এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে

  • ফারাও-এর দেশে কয়েকদিন - পর্ব ৭

    সুদীপ্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে | ৩১ মার্চ ২০২৪ | ৫৪৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • আবু সিম্বেল থেকে ফিরে ঘন্টা চারেকের বিশ্রাম, মধ্যাহ্নভোজ সেরে যখন কেবিনে ফিরলাম, তখন বেশ দ্রুত ছুটে চলেছে আমাদের ক্রুজ; কখনো আমরা অন্য ক্রুজ-কে পার হয়ে যাচ্ছি, কখনো অন্য ক্রুজ আমাদের পার হয়ে যাচ্ছে। এদের সবার গন্তব্য একটাই, কোম ওম্বো। সেখানেই নোঙর ফেলা হবে আজকের মতো। কেবিনের আরামকেদারায় বসে নদীর দৃশ্য দেখছি। নদীর তীর বরাবর সবুজের ভীড়! হয় জঙ্গল, নয়ত ফসল বা ফলের ক্ষেত। অনেক আখের ক্ষেত আর আঙুরের ক্ষেত দেখলাম। সামাহ বলছিল, এখানে আখ মানুষের খুব প্রিয়, আখের রস কোনোরকম নুন-মিষ্টি-লেবু ছাড়া সরাসরি পান করেন মিশরীয়রা। মাঝে মধ্যে ছোটো ছোটো শহর পেরিয়ে যাচ্ছি, খান কয়েক বাড়ি-ঘর, প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ কখনো কখনো। ফারাও-রা নীলনদের দুই তীরে অনেক মন্দির বানিয়েছিলেন, অধিকাংশ-ই আজ ধ্বংসাবশেষে পরিণত, যে-কটি বাকি রয়ে গেছে এখনো, সেখানে আমাদের মতো পর্যটকরা ছুটে আসে দেখতে।  আমাদের ঠিক সন্ধ্যে ছটায় নীচের লবি-তে জড়ো হওয়ার কথা। দেখতে দেখতে আলো কমে এল। ঠিক সাড়ে পাঁচটায় আমাদের ক্রুজ এসে ভিড়ল কোম ওম্বো-র ঘাটে। অবশ্য ঘাট ঠিক নয়, ঘাটে এর আগেই দুটি ক্রুজ লাগানো রয়েছে, আমরা সেই সারিতে তৃতীয়। ব্যবস্থা এমন-ই, ওই দুই ক্রুজ পার হয়ে আমাদের ঘাটে গিয়ে উঠতে হবে। সময়ের দশ মিনিট আগে নীচে নেমে দেখি বাকিরাও উপস্থিত। এঁদের মধ্যে এক গুজরাটি দম্পতি ছিলেন – স্বামী হলেন ডাক্তার, বয়স প্রায় পঁচাত্তর আর তাঁর স্ত্রী – তিনি তাঁর গ্রামের সরপঞ্চ অর্থাৎ গ্রাম-প্রধান। এঁরা বেশ খেতে ভালোবাসেন এবং আমাদের দলের হাতে গোনা কিছু আমিষাশীর মধ্যে দুজন। খাওয়ার সময় আমাদের থেকে দুজনেই খবর নিতেন, আজকের কোন পদটা উপাদেয়। বয়সকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আজও ঘুরে বেড়াচ্ছেন দেশ-বিদেশ!
     
    জাহাজঘাটে উঠে সামাহ আর সুশান্ত আমাদের নিয়ে চলল ডানদিকের রাস্তা বরাবর, আধা কিলোমিটার রাস্তা পেরোলেই মন্দির। রাস্তার একপাশে নীলনদ, আর এক পাশে, নানা রকমের দোকান তাদের পশরা নিয়ে সেজে উঠছে আলোয়। প্রবেশপথের বাঁদিকে রয়েছে ‘ক্রোকোডাইল মিউজিয়াম’, আর কিছুটা উঠে গিয়ে বাঁদিকে কোম ওম্বো মন্দির। কোম ওম্বো কথার অর্থ হলো স্বর্ণস্তূপ বা সোনার ঢিপি; যখন পৌঁছলাম, সন্ধ্যে নামছে। এই মন্দিরের আরাধ্য দেবতারা হলেন দেবতা সোবেক এবং দেবতা হোরাস। হোরাসের কথা তো আগেই বলেছি, এবার সোবেকের কথা।
     
    আফ্রিকায় যে নেকড়ে নেই, সেকথা প্রথম জেনেছিলাম ‘সোনার কেল্লা’ দেখে, জটায়ুর কল্যাণে।  আর সে সিনেমা দেখার মাধ্যম তখন ছিল ‘ছুটি ছুটি’ – এই অনুষ্ঠানটি হতো সেই যুগে, যে যুগে গ্রীষ্মের ছুটি, পুজোর ছুটি চলত টানা একমাস (বয়স যে ক্রমবর্ধমান, এসব নস্ট্যালজিয়ার কথা ভেবে বুঝতে পারি আজকাল)। আর কখনো সখনো ‘রেট্রোস্পেকটিভ’ নামে টানা কয়েকটি সিনেমা দেখানোর সূত্রে, পরিচালক, নায়ক, নায়িকা এঁদের জন্ম-মৃত্যুদিন উপলক্ষ্যে। তা আফ্রিকায় নেকড়ে না থাকলেও নীলনদে কুমীরের কোনো অভাব ছিল না। এবং সেসব নাকি ছিল বেশ হিংস্র, বিশেষতঃ এই কোম ওম্বো-র আশেপাশে তাদের প্রচুর সংখ্যায় মিলত। মিশরের মানুষজন নীলনদ পারাপার করতেও ভয় পেতেন রীতিমতো। সেই ভয় আর বিপদ কাটাতে সুতরাং আবির্ভাব হলো দেবতা সোবেক-এর। সোবেক এর দেহ মানুষের হলেও মুখমন্ডল কুমীরের। হোরাসের মুখ যেমন বাজপাখির। সোবেক-এর সঙ্গে হোরাস যে কেন এক মন্দিরে যুগ্মভাবে পূজিত, সে রহস্য এখনও অধরা! ভক্তরা যেভাবে তাদের ভগবান-কে পেতে চায়; নইলে এই সোবেক ছিলেন হোরাসের কাকা সেথ-এর অনুসারী। অতএব হোরাসের পরম শত্রু। বলা হয়, সেথ যখন হোরাসের কাছে পরাজিত হলেন, তার সঙ্গীসাথীরা কুমীরের রূপ ধরে নীলনদ বেয়ে পলায়ন করেন, সোবেক তাই এই কুমীর-এর প্রতীক এবং দেবতা।  আর সোবেক-এর পুজো করলে কুমীরের হাত থেকে মুক্তি।
     
    ৩৩২ খ্রীষ্টপূর্বে এই কোম ওম্বো মন্দিরের এখনকার স্থাপত্যটি নির্মিত হলেও এখানে সোবেকের পুজো হতো আরও হাজার দুয়েক বছর আগে থেকেই। যেহেতু গ্রীক-রোমান আধিপত্যের সময়কালে মন্দির প্রতিষ্ঠা, এর শিল্পকলাতেও সেই প্রভাব স্পষ্ট। এই মন্দিরটি দুই দেবতার যুগ্ম-মন্দির, তাই পুরো মন্দিরটাই দুই ভাগে, আর সব কিছুই দুটো করে, দুটি প্রবেশদ্বার, দুটি হাইপোস্টাইল হল, দু-পাশের সমসংখ্যক থামের সারি, ঘর আর সবশেষে দুটি পাশাপাশি গর্ভগৃহ দুই দেবতার পুজোর জন্যে। যদিও শেষদিকে অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। মন্দিরের বাম পাশটি হোরাসের আর ডান পাশটি সোবেকের। প্রবেশপথের বাইরের চাতালে অনেকগুলি থাম, সবই আধ-ভাঙা, কিন্তু তার গাঁয়ের রঙিন রিলিফ-গুলো অপূর্ব। এই মন্দিরের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো প্রাচীন মিশরীয় পঞ্জিকা। অর্থাৎ বর্ষপঞ্জী বা ক্যালেন্ডার বা ঋতুর তালিকা  আর সঙ্গে প্রতি ঋতুর বিভিন্ন উৎসবের বর্ণনা যা কয়েকটি ঘরের দেওয়াল জুড়ে হায়রোগ্লিফে খোদাই করা। বছরে তিনটি ঋতু-কে ঘিরে এই ক্যালেন্ডার, প্রতিটি চার মাস করে একটি সৌরবর্ষ। এই তিন ঋতু হল আখেত (নীলনদে বন্যার ঋতু – মোটামুটি আজকের দিনে সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারী), পেরেত (শীতের ঋতু – জানুয়ারী থেকে মে) আর শেমু  (গ্রীষ্ম বা আবাদের ঋতু)। প্রতিটি ঋতুতে পরে চারটি করে মাসের আলাদা নাম দেওয়া হয়েছিল। আর মাসের ত্রিশ দিনের গণনা হতো চান্দ্রমাস অনুসারে, আকাশে চাঁদের আকৃতির ছোট-বড় হওয়ার উপর নির্ভর করে। দিনের নামকরণ-ও হতো সেইভাবেই। এই মন্দিরের আরও একটি দেওয়ালে রয়েছে প্রাচীন কিছু যন্ত্রপাতির ছবি যেগুলো নাকি শল্যচিকিৎসার জন্যে ব্যবহৃত হত। আরেকটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার, এই মন্দিরে দেবী হাথোর-কে দেখানো হয়েছে সোবেকের স্ত্রী হিসেবে আর তাঁদের সন্তান হলেন খনুম বা খনসু।  বাকি ঘরের বিভিন্ন রিলিফে হোরাস আর সোবেক-কে টলেমিক রাজত্বের বিভিন্ন ফারাওদের পুজো নিবেদনের ছবি। এঁদের মধ্যে আছেন ট্রাজান, টাইবেরিয়াস, দ্বাদশ টলেমি ডায়োনিসস, এমনকি ক্লিওপেট্রা-ও। আর গর্ভগৃহের সামনে নৈবেদ্য সাজানোর বা বলি দেওয়ার জন্যে মাটি থেকে ফুট তিনেক উঁচু একটি পাথরের টেবিল ধরণের জিনিস যার উপরিভাগ সমতল আর চ্যাটালো। সন্ধ্যে নেমে এসেছে, মন্দিরের ভিতরে-বাইরে সব আলো জ্বেলে দেওয়া হয়েছে ততক্ষণে; মন্দিরের মূল চত্বরের বাইরে বাঁদিকে রয়েছে ‘নাইলোমিটার’ – একটি লম্বা হয়ে নেমে যাওয়া কূপ, তার গা দিয়ে বৃত্তাকারে পেঁচিয়ে সর্পিলভাবে নেমে গেছে সিঁড়ির ধাপ, এটি নীলনদের জলস্তরের উচ্চতা পরিমাপ করতে ব্যবহার হতো। রয়েছে একটি ছোট্টো জলাশয় (জল নেই যদিও) যেখানে আগে কুমীরদের রাখা হতো আর পরিচর্যা করা হতো সোবেকের প্রতীক হিসেবে, এমনকি তাদের মৃত্যুর পর মমি বানিয়ে সমাধি দেওয়া হতো যথাযোগ্য মর্যাদায়। হাথোরের একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ-ও রয়েছে। মন্দির দেখে নেমে আসার পথে আমরা গেলাম ‘ক্রোকোডাইল মিউজিয়াম’-এ। সেখানে রাখা রয়েছে মন্দির থেকে পাওয়া অজস্র কুমীরের মমি। সঙ্গে সোবেকের মন্দির থেকে উদ্ধার হওয়া কিছু লিপি ও অন্যান্য দ্রষ্টব্য। দেখে শুনে বেরিয়ে এসে দেখি রাত প্রায় সাড়ে আটটা। ধীরে-সুস্থে এগিয়ে চললাম জাহাজঘাটের দিকে। নৈশাহারের পর আজ নিজেদের মধ্যে কিছু নাচ-গানের অনুষ্ঠান হলো লবির পিছনের ছোটো পানশালায়। আসলে এটি ছিল গালাবেয়া ড্যান্স, কিন্তু হলিউড, বলিউড, মধ্যপ্রাচ্য মিলিয়ে জমে উঠলো পরিবেশ। আমাদের সঙ্গে আর-ও একটি মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটক দল যোগ দিল। রাত এগারোটা নাগাদ কেবিনে ফেরার আগে সামাহ আমাদের জানিয়ে দিল, আগামীকাল সকাল সাড়ে পাঁচটায় আমরা যাবো এডফু মন্দির দেখতে। 
     
    কোম ওম্বো মন্দির 
     
    মন্দিরের একটি স্তম্ভের অবশেষ 

     
    ফারাও-এর রাজ্যাভিষেক করছেন হোরাস,সোবেক আর থথ


    হাইপোস্টাইল হল ও তার কিছু স্তম্ভ 

     
    হোরাস ও সোবেক 

     
    ক্যালেন্ডার ও উৎসব তালিকা 

     
    মিশরীয় পঞ্জিকা - বর্ষপঞ্জী ও উৎসব তালিকা - আর একটি ছবি 

    নাইলোমিটার 

     

     
    মিউজিয়ামে কুমীরের মমি 

     
    আরও কিছু কুমীরের মমি

    আমাদের ক্রুজ কোম ওম্বো ছেড়ে এগিয়ে চলেছে এডফু-র দিকে, ঘন্টা তিনেক চলবে আজ রাতে। কেবিনের ঘর থেকে খুব মনোযোগ না দিলে বা বাইরে না তাকালে ক্রুজের নড়াচড়া বোঝা প্রায় অসম্ভব। এডফু মন্দিরে পরদিন সকালে পৌঁছে আমরা বুঝলাম কেন এত তাড়াতাড়ি আমাদের আনা হয়েছে। এডফু মন্দির খোলে সকাল ছটায়। যেহেতু আমাদের ক্রুজ ছাড়বে ঠিক সাড়ে আটটায়, তাই মন্দির দেখে নিয়ে তার মধ্যেই ফিরে যেতে হবে। আমাদের দলটি ছিল প্রবেশপথের একেবারে সামনে। এরপর যতই সময় যায়, পিছনে দেখি তিল ধারণের স্থান নেই, এত পর্যটকের ভিড়। কারণ কোম ওম্বো বন্দরে নোঙর করা সবকটি ক্রুজ থেকেই তাঁরা চলে এসেছেন। ঠিক সকাল ছটায় নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে সামাহ-র নেতৃত্বে আমরা ঢুকে পড়লাম এডফু মন্দির চত্বরে।
     
    এডফু-র এই মন্দিরের আরাধ্য দেবতা হলেন হোরাস। এই মন্দির নির্মাণের সময়কাল ২৩৭ খ্রীষ্টপূর্ব হলেও এখানেও স্থাপত্য শুরু হয়েছিল আরও হাজার দেড়-দুই বছর আগে। নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে বেশ কিছুটা এগোনোর পর মন্দিরের মূল তোরণ। সামাহ ভিড় এড়ানোর জন্যে আমাদের সরাসরি নিয়ে গিয়েছিল একেবারে শেষপ্রান্তে মন্দিরের স্যাঙ্কচুয়ারি বা গর্ভগৃহে, সেখান থেকে দেখতে দেখতে  ক্রমশঃ বাইরের দিকে ফিরে আসা। আমি বর্ণনাটুকু সেভাবে না রেখে শুরুর দিক থেকেই বলি। তোরণের উচ্চতা প্রায় ৩৬ মিটার। প্রবেশপথের দুদিকের এই দৈত্যাকার তোরণগুলির ভিতরে ছিল চার তল পর্যন্ত বিভিন্ন ঘর আর প্রকোষ্ঠ, সিঁড়ি দিয়ে সেগুলিতে ওঠা যেত, এমনকি তোরণের ছাদেও,  যদিও এখন সেসব অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে গেছে। দুই তোরণের দেওয়ালের রিলিফে যথারীতি ফারাও শাস্তি দিচ্ছেন তাঁর শত্রুদের আর হাথোর আর হোরাস আশীর্বাদ করছেন।
     
    এডফু মন্দিরের দুটি উৎসব ছিল খুবই জনপ্রিয়। একটি হলো দেবতা হোরাসের ‘The Festival of the Living Falcon’ অর্থাৎ জীবিত বাজপাখির উৎসব আর এই জীবিত বাজ হলেন হোরাস। হোরাসের মূর্তি গর্ভগৃহ থেকে নিয়ে যাওয়া হতো কাছেই অপর একটি মন্দিরে যেখানে বেশ কিছু বাজপাখি পোষা হতো, সোবেকের কুমীর বা এপিস বুলের মতোই। হোরাসকে সেই মন্দিরে নিয়ে যাওয়ার পর একটি বাজপাখিকে হোরাসের প্রতীকি উত্তরাধিকারী চিহ্নিত করা হতো। তারপর হোরাসের মূর্তি আর সেই বাজপাখি দুই-ই এডফু মন্দিরে এনে তোরণের উপরে ছাদে জনসাধারণকে দেখানো হতো আর শুরু হতো উৎসব। তোরণের ভিতরে ঢুকে একটি প্রশস্ত পাথরে বাঁধানো প্রাঙ্গণ। প্রাঙ্গণের দুপাশে আর পিছনে মোট ৩২ টি স্তম্ভ আর তাদের পিছনের দেওয়াল জুড়ে সেই দ্বিতীয় উৎসবের রিলিফ। এই উৎসব হলো দেবতা হোরাস এবং দেবী হাথোরের বিবাহবার্ষিকীর উৎসব। দেনদেরা-র হাথোরের মন্দির থেকে এই দিনটিতে দেবী হাথোরের মূর্তি নিয়ে আসা হতো এডফু মন্দিরে, তারপর হোরাসের মূর্তির সঙ্গে একসাথে বসিয়ে বিবাহবার্ষিকীর লোকাচার সম্পন্ন হতো। উৎসব চলত পনেরো দিন ধরে, তারপর দেবী হাথোরের মূর্তি আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেনদেরার মন্দিরে। সামনের দিকে প্রবেশপথের দুদিকে আপার ও লোয়ার ইজিপ্টের মুকুট পরে স্বয়ং বাজপাখি-রূপী হোরাস দন্ডায়মান। দুটি মূর্তি-ই গ্র্যানাইট পাথর কেটে বানানো। এরপর দুটি পরপর হাইপোস্টাইল হল। দুপাশের ঘরগুলি জুড়ে অসংখ্য রিলিফ, বিভিন্ন ফারাও-দের হোরাসকে পুজো নিবেদনের, সঙ্গে হায়রোগ্লিফে লিখে রাখা হোরাস ও সেথ-এর যুদ্ধের কাহিনী। এরপর একটি কক্ষ যেখানে হোরাসের পুজোর নৈবেদ্য প্রস্তুত করা হতো। সবশেষে গর্ভগৃহ, এখানে রয়ে হোরাসের নৌকো, দুপাশে তার হোরাসের মুখের অর্থাৎ বাজপাখির মাথার মূর্তি। কিন্তু তার পিছনের মূল সিংহাসনের বেদী শূন্য, হোরাসের মূর্তিটি আর নেই এখানে। মন্দিরের বাইরের দেওয়ালের পাশে এখানেও রয়েছে একটি নাইলোমিটার। মন্দির দেখে যখন আমরা বেরিয়ে আসছি, সকাল সাড়ে সাতটা প্রায়।
     
    এডফু মন্দিরের প্রবেশদ্বার ও তোরণ 

     
    সামনে হাইপোস্টাইল হল, আর যে প্রাঙ্গণ থেকে ছবিটি তোলা , এখানেই হতো হোরাস-হাথোরের বিবাহবার্ষিকী পালন 

     
    হোরাসের নৌকো 

     
    হাথোরের নৌকো

     
    গর্ভগৃহে হোরাসের নৌকো আর শূন্য বেদী 

     
    মন্দিরের প্রবেশপথে বাজপাখি-রূপী হোরাস দন্ডায়মান 

    আজ আমাদের ক্রুজ ছাড়বে সকাল আটটায়, ঘন্টা তিনেক পরে পৌঁছোব বিখ্যাত এসনা লক। বিকেলে যাওয়ার কথা কার্নাকের মন্দির। কিন্তু সামাহ আমাদের বলে রেখেছিল, এসনা লক পার হতে ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যায়। সুতরাং কার্নাকের মন্দির দেখার সময় না থাকলে আমরা দেখব আগামীকাল হুরগাদা রওনা হওয়ার আগে। ক্রুজে ফিরে প্রাতঃরাশ সেরে আমরা ঘন্টা দুয়েক বিশ্রাম নিয়ে সবাই চলে এলাম ছাদে, এখান থেকে দেখবো এসনা লক পার হওয়ার দৃশ্য। আমারা যখন কাছাকাছি এসে পৌঁছলাম, দেখলাম আমাদের আগে আরও তিনটি ক্রুজ এসে উপস্থিত। জলের উপরেই নোঙর না করে সবাই অপেক্ষা করছে, কখন পার হওয়া শুরু হয়। ব্যাপারটি এরকম, পুরো নদীর উপর এসনা ড্যাম চলে গেছে, শুধু বাঁদিকের একটি অংশ সামনে পিছনে লকগেট খুলে একটি করে জাহাজ অতিক্রম করানো হয় শুল্ক আদায়ের পর। প্রথমে পিছনের লোহার গেট খুলে যায়, জাহাজ প্রবেশ করে, তারপর পিছনের গেট বন্ধ করে জলের ঐ অংশের উচ্চতা কৃত্রিম উপায়ে কমিয়ে আনা হয়, এরপর সামনের গেট খুলে জাহাজ-কে বের করা হয় ওই ড্যামের নীচ দিয়ে। আমরা যখন অপেক্ষা করছি, প্রায় খান ত্রিশেক জাহাজ এসে জটলা করছে আশে পাশে। দিনে শ-খানেকের বেশী ক্রুজ এই এসনা লক অতিক্রম করে, দেরী করে এ-জায়গায় পৌঁছোলে ঘন্টা পাঁচেকও লেগে যেতে পারে প্রতীক্ষায়। এরপরেই হঠাৎ দেখি অনেক ছোটো ছোটো নৌকো ঘিরে ধরছে ক্রুজ-গুলোকে। একজন নৌকো চালাচ্ছে আর দুজন হরেক রকম আর রঙের পোষাকের পশরা নিয়ে বসেছে, ক্রুজের কাছাকাছি এলেই হেঁকে বলছে ‘এফেন্দি’, ‘হাবিবি’, ‘ইন্দিয়ান’, ‘শাহরুখ খান’, ‘অমিতাভ বচ্চন’ আর মেলে ধরছে সেই সব রঙ বেরঙের পোষাক, কেউ পছন্দ করলে অদ্ভুত কায়দায় নৌকো থেকে অব্যর্থ লক্ষ্যে ছুঁড়ে দিচ্ছে ক্রুজের ডেক-এ, দামও নেওয়া হচ্ছে একই কায়দায়, পলিথিনের ব্যাগে নেমে যাচ্ছে নীচে। জলে পড়ার কোনো ব্যাপার-ই নেই! নীলনদের বুকে এ এক আজব বিকিকিনি বটে। এসনা লক পার হওয়ার আশায় বসে না থেকে আমরা সবাই মিলে ঘন্টাখানেক ক্রুজের ডেকে সুইমিং পুলের ধারে বসে অন্তাক্ষরী খেললাম জমিয়ে। অবশেষে আমাদের মধ্যাহ্নভোজ সারা হয়ে যাওয়ার পর দুপুর আড়াইটেয় আমরা পার হলাম এসনা লক। লাক্সর পৌঁছোতে আরও ঘন্টা আড়াই-তিন লাগবে। সুতরাং কার্নাকের মন্দির আমরা দেখবো আগামীকাল।
     
    এসনা লক ও নৌকোয় বিকিকিনি 

     
    বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কেবিনের পর্দা সরিয়ে দিতে ঘর ভরে উঠল এক নৈসর্গিক রক্তিমাভায়। ক্রুজ লাক্সর ঢুকছে, মিশরের প্রাচীন রাজধানী থীবস-এর গা বেয়ে কত ইতিহাস আর গল্প তার কোঁচড়ে ভরে নীলনদ বয়ে চলেছে যুগ যুগ ধরে! সূর্যাস্ত হচ্ছে, ঘাটের কাছে নদীর বুকে খান কয়েক পালতোলা নৌকো, তাদের সিল্যুয়েট অস্তগামী সূর্যের শেষ ছটায় আরক্তিম নদী আর আকাশ বরাবর ধীরে ধীরে আবছা হচ্ছে, তার সৌন্দর্য বর্ণনা করি সাধ্য কি! সঙ্গে দূর থেকে ভেসে আসছে রাবাব-এর মধুর বাজনা, লাক্সর-এর এই সন্ধ্যের মুহূর্তটুকু বহুদিন মনে রয়ে যাবে!
    “…প্রাণ মন মম ধীরে ধীরে প্রসাদরসে আসে ভরি
    দেহ পুলকিত উদার হরষে, আহা।।
    আজি এ আনন্দসন্ধ্যা…”

    লাক্সর-এ সূর্যাস্ত 


    আমরা দলের সকলেই আজ বেরিয়ে পড়লাম রাতের লাক্সর ঘুরে দেখতে, লাক্সর মন্দির কে বাইরে থেকে দেখে নিতে আর সঙ্গে সামাহ আমাদের সুলুক সন্ধান দিল লাক্সর মন্দির থেকে কিছুটা এগিয়ে এক রাস্তার, সেও নাকি আর এক খান এল খালিলি বাজারের প্রতিরূপ। লাক্সরের মূল রাস্তাঘাট বেশ চওড়া, মানুষ-জনের চলাচল আর গাড়ির ভিড়ে সরগরম। একই রাস্তায় গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে ঘোড়ায় টানা ফিটন আর টাঙ্গা। পোষাক সকলের মোটামুটি একইরকম, ছেলেদের গলা থেকে পা পর্যন্ত লম্বা জোব্বা বা আলখাল্লা, আর মেয়েদের বোরখায় আপাদমস্তক ঢাকা, তবে কেউ কেউ মুখ খুলে রেখেছেন অবশ্য। পোষাক আর রাস্তাঘাটে চলাফেরার ব্যাপারে মিশর খুবই রক্ষণশীল। লাক্সর বন্দর আর তার উপরের রাস্তা আর চওড়া ফুটপাত খুব সুন্দর আলো দিয়ে সাজানো। এখান থেকে কিছুটা বাঁদিকে এগিয়ে আমরা রাস্তা পার হয়ে লাক্সর মন্দিরের গা দিয়েই চলতে থাকলাম। প্রায় পাঁচশো মিটার মত এগোনোর পর লাক্সরের মন্দির শেষ হতেই রাস্তা পেরিয়ে ডানদিকে যেতেই সেই বিকিকিনির বাজার। আরে, এ যে একেবারেই এসপ্ল্যানেড বা হাতিবাগান বা গড়িয়াহাট! চওড়া ফুটপাতের দুপাশের দোকানে পশরা সাজিয়ে বসেছেন অসংখ্য বিক্রেতা। বাহারি পোষাক, রোদচশমা, অলংকার, সুগন্ধী, ধূপ, ব্যাগ, প্রচুর স্যুভেনির; এখানে যথেচ্ছ দরদাম করে জিনিসপত্র কেনা যাচ্ছে, একেবারে কলকাতার মতই, একশো ইজিপ্সিয়ান পাউন্ডের জিনিস দরদাম করলে হু হু করে নেমে আসছে বিশ-পঁচিশ পাউন্ডে, ভাবাই যায় না! আমরা নিজেদের জিনিস তো কিনলামই, আমাদের ট্যুর লীডার সুশান্তের জন্যেও কিছু উপহার কিনে নিলাম এখান থেকে।
     
    লাক্সর মন্দির 

     
    লাক্সর মন্দিরের দুটি হাইপোস্টাইল হল - বাইরে থেকে 

    ঘন্টা দুয়েক এই রাস্তায় ঘুরে ফিরে বাইরে থেকে লাক্সর মন্দিরকে দেখে নিলাম। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফারাও তৃতীয় আমেনহোটেপ প্রায় ১৪০০ খ্রীষ্টপূর্বে, পরে তুতানখামুন, হোরেমহেব আর দ্বিতীয় রামেসিস বেশ কিছু স্থাপত্য যোগ করেন। প্রবেশপথের সামনেই রয়েছে দ্বিতীয় রামেসিসের দুটি উপবিষ্ট মূর্তি আর একটি ওবেলিস্ক, অপর ওবেলিস্কটি যথারীতি প্রায় উপড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্যারিসে। প্রসঙ্গতঃ বলি, সেযুগে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড আর জার্মানী-তে মিশরের কত যে জিনিস প্রায় লুঠ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তার ঠিক নেই, আবার মিশরের সরকারও কৃতজ্ঞতার চিহ্ন হিসেবে মুক্তহস্তে এইসব অমূল্য স্থাপত্য আর ভাস্কর্য বিলিয়ে দিয়েছেন এই দেশগুলির সরকারকে!  এই মন্দিরটি বিশেষ কোনো দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত নয়, বরং অনেক ফারাও-দের রাজ্যাভিষেকের আচার-অনুষ্ঠান হতো লাক্সর মন্দিরে। এই মন্দিরে আলেকজান্ডারেরও কিছু রিলিফ আর কার্তুশ আছে, যদিও তিনি নিজে এই মন্দিরে বা লাক্সরে এসেছিলেন বলে শোনা যায় না। এরকম প্রতীকী বা ভার্চুয়াল রাজ্যাভিষেক-ও এই মন্দিরে নাকি হতো। মন্দিরের ভিতরে হাইপোস্টাইল হলগুলিকে পরবর্তীকালে বিভিন্ন রাজত্বের সময়কালে কখনো মিশনারী চার্চ, আবার কখনো মসজিদের রূপ দেওয়া হয়েছিল। মসজিদটি নাকি এখনও রয়ে গেছে। লাক্সর মন্দির হয়ে ফিরে আসার পথে নীলনদের ধার ঘেঁষে সুসজ্জিত হাঁটাপথটি বেশ মনোরম। ঠান্ডাও বাড়ছে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। ক্রুজে ফিরে সবাই জমিয়ে নৈশভোজ সারলাম। আজকের নৈশভোজের শো-স্টপার হয়ে উঠল টাটকা খেজুর আর কেরকেদা বা কারকাদে জুস। এটি হল হিবিসকাস টি, এক ধরণের সুইট টি, যা হিবিসকাসের রস দিয়ে তৈরী। এবার ধাঁধা ছেড়ে সোজাসুজি বলা যাক, এটি হল জবা ফুলের নির্যাস এবং রস দিয়ে তৈরী এক ধরণের চা, যদিও পুরোপুরি চা নয়, বরং খানিক টার্ট, খানিক ফলের (থুড়ি ফুলের) রসের মিশ্রণে পরিমিত মিষ্টত্বের বেশ উপাদেয় একটি পানীয়। এরপর আজ আমাদের ক্রুজের শেষ রাতের আকর্ষণ ছিল মিশরের ‘এথনিক ড্যান্স’ আর ‘বেলি ড্যান্স’। এই এথনিক ড্যান্সটি নাচলেন একজন মিশরীয় নর্তক, ফুলে ওঠা পোষাক পরে ঘুরে ঘুরে, কখনো পোষাকের দুটি স্তরের উপরের স্তরটিকে মাথার উপর বনবন করে ঘুরিয়ে ডারবুকার তালে তালে প্রায় চল্লিশ মিনিট ধরে চলল এই সুন্দর নাচ। এমনকি পোষাকে মাঝে মধ্যে জ্বলে উঠল সারি সারি টুনি বাল্ব, যা দেখে মনে পড়বেই ‘ইয়ারানা’ ছবির ‘সারা জমানা’ গানটির দৃশ্য।  এরপর প্রায় ঘন্টাখানেক চলল বেলি ড্যান্স। পরিবেশন করলেন স্থানীয় একজন নর্তকী। ক্রুজের অন্য কর্মচারীরাও যোগ দিলেন এই নাচে। সবশেষে সামাহ-র কাছ থেকে পরদিন সকালে সাড়ে সাতটায় বেরিয়ে পড়ার নির্দেশ নিয়ে ফিরলাম যে যার কেবিনে। আগামীকালের গন্তব্য কলোসি অব মেমনন, ভ্যালি অব দ্য কিংস, হ্যাৎসেপশুটের মন্দির আর কার্নাকের মন্দির। সব দেখে আমরা রওনা দেব হুরগাদা।
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ৩১ মার্চ ২০২৪ | ৫৪৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০০:১৩530080
  • এই সিরিজটার জন্য একেবারে হাঁ করে বসে থাকি।  
     
    কিন্তু অন্তাক্ষরী বানানটা অমন বিচিত্র হয়েছে কেন রে? অটো কারেক্ট নাকি! 
  • kk | 2607:fb90:ea06:926e:6d06:5542:f486:***:*** | ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৩৪530084
  • ঠিক, এই সিরিজের লেখাগুলোর জন্য অপেক্ষা করি। ছবিগুলোও খুব সুন্দর। আর, আমরাও কিন্তু ছোটবেলায় 'আনতাকশারি'ই বলতাম :-)
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:ee0d:dae9:2605:***:*** | ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:৪৯530086
  • বেশ
  • সুদীপ্ত | ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৩৬530094
  • ধন্যবাদ দমদি, কেকে, পলিটিশিয়ান! 
     
    ওয়ার্ড থেকে কপি পেস্ট করে যুক্তাক্ষর ঘেঁটে গেছে দেখছি, কিন্তু তাও প্রথম অ টা আ ছিল, এটা বোধ হয় ওই কেকে যা বলেছেন, ছোটোবেলার অভ্যাস :))
    ঠিক করে দিলাম।
  • সুদীপ্ত | ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১০530096
  • আচ্ছা এই 'ethnic dance' এর কিছুটা অংশ এখানে দিয়ে যাই -
  • hu | 72.24.***.*** | ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:০৪530098
  • এই নাচের নাম তানোরা (জানি না উচ্চারণ ঠিক হল কিনা)। প্রথমবার মিশর গিয়ে এই নাচ দেখে আমার খুব ভালো লেগেছিল। তাই বাইশে যখন গেলাম খুব ইচ্ছে ছিল আবার দেখার। টিকিটও কেটেছিলাম। কিন্তু শো-টা ক্যানসেল হয়ে গেল সেদিন। খুব আফশোষ হয়।
  • সুদীপ্ত | ০১ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪৮530122
  • ধন্যবাদ হু, নাচের নামটা জানতাম না, আমাদের বেলি ড্যান্সের চাইতে এই নাচটাই বেশী ভালো লেগেছিল।
  • hu | 72.24.***.*** | ০১ এপ্রিল ২০২৪ ২২:৩৯530123
  • আমারও তাই। বেলি ডান্সও খুব এক্সোটিক। কিন্তু এটা আরও বেশি ভালো লেগেছিল। যদি ক্রুজের বদলে মরুভূমিতে আগুন জ্বালিয়ে বা কোনো পুরনো ক্যাসেলে এই পারফর্মান্সটা দেখতে পেতাম আরও ভালো লাগতো হয়ত। যে শো-টা ক্যান্সেল হল সেটা ওরকম একটা পুরনো ক্যাসেলে ছিল।
  • সুদীপ্ত | ০২ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:০৬530171
  • hu, ঠিকই, আমার পছন্দ ওই আবু সিম্বেল মন্দিরের সামনের বিরাট চত্বরটা, পিছনে লেক নাসের। মিশরের যাসব গল্প, অপেরা জাতীয় জিনিসপত্র দিব্যি নামানো যায়! মিশর পর্যটকদের ঘোরাঘুরির ব্যাপারে যা গুরুত্ব দেয়, সেটা যা দেখতে পর্যটকরা আসবে তার রক্ষণাবেক্ষণ বা আরও ভালো কিছু বানানোর ব্যাপারে তত দেয় না। একমাত্র ব্যতিক্রম হয়ত গ্র‍্যান্ড মিউজিয়াম,  তবে সে ক'বছরে শেষ হবে ঠিক নেই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন