে হঠাৎ দেখি জঙ্গল শেষ, আর কিছুটা সমতল পার হয়েই বিশাল হ্রদ, অর্থাৎ তাল, দেওরিয়া তাল, আমাদের প্রথম গন্তব্যের লক্ষ্যভেদ!
     
    পায়ে পায়ে 

     
    দেওরিয়া তাল - প্রথম দর্শন

    “পাঁচ দিন বা ছ’দিন পরে
    শাক রেঁধে খায় নিজের ঘরে,
    ঋণ নেই – আর নয় প্রবাসী-
    তার জীবনে সুখের হাসি।
    নিত্য নিত্য প্রাণী মরে-
    নিত্য চলে যমের ঘরে;
    বাদবাকি সব রইল যারা
    ‘মৃত্যু নেই আর’ – ভাবছে তারা;
    ইহার বেশী মহাশয়
    কি আশ্চর্য আর বা হয়?”

    ক্লাস ওয়ানে ছবির মহাভারত ছেড়ে প্রথম পড়ি শিশু সাহিত্য সংসদের শ্রীশশিভূষণ দাশগুপ্তের ছোটদের মহাভারত। হ্রদের ধারে বকরূপী ধর্মের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যুধিষ্ঠিরের ভাইদের জীবন বাঁচানোর এই অধ্যায়টি আজও বড় প্রিয়। তখনও সংস্কৃত অনেক দূরের পথ, বাংলা অনুবাদের এই অংশটা খুবই প্রিয় ছিল, আজও মনে গেঁথে আছে। কথিত আছে দেওরিয়া তাল-ই নাকি সেই সরোবর বা হ্রদ যেখানে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। তবে কি এই দেওরিয়া তালের আশে পাশের জঙ্গল-ই সেই দ্বৈতবন? যেখানে ব্রাহ্মণের হারিয়ে যাওয়া যজ্ঞের কাঠ ‘অরণি’ আর ‘মন্থ’ খুঁজতে এসেছিলেন পান্ডবরা? স্থানীয় মানুষ-জন মনে করেন এই তালের ভিতরে বাসুকী নাগের বাস। সে-কথার সত্যতা বিচার না করে এটুকু বলাই চলে হ্রদের জলে সাপের আনাগোনা যথেষ্ট, চোখের সামনেই বেশ কিছু দেখলাম। তবে ঢোঁড়া জাতীয়। মাছ-ও রয়েছে প্রচুর। আর পুরো হ্রদটাই চারিদিকের জঙ্গলের প্রতিফলনে সবুজ রঙ নিয়েছে, বাকিটুকু আকাশের নীল রঙ। দেওরিয়া তাল প্রায় আট হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত হ্রদ। পুরাণে একে ইন্দ্র সরোবরও বলা হয়ে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, এই হ্রদে বা সরোবরে দেবতারা স্নান করতে নেমে আসেন। তালের কাছে আসার আগেই একটি চেক পোস্ট গোছের ঘর, সেখানে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে প্রবেশমূল্য চুকিয়ে পর্ছি নিতে হয়, এই  পর্ছি তিন দিনের জন্যে বৈধ। আগামীকাল যে আমরা ট্রেক করে চোপতা যাবো, এই পর্ছি-ই তার প্রাণভোমরা। তবে এত দামী পর্ছির তুলনায় তালের তেমন রক্ষণাবেক্ষণ নেই। হ্রদের জল পরিষ্কার বলা যাবে না ঠিক। পাতা আর পানার সমাহার জায়গায় জায়গায়। পুরো তাল প্রায় আধ মাইল জুড়ে। আমাদের হাতে বেশ কিছুটা সময় আছে। যদিও সামনে আকাশ পুরোটাই মেঘ আর কুয়াশায় ঢাকা। মাঝে মধ্যে চাদর ছিঁড়ে কখনো চৌখাম্বা, কখনো কেদারের উঁকিঝুঁকি চলছে। তালের একেবারে ধারে সবুজ ঘাসের কার্পেটে দুজনে বসলাম চুপচাপ। পাখিদের ঘরে ফেরার সময় হয়ে আসছে। অজস্র পাখি ঝাঁক মাথার উপর, লেকের ধারে, নিজের খেয়াল-খুশীতে ঘুরছে। পর্যটক আছেন আরও ক’জন, সামান্যই। পরে আলাপ হতে জানলাম, দু’জন এসেছেন মদমহেশ্বর হয়ে,বাকি কয়েকজন বদ্রীনাথের ফিরতি পথে। পুরো তালের পাশ দিয়ে পাথুরে পথ বানানো রয়েছে, ধীরে ধীরে হেঁটে আসি, এক জায়গায় আয়তাকার ঘাট বানানো রয়েছে, এখান থেকেই নাকি দেওরিয়া তালের সেই সুবিখ্যাত প্রতিফলনের মুহূর্তরা ধরা দেয় ভোরবেলায়, যখন হ্রদের জল থাকে একেবারে স্থির, নিস্তব্ধ প্রকৃতি আর রৌদ্রোজ্জ্বল হিমালয়। পরিক্রমা শেষ করে ফিরে আসছি, দেখি সেই ভদ্রমহিলা অবশেষে উঠেছেন, অভিনন্দন জানালাম। এবার সপরিবারে নেমে যাবেন আবার নীচে। ‘মনসা’ – মন-ই তো সব, শরীর ঠিক সইয়ে নেবে। সূর্য অস্তে যাচ্ছে তখন, পশ্চিমের আকাশ মেঘমুক্ত, কিন্তু তালের সামনের দিকে তখনও মেঘ, এক-দু ফোঁটা বৃষ্টির আভাস। ঠিক এমন সময় সেই মেঘ চিরে হঠাৎ উদয় হল এক রামধনু। আমাদের ঠিক সামনে হ্রদের এক পাশ থেকে যেন কেউ সার্চলাইট ফেলছে সাতরঙের, ধীরে ধীরে তালের একপাশ থেকে অন্যপাশ অবধি পুরো চন্দ্রাকারে রামধনু উঠলো, গোধূলি আলোয় সেই মায়াবী খেলা চললো প্রায় মিনিট পনেরো। ক্যামেরাতে সেভাবে ধরতে পারলাম না। কিন্তু যে অসাধারণ দৃশ্যের সাক্ষী থাকলাম, মনের মণিকোঠায় অবিনশ্বর হয়ে রইল।
     
    একটি জ্যামিতিক চিত্র - তালের পাশ দিয়ে চক্কর কাটার সময় হঠাৎ - 

     
    পাহাড়জোড়া রামধনু - বোঝা যায় কি? 

     
    রামধনু - আর একটি প্রচেষ্টা

     
    দেওরিয়া তালের কাছ থেকে - সূর্যাস্ত

    প্রায় অন্ধকার হওয়ার আগে ফিরতে হবে, এই হ্রদ ভালুক, চিতাবাঘ, অন্যান্য জানোয়ারের জলের প্রধান জোগানদার। সুতরাং তাদের মুখোমুখি হওয়ার ঝামেলায় না গিয়ে দুজনে ফেরার পথ ধরলাম। পৃথ্বীর দোকানে ফিরে দেখি সে ততক্ষণে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে, দোকানে ছোট এক চৌকি, চেয়ার টেবিল আর অন্যপাশে একফালি ঘেরা জায়গা, উহাই শৌচালয়। এতক্ষণ বোঝা যায়নি, সূর্য পাটে নামার সঙ্গে সঙ্গে হু হু করে তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে, কনকনে হাড়-কাঁপানো ঠান্ডা। পাফার জ্যাকেট পরতেই হল। আমাদের টেন্ট লাগানো হবে দোকান থেকে একটু দূরেই। যা আলো আছে তাতেই সেসব হয়ে যাবে। কাঠের গনগনে আগুনে হাত-পা সেঁকে গল্পগুজব করে আটটার মধ্যেই রাতের খাবার সেরে নিলাম, এবার ছিল রুটি, ডাল আর আলু-চোখা। যে চুল্লীর আগুনে হাত সেঁকছিলাম তার-ই ভিতরে রুটি চিপকে দিয়ে বেশ সুন্দর রুটি বেরিয়ে এলো! একেবারে তন্দুরী স্টাইল! আর বাড়তি আলু চোখা রাখা রইল, কাল সকালে আলু পরোটা বানিয়ে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হবে পথে মধ্যাহ্নভোজের জন্যে। দুটো নিম্বুস কেনা ছিল সঙ্গে, তার একটা দুজনে শেষ করে তৈরী হলাম টেন্টের জন্যে। 
     
    রাতের আস্তানা

     
    পৃথ্বী বেশ চটপটে ছেলে - চারদিকে গজাল ফেলে টেন্ট গেঁথে দিব্যি এক গুহা বানিয়ে ফেললে। তারপর দুটো গদি ফেলে উপর দিয়ে জল-রোধী কাপড় ফেলে দিতেই তৈরী টেন্ট। দুখানা স্লিপিং ব্যাগ ঢুকিয়ে দিতে আমরাও সেঁধিয়ে গেলাম। এই প্রথম স্লিপিং ব্যাগে শোওয়া, মন্দ লাগলো না, চেন টেনে দিতেই সব ঠান্ডা উধাও, বেশ আরামের জিনিস। তবে হ্যাঁ ঘুমের মধ্যে যারা লাফালাফি করে, তাদের জন্যে এ বস্তু মোট্টেই সুবিধের নয়। টেন্ট ল্যাম্পটা নিভিয়ে যখন ঘুমিয়ে পড়ছি, তখনো দুরুদুরু বুকে ভাবছি, কালও যদি এমন মেঘ থাকে! যদি আর চৌখাম্বা কে দেখতে না পাই! যদি বৃষ্টি হয়! তারপর যুধিষ্ঠিরের সেই আশ্চর্য উত্তরগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম!
    “পঞ্চমে অহনি ষষ্ঠে বা শাকং পচতি স্বে গৃহে।
    অনৃণী চাপ্রবাসী চ স বারিচর মোদতে।।
    অহন্যহনি ভূতানি গচ্ছন্তি যমমন্দিরম্‌
    শেষাঃ স্থিরত্বমিচ্ছন্তি কিমাশ্চর্যমতঃপরম্‌।।“
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ০৯ নভেম্বর ২০২৩ | ৯৪০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীমু | 182.69.***.*** | ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ২২:০৪525843
  • "ইতিহাস আর পুরাণ এসে মিলে যায় যেন এই পথে" - সত্যিই তাই। নীল আকাশের নীচে বরফঢাকা শৃঙ্গগুলো দারুণ। yes​​ 
  • kk | 2607:fb90:ea0c:cd31:7a6a:9d53:7567:***:*** | ১০ নভেম্বর ২০২৩ ০০:৫০525863
  • সত্যিই, বরফের পাহাড়ের ছবিগুলো দুর্দান্ত। ঐ সাদা ধপধপে চূড়ার প্রথম ছবিটা দেখে চমক লেগে গেলো। তারপরে ঐ তালের ধারে সূর্যের আলোর আর্ক, ওটাও দারুণ। লেখাও ভালো লাগছে খুব। পরিষ্কার, প্রাঞ্জল।
  • Arindam Basu | ১০ নভেম্বর ২০২৩ ১১:২৯525876
  • আহা! বড় ভাল লিখেছেন। 
  • | ১০ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৫525884
  • দুর্দান্ত। 
    আহ এইগুলো কি আর পারব!  চপ্নদ্রশিলায় যাবার বড্ড শখ ছিল। আর সত্যিই  ভ্লগাররা  ক্রিটিকাল অংশগুলো বেশিরভাগ সময়ই বলে না। 
  • সুদীপ্ত | ১০ নভেম্বর ২০২৩ ২০:২৫525892
  • ধন্যবাদ দীমু!
     
    ধন্যবাদ kk! আর্ক আর রামধনু দুটোই পড়ে পাওয়া।
     
    ধন্যবাদ অরিন্দম-বাবু।
     
    দমদি, অবশ্যই পারবে, এগুলো খুব লম্বা ট্রেক তো নয়, দরকার হলে দশবারের জায়গায় কুড়িবার দাঁড়াবে, এটা কোনো 'কে আগে পৌঁছবে'র ব্যাপার নয়। এখানেও যাওয়ার আগে ওই একই রুটিন মেনেছি, হপ্তায় পাঁচদিন ত্রিশ মিনিটে তিন কিলোমিটার (ওটা শেষে ২০-২২ মিনিট করে ফেলেছিলাম), আর দু-তিন দিন ১০০ টা সিঁড়ি ওঠানামা। এটুকু করতে পারলে বাকি হয়ে যাবে। তিন থেকে চার মাসের ফসল। ওই কয়েক মাস একটা মিষ্টিও ছুঁইনি, নরকবাস বলা যায়! তো যুধিষ্ঠিরকেও স্বর্গের আগে নরক দেখতে হয়েছিল, সে ঠিক আছে। তবে চন্দ্রশিলা থেকে নামতে বেশ সমস্যা হয়েছিল, পাথরের উপর বরফ (স্লিট) থাকায়। একবার অল্প করে আছাড়ও খেয়েছি। আর হ্যাঁ প্রতিটা জায়গায়, ওঠার সময়, চড়াই, চড়াই, চড়াই, কখনো কম, কখনো বেশী, কিন্তু ওই ভ্লগারদের নাচতে নাচতে ওঠা-হাঁটা ইত্যাদি, ওসব ভিউ পাওয়ার/বাড়ানোর মন্তর, আর কিছু নয়।
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন